সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ:

সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ: সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী রহ, এর নামে ম?

17/09/2023
হযরত সাইয়েদ আহমদ শহীদ রায়বেরলভি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর হাতে চল্লিশ হাজার গয়ের মুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর নিকট বাইয়া...
19/08/2023

হযরত সাইয়েদ আহমদ শহীদ রায়বেরলভি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর হাতে চল্লিশ হাজার গয়ের মুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেছেন। একইভাবে তাঁর হাতে ভ্রান্ত আকীদা-বিশ্বাস, নষ্ট চরিত্র ও কুকর্ম ত্যাগ করে তাওবা করেছে তিন মিলিয়ন অর্থাৎ ৩০ লক্ষ মুসলমান। (সিরাতে সাইয়িদ, সৈয়দ আবুল হাসান আলি নদভি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর চেতনাকে ধারণ করে  ইসলাম রক্ষার আন্দোলনে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে --হযরত মাওলানা হুছামুদ্...
06/05/2023

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর চেতনাকে ধারণ করে ইসলাম রক্ষার আন্দোলনে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে --হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী

বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেছেন, সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) উপমহাদেশে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের সিপাহসালার, অনুসরণীয় বুযুর্গ ও তরীকতের ইমাম ছিলেন। তিনি শিরক, বিদআতের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। এমনকি অল্পসংখ্যক সঙ্গী-সাথী নিয়ে বালাকোটের ময়দানে শাহাদাত বরণ করেছেন। কারবালার ইতিহাসের সাথে বালাকোটের সামঞ্জস্য আছে। হযরত হোসাইন (রা.) যেমন বাতিলের সাথে আপস করেননি তেমনি হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)ও বাতিলের সাথে আপস করেননি। এদেশের প্রায় সকল হক দরবার তাঁর সাথে সম্পর্কিত ও তাঁর চেতনায় উজ্জীবিত। এ চেতনাকে ধারণ করে ইসলাম রক্ষার আন্দোলনে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দুনিয়ার স্বার্থ ত্যাগ করে কেবল দ্বীনের জন্য আপসহীন হলে সরকার আমাদের হুঙ্কার মানতে বাধ্য হবে। মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী ৬ মে ২০২৩ শনিবার, বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) স্মরণে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য সচিব মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী। পরিষদের সদস্য মাওলানা নজমুল হুদা খান’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেনবাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব আলহাজ্জ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আ. খ. ম. আবু বকর সিদ্দীক, হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহীন এর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী, চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ. কে. এম. মাহবুবুর রহমান, ঢাকা নুরে মোহাম্মদিয়া (সা.) মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ লোকমান হাকীম, বাংলাদেশ ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন জাতীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক মো. আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বালাকোট চেতনা উজ্জীবন পরিষদের সদস্য বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাওলানা মুহিবুর রহমান, সিলেট মহানগর সভাপতি আতিকুর রহমান সাকের, সিলেট (পূর্ব) জেলা সভাপতি জিল্লুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মুহাইমিনুল হক, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি আলী রাব্বী রতন প্রমুখ।

সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা মহিলা শাখার উপাধ্যক্ষ মাওলানা খান মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, লতিফিয়া ক্বারী সোসাইটি ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা আবু সাদেক মো. ইকবাল খন্দকার, দক্ষিণ বাড্ডা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, গুলশান এর খতীব মাওলানা মুফতী মানজুর হোসাইন, প্রমুখ।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ বাবু, প্রচার ও প্রকাশনা এস.এম মনোয়ার হোসেন, সাবেক কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ আহমদ আল জামিল, সাবেক অর্থ সম্পাদক মাওলানা খন্দকার ওজীহুর রহমান আসাদ, কেন্দ্রীয় সহ- প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল, অফিস সম্পাদক কাওছার হামিদ সাজু, প্রশিক্ষণ সম্পাদক কবির আহমদ, সহ-শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ নুর হোসেন, স্কুল ও কলেজ বিষয়ক সম্পাদক রেদওয়ান রাশেদ, ফুলতলী কমপ্লেক্স ঢাকা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা শাহীদ আহমদ, তালামীযে ইসলামিয়া ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মো. ইমাদ উদ্দিন, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি সাদেকুর রহমান, কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি আরিফুল হোসাইন, নারায়নগঞ্জ জেলা সভাপতি কামিল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইকরাম কুতুবী, লতিফিয়া কারী সোসাইটি কুমিল্লা’র সেক্রেটারি মাওলানা রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

০৬. ০৫. ২০২৩ ঈসায়ী
জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা।

চলছে, শহীদে বালাকোট সম্মেলন।জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা।প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন।হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফু...
06/05/2023

চলছে, শহীদে বালাকোট সম্মেলন।
জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন।
হযরত আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।
০৬-০৫-২০২৩

22/05/2022
বালাকোট সম্মেলনে আলেম-উলামার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দাসায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর চেতনা ও আদর্শ প্রচারে আমাদের ঐক...
19/05/2022

বালাকোট সম্মেলনে আলেম-উলামার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর চেতনা ও আদর্শ প্রচারে আমাদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে
-আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী

হযরত আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী বলেছেন, একজন মানুষের মকবুলিয়াতের অন্যতম মাধ্যম হলো খেদমতে খালক তথা মানুষের সেবা করা। শহীদে বালাকোট সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (রহ.) খেদমতে খালকের মাধ্যমে তাঁর জীবন শুরু করেছেন। বুযুর্গ খান্দানের হয়েও সাধারণ মানুষের সেবা করেছেন, অসহায় বিধবাদের খেদমত করেছেন। হযরত ওমর রা. খলিফা থাকাকালে বিধবার ঘরে কলসি ভরে পানি নিয়ে দিয়েছেন। মানুষের সেবা, অনাহারীকে খাওয়ানো যেমন খেদমতে খালক তেমনি দ্বীনি শিক্ষা দান, ভালো পথে আহবান করাও বড় খিদমাত। খেদমতের মাধ্যমে মানুষ জীবনে উন্নতি লাভ করে, আল্লাহ তাদের জন্য ভালো কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দেন। আমরা যারা সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (রহ.) এর অনুসারী আমাদেরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে পুর্ণ আমানতদারীর সাথে খেদমাত চালিয়ে যেতে হবে, আউলিয়া কেরামের পথ অনুসরণ করতে হবে। কেউ কেউ সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর সমালোচনা করে থাকেন। আমাদের মনে রাখতে হবে সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা হয়েছে, ইমাম আবু হানীফা (র.) এর বিরুদ্ধে কথা হয়েছে। এমনকি নাস্তিকরা আল্লাহর বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বিরুদ্ধে বললেই সব শেষ হয়ে যায় না। হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) উপমহাদেশের হক্কানী প্রায় সকল সিলসিলার উর্ধ্বতন বুযুর্গ। যারা তার সমালোচনার বৃথা চেষ্টা করছেন তারা নিজেরাই অপমানিত হবেন। আমরা সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) এর অনুসারী, এটা আমাদের গৌরব। তাঁর চেতনা ও আদর্শ প্রচারে আমাদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে।
আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী ১৯মে ২০২২ বৃহস্পতিবার, বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে ইসলামী ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) স্মরণে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী।

পরিষদের সদস্য মাওলানা নজমুল হুদা খান এবং মাওলানা আজির উদ্দিন পাশার যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব আলহাজ্জ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাঈল মিঞা, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের যুগ্ম-মহাসচিব ড. মাওলানা এ. কে. এম. মাহবুবুর রহমান, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা হাসান মাসুদ, কেরানীগঞ্জ জহুরীয়া দরবারের পীর ছাহেব মাওলানা মো. আজহারুল ইসলাম, শামসাবাদের পীর ছাহেব মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ফরিদপুর ডোবরার পীর ছাহেব ড۔ সৈয়দ খালিদ বিন নাসির, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, নয়াটুলা কামিল মাদরাসা ঢাকা’র অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ রেজাউল হক, রাজশাহী মদীনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোকাদ্দাসুল ইসলাম, ফেনী ছাগলনাইয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হোসাইন আহমদ ভূঁইয়া, চাঁদপুরের বদরপুর আদমিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মিজানুর রহমান, নাঙ্গলকোট কামিল মাদরাসা কুমিল্লার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হান্নান, মোহাম্মদপুর গাউছিয়া ফাজিল মাদরাসা ঢাকা’র অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইজহারুল হক, ঢাকা মাহমুদা খাতুন কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা বদিউল আলম সরকার, ঢাকা মহানগর আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা আবু নছর জিহাদী, দারুন্নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ, ইমাম আযম আবু হানীফা (রহ.) ফাউন্ডেশন, নওগাঁ’র পরিচালক মাওলানা মুফতি শাহ আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ আমিনুল ইসলাম সাজী ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সভাপতি দুলাল আহমদ।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে আলেম উলামাদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। এমতাবস্থায় সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর উত্তরসূরীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা আলেম উলামার তালিকা করছে তাদের এরকম তালিকা করার কোনো অধিকার নাই। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা ছাড়া আর কিছু নয়। কোনো আলেমের ভুল হলে শীর্ষ আলেম উলামাই এসব দেখবেন । যারা আলেম উলামার দুর্নীতির তালিকা করছে আয়নায় তাদের নিজেদের চেহারা দেখা উচিত। তাদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। বক্তারা আলেম-উলামার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা জানান এবং তাদের কোনোভাবে হয়রানী না করার আহবান জানান।

সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাঙ্গলকোট কামিল মাদরাসা কুমিল্লার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাদের, মুর্তজাবাদ কামিল মাদরাসা নারায়নগঞ্জ এর প্রিন্সিপাল মাওলানা বুরহান উদ্দিন, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক হেড মুহাদ্দিস মাওলানা মো. গিয়াস উদ্দিন হোসাইনী, কিশোরগঞ্জের কদমচালের পীর ছাহেবের প্রতিনিধি মাওলানা জালাল আহমদ, বালুচর অষ্টগ্রামের পীর ছাহেবের প্রতিনিধি মাওলানা আব্দুল গণি, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মোহাম্মদ কুতবুল আলম, অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, মাসিক পরওয়ানার সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আল ইসলাহর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছালেহ আহমদ, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসাইন ছালেহী, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক সভাপতি মাওলানা ফখরুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি মাওলানা মুহিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হুমায়ুনুর রহমান লেখন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমদ, লতিফিয়া ক্বারী সোসাইটি ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা আবু সাদেক মো. ইকবাল খন্দকার, ভাদেশ্বর সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শুয়াইবুর রহমান, রাখালগঞ্জ দারুল কুরআন সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শেহাব উদ্দিন, বায়তুল মাহফুজ জামে মসজিদ উত্তর বাড্ডার খতীব মুফতি সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া ঢাকার মশুরীখোলা, কুমিল্লার দারুল আমান ও যশোরের দারিয়াপুরের পীর ছাহেবের প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় পাঠাগার সম্পাদক হাফিজ মাওলানা নজির আহমদ হেলাল, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, সুনামগঞ্জ জেলা আল-ইসলাহর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম আলফাজ, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুস সবুর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে  ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে প্রধ...
19/05/2022

আযাদী আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন হযরত আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী।

১৯.০৫.২০২২ ঈসায়ী
বায়তুল মোকাররম, ঢাকা

18/05/2022

আগামীকাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন( বাইতুল মোকাররম,ঢাকা) মিলনায়তনে শহীদে বালাকোটের স্মরণে মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
শহীদে বালাকোটের উত্তরসূরীদের মিলনমেলায় শসকলই শরিক হোন।
ইনশাআল্লাহ উপস্থিত থাকবো।

শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে আগামী ১৯ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন সফলের লক...
17/05/2022

শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) স্মরণে আগামী ১৯ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন সফলের লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ'র মুহতারাম সভাপতি হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।

১৪.০৫.২০২২ ঈসায়ী
সোবহানীঘাট, সিলেট।

সফল হউক
17/05/2022

সফল হউক

14/12/2021

ইনশা'আল্লাহ আসছে!
পৃ. ৫৯২

27/11/2021
27/11/2021
সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ও তাঁর আদর্শের প্রাসঙ্গিকতা বিচারপ্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান প্রাক্তন চেয়ারম্যান - দর্শন বিভা...
03/08/2021

সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ও তাঁর আদর্শের প্রাসঙ্গিকতা বিচার
প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান
প্রাক্তন চেয়ারম্যান - দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
________________________________________

সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) উত্তর ভারতের রায়বেরেলীর একটি বিখ্যাত হাসানী সাইয়্যিদ পরিবারে ১৭৮৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৩১ সালের ৬ই মে পাঞ্জাবের হাযারা জেলার বালাকোট প্রান্তরে শহীদ হন। তাঁর শাহাদাতের পর ১৭৯বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর জীবন ও আদর্শের উপর ইংরেজীসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় অনেক গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচিত হয়েছে। প্রধানতঃ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা এসব রচনায় একদিকে যেমন তাঁকে স্বাধীনতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সিপাহসালার এবং সত্যিকার ইসলামের একজন প্রকৃত ধারক ও বাহকরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে, তেমনি আবার কারো কারো পক্ষ থেকে তাঁকে সাম্প্রদায়িক ও ওয়াহাবী বলেও চিত্রিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রবন্ধের স্বল্প পরিসরে আমরা তাঁর সঠিক পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করবো এবং সে সাথে সমকালে তাঁর আদর্শের প্রাসঙ্গিকতা বিচার করবো।

প্রথম কথা হলো,★ সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) ওয়াহাবী ছিলেন না। ★

এর অনেক কারণের একটি হলো- ওয়াহাবীরা যেখানে তাসাউফ অস্বীকার করে, সেখানে তিনি হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর সুযোগ্য সাহেবজাদা ও খলীফা শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর বিখ্যাত খলীফা ছিলেন। তিনি আমাদের ভারতবর্ষের সুপরিচিত চার তরীকা- চিশতিয়া, কাদিরীয়া, নকশবন্দিয়া ও মুজাদ্দিদিয়া তরীকায় খিলাফতপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তাসাউফে এমন উন্নতি ও পারদর্শিতা অর্জন করেন যে তিনি পরবর্তীতে ‘তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া’ নামে একটি শিরক ও বিদআতমুক্ত সমন্বিত সূফী তরীকা প্রবর্তন করেন।

দ্বিতীয়ত, ওয়াহাবীরা সবখানে ওলীআল্লাহ, নবী-রাসুল এমন কি হযরত রাসূলে আকরাম (সাঃ) কেও মৃত মনে করে, সেখানে তিনি প্রিয়তম রাসূল (সা.) কে জিন্দা নবী হিসেবে বিশ্বাস করেন। অসংখ্য বার তিনি স্বপ্নে রাসূল (সা.) এর দীদার লাভ করেন ও তাঁর কাছ থেকে নির্দেশ ও হিদায়াত লাভ করেন।

তৃতীয়ত, অবিভক্ত বাংলা ও আসামে যে সব সূফী তরীকা তথা দরবার প্রধান যথা- ফুরফুরা, জৌনপুর, শর্ষিনা, ধামতী, ফুলতলী ইত্যাদি এগুলোর সিলসিলা এক পর্যায়ে সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভীতে যেয়ে মিলিত হয়েছে। সুতরাং তাকে ওয়াহাবী বলা মানে এমন সূফী তরীকাকেও ওয়াহাবী বলে সাব্যস্ত করার শামিল।

সুতরাং যেসব বক্তা ও লেখক সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভীকে ওয়াহাবী বলে চিহ্নিত করেন তাঁরা তথ্য সংকটের শিকার। তবে তাঁকে যে ওয়াহাবী বলে অপবাদ দেওয়া হয় তার একটি কারণ আছে। আর তা হচ্ছে ইংরেজরা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী আলিমদের আরবের মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব নজদীর অনুসারী বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছিল। উইলিয়াম হান্টারসহ অনেক লেখকই এ ধারার অপতৎপরতার সাথে যুক্ত। ইতিহাস স্বাক্ষী দেয় যে, ভারতে বিশেষ করে উত্তর ও পূর্ব ভারতে ইসলাম প্রচারিত হয়েছিল সূফীগণের মাধ্যমে। তাই এখানে যে ইসলাম জনগণের হৃদয়ের গভীরে শেকড় গেড়েছে সেটি সূফী আদলের ইসলাম। তাই যদি কোনভাবে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারী আলিমদের সূফীবাদ বিরোধী তথা ওয়াহাবী বলে চিত্রিত করা সম্ভব হয়, তাহলে জনমনে তাঁদের যে উচ্চ স্থান আছে সেটা চলে যাবে এবং জনসাধারণ তাঁদের অনুবর্তী হবে না।

এই গভীর মনোসামাজিক ধর্মীয় কারণে সায়্যিদ আহমদসহ সেইসব সর্বত্যাগী সাহসী আলিমদের বিরুদ্ধে ওয়াহাবিয়াতের অভিযোগ উত্থাপন করার অপচেষ্টা করা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগ যে, সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী পরিচালিত সংগ্রাম সাম্প্রদায়িক ছিলো। এ কথাটিও কোনভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্মীয় বিবেচনা ছাড়াও সাধারণ নৈতিকতা ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি এ অভিযোগ সমর্থন করে না। প্রথমে আমরা এ অভিযোগটি সাধারণ নৈতিক যুক্তি আলোকে বিচার করবো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত। এটি সাধারণ্যে গৃহীত একটি কর্মনীতি। জাতিসংঘ স্বীকৃত সার্বজনীন মানবাধিকারের প্রথম প্রস্তাবটিই হলো মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার। প্রতিটি মানুষের সম্মান ও মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। জাতিসংঘ স্বীকৃত সার্বজনীন মানবাধিকারের অপর একটি অনুচ্ছেদের মর্মকথা হলো মানুষের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন ও প্রচার করার অধিকার আছে। তাছাড়া যুদ্ধ সংক্রান্ত নৈতিকতায় বলা হয়েছে যে, সব যুদ্ধ এক পর্যায়ের নয়। কিছু যুদ্ধ আছে অন্যায় যুদ্ধ, কিছু যুদ্ধ আছে ন্যায় যুদ্ধ, অন্য কথায় সব যুদ্ধই অন্যায় নয়। তা যদি হতো তাহলে দেশের মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার আন্দোলন অনৈতিক হতো। তা তো নয়ই বরং মুক্তিযুদ্ধ একটি ন্যায় যুদ্ধ, জাতির অস্তিত্বের লড়াই। সাইয়িদ আহমাদ বেরলভী (র.) কর্তৃক শিখদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধ সম্বন্ধেও একই কথা প্রযোজ্য। এরই ক্রমধারায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব সংগ্রামই ন্যায়সঙ্গত। স্বদেশ, স্বজাতি ও স্বধর্মের অস্তিত্ব সংরক্ষণ ও বিকাশের লক্ষ্যে পরিচালিত লড়াই তাই নৈতিক লড়াই। এই ন্যায় যুদ্ধের একজন নির্ভীক সেনাপতি ছিলেন হযরত সাইয়িদ আহমদ বেরলভী (র.)। অবশ্য ন্যায় যুদ্ধ ততক্ষণ পর্যন্ত বৈধ যতক্ষণ এর প্রয়োজন থাকে এবং সে ক্ষেত্রেও কতগুলো নৈতিক সীমা ও শর্ত মেনে চলতে হয়। তা না হলে যুদ্ধ তো ন্যায় যুদ্ধ হবে কিন্তু সীমা অতিক্রমকারীর আচরণ নৈতিক হবে না। আমরা যদি সায়্যিদ আহমদ বেরলভীর সময়ের পশ্চিম ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো যে, সত্যিই সেখানে মুসলমানগণ ছিল চরমভাবে নির্যাতিত। যুদ্ধাংদেহী শিখ নেতারা নির্বিচারে মুসলমানদের উপর সীমাহীন নির্যাতন করে যাচ্ছিল। এসব নির্যাতিত মুসলমানদের জানমাল ও সম্মান রক্ষা করার সংগ্রাম সাম্প্রদায়িক হতে পারে না বরং এটি শক্তিমান সাহসী মানুষের জন্য অবশ্য পালনীয় একটি মানবিক কর্ম এবং অবশ্যই নৈতিকও বটে। এবার আমরা দেখবো এ ব্যাপারে ইসলাম কী নির্দেশনা দেয়। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নিপীড়িত মানবতার সাহায্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অসংখ্য নির্দেশনা রয়েছে। কিছু সংখ্যক মানুষ মুসলমান বলে তারা সাধারণ মানবসুলভ আচরণও পাবে না এমন মনোভাব তো চরম জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোর নামান্তর। এখন আমরা পবিত্র কুরআন থেকে একটি আয়াত ও রাসূল (সা.) এর অসংখ্য হাদীস থেকে একটি প্রাসঙ্গিক হাদীস উদ্ধৃত করবো। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- “তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে সে সব অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়াই কর না যারা ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের প্রতিপালক! যালিমদের এ জনপদ থেকে বের করে আমাদের অন্য কোথাও নিয়ে যাও, তুমি আমাদের জন্য তোমার কাছ থেকে একজন অভিভাবক নিযুক্ত কর এবং আমাদের জন্য একজন সাহায্যকারী পাঠাও” (৪:৭৫)। পবিত্র হাদীসে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি কোন নাজায়িয কাজ দেখে ক্ষমতা থাকলে সে যেন তা হাত দ্বারা তথা শক্তি প্রয়োগে বন্ধ করে দেয়। যদি তার ততটা ক্ষমতা না থাকে তাহলে সে যেন যবান দ্বারা খারাপ কাজের প্রতিবাদ করে। যদি এতটা ক্ষমতাও তার না থাকে তাহলে যেন সে অন্তর দ্বারা এ ধরনের কাজকে ঘৃণা করে, আর এটাই ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর।” (মুসলিম)
সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.)এর জীবনী আলোচনা করলে দেখা যায় তিনি প্রথম জীবনে গতানুগতিক কিতাবী লেখাপড়ায় তেমন মনোযোগী ছিলেন না। জন্মগতভাবে তিনি সুঠাম ও শক্ত গঠনের অধিকারী ছিলেন। বিভিন্ন ধরনের শরীর গঠনমূলক খেলাধুলা ও ব্যায়ামে তিনি ব্যস্ত থাকতেন। তিনি পরোপকারী ও সেবাপরায়ন ছিলেন। বিপদগ্রস্থ মানুষের সাহায্যে তিনি ছুটে যেতেন। সামরিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি যৌবনে মধ্য ভারতের টংক-এর নবাবের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং একজন দক্ষ সৈনিক ও পরবর্তী সময়ে কৌশলী সেনাপতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলেন। বলা বাহুল্য, এমন একজন মানুষের পক্ষে স্বজাতি ও স্বদেশের দুংখের দিনে নীরব দর্শকের ভূমিকায় বা কেবল ওয়াজ নসীহত করে সন্তুষ্ট হওয়া সম্ভব ছিল না। তাই কুদরতই অলক্ষ্যে তাঁকে গড়ে তুলেছিল আগামী দিনে অধঃপতিত ও নির্যাতিত মুসলিম জাতি ও ভারতবাসীকে মুক্ত করার জন্য, স্বদেশীয় অত্যাচারী শিখ ও বিদেশী ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম গড়ে তোলা, এ সংগ্রামকে সংহত করা ও নেতৃত্ব দানের জন্য। একজন লেখক অবশ্য অন্য কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন যে, সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) পরিচালিত আন্দোলন নবুওয়াতের অনুসরণে পরিচালিত ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই ছিল এবং তা সফল হতো যদি তিনি সূফীবাদের দিকে ঝুঁকে না পড়তেন। তাঁর মতে সূফীবাদ থেকে সত্যিকার সফলতাকামী ইসলামী প্রচেষ্টাকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। উল্টোভাবে এ কথা থেকে প্রমাণিত হয়,
এক- তিনি ওয়াহাবী ছিলেন না; দুই- সূফীবাদ অংশটুকু বাদ দিলে তার আন্দোলন সঠিক ইসলামী আন্দোলন ছিল।

এবার আমরা সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এর একটি চিঠি থেকে কিছুটা উদ্ধৃতি দেব যে চিঠিতে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন যে কোন পার্থিব বা জাগতিক কারণে তিনি সংগ্রাম করছেন না। কোনরূপ উচ্চাভিলাষ পুরণ বা সুনাম অর্জন করাও তাঁর লক্ষ্য নয় বরং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ের প্রতিরোধ এবং মানবাধিকার রক্ষা করাই তাঁর সব কর্মপ্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য। “...কেউ কেউ ধনৈশ্বর্য ও রাজ্য দখলের জন্য, আবার কেউ কেউ নিজের বীরত্ব ও বাহাদুরী প্রদর্শনের জন্য, আবার কেউ কেউ শাহাদাতের গৌরব অর্জনের জন্য যুদ্ধ করে থাকে। কিন্তু এ যদ্ধে আমার উদ্দেশ্য ভিন্নতর। আমার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান রবের নির্দেশ পালন করা, যিনি একমাত্র মালিক ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। মহা গৌরবান্বিত ও মহিমান্বিত আল্লাহ এ কথার সাক্ষী যে, এ যুদ্ধ বিগ্রহ দ্বারা তাঁর হুকুম পালন করা ব্যতীত আমার অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই। এতে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের কোন স্পৃহা না আমার মুখে কখনও উচ্চারিত হয়েছে, আর না কখনো অন্তরে উদিত হয়েছে।... সারকথা, আমার না আছে বীরত্ব প্রদর্শনের কোন হীন উদ্দেশ্য, আর না আছে রাজত্ব হাসিলের কোন স্বার্থ। এর জ্বলন্ত প্রমাণ এই যে, যদি কোন সম্মানিত শাসক ও শীর্ষস্থানীয় সরদার ইসলাম কবুল করেন তাহলে আমি তাঁর বীরত্ব শতমুখে অকপটে স্বীকার করে নেব, হাজার প্রাণের বিনিময়ে হলেও তার সাম্রাজ্যের উন্নতি করবো এবং তাঁর সরকারের শ্রীবৃদ্ধির জন্য সীমাহীন প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাব।” (সীরাতে সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ, পৃ. ৪৫৪-৪৫৫ ।
কেবল আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে তিনি সত্য ন্যায় বিচর প্রতিষ্ঠার জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন। এটি মানুষের মাঝে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। সুদুর বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষ লক্ষ মুসলমান তাঁর সংগ্রামী কাফেলায় যোগদান করে। ভারতের সীমা অতিক্রম করে আফগানিস্তান থেকেও অনেক লোক তাঁর সাথে শরীক হয়। অনেক হিন্দু ও শিখ মুসলমান হয়ে তাঁর সাথী হয়। কিন্তু গোত্রবাদের সংকীর্ণতা, কিছু সীমান্ত সরদারদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চিন্তা ও কঠোর হৃদয়ের কিছু সংখ্যক শিখদের নিষ্ঠুরতা (নির্বিচারে নারী ও শিশুদের হত্যা, ঘরবাড়ী, ফসলের ক্ষেত জ্বালিয়ে দেওয়া ইত্যাদি) মুক্তিকামী মানুষের এ অগ্রযাত্রাকে মাঝপথে থামিয়ে দেয়। এক অসম সম্মুখ সমরে সিংহ পুরুষ ও মর্দে মু’মিন ও সাচ্চা মুজাহিদ শাহাদাত বরণ করেন। আর সে সাথে রাসূলের আদর্শে একটি ন্যায় বিচারপূর্ণ মানবিক সমাজ নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থেকে যায়।

এখন আমরা অতি সংক্ষেপে বর্তমান সময়ে সাইয়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এর আদর্শের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে মাত্র দু’টি কথা বলবো। প্রথম কথা হলো ঃ তাঁর আদর্শ হলো সূফীবাদী ইসলাম, তবে তাঁর সূফীবাদ নিষ্ক্রিয়, বিদআতমিশ্রিত সূফীবাদ নয়। এটি জীবনমুখী, সাহসী, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন বাজী রাখা সূফীবাদ। সূফীবাদ হলো ইসলামের প্রাণ। প্রাণহীন দেহ দুর্গন্ধ ছড়ায়। মহান আল্লাহর সঠিক পরিচয় ও প্রিয়নবী (সাঃ) এর প্রতি সীমাহীন ভালবাসা ও তাঁর আদর্শের পূর্ণ অনুকরন ব্যতীত সত্যিকার ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। প্রকৃত সূফী চেতনাহীন ইসলাম পরিশেষে জাগতিক সুবিধাবাদিতা বা ভেদবুদ্ধির রাজনৈতিক ফায়দা লুটার কৌশলে পরিণতি লাভ করে। মুসলমানদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ইতিহাস এ কথার সত্যতা বহন করে। অপরদিকে পবিত্র কুরআন, হাদিস, সাহাবায়ে কিরাম ও আহলে বায়তের অনুসরণ ও অনুবর্তিতাহীন সূফী সাধনা নাফসানিয়াতের কানাগলিতে পথ হারিয়ে ফেলে। স্বার্থবাদী নফস পূজারী ভন্ড সূফীদের জীবন কর্ম দেখলে যে কোন চোখ-কান খোলা মানুষের কাছে এ ধারার সূফী পথের বিভ্রান্তি ধরা পড়বে। আজকের মুসলিম দুনিয়ার দিকে তাকালেও আমরা প্রকৃত সূফী চেতনাহীন ইসলামী প্রয়াস ও ভন্ড সূফী নামধারীদের ধর্মের নামে ব্যবসা পরিচালনা লক্ষ্য করলে জাগতিক প্রয়াসের মধ্যে প্রকৃত সূফী জীবনবোধ যুক্ত করার অপরিহার্যতা স্বীকার করতে বাধ্য। সায়্যিদ আহমদ বেরলভ (র.) এর জীবনাদর্শ আমাদের পূর্ণ ইসলাম প্রতিষ্ঠার এ সঠিক রাজপথের দিকে নিরন্তর আহবান জানায়।

সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এর দ্বিতীয় আদর্শ হলো অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে, মানবিক অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করে যাওয়া। ইসলাম সাম্প্রদায়িক কোন ধর্ম নয়। ইসলাম হলো একটি সর্বমানবিক, সর্বকল্যাণ সমৃদ্ধ জীবনমুখী আদর্শ। ইসলামে আল্লাহর যে পরিচয় দেওয়া হয়েছে তাতে তিনি সমস্ত বিশ্বের কেবল স্রষ্টা নন, তিনি করুণাময় প্রতিপালক, পরম ন্যায় বিচারক ও সব শুভ ও কল্যাণের সংরক্ষক। ঠিক একইভাবে রাসূল (সাঃ) কেবল আরববাসী বা মুসলমানদের জন্য পথ প্রদর্শক নন। তিনি সব সৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর করুণার মূর্ত প্রতীক। ইসলামী জীবন পদ্ধতি জন্মগত নয়, সত্য-উপলব্ধি-জাত। সেজন্য ইসলামে কেবল জন্মগত কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই। শ্রেষ্ঠত্ব সঠিক বিশ্বাস ও সৎকর্ম নির্ভর। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে; ‘তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে সম্মানিত, যে সর্বাধিক মুত্তাকী’।
রাসুল (সা.) বলেছেন, যার কর্ম তাকে পিছনে টানে, তার বংশ পরিচয় তাকে আগে বাড়াতে পারে না।

আমরা যদি এখন বিশ্ব পরিস্থিতির প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করি তাহলে দেখবো নয়া উপনিশাসক বিশ্বায়নের নামে ক্ষুদ্র ও দুর্বল জাতিসত্তাকে গ্রাস করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করছে, শক্তিশালী প্রচার মাধ্যমের সাহায্যে তারা আংশিক তথ্য দিয়ে বিশ্ব জনমতকে প্রভাবিত করছে, একটা কৃত্রিম সংস্কৃতি নির্মাণ করতে প্রয়াসী হচ্ছে, অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল জিনিসপত্র তৈরী করে সেগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অশুভ ব্যবহার করে যুব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করছে। অর্থ ও বিভিন্ন অনৈতিক পদ্ধতি দ্বারা প্রলুদ্ধ করে মেধাবীদের নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করছে অথবা নিষ্ক্রিয় করে রাখছে অথবা ভোগবাদী করে তুলছে। এসব কারণে ধনী আরও ধনী হচ্ছে। গরীব আরও গরীব হচ্ছে এবং গরীবের সংখ্যা বাড়ছেই। এভাবে এক অশুভ কর্মতৎপরতায় অনেক মানুষের জীবন বাধা পড়ছে। এর বিরুদ্ধে কি শুভ বুদ্ধির অধিকারী বিবেকবান মানুষের কিছুই করণীয় নেই? সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.)-এর মহৎ ও সাহসী, ত্যাগী ও তৎপর জীবন এ দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে আলোর দিশা হিসেবে কাজ করে। তাঁর আহবান মানবতার কল্যাণকামী সব মানুষের জন্য, এখানে কোন ধর্ম ও জাতির প্রশ্ন নেই। তাঁর এ ডাক পরিবর্তনকামী তথা শোষণমুক্ত সমাজ নির্মাণের সব কর্মীদের জন্য। সে কারণে তাঁর আদর্শ সমকালীন দেশীয় ও বিশ্ব পরিস্থিতিতে খুবই প্রাসঙ্গিক। মহান আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলার তাওফীক দিন, আমীন।

28/07/2021
শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) স্মরণে ভার্চুয়াল সম্মেলন ২০২১প্রধান অতিথিঃ রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরীকত, উস...
07/05/2021

শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (রহ.) স্মরণে ভার্চুয়াল সম্মেলন ২০২১

প্রধান অতিথিঃ রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরীকত, উস্তাযুল উলামা, মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী

আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দঃ হযরত মাওলানা মুহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, হযরত মাওলানা আবু বকর পীর ছাহেব দারুল আমান কুমিল্লা, হযরত মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, হযরত মাওলানা মাহমুদুর রহমান পীর ছাহেব সোনাকান্দা, হযরত মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী, হযরত মাওলানা আ.খ.ম আবূ বকর সিদ্দিক, হযরত মাওলানা ড. একেএম মাহবুবুর রহমান, হযরত মাওলানা নজরুল ইসলাম, হযরত মাওলানা আ.ন.ম কুতুবুজ্জামান তাপাদার, ড. মো. মিযাযুর রহমান, হযরত মাওলানা এম এ কাদির আল হাসান।

সার্বিক তত্বাবধানেঃ হযরত মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, সদস্য সচিব
সভাপতিঃ হযরত মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান ছাহেব, আহবায়ক

বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদ

শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী (রাহ.) এর শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদ আয়োজিত ভার্চু...
07/05/2021

শহীদে বালাকোট হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী (রাহ.) এর শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদ আয়োজিত ভার্চুয়াল সম্মেলনে দু’আ পরিচালন করছেন প্রধান অতিথি মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।

আমীরুল মুমিনীন, ইমামুত তরীকত শহীদে বালাকোটহযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ও তাঁর আন্দোলনমোহাম্মদ নজমুল হুদা খানসায়্যি...
06/05/2021

আমীরুল মুমিনীন, ইমামুত তরীকত শহীদে বালাকোট
হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ও তাঁর আন্দোলন
মোহাম্মদ নজমুল হুদা খান

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) উপমহাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একাধারে ‘রুহবানুল লাইল ওয়া ফুরসানুন নাহার’-রাতের তাপস আর দিনের ঘোড় সওয়ার (মুজাহিদ)। তিনি জীবনের মূল্যবান সময়কে দীন ইসলামের জন্য কুরবান করে গেছেন। উপমহাদেশে ইলমে নববী তথা ইলমে দীনের সার্থক উত্তরাধিকার ও যথাযথ প্রচারক শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর সুযোগ্য ছাহেবজাদা ও খলীফা হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর স্নেহধন্য শাগরিদ ও খলীফা হিসেবে তিনি যে সংস্কার ও বিপ্লব সাধন করে গেছেন এর কোনো তুলনা হয় না। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর জীবনেতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। তিনি বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের ফলে তৎকালীন বৃটিশ শাসক গোষ্ঠীর রোষানলে পতিত হন। শাসকগোষ্ঠীর মদদপুষ্ট লেখক ও ঐতিহাসিকরা তাঁর প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে। ফলে তিনি বিকৃত ও ভুল ইতিহাসের শিকার হন। সে বিকৃত ইতিহাসের সূত্র ধরে আজো অপপ্রচার চলছে। অবশ্য, সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে অনেক লেখক ও গবেষক ইতোমধ্যে কলম ধরেছেন। সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর আন্দোলন সামগ্রিক বিবেচনায় যে একটি সংস্কার আন্দোলন ছিল তাও তাঁরা প্রমাণ করেছেন। সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.)-এর তরীকতের অধস্তন সিলসিলার কার্যধারা থেকেও তাঁর আন্দোলনের সত্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব সুপ্রমাণিত। ভারত উপমহাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশে জৌনপুর, ফুরফুরা, ফুলতলী, ছারছীনা, নারিন্দা, মৌকরাসহ যত হক সিলসিলা রযে়ছে সকলেরই পূর্বসূরী হলেন হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)।

হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) ছিলেন এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি ছিলেন একটি তরীকার প্রতিষ্ঠাতা, একজন মুরশিদে কামিল। তাঁর ব্যক্তিত্ব, স্বভাব-চরিত্র, দাওয়াত ও তাবলীগ সমকালে যেমন অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করেছিল তেমনি এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব আজো বিদ্যমান। তাঁর চারিত্রিকি বৈশিষ্ট্য ও দ্বীনী দাওয়াতের প্রভাব কেমন ছিল এর সম্যক ধারণা লাভ করা যায় আবুল হাসান আলী নদভী’র ‘তারীখে দাওয়াত ও আযীমত’ (সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস) গ্রন্থ থেকে। তিনি লিখেছেন : “শাহ সাহেব (শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী র.) এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা এমন কতিপয় উচ্চ যোগ্যতা, সাহসিকতা ও বিস্ময়কর ইচ্ছাশক্তির অধিকারী আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের পৃষ্ঠপোষকতার কাজ নিযে়ছেন যারা হাজার হাজার মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৃষ্টি করে দিযে়ছেন এবং এক পূর্ণ শতক সামলে রেখেছেন। … এই দাবীর সত্যতার জন্য কেবল তার একান্ত খলীফা সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র) (১২০১-১২৪৬ হি.)-এর নাম নেওয়াই যথেষ্ট। যিনি এই উপমহাদেশে এই মহান ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার স্বয়ংসম্পূর্ণতা, প্রভাব শক্তি এবং ইসলামের সুমহান দাওয়াত, নববী আদর্শের নৈকট্য ও সাদৃশ্যতা না কেবল এই তের হিজরী শতকে দৃষ্টিগোচর হয় বরং বিগত কযে়ক শতকেও এ ধরনের ঈমানী চেতনা সৃষ্টিকারী আন্দোলন এবং নেককার বুযুর্গদের এমন সুবিন্যস্ত ও সুশৃঙ্খল জামাতের কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। তিনি আকাইদ ও আমলের সংশোধন, মানুষের তরবিয়ত, ওয়াজ-নসীহত, তাবলীগে দীন, জিহাদ ও নির্ভীকতার বিশাল বি¯তৃত রণাঙ্গণে যেভাবে কর্মতৎপর ছিলেন, এর প্রভাব কেবল তার কর্মময় স্থান ও তার সমসামযি়ক বংশধর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং তা ভবিষ্যত প্রজন্ম, তৎপরবর্তীকালে আগত আহলে হক, দীনের দাঈ, ঝা-াবাহী ও খাদেমদের উপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে। ক্রমবর্ধমান ইংরেজ শক্তির মোকাবেলায় ভারতবর্ষ ও তার প্রতিবেশি মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর হেফাজত, খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা-সংগ্রামের সূচনাও তিনিই করেছেন। … এই আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া শিক্ষা-সাহিত্য, ইসলামী চিন্তাধারা, ভাষা ও বাচনভঙ্গি বর্ণনায়ও পডে়ছিল। এ আন্দোলন সমাজ সংস্কার, জাহেলী রীতিনীতির ভ্রান্ততা প্রমাণ, হিন্দু ধর্মের প্রভাব দূরীভূত করা এবং সঠিক ইসলামী জীবনের প্রতি প্রত্যাবর্তনের মহান কাজ আঞ্জাম দিযে়ছে। (শাহ আবদুল হালীম হুসাইনী অনূদিত, সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ২৫৭-২৫৮)

আবুল হাসান আলী নদভী তার পূর্বোক্ত গ্রন্থে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র) এর দাওয়াত ও তরবিয়তের প্রভাবের ব্যাপকতা, শক্তি, গভীরতা ও কার্যকারিতা প্রসঙ্গে বিভিন্ন লেখক ও চিন্তাবিদের রচনাবলি থেকে কিছু উদ্ধৃতিও পেশ করেন। তিনি লিখেন- “ভারতবর্ষের বিখ্যাত লেখক ও ঐতিহাসিক নবাব সিদ্দীক হাসান খান, গভর্নর, ভূপাল (মৃত্যু ১৩০৭ হি.), যিনি সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র)-এর শিক্ষা-দীক্ষার প্রভাব স্বয়ং প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং তাকে প্রত্যক্ষকারীদের এক বিরাট দলের যুগ পেযে়ছিলেন, তিনি ‘তিকসারু যুয়ূদিল আহরার’ গ্রন্থে লিখেন, ‘সৃষ্টিজীবের পথ প্রদর্শন এবং আল্লাহর পথে ফিরিয়ে আনা ও প্রত্যার্পণে তিনি ছিলেন আল্লাহর একটি নিদর্শন। এক বিরাট মানবগোষ্ঠী ও এক পৃথিবী তার আত্মিক ও শারীরিক তাওয়াজ্জুহে বেলায়েতের মর্যাদায় পৌঁছে গেছে। তার খলীফাগণ ওয়াজ-নসীহতের মাধ্যমে ভারতের মাটিকে শিরক-বিদ’আত ও কুসংস্কারের খড়কুটো থেকে পবিত্র করে দিয়েছে, কুরআন-সুন্নাহর বিশ্বরোডে এনে দাঁড় করিযে়ছে। আজও তাদের ওয়াজ-নসীহতের বরকত যথারীতি চালু আছে।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘মোটকথা এ যুগে পৃথিবীর কোনও রাষ্ট্রে এমন সুযোগ্য ব্যক্তিত্বের কথা শোনা যায়নি। যে ফয়েয-বরকত এই হকপন্থী দলের মাধ্যমে সৃষ্টিজীবের হযে়ছে, তার দশ ভাগের একভাগও এ যুগের উলামা মাশাযি়খের দ্বারা হয়নি।” (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৫৮)

হযরত শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (র)-এর শাগরিদ মাওলানা হায়দার আলী রামপুরী টোঙ্কী (মৃত্যু ১২৭৩ হি.) ‘সিয়ানাতুন নাস’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘তার হেদায়াতের নূর সূর্যের মত পূর্ণ ক্ষিপ্রতার সাথে বিভিন্ন শহর-নগর ও মানুষের অন্তরে উদ্ভাসিত হয়। চতুর্দিক থেকে ভাগ্যবান লোকজন পরকালের প্রতি মনোযোগী হযে় শিরক-বিদ’আত ইত্যাদির নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে (রীতিমত যুগ যাতে অভ্যস্ত ছিল) তাওবা করে তাওহীদ ও সুন্নাতের শাশ্বত পথ অবলম্বন করতে থাকে। আর প্রায়ই হযরতের পুণ্যাত্মা খলীফাগণ নানা স্থান সফর করে করে লাখ লাখ মানুষকে দীনে মুহাম্মদীর সরল সঠিক পথ বাতলে দেন। যাদের জ্ঞান-বুদ্ধি ছিল এবং আল্লাহর অনুগ্রহ যাদের সাহায্য করেছে তারা এই পুণ্যের পথে চলেন।’ (প্রাগুক্ত)

বিখ্যাত আলেমে দীন মাওলানা আবদুল আহাদ সাহেব, যিনি এই মুবারক জামাতের অনেক সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন, যার সময়কাল সাইযি়দ (র)-এর হাতে নিকটতর ছিল, তিনি লিখেন, ‘হযরত সাইয়্যিদ সাহেব (র)-এর হাতে চল্লিশ হাজারের অধিক হিন্দু প্রমুখ কাফির মুসলমান হযে়ছে। ত্রিশ লাখ মুসলমান তার হাতে বায়আত গ্রহণ করেছে। আর বায়’আতের যে ক্রমধারা তার খলীফাগণের খলীফাদের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে চালু রয়েছে, এই সিলসিলায় তো কোটি কোটি মানুষ তার বায়আতে অন্তুর্ভুক্ত হয়েছে।’ (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৫৯)

উপরোক্ত উদ্ধতিসমূহ থেকে পাঠকবৃন্দ চিন্তা করে দেখুন, হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর দাওয়াত ও আন্দোলনের প্রভাব কতটুকু।

হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) যে আন্দোলনের বদৌলতে ভারত উপমহাদেশ ছাড়াও বহির্বিশ্বে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রেখেছিলেন তাঁর সে আন্দোলন পর্যালোচনা করলে আমরা একে তিনটি ভাগে বিভক্ত করতে পারি। যেমন :
১. দ্বীনী সংস্কার আন্দোলন।
২. আধ্যাত্মিক আন্দোলন (তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া)।
৩. জিহাদ (সশস্ত্র সংগ্রাম)।

আলোচনার সুবিধার্থে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর আন্দোলনকে তিনভাগে বিভক্ত করলেও মূলত এ তিনটির উদ্দেশ্য ছিল এক ও অভিন্ন অর্থাৎ ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা, মানুষকে আল্লাহর পথে নিবিষ্ট করা এবং মুসলিম সমাজে অনুপ্রবিষ্ট কুসংস্কার ও বিদআতের মূলোৎপাটন।

দ্বীনী সংস্কার
সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) নানাবিধ দ্বীনী সংস্কার সাধন করেছেন। ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসলামী জীবনাচারের বিভিন্ন দিক বিলুপ্ত হযে় গিয়েছিল। সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এগুলো পুনরুজ্জীবিত করেন। তাঁর সংস্কারের মধ্যে রযে়ছে সালামের পুন:প্রচলন, ইসলামী পোশাক-পরিচ্ছদ পুনপ্রবর্তন, কবরপূজাসহ নানা ধরনের শিরক-বিদআত উচ্ছেদ করা, হজ্জের ফরযিয়ত সম্পর্কে প্রচলিত অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে অবস্থান এবং সদলবলে হজ্জ পালন, বিবাহ প্রথা সংশোধন এবং বিধবা বিবাহ পুন:প্রচলন, হিন্দুয়ানী বেশ-ভূষা ও রীতি-নীতি থেকে মুসলিম সমাজকে রক্ষা, তা’যিয়ার বিলোপ সাধন ইত্যাদি।

আধ্যাত্মিক আন্দোলন (তরীকায়ে মুহাম্মদিয়া)
সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) মুসলমানদের আত্মিক পরিশুদ্ধির জন্য ‘তরীকাযে় মুহাম্মদিয়া’ নামে একটি সমন্বিত তরীকা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি হলো চিশতিয়া, কাদরিয়া, নকশবন্দিয়া ও মুজাদ্দিদিয়া তরীকার সার নির্যাস। অধ্যাপক এইচ. রহমান সম্পাদিত ‘ভারত-উপমহাদেশের ইতিহাস’ গ্রন্থে সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর প্রতিষ্ঠিত তরীকায়ে মুহাম্মদিয়াকে ‘সংস্কার আন্দোলন’ হিসেবেই আখ্যাযি়ত করা হযে়ছে। উক্ত গ্রন্থে আছে : “ভারতের মুসলমানদের জাগরণ ও স্বাধীনতার জন্য যাঁহারা রক্ত দিয়াছেন তাহাদের মধ্যে শাহ্ সৈয়দ আহমদ বেরেলভীর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। মুসলমানদের ধর্মীয়, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন যখন তমসাচ্ছন্ন, তখন সৈয়দ আহমদের জন্ম হয়। মুসলমানদের বিশাল সাম্রাজ্য মারাঠা, ইংরেজ ও শিখেরা ছিনাইয়া লইয়াছিল। ফলে ঐ যুগে তাহাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হইয়া উঠিয়াছিল। শাহ্ সৈয়দ আহমদ ১৭৮৬ খৃষ্টাব্দে যুক্ত প্রদেশের রায়বেযে়লী নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দিল্লীর বিখ্যাত আলেম শাহ্ আব্দুল আজিজের নিকট অধ্যয়ন করেন। তিনি প্রথমে সংস্কার আন্দোলনে শুরু করেন। — শাহ্ সৈয়দ আহমদ শহীদের প্রচলিত সংস্কার আন্দোলন ‘মুহাম্মদী আন্দোলন’ নামে পরিচিত। ভারতের মুসলমানদের কুসংস্কার ও অনৈসলামিক রীতিনীতি দূর করিয়া ইসলামের নির্দেশিত সমাজ ও রাষ্ট্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করাই এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল।” (অধ্যাপক এইচ. রহমান সম্পাদিত, ভারত-উপমহাদেশের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৩৩৯-৩৪০)

জিহাদ (সশস্ত্র সংগ্রাম)
ভারতবর্ষে ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষে সাযি়্যদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)-এর নির্দেশনায় ও তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন অঞলে মুসলিম বাহিনী সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম জিহাদ সংগঠিত হয় শিখদের বিরুদ্ধে, যা আকুড়ার যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৮২২ খৃস্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর, ১২৪২ হিজরীর ২০ জমাদিউল আউয়াল তারিখে এ জিহাদ সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে আরো অনেক জিহাদ সংঘটিত হযে়ছে। সর্বশেষ ১৮৩১ সালের ৬ মে ঐতিহাসিক বালাকোট প্রান্তরে শিখ ও ইংরেজ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে জিহাদ করে সাযি়্যদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) শাহাদত বরণ করেন।

সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) সারাজীবন দ্বীনের খিদমতে, দ্বীনী আন্দোলনে অতিবাহিত করেছেন। তাঁর জীবন ও সংগ্রাম আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস।

Address

London
E27BE

Telephone

+447944326664

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when সায়্যিদ আহমদ শহীদ রাহ: posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category

Nearby media companies


Other Publishers in London

Show All