Anyaprokash

Anyaprokash Publications house
(8)

'ভ্রমণকাহিনি' ক্যাটাগরিতে মাত্র দুদিনেই অনলাইন বই বিক্রির সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম 'রকমারি'র ইতিহাসে রেকর্ড ব্রেকিং প্রি-অর...
06/10/2024

'ভ্রমণকাহিনি' ক্যাটাগরিতে মাত্র দুদিনেই অনলাইন বই বিক্রির সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম 'রকমারি'র ইতিহাসে রেকর্ড ব্রেকিং প্রি-অর্ডার হয়েছে 'যেতে যেতে তোমাকে কুড়াই'-এর। অভিনন্দন, প্রিয় কথাকার সাদাত হোসাইন।

'যেতে যেতে তোমাকে কুড়াই' সাদাতের প্রথম ভ্রমণোপাখ্যান। নিছক গতানুগতিক ভ্রমণকাহিনি নয় এটি।

ইউরোপের সাত দেশ, সেসব দেশের অতীত ও বর্তমান, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, প্রকৃতি ও মানুষের পারস্পরিক নির্ভরতা, জীবন আর যাপনের গল্প আছে এখানে। এ সব জনপদে লেখক তাঁর সাম্প্রতিক ভ্রমণে খুঁজে বেড়িয়েছেন গল্পের জীবন, জীবনের গল্প। সে সব গল্প প্রাণ পেয়েছে সাদাতের নিপুণ বর্ণনায়। এ তাই সাদামাটা ভ্রমণগদ্য নয়; হয়ে উঠেছে উপাখ্যান, ভ্রমণোপাখ্যান। পাঠকের বাড়তি পাওয়া হিসেবে আছে অসংখ্য রঙিন ছবি। ছবিগুলো নেটের নয়, বইয়ের জন্য এক্সক্লুসিভ।

'যেতে যেতে তোমাকে কুড়াই'-এর প্রি-অর্ডার চলছে।
ক্লিক করুন এই লিংকে- rokshort.com/h4rRaAkxJ

'এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪'-এর কার্যক্রম চলছে। নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে বই জমা নেওয়া হচ্ছে। ...
17/09/2024

'এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪'-এর কার্যক্রম চলছে। নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে বই জমা নেওয়া হচ্ছে। জমা দেওয়ার শেষ তারিখ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

04/07/2024

ঢাকা থিয়েটারের সুবর্ণজয়ন্তী এবং নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে কালোত্তীর্ণ নাটক 'শকুন্তলা'র মঞ্চায়ন হচ্ছে আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের চারটি প্রধান শহরে। এই উপলক্ষ্যে অন্যপ্রকাশের বিশেষ আয়োজন এক্সক্লুসিভ অন্যআড্ডায় 'শকুন্তলা'র অতীত, বর্তমান এবং আমেরিকায় এর মঞ্চায়ন নিয়ে আলোচনা করবেন:
- নাসির উদ্দিন ইউসুফ, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট নাট্যজন, প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক—ঢাকা থিয়েটার
- শহীদুজ্জামান সেলিম, অভিনেতা ও নির্দেশক—ঢাকা থিয়েটার
- রোজী সিদ্দিকী, অভিনেত্রী—ঢাকা থিয়েটার
- ফরহাদ হোসেন, প্রধান সমন্বয়কারী—বাংলা গ্রুপ ডালাস

সঞ্চালনা: ফারিয়া হোসেন, উপস্থাপক, চিত্রনাট্যকার
পরিকল্পনা: মাজহারুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক, অন্যপ্রকাশ

সম্প্রচারিত হবে বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা, টেক্সাস সময় সকাল ১১টা, নিউইয়র্ক সময় দুপুর ১২টায়

অন্যপ্রকাশ ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ থেকে ভার্চুয়াল এই আড্ডায় যুক্ত হতে পারেন আপনিও। সবাইকে আমন্ত্রণ।

গল্প বলা কিংবা গল্প শোনা আমাদের চিরায়ত ঐতিহ্যের অংশ। গল্প শুনতে আমরা সকলেই ভালোবাসি। গল্পের প্রতি এই টান সহজাত। গল্পে বু...
21/05/2024

গল্প বলা কিংবা গল্প শোনা আমাদের চিরায়ত ঐতিহ্যের অংশ। গল্প শুনতে আমরা সকলেই ভালোবাসি। গল্পের প্রতি এই টান সহজাত। গল্পে বুঁদ হয়ে যাই যদি গল্পকথক হন সেরকম!

সাদাত হোসাইন গল্প বলে। জীবনের গল্প আর গল্পের জীবন। অজস্র গল্প আমাদের জীবনজুড়ে। সাদাত সেসব বলে যায় স্বতঃস্ফূর্ততায়। প্রবহমান ঝরনাধারার মতো, নূপুরের ছন্দের মতো। গল্পের কলাকৌশল যেন তার নখদর্পণে। তাই তো তার এই অনায়াস গল্পকথন।

সাদাত এ সময়ের সবচাইতে তরুণ জনপ্রিয় কথাশিল্পী। তার জনপ্রিয়তা ছাড়িয়েছে দেশের ভৌগোলিক সীমানা। ভারতের বাংলাভাষী রাজ্য পশ্চিম বঙ্গ কিংবা ত্রিপুরাতেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে তার তুমুল জনপ্রিয়তা। কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলার মাঠে সাদাতের পাঠকের দীর্ঘ সারি লক্ষ করেছি গত তিন বছর। একই দৃশ্য দেখেছি আগরতলাতেও। সম্প্রতি সাদাত ইউরোপ 'জয়' করে এল। প্রথমবার ইউরোপ সফরে গিয়ে বিভিন্ন দেশের নানা শহরে ব্যপকভাবে সংবর্ধিত হয়েছে সে। যে শহরেই গেছে, শুধু স্থানীয় নয়, দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছে অনুরাগী পাঠকেরা প্রিয় লেখককে দেখতে, খানিক সান্নিধ্য পেতে।

সত্যি বলতে কী, বিশ্বব্যাপী বাঙালি পাঠকদের কাছে সাদাত বহুল পরিচিত এক নাম, প্রিয় নাম।

বয়সে তরুণ, অথচ ভাবনায় ঋদ্ধ এই কথাকার। তার সাহিত্যের স্বরূপ বিচিত্র। ভাষা আর ভঙ্গি বেশ পরিণত। কোনো একটি বিশেষণে একে অভিহিত করা কঠিন। তার গল্প-উপন্যাসের চেহারা নানা ধরনের। ঝুলি থেকে কখন কোনটা বের করবে সাদাত, অনুমান করা মুশকিল। তার 'নিঃসঙ্গ নক্ষত্র' উপন্যাসে সমাজবাস্তবতা ধরা দিয়েছে একভাবে, আবার ক্ষীণকায় উপন্যাস 'মরণোত্তম'-এ মূর্ত হয়েছে সমাজের গভীর ক্ষত পৃথক ব্যন্ঞ্জনায়। 'মানবজনম' উপন্যাসে সাদাত যেন ভিন্ন এক কথাশিল্পী। অন্যদিকে বৃহত্তর পাঠকরুচির প্রতিফলন ঘটেছে 'মেঘেদের দিন', 'তোমার নামে সন্ধ্যা নামে', 'প্রিয়তম অসুখ সে' উপন্যাসে। তাই বলে এগুলোর উপজীব্য কিন্তু সমাজবিচ্ছিন্ন নয়। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পাঠকের বোধ ও ভাবনার গভীরে তা আলোড়ন তৈরি করে। বড়ো কলেবরের উপন্যাস 'শঙ্খচূড়' বলে দেয় লেখক কী অবলীলায় গল্পের পরতে পরতে রহস্য নিয়ে খেলা করে আর প্রতিমুহূর্তে পাঠককে চমকে দেয়! এবছর প্রকাশিত বৃহদায়তন উপন্যাস 'আগুনডানা মেয়ে' এক নারীর জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার আখ্যান, ধ্বংসস্তূপ থেকে যে বারবার জেগে ওঠে অপরিমেয় প্রাণশক্তিতে, ফিনিক্স পাখির মতো।

সাদাত নানা ধরনের লেখা লিখছে। ওর কবিতা পড়লে মনে হয় কথাকার নয়, ও আপাদমস্তক একজন কবি।প্রকাশিত হয়েছে ওর 'নির্বাচিত কবিতা'। থ্রিলারও লিখছে দারুণ দক্ষতায়। কিশোর রচনায় কতটা সিদ্ধহস্ত তার নমুনা সাদাতের 'গল্পঘর'। এর বাইরে গান লিখছে, নির্মাণ করছে নাটক, চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র।

বহুমুখী সৃজনীপ্রতিভার অধিকারী সাদাত। ওর সৃষ্টিশীলতায় প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের সাহিত্য। এই তরুণ তুর্কীর হাত ধরে একদিন তা আমাদের পৌঁছে দেবে অহংকারের আসনে, এ প্রত্যাশা আমার।

প্রিয় সাদাতের আজ জন্মদিন।

শুভ জন্মদিন, সাদাত। জীবনের বন্ধুর পথে এগিয়ে যাও বহুদূর, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে জীবন হোক আনন্দমুখর আর তোমার গল্প বলা চলুক ক্লান্তিহীন, আজকের বিশেষ দিনে এই শুভ কামনা আর ভালোবাসার আলিঙ্গন ❤️

16/05/2024

কাউকে উড়তে দেখে তার ডানা কাটার চিন্তা বাদ দিয়ে নিজেও উড়তে শিখুন! দেখবেন পৃথিবীটা অনেক সুন্দর।

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, আমাদের সকলের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় আনিস স্যারের চতুর্থ প্রয়াণবার্ষিকী আজ। ১৪ মে ২০২০ অনন্তে যাত্র...
14/05/2024

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, আমাদের সকলের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় আনিস স্যারের চতুর্থ প্রয়াণবার্ষিকী আজ। ১৪ মে ২০২০ অনন্তে যাত্রা করেছেন তিনি।

দেশেবরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষাসংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী, বাংলাদেশের সংবিধানের বাংলা ভাষ্যের অন্যতম প্রণেতা, দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবর্তী মানুষ ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আমাদের সময়ের বাতিঘর ছিলেন তিনি।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অন্যপ্রকাশ-অন্যদিন পরিবারের একান্ত আপনজন ছিলেন। তাঁর পরামর্শ ও মতামতে আমরা ঋদ্ধ হয়েছি নিজেদের পথ চলায়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বেশ ক'টি মৌলিক ও সম্পাদিত বইয়ের প্রকাশক 'অন্যপ্রকাশ'। 'অন্যদিন'-এর জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে লিখেছেন। পাঠকপ্রিয় 'অন্যদিন ঈদসংখ্যা'র অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে আনিসুজ্জামানের নেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার। নানাক্ষেত্রের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। সত্যি বলতে কী, স্যার ছায়া হয়ে ছিলেন আমাদের মাথার উপর। প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি তাঁকে।

স্যার, ভালো থাকবেন পরপারে। আপনার রেখে যাওয়া আলোয় আমরা খুঁজে নেব পথের দিশা।

26/04/2024

স্টেশন থেকে একটা ভ্যান রিজার্ভ করে নিলাম বাপ-ছেলে আরাম করে যাব বলে। এক ভ্যানে আটজন যাতায়াত করে। আমিও সব সময় সেভাবেই যাওয়া-আসা করি। মাঝেমধ্যে রিকশায়ও যাই। আজ আমার রাজপুত্র সঙ্গে আছে বলে কথা। ভ্যানচালক রমিজ মিয়া প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেনি। সে ভেবেছে, আমি হয়তো রসিকতা করছি। তাই বলছিল, সত্যই তুমি রিজার্ভ যাইবা?

আমি বললাম, কেন? বিশ্বাস হয় না? কথা না বাড়াইয়া রওনা করো। মা অসুস্থ, তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছাতে হবে।
জুতা খুলে বাপ-ছেলে ভ্যানের মাঝখানে পা তুলে আয়েশ করে বসলাম। ভোরের কুয়াশা এখনও কাটেনি। স্টেশন থেকে দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকা। তারপর শুরু হলো খানাখন্দে ভরা মাটির রাস্তা। অনিক বেশ মজা পাচ্ছে বলে মনে হলো। সে ভ্যানের ওপর উঠে দাঁড়াতে চায়, পারলে লাফালাফি শুরু করে। ভাঙাচোরা রাস্তায় ঝাঁকুনির চোটে বসে থাকাই কঠিন। অনিককে ধরে রাখতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। এর মধ্যে জ্যাঠাতো ভাই সমীরের ফোন। বললাম, মেলাকান্দি বাজারের কাছে। মায়ের খবর জানতে চাইলে বলল, ভালো না। তুমি আসো।

মেলাকান্দি বাজার থেকে কদম, খাগড়াই, বাতাসা কিনলাম অনিকের জন্য। সে কোনো কিছুই মুখে দিল না। একটু পরপর রাস্তার পাশে গরু-ছাগল দেখলেই চিৎকার করছে এবং একটা করে কদম ছুড়ে মারছে আর আনন্দে হাততালি দিচ্ছে।

রমিজ মিয়া জিজ্ঞেস করল- বাবলু, পোলাডা কার?
আমার।
মফিজ মিয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, তুমি আবার বিয়া করলা কবে?

মফিজ মিয়ার কথায় কিছুটা বিরক্ত হলাম। আমি কবে বিয়ে করেছি, কী করিনি সে খবর মফিজ মিয়াকে দিতে হবে কেন? তাই কোনো উত্তর না দিয়ে অনিককে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। চারদিকে ভোরের শিশিরসিক্ত সবুজের সমারোহ। বাতাসে কচি ধানের শীষগুলো দুলছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ কানে আসছে।

দুই.

হুট করেই বিয়েটা করে ফেললাম। চন্দনার একটা শর্ত ছিল, যা মানতে খানিকটা সময় লেগেছে। নিজের সঙ্গে কিছুটা বোঝাপড়া করতে হয়েছে। মগবাজারের কাজি অফিসে কাগজে সই করার সময় তবু হাতটা একটু কাঁপছে। চন্দনা বলল, মনের ওপর জোর করিস না বাবলু। প্রয়োজনে আরও দু'দিন সময় নে।

আমি চন্দনার কানে কানে বললাম, সময় নেওয়ার কিছু নেই। সিদ্ধান্ত তো নিয়েছিলাম আজ থেকে এগারো বছর আগে। যেদিন গোল্লাছুট খেলার সময় মাঠের মধ্যে পড়ে গিয়ে হাঁটুটা ছিলে রক্তারক্তি অবস্থা, আর তুই একটানে ওড়নার একটা অংশ ছিঁড়ে আমার হাঁটুতে পেঁচিয়ে দিলি যেন রক্ত বন্ধ হয়। তোকে দেখে মনে হচ্ছিল আমার থেকে তুই-ই যেন বেশি ব্যথা পেয়েছিস। সেদিন তোর ভেজা চোখ আমার দৃষ্টি এড়ায়নি। আমি খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাড়ি যাচ্ছিলাম। তুই আমার সঙ্গে বাড়ি পর্যন্ত এসেছিলি। পথে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছিস আমার কষ্ট হচ্ছে কি-না। ওই জিজ্ঞাসা করার মধ্যেও ছিল এক ধরনের মায়া। সেদিন থেকেই তো তুই আর আমি এক হয়ে গেছি।

কাজি অফিসের পাট চুকিয়ে একটা রিকশায় উঠে বসলাম। রিকশাচালক জানতে চাইল- কোথায় যাব। বললাম, তোমার যেদিকে খুশি যাও। আমরা দু'ঘণ্টা রিকশায় ঘুরব। ঘণ্টায় ২৫০ টাকা। দু'ঘণ্টায় ৫০০ টাকা পাবে। খুশিতে রিকশাচালকের দাঁত বের করা হাসিটা পেছন থেকেই দেখতে পেলাম।

তিন.

রিকশা চলতে শুরু করেছে। চন্দনা তার এক বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছে। আমার শৈশব-কৈশোরের দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ছে। একসঙ্গে দাঁড়িয়াবান্ধা, টিলো এক্সপ্রেস, কানামাছি, হাডুডু খেলা, ছুটির দিনে নদীতে সাঁতার কাটা, চৌধুরীদের পুকুর থেকে না বলে পদ্মফুল তোলা, গাছ থেকে কাঁচা আম পেড়ে মরিচ বাটা দিয়ে মেখে খাওয়া, বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা। চন্দনা প্রায়ই মাসিমার বানানো নারকেলের নাড়ূ, পিঠা, মিষ্টান্ন চুরি করে আনত আমার জন্য। আমাকে না দিয়ে কোনো কিছুই নাকি তার খেতে ভালো লাগত না। ক্লাস নাইনে থাকতে একবার বাড়ি থেকে পাকান পিঠা চুরি করে আনতে গিয়ে মাসিমার হাতে ধরা পড়ে প্রচণ্ড বকুনি খেয়েছিল চন্দনা। তিন দিন ওকে ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। আমার খুব মন খারাপ হয়েছিল সেদিন। আমার জন্য বেচারাকে শাস্তি পেতে হচ্ছে।

পুজোর সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা মন্দিরে বসে ঠাকুর বানানো দেখা, ষষ্ঠি থেকে নবমী- প্রতিদিন এ গ্রাম, সে গ্রাম ঘুরেফিরে ঠাকুর দেখা আর প্রসাদ খাওয়া। দশমীর দিন আমার সঙ্গে নদীতে ঠাকুর ডোবানো দেখতে যেত চন্দনা। একসময় স্কুল শেষ করে একই কলেজে ভর্তি হলাম আমরা। তারপর কলেজ শেষ করে ঢাকায় চলে আসা। আমি জগনাথ কলেজে বাংলায় অনার্সে ভর্তি হলাম আর চন্দনা ভর্তি হলো কবি নজরুল কলেজে সমাজবিজ্ঞানে। প্রথম মাস থেকেই টিউশনি শুরু করতে হলো। মায়ের পক্ষে আমার লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব ছিল না। ক্লাস নাইনে থাকতে বাবা মারা যান। কলেজে পড়ার খরচ দিয়েছেন বড়দি। চন্দনার বাবার অবস্থা অনেক ভালো। ওর টিউশনি করতে হয় না। মাসের শুরুতেই মানি অর্ডার চলে আসে। কখনও কখনও টিউশনির টাকা পেতে দেরি হলে চন্দনার কাছ থেকে ধার নিতাম। বিকেলে টিউশনি না থাকলে রমনা পার্ক, টিএসসি অথবা শিল্পকলায় ঘোরাঘুরি-আড্ডা মারা। ছুটিতে একসঙ্গে ট্রেনে বাড়ি ফেরা। এভাবেই কখন চার বছর পার হয়ে গেল বুঝতে পারিনি। কাকতালীয়ভাবে অনার্স শেষ হতেই একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিও পেয়ে যাই। বেতন খুব সামান্য। তবু একটা ফিক্সড ইনকাম তো হলো। ঠিক করলাম প্রাইভেটে মাস্টার্স পরীক্ষা দেব।

চন্দনা ফোনে কথা শেষ করে বলল, বিয়ে তো করলি, এখন থাকব কই?

আমি বললাম, এতদিন যেখানে আছিস সেখানেই থাকবি। তুই তোর হোস্টেলে আর আমি আমার মেসে। তারপর দেখেশুনে ছোট্ট একটা বাসা ভাড়া নেব। তুই লাল শাড়ি পরে নতুন বউ সেজে সেই বাসায় উঠবি। আস্তে আস্তে নিজের সংসারটা সাজাবি।

চন্দনা বলল, বিয়ে করে কেউ আলাদা থাকে? শালা পাগল কোথাকার!

আমি বললাম, তাহলে চল দুই দিনের জন্য কক্সবাজার চলে যাই।

তোর পকেটে পয়সা আছে যে কক্সবাজার যাবি? তা ছাড়া নতুন চাকরি। ছুটি পাবি?

বললাম, টাকা-পয়সা জোগাড় হয়ে যাবে। আর আমার বস খুব ভালো মানুষ। টেলিফোনে বুঝিয়ে বলব। বেশি ঝামেলা করলে বালের চাকরি ছেড়ে দিব। এসব নিয়ে তুই ভাবিস না।

চার.
কক্সবাজার থেকে ফিরে এসে বসিলায় এক রুমের একটা বাসা ভাড়া নিলাম। এক বন্ধুর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে একটা চকি কিনলাম মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে। সংসারের অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটা জিনিস কিনে উঠে গেলাম বাসায়। চকির ওপর একটা পাতলা কাঁথা বিছিয়ে প্রথম রাত কাটালাম। মাসের শেষ। হাতে কোনো টাকা-পয়সা নেই। বেতন পেতে পেতে সাত-আট তারিখ। প্রাইভেট কোম্পানির চাকরি। কখনও পনেরো-বিশ তারিখও হয়ে যায়। চন্দনা মাস্টার্সে ক্লাসের পাশাপাশি একটা টিউশনি শুরু করল। প্রথম মাসের টিউশনির টাকা দিয়ে সংসারের আরও কিছু জিনিসপত্র কিনে আনল। শুরু হলো নতুন জীবন। চন্দনা এর মধ্যে তার মা-বাবাকে বিয়ের কথা জানিয়েছে। খবরটা শুনে ওর মা খুব কান্নাকাটি করেছে। সপ্তাহ যেতে না যেতেই চন্দনার বাবা এসে হাজির। আসার সময় বাড়ি থেকে একগাদা জিনিসপত্র নিয়ে এসেছেন। বললেন, সব চন্দনার মা নিজ হাতে গুছিয়ে দিয়েছে।

আমার শ্বশুর রাতে খাওয়ার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মাকে বিয়ের কথা জানিয়েছ?

বললাম, এই মুহূর্তে খবরটা মা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবে না। শোনামাত্রই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে। আমি একটু সময় নিয়ে আস্তে ধীরে জানাব। গ্রামের মানুষদেরও আপাতত খবরটা জানাতে চাচ্ছি না।

আমার শ্বশুর খুবই অমায়িক মানুষ। বললেন, তুমি যেটা ভালো মনে করো সেভাবেই হবে।

পরদিন সকালে ফিরে যাওয়ার সময় চন্দনার হাতে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে গেলেন। বললেন, আগামী মাসে আরও কিছু টাকা পাঠাবেন। চন্দনা মার্কেটে গিয়ে একটা নতুন খাট ও ড্রেসিং টেবিল কিনে আনল। চকিটা বের না করলে খাট বিছানো যাবে না বলে ঘরের বাইরে রাখল। চন্দনাকে বললাম, চকিটা আমাদের দুঃসময়ে অনেক সার্ভিস দিয়েছে, ওকে ফেলে দেবে?

চন্দনা হাসতে হাসতে বলল, এক কাজ করো, জাদুঘরে রেখে আসো।

এক বছরের মধ্যে অনিকের জন্ম হলো। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম, অনিকের দুই বছর বয়স হলে ওকে নিয়ে বাড়ি যাব। গুটি গুটি পায়ে দৌড়ে দিদার গলা জড়িয়ে ধরে সে বলবে- দিদা, আমি চলে এসেছি। মা কি আর নাতিকে ফেলতে পারবে!

পাঁচ.

হাইস্কুলের কাছে চলে এসেছি আমরা। এখান থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে আমাদের গ্রাম। অনিক ক্লান্ত হয়ে আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে।

আবারও পুরনো দিনের কথা মনে পড়ছে। ক্লাস সিক্স থেকে আমি ও চন্দনা এই স্কুলে পড়তাম। একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় চন্দনাকে বললাম, চল নৌকা নিয়ে নদীতে ঘুরে আসি।

সঙ্গে সঙ্গে চন্দনা রাজি। ঘাট থেকে ছোট্ট একটা ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে নদীতে বেরিয়ে পড়লাম। গল্প করতে করতে কখন অনেকটা দূরে চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি। ফিরে আসতে সন্ধ্যা পার হয়ে এলো। আমাদের গ্রাম পার হয়ে চন্দনাদের গ্রামে যেতে হয়। আমি চন্দনাকে ওদের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে গেলাম। বাড়ির কাছে আসতেই দূর থেকে দেখলাম চন্দনার মা বাড়ির সামনে বসে আছে। চন্দনা বলল, তুই চলে যা বাবলু।

আমি ফিরে গেলাম। পরে শুনেছি সেদিন দেরিতে ফেরার কারণে চন্দনাদের বাড়িতে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেছে।

আসার সময় চন্দনাকে বলে এসেছি, আমি গিয়ে মাকে ম্যানেজ করে ফেলব। অনিককে মা ফেলতে পারবে না। হাজার হলেও বংশের বাতি। তারপর মা সুস্থ হলে একটা দিনক্ষণ ঠিক করে চন্দনাকে বাড়ি নিয়ে আসব। বাড়ির একমাত্র বউ বলে কথা! বধূবরণ করতে মায়ের প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় তো লাগবে।

বাড়ির কাছে পৌঁছে গেছি। সড়ক থেকে ধান ক্ষেতের মধ্যে সরু রাস্তা দিয়ে বাড়িতে যেতে হয়। ভ্যান, রিকশা বাড়ি পর্যন্ত যায় না। অনিককে কোলে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। মফিজ মিয়া আমার ব্যাগ নিয়ে আসছে। বাড়ির কাছে আসতেই চোখে পড়ল বাড়িভর্তি মানুষ। মনের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করতে লাগল। আরেকটু কাছে যেতে হাহাকার ধ্বনি কানে ভেসে এলো। কী হয়েছে? কান্নার শব্দ কেন? বাড়ির উঠানে পা রাখতেই আমার বুঝতে বাকি রইল না কী ঘটেছে এ বাড়িতে। এর মধ্যে আমাকে দেখেই ছোটদি দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগল- বাবলু, মা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে ভাই! কথাটা শোনামাত্র আমার সমস্ত পৃথিবী কেঁপে উঠল। ছোটদি কী বলছে! মেজদি ও বড়দির কান্নার সঙ্গে আরও অনেকের কান্না যুক্ত হয়ে বাতাস ভারী হয়ে এলো। অনিক এতক্ষণ আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিল। চিৎকার ও কান্নাকাটিতে ওর ঘুম ভেঙে গেল।

উঠোনের মাঝখানে খাটিয়ায় মা শুয়ে আছে। তাকে ঘিরে আছে আত্মীয়-প্রতিবেশীরা। আমি মায়ের মাথার কাছে গিয়ে বসলাম। অনিক আমার পাশে দাঁড়ানো। আমার দু'চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছে। আমি চিৎকার করে কাঁদছি কিন্তু কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। বুকের মধ্যে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। মা কেন এত দ্রুত চলে যাবে! কিসের এত তাড়া ছিল! দুই হাত দিয়ে মায়ের মুখটা ধরতে গিয়ে হাত ফিরিয়ে নিলাম। মাকে আমার স্পর্শ করা ঠিক হবে না। তাতে যদি মায়ের অমঙ্গল হয়। আমার কান্না দেখে অনিক কান্না শুরু করল। বড়দি অর্থাৎ মালতীদি আমাকে ধরে নিয়ে বারান্দায় বসাল। মেজদি আমাকে জড়িয়ে ধরে আবারও কান্না শুরু করল। মালতীদি বলল, বাচ্চাটা কার?

আমি বললাম, আমার।

দিদি কথাটা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ল। বলিস কী? আমাদের না জানিয়ে তুই বিয়ে করেছিস? তোর বাচ্চা হয়েছে! আমরা কিছুই জানতে পারলাম না। ভাগ্যিস এই খবর জানার আগে মা স্বর্গে গেছেন।

মেজদি-ছোটদি সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছে।

আমি বললাম, দিদি হঠাৎ করেই বিয়েটা করে ফেলেছি। তোমরা এ বিয়ে মানতে পারতে না। আজ এসব কথা থাক। পরে এ নিয়ে কথা বলব। মায়ের কী এমন হলো যে, তিনদিনের মধ্যে সব শেষ হয়ে গেল! তোমরা আমাকে শুধু বললে, মা অসুস্থ, বাড়ি আয়।

ছোটদি বলল, তিনদিন আগে শুরু হলো জ্বর। অনেক জ্বর। গা পুড়ে যাচ্ছিল। হারাধন কাকা এসে জ্বর কমানোর ওষুধ দিল। রাতে জ্বর কিছুটা কমল। সকাল থেকে তলপেটে ব্যথা শুরু হলো। কাকা এসে ব্যথার ওষুধ দিল। কোনোভাবেই ব্যথা কমল না। মা ব্যথায় গড়াগড়ি দিতে শুরু করল। আবার কাকারে ডাকলাম। কাকা বলল, ওষুধ বদলায় দিচ্ছি। না কমলে কাল সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ব্যথাটা ভালো ঠেকতেছে না। পেটের এক্স-রে করে দেখতে হবে।

আমি বললাম, আমাকে এসব কিছুই জানাওনি কেন দিদি?

ছোটদি বলল, মা বারণ করেছিল। বলছিল, বাবলু শুধু শুধু চিন্তা করবে। ওকে কিছু বলিস না তোরা। জ্বর-জারি তো মানুষের হয়ই। আমি ভালো হয়ে যাব। গতকাল রাত থেকে বারবার তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের পেটের ব্যথা আরও বাড়তে থাকল। ভোরের দিকে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করতে লাগল। জামাই বাবু গিয়ে হারাধন কাকাকে ঘুম থেকে তুলে আনল। কাকা দেখে জানাল, তার পক্ষে আর কিছু করার নেই। মনে হচ্ছে অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা। অতি দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে অপারেশন করতে হবে। সকাল সাতটার মধ্যে ভ্যান রেডি করা হলো। কিন্তু তার আগেই...।

কথাগুলো বলতে গিয়ে ছোটদি আবার কান্নায় ভেঙে পড়ল। চার বছর আগে ছোটদির বিয়ে হয়েছিল। এক বছর যেতে না যেতেই তার কপাল পুড়ল। জামাই মোটা অঙ্কের যৌতুক নিয়ে দিদিকে ছেড়ে আরেকটা বিয়ে করে বসল। তারপর থেকে ছোটদি মায়ের সঙ্গেই থাকে। মায়ের দেখাশোনা করে।

মেজদির বিয়ে হয়েছে পাশের গ্রামে। গত তিনদিন ধরে সেও মায়ের সঙ্গে ছিল। শুধু হতভাগা আমি মায়ের মৃত্যুর সময় পাশে থাকতে পারলাম না।

ছয়.

আমি বড় মুখ করে চন্দনাকে জানিয়েছিলাম মাকে ম্যানেজ করে ফেলব। দিনক্ষণ ঠিক করে ওকে বাড়ি নিয়ে আসব। কিন্তু তা আর হলো না। হঠাৎ করেই সব ওলটপালট হয়ে গেল।

বাবা যখন মারা যান তখন আমার আট বছর। মুখাগ্নি করেছে জ্যাঠার বড় ছেলে। বাড়ির বড় ছেলে হওয়ার পরও নাবালক ছিলাম বলে কাজটা আমার করতে হয়নি। আজ মায়ের মুখাগ্নি আমাকে করতে হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। তিন বোনের পর আমি জন্মেছি। শুনেছি আঁতুড়ঘরে আমার জন্মের কথা শোনার পর মা খুশিতে কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। পরপর তিন মেয়ের কারণে উঠতে-বসতে মাকে কথা শুনতে হতো। ঠাকুরমা হরহামেশা বাবাকে বলতেন, বংশ রক্ষা করতে চাইলে আরেকটা বিয়া কর। এই বউ দিয়া বছর বছর বিয়াইতে পারবি কিন্তু তোর বংশ রক্ষা হইব না।

বাবা কখনও এসব কথা আমলে নেননি। মাকে খুব ভালোবাসতেন বাবা। তিনি মাকে বলতেন, তুমি এসব কথায় কিছু মনে করো না। আগের দিনের মানুষ, তাদের চিন্তা-ভাবনা সেকেলে। তা ছাড়া গুরুজনদের সব কথা ধরতে নেই।

এসব গল্প মায়ের কাছে শোনা।

কিছুক্ষণ আগে তিন বোন মিলে মাকে স্নান করিয়েছে। ধবধবে সাদা শাড়ি পরিয়েছে। গলায় বেলি ফুলের মালা। চারদিক সাদা ফুলে ছেয়ে আছে। মনে হচ্ছে সাদা ফুলের বিছানায় মা আরাম করে ঘুমাচ্ছে। একটু পরই ঘুম থেকে উঠে বলবে, কখন এসেছিস বাবলু? আমায় ডাকিসনি কেন বাবা? আমার দাদু ভাইকে নিয়ে এসেছিস! বৌমাকে আনিসনি কেন?

এ সময় অনিক দৌড়ে এসে বলল, দিদা কথা বলে না কেন বাবা? তুমি না বলেছিলে দিদা আমাকে অনেক আদর করবে!

তোমার দিদা ঘুমাচ্ছে তো।

ঘুম থেকে উঠতে বলো।

ওর কথার কী উত্তর দেব? আমি অনিককে বুকে জড়িয়ে ধরে নিজের কষ্ট কিছুটা দূর করার চেষ্টা করলাম।

মালতীদি এসে বলল, এখনও বসে আছিস কেন? চান করে তৈরি হয়ে নে বাবলু। তোকেই তো মুখাগ্নি করতে হবে। বিছানার ওপর ধুতি রাখা আছে। তুই একা পরতে পারবি নাকি তোর জামাইবাবু পরিয়ে দেবে?

আমি কোনো উত্তর না দিয়ে দিদির মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। দিদিকে কী বলব আমি বুঝতে পারছি না।

দিদি বলল, এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন ভাই? কিছু বলবি?

বললাম, না।

দিদি আবার বলল, আমি খবর পেয়ে পরশু চলে এসেছি। গতকাল থেকেই মা তোকে একনজর দেখার জন্য ছটফট করছিল। বারবার বলছিল, আমার বাবলু কই, আমি বাবলুকে দেখব...। কথা শেষ করতে পারল না মালতীদি। কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। যাওয়ার সময় আবার বলে গেল, তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে। ঠাকুরমশাই বসে আছে। শুদ্ধি পূজা শেষ করে শ্মশানে রওনা হতে হবে।

কীভাবে আমি শুদ্ধি পূজায় বসব! মায়ের অকল্যাণ হতে পারে ভেবে একবারও তাকে স্পর্শ করিনি। খুব ইচ্ছা করছে শেষবারের মতো মাকে বুকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলি, আমাকে তুমি ক্ষমা করো মা। আমি কীভাবে তোমার মুখাগ্নি করব! আমি যে কলমা পড়ে মুসলমান হয়েছি। চন্দনাকে বিয়ে করেছি মুসলিম ধর্মীয় রীতিতে। আমি কি আর তোমার সেই বাবলু আছি মা? কীভাবে তোমার মুখাগ্নি করব আমি?

মুখাগ্নি
মাজহারুল ইসলাম

[ গল্পটি দৈনিক সমকালের সাহিত্য ম্যাগাজিন কালের খেয়ায় মুদ্রিত ]

#মাজহারুল_ইসলাম_গল্প
#গল্পমাজহারুলইসলাম

প্রিয় লেখক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, অপেক্ষার প্রহর ফুরাবে শিগগিরই! আসছে আপনার প্রিয় 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যা। আজই হকারকে বলে রাখুন...
02/04/2024

প্রিয় লেখক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, অপেক্ষার প্রহর ফুরাবে শিগগিরই! আসছে আপনার প্রিয় 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যা।

আজই হকারকে বলে রাখুন।
কিংবা ঘরে বসে পেতে প্রি-অর্ডার করুন নিচের লিংকে :
https://www.rokomari.com/book/401588/onnodin

প্রিয় লেখক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, অপেক্ষার প্রহর ফুরাবে শিগগিরই। আসছে আপনার প্রিয় 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যা। আজই হকারকে বলে রাখুন...
01/04/2024

প্রিয় লেখক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, অপেক্ষার প্রহর ফুরাবে শিগগিরই। আসছে আপনার প্রিয় 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যা।

আজই হকারকে বলে রাখুন। কিংবা ঘরে বসে পেতে প্রি-অর্ডার করুন নিচের লিংকে :
https://www.rokomari.com/book/401588/onnodin

দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ঈদসংখ্যা মানে 'অন্যদিন'। ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত প্রথম ঈদসংখ্যা ছিল একটি মাইলফলক। বিষয় আর আঙ্গিক দুই...
31/03/2024

দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ঈদসংখ্যা মানে 'অন্যদিন'। ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত প্রথম ঈদসংখ্যা ছিল একটি মাইলফলক। বিষয় আর আঙ্গিক দুই বিবেচনাতেই ঈদসংখ্যার ধারণা আমূল পালটে দেয় 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যা। শুরুর সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে প্রতিবছর 'অন্যদিন' ছাড়িয়ে যাচ্ছে নিজেকে। এবারের ঈদসংখ্যাও তার ব্যতিক্রম নয়।

'অন্যদিন' ঈদসংখ্যার অন্যতম আকর্ষণ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের আঁকা প্রচ্ছদ। আটাশ বছর ধরে তিনি শুধু 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যার প্রচ্ছদ করছেন। এও এক ইতিহাস।

বিষয়বৈচিত্র্য আর উপস্থাপনার অভিনবত্ব নিয়ে আসছে 'অন্যদিন' ঈদসংখ্যা ২০২৪। দেশসেরা ঈদসংখ্যাটি ঘরে বসে পেতে আজই আপনার হকারকে বলে রাখুন!

শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পেল অন্যপ্রকাশ!অজস্র পাঠক-লেখক-শুভানুধ্যায়ীর ভালেবাসাধন্য 'অন্যপ্রকাশ' এবছর একুশে বইমেলার শ্রেষ্ঠপ...
03/03/2024

শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পেল অন্যপ্রকাশ!

অজস্র পাঠক-লেখক-শুভানুধ্যায়ীর ভালেবাসাধন্য 'অন্যপ্রকাশ' এবছর একুশে বইমেলার শ্রেষ্ঠ
প্যাভিলিয়ন নির্বাচিত হয়েছে। বাংলা একাডেমির এই পুরস্কার প্যাভিলিয়নের অঙ্গসজ্জায় নান্দনিকতার জন্য।প্যাভিলিয়নের নকশা করেছেন স্থপতি এস এম তাসবীর।

গতকাল, ২ মার্চ ২০২৪, মেলার শেষ দিনে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। বাংলা একাডেমি চত্বরে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কবি কামাল চৌধুরী, নবনিযুক্ত সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, এমপি এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন হিসাবে 'অন্যপ্রকাশ'-এর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন পরিচালক সিরাজুল কবীর চৌধুরী। মাননীয় উপদেষ্টার হাত থেকে সনদপত্র এবং মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন তিনি।

এ বছর ‘অন্যপ্রকাশ’ প্যাভিলিয়নের মূল সুর ছিল আমাদের ঐতিহ্যের অহংকার-- ‘রিকশা পেইন্টিং’। আমাদের এ ঐতিহ্য সম্প্রতি বিশ্বস্বীকৃতিও লাভ করেছে। বাংলাদেশের রিকশা ও রিকশা পেইন্টিং জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।অনন্য এই অর্জনের উদযাপনে তাই এ বছর ‘অন্যপ্রকাশ’ প্যাভিলিয়নের সজ্জায় থিম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে রিকশা পেইন্টিংকে।

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষসহ অগণিত পাঠক-লেখক-শুভানুধ্যায়ীকে আন্তরিক ধন্যবাদ তাদের নিরন্তর শুভ কামনার জন্য।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন? যুদ্ধের সময় তিনি কোথায় ছিলেন? যুদ্ধে কী ছিল ত...
21/02/2024

মুক্তিযুদ্ধের সময় সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন? যুদ্ধের সময় তিনি কোথায় ছিলেন? যুদ্ধে কী ছিল তাঁর ভূমিকা? এবং তিনি কি স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের কাছ থেকে গুলশানের বাড়িটি উপহার নিয়েছিলেন?

এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন কীর্তিমান কথাশিল্পী স্বকৃত নোমান ‘যুবতী রাধে, সৈয়দ হক ও আরও কথা’ বইয়ে। এছাড়াও বইটিতে রয়েছে আরও চমৎকার সব গদ্য। এ বই স্বকৃত নোমানের নিরন্তর লড়াইয়ের অংশ। মননের অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়াই, অজ্ঞানতার অন্ধকারের বিরুদ্ধে লড়াই, গুজবপ্রবণ বাঙালির গুজবপ্রবণতার বিরুদ্ধে লড়াই।

বইটি প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ। পাওয়া যাচ্ছে একুশে বইমেলায় অন্যপ্রকাশের প্যাভিলিয়নে। বাতিঘর কিংবা রকমারিতে অর্ডার করেও বইটি সংগ্রহ করা যাবে।
মূল্য ৪৮০ টাকা।

লেখকঃ স্বকৃত নোমান, ক্যাটাগরিঃ বইমেলা ২০২৪, মূল্যঃ 350.0, লিংকঃ www.rokomari.com/book/377053

আগুনডানা মেয়ে’ বইটি একুশে বইমেলায় অথবা রকমারিতে অর্ডার করলেই পাচ্ছেন লেখকের হাতে লেখা চিঠি।‘আগুনডানা মেয়ে’ এক জীবনজয়ী 'ফ...
12/02/2024

আগুনডানা মেয়ে’ বইটি একুশে বইমেলায় অথবা রকমারিতে অর্ডার করলেই পাচ্ছেন লেখকের হাতে লেখা চিঠি।

‘আগুনডানা মেয়ে’ এক জীবনজয়ী 'ফিনিক্স পাখি' নারীর গল্প। ২৫% ছাড়ে অর্ডার করতে ক্লিক করুন- https://rokshort.com/HEQGzShRJ
অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন 01519521971

লেখকঃ সাদাত হোসাইন, ক্যাটাগরিঃ সমকালীন উপন্যাস, মূল্যঃ 600.0, লিংকঃ www.rokomari.com/book/360030 , সার সংক্ষেপঃ মা যখন টুপ করে মরে গেলো আ....

এবারের বইমেলায় আমারও একখানা বই আসছে...😄প্রচ্ছদ▪️Anisuzzaman Sohel
11/02/2024

এবারের বইমেলায় আমারও একখানা বই আসছে...😄
প্রচ্ছদ▪️Anisuzzaman Sohel

আকর্ষণীয় অফারঃ অর্ডার করলেই পাচ্ছেন লেখক সাদাত হোসাইন এর হাতে লিখা চিঠি!দুই বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন এর...
07/02/2024

আকর্ষণীয় অফারঃ অর্ডার করলেই পাচ্ছেন লেখক সাদাত হোসাইন এর হাতে লিখা চিঠি!

দুই বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন এর নতুন উপন্যাস "আগুনডানা মেয়ে"

এক জীবনজয়ী 'ফিনিক্স পাখি' নারীর গল্প।

২৫% ছাড়ে অর্ডার করতে ক্লিক করুন- https://rokshort.com/HEQGzShRJ
অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন 01519521971

"আগুনের চেয়ে, ঢের পুড়েছে যে মেয়ে,
তার আছে আগুনের ডানা।
এ লড়াই জানে, মুক্তির মানে,
পাখি তাই সীমানা জানে না।"
~ আগুনডানা মেয়ে।

আগুনডানা মেয়ে (হার্ডকভার)
by সাদাত হোসাইন
TK. 600
লিংকঃ https://rokshort.com/HEQGzShRJ

অর্ডার করুন রকমারি ডট কমে।

একুশে বইমেলায় অন্যপ্রকাশ!
06/02/2024

একুশে বইমেলায় অন্যপ্রকাশ!

শুরু থেকেই পুরো সময়টা আমার কাছে মনে হচ্ছিল একটা স্বপ্ন। একটা অপার্থিব তন্দ্রাচ্ছন্ন স্বপ্ন। একটা অলৌকিক মোহনীয় সৌন্দর্য...
23/01/2024

শুরু থেকেই পুরো সময়টা আমার কাছে মনে হচ্ছিল একটা স্বপ্ন। একটা অপার্থিব তন্দ্রাচ্ছন্ন স্বপ্ন। একটা অলৌকিক মোহনীয় সৌন্দর্যের মাঝে সুরের এক ঐশ্বরিক ঝংকার! এই আকস্মিক ঘটনাটি আমার কাছে একটা স্বপ্ন হয়েই থাকবে। মানুষের জীবনে কিছু স্বপ্ন থাকে দীর্ঘশ্বাস হয়ে। নীরার সাথে আমার পরিচয় পর্বটুকু স্বপ্ন হয়েই থাক। ..
'ইনসমনিয়া'র প্রি-অর্ডার চলছে... রকমারি, বইপরী, বইফেরী, দরকারি, প্রজ্ঞাতে। আপনার পছন্দের বুকশপ থেকে আজই অর্ডার করুন। তাছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে অন্যপ্রকাশ প্যাভিলিয়নে।

Address

69/F Green Road, Panthapoth
Dhaka
1205

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Anyaprokash posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Anyaprokash:

Videos

Share

Category

Nearby media companies