04/06/2024
চট্টগ্রাম আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানা বিমান বন্দর রিং রোড় সড়কে চোরাই তেলের বড় বাণিজ্য, প্রশাসনের নাকের ডগায়
সৈয়দ মিজান সমরকন্দী:-
চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানা,পাহাড়তলী থানা, হালিশহর থানা, বন্দর থানা, ইফিজেড থানা এরিয়া রিং রোড় সাগর পর এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে গাড়ির চোরাই তেলের ব্যবসা। বিনা অনুমতিতে ভিআইপি সড়কের পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এসব অনুমোদনহীন তেল বেচাকেনার দোকান। চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানা, পাহাড়তলী থানা,হালিশহর থানা বন্দর থানা , ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানা এলাকায় তেল বেচাকেনার দোকানের অনুমতি রয়েছে মাত্র ২টি । অথচ সেখানে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠেছে অর্ধশত চোরাই তেলের ভাসমান দোকান। সরেজমিনে দেখা গেছে এ চিত্র।
শুধু দোকানের ভেতরেই নয়, কোথাও কোথাও খোলা আকাশের নিচেও প্রকাশ্যে চলছে বিভিন্ন ধরনের এসব দাহ্য পদার্থের বিকিকিনি। ঝুঁকিপূর্ণ এ তেলের বেচাকেনার করায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলেও এসব বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। অভিযোগ রয়েছে, আকবর শাহ থানা,পাহাড়তলী থানা, ইপিজেড ও বন্দর থানার কথিত ক্যাশিয়ারের সাপ্তাহিক মাসোহারায় চলছে অবৈধ এসব বিষ্ফোরক তেলের ব্যবসা।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিস্ফোরক অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নীরব সম্মতি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের বছর ভিত্তিক ‘আইওয়াশ’ তদারকির কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে এসব চোরা তেলের ব্যবসায়ীদের বিষ্ফোরণ লাইসেন্স নবায়নের কাজও।
সরেজমিনে দেখা যায়, আকবর শাহ থানা এরিয়া রিং রোড় সাগর পার এলাকায় মহিউদ্দিন,আমির হোসেন, সবুজ,বুলু, রুবেল,কামরুল, পাহাড়তলী থানা এরিয়া আলি, ইপিজেড থানার সালাউদ্দিন গেইট, সিমেন্টক্রসিং, নেভি হাসপাতাল ভিআইপি সড়কে রয়েছে প্রায় ১৫টি, বন্দর থানার মাইলের মাথা, বন্দরের বাইপাস সড়কের সড়কের পাশে রয়েছে প্রায় ৩৫টি তেল বেচাকেনার দোকান।
সূত্রে জানা যায়, সরকারি সায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা থেকে কেনা বিভিন্ন কোম্পানির তেলের ভাউচারের চালকরা মূলত এসব তেল বিক্রি করার সঙ্গে জড়িত। চালকরা ভিআইপি সড়কের গাড়ি থামিয়ে বড়বড় পাইপের মাধ্যমে অল্প সময়ে ভাউচার থেকে নামিয়ে ফেলে তেল। এসব তেলের মধ্যে রয়েছে কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেল। এ ছাড়া বন্দর থানা কেন্দ্রিক যেসব তেলের দোকান রয়েছে এসব দোকান চোরাই তেল কিনছে চট্টগ্রাম বন্দর ও কনটেইনার ডিপো থেকে বের হওয়া কনটেইনারবাহী লরি ও কাভার্ডভ্যান থেকে।
সড়কে একাধিক ভাসমান তেলের দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেলের ভাউচারগুলো অধিকাংশই হল সরকারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার। তবে এগুলো সেখান থেকে কেনা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেনা তেল। চালকের মাধ্যমে অর্ধেক দামে এসব তেল কিনে চোরাই তেলের ভাসমান দোকানিরা। প্রকাশ্যে চোরাই তেলের ব্যবসা বিষয়ে জানতে চাইলে তারা আরও জানান, বেশ-কম প্রশাসনকে টাকা তো দিতে হয়। টাকা না দিলে তো আর এসব ব্যবসা করা যাবে না। অধিকাংশই ব্যবসায়ীদের নেই বিষ্ফোরক লাইসেন্স। স্তরে স্তরে ম্যানেজ করে চালানো হচ্ছে ব্যবসা। এমনকি স্থান ভেদে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পকেটেও যাচ্ছে নিয়মিত মাসোহারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিস্ফোরক অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিদর্শক ‘সড়কের পাশে যত্রতত্র অনুমোদনহীন ভাসমান তেলের দোকানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার জন্য চট্টগ্রাম উপ পুলিশ কমিশনার পশ্চিম, একটা অভিযানের চালানোর জন্য সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়।
তিনি আরও বলেন, সকল চোরা তেল ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান,
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক বলেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে চলে ভাসমান ঝুঁকিপূর্ণ চোরাই তেলের ব্যবসা এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম ) বলেন ‘অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বিষ্ফোরক কর্মকর্তারা আমাদের সহযোগিতা চাইলে তাদেরকেও অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে’।