16/10/2024
বুতির ব্যাপারে সাবের চৌধুরীর বক্তব্য ভালো লেগেছে। “জীবনের শেষ দিকে গিয়ে নিজস্ব বিবেচনা ও ইজতেহাদের ভিত্তিতে তিনি যে রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন, ব্যক্তিগত অবলোকনে আমি তা সমর্থনযোগ্য মনে করি না। কিন্তু তার জ্ঞানভান্ডার থেকে উপকৃত হওয়া খুবই সঙ্গত বলে মনে করি।”
একটা কথা সবসময় বলি, মানুষ তার ব্যক্তিগত চিন্তা ও মত প্রকাশ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সে স্বাধীন। অবশ্যই শরিয়তের সীমারেখা বিবেচনায় রেখে। আর তার সেই চিন্তা ও মত সবার ওপর যেমন চাপিয়ে দেওয়া হয় না, তেমনই তা গ্রহণ করাও আবশ্যক নয়। কিন্তু নিছক ভিন্নমত ও স্বাধীনচিন্তা প্রকাশের কারণেই কাউকে দোষারোপ করা কি আদৌ ঠিক?
আমরা স্বপক্ষীয় মতের মানুষকে যেমন চেটেপুটে খাই, ভিন্ন মতের মানুষকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত স্বার্থে ঘৃণা করি, বিদ্বেষ পোষণ করি। এবং অনেক ক্ষেত্রেই এই অপছন্দ করার মানদন্ড দাঁড়ায় সম্পূর্ণ নিজের বুঝ-বিবেচনা। শরিয়ত যেখানে স্পেস দিয়ে থাকে, এসব ক্ষেত্রেও তারা বাড়াবাড়ি করতে পিছপা হয় না। ‘তারপরও আমার মনে হচ্ছে’ সেই সীমারেখাটা তারা অতিক্রম করে ফেলে।
এক ইঁচড়ে পাকা একবার বলেছিল আমাকে, ‘আমাদের কি এমনই দুর্দিন এসে গেছে যে বুতির থেকে ইলম নিতে হবে?’ এ কেমন কথাবার্তা? একজনের বিপক্ষে আমরা দাঁড় করাই আরও বহুজনকে, এবং এতটুকুতেই আমরা সীমাবদ্ধ থেকে সীমাতিক্রম করে ফেলি। বিপক্ষে যাকে দাঁড় করাই তিনিও তো ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে নাও যেতে পারেন—নিজে কখনো যাচাই করেছি কি?
এই যেমন মুফতি আজমের আত্মজীবনী পড়ে অনেকে শায়খুল ইসলামকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান, তেমনই বাড়াবাড়ি করেন তাঁরই রেফারেন্সে ফকিহুল মিল্লাতের ক্ষেত্রে। আর আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা কারও মত গ্রহণ করি না, নিজের পছন্দমতো যার মত পাই তাকে পছন্দ করি, নইলে তাকেও বর্জন করি। নিরপেক্ষতা তো আজকাল রূপকথাকেউ হার মানিয়েছে। অথচ উপরিউক্ত ব্যক্তিরা আপন অবস্থানে সর্বদিক থেকে যোগ্য এবং প্রতিষ্ঠিত। মতের ভিন্নতা থাকতেই পারে, সেটা প্রকাশও হতে পারে, তাই বলে ভক্তদের তো এটা শোভা পায় না যে অপরজনকে নিন্দা করব।