Islam- The enlighten path of life

Islam- The enlighten path of life This page is designed to achieve complete Allah's satisfaction.
(3)

মুসলমান হয়েও যারা জান্নাতে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত থাকবে। হাদিসে উল্লেখ আছে ১৭ শ্রেনীর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।...
12/04/2022

মুসলমান হয়েও যারা জান্নাতে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত থাকবে। হাদিসে উল্লেখ আছে ১৭ শ্রেনীর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তারা যতই নেক আমল করুক না ক্যানো জান্নাত তাদের জন্য হারাম হয়ে যাবে। কাফির-বেদ্বীনরা তো চিরস্থায়ী জাহান্নামী।

যে ১৭ শ্রেনীর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে নাঃ

১। হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা লালিত-পালিত হয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সুনানে বাইহাকী, হাদীস নং ৫৫২০)

২। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত যুবাইর ইবনে মুতইম (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৫২৫)

৩। প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যার অত্যাচার থেকে প্রতিবেশীরা নিরাপদ নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬)

৪। মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, দাইউস ও পুরুষের বেশ ধারণকারীণী জান্নাতে যাবে নাঃ
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না : মাতা-পিতার অবাধ্য, দাইউস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীনস্থ নারীদের বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেয় না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলা।” (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস নং ২২৬)

৫। অশ্লীলভাষী ও উগ্রমেজাজী জান্নাতে যাবে নাঃ
হারেছা বিন ওহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “অশ্লীলভাষী ও উগ্রমেজাজী ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না।” (আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৬৮)

৬। অধীনস্থদেরকে ধোঁকাদানকারী শাসক জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত মা‘কাল বিন ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, “মুসলমানদের উপর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে, সে তার অধীনস্থদেরকে ধোঁকা দিয়েছে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৬১৮)

৭। অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কসম করে কোন মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন এবং জান্নাত হারাম করেন। এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদিও সামান্য কোন জিনিস হয়? তিনি বললেন, যদিও পিলু গাছের একটি ছোট ডাল হোক না কেন।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯৬)

৮। খোটাদানকারী, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপ জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেন, “উপকার করে খোটা দানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, সর্বদা মদপানকারী--এই তিনশ্রেণীর মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৫৫৭৭)

৯। চোগলখোর জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫১)

১০। অন্য পিতাকে যে নিজের পিতা বলে পরিচয় দেয় সে জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত সা‘দ ও আবু বাকরাহ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি জেনে শুনে নিজেকে অন্য পিতার সাথে সম্পর্কিত করে অর্থাৎ নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়, তার জন্য জান্নাত হারাম।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬২৬৯)

১১। গর্বকারী-অহংকারকারী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যার অন্তরে অনু পরিমাণ অহংকার রয়েছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩১)

১২। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নাফরমান জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবে, কিন্তু সে ব্যক্তি ব্যতীত যে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। সাহাবীগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কে অস্বীকার করেছে? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানী করে, সে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৭৩৭)

১৩। দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে ইলম অর্জনকারী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয় সেই ইল্মকে যে ব্যক্তি দুনিয়াবী কোন স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশ্যে শিক্ষা করে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।” (আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৭৯)

১৪। অকারণে তালাক কামনাকারীণী জান্নাতে যাবে নাঃ
হযরত সাওবান (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে মহিলা তার স্বামীর কাছে অকারণে তালাক কামনা করে, সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।” (জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ১১০৮)

১৫। মাথার চুলে কালো কলপ ব্যবহারকারী জান্নাতে যাবে না।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “শেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সীনার ন্যায় কালো কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।” (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৪৯৮৮)

১৬। রিয়াকারী জান্নাতে যাবে না (যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য কিছু করে)ঃ
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন ক্বারীকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতঃপর শহীদকে বীর-বাহাদুর উপাধি লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করার অপরাধে, ক্বারী সাহেবকে বড় ক্বারীর উপাধি ও সুখ্যাতি লাভের জন্য কিরাআত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের নিয়তে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫২৭)

১৭। ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবেঃ
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোন ওয়ারিসকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করলো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন।” (সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস নং ২৬৯৪)

مَنْ أَفْطَرَ يَوْمًا مِنْ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ وَلَا مَرَضٍ لَمْ يَقْضِهِ صِيَامُ الدَّهْرِ وَإِنْ صَامَهُ . حد...
24/03/2022

مَنْ أَفْطَرَ يَوْمًا مِنْ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ وَلَا مَرَضٍ لَمْ يَقْضِهِ صِيَامُ الدَّهْرِ وَإِنْ صَامَهُ . حديث ضعيف .

“যে ব্যক্তি কোন কারণ ছাড়া রমযানের একদিন সওম ভঙ্গ করল অথবা অসুস্থতা ব্যতীত, পুরো বছরেও তার কাযা হবে না, যদিও সে পুরো বছর সওম পালন করে”। হাদিসটি দুর্বল।

ইমাম বুখারি তার সহিহ গ্রন্থে হাদিসটি টিকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। রমযান অধ্যায়: (৪/১৯৪), হাদিসটি তিনি দুর্বল ক্রিয়া দ্বারা উল্লেখ করে বলেন: এ হাদিস আবূ হুরায়রা থেকে মারফূ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ইমাম আবূ দাউদ: (২৩৯৬), তিরমিযি: (৭২৩), ইবনু মাজাহ: (১৬৭২), ইবনু খুযাইমাহ: (৩/২৩৮), হাদিস নং: (১৯৮৮), আহমদ: (২/৩৭৬) প্রমুখগণ সাওরি ও শুবা থেকে, তারা উভয়ে হাবিব ইবনু আবি সাবেত থেকে, সে উমারা ইবনু উমাইর থেকে, সে আবূল মিতওয়াস থেকে, সে তার পিতা থেকে, সে আবূ হুরায়রা থেকে মুত্তাসিল সনদে উল্লেখ করেছেন।

তিরমিযি বলেন: এ সনদ ব্যতীত অন্য কোনভাবে আবূ হুরায়রার হাদিস জানতে পারেনি, আমি মুহাম্মদ (অর্থাৎ বুখারী) কে বলতে শুনেছি: আবূল মিতওয়াসের নাম ইয়াজিদ ইবনু মিতওয়াস, এ হাদিস ব্যতীত তার সনদে বর্ণিত অন্য কোন হাদিস সম্পর্কে জানি না।

ইবনু খুযাইমাহ তার সহিহ: (৩/২৩৮), গ্রন্থে হাদিস নং: (১৯৮৮)-তে বলেন: যদি হাদিসটি সহিহ হয়, তবুও আমি ইবনু মিতওয়াস ও তার পিতার পরিচয় জানি না।

ইবনু আব্দুল বার “তামহিদ”: (৭/১৭৩) গ্রন্থে বলেন: এ হাদিস দুর্বল, এ ধরণের হাদিস দ্বারা দলিল দেয়া যায় না।

আবূল মিতওয়াস সম্পর্কে তিনটি বক্তব্য পাওয়া যায়: আবূল মিতওয়াস, ইবনুল মিতওয়াস ও মিতওয়াস, সে একা এ হাদিস বর্ণনা করেছে। ইবনু হিব্বান বলেছেন: তার একার বর্ণনাকৃত হাদিস দ্বারা দলিল পেশ করা জায়েজ হবে না।

হাফেজ ইবনু হাজার “তাগলিক”: (৩/১৭১) ও “ফাতহুল বারি”: (৪/১৯১) গ্রন্থে বলেন: বুখারি তার “তারিখে” বলেছেন: আবূল মিতওয়াস একা এ হাদিস বর্ণনা করেছে, তার পিতা আবূ হুরায়রা থেকে শুনেছে কি-না বলতে পারি না।

আমার বক্তব্য, (অর্থাৎ ইবনু হাজার): এ হাদিসের আরেক বর্ণনাকারী হাবিব ইবনু আবি সাবেত (সাওরি ও শুবার উস্তাদ) সম্পর্কেও বিতর্ক রয়েছে, অতএব এ হাদিসে তিনটি দোষ বিদ্যমান: ইজতেরাব, আবূল মিতওয়াস সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং তার পিতার আবূ হুরায়রা থেকে শ্রবণ করার ব্যাপারে সন্দেহ। ইমাম বুখারির নিকট হাদিস শুদ্ধ হওয়ার জন্য তৃতীয় শর্তটি জরুরী।

আলবানি “তামামুল মিন্নাহ”: (পৃ.৩৯৬) গ্রন্থে বলেন: এ হাদিস দুর্বল, এ দুর্বলতার দিকে ঈঙ্গিত করে ইমাম বুখারি ويذكر বলেছেন। ইবনু খুযাইমাহ তার সহিহ গ্রন্থে এ হাদিস দুর্বল বলেছেন। ইমাম মুনাভির বর্ণনা মতে মুনযিরি, বগভি, কুরতুবি, যাহাবি ও দিমাইরি প্রমুখগণ হাদিসটি দুর্বল বলেছেন।

আলবানি তার “দায়িফাহ”: (২/২৮৩) গ্রন্থে বলেন: আবূল মিতওয়াস অপরিচিত বলে বুখারি প্রমুখগণ হাদিসটি দুর্বল বলেছেন।

হাদিস বিশারদদের উক্ত মতামত থেকে প্রমাণিত হয় যে, হাদিসটি দুর্বল, বরং অনেক আলেম বলেছেন: রমযানের দিনে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ইফতার করবে, সে তার বদলে একদিন কাযা করবে। এ হাদিসের ভিত্তিতে কেউ বলেননি রমযানের এক সওমের পরিবর্তে পুরো বছর সওম পালন করলেও আদায় হবে না, একমাত্র ইবনু মাসউদ ব্যতীত, যেমন বুখারি বলেছেন আবূ হুরায়রা বাদে শুধু ইবনু মাসউদ এ কথা বলেছেন।

ইমাম বুখারি তাদেরও উল্লেখ করেছেন, যারা বলে যে রমযানের এক সওমের পরিবর্তে এক দিন সওম পালন করবে। তিনি বলেন: সায়িদ ইবনুল মুসাইয়িব, শা’বি, ইবনু জুবাইর, ইবরাহিম, কাতাদাহ ও হাম্মাদ বলেছেন: তার পরিবর্তে এক দিন কাযা করবে।

ইমাম বুখারি যাদের কথা উল্লেখ করেছেন, তাদের বিস্তারিত সনদ যারা বর্ণনা করেছে, হাফেজ ইবনু হাজার তাদের সব সনদ উল্লেখ করেছেন। তাদের প্রত্যেকের প্রায় অভিন্ন অভিমত যে, ইস্তেগফারসহ একদিনের পরিবর্তে এক দিন সওম কাযা করবে। বরং ইমাম বগভি “শারহুস সুন্নাহ”: (৬/২৯০) গ্রন্থে বলেন: আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, তার স্থানে এক দিন কাযা করবে।

আজিম আবাদি “আউনুল মাবুদ”: (৭/২৯) গ্রন্থে বলেন: অধিকাংশ আলেমদের অভিমত হচ্ছে যে, রমযানের এক সওমের পরিবর্তে এক সওম যথেষ্ট, যদিও তার সওম ভঙ্গের দিনগুলো বড় ও কঠিন গরমের হয়, আর কাযা করার দিনগুলো হয় ছোট ও ঠাণ্ডা মৌসুমের।

মাসআলা: যদি কোন সওম পালনকারী রমযানের দিনে শরয়ী কোন কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস ব্যতীত সওম ভঙ্গ করে, যেমন পানাহার, অথবা ধুমপান, অথবা যৌনাঙ্গ ব্যতীত স্ত্রীর সাথে মেলা-মেশার কারণে বীর্য বের হল, অথবা স্ত্রীকে উপভোগ করার সময় বীর্য বের হল ইত্যাদি। তার উপর কাযা ওয়াজিব। ইমাম আহমদ ও ইমাম শাফীর এক ফতোয়া অনুযায়ী তাকে এক সওমের পরিবর্তে একটি সওম কাযা করতে হবে। কারণ ওযর থাকা সত্বেও আল্লাহ তা‘আলা অসুস্থ ও মুসাফির ব্যক্তির উপর কাযা ওয়াজিব করেছেন, তাই ওযরহীন এর উপর অবশ্যই কাযা ওয়াজিব হবে। অবশিষ্ট দিন তাকে পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে, যেহেতু সে কারণ ছাড়া সওম ভঙ্গ করেছে। তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। ইমাম আবূ হানিফা, মালেক ও ইমাম শাফীর এক ফতোয়া মোতাবেক তার উপর কাযাসহ কাফ্ফারা ওয়াযিব হবে। তবে কেউ যদি দিনের শুরু থেকে সওম না রাখে তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। সওমের কাফ্ফারা সূরা মুজাদালায় বর্ণিত জিহারের কাফ্ফারার অনুরূপ। অর্থাৎ একটি গোলাম আযাদ করা, অথবা লাগাতার ষাটটি সওম পালন করা, অথবা ষাটজন মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করা। (দেখুন: সূরা মুজাদালা:৩-৪)

23/03/2022
 #রমজান মাসের জাল, যঈফ ও মুনকার হাদীস সিরিজপ্রথম হাদীস: “রমযান মাসের প্রথম অংশ রহমত, মধ্যম অংশ মাগফেরাত ওশেষ অংশ জাহান্ন...
23/03/2022

#রমজান মাসের জাল, যঈফ ও মুনকার হাদীস সিরিজ
প্রথম হাদীস:

“রমযান মাসের প্রথম অংশ রহমত, মধ্যম অংশ মাগফেরাত ও
শেষ অংশ জাহান্নাম থেকে মুক্তির”। এ হাদিস মুনকার।

কোয়ান্টাম মেথড : একটি শয়তানী ফাঁদ।❌প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব।।💢মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্...
29/11/2021

কোয়ান্টাম মেথড :
একটি শয়তানী ফাঁদ।

প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব।।
💢
মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতে লিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নাম হ’ল কোয়ান্টাম মেথড। হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেডিটেশন’। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সাময়িক প্রশান্তির সাগরে ভাসিয়ে এক কল্পিত দেহভ্রমণের নাম দেওয়া হয়েছে Science of Living বা জীবন-যাপনের বিজ্ঞান।।

আকর্ষণীয় কথার ফুলঝুরিতে ভুলে টাকাওয়ালা সাধারণ শিক্ষিত মানুষেরা এদের প্রতারণার ফাঁদে নিজেদেরকে সঁপে দিচ্ছেন অবলীলাক্রমে। ব্যয় করছেন কথিত ধ্যানের পিছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঢেলে দিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। অথচ একটা রঙিন স্বপ্ন ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জুটছে না। অন্যদিকে মুসলমান যারা এদের দলে ভিড়ছে, তারা শিরকের মহাপাতকে লিপ্ত হয়ে দুনিয়া ও আখেরাত দু’টিই হারাচ্ছে। নিম্নে আমরা এদের আক্বীদা-বিশ্বাস ও কর্মনীতি যাচাই করবো ই-নশা-আল্লাহ।।

কোয়ান্টামের পঞ্চসূত্র হ’ল, প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য, প্রাচুর্য, সুখী পরিবার ও ধ্যান। বলা হয়েছে, কোয়ান্টাম প্রত্যেকের ধর্মবিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে। সুখী মানুষের সবটুকু প্রয়োজন পূরণের প্রক্রিয়াই রয়েছে কোয়ান্টামে। তাই কোয়ান্টামই হচ্ছে নতুন সহস্রাব্দে আধুনিক মানুষের জীবন যাপনের বিজ্ঞান’। অন্যান্য ডিগ্রীর ন্যায় এখানকার ধ্যান সাধনায় যারা উত্তীর্ণ হয়, তাদেরকে ‘কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট’ বলে শ্রুতিমধুর একটা ডিগ্রী দেওয়া হয়। তাদের প্রচার অনুযায়ী বাংলাদেশে ফলিত মনোবিজ্ঞানের পথিকৃৎ এবং আত্মউন্নয়নে ধ্যান পদ্ধতির প্রবর্তক প্রফেসর এম.ইউ. আহমাদ নাকি ক্লিনিক্যালি ডেড হওয়ার পরেও পুনরায় জীবন লাভ করেন শুধু ‘তাঁকে বাঁচতে হবে, তিনি ছাড়া দেশে নির্ভরযোগ্য মনোচিকিৎসক নেই’ তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জোরে’ (মহাজাতক, কোয়ান্টাম টেক্সট বুক, জানু. ২০০০, পৃঃ ২২-২৪)। অর্থাৎ হায়াত-মউতের মালিক তিনি নিজেই (নাউযুবিল্লাহ)।।

প্রথমে বলে রাখি, মানবরচিত প্রত্যেক ধর্মেই স্ব স্ব নিয়মে ধ্যান পদ্ধতি আছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, যোগী, সন্ন্যাসীদের সাধন-ভজন সম্বন্ধে আমরা কিছুটা জানি। আল্লাহ প্রেরিত ঈসায়ী ধর্মে সর্বপ্রথম সন্ন্যাসবাদের উদ্ভব হয়। যে বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

‘আর সন্ন্যাসবাদ, সেটাতো তারা নিজেরাই প্রবর্তন করেছিলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। আমরা তাদেরকে এ বিধান দেইনি। অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি। তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছিলো, তাদেরকে আমরা পুরস্কার দিয়েছিলাম। আর তাদের অধিকাংশ ছিল পাপাচারী’ (সূরা হাদীদ, আয়াত: ২৭)।

এখানে আল্লাহ তাদেরকে দুইভাবে নিন্দা করেছেন।

১. তারা আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে বিদ‘আত অর্থাৎ নতুন রীতির উদ্ভাবন করেছিলো।।
২. তারা নিজেরা যেটাকে আল্লাহর নৈকট্য মনে করে আবিষ্কার করেছিলো, সেটার উপরেও তারা টিকে থাকতে পারেনি।।

ইসলামের স্বর্ণযুগের পরে ভ্রষ্টতার যুগে মারেফতের নামে বিদ‘আতী পীর-ফকীররা নানাবিধ ধ্যান পদ্ধতি আবিষ্কার করে। অতঃপর কথিত ইশক্বের উচ্চ মার্গে পৌঁছে হুয়া হু করতে করতে যখন চক্ষু ছানাবড়া হয়ে ‘কাশফ’ বা ‘হাল’ হয়, তখন নাকি তাদের আত্মা পরমাত্মার মধ্যে লীন হয়ে যায়। একে তাদের পরিভাষায় ফানা ফিল্লাহ বা বাক্বা বিল্লাহ বলে। এরাই ছূফী ও পীর-মাশায়েখ নামে এদেশে পরিচিত। অথচ এইসব মারেফতী তরীকার কোন অনুমোদন ইসলামে নেই।।

ধ্যানকে কোয়ান্টামের পরিভাষায় বলা হয় ‘মেডিটেশন’ (Medetation)। যার প্রথম ধাপ হ’ল ‘শিথিলায়ন’ যা মনের মধ্যে ধ্যানাবস্থা সৃষ্টি করে। আর শেষ ধাপ হ’ল মহা চৈতন্য (Super Consciousness)। যখন তারা বস্ত্তগত সীমা অতিক্রম করে মহা প্রশান্তির মধ্যে লীন হয়ে যায়। যদিও এর কোন সংজ্ঞা তাদের বইতে সুস্পষ্টভাবে নেই।।

এক্ষণে কোয়ান্টামের সাথে অন্যদের পার্থক্য এই যে, অন্যেরা স্ব স্ব ধর্মের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টি করেছে ও স্ব স্ব ধর্মের নামেই পরিচিতি পেয়েছে। পক্ষান্তরে কোয়ান্টাম মেথড সকল ধর্ম ও বর্ণের লোকদের নতুন ধ্যানরীতিতে জমা করেছে। খানিকটা সম্রাট আকবরের দ্বীনে এলাহীর মত। তখন আবুল ফযল ও ফৈযীর মত সেকালের সেরা পন্ডিতবর্গের মাধ্যমে সেটা চালু হয়েছিল মূলতঃ রাজনৈতিক কারণে। আর এ যুগে কিছু উচ্চ শিক্ষিত সুচতুর লোকদের মাধ্যমে এটা চালু হয়েছে ইসলাম থেকে মানুষকে সরিয়ে নেবার জন্যে এবং শিক্ষিত শ্রেণীকে বিশ্বাসে ও কর্মে পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ বানাবার জন্যে। যাতে ভবিষ্যতে এদেশ তার ইসলামী পরিচিতি হারিয়ে সেক্যুলার দেশে পরিণত হয়।।

মুনি-ঋষিরা ধ্যান করে তাদের ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের জন্য। পক্ষান্তরে কোয়ান্টামে ধ্যান করা হয় স্ব স্ব ‘অন্তর্গুরু’কে পাওয়ার জন্য। যেমন বলা হচ্ছে, ‘অন্তর্গুরুকে পাওয়ার আকাংখা যত তীব্র হবে, তত সহজে আপনি তার দর্শন লাভ করবেন। এ ব্যাপারে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা হয়েছে কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েটদের' (পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৪৭)।।

যেমন একটি ঘটনা বলা হয়েছে, ‘ছেলে কোলকাতায় গিয়েছে। দু’দিন কোন খবর নেই। বাবা কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট। মাগরিবের নামাজ পড়ে মেডিটেশন কমান্ড সেন্টারে গিয়ে ছেলের বর্তমান অবস্থা দেখার চেষ্টা করতেই কোলকাতার একটি সিনেমা হলের গেট ভেসে এল। ছেলে সিনেমা হলের গেটে ঢুকছে। বাবা ছেলেকে তার উদ্বেগের কথা জানালেন। বললেন শিগগীর ফোন করতে’ (পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৪১)। এমনিতরো উদ্ভট বহু গল্প তারা প্রচার করেছেন।।

এক্ষণে আমরা দেখব ইসলামের সাথে এর সম্পর্ক :

১. এটি তাওহীদ বিশ্বাসের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং পরিষ্কারভাবে শিরক। তাওহীদ বিশ্বাস সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ কেন্দ্রিক। ইসলামের সকল ইবাদতের লক্ষ্য হ’ল আল্লাহর দাসত্ব ও রাসূল (ﷺ) এর আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা ও পরকালে মুক্তি লাভ করা। পক্ষান্তরে কোয়ান্টামের ধ্যান সাধনার লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া। যা আল্লাহ থেকে সরিয়ে মানুষকে তার প্রবৃত্তির দাসত্বে আবদ্ধ করে। এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন,

‘আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে তার প্রবৃত্তিকে ইলাহ বানিয়েছে? আপনি কি তার যিম্মাদার হবেন’? ‘আপনি কি ভেবেছেন ওদের অধিকাংশ শুনে বা বুঝে? ওরা তো পশুর মত বা তার চাইতে পথভ্রষ্ট’ (সূরা ফুরক্বান, আয়াত: ৪৩-৪৪)।।

মূলতঃ ঐ অন্তর্গুরুটা হ’ল শয়তান। সে সর্বদা তাকে রঙিন স্বপ্নের মাধ্যমে তার দিকে প্রলুব্ধ করে।।

২. তারা বলে, 'মনকে প্রশান্ত করার মতো নামাজ যাতে আপনি পড়তে পারেন সেজন্যই মেডিটেশন দরকার। কেননা নামাজের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হুযুরিল ক্বালব, একাগ্রচিত্ততা। এটা কিভাবে অর্জিত হয়, তা এখানে এলে শেখা যায়’ (প্রশ্নোত্তর ১৪২৭)।

জবাব : এটার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হ’ল সালাত। এর বাইরে কোন কিছুর অনুমোদন ইসলামে নেই। আল্লাহ বলেন,

"তুমি সালাত কায়েম কর আমাকে স্মরণ করার জন্য" (সূরা ত্বোয়াহা, আয়াত: ১৪)।।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন সংকটে পড়তেন তখন সালাতে রত হ’তেন (আবুদাঊদ হা/১৩১৯)। তিনি বলেছেন, 'তোমরা সালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে দেখছো’ (বুখারী হা/৬৩১)। যারা খুশু-খুযুর সাথে ফরয, নফল ও তাহাজ্জুদ সালাত নিয়মিতভাবে আদায় করে, তাদেরকেই আল্লাহ সফলকাম মুমিন বলেছেন (মুমিনূন ১-২)। আর সালাতে ধ্যান করা হয় না। বরং একমনে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার সাথে একান্তে আলাপ করে (বুখারী হা/৫৩১)।।

সর্বোচ্চ শক্তির কাছে নিজের দুর্বলতা ও নিজের কামনা বাসনা পেশ করে সে হৃদয়ে সর্বোচ্চ প্রশান্তি লাভ করে এবং নিশ্চিত আশাবাদী হয়। অথচ মেডিটেশনের কথিত অন্তর্গুরুর কোন ক্ষমতা নেই। তার সাধনায় নিশ্চিত আশাবাদের কোন প্রশ্নই ওঠে না। কেননা ওটা তো স্রেফ কল্পনা মাত্র। সালাতে আল্লাহর ইবাদত করা হয়। পক্ষান্তরে মেডিটেশনে অন্তর্গুরুর ইবাদত করা হয়। একটি তাওহীদ, অপরটি শিরক। দু’টিকে এক বলা দিন ও রাতকে এক বলার সমান। যা চরম ধৃষ্টতার নামান্তর।।

৩. তারা বলে, কোয়ান্টাম মেডিটেশনের জন্য ধর্ম বিশ্বাস কোন যরূরী বিষয় নয়। ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্মের সাথে এর কোন বিরোধ নেই। তাদের কার্যাবলীতে এর প্রমাণ রয়েছে। যেমন, ‘এখন কোয়ান্টাম শিশু কাননে রয়েছে ১৫টি জাতিগোষ্ঠীর চার শতাধিক শিশু। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, ক্রামা, খ্রিষ্টান, প্রকৃতিপূজারী সকল ধর্মের শিশুরাই যার যার ধর্ম পালন করছে। আর এক সাথে গড়ে উঠছে আলোকিত মানুষ হিসাবে’ (শিশু কানন)।

জবাব : মানুষকে সকল ধর্ম থেকে বের করে এনে কোয়ান্টামের নতুন ধর্মে দীক্ষা নেবার ও কোয়ান্টাম নেতাদের গোলাম বানানোর চমৎকার যুক্তি এগুলি। কেননা অন্তর্গুরুর ব্যাখ্যায় তারা বলেছেন, আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর হতে গেলে একজন আলোকিত গুরুর কাছে বায়াত বা দীক্ষা নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া আধ্যাত্মিকতার সাধনা এক পিচ্ছিল পথ। যেকোন সময়ই পা পিছলে পাহাড় থেকে একেবারে গিরিখাদে পড়ে যেতে পারেন’ (টেক্সটবুক, পৃঃ ২৪৭)।।

অর্থাৎ এরা ‘আলোকিত মানুষ’ বানাচ্ছে না। বরং ইসলামের আলো থেকে বের করে এক অজানা অন্ধকারে বন্দী করছে। যার পরিণাম জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা আল্লাহ বলেন,

‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করবে, তা কবুল করা হবে না। ঐ ব্যক্তি আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫)।

রাসূল (ﷺ) বলেন, আমি তোমাদের কাছে একটি উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে এসেছি’ (আহমাদ, মিশকাত হা/১৭৭)। অতএব ইসলামের প্রকৃত অনুসারীরাই কেবল আলোকিত মানুষ। বাকী সবাই অন্ধকারের অধিবাসী।

৪. তারা বলে, বহু আলেম আমাদের মেডিটেশন কোর্সে অংশগ্রহণ করেন এবং তারা এর সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নেই বলেছেন।।

জবাব : অল্প জ্ঞানী অথবা কপট বিশ্বাসী ও দুনিয়াপূজারী লোকেরাই চিরকাল ইসলামের ক্ষতি করেছে। আজও করছে। ওমর (রাঃ) বলেন, ইসলামকে ধ্বংস করে তিনটি বস্ত্ত : (১) আলেমদের পদস্খলন (২) আল্লাহর কিতাবে মুনাফিকদের ঝগড়া এবং (৩) পথভ্রষ্ট নেতাদের শাসন’ (দারেমী)। মনে রাখা আবশ্যক যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর জীবদ্দশায় ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। অতএব যা তাঁর ও তাঁর সাহাবীগণের আমলে দ্বীন হিসাবে গৃহীত ছিল, কেবলমাত্র সেটাই দ্বীন হিসাবে গৃহীত হবে। তার বাইরে কোন কিছুই দ্বীন নয়।।

৫. মেডিটেশন পদ্ধতি নিজের উপরে তাওয়াক্কুল করতে বলে এবং শিখানো হয় যে, ‘তুমি চাইলেই সব করতে পার’। এরা হাতে মূল্যবান ‘কোয়ান্টাম বালা’ পরে ও তার উপরে ভরসা করে।।

জবাব : ইসলাম মানুষকে মহাশক্তিধর আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে শিখায় এবং আল্লাহ যা চান তাই হয়। এর মাধ্যমে মুমিন নিশ্চিন্ত জীবন লাভ করে ও পূর্ণ আত্মশক্তি ফিরে পায়। আর ইসলামে এ ধরনের ‘বালা’ পরা ও তাবীয ঝুলানো শিরক (ছহীহাহ হা/৪৯২)।।

৬. তারা বলেন, শিথিলায়ন প্রক্রিয়ায় মানুষের মধ্যে এমন এক ক্ষমতা তৈরী হয়, যার দ্বারা সে নিজেই নিজের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে পারে। এজন্য একটা গল্প বর্ণনা করা হয়েছে যে, এক ইঞ্জিনিয়ার সপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করার মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সে ডিভি ভিসা পেয়ে গেল। তারপর সেখানে ভাল একটা চাকুরীর জন্য মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সেখানে যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই উন্নতমানের একটা চাকুরী পেয়ে গেল’ (টেক্সট বুক পৃঃ ১১৫)।।

জবাব : ইসলাম মানুষকে তাকদীরে বিশ্বাস রেখে বৈধভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে বলে। অথচ কোয়ান্টাম সেখানে আল্লাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে কথিত মনছবির পূজা করতে বলে।।

৭. কোয়ান্টামের মতে রোগের মূল কারণ হ’ল মানসিক। তাই সেখানে মনছবি বা ইমেজ থেরাপি ছাড়াও ‘দেহের ভিতরে ভ্রমণ’ নামক পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের নানা অঙ্গের মধ্য দিয়ে কাল্পনিক ভ্রমণ করতে বলা হয়। এতে সে তার সমস্যার স্বরূপ সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করে এবং নিজেই কম্যান্ড সেন্টারের মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। যেমন, একজন ক্যান্সার রোগী তার ক্যান্সারের কোষগুলিকে সরিষার দানা রূপে কল্পনা করে। আর দেখে যে অসংখ্য ছোট ছোট পাখি ঐ সরিষাদানাগুলো খেয়ে নিচ্ছে। এভাবে আস্তে আস্তে সর্ষে দানাও শেষ, তার ক্যান্সারও শেষ’ (টেক্সট বুক পৃঃ ১৯৪)।

৮. এদের শোষণের একটি হাতিয়ার হ’ল ‘মাটির ব্যাংক’। যে নিয়তে এখানে টাকা রাখবেন, সে নিয়ত পূরণ হবে। প্রথমবারে পূরণ না হ’লে বুঝতে হবে মাটির ব্যাংক এখনো সন্তুষ্ট হয়নি। এভাবে টাকা ফেলতেই থাকবেন। কোন মানত করলে মাটির ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। পূরণ না হলে অর্থের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এখানে খাঁটি সোনার চেইন বা হীরার আংটি দিতে পারেন। ইমিটেশন দিলে মানত পূরণ হবে না (প্রশ্নোত্তর)। এর জন্য একটা গল্প ফাঁদা হয়েছে। যেমন, ‘মধ্যরাতে উঠে মাটির ব্যাংকে পাঁচশত টাকা রাখার সাথে সাথে মুমূর্ষু ছেলে সুস্থ হয়ে গেল’ (দুঃসময়ের বন্ধু..)।

প্রিয় পাঠক! বুঝতে পারছেন, কত সুচতুরভাবে মানুষকে আল্লাহ থেকে সরিয়ে নিয়ে তাদের কম্যান্ড সেন্টারে আবদ্ধ করা হচ্ছে এবং সেই সাথে মাটির ব্যাংকে টাকা ও গহনা রাখার ও তা কুড়িয়ে নেবার চমৎকার ফাঁদ পাতা হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে রোগ ও তা আরোগ্য দানের মালিক আল্লাহ। আল্লাহর হুকুম আছে বলেই মুমিন ঔষধ খায়। ঔষধ আরোগ্যদাতা নয়। বরং আল্লাহ মূল আরোগ্যদাতা। এই বিশ্বাস তাকে প্রবল মানসিক শক্তিতে শক্তিমান করে তোলে। এজন্য তাকে মেডিটেশন বা কম্যান্ড সেন্টারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মাটির ব্যাংকে টাকা রাখারও দরকার হয় না। বরং গরীবকে ছাদাক্বা দিলে তার গোনাহ মাফ হয় (মিশকাত হা/২৯)।

৯. অন্যান্য বিদ‘আতীদের ন্যায় এরাও কুরআন হাদীসের অপব্যাখ্যা করেছে মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে দলে ভিড়ানোর জন্য। যেমন-

(ক) ‘সকল ধর্মই সত্য’ তাদের এই মতবাদের পক্ষে সূরা কাফেরূনের ‘লাকুম দ্বীনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন’ শেষ আয়াতটি ব্যবহার করেছে। যেন আবু জাহলের দ্বীনও ঠিক, মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর দ্বীনও ঠিক। এই অপব্যাখ্যা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকরা ও তাদের পদলেহীরা করে থাকে। কোয়ান্টামের লোকেরাও করছে। অথচ ইসলামের সারকথা একটি বাক্যেই বলা হয়েছে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। একথার মধ্যে সকল ধর্ম ও মতাদর্শকে অস্বীকার করা হয়েছে। কোয়ান্টামের অন্তর্গুরু নামক ইলাহটিকেও বাতিল করা হয়েছে।

(খ) তারা বলেন মেডিটেশন একটি ইবাদাত। যা রাসূল (ছাঃ) হেরা গুহায় করেছেন’। অথচ এটি স্রেফ তোহমত বৈ কিছু নয়। নিঃসঙ্গপ্রিয়তা আর মেডিটেশন এক নয়। তাছাড়া নবী হওয়ার পরে তিনি কখনো হেরা গুহায় যাননি। ছাহাবায়ে কেরামও কখনো এটি করেননি।

(গ) তারা সূরা জিন-এর ২৬ ও ২৭ আয়াতের অপব্যাখ্যা করে বলেছেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা গায়েবের খবর জানাতে পারেন। অতএব যে যা জানতে চায় আল্লাহ তাকে সেই জ্ঞান দিয়ে দেন’ (প্রশ্নোত্তর ১৭৫৩)। অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারু নিকট প্রকাশ করেন না। এ সময় তিনি সামনে ও পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন’। অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর রাসূলের নিকট ‘অহি’ প্রেরণ করেন এবং তাকে শয়তান থেকে নিরাপদ রাখেন। এই ‘অহি’-টাই হ’ল গায়েবের খবর, যা কুরআন ও হাদীছ আকারে আমাদের কাছে মওজুদ রয়েছে। রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পর ‘অহি’-র আগমন বন্ধ হয়ে গেছে। অতএব কোয়ান্টামের গুরুরা চাইলেও গায়েবের খবর জানতে পারবেন না।

(ঘ) তারা সূরা বুরূজ-এর বুরূজ অর্থ করেন ‘রাশিচক্র’। যাতে আল্লাহকে বাদ দিয়ে রাশিচক্র অনুযায়ী মানুষের ভাল-মন্দ ও শুভাশুভ নির্ধারণের বিষয়টি তাদের শিষ্যদের মনে গেঁথে যায়। অথচ এটি হিন্দু ও তারকা পূজারীদের শিরকী আক্বীদা মাত্র।

(ঙ) তারা সূরা আলে ইমরানের ১৯১ আয়াতটি তাদের আবিষ্কৃত মেডিটেশনের পক্ষে প্রমাণ হিসাবে দাঁড় করিয়েছেন (প্রশ্নোত্তর ১৭৫৩)। ঐ সাথে একটি জাল হাদীছকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছেন যে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সৃষ্টি সম্পর্কে এক ঘণ্টার ধ্যান ৭০ বছরের নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম’ (প্রশ্নোত্তর ১৭২৪)। অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর সৃষ্টি বিষয়ে গভীর গবেষণা তাকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনায় উদ্বুদ্ধ করে’। কোয়ান্টামের কথিত অন্তর্গুরুর কাছে যেতে বলে না। আর হাদীছটি হ’ল জাল। যা আদৌ রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী নয়। কোন কোন বর্ণনায় ৬০ বছর ও ১০০০ বছর বলা হয়েছে’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/১৭১)।

পরিশেষে বলব, কোয়ান্টাম মেথডের পূরা চিন্তাধারাটাই হ’ল তাওহীদ বিরোধী এবং শিরক প্রসূত। যা মানুষের মাথা থেকে বেরিয়ে এলেও এর মূল উদ্গাতা হ’ল শয়তান। মানুষকে জাহান্নামে নেবার জন্য মানুষের নিকট বিভিন্ন পাপকর্ম শোভনীয় করে পেশ করার ক্ষমতা আল্লাহ তাকে দিয়েছেন (সূরাহিজর ৩৯)। তবে সে আল্লাহর কোন মুখলেছ বান্দাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না (হিজর ৪০)।।

শয়তান নিজে অথবা কোন মানুষের মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে। যেমন হঠাৎ করে শোনা যায়, অমুক স্থানে অমুকের স্বপ্নে পাওয়া শিকড়ে বা তাবীযে মানুষের সব রোগ ভাল হয়ে যাচ্ছে। ফলে দু’পাঁচ মাস যাবত দৈনিক লাখো মানুষের ভিড় জমিয়ে হাযারো মুসলমানের ঈমান হরণ করে হঠাৎ একদিন ঐ অলৌকিক চিকিৎসক উধাও হয়ে যায়। এদের এই ধোঁকার জালে আবদ্ধ হয়েছিল সর্বপ্রথম নূহ (আঃ)-এর কওম। যারা পরে আল্লাহর গযবে ধ্বংস হয়ে যায়। আমরাও যদি শিরকের মহাপাপ থেকে দ্রুত তওবা না করি, তাহ’লে আমরাও তাঁর গযবে ধ্বংস হয়ে যাব। অতএব হে মানুষ! সাবধান।।

মূলপাতাঃ https://at-tahreek.com/article_details/7258

নিচের লিংক থেকে লিফলেট ডাউনলোড করুন এবং বেশী বেশী প্রচার করুন।।

http://ahlehadeethbd.org/leaflets/pocharpotro_5_kohantam_mathord_akte_soytane_fad.pdf
সংগ্রহীত....

ডিপ্রেশন কী?উত্তরঃ আপনি এবং আপনার স্রষ্টার মধ্যকার দুরত্বের নামই হল ডিপ্রেশন।খাদিজা(রা:) খুব ধনী ঘরের মেয়ে ছিলেন। বিলাসি...
16/08/2021

ডিপ্রেশন কী?

উত্তরঃ আপনি এবং আপনার স্রষ্টার মধ্যকার দুরত্বের নামই হল ডিপ্রেশন।

খাদিজা(রা:) খুব ধনী ঘরের মেয়ে ছিলেন। বিলাসিতার মধ্যেই বড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। নবিজী(স:) এর ইসলাম প্রচারের কারণে অন্যান্য গোত্র যখন কুরাইশদের অবরোধ দিল তখন নবিজী আর খাদিজা (রা:)এর গোত্রের শিশুদের আড়াইবছর তীব্র কষ্টে থাকতে হয়েছিলো।
এমনকী ক্ষুধার তাড়নায় গাছের পাতা পর্যন্ত খেয়েছিলেন।

হযরত বিলাল (রা) ছিলেন হাবশী ক্রীতদাস। ইসলাম কবুলের অপরাধে তাকে মরুভূমির রোদে ফেলে রাখা হতো, তার গায়ের চর্বি গলে যেতো।তারপরও তার মুখে লেগে থাকতো প্রশান্তি, রোদের তেজ তাঁর কালিমার তেজের কাছে পরাজিত হতো।

ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা তাঁর জীবনে আট বছর জেল খেটেছেন। জেলেই মরেছেন। অথচ তিনি কী বলেছিলেন, জানেন?
বলেছিলেন, দুনিয়াতেও একটা জান্নাত আছে, আমি আমার হৃদয়ে সে জান্নাতের খোঁজ পেয়েছি।

গান শোনা, মুভি দেখা, মোটিভেশনাল বই পড়া বা মানুষের সাথে আড্ডা দিয়েই যদি ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি মিলত তবে গায়ক লিনকিন পার্ক আত্মহত্যা করলেন কেন? কিংবা অভিনেতা সুশান্ত শিং সুইসাইড করলেন কেন?মোটিভেশন গুরু ডেল কার্নেগি আত্মহত্যা করেছিলেন কেন?

আল্লাহ্ তাআলা, ইসলাম, ইমান আর ডিপ্রেশন এক অন্তরে একসঙ্গে থাকতে পারে না। যদি আপনার মনে বিন্দুমাত্র ডিপ্রেশন থাকে, তার মানে আপনার হৃদয়ে আল্লাহ্ নাই, বরং ওখানে শয়তান বাসা বেঁধেছে।

যারা ডিপ্রেশনে পড়ে বা আত্মহত্যা করে, মোটা দাগে দেখবেন, এরা অজ্ঞেয়বাদী নাহয় অবিশ্বাসী। কোনো মুসলিম যদি ডিপ্রেশনের স্বীকার হন, তাহলে আপনার ঈমান নিয়ে ভেবে দেখার সময় এসেছে।

এবার অনেকেই তেড়ে এসে বলবেন, আমার পরিস্থিতি আপনি বুঝবেন না, আমার ফ্যামিলি প্রবলেম, মানি প্রবলেম, স্বামী প্রবলেম.....আরে ভাই থামেন তো!!

কোন পরিস্থিতির গল্প শোনান আপনি? বউ ভালো না? হযরত লূত (আ) এর স্ত্রীও ভালো ছিলো না। হযরত আছিয়া (আ) এর স্বামী ছিলেন কে জানেন? ফেরাউন।
ফেরাউনকে ঈশ্বর না মানার অপরাধে তাঁকে টুকরো করে কেটে গরম তেলের মধ্যে ডোবানো হয়েছিল৷

আরও শুনবেন? চেষ্টা করেও কিছু হচ্ছে না তাই ডিপ্রেশন?

হযরত নুহ (আ) প্রায় হাজার বছর দাওয়াত দিয়ে আশি জনকে দাওয়াত কবুল করাতে পেরেছিলেন।

আপনজন কষ্ট দিয়েছে? অপবাদ দিয়েছে?

ইউসুফ (আ) এর ভাইয়েরা তাকে কুয়ার মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে গেলো। ব্যবসায়ীর বৌ জুলেখার সাথে ব্যভিচার না করায় উল্টো অপবাদ দিয়ে সাত বছরের জেল দেওয়া হলো!!

এরপরও আপনি আমাকে কোন পরিস্থিতির গল্প শোনাবেন?

চলুন দেখি কুরআন কী বলছে-

হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যখন বার্ধক্যে উপনীত, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একদল ফেরেশতা এসে তখন তাঁকে এক জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ শোনাল। বিস্ময়ভরা কণ্ঠে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম জিজ্ঞেস করলেন- আমাকে তো বার্ধক্য পেয়ে বসেছে, এরপরও তোমরা আমাকে এ সুসংবাদ দিচ্ছ?! কীসের ভিত্তিতে তোমরা এ সুসংবাদ দিচ্ছ? ফেরেশতারা বলল, আমরা তো সত্য কথাই বলছি। আপনাকে সত্য সুসংবাদই দিচ্ছি। বার্ধক্য আপনাকে স্পর্শ করেছে করুক, এ বৃদ্ধ বয়সেই আপনার সন্তান হবে। আপনি নিরাশদের দলে যাবেন না। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তাদের কথার জবাবে বললেন, পথভ্রষ্টরা ছাড়া আর কে আপন প্রতিপালকের রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে? (সূরা হিজর, ৫৩-৫৬ নং আয়াত দ্রষ্টব্য)

যারা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় তাদেরকে বলা হলো পথভ্রষ্ট!! এরপরও আপনি আমাকে ডিপ্রেশনের গল্প শোনাবেন?

আরেকটা গল্প শুনে যান-

হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের সর্বাধিক প্রিয় সন্তান ছিলেন হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম। কিন্তু তাঁর ভাইয়েরা বাবার এই আদরকে সহজে মেনে নিতে পারেনি তাই কৌশলে তাঁকে একদিন বাবার কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে কূপে ফেলে দিল।

আল্লাহর অসীম কুদরতে কূপ থেকে উঠে এসে একদিন তিনি মিশরের ধনভাণ্ডারের দায়িত্বশীল হলেন। আর যে ভাইয়েরা তাঁকে নিয়ে চক্রান্ত করেছিল, দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে তারা খাবার আনতে হাজির হলো তাঁর কাছে। এরপর এক কৌশলে তিনি তাঁর সহোদর বিনইয়ামীনকে নিজের সঙ্গে রেখে দিলেন।

দুই ছেলে হারিয়ে বাবা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম অন্য ছেলেদের বললেন, (তরজমা) ‘হে আমার ছেলেরা! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সন্ধান করো। তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চিত জেনো, আল্লাহর রহমত থেকে তো কাফের ছাড়া অন্য কেউ নিরাশ হতে পারে না।’ {সূরা ইউসুফ (১২) : ৮৭}

শেষ লাইনটা আবার পড়েন তো!!
শুধু তাই না আল্লাহর রহমত থেকে ডিপ্রেসড হয়ে যাওয়া কবিরা গুনাহ।

এই নিন হাদিস-

বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, ‘হাবরু হাযিহিল উম্মাহ’-এই উম্মতের বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহ হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে র্শিক করা, আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়া আর আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে পড়া'৷

(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৯৭০১)

গান বাজনা বা মুভি, বই আপনাকে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি দিতে পারবে না। ডিপ্রেশনের একমাত্র চিকিৎসা হলো আল্লাহর দিকে ফেরত আসা। আপনার শয়তান যখন আপনাকে বলছে তোর অনেক কষ্ট, তোর চেয়ে কষ্টে কেউ নাই, তখন আল্লাহ্ তাআলা বলছেন-

"কষ্টের সঙ্গেই তো স্বস্তি আছে। অবশ্যই কষ্টের সঙ্গেই স্বস্তি আছে৷"

[সূরা আলাম নাশরাহ (৯৪) : ৫-৬]

শেষকথা:

প্রিয় অভিনেতা সুশান্ত শিং রাজপুত সুইসাইড করেছেন অথচ উনার ছিচোড়ে মুভিটা ছিলো মোটিভেশনাল, সুইসাইড বিরোধী একটা মুভি। মুভি তাঁকে ডিপ্রেশন থেকে ফেরাতে পারলো না।লাস্ট ছয়মাস উনি চিকিৎসাও নিচ্ছিলেন, লাভ হলো না। শরীরের রোগের চিকিৎসা আছে, মনের রোগের ভ্যাকসিন চিকিৎসা বিজ্ঞানে নাই।

এখন পর্যন্ত যার মোটিভেশনাল বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করা হয়, সেই ডেল কার্নেগি শেষ জীবনে আত্মহত্যা করেছেন। মোটিভেশনের ফেরিওয়ালা নিজের বেঁচে থাকার এতটুকু মোটিভেশন জোগাড় করতে পারলেন না!!

লিনকিন পার্ক। যে ব্যান্ড এর গান শুনে আমাদের রাত্রি ভোর হয়, প্রবল উৎসাহ পাই, অনেকে যার গানে বেঁচে থাকার উপাদান খুঁজেন, সেই ব্যান্ড এর নামকরা শিল্পী নিজের গানে নিজের বাঁচার উপাদান খুঁজে পেলেন না। শেষপর্যন্ত আত্মহত্যা করলেন।

চার্লি চ্যাপলিন ।
সর্বকালের সেরা কমেডিয়ান। পৃথিবীর নানান প্রান্তের মানুষকে হাসানো মানুষটির বোকা হাসির আড়ালে কী ব্যথা লুকিয়ে ছিলো, কেউ জানলো না। নিজেকে শেষ করে দিলেন।

তাহলে সমাধান কী?

জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই অন্তরের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়।

[১৩:২৮]

আল্লাহ্ তাআলার দিকে ফিরে আসুন।
কুরআনের দিকে ফিরে আসুন।

যে অন্তরে রাহমানুর রাহীমের ভালোবাসা থাকে, যে হৃদয়ে আল্লাহ্ থাকেন, সে হৃদয়ে ডিপ্রেশন থাকতে পারে না।

কোনভাবেই না।

20/07/2021

➲ বলা হল দুরুদ পাঠ করার জন্য, আর আমরা শুরু করলাম মিলাদ পাঠ!
➲ বলা হল টাকা দিয়ে যাকাত আদায় করতে, আর আমরা শুরু করলাম লুঙ্গি-শাড়ি বন্টন!
➲ বলা হল খাদ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে, আর আমরা শুরু করলাম টাকা দেয়া!
➲ বলা হল আউয়াল ওয়াক্তে সালাত শুরু করতে, আর আমরা শুরু করলাম দেরী পড়া!
➲ বলা হল মাগরিবের ফরজের পূর্বে ২ রাকাত সুন্নতের, আর আমরা শুরু করলাম ওয়াক্তের সাথে সাথ মাগরিবের ফরজ পড়া। যাতে করে কেউ নফল পড়তে না পারে!
➲ বলা হল ঝাড়-ফুঁক করতে,(কোন মানুষের তৈরি কিছু দিয়ে নয়) আমরা শুরু করলাম তাবিজ ঝুলানো!
➲ বলা হল সালাতের ভিতরে দোআ করতে, আর আমরা শুরু করলাম সালাত শেষ করে দোআ করা!
➲ বলা হল সালাত শেষে তাসবীহ পাঠ করার জন্য, আর আমরা শুরু করলাম সম্মিলিত মোনাজাত!
➲ বলা হল দ্রুত ইফতার করার জন্য, আর আমরা শুরু করলাম দেরীতে করা!
0p➲ বলা হল শবে কদর তালাশ করার জন্য, আর আমরা তালাশ শুরু করলাম শবে বরাতের!
➲ বলা হল কুরআন পাঠ করতে, আর আমরা শুরু করলাম কুরআন খতম!
➲ বলা হল কুরআন ধীরে পাঠ করার জন্য, আর আমরা শুরু করলাম প্রতিযোগীতার মত দৌড়!
➲ বলা হল পরিবারের সবার জন্য নিজে দোআ করতে, আর আমরা শুরু করলাম হুজুর ভাড়া করা!
➲ বলা হল মাইয়েতের জন্য সাদকায়ে জারীয়া করার জন্য, আর আমরা শুরু করলাম কুলখানী!
➲ বলা হল কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে, আর আমরা আঁকড়ে ধরলাম মাজহাব!
➲ বলা হল দ্বীনকে খন্ড খন্ড না করতে, আর আমরা করলাম চার ভাগ!
➲ বলা হল ওয়ালীমায় মানুষকে খাওয়াতে, আর আমরা শুরু করলাম বিয়েতে খাওয়ানো!
➲ বলা হল মোহরানা দিতে, আমরা শুরু করলাম যৌতুক নিতে!
➲ বলা হল মসজিদ নির্মান করতে, আর আমরা শুরু করলাম খানকা/মাজার নির্মান!
➲ বলা হল দ্রুত বিয়ে দিতে, আমর শুরু করলাম বিয়ে পিছিয়ে দেয়া!

কবে শেষ হবে এরুপ অনিয়ম! ধর্মের নামে অধর্ম লালন!

Address

Dhaka

Telephone

+8809638785015

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Islam- The enlighten path of life posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share


Other Digital creator in Dhaka

Show All

You may also like