17/01/2025
বাংলাদেশে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে আর্থিক বৈষম্যঃ উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বৈষম্য ও করণীয়
বৈষম্য দূরীকরণে ভূমিকাঃ
১. সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণঃ
• সরকার দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি চালু করেছে।
• তবে এসব কর্মসূচি যথেষ্ট বিস্তৃত নয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছায় না।
২. কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ
• পোশাক শিল্প, কৃষি ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা হয়েছে।
• তবে গুণগত ও স্থায়ী কর্মসংস্থানের অভাব বৈষম্য কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।
৩. ক্ষুদ্রঋণ ও SME খাতে সহায়তাঃ
• ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম দরিদ্রদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করেছে।
• তবে SME খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়ানো এবং উদ্যোক্তাদের সহায়তায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি।
৪. অবকাঠামো ও যোগাযোগ উন্নয়নঃ
• গ্রামীণ সড়ক ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন কিছু ক্ষেত্রে বৈষম্য কমিয়েছে।
• তবে আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে আরও সমতাভিত্তিক অবকাঠামো বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ভবিষ্যৎ করণীয়ঃ
১. প্রগতিশীল কর ব্যবস্থাঃ
ধনী ও উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের কাছ থেকে অধিক কর আদায় এবং কর ফাঁকি রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
২. দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষাঃ
• প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
• তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষতা উন্নয়ন করে উচ্চ আয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা জরুরি।
৩. প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগঃ
• গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে কৃষি, ক্ষুদ্র শিল্প এবং প্রান্তিক ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
• সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (PPP) কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে।
৪. সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আধুনিকায়নঃ
• সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে এবং সঠিক উপকারভোগীদের নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।
• ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসব কর্মসূচির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়।
৫. দুর্নীতি দমনঃ
• দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
• স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
--জাফর ইক্বাল
তাংঃ ১৭০১২০২৪