20/06/2024
·
খুনী রাসেল ভাইপার? নাকি আমরা?
ইদানিং প্রায় সব মিডিয়ায় আলোচনা হচ্ছে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) নিয়ে। গত ১০ বছর আগেও ধারণা করা হতো চন্দ্রবোড়া বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অনেকাংশে ঘটনা সত্য ছিল। তবে গত ১০ বছরে চিত্র পাল্টেছে। নদীর স্রোতে বা বন্যার পানিতে সারাদেশে চন্দ্রবোড়ার বিস্তার ঘটেছে। তবে ধারণা করা হয় গঙ্গার স্রোতে পদ্মা হয়ে সারা দেশে বিস্তৃত হয়েছে এই রাসেল ভাইপার।
তবে এই সাপ নিয়ে আমরা যে বিধ্বংসী মনোভাব রাখি তা ঠিক না। চন্দ্রবোড়া স্বভাবগতই কিছুটা তেজী। এটি মেটে কালারের হওয়ায় মাটির সাথে সহজে মিশে যায়। মানুষ খেয়াল করে না, কাছে চলে যায়। ফলে সাপটি বিপদ দেখে ভয়ে আক্রমণ করে। যেকোন প্রানীর স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য এটি।
দংশনের পর কি হয় এতদিনে আমরা সবাই জানি। মাংস পচে যাওয়া, বিকলাঙ্গ হয়ে যাওয়া, এমনকি চিকিৎসার পরেও মৃত্যুর রেকর্ড আছে। গত কয়েক বছরে চন্দ্রবোড়া যত ক্ষতি করেছে, তার মূল কারণ মূলত আমরাই। আমরা প্রকৃতির ব্যালেন্স নষ্ট করে দিয়েছি। যার ফলে রাসেল ভাইপার অত্যধিক হারে প্রকৃতিতে বেড়ে গিয়েছে।
বাপেরও বাপ থাকে। রাসেল ভাইপারকে খেয়ে ফেলে বাংলাদেশে মূলত এমন ৪ ধরণের সাপ আছে।
১) অজগর (Python)
২) শঙ্খচূড় (King Cobra)
৩) কালাচ/কেউটে (Common krait)
৪) শঙ্খিনী (Banded krait)
অজগর ছাড়া সবগুলোই মারাত্মক বিষধর। তবে এর মধ্যে শঙ্খিনী যেন একটু অন্যরকম। শঙ্খিনী মারাত্মক বিষধর সাপ, কিন্তু লাজুক প্রকৃতির। মানুষকে তো আক্রমণ করেই না, বরং বিষধর সাপ এরা খেয়ে ফেলে। মানুষ মারার রেকর্ড এদের নেই বললেই চলে। আপনি কাছে গেলে বরং এরা দূরে সরে যাবে। গায়ে হলুদ কালারের ব্যান্ড থাকায় সহজে মানুষের চোখে পড়ে। অতঃপর মারা যায়। আজ থেকেই সতর্ক হই। অন্তত এই শঙ্খিনী নিরীহ সাপটাকে যেন ভুলেও না মারি।
এছাড়া মেছো বাঘ, বন বিড়াল, শিয়াল, ঘড়িয়াল ইত্যাদি দেখলেই আমাদের হাত-পা নিশপিশ করে মেরে ফেলার জন্য। আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরে প্রকৃতির ব্যালেন্স নষ্ট করছি। বন্য প্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট করছি। দোষ দিচ্ছি অন্য আরেক প্রানীর। এবার বলুন, খুনী রাসেল ভাইপার নাকি আমরা?