14/04/2023
আজ আপনাদের সাথে একটি ছোট ঘটনা শেয়ার করবো।।এর কোনও বিশ্লেষণ আমি এখনো পর্যন্ত পাই নি ।
আমার রুমের জানালাটা ঠিক পাশের এক বিল্ডিং এর গা ঘেঁষে।।আমার জানালায়
প্রায় রাতেই কে যেনও ঠক ঠক করতো।। আনুমানিক রাত ৩ টার দিকে আওয়াজটা পাওয়া যেতো।। আমার প্রতিদিন ঘুম ভাঙত না, তবে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমি সাংঘাতিক ভয় পেতাম।। আমার কথা বিশ্বাস না হওয়ায় আমার বড় ভাই নিজেও প্রায় ২ মাস একসাথে আমার বিছানায় থাকতো ।।সেই সময়ও আওয়াজটা হতো।। এবং আমরা দুজনেই আওয়াজটা পেতাম।। কোনোদিন খুলে দেখার সাহস হয় নি তখনো।। এবং সবচেয়ে আশ্চর্যকর ব্যাপার হল, আওয়াজটা ঠিক রাতে ৩টার পর পর হতো এবং ১৫ মিনিট পর থেমে যেতো।। অবস্থা বেগতিক দেখে আমার মা উনার ছোট ভাইকে খবর দেন।।অর্থাৎ আমারছোট মামা।। এখানে বলে রাখা ভালো,
আমরা কয়েকবার কে কেবলে চিৎকার করেছি, কিন্তু কোনও সাড়া শব্দ পাইনি।। তাই পাছে কোনও ক্ষতি হয়এই ভয়ে আমরা জানালা খুলতাম না।।আর আমার বাবা প্রায় সময়েই বাড়ির বাইরে থাকতেন।। শুধু বাড়িতে আমি, মা, আর আমার ভাই।। একা বাড়িতে এমন রিস্ক নিয়ে রাতের বেলা জানালা খোলার সাহস কারো ছিল না।।
সে যাই হোক, আমার ছোটমামা আসার পর উনাকে আমার সাথে থাকতে দেয়া হল।। সেদিন রাতে আমরা খাওয়া দাওয়া করে ৩টার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি।। আমার কিছুতেই ঘুম আসছিলো না।। ছোট মামা নিজে খুবই সাহসী লোক।।উনাকে বলা হয়েছিলো জানালা নক করার ব্যাপারে।। কিন্তুউনি হেসে উড়িয়ে দেন।। যাই হোক, রাত ৩ টার দিকে কোনও এক কারণে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।। অনুভব করি সাড়া গা ঘামে ভিজে গেছে।। মনে হয় কারেন্ট নেই।। আমি ধাক্কা দিয়ে মামাকে দেখার চেষ্টা করি।। কিন্তু মামা পাশে নেই।। আমার বুকটা ধক করে উঠে।। মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে দেখি রাত তখন ৩ টা বেজে ১৫ মিনিট।। আমি খুব ভয়ে এবং সাবধানে আমার বিছানা থেকে নেমে যাই।। রুম থেকে বের হতেই দেখি মামা আমাদের খাবার রুমের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।। এই জানালা থেকে আমার রুমের পাশের ছাদটা পরিষ্কার দেখা যায়।। দেখলাম মামা গভীর মনোযোগে কি যেনও দেখছেন।। আমি পা টিপে টিপে মামার পাশে এসে দাঁড়াই।।
মামা আমাকে দেখে চমকে গেলেন।। আমি বুঝলাম না আমাকে দেখে মামা চমকালেন কেন।। মামা আমাকে ঠোটে আঙ্গুল দিয়ে কথা বলতে নিষেধ করলেন এবং বললেন উঁকি না দিতে।। কিন্তু ততক্ষণে আমি দেখে ফেলেছি যা দেখার।।
সেই ছাদে একটা লাশ পরে আছে।। জবাই করা একটা লাশ।। মাথাটা ধর থেকে আলাদা করা।। চাঁদের আলোর দেখা যাচ্ছে ছাদটা রক্তে ভিজে একাকার হয়ে গেছে।। কিন্তু এর চেয়েও ভৌতিক যেই ব্যাপারটা ছিল যে, আমার জানালার পাশে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।। লোকটা সাদা কাপড় পরিহিত।। হাতে একটা লাঠি দিয়ে আমার জানালায় আওয়াজ করছেন।। ঠকঠক ঠকঠক।। কিছুক্ষণ থেমে আবার ঠকঠক।। আমি লোকটার আগা থেকেমাথা পর্যন্ত দেখার চেষ্টা করলাম।। এই এলাকায় আমরা আছি আমার জন্মের পর থেকে।। এলাকার প্রায় সবাইকেই আমি চিনি ।। যদিও উনার চেহারা দেখতে পাচ্ছিলামনা।। তবে এতো লম্বা এবং দীর্ঘকায়
মানুষ আমাদের এলাকায় নেই তা আমি লিখে দিতে পারবো ।।যে ব্যাপারটা আরও বেশি আমাদের ধাঁধায় গেলে দিলো, তা হল, ঠিক ১০ মিনিট পর সেই লোকটা হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো এবং প্রায় সাথে সাথেই লাশটা ।।মামা ঘোর লাগা গলায়
আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “লাশটা এবং লোকটা কই গেলো?? কিছু বুঝলাম না।। তুই কি যেতে দেখেছিস??” আমি মাথা নাড়লাম।। ঠিক ৩ দিন পর আমরা বাড়িটা ছেড়ে দেই।। ছেড়ে দিয়ে নতুন বাড়িতে উঠি।। এরপর খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম,ঐ বাড়ির ছাদে নাকি অনেক মানুষকেই এনে মেরে ফেলা হয়।।কাউকে জবাইকরে, কাউকে ছুড়ি, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে।। অনেক লাশই নাকি ছাদের পাশেই ফেলে রেখে দেয়া হয় দীর্ঘকাল।। এরপর মাটি চাপা দেয়া হয় কোনও জানাজাছাড়া।।অনেকেরই ধারণা এগুলো সেই অভিশপ্ত আত্মা।। সেই বাড়ির নতুন ভাড়াটিয়ারএকটা মেয়ে ২ মাস পর গলায় ফাস নিয়ে মারা যায়।। মেয়েটা আমার রুমেই থাকতো, অর্থাৎ ছাদেরপাশের রুমটায়।। এই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই।। আর ব্যাপারটা যেহেতু মামা নিজেও দেখেছেন এবং আমরা কেউ কাউকে বর্ণনা করি নি, কিন্তু একই সময়ে একই জিনিস দেখেি, তাই আমি একে হালুসিনেসনও বলতে পারছি না।
Collected