গল্পের শহর

গল্পের শহর প্রেমে বিশ্বাসী নয়
(2)

14/08/2023

সব মেয়েরা টাকা খোঁজে না ভাই. 😌

কিছু মেয়েরা পুরো সম্পত্তির দলিল ও খুজে,,🐸👀

30/07/2023

Primal Movie 2023

28/07/2023

#গল্প :- জ্বীন
#পর্ব :- 4 শেষ পর্ব
লেখকঃ-khan

রিয়াঃ দুলাভাই অধৈর্য হলে চলে না, ওয়েট করুন আমি আপনাকে পুরো ঘটনা খুলে বলছি। আমরা যদি আপনাকে এমনিতেই বলতাম আয়েশার শরীরে জ্বীন আছে তাহলে কি আপনি বিশ্বাস করতেন অবশ্য করতেন না। কিছু জ্বীনের লক্ষন দেখাতে হবে তাই না? যার ফলে আয়েশা সবসময় তার শরীরে ইনজেকশন লাগাতা। ইনজেকশনটি লাগানোর ফলে মানুষ 16 থেকে 18 ঘন্টা পর্যন্ত ঠান্ডা থাকে। যদিও এটা শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর কিন্তু তাও আয়েশা তার বোনের ধর্ষণের বিচারের জন্য এটা লাগাতো। আর যখনই আপনি আয়েশার কাছে যেতেন আপনার থেকে তার শরীর ঠান্ডা লাগতো। আয়েশা যে হরেক রকমের খাবার রান্না করতো এটা সম্পূর্ণরূপে ভুল। আয়েশা কিছুই রান্না করতে জানে না। বরং এইসব খাবার রান্না করে আমরাই পাঠিয়ে দিতাম। আর আপনার মনে হতো আয়েশা সারাদিনই কাজ করছে। আচ্ছা দুলাভাই আপনার কি মনে আছে আয়েশা সব সময় আপনাকে দুধ খেয়ে ঘুমোতে বলতো? আর আপনি ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে ফেলতেন।

আমিঃ হ্যাঁ আয়েশা সবসময় আমাকে দুধ খেয়ে ঘুমোতে বলতো।

রিয়াঃ আয়েশা আপনার দুধের গ্লাসে সব সময় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিতো। যার ফলে দশটা এগারোটা বাজার আগে আপনার ঘুম ভাঙতো না। আর ততক্ষণে আমরা আমাদের পুরো প্ল্যান করে ফেলতাম। আর ওই টাইমটা তে আয়েশা বিশ্রাম নিত।

আমিঃ তারমানে এতকিছু আমাকে মারার জন্য করা হয়েছিল?

রিয়াঃ আমরা মনে করেছিলাম আপনি সামিরার ধর্ষণকারী তাই আপনাকে মারতে চেয়েছিলাম।

আমি হাসবো কি না কাঁদবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না কারন রিয়া যদি জানতে না পারত আমি সেই বাহাদুর না যে সামিরাকে ধর্ষণ করেছে তাহলে নিশ্চয় এতক্ষণে আমি সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে থাকতাম।

আমিঃ আচ্ছা হাসিব এর লাশ কি করেছেন?

রিয়াঃ কি আর করব যে জায়গাটাতে সামিরাকে ধর্ষণ করা হয়েছে সেখানে গিয়ে হাসিবের লাশ পুড়িয়ে দিয়েছি।

নাহ এই ফ্যামিলি স্বাভাবিক না।আমি আর কিছু শুনতে পারবো না। তাড়াতাড়ি কেবিন থেকে বের হয়ে আয়েশার কেবিনে প্রবেশ করলাম। ঘুমন্ত অবস্থায় আয়েশাকে কোন পরী থেকে কম লাগে না।

আমি আয়েশাকে এক নজরে চেয়ে রয়েছি। কিছুক্ষণ পরে আয়েশা নিজে নিজেই চোখ খুললো। আর চোখ খুলে আমাকে তার পাশে বসে থাকতে দেখে খুবই অবাক হয়েছে।

আমিঃ কি হলো ম্যাডাম এতক্ষণ পরে তাহলে ঘুম ভেঙ্গেছে তাইনা?

আয়েশা কিছু না বলে কিছুক্ষণ আমার দিকে দেখছে, কিছুক্ষণ রিয়ার দিকে দেখছে, হয়তো চিন্তা করছে তার বোনের ধর্ষণকারী তার পাশে বসে আছে কেমনে? তার তো আজকে মরে যাওয়ার কথা ছিল।

একটু পরেই রিয়া সবকিছু আয়েশাকে বুঝিয়ে বলল। আয়েশা ও হয়তো বুঝতে পেরেছে। আমাকে কাছে টেনে পাগলের মত চুমু খেতে লাগলো। আর এই দৃশ্য দেখে আয়েশার পরিবার লজ্জায় কেবিন থেকে বের হয়ে গেল। আমিও মোটামুটি লজ্জায় পড়ে গেলাম।

আয়েশাঃ (কাঁদো কাঁদো গলায) আমি আসলেই জানতাম না যে আপনি,,,

আর কিছুই বলতে পারছেনা শুধুই কান্না করছে। থাক আমি বাধা দেব না কান্না করতে ইচ্ছা করলে কান্না করুক। আজকে অনেক দিন পর এই পরিবার খুশি। আজকে হলেও একটু প্রাণ ভরে কান্না কাদুক। এই পুরো পরিবারের ওপর গত এক বছর ধরে যত কষ্ট গিয়েছে সেটা নিজের কানে না শুনলল বুঝতামই না। একটা পরিবার কতটা কষ্টের মধ্যে থাকলে এভাবে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে আমার জানা নেই। সত্যি আমাদের দেশের সিস্টেম দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর এই সিস্টেম নষ্ট হওয়ার ফলে অনেকগুলো জ্বীনের উৎপত্তি হচ্ছে। যদি আমরা চাই এসব জ্বীনের উৎপত্তি হওয়া বন্ধ হোক তাহলে এখনই আমাদের সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। আয়েশার পুরো পরিবার আজকে খুশি কারণ তারা তাদের মেয়ে/বোন বান্ধবীর ধর্ষণের বিচার করে ফেলেছে। হয়তো তারা নিজ হাতে একজন কেউ মারতে পারেনি কিন্তু তাও তাদের কোনো আক্ষেপ নেই। বরং দিনশেষে এটা বলেই তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে যে তাদের মেয়ে/বোন/বান্ধবীর ধর্ষণকারীরা আর এই পৃথিবীতে নেই।

কেবিন থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে রিয়া মিজানকে জড়িয়ে ধরে আছে। আয়েশার বাবা আয়েশার মা জড়িয়ে ধরে আছে। আর আমিও আমার জ্বীন থুক্কু বউ থুক্কু আয়েশাকে জড়িয়ে ধরে আছি।

"কিছু গল্পের সমাপ্তির মাধ্যমেই অন্য গল্পের সূচনা হয়"।

হয়তো সেদিন সামিরার গল্পের সমাপ্তি কারণেই আজকে আমার আর আয়েশার গল্পের সূচনা হলো।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ জ্বীন গল্পটি কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন। জ্বীন গল্পটি নিয়ে অনেকেরই অনেক রকম ধারণা ছিল। জানিনা গল্পটি কতটুকু সাজিয়ে লিখতে পেরেছি কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তাই প্রত্যেকটা পাঠক থেকে গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। কেউ Nice,Good,Super এসব লিখে কষ্ট দিবেন না।ধন্যবাদ।

সমাপ্ত।
গল্পের শহর

28/07/2023

#জ্বীন
#পর্বঃ ০3
#লেখকঃ

আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আয়েশা সজোরে আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করল। আমি সাথে সাথে আয়েশাকে ধাক্কা দিলাম। ছুরির আঘাতে হাতের কিছু অংশ কেটে গেছে। যেহেতু সোফায় শুয়ে ছিলাম আমি ধাক্কা দিতেই আয়েশা মেঝেতে পড়ে গেল আর মেঝেতে পড়ার সাথে সাথেই অজ্ঞান।

আমার মনে হয় আয়েশার ভিতরে জ্বীনটি আবার ঢুকেছে। না এখন আর অত কিছু ভাবলে চলবে না মেয়েটিকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিতে হবে। সোফা থেকে পড়ার কারণে মেয়েটিও নিশ্চয়ই ব্যথা পেয়েছে। আয়েশাকে কোলে তুলে নিলাম যেই হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দরজা খুললাম দেখলাম রিয়া দাঁড়িয়ে আছে আর তার সাথে একটি এম্বুলেন্স।

কিছুই বুঝতে পারছিনা কি হচ্ছে? রিয়া তো চলে গিয়েছিলো তাহলে রিয়া এখানে কি করছে?

রিয়াঃ এত অবাক হতে হবে না দুলাভাই। আপনি তাড়াতাড়ি আয়েশাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢুকান।
আমিতো এম্বুলেন্স আপনার জন্য এনে ছিলাম।

আমিঃ আমার জন্য কেন?

আয়েশার আব্বুঃ দেখো বাবা অত কথা বলতে নাই তুমি তাড়াতাড়ি আয়েশাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢুকাও।

আমি কিছুই চিন্তা করতে পারছি না কি হচ্ছে? কিছুক্ষণ আগে আয়েশার যে পরিবার দেখেছিলাম এখন সে পরিবারের সাথে কোন মিল নেই। যে রিয়া আমার সাথে কখনো কথা বলেনি সেই রিয়া এখন আমাকে দুলাভাই ডাকছে। আয়েশার আব্বু সে তো কথা কম থাপ্পড় বেশি মেরেছিলেন আর এখন আমাকে বাবা ডাকছেন।

আয়েশার কেবিন থেকে একজন ডাক্তার বের হলেন কিন্তু ডাক্তার কে দেখে অনেক বড় ধরনের ছ্যাকা খেলাম। এই ডাক্তার তো দেখতে হুবহু মিজান এর মত। শুধু লম্বা লম্বা চুল আর লম্বা দাড়ি নেই বাকি পুরোটাই মিজানের মত। আমাকে দেখে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল।

মিজানঃ যদি তুমি আয়েশাকে ধাক্কা না দিতে তাহলে জানিনা কি হতো?

আমি মিজানের কোন কথার উত্তর দিতে পারছি না। শুধুই অবাক হচ্ছি। এই সব আমার সাথে কি হচ্ছে?

রিয়াঃ মিজান তুমি আর দুলাভাই আমার সাথে আসো তো পাশের কেবিনে।

একটু পরে তিনজন মিলে পাশের কেবিনে বসলাম। কেবিনে তেমন কেউই নেই শুধু আমরা তিনজন আছি।

রিয়াঃ দুলাভাই আপনি নিশ্চয়ই চিন্তা করছেন কি হচ্ছে এগুলো তাই না?

আমি এখনো কিছুই বলছি না কারন কিছু বলার মত ভাষা আমার কাছে নেই। কি জিজ্ঞাসা করব সেটাই বুঝতে পারছি না।

রিয়াঃদুলাভাই আমি আপনাকে একদম শুরু থেকে বলি তাহলে আপনি বুঝবেন। আপনার ওয়াইফ আয়েশার একটি যমজ বোন ছিল যার নাম সামিরা। কথাটা 26 শে মার্চ 2019 সালের। আজ থেকে প্রায় এক দেড় বছর আগের কথা। সেদিন সামিরা ও আয়েশা মিলে একটি ট্যুরে যাওয়ার কথা ছিল। যেহেতু দুজনই সমবয়সী ছিল তাই দুজনে যেখানেই যেত একসাথে যেত কিন্তু সেদিন হয়েছিল ব্যতিক্রম আর এই ব্যতিক্রম এর ফলেই এক বাবা তার মেয়েকে হারিয়েছে, এক মা তার মেয়েকে হারিয়েছে, আর এক বোন তার ভালোবাসার বোন কে হারিয়েছে আর আমি আমার প্রিয় বান্ধবীকে হারিয়েছি।

রিয়া যা বলছে প্রায় সবকিছুই আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে চুপ থাকতে দেখে রিয়া আবার বলা শুরু করলো।

রিয়াঃ সেদিন সামিরা ট্যুরে গিয়েছিল ঠিকই কিন্তু আর ফিরেনি। আমরা সামিরাকে প্রায় সব জায়গায় খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পাইনি। ঠিক 14april সামিরার একটি কল আসে আর তার কলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি টানা 20 দিন তাকে একটি জায়গায় আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। আর সে ধর্ষণকারীদের ব্যাপারে তেমন কিছুই বলতে পারেনি শুধু নামটি বলতে পেরেছিল। একজনের নাম "হাসিব" আরেকজনের নাম "বাহাদুর"।

বাহাদুর নামটি শুনার সাথে সাথে আমি এক লাফ দিয়ে কেবিনে থাকা বিছানার উপর দাঁড়িয়ে গেলাম। এই যেন কোন বাংলা সিনেমার শুটিং হচ্ছে আর জোর করেই আমাকে ভিলেন বানানো হচ্ছে।

আমিঃ আপনার মাথা ঠিক আছে আপনি কি বলতেছেন? আমি আমার বউ ছাড়া সব পৃথিবীর সব মেয়েকে বোনের নজরে দেখি।

রিয়াঃ আরে দুলাভাই পুরো কথাটি তো শুনুন। সেদিন সামিরা বলতে পারছিল না তাকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছে। আমরা তার নাম্বার ট্রেক করে তার লোকেশনটা খুঁজে বের করেছি কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম সামিরার নিথর দেহ পডরে আছে। তার মানে ওই দুইজন ধর্ষণকারী সামিরাকে মেরে ফেলেছে। সামিরাকে যে দুজন ধর্ষণ করেছে ওদের দুজনের কাউকেই আমরা চিনতাম না। শুধু নামটি জানতাম হাসিব ও বাহাদুর। তারপর আমরা সেখানে স্থানীয় মানুষদের থেকে খোঁজ নেওয়া শুরু করলাম সবার মতে হাসিব নামে একজন ছেলে এখানে প্রায় আসত কিন্তু বাহাদুরকে কেউ চিনত না। স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে আমরা হাসিবের একটি ছবি পেয়েছিলাম কিন্তু বাহাদুরের কোন ছবি পাইনি।
আমরা জানতাম যে এই দেশের যদি আমরা সামিরার ধর্ষণের বিচার চায় তাহলে সেটা কোনদিনও পাবোনা। তাই সামিরা পুরো পরিবার চিন্তা করলো ওই দুই ধর্ষণকারীকে তারা সবাই মিলে শাস্তি দিবে। কিন্তু শাস্তি দেওয়ার জন্য তো আগে ওই দুজনকে পেতে হবে তাই না? আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করলাম কিন্তু তাদের দুজনের কাউকেই পেলাম না। আপনি যে কোম্পানিতে কাজ করেন সেই কোম্পানিটি আমার আঙ্কেলের। একমাস আগে আঙ্কেল জানালো যে ওনার কোম্পানিতে বাহাদুর নামে একজন ছেলে কাজ করে যার একটা বন্ধু আছে হাসিব নামের। তখন আমরা মোটামুটি ধারণা করলাম হয়তো আপনিও সামিরার ধর্ষণকারী। আর যখন আপনার বন্ধু হাসিবের সাথে আমরা যে ছবিটি পেয়েছি তার সাথে মিলে যায় তখন আমরা বুঝতে পারলাম যে আপনারা দুজন ধর্ষণকারী।কিন্তু বলে না পৃথিবীতে একজনের মত দেখতে সাতজন আছে কিন্তু কে জানত এক দেশে, এক জেলায়, একজনের মত দেখতে দুজন আছে, আর তাদের দুজনের নামও একই।আচ্ছা হাসিবের সাথে আপনার পরিচয় হয় কেমনে?

আমিঃ এক রাতে অফিস শেষ করে আসছিলাম তখন হঠাৎ হাসিবের সাথে আমার দেখা। প্রথম প্রথম সে আমার সাথে কথা বলতে ভয় পেলে ও পরবর্তীতে আমরা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যায়। হাসিব প্রায় বলতো আমি নাকি দেখতে তার এক কাছের বন্ধুর মত। কিন্তু আমি এসব বিশ্বাস করতাম না। সত্যিই আমি জানতাম না হাসিব এত খারাপ একজন মানুষ।আপনারা চাইলে তো আমাকে আর হাসিবকে সরাসরি মেরে ফেলতে পারতেন এসব বিয়ের নাটক করার দরকার কি ছিল?

রিয়াঃহাসিব যে ধর্ষণকারী এটা আমরাও শিওর থাকলেও আপনি যে ধর্ষণকারী এটা আমরা শিওর ছিলাম না। আর তাছাড়াও আমরা আপনাকে এত সহজে মারতে চাইনি অনেক কষ্ট দিয়ে মারতে চেয়েছিলাম। আমরা যদি আপনাকে সরাসরি মেরে দিতাম তাহলে হয়তো অনেক ঝামেলা হতো তাই আমরা চিন্তা করেছিলাম প্রথমে আপনাকে মানসিক দিক দিয়ে মারব তারপর আপনাকে শারীরিকভাবেও মারব। যেদিন আয়েশার সাথে (সামিরার বোন) আপনার প্রথম দেখা হয় আমরা মনে করেছিলাম আপনি চমকে উঠবেন কিন্তু আপনি একটুও চমকালেন না বরং লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখলেন ঠিক তখন থেকেই আমাদের অল্প অল্প সন্দেহ হওয়া শুরু করল। আসলে আপনি কি সেই বাহাদুর নাকি অন্য কেউ? বিয়ের পর থেকেই আয়েশার প্রতি আপনার এত কেয়ার আর গত কালকে যখন আয়েশাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তখন আপনি পাগলের মত কেবিনের সামনে হাটছিলেন ঠিক তখনই আমার সন্দেহ আরও বেড়ে গেল। আসলেই কি আপনি সেই বাহাদুর যে সামিরাকে ধর্ষণ করেছিল।

আমিঃ তার মানে কি হাসিবকে আপনারাই মেরেছেন?

রিয়াঃ সেদিন হঠাৎ করে আপনার কোন বোর্ড মিটিং আসেনি বরং বোর্ড মিটিং টা ছিল শুধু একটা বাহানা আপনাকে আটকে রাখার। আপনার থেকে দাওয়াত পাওয়ার পর হাসিব আপনার বাসায় গিয়ে আয়েশাকে দেখে রীতিমতো চমকে ওঠে। কারণ হাসিব জানত না যে সামিরার আরেকটি জমজ বোন ছিল। হাসিবকে মেরে ফেলার জন্য যখন আয়েশা তার কাছে যায় তখন হাসিব নিজেই আয়েশার হাতে থাকা ছুরিটি দিয়ে নিজেকে মেরে ফেলে। হয়তো হাসিব সেদিন বুঝতে পেরেছিল তার মৃত্যু অনেক কাছে চলে এসেছে। তাই সে নিজে নিজে আত্মহত্যা করেছে।

আমিঃ তারমানে আপনারা হাসিবকে মারেননি ও নিজেই ছুরি দিয়ে নিজেকে মরেছে আর আপনারা তাকে কেটেছেন।

রিয়াঃ হ্যাঁ বলতে গেলে এক প্রকার আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু হাসিব আত্মহত্যা করেছে এটা যদি আপনি জানতেন তাহলে অনেক বড় ঝামেলা হতো তাই এই পুরো ঝামেলাটা কে আমরা ভয়ঙ্কর ভাবে উপস্থাপন করলাম। অর্থাৎ এক বানানো জ্বীনের উৎপত্তি ঘটালাম। আমার জামাই মিজানকে বললাম কবিরাজের মত সাজতে আর আপনাকে ভয় লাগাতে। কে জানত আপনি এত ভীতু মানুষ। অল্পতেই ভয় পেয়ে গেলেন। আমরা প্ল্যান করেছিলাম সেই রাতে আপনাকে মেরে ফেলবো কিন্তু আপনাকে মারার আগে আমি আরেকটু সিওর হতে চেয়েছিলাম যে আপনি সামিরার ধর্ষণকারী কিনা। আমি ধীরে ধীরে আবার খোঁজ নেওয়া শুরু করলাম আর অনুসন্ধানের মতে আমি এটা জানতে পারলাম, যে বাহাদুর সামিরার ধর্ষণ করেছিল গত ছয় মাস আগে সে একটি কার এক্সিডেন্টে মারা যায়। ঠিক তখনই আমরা সবাই বুঝতে পারলাম আপনি সে বাহাদুর না যে বাহাদুর সামিরা কে ধর্ষণ করেছে। আমরা জানতাম যে আয়েশা আপনাকে ছুরি দিয়ে মারবে তাই আমরা চিন্তা করলাম একেবারেই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসি। যেই আমরা আপনার দরজার বেল বাজাবো ঠিক তখনই আপনি আয়েশাকে সাথে করে নিয়ে দরজা খুললেন আর আমাদেরকে দেখেলেন।

আমি খুব মনোযোগ দিয়ে রিয়ার সব কথা শুনলাম মনে হচ্ছে কোনো ছোটখাটো গল্প শুনে ফেললাম। মনের মধ্যে শুধু একটাই প্রশ্ন আসছিল তাই প্রশ্নটিকে আর না চেপে রেখে রিয়া কে জিজ্ঞাসা করে ফেললাম।

আমিঃ আচ্ছা তাহলে আয়েশার শরীরে যে জ্বীন আছে ওটা আর কি সত্য?

রিয়াঃ আপনি তো এক মহা বোকা দেখছি। আয়েশার শরীরে কোন জ্বীন নেই।

আমিঃ কেমনে? আয়েশার শরীরটা সব সময় ঠান্ডা থাকত? তারপর আয়েশা বিশ্রাম না নিয়ে অনেকক্ষণ কাজ করতো। আয়েশা কিছুই খেতোনা। এই সবগুলো লক্ষণ তো পুরোপুরি জ্বীনের সাথে মিলে যায়।

রিয়াঃ দুলাভাই অধৈর্য হলে চলে না, ওয়েট করুন আমি আপনাকে পুরো ঘটনা খুলে বলছি..........
চলবে.......

নেক্সট পর্ব পেতে এড বা ফলোও করে রাখো প্লিজ গল্পের শহর

28/07/2023

#গল্পঃএকা_আমি
ইমরান
পর্ব ৩ অন্তিমপর্ব

ছেলে সন্তান না হলে বাড়িতে জায়গা হবেনা। সন্তান লাভের আনন্দটা মুহূর্তেই ভয়ে পরিণত হলো কুহুর। যদি ছেলে নাহয় তবে কি হবে! কুহুর মাথায় তখন একটাই কথা ছিল, "আবারো কি আমার জন্য শ্রাবণকে ওর বাবা-মা থেকে দূরে থাকতে হবে? শ্রাবণ কি তখন আমাকে ঘৃণা করবে? আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমি কি করবো?" কুহুর চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে এ কদিনে। মুখ ফিঁকে হয়ে আছে। মন কু ডাক ডাকছে। বাইরে ঝুম বৃষ্টি। সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে মনে হচ্ছে।
"আচ্ছা এই বৃষ্টিতে যদি আমি ভেসে যেতে পারতাম ভালো হতো না খুব? অনেক দূরে চলে যেতে পারতাম তাইনা?"
"ওষুধ খেয়েছো?"
শ্রাবণ একগ্লাস স্যালাইন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে। কুহু বাইরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে বললো "হ্যা খেয়েছি।"
"কি দেখছো বাইরে?"
"আচ্ছা যদি আমার ছেলে না হয় তবে কি হবে? ছেড়ে চলে যাবে?"
"ছেলেই হোক কিংবা মেয়ে, তুমি পাশে থাকলেই হবে। এবার স্যালাইনটা খেয়ে নাও।"
চার মাস পর, সেদিন এমনই ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিল। বাইরে কাঁপড় উঠাতে যেয়ে স্লিপ করে পড়ে গেছে কুহু। গলা ফাঁটিয়ে চিল্লাচ্ছে কুহু।
বৃষ্টি এখন কিছুটা কমেছে। কোথাও একটা হুতুম পেঁচা ডাঁকছে কিছুক্ষণ পরপর। ব্যাঙেদের মেলা বসেছে। এরই মধ্যে একটা নবজাতক কন্যার কান্না শোনা যাচ্ছে। সাথেই শোনা যাচ্ছে একজন নব্য মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করা এক অসহায় নারীর কান্না। ভয় হচ্ছে, যদি ছেড়ে দেয়! যদি আবার শ্রাবণকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে আবার দূরে সরানোর জন্য ও দায়ী হয়! তারা কি ওকে অভিশাপ দেবে? নাকি সব ঠিক হয়ে যাবে? এর কিছুই জানা নেই কুহুর। শ্রাবণ মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে আছে। কুহুর কান্না ধীরে ধীরে থেমে এসেছে। নার্স ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়েছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়বে।

সকালে...
শ্রাবণের বাবা-মা এসেছে হাসপাতালে। নাতনীকে কোলেও নিয়েছে। কুহু তাদের বলতে শুনেছে যে তাদের কুহুর জন্য খারাপ লাগছে। আজ ৩দিন পর কুহু আর মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছে শ্রাবণ। কুহুর কন্ডিশন বেশি ভালো নয়। ডাক্তার বললো আর মাতৃত্বের স্বাদ তার পাওয়ার নয়। শ্রাবণ তার বাবা-মায়ের স্বভাব দেখে ধরেই নিয়েছে তারা মেনে নিয়েছে নাতনীকে। যদিও বা ধর্ম ভিন্ন। এরপর ২মাসের মতো বেশ শান্তিতেই ছিল সবাই শ্রাবণের মেয়েকে নিয়ে। কুহুর মেয়ে সুস্থ হলেও কুহু মানসিক সমস্যায় ভুগছে। মধ্যরাতে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। সারাদিন চিল্লাপাল্লা করে। ঘরকুনো হয়ে গিয়েছে কুহু। শ্রাবণ অনেকবার বলেছে যে তার কোনো দোষ নেই মেয়ে হয়েছে যে। আর তার বাবা-মাও নাতনীকে মেনে নিয়েছেন।
"আমি তাদের মুখ থেকে শুনতে চাই যে তারা ওকে মেনে নিয়েছেন।"
"আচ্ছা চলো তোমাকে তাদের মুখ থেকেই শোনাই।"
শ্রাবণ কুহুকে নিয়ে তার মা-বাবার ঘরে গেল। তারা নাতনীকে নিয়ে খেলছেন।
"আচ্ছা মা তোমাদের কি কোনো অভিযোগ আছে আমার মেয়ে হয়েছে বলে?"
"আরেহ নাহ নাহ। কোনো অভিযোগ নেই। আমরা খুশিই আছি আমাদের এই ফুটফুটে নাতনীকে নিয়ে।"
কুহুর ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফুঁটেছে সবে আর তখনই শাশুড়ি বললো,
"তবে নাতি কিন্তু আমাদের চাই-ই চাই। এরপরের বার যেনো ছেলে হয় বউমা!"
নিমিষেই সে হাসি অতীতে মিশে গেল। বর্তমানে বিষণ্ণতা ফুঁটে উঠেছে। কুহুর দ্বারা আবার মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয় তা জানে সে। কুহু চায় না কোনো মিথ্যা আশার স্বপ্নজাল বুনন হোক। একদিন না একদিন তো জানতেই হতো। সেদিনই বলার সিদ্ধান্তে পৌঁছালে হঠাত শ্রাবণ বলে ওঠে,
"আচ্ছা বাবা, নাতিই আসবে।"
কুহু শ্রাবণের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। শ্রাবণ তো জানে সব। তাহলে মিথ্যা কেনো বলছে। কেনো যেনো কুহু শ্রাবণের মাঝে নিজের বাবার বৈশিষ্ট্য পাচ্ছে। বিষয়টা ভিন্ন হলেও মিথ্যা মিথ্যাই থাকে এর কোনো ভিন্নতা নেই। আগেও যেমন সুজিত স্যারকে নিজের বাবার বলা মিথ্যাগুলো বলে দিয়েছিল এবারো বলে দিল।
সব শুনে কুহুর শশুর-শাশুড়ি চুপচাপ হয়ে গেল। কিছুক্ষণের জন্য ঘরের মধ্যে পিন-পতন নীরবতা বিরাজমান আছে।
"আমাদের নাতি চাই। শ্রাবণ আমাদের একমাত্র ছেলে। বংশেরবাতি ও আমাদের। এখন যদি বংশ এগিয়ে নিয়ে যেতে শ্রাবণের দ্বিতীয় বিয়ে করা লাগে তবে করবে। দরকার হলে তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে করবে আর এটাই আমার শেষ কথা।"
সেইদিন সেই অসাধারণ ছেলেটা আবারো কুহুর হাতই ধরে। কুহু অবাক হয়েছিল খুব, শ্রাবণ নিজের বাবাকে অনেক বেশি ভালোবাসে আর তার সাথেই সেদিন উঁচু স্বরে কথা বলে ত্যাজ্য উপাধি নিয়ে নিজের বউ আর মেয়েকে নিয়ে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল সেদিন সন্ধ্যায়। কুহু খুশি হলেও নিজের উপরই ক্ষেপে ছিল সে। চরম ক্রুদ্ধ হয়েছিল নিজের উপর আর নিজের মেয়ের উপর। বাবা-মা আর ছেলের বিচ্ছেদ সে চায়নি তবে কেনো হলো। কুহুকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল তার শাশুড়ির বলা কথাগুলো।
"তুমি কোনোদিন সুখী হবানা। আমার পোলারে তুমি আমাগো থেইকা দূরে সরায়ে দিছো। তোমার কোনোদিন ভালা হইবো না।"
আজ প্রায় দু'দুটো বছর কেঁটে গেছে শ্রাবণ আর তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের। আজো কুহু নিজেকেই দোষী মানে। নিজের মেয়েকে দেখলে কেনো যেনো গলা টিপে মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে তার। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজেই মরে যাক বিষ খেয়ে। ইদানীং শ্রাবণ ও কেমন যেনো হয়ে গিয়েছে। মেয়েটাকে আগে আদর করতো এখন আর তেমন একটা করেনা। শ্রাবণের চাকরি চলে গেছে। এদিকে ওর মা-ও মারা গেছে সবে ৩মাস। নিজের নাতিকে দেখতে চেয়েছিলেন। তবে আশা অপূর্ণই থেকে গেছে। এসব নিয়েই ভাবে আজকাল শ্রাবণ। বিষণ্ণতার গভীর ঘোরে ডুবে থাকে আজকাল। কোনোকিছুর প্রতিই আগ্রহ নেই তার। কথা বলাও কমিয়ে দিয়েছে কুহুর সাথে। এদিকে শ্রাবণের এই একদম চুপ হয়ে যাওয়া কুহুকে খুব পোড়াচ্ছে। মনে ভয় জাগছে কুহুর। কয়েকমাস ধরে কুহুর ওষুধ শেষ। ওষুধের অভাবে মাথায় ব্যাথা আর দুশ্চিন্তা ইদানীং খুব বেশি হারেই বেড়েছে। সব কিছু নিয়েই দুশ্চিন্তা হয় তার।
কেঁটে গেছে প্রায় ৫বছর। এ কয়েক বছরে বেড়ে গেছে দূরত্ব। বেড়েছে দুশ্চিন্তা, অবহেলা। মেয়েটা বেড়ে উঠেছে অবহেলায়। কারোই ভালোবাসা পায়নি মেয়েটা। অভাবের সংসার, বোধহীন সংসার, বিষণ্ণতার অতলে ডুবে যাওয়া সংসার। একটা ছোট-খাটো চাকরি পেয়েছে শ্রাবণ। সেখানেই থাকতে হয় দিনের এক তৃতীয়াংশ। বাড়িতে কুহু আর ওর মেয়ে। কুহুর মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবসময় রেগে থাকে। মেয়েটার সাথে বাজে ব্যবহার করে। তবে রাতে ডুঁকরে কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়। রাতের গভীরতা মানুষের হিংস্রতা বাড়ায়। রাতের গভীরতা মানুষকে উপলব্ধি করায়। তবে সকাল হতেই কুহুর বাজে ব্যবহার আবার শুরু হয়ে যায়। শ্রাবণকে সে খুশি রাখতে চায়। মেয়েটাই শ্রাবণের দুর্ভাগ্য বয়ে এনেছে এমনই ধারণা। ইদানীং টের পাচ্ছে শ্রাবণ আর আগের মতো নেই। অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। শ্রাবণের ফোন চেক করেই সে বুঝতে পেরেছিল শ্রাবণ আর ওর নেই। সে আর কুহুর সেই অসাধারণ মানুষটা নেই। অন্যকারো হয়ে গেছে। আজ একটা ছেলে থাকলে বোধহয় শ্রাবণ ওরই থাকতো। মেয়েটার উপর খুব রাগ হচ্ছে কুহুর। সাথে নিজের উপরও। কুহুর মাথায় শুধু একটাই চিন্তা, কিভাবে শ্রাবণকে ধরে রাখবে নিজের কাছে। তবে এই ধরে রাখতে যেয়েই ঝগড়াগুলো আরো দূরে সরিয়ে নিয়েছে ওদের। কুহুর সেই অসাধারণ মানুষটা যে একসময় কুহুর জন্য সব ছেড়ে-ছুড়ে চলে এসেছিল, কোনো কিছুর তোয়াক্কা করেনি। সেই অসাধারণ মানুষটাই আজ হাত টা সারাজীবনের জন্য ছেড়ে দিল। তবে কুহু ঠিকই সামলে উঠবে। মেয়েকে একটু সময় দিবে। শ্রাবণকেও দোষ দেওয়া যায় না। মনুষ্য জাতটাই এমন, সুখ পাওয়ার কাঙাল। সুখের সন্ধানে সারাটা জীবন কাঁটিয়ে দিতে পারে। সুখ পেলেই সে সেই অনন্তে পারি জমাবে যেথায় তার সুখ আছে। ঘুমিয়ে পড়েছিস?"
"না মা। ঘুম আসছেনা। গল্পটা খুব মনোযোগ কাড়া। ঘুমটাও কেড়ে নিয়েছে।"
"রাত অনেক হয়েছে। আমি তোর মাথায় তেল দিয়ে দি। ভালো একটা ঘুম হবে।"
মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নাহ, কুহেলিকা জমাদ্দার ওরফে কুহু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মোঃ সামিউল ইসলাম নামটা শুনেই বুঝেছি মা কাদের গল্প বলছে। আস্তে আস্তে ঘুমে ঢুলে পড়লাম আমি। সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গেলো আমার। ক্যালেন্ডার টার দিকে তাকালাম। আজ ৩তারিখ। আর মাত্র ২৬দিনের মতো।
জানিনা মা কি করবে একা একা। তবে ঠিক থাকবে আশাকরি। রান্নাঘরে যেয়ে দেখলাম মা রান্না করছে। অথচ মা ৫টা মিনিট ও ঠিক হয়ে দাঁড়াতে পারছেনা তবুও কষ্ট করে রান্না করছে। অনেক ভালবাসি তোমায়।

আজ ৭ম দিন মেয়েটা ছেড়ে চলে যাওয়ার। দূর অনন্তে মিশে গেছে আমার মেয়েটা অবহেলা পেতে পেতে। খুব খারাপ মা ছিলাম আমি। শেষ কয়েকদিনেও ঠিকমত খেয়াল রাখতে পারলাম না তোর। অসুস্থতার দোহায় দেখিয়ে লাভ নেই। দোষী তো আমি প্রথম থেকেই। যখন ছিলি তখন দেখে রাখিনি যে।
"আজ একলা এই বারান্দায়
সন্ধ্যার ঝিঁঝিঁপোকার ভিঁড়ে
পাখিদের মতোই নীরে ফিরে
সবার ছেড়ে যাওয়া পরিত্যক্তা
আমি একা।"

(সমাপ্ত)

28/07/2023

#গল্পঃএকা_আমি
ইমরান
পর্ব ২

রাতে মা আমার মাথাটা কোলের উপরে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো, "গল্প শুনবি?"
"কি গল্প মা?"
"একটা সাধারণ মেয়ে আর অসাধারণ ছেলের জীবনের পথচলার গল্প।"
মায়ের কথা শুনে বুঝলাম প্রেমের গল্প বলতে চাচ্ছে। প্রেমের গল্পতে আমার এলার্জি আছে মা জানে। তবুও কেনো বলতে চাচ্ছে বুঝতে পারছি না। যাক শুনি, হাতে তো মাত্র আর কয়টা দিনই আছে। চোখটা বুজে বললাম, "বলো মা, আমি শুনছি।"
"মেয়েটার নাম কুহু আর ছেলেটার নাম শ্রাবণ।"
কুহু নামটা আমার কাছে পরিচিত লাগছে। আগে শুনেছি বোধহয়। যাই হোক, শুনতে থাকি কি বলছে মা।
"কুহুর বয়স তখন সবে ১৪বছর। প্রচণ্ড দুরন্তপনা আর ফাজলামি দিয়ে ঠাসা ছিল ওর মাথা। তখন স্কুল হতো সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। স্কুলের এক বিখ্যাত অথবা কুখ্যাত পণ্ডিতই বলা চলে সুজিত স্যারকে। স্যার হিন্দু ছিলেন, প্রচণ্ড রাগী। তার ক্লাসে কেউ একটু টু শব্দটিও করার সাহস পেত না। কেউ পড়া না পারলেই সপাসপ জোড়া বেতের বারিতে তার রাতে জ্বর আসা নিশ্চিত। কুহু একটু খারাপ ছিল পড়ালেখায়। কোনো টিচারের পড়া না করলেও কুহু ঠিক-ই সুজিত স্যারের পড়া করেই আসতো। একদিন জ্বর হওয়ার জন্য পড়া করতে না পারায় খুব মার খেয়ে বাসায় ফিরেছিল। হাত কেঁটে লম্বা লম্বা দাগ পড়ে গেছে। কুহুর বাবা তো মেয়ের এই অবস্থা দেখে তক্ষণই সুজিত স্যারের বাড়িতে কুহুকে নিয়ে উপস্থিত।
"আপনে মাস্টের মানুষ! পড়া না পারলে মারবেন ঠিক-ই কিন্তু এমনে কেডা মারে? দ্যাহেন মাইয়াডার হাতে কাঁটা দাগ পইড়া গেছে। রক্ত জমাট বাইন্ধা চাইয়া আছে। আপনি মাস্টের নাকি পাষাণ? আপনার নামে আমি শালিশ-বিচার করমু। আপনারে যদি এই গেরাম ছাড়া না করছি তো আমার নাম ও কামরুল না!"
এইদিকে কুহু হাতের দিকে তাকিয়ে ভাবছে "আসলেই কি আমি ব্যাথা পেয়েছি? নাকি ভান করছি? আমার হাতে তো ব্যাথা নেই তেমম। কতই তো ব্যাথা পাই ফাযলামি করার সময়। বাবা তখন তো উল্টে আমাকেই রাগ করে তাহলে বাবা এখন স্যারের বাসায় কেনো নিয়ে এলো আমাকে?" এইদিকে সুজিত স্যার ও কুহুর বাবার কথার পিঠে কথা বলছে। এবার কুহুর বাবা রীতিমতো ঝগড়া লাগিয়ে দিল সুজিত স্যারের সাথে। কুহু ওর বাবার মুখের দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে। তার বাবাকে সে চিনতে পারছে না আজ। এমন রূপের সাথে কুহু পরিচিত নয়। কুহুর বাবা আর সুজিত স্যারের চিল্লাপাল্লা শুনে স্যারের বাসা থেকে একটা ছেলে বের হয়ে এলো। কুহু ছেলেটিকে প্রথম দেখছে। বেশ লম্বা, সুদর্শন। তবে দেখলেই বোঝা যায় তার স্বভাবে তেমন চঞ্চলতা নেই। শান্ত স্বভাবের।
"কি হয়েছে আব্বু? চিল্লা-পাল্লা করছো কেনো এখানে দাঁড়িয়ে? বাইরের মানুষ শুনছে তো।"
কথা বলার ভাব দেখে বোঝা গেল ছেলেটি সুজিত স্যারের ছেলে। কুহু আগে শুনেছিল সুজিত স্যারের একটা ছেলে আছে। তবে কখনো দেখেনি আজকের আগে। কুহুর দিকে ছেলেটি তাকাতেই কুহু চোখ ফিরিয়ে নিল সেই দিক থেকে। সেদিনের মতো হুমকি-ধামকি দিয়ে কামরুল সাহেব ফিরে এলো বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার আগেও কামরুল সাহেবের চেহারা রাগ ফুঁটে ছিল। তবে বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথে তা বিশ্বজয়ী হাসিতে রূপান্তরিত হলো। কুহুর মাথায় হাত দিয়ে বললো, "যাও মা, ঘরে যেয়ে পড়তে বসো!"
কুহু কোনো কথা না বলে মাথা উপরনিচ করে সায় দিয়ে চলে এলো। পড়ায় মন বসছে না কুহুর।
"বাবা এমন কেনো করলো স্যারের সাথে? স্যার তো আমাকে বেশি মারেনি। আর বাবাও তো আমাকে যখন মারে তখন এর চেয়ে বেশি কাঁটে। তাহলে কি হলো আজ বাবার। যাই হোক, আমি যেয়ে দেখি রান্নাঘরে কিছু আছে কিনা।"
রান্নাঘরের পাশের ঘরের কুহুর বাবা-মা থাকে।
"বুইঝলে রেখা! আচ্ছা মতো শিক্ষা দিছি ওই বজ্জাতদের!"
কামরুল সাহেবের কথা শুনে দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে পড়লো কুহু। কিছুটা পিছনে যেয়ে আঁড়ালে দাঁড়ালো যাতে দেখা না যায় ওকে।
"ক্যান কি করছো?"
"আরেহ, জানোইতো সুজিতগো লগে আমাগো ওই মিঠাপুকুরের জমি নিয়া ঝামেলা চলতাছে। এইবার কোনোমতে শালিশ-বিচারে সুজিতরে গ্রাম ছাড়া করতে পারলেই ওই জমিটুক আউড়াইতে পারমু।"
এবার সব কিছুই পরিষ্কার হয়ে গেল কুহুর কাছে। বাবার করা ব্যবহারের জন্য লজ্জিতও হলো খুব। কুহু সিদ্ধান্ত নিলো সুজিত স্যারকে বলে দিবে আর ক্ষমাও চেয়ে নিবে। পরেরদিন শুক্রবার হওয়ায় স্কুল বন্ধ। সকালের নাস্তা করেই বেরিয়ে পড়লো স্যারের বাসার উদ্দেশ্যে। স্যারের বাসায় যাওয়ার পথেই স্যারের ছেলের সাথে দেখা হয়ে গেল। কুহু তার তাকেই বলার কথা ভেবে তার সামনে যেয়ে দাঁড়ালো।
"ভাইয়া একটা কথা বলার ছিল। একটু শুনবেন?"
কুহুকে দেখেই ছেলেটির মুখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সে বিরক্ত।
"হ্যা বলুন।"
তারপর কুহু তার বাবার খারাপ ব্যবহারের পিছনের কারণগুলো বললো যা সে জানে। ছেলেটি শুনে অবাক। এই সে বাবারই মেয়ে যেয়ে বাবা তার বাবাকে অপমান করে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়ে গেছে আগেরদিন। কিছুক্ষণ কথা বলার পরই কুহু হঠাত জিজ্ঞাসা করে বসলো,
"ভাইয়া আপনার নাম কি?"
"শ্রাবণ সাহা!"
এরপর আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর কুহু স্যারের সামনেই কিছু কথা বলতে চায় বলে স্যারের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল শ্রাবণের সাথে। আশ্চর্যজনকভাবে স্যার কুহুকে দেখে একটুও রাগ হলো না।
"কুহু আমি জানি এখানে তোমার কোনো দোষ নেই। তোমার মুখ দেখেই বুঝেছিলাম কালকে। তোমার ক্ষমা চাওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে পড়া না পারলে কিন্তু মারবো ঠিকই।"
এরপর কিছুক্ষণ হাসি-ঠাট্টা করে কুহু বাড়িতে ফিরে এলো। পরের দিন শালিশ-বিচার হলো ঠিকই তবে কামরুল সাহেব সুজিত স্যারকে গ্রাম ছাড়া করতে পারেনি। তার ১বছর পরই কামরুল সাহেব মারা যান রোড এক্সিডেন্টে। কুহুর বয়স যখন ১৬বছর তখন বুঝতে পারে সে শ্রাবণের প্রতি দুর্বল। অবশেষে ২বছর প্রেম করার পর যখন রেখা বেগম কুহুর বিয়ে ঠিক করলো তখনই বাঁধলো বিপত্তি। ধর্ম ভিন্ন ওদের। রেখা বেগম কুহুকে শ্রাবণের কাছ থেকে সরানোর জন্য অনেক মেরেছেন ও।
"এতো বছর তোরে পড়িয়ে কি প্রতিদান ডা পাইলাম? তার চেয়ে ভালো হইতো তোরে বিষ খাওয়াইয়া মাইরা ফেলাইলে।"
কুহু শ্রাবণের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে। "ভুলে যাও আমাকে। আমাদের মাঝে একটা লোহার দেয়াল দাঁড়িয়া আছে। কখনোই সম্ভব হবেনা আমাদের এক হওয়া।"
শ্রাবণ সেদিন একটি কথাও বলেনি। কুহুর হাত টা ধরে মসজিদে নিয়ে গিয়েছিল।

"ছিহঃ, তুই আমার ছেলে হয়ে কিভাবে এটা করতে পারলি! এই শিক্ষা দিয়েছিলাম তোকে? নিজের ধর্ম, জাত সব ভুলে মুসলমান হয়েছিস শুধুমাত্র এই মেয়েটার জন্য? আবার বিয়েও করে নিয়ে এসেছিস? ঘেন্না হচ্ছে আমার তোর মুখ দেখতে! বেরিয়ে যাহ আমার বাড়ি থেকে।"
সেদিন রেখা বেগমই থাকতে দিয়েছিল কুহু আর মোঃ সামিউল ইসলামকে।
এরপর কেঁটে গেছে এক বছর...
৩মাসের অন্তঃসত্ত্বা কুহুকে নিয়ে সামিউল দাঁড়িয়ে আছে সুজিত সাহার সামনে।
"তোদের মেনে নিব যদি তোর বউয়ের প্রথম সন্তান ছেলে হয় তবেই! নাহলে তুই এখানে থাকতে পারবি না।"

(চলবে)
সারা পেলে নেক্স দিবো

28/07/2023

আমার মা কাঁদছে! এইদিকে আমি শান্তিতে জানালার পাশে বসে কানে ইয়ারফোন গুঁজে গান শুনছি। প্রতিবেশীরা এসে দরজা ধাক্কাচ্ছে! বাধ্য হয়েই উঠতে হলো! দরজা ভেঙে ফেলবে এমন অবস্থা। দরজা খুলতেই হুড়হুড় করে ঢুকে পড়লো ওরা। বাবা ওদের ঢুকতে দেখেই ঘর থেকে বের হয়ে গেলো।

মা এখনো কাঁদছে। আমি আবার আমার রুমে যেয়ে দরজা লক করে জানালার পাশে বসলাম। হয়তো ভাবছেন আমি আমার মা'কে অপছন্দ করি অথবা আমি তাদের মেয়ে নই। এমনটা না! আমি তাদেরই মেয়ে আর আমার মা কাঁদলে আমার খারাপ লাগে। খুব খারাপ লাগে! কিন্তু আমি এসব নিয়ে এখন আর ভাবি না।

২মাস হলো ১৯-এ পাঁ দিয়েছি। শেষ কবে আমার জন্মদিনে বাবা-মা আমার সাথে কথা বলার টাইম পেয়েছিল তা আমার মনে নেই। আমার জন্মের পর ২বছর পর্যন্ত মনে হয় আমি বাবা-মায়ের আদর পেয়েছি। অনেকটা নিজেই নিজেকে বড় করেছি। কি ভাবছেন আমার বাবা-মা চাকুরীজীবী! মোটেও না! বাবা বেকার আর মা গৃহিণী। তবুও সংসার খুব ভালোই চলে আমাদের। কিভাবে চলে তা কখনো জানতে পারিনি। জানতে চাইতাম এককালে, যখন দেখতাম রেস্পন্স পাইনা কোনো তখন থেকে আর জানতে চাইনি। আমার জন্মের পর নাকি দাদা-দাদি বাবাকে ত্যাজ্য করেছে। তাই আরকি বাবার সাথে আমি তেমন ঘনিষ্ঠ নই। তবে দায়িত্ব পালনে সে কখনো দ্বিমত করেনি। কিন্তু বাবা কখনো আমার সাথে খেতে বসেনি। একদিন বসেছিলাম খেতে, বাবা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে "অপয়া" বলে প্লেটে ভাত রেখেই উঠে গিয়েছিল। মা আমার গালে একটা চর মেরে বলেছিল "মানুষটাকে শান্তিতে খেতেও দিলিনা নচ্ছার, তোর আজকে ভাত নেই।" সত্যিই সেদিন আমার কপালে ভাঁত জুটেনি। তবে এর জন্য আমি নিজেকেই দায়ী করি। কি দরকার ছিল বাবার সাথে খেতে বসার।

বাবার ছেলের খুব সখ ছিল আর দাদা-দাদিরও! এইদিকে মা'র আর কনসিভ করার চান্স নাই। দাদা-দাদি বলেছিল বাবার দ্বিতীয় বিয়ের কথা কিন্তু বাবা রাজি হয়নি মা'কে ছাড়তে। প্রেমের বিয়ে ওদের তাই-ই হয়তো মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর রাজি হয়নি আর এজন্যই ত্যাজ্য হতে হয়েছে। যখন আমার ৬ কি ৭বছর বয়স তখন থেকেই দেখছি মা-বাবার ঝগড়া। তারা ঝগড়া করতে করতে টাইমই পেতো না আমার দিকে তাকানোর। মাও আমার তেমন একটা খেয়াল রাখতো না। শত হলেও তার ভালোবাসার মানুষ আমার উপর বেজার হয়ে আছে। আমার মনে আছে যেদিন স্কুলে ভর্তি হতে গিয়েছিলাম শুধু মাত্র সেইদিনই মা আমার সাথে গিয়েছিল স্কুলে। বাবা কখনো যায়নি আমাকে নিয়ে কোথাও। বাবাকে প্রায়ই দেখতাম ঢাকায় গেলে অনেক অন্নেক খেলনা নিয়ে আসতো তবে তা তার বোনের ছেলের জন্য। আমাকে বাবা একটা পুতুলও কোনোদিন কিনে দেয়নি। আমাদের পাশের বাড়িতে একটা ছেলে ছিল পিয়াশ। ও আর আমি একি ক্লাসে পড়তাম একি স্কুলে! ওর সাথেই স্কুলে যেতাম আমি। যখন ১২বছর আমার তখন জানতে পারলাম যে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইছে কেনোনা তার প্রেমিকার পেটে তার বাচ্চা। এ বিষয় নিয়েই ঝগড়া চলতো তখন। মা বাবাকে বিয়ে করতে দিয়ে সতিনের সংসারও করবেনা আবার তালাকও দিবে না। এই বিষয় নিয়েই একদিন বাবা মায়ের গাঁয়ে হাত তুলে বসলো। তখন আমি সবে স্কুল থেকে ফিরেছি। দরজা খোলাই ছিল, বাবা আমাকে দেখে মায়ের দিকে ফিরে বলেছিল "দু'টো অলক্ষ্মী পুষেছি বাড়িতে!"
বাবা চলে যাওয়ার পর মা আমাকে গরম খুন্তি উঠিয়ে গলায় ঠেঁসে ধরেছিল। বলছিল "অলক্ষ্মীর জাত। তোর জন্যই যত সমস্যা আমার সংসারে! জন্মের পর থেকে জ্বালিয়ে মারছে! তুই মরিসনা কেনো?"
সেদিন সারারাত বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছিল। খাবারও দেয়নি মা। এরপর যখন ১৪র ঘরে পাঁ রাখলাম বুঝতে শিখলাম আমি অভিশাপ। আমি অলক্ষ্মী! আমার আসলেই কেউ নেই। একাকীত্বে ভুগতে শুরু করলাম। বয়সটা আবেগের ছিল। কেউ একটু ভালোবাসা দেখালেই তাকে বিশ্বাস করে ফেলতাম। একটা বড় ভুল এভাবেই করে ফেললাম। জরিয়ে পড়লাম পিয়াশের সাথে ভালোবাসা নামক এক নোংরা খেলায়।

আমার চেয়ে ১বছরের বড় ছিল পিয়াশ। প্রথম প্রথম সেও খুব ভালোবাসতো আমাকে। তবে তা ভালোবাসা দেখাতো নাকি আবেগ তা বুঝে উঠতে পারিনি কখনো। তবে আমি তা ভালোবাসা হিসেবেই গ্রহণ করি কারণ আমার সেই একাকীত্বের সময় এই আবেগ অথবা ভালোবাসাগুলোই আমাকে আগলে রেখেছিল। ভুলে থাকতে পারতাম আমি অপয়া। ভালোবাসতে শিখেছিলাম নিজেকে। নিজের যত্ন নিতে শিখেছিলাম। হঠাতই একদিন পিয়াশ এসে বললো ও নাকি চলে যাবে রংপুর ওর বাবা মায়ের সাথে। কাঁদছিলাম সেদিন খুব ওকে জরিয়ে ধরে!

যেদিন চলে যাবে সেদিন সকালে দেখা করতে বলেছিল ঘেরের পাশে! আমি একটা ১৭পেজের চিঠি লিখে নিয়ে গিয়েছিলাম ওকে দিব বলে! অনেক ভালোবাসা, আবেগ, কান্না দিয়ে লিখেছিলাম চিঠিটা। আমার অনুভূতিতে ঠাঁসা ছিল লেখাগুলো। আমি জানতাম পিয়াশ চলে যাওয়ার আমি আবারো একাকীত্বে ভুগবো তবে পিয়াশ যে আমার জন্য মৃত্যুর ব্যবস্থা করে রেখে যাবে বুঝতে পারিনি। সকাল সকাল উঠে আমার সবচেয়ে সুন্দর জামাটা পড়ে চুল গুলো খুলে দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম। মা-বাবা দেখেছিলো আমি যাচ্ছি তবুও তারা কোনো প্রশ্ন করেনি। আসলে সময় পায়নি ঝগড়া করতে করতে। আমারো বেশ সুবিধাই হলো। ঘেরের আইল ধরে যেতে যেতে দেখলাম পিয়াশ দাঁড়িয়ে আছে একটা মাঁচা ঘরের সামনে। ওর কাছে যেয়ে স্বযত্নে ওর হাতে চিঠিটা ধরিয়ে দিলাম। পিয়াশ চিঠিটা মুঠোতে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে দিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকালো! হয়ে গেলাম ধর্ষিতা! নিজের আবেগের কাছে, নিজের ভালোবাসার কাছে, পুরো দুনিয়ার কাছে! জ্ঞান ফেরার পর দেখলাম আমি হাসপাতালে। মা পাশে বসে আছে। সেদিন প্রথম মা'কে আমার জন্য কাঁদতে দেখে খুশি হয়েছিলাম। নিজেকে বলেছিলাম "হাজার হলেও মায়ের মন তো!" আমার গাঁয়ে রক্ত দেওয়া হলো দুই ব্যাগ!
মায়ের হাত ধরে কেঁদে বলেছিলাম সেইদিন "বাবা এলো না তাইনা? আমি আসলেই অলক্ষ্মী! তোমাদের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছি! এখানে থেকো না। আমার কথা চিন্তা করো না, বেশি কিছু হলে কি হবে? মরেই তো যাব! চলে যাও মা এখানে থেকো না!" মা কথা শোনেনি। নিয়ে এসেছিল বাড়িতে। বাড়ি আসার পর ২বার আত্মহত্যার চেষ্টা করি। ৩য় বার আর ভাবিনি কারণ মায়ের এখন আমিই আছি। বাবা যখন মায়ের সাথে ঝগড়া করে তখন আমি সামনে গেলে মা'কে মারা শুরু করে। আমাকে একবার মেরেছিল। তবে যখন জানতে পারলো আমার রক্তে বি ভাইরাস আছে তখন আর মারেনি। কিছুদিন পর ক্যান্সারে পরিণত হলো। এখন আর আমি কোনোকিছু নিয়েই তেমন একটা ভাবিনা। তবে আফসোস করি খুব। বেপরোয়া হয়ে গিয়েছি। কোনোকিছুরই তোয়াক্কা করিনা। আমার কোমর পর্যন্ত ঘন চুল গুলো ঝরে পড়ে যাচ্ছে। ১০টা কি ১টা কেমো দেওয়ারও টাকা নাই। তা নিয়েও আর ভাবিনা। ভেবেও বা কি হবে! সময় তো প্রায় শেষ!

বাবা নাকি আজ থেকে দ্বিতীয় বউর কাছেই থাকবে। আমাদের সাথে আর থাকবেনা! মা থামাতে চেষ্টা করেছে পারেনি! তালাকনামা দিয়ে চলে গিয়েছে।
এ নিয়েও আমার মাথা ব্যাথা নেই। এমনিতেই বাবা আমাদের সাথে থাকতো না তেমন একটা। তবে মায়ের জন্য খারাপ লাগছে। রাতে মা আমার মাথাটা কোলে নিয়ে মাথার উপর হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো, "গল্প শুনবি?"

#গল্পঃএকা_আমি
ইমরান
পর্ব ১

(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।)

27/07/2023

" মাঝরাতে যৌ'নপল্লিতে হঠাৎ পুলিশের তল্লাশি।কেউ অর্ধউ'লঙ্গ কেউ বা ল'জ্জাস্থান কোনোরকমে ঢেকে পালাচ্ছে "

ওসি মনসুর সাহেব কড়া গলায় বললেন " হা'রামজাদাদের কেউ যেন পালাতে না পারে! "

আবাসিক হোটেলের মালিক এসে ওসির হাতে পায়ে ধরে বললেন " স্যার এটা তো যৌ'নপল্লি না,এটা আবাসিক হোটেল।এখানে রেট করলে আমার হোটেলের নাম খারাপ হয়ে যাবে স্যার "

ওসি মনসুর সাহেব হোটেলের মালিককে ধমক দিয়ে বললেন " বেশি কথা বললে তোকেও ফাঁসিয়ে দিবো "

হোটেলের মালিক হতাশায় মাথায় হাত রেখে বসে পড়লেন।মনসুর সাহেব তার সহকর্মীকে বললেন

" এদের থানায় নিয়ে গিয়ে টাকা খসিয়ে ছেড়ে দিতে হবে "

তার সহকর্মী বললো " স্যার, দুই নাম্বারি কাজে আপনার তুলনা নাই "

মনসুর সাহেব বললেন " লোক ঠকিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা "

মনসুর সাহেবের সহকর্মী চলে গেলেন।কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন মুখ ভার করে।মনসুর সাহেব জিগ্যেস করলেন

" ব্যাপার কি? "

" স্যার আপনি নিজে গিয়ে দেখেন "

মনসুর সাহেব হোটেলের ঘরে গেলেন।দেখলেন তার একমাত্র মেয়ে অর্ধ উ'ল'ঙ্গ অবস্থায় ফ্লোরে বসে চোখের জল ফেলছে।পাশেই বসে আছে তার প্রেমিক।রাতারাতি খবর কাগজে তার মেয়ের ছবি দিয়ে প্রচার হয়ে গেলো " ওসি মনসুর সাহেবের মেয়ে যৌ'নপল্লিতে আটক "।

পরেরদিন সকালে মনসুর সাহেব তার মেয়ের ঘরেই মেয়ের মৃ'তদে'হ উদ্ধার করলেন। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন

" লোক ঠকানোর শাস্তি এতোটা প্রখর হয়? "

#লোক_ঠকানো_শাস্তি
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when গল্পের শহর posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to গল্পের শহর:

Videos

Share

Nearby media companies


Other Digital creator in Dhaka

Show All

You may also like