Nur - Quran Er Alo

Nur - Quran Er Alo গান হোক সুস্থ এবং সুন্দর। গান হোক মান?
(1)

27/09/2024

নিরাশ হইও না, দুঃখিত হইও না- তুমি জয় লাভ করবে, যদি তুমি বিশ্বাসী হও!
(সূরা আল-ইমরান:১৩৯)

30/08/2024

তোমরা শুক্রবারকে ভয় করো কারণ কোনো এক শুক্রবারে কিয়ামত হবে

হযরত মুহাম্মদ (সা:)

26/08/2024

রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
দু'হাত তুলে দোয়া করলে, আল্লাহ বান্দার খালি হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।
(আবু দাউদ-১৪৮৮)

17/06/2024

تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَ مِنْكُمْv
ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলুন

তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম ,

আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনার নেকা আমল তথা ভাল কাজগুলো কবুল করুন।’

08/06/2024

“তুমি জান্নাত চেয়েও না বরং তুমি দুনিয়াতে এমন কাজ করো যেন জান্নাত তোমাকে চায়।”
— হযরত আলী (রাঃ)

মৃত্যু অনিবার্য। জন্ম নিলে মরতে হয়। শুধু মানুষ নয়। যার ভেতরে প্রাণ আছে সে মরবেই। মৃত্যুর সময় থেকে নিয়ে প্রাণ বা রুহ বের ...
31/03/2024

মৃত্যু অনিবার্য। জন্ম নিলে মরতে হয়। শুধু মানুষ নয়। যার ভেতরে প্রাণ আছে সে মরবেই। মৃত্যুর সময় থেকে নিয়ে প্রাণ বা রুহ বের হওয়ার আগ পর্যন্ত মানুষকে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। কুরআন-সুন্নাহের আলোকে মৃত্যুর কয়েকটি ধাপ

প্রথম ধাপ

প্রথম ধাপ মৃত্যুর দিন। এ দিন মানুষের জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে। হায়াত ফুরিয়ে যাবে। আল্লাহ ফেরেশতাদের নির্দেশ দেবেন বান্দার প্রাণবায়ু বের করে নিয়ে আসতে। চিরন্তন সত্য কথা হলো, কেউ এই দিন সম্পর্কে কিছুই জানে না। এমনকি যখন এই দিন চলে আসবে সেদিনও কেউ জানবে না আজ তার মৃত্যুর দিন।

কুরআন-সুন্নাহ থেকে যেটুকু বোঝা যায় তাহলো- মৃত্যুর বিষয়টি উপলব্ধি না করা সত্ত্বেও বান্দা তার দেহে কিছু পরিবতর্ন অনুভব করবে। মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি অনুভব হবে আর পাপিষ্ঠ বুকে খুব চাপ অনুভব করবে। এ দিন শয়তান এবং দুষ্ট জিন ফেরেশতাদের আকাশ থেকে নামতে দেখবে। কিন্তু মানুষ তাদের দেখবে না।

এ ধাপটির কথা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে, ‘তোমরা সেই দিনকে ভয় কর যেদিন তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে আল্লাহর কাছে। অতঃপর প্রতিটি আÍাকে পরিপূর্ণভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হবে তার কর্মফল।’ (সূরা বাক্বারা : ২৮১)।

দ্বিতীয় ধাপ

এটি হচ্ছে ধীরে ধীরে বান্দার ভেতর থেকে প্রাণ বের করার পালা। এ ধাপে প্রাণবায়ু পায়ের পাতা থেকে শুরু করে গোছা, হাঁটু, পেট, নাভি ও বুক হয়ে মানবদেহের কণ্ঠনালির নিচের ২ কাঁধ পর্যন্ত বিস্তৃত হাড় পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এ সময় মানুষ ক্লান্তি ও অস্থিরতা অনুভব করে এবং এক ধরনের অসহনীয় চাপ অনুভব করে। তখনো সে জানতে পারে না যে, তার রুহ বের হয়ে যাচ্ছে।

তৃতীয় ধাপ

এই ধাপে প্রাণ কণ্ঠাগত হয়ে যায়। কুরআনে এ স্তরের কথা বর্ণনা করা হয়েছে এভাবে : ‘কখনো না, যখন প্রাণ কণ্ঠাগত হবে এবং বলা হবে, কে ঝাড়বে এবং সে মনে করবে যে, বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে’। পায়ের গোছা অন্য গোছার সঙ্গে জড়িয়ে যাবে। (সূরা কিয়ামাহ : ২৬-৩০)।

কে ঝাড়বে অর্থাৎ আÍীয়স্বজনদের কেউ কেউ বলবে : ডাক্তার ডাকি, অন্যজন বলবে ইমার্জেন্সিতে কল করি, আবার কেউ বলবে কুরআন পড়ে ফুঁ দেই। অর্থাৎ সে চাইবে মৃত্যু থেকে বাঁচতে, কিন্তু কেউই এমন অবস্থা থেকে তার পরিত্রাণ ঘটাতে পারবে না।

চতুর্থ ধাপ

মৃত্যুর এটাই সর্বশেষ ও চূড়ান্ত স্তর। এ সময় তার চোখের পর্দা সরিয়ে দেওয়া হবে এবং সে চারপাশে উপস্থিত ফেরেশতাদের দেখতে পাবে। এখান থেকেই আখেরাত দেখার স্তর শুরু হবে। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার সামনে থেকে পর্দা সরিয়ে দিয়েছি, এখন তোমার দৃষ্টি প্রখর।’ (সূরা ক্বাফ : ২২)।

পঞ্চম ধাপ

এ স্তরে মানুষ পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পারবে সেকি জান্নাতি না জাহান্নামি। সে তার আমলের ফলাফল দেখবে এবং তার পরিণতি সম্পর্কে জানতে পারবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই স্তর নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন। বিশেষভাবে যারা বিভিন্ন গুনাহে লিপ্ত ছিল এবং তাওবা না করেই পাহাড়সম পাপ নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘শপথ সেই ফেরেশতাদের যারা নির্মমভাবে (রুহ) টেনে বের করে।’ (সূরা নাযিয়াত)।

জাহান্নামে একদল ফেরেশতা থাকবে, যারা আগুনের কাফন প্রস্তুত করে এবং খুব নির্দয়ভাবে পাপী ব্যক্তির রুহ কবজ করে। কোনো মুমিন বান্দার যখন দুনিয়া ত্যাগ করে আখেরাতে পাড়ি জমানোর সময় উপস্থিত হয়; তখন আসমান থেকে সাদা চেহারাবিশিষ্ট ফেরেশতারা নিচে নেমে আসেন। তাদের চেহারা সূর্যের মতো আলোকজ্জ্বল। তাদের সঙ্গে থাকে বেহেশতের কাফন ও আতর।

ষষ্ঠ ধাপ

এই ধাপে মানুষের রুহ বের হওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুত নিয়ে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে যায়। তখন রুহ বের হওয়ার জন্য এবং আজরাইল আলাইহিস সালামের কাছে আত্মসমর্পণের জন্য নাকে-মুখে অবস্থান করে। বান্দা যদি পাপীষ্ঠ হয়, তখন আজরাইল তাকে বলবে; হে নিকৃষ্ট আত্মা !

তুমি আগুন ও জাহান্নামের এবং ক্রোধান্বিত ও প্রতিশোধপরায়ণ রবের উদ্দেশে বের হয়ে আস। তখন তার অভ্যন্তরীণ চেহারা কালো হয়ে যাবে এবং চিৎকার করে বলবে, ‘হে আমার রব! আমাকে পুনরায় পাঠান যাতে আমি সৎকাজ করি, যা আমি পূর্বে করিনি।’ (সূরা মুমিন)।

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ বদলা দেওয়া হবে। তারপর যাকে দোজখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।’ [সূরা আল ইমরান : আয়াত ১৮৫]।

সুতরাং সর্বাবস্থায় আমাদের উচিত মৃত্যুকে স্মরণ করা। আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি জীবনদান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান। আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবক নেই, কোনো সাহায্যকারীও নেই।’

(সূরা তাওবা, আয়াত : ১১৬)

28/03/2024

১৭ই রমজান ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ দিবস। বদর দিবস ঈমানী চেতনার প্রতীক ৩১৩ জন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনা শরিফের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ৮০ মাইল দূরে বদর নামক স্থানে কাফেরদের সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এর মধ্যে ৭০ জন মুহাজির ও বাকিরা আনসার। অন্যদিকে কাফের কুরাইশ বাহিনীর সংখ্যা ছিল এক হাজার। তন্মধ্যে ১০০ জন অশ্বারোহী, ৭০০ জন উষ্ট্রারোহী ও বাকিরা পদব্রজী ছিল।

বদর যুদ্ধের সফলতা হচ্ছে, ইসলামের ঐতিহাসিক বিজয়, মুসলমানদের ইমানের পরিপক্বতা অর্জন, আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি, বিশ্ব বিজয়ের সূচনা, সর্বোত্তম ইতিহাস সৃষ্টি, প্রথম সামরিক বিজয়, কুরাইশদের শক্তি খর্ব, ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি, নবযুগের সূচনা, চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারক যুদ্ধ, রাজনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তি স্থাপন, জিহাদের অনুপ্রেরণা, আল্লাহর ওপর প্রগাঢ় আস্থা অর্জন, ইসলাম ও মহানবী সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতিষ্ঠা, এবং মুসলমানদের পক্ষে আল্লাহ তা’য়ালার গায়েবি সাহায্যের জ্বলন্ত প্রমাণ।

মানুষের জীবনে ধৈর্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?মানুষের জীবনে সবর বা ধৈর্যধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দুনিয়া ও পরকালে...
13/02/2024

মানুষের জীবনে ধৈর্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মানুষের জীবনে সবর বা ধৈর্যধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দুনিয়া ও পরকালে সবরের নেয়ামতও অনেক বেশি। তাই জীবনে বিপদ-মুসিবত নেমে এলে অস্থিরতা প্রকাশ না করে ধৈর্যধারণ করাই উত্তম। আর তাতে আল্লাহর কাছে পাওয়া যাবে অনেক প্রতিদান।

জগৎ বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের নব্বই স্থানে সবর সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।’ হাদিসে পাকে সবরকে জ্যোতি বা আলো বলা হয়েছে।

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘সবরকে আমরা আমাদের জীবন-জীবিকার সর্বোত্তম মাধ্যম হিসেবে পেয়েছি।’ (বুখারি)

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘ঈমানের ক্ষেত্রে সবরের উদাহরণ হল দেহের মধ্যে মাথার মত।’ এরপর উঁচু আওয়াজে তিনি বললেন, ‘যার ধৈর্য নাই তার ঈমান নেই।’

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা ধৈর্যের চেয়ে উৎকৃষ্ট এবং ব্যাপকতর দান কাউকে দেননি।’ (আবু দাউদ)

এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-‘আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিত কোনো বিপদ আসে না আর যে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে তিনি তাঁর অন্তরকে সঠিক পথের সন্ধান দেন।’ (সুরা তাগাবুন : আয়াত ১১)

যেসব ক্ষেত্রে সবর করতে হবে তা অনেকেই জানেন না। তিনটি বিষয়ের ওপর সবর করতে হবে। তাহলো-- আল্লাহ তাআলার আদেশের উপর সবর করা।- আল্লাহ তাআলার নিষেধের উপর সবর করা।- বিপদাপদে সবর করা।

আয়াতের মর্মার্থ-- আল্লাহ তাআলা যার অন্তরকে সঠিক পথের সন্ধান দেন; সে হল ওই ব্যক্তি যে বিপদে পড়লে বিশ্বাস করে যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। ফলে বিপদে পড়েও সে খুশি থাকে এবং সহজভাবে তাকে গ্রহণ করে।’- ‘যে ব্যক্তি বিপদে পড়লে বিশ্বাস রাখে যে, এটা আল্লাহর ফায়সালা মোতাবেক এসেছে। ফলে সে সবর করার পাশাপাশি পরকালে এর প্রতিদান পাওয়ার আশা রাখে এবং আল্লাহর ফয়সালার কাছে আত্মসমর্পণ করে; আল্লাহ তাআলা তার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আর দুনিয়ার যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তার বিনিময়ে তিনি তার অন্তরে হেদায়েত এবং সত্যিকার মজবুত বিশ্বাস দান করেন। যা নিয়েছেন তার বিনিময় দান করবেন।’- ‘যে ব্যক্তি ঈমান আনে আল্লাহ তার অন্তরকে হেদায়েত দেন।’- এর অর্থ হলো- সে কোনো ক্ষয়-ক্ষতি ও বিপদের সম্মুখীন হলে বলে ‘ইন্না ল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অর্থাৎ আমরা আল্লাহর জন্যই আর তাঁর কাছেই ফিরে যাব।

সবরের প্রয়োজনীয়তামানুষের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। মুমিনের প্রতিটি পদক্ষেপে ধৈর্যের প্রয়োজন। আল্লাহর নির্দেশের সামনে ধৈর্যের প্রয়োজন। আল্লাহর পথে দাওয়াতের ক্ষেত্রে ধৈর্যের প্রয়োজন। কারণ এ পথে নিজেকে পরিচালিত করলে অনেক বেশি কষ্ট-বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-- ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ‘আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করুন উত্তম পন্থায়। নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তাই ওই ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষভাবে জ্ঞান রাখেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে।’ (সুরা নাহল : ১২৫)- وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُواْ بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُم بِهِ وَلَئِن صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصَّابِرينَ‘আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদের কষ্ট দেয়া হয়। যদি ধৈর্যধারণ কর, তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম।’ (সুরা নাহল : আয়াত ১২৬)- وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلاَّ بِاللّهِ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلاَ تَكُ فِي ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُونَ‘আর আপনি সবর করবেন। আপনার সবর আল্লাহর জন্য অন্য কারও জন্য নয়; তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না এবং তাদের চক্রান্তের কারণে মন ছোট করবেন না।’ (সুরা নাহল : আয়াত ১২৭)দুনিয়াতে দ্বীন কায়েম তথা সত্যের পথে চলতে গেলে চরম ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। বিপদ-আপদের সময় ধৈর্যধারণ সম্পর্কে ছেলেকে উপদেশ দিয়েছেন হজরত লোকমান। কুরআনে এসেছে-يَا بُنَيَّ أَقِمِ الصَّلَاةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنكَرِ وَاصْبِرْ عَلَى مَا أَصَابَكَ إِنَّ ذَلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِহে ছেলে! নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে, সৎকাজে আদেশ দেবে, মন্দকাজে নিষেধ করবে আর বিপদাপদে সবর করবে। নিশ্চয়ই এটা সাহসিকতার কাজ।’ (সুরা লোকমান : আয়াত ১৭)

সুতরাং নানাবিধ বিপদ-মুসিবত, কষ্ট ও জটিলতার সামনে মুমিনের ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। তাই দুনিয়াতে যত সংকটই আসুক না কেন; মনে করতে হবে এসব আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। বিপদকে হালকাভাবে মেনে নেয়া, বিপদে আল্লাহর প্রতি খুশি থাকাও ঈমানের অগ্নি পরীক্ষা।

সবর করার সময় কোনাভাবেই ক্ষোভ, হতাশা ও অস্থিরতা প্রকাশ করা যাবে না। নিজের ভাষা ও আচরণকে সংযত রাখাও জরুরি।

সবরের বৈশিষ্ট্যবিপদ-আপদে ধৈর্যধারণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- সবর বা ধৈর্যধারণ বান্দার গোনাহ মাফের অন্যতম উপায়। বান্দা ধৈর্যধারণ করলে আল্লাহ তার গোনাহ ক্ষমা করে দেন। হাদিসে এসেছে-হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দার কল্যাণ চান তখন দুনিয়াতেই তাকে শাস্তি দেন। কিন্তু বান্দার অকল্যাণ চাইলে তিনি তার গোনাহের শাস্তি থেকে বিরত রেখে কেয়ামতের দিন তার যথার্থ প্রাপ্য দেন।’ (তিরমিজি)

এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘বিপদ-মুসিবত হল নেয়ামত। কারণ এতে গোনাহ মাফ হয়। বিপদে ধৈর্যধারণ করলে তার প্রতিদান পাওয়া যায়। বিপদে পড়লে আল্লাহর কাছে আরও বেশি রোনাজারি করতে হয়। তার কাছে আরও বেশি ধরণা দিতে হয়। আল্লাহর কাছে নিজের অভাব ও অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরার প্রয়োজন হয়। সৃষ্টি জীব থেকে বিমুখ হয়ে এক আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হয়। যাবতীয় বিপদের মধ্যে এ রকম অনেক বড় বড় কল্যাণ নিহিত রয়েছে।’

মনে রাখা জরুরিধৈর্যের পরিণতি প্রশংসনীয়। বান্দার বিপদ-আপদে যদি গোনাহ ক্ষমা হয়, পাপগুলো ঝরে যায় তবে মুমিন বান্দার জন্য এটা অনেক বড় নেয়ামত। আর বিপদ-মুসিবত যদি কোনো ব্যক্তির মধ্যে ধৈর্য ও আনুগত্য সৃষ্টি করে তবে এই মুসিবত তার জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে বিশাল নেয়ামতে পরিণত হয়।’

এ কারণেই মহান আল্লাহ তাআলা জীবনের সব কষ্ট ও বিপদাপদে নামাজ ও সবরের মাধ্যমে তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ, এতেই মানুষের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। ধৈর্যের পরিণতি প্রশংসনীয়। আল্লাহ তাআলা মুমিনকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন-يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ‘হে মুমিনগন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ধৈর্য্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)

সুতরাং বান্দার বিপদ যত কঠিন ও বড় হবে তার প্রাপ্তিও তত বড় হবে। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি এ কথা স্মরণ করিয়ে দিতে ঘোষণা করেন-‘বিপদ যত কঠিন হয় পুরস্কারও তত বড় হয়। আল্লাহ কোনো জাতিকে ভালবাসলে তাদেরকে পরীক্ষা করেন। সুতরাং যে তাতে সন্তুষ্ট থাকে আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান আর যে তাতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে যান।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সব নেয়ামত ও সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শবে মেরাজের ঘটনা ও ইতিহাস,মেরাজ অর্থ হলো ঊর্ধ্বগমন। লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী উপমহাদেশে শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত।...
08/02/2024

শবে মেরাজের ঘটনা ও ইতিহাস,

মেরাজ অর্থ হলো ঊর্ধ্বগমন। লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী উপমহাদেশে শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) অলৌকিক উপায়ে উর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

মহানবী (সা.) কর্তৃক সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় জিবরাইল (আ.) ও মিকাইলের (আ.) সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মেরাজের রাতে সফর করেন। তিনি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে প্রথম আসমানে গমন করেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিম পর্যন্ত ভ্রমণ করে মহান রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন। পাশাপাশি জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।

ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক অর্থাৎ (ফরজ) নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়।

মিরাজের ঘটনা ও ইতিহাস

হিজরতের পূর্বের কথা। এক রাতে আল্লাহর রাসুল (সা.) শুয়েছিলেন। তন্দ্রাচ্ছন্ন, চোখদুটো মুদে এসেছে। তবে হৃদয়-মানস ছিল জাগ্রত। এরই মাঝে আগমন করলেন হযরত জিবরাঈল (আ.)। তিনি নবীজিকে উঠিয়ে নিয়ে গেলেন জমজমের নিকট। একটি স্বর্ণের পেয়ালা আনা হলো। তা ছিল ঈমান ও হিকমতে পূর্ণ; তাতে জমজমের পানি। জিবরাঈল (আ.) নবীজির বক্ষ মোবারক বিদীর্ণ করলেন। বের করে আনলেন নবীজির হৃদয়। যমযমের পানি দিয়ে তা ধুয়ে আবার প্রতিস্থাপন করে দিলেন জায়গামত। ঈমান ও হিকমতে পূর্ণ করে দেওয়া হলো নবীজির কলব।

এরপর আনা হলো নবীজিকে বহন করার জন্য সওয়ারী। প্রাণীটি গাধার চেয়ে বড়, ঘোড়া থেকে ছোট। নাম বুরাক। রং সাদা। এটা এতটাই ক্ষিপ্রগতির যার একেকটি কদম পড়ে দৃষ্টির শেষ সীমায় গিয়ে।

বাইতুল মুকাদ্দাসে মহানবী (সা.)

এভাবে নবীজি (সা.) মুহূর্তেই পৌঁছে গেলেন বাইতুল মুকাদ্দাসে। বুরাক বেঁধে রাখা হলো পাথর ছিদ্র করে। যে পাথরে অপরাপর নবীগণ নিজেদের বাহন বেঁধে রাখতেন। নবীজি সেখানে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন। নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় জিবরাঈল (আ.) নবীজির সামনে দুটি পেয়ালা পেশ করলেন। একটি দুধের অপরটি শরাবের। নবীজি দুধের পেয়ালা গ্রহণ করলেন। জিবরাঈল (আ.) বললেন, আপনি (দ্বীনের) স্বভাবসিদ্ধ বিষয়টি নির্বাচন করেছেন।

নবীজি মদের পেয়ালা নেওয়ার পরিবর্তে দুধের পেয়ালা গ্রহণ করায় জিবরীল (আ.) বলেন, আপনি যদি মদের পেয়ালা নিতেন তাহলে আপনার উম্মত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ত। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৯৪)

প্রথম আসমানে প্রিয়নবী (সা.)

এরপর শুরু হলো ঊর্ধ্বজগতের সফর। জিবরাঈল নবীজিকে নিয়ে চললেন। প্রথম আসমানে গিয়ে দস্তক দিলেন। জিজ্ঞাসা করা হলো, কে? বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হলো, আপনার সাথে কে? বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞাসা করা হলো, তার কাছে কি আপনাকে পাঠানো হয়েছে? বললেন, হাঁ। এরপর নবীজিকে সম্ভাষণ জানানো হলো- মারহাবা, উত্তম আগমনকারীর আগমন ঘটেছে! খুলে দেওয়া হলো নবীজির জন্য আসমানের দরজা।

নবীজি প্রথম আসমানে গেলেন। সেখানে ছিলেন হযরত আদম (আ.)। জিবরাঈল পরিচয় করিয়ে দিলেন। নবীজি আদমকে সালাম বললেন। বাবা আদম জবাব দিলেন। নবীজিকে সাদর অভিবাদন জানালেন- মারহাবা, নেককার পুত্র ও নেককার নবী। হযরত আদম (আ.) নবীজির জন্য দোয়া করলেন।

নবীজি যখন দ্বিতীয় ও তৃতীয় আসমানে

এরপর নবীজি উঠতে থাকলেন দ্বিতীয় আসমানের দিকে। সেখানেও দরজা খুলতে প্রথম আসমানের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। এরপর নবীজিকে ইস্তেকবাল করা হলো। নবীজি সেখানে দেখতে পেলেন দুই খালাত ভাই হযরত ঈসা (আ.) ও ইয়াহইয়া (আ.)-কে। তাদের সাথে নবীজির সালাম বিনিময় হলো। তারা নবীজিকে স্বাগত জানালেন- মারহাবা, আমাদের পুণ্যবান ভাই এবং সজ্জন নবী। তারা নবীজির জন্য দোয়া করলেন।

এরপর নবীজিকে তৃতীয় আসমানের দিকে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানেও দুই আসমানের মতো জিজ্ঞাসাবাদ হলো এবং নবীজিকে স্বাগত জানানো হলো। সেখানে গিয়ে দেখলেন হযরত ইউসুফ (আ.)। হযরত ইউসুফের সাথে নবীজির সালাম ও কুশল বিনিময় হলো। নবীজি (সা.) বলেন, হযরত ইউসুফকে যেন দুনিয়ার অর্ধেক সৌন্দর্য ঢেলে দেওয়া হয়েছে!

চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ ও শেষ আসমানে নবীজি

এরপর চললেন চতুর্থ আসমানের দিকে। সেখানেও পূর্বের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। স্বাগত-সম্মান জানানো হলো। সেখানে হযরত ইদরীস (আ.)-এর সাথে সাক্ষাৎ হলো। সালাম ও কুশল বিনিময় হলো। হযরত ইদরীস (আ.) নবীজির জন্য দোয়া করলেন।

এরপর চললেন পঞ্চম আসমানের দিকে। সেখানে হযরত হারূন (আ.)-এর সাথে সাক্ষাৎ হলো।

এরপর চললেন ষষ্ঠ আসমানের দিকে। সেখানেও পূর্বের পর্বগুলোর মতো জিজ্ঞাসা করা হলো। নবীজিকে অভিনন্দন জানানো হলো। সেখানে দেখা হলো হযরত মূসা আ.-এর সাথে। হযরত মূসা আ. নবীজিকে খুব ইস্তেকবাল করলেন।

বাইতুল মামুর ও সিদরাতুল মুনতাহায় নবীজি

এরপর নবীজি সপ্তম আসমানের দিকে উঠতে থাকেন। সেখানে দেখা হলো হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে। জিবরাঈল আ. পরিচয় করিয়ে দিলেন- ইনি আপনার পিতা, সালাম করুন। নবীজি হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে সালাম বিনিময় করলেন।

নবীজি বলেন, হযরত ইবরাহীম আ. তখন বাইতুল মামুরে হেলান দিয়ে ছিলেন। বাইতুল মামুর, যেখানে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসে। এরপর এই সত্তর হাজার আর ফিরে আসে না। এভাবে প্রতিদিন সত্তর হাজার করে ফেরেশতাদের নতুন নতুন কাফেলা আসতে থাকে।

এরপর নবীজিকে নিয়ে যাওয়া হলো সিদরাতুল মুনতাহার দিকে। সেই কুল বৃক্ষের একেকটি পাতা হাতির কানের মতো। আর একেকটি ফল মটকার মতো বড় বড়। যখন ওটাকে আল্লাহর বিধান আচ্ছন্ন করে নিল তা পরিবর্তিত হয়ে গেল। সৃষ্টির কারো সাধ্য নেই তার সৌন্দর্যের বিবরণ দেবার। জিবরাঈল বললেন, এটা সিদরাতুল মুনতাহা। এখানে চারটি নহর। দুটি অদৃশ্য আর দুটি দৃশ্যমান। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, দৃশ্যমান নদীদুটি কোনগুলো? জিবরাঈল বললেন, অদৃশ্যমান দুটি জান্নাতে। আর দৃশ্যমান দুটি হলো নীল নদ ও ফুরাত নদী।

উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ

এরপর আল্লাহ তাআলা নবীজির প্রতি যে ওহী পাঠানোর পাঠালেন। দিনরাতে উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিলেন। নবীজি আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাতের এ হাদিয়া নিয়ে ফেরত আসছিলেন; এর মধ্যে দেখা হযরত মূসা আ.-এর সাথে। হযরত মূসা আ. জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ আপনার উম্মতের জন্য কী দিয়েছেন? নবীজি বললেন, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ। হযরত মূসা বললেন, আপনার উম্মত রাত-দিনে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারবে না। আপনার আগে আমি উম্মত চালিয়ে এসেছি। আপনি আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে আনেন।

নবীজি সে মতে আল্লাহর কাছে গিয়ে কম করে দেওয়ার দরখাস্ত করলেন। আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলেন। নবীজি তা নিয়ে ফেরত আসছিলেন। আবার হযরত মূসা আ.-এর সাথে দেখা হলো। বললেন, আপনার উম্মত তা পারবে না। আপনি আরো কমিয়ে আনুন। নবীজি আবার আল্লাহর কাছে গিয়ে আগের মতো দরখাস্ত করে আরো পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে আনলেন। নবীজি বলেন, এভাবে আমি আল্লাহ ও মূসার মাঝে আসা-যাওয়া করতে থাকি। শেষবার আল্লাহ বলেন, মুহাম্মদ! এই হলো দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। প্রত্যেক নামাজের বিনিময়ে দশ নামাজের সাওয়াব। এভাবে বান্দা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের সওয়াব পাবে। কেউ কোনো ভালো কাজের ইচ্ছা করবে কিন্তু করতে পারবে না, তার জন্যও নেকি রয়েছে; এক নেকি। আর যদি ভালো কাজটি করে তাহলে তার জন্য দশ নেকী। আর কেউ কোনো মন্দ কাজের ইচ্ছা করলে কোনো গুনাহ লেখা হবে না। তবে তা করে বসলে একটি গুনাহ লেখা হবে।

নবীজি এ সওগাত নিয়ে ফেরত আসছিলেন। হযরত মূসার সাথে দেখা হলো। মূসা আ. এবার শুনে বললেন, আপনি যান, আরো কমিয়ে আনুন। আপনার উম্মত পারবে না। বনী ইসরাঈলের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা আছে। নবীজি বললেন, আমার আর কিছু বলতে লজ্জা হচ্ছে! (বুখারি, হাদিস: ৩৮৮৭; মুসলিম, হাদিস: ১৬২, ১৬৪)

নবীজিকে যখন বুরাকে তোলা হচ্ছিল তখন বুরাক ঔদ্ধত্য দেখাল। তখন জিবরাঈল আ. বললেন, মুহাম্মাদের ক্ষেত্রে এরকম করছিস! তোর উপর তো এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ কোনোদিন চড়েনি। এ শুনে বুরাক ঘর্মাক্ত হয়ে গেল। (তিরমিজি, হাদিস : ৩১৩১)

নবীজির জন্য হাউজে কাউসার

আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্য যে বিশেষ উপহার হাউজে কাউসার রেখেছেন প্রথম আসমানে নবীজিকে তা দেখানো হয়। নবীজি সেই কাউসারের বিবরণও দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৭৫১৭)

নবীজি (সা.) যখন প্রথম আসমানে যান- দেখেন এক ব্যক্তি, তার ডান পাশে কিছু রূহ আর বাম পাশে কিছু রূহের কাফেলা। তিনি ডানদিকে তাকালে হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন। তিনি নবীজিকে সম্ভাষণ জানালেন। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল! ইনি কে? জিবরাঈল বললেন, ইনি আদম আ.। আর তার দুই পাশে তার সন্তানদের রূহ। ডানদিকেরগুলো জান্নাতী আর বামদিকেরগুলো জাহান্নামী। এজন্য তিনি ডানদিকে তাকিয়ে হাসেন আর বামদিকে তাকিয়ে কাঁদেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৪২)

জান্নাত-জাহান্নাম ভ্রমণে নবীজি

এ সফরে নবীজিকে জান্নাত-জাহান্নামের ভ্রমণও করানো হয়। নবীজি বলেন, জান্নাতের প্রাসাদগুলো মুক্তার তৈরি আর তার মাটি হলো মেশকের। (বুখারি, হাদিস : ৭৫১৭)

নবীজি এ সফরে একদল লোককে দেখলেন, তাদের নখগুলো তামার। নিজেদের নখ দিয়ে তারা নিজের গাল ও বুকে আঁচড় কাটছে। জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল! এরা কারা?

বললেন, এরা ওই সমস্ত লোক, যারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের সম্ভ্রমে আঘাত হানত। অর্থাৎ গীবত করত এবং মানুষকে লাঞ্ছিত করত। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৩৩৪০; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮)

নবীজি এ সফরে মুসা (আ.) ও হযরত ঈসা (আ.)-এর শারীরিক গড়নেরও বিবরণ দেন। নবীজি বলেন, আমি ইবরাহীমের আকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৯৪)

হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে মুলাকাত হলে তিনি নবীজিকে বলেন, আপনি আপনার উম্মতের কাছে আমার সালাম পৌঁছাবেন। আর তাদেরকে বলবেন, জান্নাতের মাটি পবিত্র ও সুঘ্রাণযুক্ত, এর পানি সুমিষ্ট এবং এর ভূমি উর্বর ও সমতল। আর এর বৃক্ষ হচ্ছে-

سُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ لِلهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَر.

উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

অর্থ : আল্লাহ পবিত্র, সব প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬২)

মিরাজের সফরে নবীজিকে উপহার

এ সফরে নবীজিকে তিনটি উপহার দেওয়া হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো এবং এই উম্মতের যারা শিরক থেকে বেঁচে থেকে মৃত্যুবরণ করবে— তাদের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়ার ঘোষণা। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৩)

এ সফরে নবীজির সাথে পূর্ববর্তী নবীগণের সাক্ষাৎ হয়। তখন তিনি নামাযে সকলের ইমামতি করেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৭২)

এ সফরে নবীজি দেখলেন, একদল লোকের ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কারা? জিবরাঈল বললেন, এরা বক্তৃতা করত বটে, কিন্তু নিজেরা আমল করত না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১২২১১, ১২৮৫৬)

মিরাজ থেকে ফেরার পরের ঘটনা

রাসূলুল্লাহ (সা.) মিরাজ থেকে ফিরে হাতীমে বসা। মুশরিকরা ইসরা ও মেরাজের ঘটনা শুনে উপহাস ও কটাক্ষ করতে লাগল। বিভিন্নভাবে নবীজির দিকে প্রশ্নের তীর ছুড়তে লাগল। তারা চাইল, বাইতুল মুকাদ্দাসের পূর্ণ বিবরণ শুনবে। নবীজি এমন প্রশ্নে খুবই বিব্রত হয়ে ওঠেন। এত রাতে কি বাইতুল মুকাদ্দাসকে ওরকম নিখুঁতভাবে দেখতে গিয়েছেন নাকি!

নবীজি বলেন, এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আমি আগে পড়িনি। আল্লাহ তাআলা প্রিয় বন্ধুকে সাহায্য করলেন। নবীজির চোখের সামনে মেলে ধরলেন বাইতুল মুকাদ্দাসের দৃশ্য। নবীজি দেখে দেখে তাদের প্রত্যেকটি জিজ্ঞাসার বিস্তারিত জবাব দিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮৮৬; মুসলিম, হাদিস : ১৭২)

মক্কার কোনো পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন হযরত আবু বকর রা.। মক্কার কাফেররা তাকে এ বিস্ময়ের কথা বলে সুধাল, তবুও কি তুমি তাকে বিশ্বাস করবে? হযরত আবু বকরের হৃদয়ে ঈমানের বহ্নিশিখা জ্বলে উঠল। তিনি এক আকাশ আস্থা নিয়ে সুদৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠলেন, আমি তো এর চেয়েও আরো দূরের অনেক জটিল বিষয়েও তাঁকে বিশ্বাস করি। তাঁর কাছে আসা আসমানী বার্তাগুলোর ওপর রয়েছে আমার অটল বিশ্বাস ও সুদৃঢ় ঈমান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬২)

রিযিক বৃদ্ধির ছয়টি উপায়ঃ১) তাক্বওয়া:যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ্ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণা...
05/02/2024

রিযিক বৃদ্ধির ছয়টি উপায়ঃ
১) তাক্বওয়া:
যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ্ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন।
[সূরা তালাক(৬৫): ২-৩]
২) তাওয়াক্কুল:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ্ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।“🕋আলহামদুলিল্লাহ 🕋
[সূরা তালাক(৬৫): ৩]
৩) দান-সদকা: 🕋আলহামদুলিল্লাহ 🕋
কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার জন্য বহু গুণে বাড়িয়ে দেবেন?
[সূরা বাক্বারাহ(২): ২৪৫]
৪) কৃতজ্ঞতা: 🕋আলহামদুলিল্লাহ 🕋
আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন’।
[সূরা ইবরাহিম(১৪): ৭]
৫) ইস্তিগফার: 🕋আস্তাগফিরুল্লাহ🕋
“অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।“
[সূরা নূহ(৭১): ১০-১২]
৬) পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা:
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে কামনা করে যে তার রিযিক বৃদ্ধি পাক এবং জীবন দীর্ঘায়িত হোক, সে যেন আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে।“
[সহীহ বুখারী]
আল্লাহ্ তাআ'লা আমাদের সবাইকে আমল
করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

25/01/2024

রাত তিন টায় উঠবেন। উত্তম রূপে অযু করবেন, সুন্দর একটা জামা পড়বেন, চুলটা আঁচড়ে নিবেন, একটু সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। এই সাজ শুধুমাত্র মহান আল্লাহর জন্য।❤️

এরপর জায়নামাজ বিছিয়ে দুই রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করবেন, মনের সব কথা ওনাকে বলবেন। সবাই ঘুমাচ্ছে, শুধু আপনি আর আল্লাহ সবচেয়ে সুন্দর একটা মুহূর্ত।🖤

বিশ্বাস করুন, সত্যিকারের ভালোবাসা কি আপনি তখন অনুভব করতে পারবেন।

22/01/2024

সমকামিতা ইসলামে হারামই নয় বরং এটি অভিশপ্ত অপরাধ। সমকামিতার অপরাধে মহান আল্লাহ তাআলা হজরত লুত আলাইহিস সালামের সময়ে শিলা/প্রস্তর বৃষ্টি দিয়ে পুরো জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা তা তুলে ধরেছেন এভাবে

💠আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল- তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি?’ (সুরা আরাফ : আয়া ৮০)

💠‘তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৮১)

আল্লাহ তাআলা সমকামিতার ভয়বাহ অন্যায় ও তাদের পরিণতি সম্পর্কে উল্লেখিত আয়াতসমূহে তুলে ধরেছেন। সমকামিতা ইসলামে হারাম ও সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি অবৈধ যৌনাচার, জেনা-ব্যভিচারের গোনাহসমূহের চেয়েও মারাত্মক ধ্বংসযোগ্য অপরাধ।

💠রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সমকামিতার অপরাধে জড়িতদের ব্যাপরে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কাউকে লুত সম্প্রদায়ের কাজ (সমকামিতায়) জড়িত দেখলে; যে করে এবং যার সঙ্গে করা হয় উভয়কে হত্যা কর।’ (তিরমিজি)

💠রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দেবেন না, যে কোনো পুরুষের সঙ্গে সমাকামিতায় লিপ্ত হয় অথবা কোনো নারীর পেছনের রাস্তা দিয়ে সহবাস করে।’ (তিরমিজি)

💠আব্দুর রাহমান ইবনু অবাূ সাঈদ আল-খুদরী থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কোনো পুরুষ অন্য পুরুষের গোপন অঙ্গের দিকে তাকাবে না এবং কোনো নারীও অন্য নারীর গোপন অঙ্গের দিকে তাকাবে না। আর কোনো পুরুষ অপর পুরুষের সাথে একই কাপড়ের ভিতরে একত্রে ঘুমাবে না এবং কোনো নারীও অপর নারীর সাথে একই কাপড়ের ভিতরে ঘুমাবে না। (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪০১৮)

💠আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন ঐসব পুরুষকে যারা নারীর অনুরূপ পোশাক পরে এবং ঐসব নারীকে যে পুরুষের অনুরূপ পোশাক পরিধান করে (সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) ৪০৯৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহসহ সবাইকে উল্লেখিত অপরাধ দুইটি সমকামিতা ও বিকৃত যৌনাচার থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সুন্দর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন।

14/01/2024

#কুরআন_কারীমে_জুলুমের_বিস্তৃত_অর্থ

জুলুম’ একটি বড় পাপ। জুলুম অতীতের নেক আমলগুলো নষ্ট করে দেয়, ভবিষ্যতের জন্য ডেকে আনে কঠিন পরিণতি। জুলুমের কারণে লোকে ঘৃণা করে, মজলুম বদদুআ করে। সর্বোপরি আল্লাহর অসন্তুষ্টি নেমে আসে জুলুমের কারণে। জুলুমের শাস্তি ও পরিণতিও সুদূরপ্রসারী। দুনিয়া ও আখেরাত, সবখানে জুলুমকারী শাস্তি পেতে থাকে।

🔷 আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দারা! আমি আমার জন্য জুলুম হারাম করেছি আর তা (জুলুম) তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও হারাম করেছি।অতএব তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম কোরো না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)।

#আল্লাহ_কেন_জুলুম_করেন_না
পূর্ণ ক্ষমতা থাকার পরও আল্লাহ কোনো সৃষ্টির প্রতি অবিচার করেন না। না মানুষের প্রতি, না অন্য কোনো সৃষ্টির প্রতি। কেননা জুলুম ন্যায়পরায়ণতার বিপরীত—যা মহান আল্লাহর শানবিরোধী। আল্লাহর সর্বময় ক্ষমতার দাবি হলো তিনি ‘জুলুম’ বা অবিচার থেকে অমুখাপেক্ষী।

🔷 ‘আমি বান্দাদের ওপর কোনো জুলুম করি না।’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ২৯)

🔷 আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতি কোনো জুলুম করতে চান না।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৮)

🔷 আপনার প্রভু কারো ওপর জুলুম করেন না।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৪৯)

🔷 তোমার প্রতিপালক তার বান্দাদের প্রতি কোনো প্রকার জুলুম করেন না। ’ -সূরা হামিম সিজদা: ৪৬

#পরস্পরের_প্রতি_জুলুম_নিষিদ্ধ
আল্লাহ শুধু নিজের ওপর জুলুম হারাম করেননি; বরং বান্দার জন্যও পরস্পরের প্রতি জুলুম নিষিদ্ধ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

🔷 ‘ওই সব জনপদ—তাদের অধিবাসীদের আমি ধ্বংস করেছিলাম, যখন তারা জুলুম করেছিল এবং তাদের ধ্বংসের জন্য আমি স্থির করেছিলাম একটি নির্দিষ্ট ক্ষণ।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৫৯)

🔷 ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের সম্মানহানির মাধ্যমে বা অন্য কোনো প্রকারে তার উপর জুলুম করেছে, সে যেন আজই তার সাথে মুআমালা সাফ করে নেয়; সেই দিন আসার পূর্বেই, যেদিন তার কাছে কোনো দিনার-দিরহাম (টাকা-পয়সা) থাকবে না। সেদিন যদি তার কাছে কোনো নেক আমল থাকে তবে তার জুলুম পরিমাণ সেখান থেকে নিয়ে নেওয়া হবে (এবং পাওনাদারকে আদায় করা হবে।) আর যদি কোনো নেক আমল না থাকে তাহলে যার উপর জুলুম করেছে তার পাপের বোঝা জুলুম অনুযায়ী জালেমের ঘাড়ে চাপানো হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৪৪৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪১৯

মানুষ আল্লাহর অবাধ্য হয়ে নিজের প্রতি বা অন্যের অধিকার নষ্ট করে মানুষের প্রতি—যে প্রকারের জুলুমই করুক না কেন তার প্রথম প্রতিকার হলো অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কোরআনে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার নিয়মও বাতলে দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

🔷 ‘তাঁরা [আদম ও হাওয়া (আ.)] বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করেছি, আপনি যদি ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২৩)

#জুলুমের_প্রতিকারে_তাওবা_যথেষ্ট_নয়
মানুষের প্রতি অবিচার করলে শুধু তাওবাই যথেষ্ট নয়; বরং জুলুমের শিকার ব্যক্তির অধিকার আদায় করা, তাকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং তার কাছে ক্ষমা চাওয়াও আবশ্যক। কেননা মহানবী (সা.) বলেছেন,

🔷 ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের ওপর জুলুম করেছে সে যেন তার কাছ থেকে ক্ষমা নিয়ে নেয়, তার ভাইয়ের পক্ষে তার আমলনামা থেকে পুণ্য কেটে নেওয়ার আগেই। কারণ সেখানে কোনো দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) বা দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি পুণ্য না থাকে তবে তার (মজলুম) ভাইয়ের গুনাহ তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫৩৪)

জুলুম কেবল অন্যের প্রতি নয়, নয় কেবল বান্দার হক নষ্ট করার মাধ্যমে; জুলুম হয় নিজের প্রতিও- বিভিন্ন গোনাহ ও শরীয়তের হুকুম লঙ্ঘনের মাধ্যমে

🔷 হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজ সত্তার উপর জুলুম করে ফেলেছি। আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন ও আমাদের প্রতি রহম না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অকৃতকার্যদের অন্তভুর্ক্ত হয়ে যাব। -সূরা আরাফ (৭) : ২৩

আল্লাহ আমাদেরকে সকল প্রকার জুলুম থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করুন- আমীন।

13/01/2024

اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।
’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।

08/01/2024

নামাজ! নামাজ! নামাজ!

ইরশাদ হয়েছে,
-"নিশ্চয়ই সালাত নির্ধারিত সময়ে মুমিনদের এক অবশ্য পালনীয় কাজ।"
(সুরা: নিসা,আয়াত-১০৩)

-"তুমি তোমার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দাও এবং (নিজেও) তাতে অবিচলিত থাকো।"
(সূরা :ত্বহা,আয়াত-১৩২)

-"হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় তোমরা সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান কোরো।"
(সুরা আরাফ,আয়াত-৩১)

-"নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।"
(সূরা:আনকাবুত-৪৫)

বেনামাজিদের শাস্তি:

ইরশাদ হয়েছে,
"ধংস ঐ সালাত(নামাজ) আদাকারীদের জন্য যারা নিজেদের সালাতে অমনোযোগী(উদাসীন)
এবং যারা তা(নামাজ) লোক দেখানোর জন্য আদায় করে"
(সুরা :মাউন, আয়াত:৪-৬)

-"স্মরণ করো সেদিনের কথা, যেদিন পায়ের গোছা উন্মোচন করা হবে। সেদিন তাদের আহ্বান করা হবে সিজদা করার জন্য, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না। তাদের দৃষ্টি অবনত, হীনতা তাদের আচ্ছন্ন করবে। অথচ যখন তারা নিরাপদ ছিল, তখন তো তাদের আহ্বান করা হয়েছিল সিজদা করতে।"
(সুরা : কালাম, আয়াত : ৪২-৪৩)

-"নবী ও হেদায়েতপ্রাপ্তদের পর এলো এমন এক অপদার্থ বংশধর, যারা নামাজ বিনষ্ট করল এবং প্রবৃত্তির পূজারি হলো। সুতরাং তারা ‘গাই’ নামক জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। তবে যারা এরপর তওবা করে নিয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই তো জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি কোনো ধরনের জুলুম করা হবে না।"
(সুরা মারইয়াম, আয়াত : ৫৯-৬০)

-"কিসে তোমাদের জাহান্নামের আগুনে(সাকার) নিক্ষেপ করল?
তারা(জাহান্নামীরা)বলবে,
আমরা সালাত (নামাজ) আদায় করতাম না।"
(সূরা আল মুদাসসির, আয়াত :৪২)

নামাজীদের পুরস্কার :

ইরশাদ হয়েছে,
-"যারা নিজেদের নামাজের হিফাজত করে তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।"
(সূরা :মা-আরিজ, আয়াত-৩৪,৩৫)

-"নিশ্চয়ই সে সাফল্য লাভ করে যে নিজেকে পরিশুদ্ধি করে এবং তার রবের নাম স্মরণ করে অতপর সালাত (নামাজ) আদায় করে।"
(সুরা আল-আলা, আয়াত-১৪-১৫)

-"মুমিনরা সফলকাম হয়েছে, যারা তাদের নামাজে বিনীয়, যারা অর্থহীন কথা-কাজ থেকে বিরত থাকে।"
(সুরা মুমিমুন, আয়াত- ১-৩)

আল্লাহতায়ালা আমাদের নামাজ সমূহের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আমিন

Address

Dhaka
1215

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Nur - Quran Er Alo posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category