Ajimul Haque

Ajimul Haque উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ।
(7)

18/11/2023

প্রকৃত আলেম (জ্ঞানী) কখনও নিজেকে আলেম দাবি করে কী?

18/11/2023

পীরসাহেব এসে বলেন, ‘বাবারা! আমার হাতে হাত রাইখা বাইয়াত নাও (নজরানা প্রদানপূর্বক), হাশরের দিনে যখন কিছু থাকবে না, তখন তোমার পীর তোমারে জাহাজে করে জান্নাতে পৌঁছে দিবে।’
লক্ষ লক্ষ মানুষ পীরের জাহাজে ওঠার লোভে গাছের ফল, গরু, ছাগল, হাস, মুরগী, ডিম নিয়ে হাজির হয় পীরসাহেবের আস্তানায়। তারা ভুলে যায় আল্লাহ স্বয়ং তাঁর নবীকে বলছেন, তার কী হবে যার জন্য শাস্তির হুকুম অবধারিত হয়ে গেছে? তুমি (মোহাম্মদ) কী তাদেরকে বাঁচাতে পারবে যারা ইতোমধ্যেই আগুনে নিমজ্জিত? (সুরা যুমার: ১৯)।
তারা ভুলে যায় আল্লাহর সেই ঘোষণা যেখানে আল্লাহ বলেন, অধিকাংশ আলেম ও সুফিবাদীরা (পীর) মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করে এবং মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করে। তারা যে সোনা রূপা সঞ্চয় করে, হাশরের দিন সেগুলো উত্তপ্ত করে তাদের ললাটে ও পার্শ্বদেশে ছ্যাঁকা দেওয়া হবে (সুরা তওবা: ৩৪)।

18/11/2023

সুদভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত থেকে নামাজ পড়লে সে নামাজ কী হবে?

17/11/2023

এটা সুস্পষ্ট যে বর্তমানে মানবজাতির সীমাহীন দুর্ভোগ ও দুর্দশার কারণ তারা ইহুদি-খ্রিষ্টান ‘সভ্যতা’ অর্থাৎ দাজ্জালের দেওয়া জীবনব্যবস্থা বা সিস্টেমগুলো মেনে জীবন চালাচ্ছে। এই দুর্দশা থেকে তাদেরকে মুক্তি পেতে হলে তাদেরকে আগে এই সিস্টেমকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং গ্রহণ করতে হবে স্রষ্টার দেওয়া নিখুঁত সিস্টেম বা সত্যদীন যা কেবলমাত্র হেযবুত তওহীদের কাছেই আছে। এই সিস্টেমটি মানবজাতির সামনে প্রকাশ করা আমাদের কেবল নৈতিক দায়িত্বই নয়, এটা আমাদের সংগ্রাম, আমাদের জেহাদ। প্রচলিত সিস্টেমের ধারক বাহক অনুসারীরা আমাদের যতই বিরোধিতা করুক, আল্লাহর সত্যদীনকে সমুন্নত করার প্রচেষ্টা আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে।

09/11/2023

মুমিন কখনও পরাজিত, লাঞ্ছিত, উদ্বাস্তু, ধ্বংস হতে পারে না, যদি হয় তবে তারা মুমিন নয়।

09/11/2023

ইসলাম কী এবং কেন?

05/11/2023

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বিপ্লবী ও শান্তির দূত বিশ্বনবী (সা.)
আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বার্তাবাহক মহানবী (সা.) সত্যদীনের অধীনে আরবের অজ্ঞাত, অখ্যাত, রিক্ত-নিঃস্ব, নিরক্ষর মরুবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করে তিলে তিলে গড়ে তুললেন মানব ইতিহাসের বিস্ময়কর এক জাতি, অপরাজেয় অপ্রতিরোধ্য মৃত্যু-ভয়হীন এক বিপ্লবী জাতি। সেই জাতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, সেই লক্ষ্য অর্জনের প্রক্রিয়া, তাদের নিরলস সংগ্রাম সম্পৃক্ততার ইতিহাস বিচার করলে জাতিটিকে পৃথিবীর ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম বিপ্লবী জাতি, যাদের বিপ্লবের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত অন্যায়, অবিচার ও অশান্তি দূর করে পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।

আল্লাহর রসুল নিজে উপস্থিত থেকে আবার পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এই জাতিটি নিয়ে ৭৮টি সামরিক অভিযান পরিচালনা করলেন, যার ফলে তাঁর জীবদ্দশাতেই সম্পূর্ণ আরব উপদ্বীপে সত্যদীন তথা শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলো। এর পরের ইতিহাস এই জাতিটির নিরবচ্ছিন্ন জয়ের ইতিহাস। মহানবীর (সা.) পবিত্র হাতে গড়া জাতিটি তৎকালীন দু’টি পরাশক্তি রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যকে যারা ছিল সংখ্যা, অস্ত্র-শস্ত্র ও অর্থবলে মুসলিম বাহিনীর চেয়ে অনেকগুণ বেশি শক্তিশালী, তাদের উভয়কে এক এক করে নয়, একইসাথে সামরিকভাবে পরাজিত করে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের অধীনে নিয়ে আসলো। উম্মতে মোহাম্মদীই হয়ে গেলো পৃথিবীর একক পরাশক্তি। তাদের মোকাবেলা করা তো দূরের কথা, তাদের নাম শুনলেও শত্র“র অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো। ধনবলে, শিক্ষায়-দীক্ষায়, সামরিক শক্তিতে, উন্নতি-প্রগতিতে এই জাতিটি তখন ছিল পৃথিবীতে অদ্বিতীয়।মুসলিম বাহিনীর এই বিস্ময়কর সাফল্যের নেপথ্যে ছিল মহান রাব্বুল আলামীনের সাহায্য। এই সাহায্যের ধারা অব্যাহত ছিল ততোদিন, যতোদিন পর্যন্ত জাতিটি বিশ্বনবীর (সা.) আদর্শকে আঁকড়ে ধরে রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে গেছে।

অতঃপর এই আদর্শ যখন মুসলিম জাতি ত্যাগ করেছে, তখনই আল্লাহ তাদেরকে ত্যাগ করেছেন। ধীরে ধীরে তাদের উপরে নেমে এসেছে আল্লাহর শাস্তি। বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত জাতিটির ভাগ্যে জুটেছে পরাজয়, অপমান-লাঞ্ছনা। এ সম্পর্কে আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা – “যদি তোমরা অভিযানে বের না হও, তাহলে তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিয়ে তোমাদের উপরে অন্য জাতি চাপিয়ে দেব তোমরা (আল্লাহর) কোন ক্ষতি করতে পারবে না (কোর’আন সুরা আত-তওবাহ- ৩৯)। স্রষ্টার এই সাবধানবাণী অমান্য করার পরিণতিতে আজকের ১৬০ কোটির এই জনসংখ্যা সকল জাতির গোলামে পরিণত হয়েছে। তারা পৃথিবীতে ভয়াবহতম শাস্তি আর লাঞ্ছনার সম্মুখীন। এখন এই অন্ধকার যুগের অবসান ঘটাতে আমাদেরকে রসুলাল্লাহর সেই লুপ্ত আদর্শকে ধারণ করতে হবে, প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী হতে হবে। আসুন সংক্ষিপ্ত পরিসরে সেই বিপ্লবী আদর্শটি অবলোকন করি-

এক নজরে বিশ্বনবীর বিপ্লবের ২৩ বছরমক্কা জীবন ৪৭৪৫ দিন
১। ৬১০ খৃঃ ২৭ শে রমজান হেরা পর্বতের গুহায় বিশ্ব-মানবতার মুক্তির জন্য বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা.) তওহীদের সুমহান বাণীপ্রাপ্ত হন।
২। রসুলের ডাকে সর্বপ্রথম তওহীদের দীক্ষায় দীক্ষিত হন স্ত্রী খাদিজা (রা:)। অতঃপর রসুলাল্লাহর স্বজনদের মাঝে তওহীদের আহবান জানান এবং তা ব্যাপকভাবে গোপনে প্রচার করতে থাকেন।
৩। একদিন রসুলাল্লাহ কোরায়েশ ও অন্যান্য গোত্রের লোকজনকে সাফা পাহাড়ের পাদদেশে জমায়েত করলেন। অতঃপর তাদেরকে প্রকাশ্যে তওহীদের পথে আহ্বান করলেন। কিন্তু কোরায়েশরা তাঁর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করল। আবু লাহাব রসুলাল্লাহকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করল।
৪। হযরত আলী (রা:), আবু বকর (রা:), ওসমান (রা:), ওমর ফারুক (রা:), যায়েদ (রা:), হামজা (রা:), সাদসহ (রা:) বেশ কিছুসংখ্যক সৌভাগ্যবান তওহীদ গ্রহণ করলেন। অতঃপর রসুলাল্লাহ তাদেরকে সাথে নিয়ে প্রকাশ্যে বালাগ কার্যক্রম (তওহীদের দাওয়াত) শুরু করলেন।
৫। তওহীদের বিরুদ্ধে মোশরেকদের কবিতাযুদ্ধ ও ঘৃণ্য মিথ্যা প্রচারণা শুরু হলো। তারা রসুলাল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীদের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক বিরোধিতা শুরু করল।
৬। রসুলাল্লাহকে কাবাচত্বরে গলায় চাদর পেচিয়ে হত্যার প্রয়াস করা হয়, সালাহরত অবস্থায় তাঁর মাথায় উটের নাড়িভুড়ি চাপানো হয়। তাছাড়াও বিভিন্নভাবে তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়।
৭। তওহীদের দলভুক্ত হবার অপরাধে সুমাইয়া (রা:) ও তার স্বামী ইয়াসীরকে (রা:) মরুপ্রান্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এমতাবস্থায় বেশ কিছু মো’মেন আবু তালহার নেতৃত্বে আবিসিনিয়ায় হেজরত করেন।
৮। শিয়াবে আবু তালিবে সমাজচ্যুত ও নির্বাসিত মো’মেন মা ও শিশুদের আর্তচিৎকার; গাছের ছাল, লতা-পাতা, জুতার চামড়া ইত্যাদি খেয়ে কোন রকমে জীবন-ধারণ।
৯। তওহীদের দলের উপর থেকে অবরোধের অবসান।
১০। মেরাজ। পাঁচ ওয়াক্ত সালাহ প্রবর্তন। তওহীদের মহান আহ্বান তায়েফে প্রচারকালে তায়েফবাসীর নির্মম অত্যাচারে নবীজীর পবিত্র দেহমোবারক ক্ষত-বিক্ষত হয়ে রক্তে রঞ্জিত হয়।
১১। হজ্বের মৌসুমে প্রথম আকাবার বায়াত সম্পন্ন হয় ১২ জন মদিনাবাসীর সমন্বয়ে। তওহীদের প্রচার কার্যক্রমে মাস’আব এবনে উমায়েরকে (রা:) আল্লাহর রসুল কর্তৃক মদিনা প্রেরণ।
১২। ২য় আকবার বায়াতে ৭২ জন মদিনাবাসীর অংশগ্রহণ এবং আল্লাহর রসুলকে মদিনায় হেজরতের আহবান।
১৩। পৃথিবীর বুক থেকে তওহীদের অগ্নিশিখা চিরতরে নির্বাপিত করার চেষ্টায় মক্কার মোশরেক কর্তৃক রসুলাল্লাহকে হত্যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। অতঃপর তাদের ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করে রসুলাল্লাহর মদিনায় হেজরত।
মাদানী জীবন: ৩৬৫০ দিন
হেজরী ১: রসুলাল্লাহ মদিনায় সর্বপ্রথম মসজিদে জুম’আ পড়েন। মসজিদে নববী নির্মাণ ও মসজিদকেন্দ্রিক ইসলামী রাষ্ট্র-ব্যবস্থার ১৯ দফা কার্যক্রম শুরু হয়। মদিনা সনদ কায়েম হয়।
হেজরী ২: সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি। আযানের হুকুম নাজিল হয়। বদরের যুদ্ধসহ ছোটখাটো প্রায় ৮ টি সংঘর্ষ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। ঈদের সালাহ ও মাসব্যাপী সওম প্রবর্তন।
হেজরী ৩: উহুদের যুদ্ধে রসুলাল্লাহ গুরুতর আহত। হামযা (রা:) শহীদ। ছোটখাটোসহ প্রায় আটটি যুদ্ধ সংঘটিত।
হেজরী ৪: যাতুরিকা অভিযান, দ্বিতীয় বদর অভিযান ও যীকারাদ অভিযান। বীরে মাওনা।
হেজরী ৬: হুদায়বিয়ার সন্ধি। বনু লিহইয়ান অভিযান। ফিদাক সামরিক অভিযান। মোট চৌদ্দটি যুদ্ধ সংঘটিত।
হেজরী ৭: খায়বর বিজয়। ওয়াদিল অভিযান। মোট আটটি যুদ্ধ।
হেজরী ৮: মক্কা বিজয়। মুতার সামরিক অভিযান। তায়েফ অভিযান। মোট চৌদ্দটি যুদ্ধ।
হেজরী ৯: তাবুক অভিযান। সারিয়ায়ে খালেদ। সারিয়ায়ে আলী। মোট সাতটি যুদ্ধ।
হেজরী ১০: রসুলের জীবদ্দশায় সর্বমোট ৭৮টি জেহাদ সংঘটিত। তন্মধ্যে ২৮টি জেহাদে তিনি নিজে সোনাপতিত্ব করেন।
বিদায় হজের ভাষণ:
রসুলাল্লাহ কর্তৃক সকল মুসলিম ভ্রাতৃবন্ধনীতে আবদ্ধ থাকার নির্দেশনা। এছাড়াও তিনি যে সকল বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন তাহলে- পর সম্পদ ও রক্ত নিষিদ্ধ ও হারাম করা। সুদ নিষিদ্ধ ও হারাম করা। স্বামী স্ত্রী অধিকার নিশ্চিতকরণ।জাতীয় জীবনব্যবস্থা হিসেবে কোর’আন এবং সুন্নাহকে ঘোষণা দেওয়া। একের অপরাধে অন্যকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। কোর’আন সংবিধান ও সুন্নাহ অনুসারী শাসকের আনুগত্য বাধ্যতামূলক-করণ। দীন নিয়ে বাড়াবাড়ির ব্যাপারে কঠোর সাবধানবাণী। প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সা.) এরওফাতের পর প্রাপ্ত সম্পদ-
১) ১টি চাটাই,
২) ১ টি বালিশ (খেজুরের ছাল দিয়ে ভর্তি) ও
৩) কয়েকটি মশক১) ৯টি তরবারি,২) ৫টি বর্শা,৩) ১টি তীরকোষ,
৪) ৬টি ধনুক,
৫) ৭টি লৌহবর্ম,
৬) ৩টি জোব্বা (যুদ্ধের),
৭) ১টি কোমরবন্ধ,
৮) ১টি ঢাল এবং
৯) ৩টি পতাকা।

(তথ্যসূত্র:- সিরাতুন্নবী- মওলানা শিবলী নোমানী)

05/11/2023
04/11/2023

মো’মেন কে:
আল্লাহ কোরআনে মো’মেনের সংজ্ঞা দিচ্ছেন- “প্রকৃত মো’মেন শুধু তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে বিশ্বাস করে, তারপর (ঈমান আনার পর) আর তাতে কোনো সন্দেহ করে না, এবং তাদের জীবন ও সম্পত্তি দিয়ে আল্লাহর পথে জেহাদ করে” (সুরা হুজরাত ১৫)। আল্লাহর দেওয়া মো’মেনের সংজ্ঞায় দু’টি শর্ত দেওয়া হলো; প্রথম শর্ত হচ্ছে আল্লাহ ও রসুলের ওপর ঈমান, অর্থাৎ তওহীদ, যার অর্থ হচ্ছে জীবনের সর্বাঙ্গনে সেটা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে, আইন-কানুন, দণ্ডবিধি, অর্থনীতি যাই হোক না কেন, যে বিষয়ে আল্লাহ বা তাঁর রসুলের কোনো বক্তব্য আছে, কোনো আদেশ-নিষেধ আছে সে বিষয়ে আর কাউকে না মানা। দ্বিতীয় শর্ত হলো ঐ তওহীদকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করা। বর্তমানে মুসলিম বলে পরিচিত জাতিটিতে এ দু’টি শর্তের একটিও নেই। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে- আল্লাহর দেওয়া এই সংজ্ঞা মোতাবেক এই জাতি কী মো’মেন? অবশ্যই নয়। আর মো’মেন না হওয়ার অর্থ হয় মোশরেক না হয় কাফের।

04/11/2023

কাফের কে:
আল্লাহ কোর’আনে কাফেরের যে সংজ্ঞা দিচ্ছেন তা হলো- আল্লাহ যে আইন, বিধান নাযিল করেছেন তা দিয়ে যারা হুকুম করে না অর্থাৎ শাসনকার্য, বিচার ফায়সালা পরিচালনা (এখানে বিচার অর্থে আদালতের বিচার, শাসনকার্য সব বুঝায়, কারণ শব্দটা হুকুম) করে না তারাই কাফের, জালেম, ফাসেক (সুরা মায়েদা- ৪৪, ৪৫, ৪৭)। এখানে আল্লাহ-রসুলের প্রতি বিশ্বাস ও কোনো প্রকার ইবাদত করা বা না করার শর্ত রাখা হয়নি। অর্থাৎ যারা আল্লাহর কোর’আনে দেওয়া আইন, বিধান দিয়ে শাসনকার্য ও বিচার ফায়সালা সম্পাদন করে না তারা যত বড় মুসুল্লিই হন, যত বড় মুত্তাকি, আলেম, দরবেশ, পীর-মাশায়েখ হন না কেন কার্যতঃ কাফের। এই আয়াতের অর্থে সমস্ত পৃথিবীর মুসলিম বলে পরিচিত এই জনসংখ্যা কার্যতঃ কাফের, যালেম এবং ফাসেক।

04/11/2023

মোশরেক কে:
সুরা বাকারার ৮৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- “তবে কি তোমরা কেতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস করো এবং কিছু অংশকে প্রত্যাখ্যান করো? সুতরাং তোমাদের যারা এরূপ করে তাহাদের প্রতিফল পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা, অপমান এবং কেয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি।” এখানে আল্লাহ পার্থিব জীবনেই যে শাস্তির কথা বলছেন, আজ মুসলিম বলে পরিচিত এই জাতির অবস্থা কী ঠিক তাই নয়? আল্লাহর দেওয়া বিধান হলো কোর’আন। এই কোর’আনের কিছু মানা, কিছু না মানাই হলো শেরক। এ ব্যাপারে আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে- “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না; এটা ছাড়া সব কিছু তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন (সুরা নিসা ৪৮, ১১৬)। আল্লাহর দেওয়া বিধান কোর’আন থেকে নামাজ, রোযা, হজ্ব, যাকাত এই কয়েকটি বিধান এ জাতি ব্যক্তিগতভাবে পালন করে, তাও বিকৃতরূপে কিন্তু জাতীয় ও সমষ্টিগত জীবনে আল্লাহর দেওয়া বিধান যেমন অর্থনীতি, রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা ইত্যাদি বাদ দিয়ে মানুষের এবং খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের তৈরি বিধান মেনে চলছে। সুতরাং এই জাতি আল্লাহর কোর’আনের কিছু অংশ মানা আর কিছু অংশ না মানার কারণে কার্যতঃ মোশরেক হয়ে আছে। সুতরাং সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় এ জাতি কার্যতঃ কাফের, মোশরেক।

31/10/2023

ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতবর্ষে ইংরেজরা বেশ কিছু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিল কেবল রাজ-রাজড়া ও অভিজাত পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য, যেন তারা চামড়ায় ভারতীয় হলেও মন-মগজে হয়ে ওঠে পুরোমাত্রায় ইউরোপীয়। ইন্দোর এর ডালি কলেজ, লাহোরের এইচিসন চিফস্ কলেজ, আজমিরের মেয়ো কলেজ ও রাজকোটের রাজকুমার কলেজের মতো আরো বেশ কিছু কলেজ বিশেষভাবে নির্ধারিত ছিল অভিজাতদের জন্যে।
এসব কলেজ থেকে যারা বেরিয়ে আসত, তাদের মেধা, মনন ও দৃষ্টিভঙ্গি হত বিচিত্র। আসলে শাসক ও শাসিতদের মধ্যে বিপুল পার্থক্য সৃষ্টি করাই ছিল ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য। কলেজগুলো থেকে বেশির ভাগ নওয়াবজাদা, জমিদারপুত্র, যুবরাজ ও সরদার বেরিয়ে আসত কুশিক্ষা নিয়ে। ইংরেজরাই মূলত নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করত এসব কলেজ। প্রিন্সিপাল ও সিনিয়র প্রফেসর থাকতেন ইংরেজ, আর জুনিয়র শিক্ষক ও ধর্মীয় শিক্ষক থাকতেন ভারতীয়।
এমন একটা ধর্মান্ধ পরিবেশে লেখাপড়া করানো হত যে শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক ধ্যান-ধারণা নিয়ে বড় হত। কলেজ - প্রাঙ্গণে থাকত বিভিন্ন প্রার্থনাগৃহ- মুসলমানদের জন্য মসজিদ, হিন্দুদের জন্য মন্দির, খ্রিষ্টানদের জন্য চার্চ এবং শিখদের জন্যে গুরুদ্বার। প্রশিক্ষণের সময় ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হত সবচেয়ে বেশি। ব্রিটিশ রাজনীতিকরা চাইতেন এসব কলেজে কড়াকড়িভাবে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হোক - যাতে বিভিন্ন রাজ্যের ভবিষ্যৎ শাসকরা হতে পারেন বিশেষরকম সাম্প্রদায়িক মনোভাবের অধিকারী। এজন্যই বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রুপে বিভক্ত করে শিক্ষা দেয়া হত তাদের। বস্তুত ইংরেজদের ডিভাইড অ্যান্ড রুল অর্থাৎ বিভেদনীতির কৌশলটি এসব কলেজে বজায় ছিল পূর্ণমাত্রায়।
পরবর্তীতে ব্রিটিশরা যখন ভারতকে স্বাধীন ঘোষণা করে চলে যায়, ততদিনে এই লোকগুলোই দেশের পরিচালনার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠেছে। এদের হাতেই রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তর করে উপমহাদেশ ছাড়ে ব্রিটিশরা। ফলে স্বাধীন হয়েও ভারতবর্ষ ব্রিটিশদের তৈরি বিধি-বিধানই সর্বোত্তম বলে বিশ্বাস করছে ও মেনে চলছে (তথ্য সহায়তা: সাযযাদ কাদির)।

31/10/2023

বি*এন*পির বিভিন্ন নেতাকর্মী গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে বি*এন*পির ডাকা অবরোধে কুমিল্লার পরিস্থিতি।

29/10/2023

দারুণ আবহাওয়া, দারুণ পরিবেশ। বিলেত।

29/10/2023

আদর্শিক লড়াই করার জন্য একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে কথা বা জ্ঞান। এই লড়াই যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝানোর জন্য সুরা ফোরকানের ৫২ নম্বর আয়াতটি লক্ষ করা যেতে পারে যেখানে আল্লাহ বলেছেন, “আপনি কাফেরদের আদর্শের অনুসরণ করবেন না। বরং তাদের বিরুদ্ধে এর দ্বারা অর্থাৎ কোর’আনের দ্বারা জেহাদে আকবর বা বড় জেহাদ করুন।” ফোরকান হচ্ছে কোর’আন শরীফের একটি নাম যার অর্থ সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী। এখানে আল্লাহ কোর’আনের বক্তব্য দ্বারা কাফেরদের মতবাদগুলোকে, তাদের আদর্শকে খণ্ডন করার নির্দেশ দিচ্ছেন এবং একেই জেহাদের আকবর বলেছেন। অথচ আমাদেরকে জাল হাদিস শেখানো হয় যে নফসের বিরুদ্ধে জেহাদ হচ্ছে জেহাদে আকবর। আল্লাহর রসুল (সা.)-ও বলেছেন, জালেম শাসকের সামনে হক কথা বলাই সর্বশ্রেষ্ঠ জেহাদ।

29/10/2023

দেশব্যাপী বি*এন*পি*র ডাকা হরতাল। আতঙ্কিত মানুষ, গাড়িশূন্য জনপথ।

#হরতাল
#বিএনপি
#জামায়েত

28/10/2023

যারা দোয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়, তাদের দিয়ে কোনোদিন সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়, ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

28/10/2023

যে প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় গিয়ে তারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলছে সে প্রক্রিয়ায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা কী সম্ভব?

28/10/2023

অপরাজনীতির চর্চায় ইসলাম নামধারী দলগুলো যেভাবে কিছুদিন পর পর সমাবেশ করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে তাতে ভালো করে প্রমাণিত হয় যে তারা পথভ্রষ্ট।

24/10/2023

আল্লাহ বলেছেন, “যে যতটুকু চেষ্টা করবে তার বেশি তাকে দেয়া হবে না” (সুরা আন-নজম: ৩৮) এবং যে জাতি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হয় না আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না (সুরা আনফাল: ৫৩)।

মসজিদে, বিরাট বিরাট মাহফিলে, লক্ষ লক্ষ লোকের এজতেমায় যে দফাওয়ারী দোয়া করা হয়, যার মধ্যে মসজিদে আকসা উদ্ধার অবশ্যই থাকে- তাতে যারা দোয়া করেন তারা দোয়া শেষে দাওয়াত খেতে যান, আর যারা আমীন আমীন বলেন তারা যার যার ব্যবসা, কাজ, চাকরি ইত্যাদিতে ফিরে যান, কারোরই আর মসজিদে আকসার কথা মনে থাকে না। অমন দোয়ায় হাত ব্যথা করা ছাড়াও বড় বিপদ আছে, কারণ অমন দোয়ায় আল্লাহর সাথে বিদ্রূপ করা হয়। তার চেয়ে দোয়া না করা নিরাপদ। আমাদের দোয়া শিল্পীরা, আর্টিস্টরা লক্ষ লক্ষ লোকের এজতেমা, মাহফিলে বায়তুল মোকাদ্দসকে উদ্ধার করার জন্য দোয়া করে যাচ্ছেন ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্ম থেকে ৭৩ বছরের বেশি সময় ধরে। ঐ সময়ে যখন দোয়া করা শুরু করেছিলেন তখন দোয়াকারীরা আজকের চেয়ে সংখ্যায় অনেক কম ছিলেন এবং ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তনও এখনকার চেয়ে অনেক ছোট ছিল। জেরুসালেম ও মসজিদে আকসা তখন ইসরাইল রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
এই মহা মুসলিমদের প্রচেষ্টাহীন, আমলহীন দোয়া যতই বেশি লোকের সমাবেশে এবং যতই বেশি লম্বা সময় ধরে হতে লাগল ইহুদিদের হাতে আরবরা ততই বেশি মার খেতে লাগল আর ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তনও ততই বড়তে লাগল। আজ আট/দশ লক্ষ ‘মুসলিম’ একত্র হয়ে আসমানের দিকে দু’হাত তুলে দুনিয়ার মুসলিমের ঐক্য, উন্নতি ইত্যাদির সাথে তাদের প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাসের মুক্তির জন্য দোয়া করে। ১৯৪৮ সনে ইসরাইলের আয়তন ছিল ১,৬৮২ বর্গ কিলোমিটার আর আজ ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তন ২২,০৭২ বর্গকিলোমিটার যা প্রথম অবস্থার চেয়ে তেরো গুণ বড় এবং বহু আগেই পূর্ণ জেরুসালেম শহর বায়তুল মোকাদ্দাসসহ মসজিদে আকসা তাদের দখলে চলে গেছে এবং মুসলিম জাতির ঐক্যের আরও অবনতি হয়েছে এবং সকল জাতির হাতে আরও অপমানজনক মার খাচ্ছে। অর্থাৎ এক কথায় এরা এই বিরাট বিরাট মাহফিলে, এজতেমায়, মসজিদে, সম্মেলনে যা যা দোয়া করছেন, আল্লাহ তার ঠিক উল্টোটা করছেন।
আসল কথা হচ্ছে, আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। এমন কিছু নেই যা তিনি করতে পারেন না। কিন্তু তিনি দেখতে চান আমরা কী করি। আল্লাহ বলছেন, “আল্লাহ ইচ্ছা করলে সমস্ত অবিশ্বাসীদের সত্য পথে আনতে পারেন।” (সুরা আল আন’আম: ৩৫)। তিনি তা ইচ্ছা করেন নি, অথচ ঐ কাজটা করার ভারই তিনি তার নবীকে ও তার উম্মাহকে দিয়েছেন। কারণ, তিনি দেখতে চান কারা তার সেই কাজ করতে চেষ্টা করে, সংগ্রাম করে, কোরবানি করে। এর উপরই নির্ভর করেই তিনি কেয়ামতে শাস্তি ও পুরস্কার দেবেন। তিনি আরো বলছেন, “হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন” (সুরা মোহাম্মদ: ৭)। সর্বশক্তিমান আল্লাহ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মানুষের কাছে সাহায্য চাচ্ছেন কেন? এর অর্থ হলো, ইবলিস যে তাঁকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে ‘সে আল্লাহর সৃষ্টি মানুষকে আল্লাহর দেয়া জীবন-বিধান অস্বীকার করিয়ে মানুষকে দিয়েই জীবন-বিধান তৈরি করিয়ে মানুষকে ফাসাদ অর্থাৎ অন্যায়-অবিচার-অশান্তি আর সাফাকুদ্দিমা অর্থাৎ যুদ্ধ ও রক্তপাতে ডুবিয়ে দেবে’, সেই চ্যালেঞ্জে কারা আল্লাহর পক্ষে থেকে সংগ্রাম করে, আর কারা করে না বা বিপক্ষে থাকে তা পরীক্ষা করে দেখা।
আল্লাহ যদি হুকুম করেই সমস্ত মানুষকে সত্য পথে এনে ইবলিসকে হারিয়ে দেন তবে আর চ্যালেঞ্জের কোন অর্থই থাকে না। তাই আল্লাহ শক্তি থাকলেও তা করবেন না। তিনি দেখবেন আমরা ইবলিসের বিরুদ্ধে সেই সংগ্রাম করি কি না। জানমাল দিয়ে সেই সংগ্রাম করলে আমরা আল্লাহকে সাহায্য করছি। আর তা না করে বসে বসে দফাওয়ারী দোয়া করলে ইবলিসের দলভুক্ত হয়ে গেছি।

22/10/2023

আপনি কি আদর্শবান ব্যক্তি? ভালো ভালো কথা বলেন? অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন? ভণ্ডামীর মুখোশ খুলে দেন? দলান্ধ বা ধর্মান্ধ না হয়ে যুক্তির চর্চা করেন? সবগুলো প্রশ্নের উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয় তাহলে জেনে রাখুন, আপনি একজন দালাল। জেনে রাখতে বলছি কারণ আপনি এমন এক ‘ক্যাটাগরি’র দালাল যে কিনা ‘দালাল’ তকমা কাঁধে নিয়ে ঘুরেও বুঝতে পারে না সে কোথায় দালালী করল, কার দালালী করল। আপনার সুবিধার জন্য একটি ফর্মুলা দিচ্ছি, যেটা প্রয়োগ করে আপনি যে কোনো সময় জেনে নিতে পারবেন ওই মুহূর্তে কার দালালী করছেন। ফর্মুলা হলো- ‘যখন যার অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন আপনি তখন তার প্রতিপক্ষের দালাল।’ আসুন বাস্তব জীবনে ফর্মুলার প্রয়োগ দেখা যাক।
১.
ধরুন, আওয়ামী লীগের সমালোচনা করছেন, দোষ ত্র“টি তুলে ধরছেন, সংশোধন হবার আহ্বান জানাচ্ছেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাস কিংবা যুবলীগের দখলদারিত্ব কীভাবে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নষ্ট করছে পরিসংখ্যানযোগে ব্যাখ্যা করছেন, কথায় কথায় কয়েকজন মন্ত্রী-এমপি’র দুই নম্বরীও উঠে আসছে। সারা শরীর বেয়ে ঘাম ঝরছে। শ্রোতারা সব উত্তেজিত ভঙ্গিত তাকিয়ে আছে। যাই হোক, আপনি ভাবছেন যে খুবই মহৎ কর্ম করে ফেলছেন। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াচ্ছেন বা দেশ ও জাতির উপকার করছেন। কিন্তু না, আপনি আসলে বিএনপির দালালী করছেন। এ ব্যাপারে আপনার ঘোর সন্দেহ থাকলেও আওয়ামী লীগারদের কোনো সন্দেহ নেই। তারা জানে- যে ব্যক্তি আওয়ামী লীগ করে বা আওয়ামী লীগের সাপোর্টার তারা কখনও দলের ভুল ধরবে না, সরকারের সমালোচনা করবে না। আপনি করছেন মানেই আপনাকে রোগে ধরেছে। রোগটা খুবই স্পষ্ট। ইদানীং মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে। আপনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাহীনতায় ভুগছেন। যার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নাই আওয়ামী লীগের উপর তার ভক্তি-মহব্বতও নাই। অন্যভাবে বললে, আওয়ামী লীগের উপর যার ভক্তি-মহব্বত নাই তার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও নাই। সে আওয়ামী লীগ নয়। সে বিএনপি হতে পারে আবার জামাতও হতে পারে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ লীগারের মতে সে দালাল। বিএনপির দালাল নাকি জামাতের দালাল সেটা আগেই বলা ঠিক হবে না। আপাতত সে বিএনপি-জামাতের দালাল।
২.
ধরুন, এবার আপনি বিএনপি-জামাতের সমালোচনা করছেন, বিগত আমলে বিএনপি-জামাত কী কী দুর্নীতি করেছে, কয় হাজার কোটি টাকা লাগ ভেলকি লাগ বলে ‘নাই’ করে দিয়েছে, সংখ্যালঘু নির্যাতন করেছে, জঙ্গিবাদের জন্ম দিয়েছে ইত্যাদি পুরোনো কাসুন্দি ঘাটছেন, কথা প্রসঙ্গে ২০১৩ সালের অবরোধ-হরতাল-পিকেটিং ঢুকে পড়ছে, ২০১৫’র প্রেট্রল বোমাও বাদ পড়ছে না, তার অর্থই হচ্ছে আপনার ‘দালালী’ ধরা পড়ে গেছে। আÍপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ নেই, সুযোগ থাকলেও লাভ নেই। জিয়ার সৈনিকরা যেখানে কেবল ‘হা’ করলেই বুঝতে পারে কে কী বলতে চায়, সেখানে আপনি ইতোমধ্যেই অনেক কথা বলে ফেলেছেন। ওদের আর বুঝতে বাকি নেই আপনি কোন ঝাড়ের বাঁশ, আপনি কার দালালী করছেন। ঘটনা খুবই পরিষ্কার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, তাই বিএনপি-জামাতের সমালোচনার রশি ধরে অর্থাৎ সরকারের দালালি করে আসলে আপনি উপরে উঠতে চাচ্ছেন। এই তো? সমস্যা নাই, তরতর করে উপরে উঠতে থাকুন। আপনাকে রেড মার্ক করে রাখা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে ঠ্যাং ধরে তরতর করে টেনে নামানো হবে। টেনে নামানো না গেলে পাছায় আগুন লাগানো হবে। তখন আপনা আপনি নেমে যাবেন। তাতেও না নামলে ‘বিশেষায়িত রগকাটা বাহিনী’ আছে, দেশব্যাপী তাদের সুনাম ও খ্যাতিও আছে, তারাই দেখে নেবে।

বিএনপি-জামাতের সমালোচনা করার আগে আপনার ভাবা উচিত ছিল যে, বিএনপি-জামাতে অনেক আল্লাহওয়ালা, নবীওয়ালা, বুজুর্গ, দ্বীনে আশেকীনরা আছেন। তারা যা করেন আল্লাহর রাস্তায় করেন। দুর্নীতি করলেও আল্লাহর রাস্তায় করেন। ককটেল মারলেও আল্লাহর রাস্তায় মারেন। আল্লাহর রাস্তায় অভিযানে যারা বাধার সৃষ্টি করে তারা হলো আবু জাহেলের বংশধর। সময়-সুযোগ আসলে অল টাইম আপনার মতো আবু জাহেলের বংশধরদের চটকানির উপর রাখা হবে। দালালী করার জায়গা পান না? আল্লাহ-রসুলের বিরুদ্ধে দালালী করেন?
৩.
ধর্ম নিয়ে কথা বলার লোকের অভাব নাই। মোল্লা, মাওলানা, মুফতি, ক্বারী, আল্লামারা ধর্মের ঠিকাদারী নিয়ে রেখেছেন। তাদের অসীম জ্ঞান। তারা ধর্মের কোনো বিষয় জানেন না এমনটা মনে করাও পাপ। ধর্ম নিয়ে কিছু শুনতে চান? জানতে চান কোন আমল করলে ১০০ বছরের গুনাহ মাফ হয়? জানতে চান অজ্ঞান অবস্থায় নামাজের সময় পার হয়ে গেলে ক্বাজা পড়তে হবে কিনা? চলে আসুন মাওলানা সাহেবের দরবারে। প্রাণ খুলে আল্লাহর রহমতের বান্দারা দীনের জ্ঞান দান করবেন। অন্তর ঠান্ডা হবে। মন প্রশস্ত হবে। পাপ মুছে যাবে। নিষ্পাপ শিশুর মতো বাড়ি গিয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। আর না জাগলেও চলবে।
কিন্তু ধরুন, আপনি তাদের কাছে দ্বীনি জ্ঞান শিক্ষা না করে উল্টো তাদের সমালোচনা শুরু করেছেন। যেমন- ধর্মের কথা বলে বা ওয়াজ করে অর্থ উপার্জন করা ঠিক হচ্ছে কিনা, নামাজ পড়িয়ে, মিলাদ পড়িয়ে, কুরবানি-কুলখানি ও জেকের-আজগার করে টাকা-পয়সা নেওয়া ইসলামসম্মত কিনা ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। অথবা রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার করে ব্যালট পেপারকে ‘জান্নাতের টিকেট’ আখ্যা দিয়ে মানুষের সমর্থন লাভের প্রচেষ্টা ইসলামের অপব্যবহার কিনা, নাস্তিক-মুরতাদ আখ্যা দিয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের বিরুদ্ধে ঈমানদার মানুষকে খেপিয়ে তুলে সহিংস ঘটনা ঘটানো অনৈতিক কিনা সে প্রশ্ন তুললেন।

কিন্তু আপনি হয়তো ভুলে গেছেন দুনিয়ার সব কিছুর সমালোচনা করা চলে না। সূর্যের সমালোচনা হয় না। চন্দ্রের সমালোচনা হয় না। হুজুরের সমালোচনাও হয় না। হুজুরের যুক্তির পিঠে যুক্তি দেওয়া গুনাহের কাজ। শুধু গুনাহ বললে ভুল হবে, কবীরা গুনাহ। হুজুররা হলেন আল্লাহর নবীর উত্তরসূরী। তাদের সকল কথার একটাই উত্তর- মারহাবা মারহাবা। মারহাবা বলবেন না আপত্তি নেই, চুপ করে থাকুন। কিন্তু সাবধান- হুজুরের বিরুদ্ধে সমালোচনা মানি না মানব না। আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি ইসলাম ধ্বংস করতে চান। আপনি ইহুদির দালাল। খ্রিস্টানের দালাল। সরকারেরও দালাল। কারণ সরকারও ইসলাম ধ্বংস করতে চায়। দুয়ে দুয়ে চার। ইহুদি-খ্রিস্টানরা নাস্তিক আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে আপনার মতো দালাল উৎপাদন করেছে। আপনার কাছে খ্রিস্টানরা বস্তাভর্তি টাকা পাঠায়। বিধর্মীর টাকা খেয়ে দালালী করে আপনি মু'মিনদের ইমান-আকীদা নষ্ট করে ফেলার ফন্দি আটছেন। মনে রাখবেন, হুজুর আছে বলেই ইসলাম আছে। হুজুর নাই ইসলামও নাই। সুতরাং হুজুরের বিরুদ্ধে সমালোচনা মানে ইসলামের সমালোচনা। বাংলার মাটি শাহজালালের মাটি, শাহ মাখদুমের মাটি, পীর-বুজুর্গদের মাটি। সৌদি আরবের মতো খাটি। এখানে আপনার জায়গা নেই। দালালী করবেন বিদেশে গিয়ে করেন। আপনার ফেস চিনে রাখা হচ্ছে। পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমান সরকার মোল্লাদের কদর বোঝে না। বুঝলে ৫ মে মাদ্রাসার কোটি কোটি এতিম ছাত্রকে গুলি করে মারতে পারতো না। আহারে। এত খুন। এত রক্ত। সরকার ক্ষমতা থেকে নামুক। তারপর দেখবা ইমানের তেজ কাহাকে বলে?

22/10/2023

পৃথিবীর অন্যতম উন্নত, সমৃদ্ধ, শক্তিশালী ও সভ্য অঞ্চল ছিল এই ভারতীয় উপমহাদেশ। পাশ্চাত্যদের লোলুপ দৃষ্টি যখন এ অঞ্চলে পড়ল তখন এ অঞ্চলের মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ছিল সরলতা। ধূর্ত ব্রিটিশরা এ অঞ্চল দখল করে শোষণ ও নির্যাতন চালানো শুরু করল। এ অঞ্চলের মানুষ যখন বিদ্রোহী হয়ে উঠছিল তখন তারা এ অঞ্চলকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করল, এ অঞ্চলের মানুষকে নিবীর্জ করার জন্য, পুরোদস্তুর দাস বানানোর জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করল। এ অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করে লর্ড মেকলে ১৮৩৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তার ফলাফল তুলে ধরেন এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব পেশ করে এক বক্তব্য প্রদান করেন, তার অংশবিশেষ ছিল এমন:-

“আমি ভারতের এ মাথা থেকে ও মাথা ঘুরে বেড়িয়েছি কিন্তু একটি ভিক্ষুকও আমার চোখে পড়ে নি, একটি চোরও আমি দেখতে পাই নি। এ দেশে সম্পদের এত প্রাচুর্য এবং এদেশের মানুষগুলি এতটাই যোগ্যতাসম্পন্ন ও উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী যে এদেশকে আমরা কখনোই পদানত করতে পারবো না যদি না তাদের মেরুদণ্ডটি ভেঙ্গে ফেলতে পারি। এদেশের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যই হচ্ছে সেই মেরুদণ্ড। এ কারণে আমার প্রস্তাব হচ্ছে, আমরা এখানকার প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা, সংস্কৃতিকে এমন একটি শিক্ষা ও সংস্কৃতি দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যাতে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিক ভাবতে শেখে যে, যা কিছু বিদেশি এবং ইংরেজদের তৈরি তা-ই ভাল এবং নিজেদের দেশের থেকে উৎকৃষ্টতর। এভাবে নিজেদের উপরে শ্রদ্ধা হারাবে, তাদের দেশজ সংস্কৃতি হারাবে এবং এমন একটি দাসজাতিতে পরিণত হবে ঠিক যেমনটি আমরা চাই।”
ব্রিটিশরা এ অঞ্চলের মানুষকে নিজেদের মনমতো গড়ে তোলার জন্য তখনকার প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে নিজেদের তৈরি সিলেবাস ও কারিকুলাম দ্বারা নতুন এক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করল। একদিকে চালু করল মাদ্রাসা শিক্ষা আর অন্যদিকে চালু করল সাধারণ শিক্ষা। ১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠার করল কোলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা। সেখানে শতভাগ ফলাফল না আসায় ১৮৪৬ সালে কোলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল করা হলো- ড. এইচ. স্প্রিংগার সাহেবকে। এভাবে পর পর ২৬ জন খ্রিষ্টান প্রিন্সিপালকে দিয়ে মাদ্রাসা চালানো হলো। এবার শতভাগ সফল হলো তারা। এই মাদ্রাসা শিক্ষা থেকে এমন একটা শ্রেণি বের হয়ে আসতে লাগল যারা দুনিয়া নিয়ে না ভেবে কেবল আখেরাত নিয়ে, আমল নিয়ে, সওয়াব নিয়ে ভাবতেই ভালোবাসে। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা তো দূরের কথা তারা দাড়ি-টুপি, জোব্বা, মেসওয়াক, ঢেলা-কুলুখ, টাখনু, বিবিতালাক ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক, বাহাস, মারামারিতে ব্যস্ত হয়ে থাকবে।
অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বের হতে লাগল এমন একটা শ্রেণি যাদেরকে সামান্য অর্থ দিয়ে কিনে নেওয়া যায়, নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছু নেই তাদের। আপাদমস্তক একটা দাস জাতি তৈরিতে তারা শতভাগ সফল হলো। আজও আমরা সেই দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ। আজও তারা আমাদের প্রভু। আমরা সেই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শিক্ষিত হচ্ছি। একদিকে ইসলামের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে একটা শ্রেণি তর্ক-বাহাসে লিপ্ত, জাতিকে বিতর্ক করে করে শতধা বিভক্ত, বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে আর অন্যদিকে আরেকটা শ্রেণি প্রভুদের শেখানো গণতন্ত্রের চর্চা করে করে জাতিকে বিচ্ছিন্ন, বিভক্ত করে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। দেশের লক্ষ-কোটি টাকা তাদের ব্যাংকে জমা রেখে দেশকে ভিখারী বানিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্নভাবে প্রভুদের পা চাটা তাদের সাধারণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আর কতকাল চলবে দাস তৈরির এই শিক্ষাব্যবস্থা?

21/10/2023

ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ত্যাগী সংগঠনগুলোও ব্যর্থ হচ্ছে কেন?
জাতীয় জীবনে ইসলাম প্রতিষ্ঠাকামী দলগুলোর অসংখ্য আন্তরিক কর্মী আছেন যাদের ত্যাগ সত্যিকার অর্থেই উদাহরণযোগ্য। ইসলামের জন্য তারা যে কোনো মুহূর্তে জীবন পর্যন্ত কোরবান করতে প্রস্তুত। তাদের উদ্দেশে আমরা সবিনয়ে দুটো কথা বলতে চাই।
প্রথম কথাটি হচ্ছে, ইসলাম হলো আল্লাহর দেওয়া দীন, এর নাম আল্লাহ দিয়েছেন সেরাতুল মোস্তাকিম বা সহজ-সরল পথ। সৃষ্টির সূচনালগ্নেই আল্লাহর সঙ্গে ইবলিসের যে চ্যালেঞ্জ হয়েছিল সেখানে ইবলিস বলেছিল যে, সে এই সেরাতুল মোস্তাকিমে মানুষকে থাকতে দেবে না, সে এই জীবনপদ্ধতিটি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করতে দেবে না। সে এই পথের ডানে-বামে, উপরে-নিচে ওত পেতে বসে থাকবে এবং মানুষকে আক্রমণ করে এ পথ থেকে সরিয়ে দেবে। কাজেই সত্যদীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মানুষকে এমন এক প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করতে হবে যাকে সে দেখতেই পায় না, যে বিভিন্ন রূপে এসে মানুষকে প্রতারিত করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত। সুতরাং এ শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে আল্লাহর সাহায্য তার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো শক্তি দিয়েই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, আল্লাহ কাকে সাহায্য করবেন?
আল্লাহ সাহায্য করবেন কেবল তাকেই যে মুমিন। পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ যত ওয়াদা করেছেন সব মুমিনদের জন্য, তাঁর সকল সাহায্যও মুমিনদের জন্য। তিনি বলেছেন, তোমরা নিরাশ হয়ো না তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হও (সুরা ইমরান: ১৩৯)। মুমিন কে সেটাও আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন, “মুমিন শুধুমাত্র তারাই যারা আল্লাহ ও রসুলের প্রতি ঈমান আনে, অতঃপর কোনো সন্দেহ করে না এবং জীবন-সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ (সর্বাত্মক সংগ্রাম করে), তারাই হচ্ছে সত্যনিষ্ঠ (সুরা হুজরাত: ১৫)। কাজেই যারা তওহীদের উপর অটল থেকে সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন-সম্পদ সব উজাড় করে দিয়ে সংগ্রাম করবে তারাই হলো মুমিন। আল্লাহর সাহায্য শুধু তাদের জন্যই।
ইসলাম আজকে হাজারো রূপ নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এর যে কোনো একটি রূপকে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম করলেই কি মানুষ আল্লাহর দৃষ্টিতে মুমিন হয়ে যাবে আর আল্লাহও সাহায্য করতে শুরু করে দিবেন? অবশ্যই না। যারা আল্লাহর নাজিল করা সেই প্রকৃত ইসলামের অনাবিল রূপটিকে বিশ্বময় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করবে তারাই আল্লাহর দৃষ্টিতে মুমিন বলে গণ্য হবে। আর আল্লাহর নাজিল করা সেই সত্য ইসলামটিকে প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহ সাহায্য করবেন। ইবলিসের প্ররোচনায় পড়ে মুসলমান জাতি এখন হাজারো ফেরকা মাজহাবে তরিকায় বিভক্ত হয়ে যার যার ইচ্ছামত ইসলাম পালন করছে। সেই পথগুলো ইবলিসের পথ, সেগুলো সেরাতুল মোস্তাকিম নয়। সেগুলো প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যতই সর্বস্ব কোরবান করি না কেন, যতই পাগলপারা হই না কেন সেখানে আল্লাহর কোনো সাহায্য আমরা পাবো না।
কথা হলো, আজকে যারা ইসলামকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ সংগ্রাম করছেন তারা যে ইসলামটিকে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে সেটা আল্লাহ-রসুলের সেই প্রকৃত ইসলাম নয়, সেটা তেরশ বছরের বিকৃতির ফসল। যে ইসলামটি চৌদ্দশ বছর আগে অর্ধেক দুনিয়ার মানুষের মন জয় করে নিয়েছিল, যে ন্যায়বিচার ও সাম্যের পরিচয় পেয়ে লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, অধিকারহারা, দলিত মানুষ দলে দলে বাপ-দাদার ধর্ম ছেড়ে ইসলামকে আলিঙ্গন করে নিয়েছিল, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের বর্বর মানুষগুলো যে পরশপাথরের ছোঁয়ায় রাতারাতি সোনার মানুষের পরিণত হয়েছিল সেই ইসলাম আজ এই সংগঠনগুলোর কাছে নেই। এগুলো হলো ফেকাহ-তাফসির নিয়ে কূটতর্কের ইসলাম, জটিল মাসলা-মাসায়েলের ইসলাম, ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা স্বার্থের প্রয়োজনে শতভাবে বিকৃত ইসলাম।
তৃতীয়ত, আল্লাহ তাঁর রসুলকে সমগ্র পৃথিবীতে সত্য প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে একটি নিখুঁত ও শ্বাশ্বত কর্মসূচি দান করেছেন। শ্বাশ্বত বললাম এই জন্য যে, আল্লাহর রসুল এই কর্মসূচিটি বর্ণনা করার পূর্বেই বলে নিয়েছেন, “আল্লাহ আমাকে পাঁচটি কাজের আদেশ করেছেন। আমিও তোমাদেরকে সেই পাঁচটি কাজের জন্য আদেশ করছি।” তাহলে এই পাঁচটি কাজ কী? সেট হলো- আল্লাহর রসুল বললেন, “(১) তোমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবে, (২) তোমরা সুশৃঙ্খল থাকবে, তোমাদের নেতার আদেশ শুনবে, (৩) তোমাদের নেতার আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে, (৪) সকল শেরক-কুফরকে পরিত্যাগ করবে অর্থাৎ হেজরত করবে, (৫) আল্লাহর রাস্তায় জীবন ও সম্পদ দিয়ে জেহাদ (সংগ্রাম) করবে।
এই কর্মসূচিটির বাইরে ইসলাম নেই। যে যত বড় সংগঠনই করুক না কেন, সংগঠন যতই প্রাচীন হোক না কেন, তাদের জনসমর্থন যত বেশিই হোক না কেন, এই কর্মসূচি হচ্ছে রসুলের কর্মসূচি যা তিনি উম্মাহর উপর অর্পণ করে গেছেন, এই কর্মসূচিকে গ্রহণ না করে, নিজেদের মনগড়া কর্মসূচি বানিয়ে নিয়ে কোনোভাবেই আল্লাহর দৃষ্টিতে মুমিন হওয়া সম্ভব নয়, সাহায্যের উপযুক্ত হওয়াও সম্ভব নয়। এটা আমাদের কথা নয়, স্বয়ং রসুল এই হাদিসটিতে পাঁচটি কাজের তালিকা বলার পর বলছেন, “যারা এই ঐক্যবন্ধনী থেকে আধহাত পরিমাণও বহির্গত হয়ে যাবে তাদের গলদেশ থেকে ইসলামের বন্ধন ছিন্ন হয়ে যাবে। আর যারা জাহেলিয়াতের কোনো কিছুর দিকে আহ্বান করবে (অর্থাৎ ভিন্ন কর্মসূচির দিকে বা ভিন্ন মতবাদের দিকে) তারা জাহান্নামের জ্বালানি পাথর হবে, যদিও তারা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে এমন কি নিজেদেরকে মুসলিম বলে বিশ্বাসও করে (হাদিস- হারিস আল আশয়ারি (রা.) থেকে আহমদ, তিরমিজি, বাব-উল-ইমারত, ইবনে মাজাহ)।
যে কর্মসূচি আল্লাহ দেন নি সেই কর্মসূচির অনুসারীদের প্রতি আল্লাহ বিজয় প্রদান করতে, সাহায্য প্রদান করতে দায়বদ্ধ নন, তিনি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে দায়বদ্ধ তাঁর প্রদত্ত কর্মসূচির অনুসারীদের প্রতি। আমাদের ভুললে চলবে না, রসুলাল্লাহর জীবনের সবচেয়ে তাৎপর্যবাহী দিন হচ্ছে মক্কাবিজয়ের দিন। সেই মহাবিজয়ের দিনে তিনি তাঁর সাহাবিদের উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন সেখানে তিনি বলেছিলেন, “এই যে বিজয় তোমরা দেখছ, এটা আল্লাহ একা করেছেন। আল্লাহ একা করেছেন।” সেই বিজয়ের পেছনে রসুলাল্লাহর কত রক্ত গেছে, কত সাহাবীদের শহীদ হতে হয়েছে, কী পরিমাণ নির্যাতন নিপীড়ন তাঁরা সয়ে তিলে তিলে এই বিজয়ের দিনটি নির্মাণ করেছে সবই আমরা জানি। কিন্তু রসুলাল্লাহ তাঁর ও তাঁর সাহাবিদের কোনো ত্যাগের কথা, কোনো অবদানের কথাই স্বীকার করলেন না, বললেন “আল্লাহ একা করেছেন।” হ্যাঁ। এটাই সত্য। আল্লাহ যদি তাঁকে এই সংগ্রামে সাহায্য না করতেন, তাহলে উম্মাহর এই বিজয় স্বপ্নই থেকে যেত। কারণ নব্যুয়তের প্রথম দিন থেকে শুরু করে ঐ দিন পর্যন্ত এমন বহু ঘটনা ঘটেছে যেখানে গোটা জাতিই ধ্বংসের উপক্রম হয়েছিল। হিজরতে আল্লাহর সাহায্য, বদরে আল্লাহর সাহায্য, আহযাবের দিন আল্লাহর সাহায্য, হোদায়বিয়ার সন্ধিতে আল্লাহর সাহায্য যদি না থাকতো তাহলে উম্মাহ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। কাজেই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো ইসলামি আন্দোলন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তাদের পাহাড়প্রমাণ ত্যাগ থাকলেও পারবে না।
তবে হ্যাঁ, কোনো কারণে কোনো ভূখণ্ডে যদি রাজনৈতিক, যুদ্ধাবস্থা বা আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এমন পরিস্থিতি হয় যে কোনো একটি ইসলামি দল বা জোট ক্ষমতায় যেতে পারল (যেমনটা আফগানে হয়েছিল, ইরাক সিরিয়ার কিছু অংশে হয়েছিল, তিউনেশিয়া, মিশরে হয়েছিল) কিন্তু সেই ক্ষমতা তারা টিকতে পারবে না। কারণ বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করছে এখন দাজ্জাল অর্থাৎ পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী সভ্যতা যার অন্যতম লক্ষ্যই হলো ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। তারা ইসলামি দল বা জোটকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না, নির্বাচনে জিতে আসলেও দেবে না, সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলেও দেবে না। এই দলগুলো যে কয়দিন ক্ষমতার চর্চা করতে পেরেছে, তাদের হাতে থাকা শরিয়তের শাসন কায়েম করেছে ততদিন কি মানুষ ইসলামের শান্তি লাভ করেছে? ইসলামি দলগুলোয় যোগ দেওয়ার জন্য ঐ সব এলাকার নর-নারীদের মধ্যে বাধভাঙা জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে? না। বরং উল্টো হয়েছে। মানুষ তাদের আরোপ করা ‘ইসলাম’কে প্রত্যাখ্যান করেছে। নিরাপত্তা ও শান্তির পরিবর্তে তারা ভীত ও আতঙ্কিত হয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিম তো বটেই মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যেও একটি বিরাট অংশ বিদ্বেষপ্রবণ হয়ে উঠেছে যার পেছনে কেবল পাশ্চাত্যের প্রোপাগান্ডাই একচেটিয়াভাবে দায়ী নয়, এর দায় ঐ ইসলামী দলগুলোর ধর্মান্ধতা, শরিয়তের বাড়াবাড়ি, জবরদস্তি, ফতোয়াবাজি, শিল্প-সংস্কৃতির বিরুদ্ধবাদিতা, নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, বিধর্মী ও ভিন্নমতের সঙ্গে বর্বর নৃশংসতার প্রদর্শনী ইত্যাদিও সমধিক দায়ী।
অথচ হওয়া উচিত ছিল সম্পূর্ণ উল্টোটা অর্থাৎ মানুষ দলে দলে সত্যকে আলিঙ্গন করে নেবে এবং তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্ববাসীর সামনে ইসলামের সৌন্দর্যকে পুষ্পিত করে তুলবে। সেটা হয় নি কারণ ১৪ শ’ বছর আগের সেই ইসলাম তাদের কাছে নেই। তাই তারা পুরো পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষকে হত্যা করেও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তাদের কোরবানি যতই বৃহৎ হোক, নিয়ত যতই সহীহ হোক, নিজেদেরকে তারা যতই শহীদ মনে করুক।
আমাদের এই কথা যদি তাদের বিশ্বাস না হয় তাহলে তারা কয়েক শত বছর ধরে যেমন চেষ্টা করে যাচ্ছেন তেমনিভাবে আরো হাজার বছর সবাই মিলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন, কিন্তু কোনো লাভ হবে না। কারণ তারা যে ইসলামটিকে প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করছেন সেটাও আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলাম নয়, এমন কি তাদের অনুসৃত কর্মসূচিও আল্লাহর দেওয়া কর্মসূচি নয়। এই কারণে আল্লাহর সাহায্য তাদের সঙ্গে নেই। এখন আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে হলে তাদেরকে মোমেন হতে হবে, ইসলামের প্রকৃত আকিদাকে ধারণ করতে হবে এবং আল্লাহর দেওয়া যে কর্মসূচি রসুলাল্লাহ নিজে অনুসরণ করে গেছেন এবং তাঁর নিজ হাতে গড়া উম্মাহকে দান করে গেছেন সেই কর্মসূচির মাধ্যমে সংগ্রাম পরিচালিত করতে হবে, নিজেদের জীবন ও সম্পদ সেই সঠিক পথে ব্যয় করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Ajimul Haque posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Ajimul Haque:

Videos

Share


Other Digital creator in Dhaka

Show All

You may also like