03/12/2020
১৮ বছর বয়সের যুবক স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলা ভাষাকে সারা পৃথিবীর কাছে খুব সহজে পৌঁছে দেওয়ার। কম্পিউটারে বাংলা লিখতে তাঁর খুব অসুবিধা হয়, এবং সেই পদ্ধতি মেহেদীর পছন্দ নয়। তাই তিনি চান এমন একটা সফটওয়্যার, যার সাহায্যে ইংরেজি অক্ষরে টাইপ করেই বাংলা লেখা সম্ভব।
বন্ধুরা মেহেদীকে বলে পাগল, ডাক্তারি পড়তে এসে কেউ সময় নষ্ট করে! তাও আবার নাকি বাংলা লেখার সুবিধার্থে! হাল ছাড়েননি মেহেদী।
২৬ মার্চ,২০০৩ সাল, মেহেদীর জীবনে শুধু নয়, লক্ষ লক্ষ বাঙালির একটি বিশেষ দিন। সেই দিন মেহেদী বিশ্বের সামনে আনলেন ‘অভ্র’ সফটওয়ার। যা আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের সব চেয়ে পছন্দের বাংলা রাইটিং সফটওয়ার।বাঙালির কম্পিউটার, ল্যাপটপ খুললেই স্ক্রিনে একটি স্লোগান ভেসে ওঠে ,‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’। এটিই ডাক্তার মেহেদী হাসান খানের তৈরি করা স্লোগান। তাঁর স্বপ্ন ছিল, ভাষাকে উন্মুক্ত করতে হবে সবার জন্য, বেঁধে রাখা যাবে না জটিলতার নাগপাশে।
আজ কিন্তু তিনি ডাঃ মেহেদী হাসান খান। হাজার তাচ্ছিল্য সত্ত্বেও তিনি ‘অভ্র’ আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেছেন ডাক্তারিও। আজ ভারত ও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি দপ্তরেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘অভ্র কিপ্যাড’। মেহেদীর এই আবিষ্কার বাঁচিয়ে দিয়েছে দুই দেশের কোটি-কোটি টাকা। যার জন্য এত কিছু, সেই মানুষটাকে আমরা চিনিই না। চিরকাল প্রচারবিমুখ, ৩৪ বছরের এই বিনয়ী তরুণ বাংলা ভাষার জন্য এত বড় অবদান রেখে গেলেও, রয়ে গেলেন প্রচারের আলোর বাইরেই।
©সাদা এপ্রোন