15/12/2022
ঢাকার কাছাকাছি জনপ্রিয় রিসোর্ট
পদ্মা রিসোর্ট
ঢাকা থেকে ৪০ কি.মি. দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং নামক স্থানে পদ্মা নদীতে চড়ের উপর এই রিসোর্টটি অবস্থিত। পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত বলেও জায়গাটি অতি মনোরম আর সুন্দর। বর্ষা ঋতুর সময় গেলে আপনার বেশি ভালো লাগবে।
পদ্মা নদীর টাটকা ইলিশের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে চাইলে যেতে পারেন পদ্মা রিসোর্টে। এছাড়া আরও রয়েছে টাটকা শাকসবজি, গরু, মুরগি ও হাসের মাংস। এছাড়া মৌসুমি ফলমূল তো রয়েছেই। সকালের নাস্তার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ১০০ টাকা এবং দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ৩০০ টাকার মতো।
পর্যটকগণ ইচ্ছা করলে অর্ধেক বেলা অথবা পুরো ২৪ ঘন্টার জন্য কটেজ ভাড়া নিতে পারেন।সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ভাড়া ২,০০০ টাকা।সকাল ১০ টা থেকে পরের দিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভাড়া ৩,০০০ টাকা।
কিভাবে পদ্মা রিসোর্ট যাওয়া যায় ?
পদ্মারিসোর্ট যেতে হলে সবার প্রথমে আপনাকে মাওয়া ঘাটে আসতে হবে। মাওয়া ফেরিঘাট থেকে রিসোর্টে যাওয়ার জন্য রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোট রয়েছে।
জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট
অসাধারণ সুন্দর জায়গা পূবাইলের জল জঙ্গলের কাব্য। এটি একটি প্রাকৃতিক রিসোর্ট এর নাম। রিসোর্টটি পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। তবে রিসোর্টে আধুনিক কিছু নাই। পাইলট ভদ্রলোক খুব বেশি পরিবর্তন করতে চায়নি গ্রামটিকে। প্রকৃতিকে খুব বেশি পরিবর্তন না করে বিশাল এক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে রিসোর্ট। বিশাল একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। খুবই অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
সারাদিনের জন্য জনপ্রতি ১৫০০ টাকা (সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে স্ন্যাক্স)। এক দিন এবং একরাতের জন্য ৩০০০ টাকা জন প্রতি। শিশু, কাজের লোক ও ড্রাইভারদের জন্য ৬০০ টাকা জন প্রতি। নাস্তায় চিতই পিঠা, গুড়, লুচি, মাংস, ভাজি, মুড়ি এবং চা। দুপুরের খাবার হিসেবে ১০/১২ রকম দেশী আইটেম। মোটা চালের ভাত, পোলাও, মুরগির ঝোল, ছোট মাছ আর টক দিয়ে কচুমুখির ঝোল, দেশী রুই মাছ, ডাল, সবজি এবং কয়েক রকমের সুস্বাদু ভর্তা। খাবারের আয়োজনে কোন কমতি রাখে না এখানকার কর্তৃপক্ষ।
কিভাবে জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্টে যাওয়া যায়?
বাইক নিয়ে সবার প্রথমে আপনাকে পূবাইল কলেজ গেট যেতে হবে। সেখান থেকে প্রায় তিন মাইল গেলেই আপনি পেয়ে যাবেন পাইলট বাড়ি বা জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট।
যমুনা রিসোর্ট
যমুনা রিসোর্ট টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার মাঝে যমুনা সেতুর কাছেই অবস্থিত । পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছাড়াও ভিতরে রয়েছে সুইমিং পুল, খেলাধুলার ব্যবস্থা, জিম ও অন্যান্য সুবিধা রয়েছে । কিন্তু খরচ পড়বে জনপ্রতি ৪০০০ টাকা করে ।
ছুটি রিসোর্ট
গাজীপুর জেলাতে যে কয়টি রিসোর্ট রয়েছে ছুটি রিসোর্ট তার মধ্যে জনপ্রিয়। ঢাকার আশে পাশের রিসোর্ট গুলির মধ্যে অন্যতম এ রিসোর্ট। এই রিসোর্টটি প্রায় ৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে। এটি রিসোর্ট এবং পিকনিক কর্নার দুটি অংশে বিভক্ত। রিসোর্টের গা ঘেঁষে গভীর জঙ্গল। ভেতরে দুটো বড় মাঠ, অসংখ্য গাছ, ঝোপঝাড়। এর চারপাশ ঘিরে আছে একটি বিশাল দিঘি। তাতে লাল পদ্ম ফুটে থাকে। দিঘীতে ভ্রমণের জন্য আছে নৌকার ব্যবস্থা।
কিভাবে ছুটি রিসোর্ট যাওয়া যায়?
ঢাকা থেকে আপনাকে যেতে হবে গাজীপুর, গাজীপুর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে আমতলী বাজার। আমতলী বাজারের পাশেই ছুটি রিসোর্ট ও পিকনিক কর্নার অবস্থিত।
ভাওয়াল রিসোর্ট
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজীপুরের বরৈপাড়ার মির্জাপুর ইউনিয়নের নলজানী গ্রামে সুবিশাল ৩৫ একর জমির উপর নান্দনিক এই রিসোর্টটি অবস্থিত। ভাওয়াল রিসোর্ট এর প্রধান আকর্ষণ বললে প্রথমেই যার কথা আসবে সেটি এর সুবিশাল সুইমিং পুল! পুরো রিসোর্টটির মাঝ দিয়ে এত সুন্দর ভাবে তৈরী করা হয়েছে এই সুইমিং পুল যেখানে সারাদিন কাটিয়ে দেয়া যাবে।
সুইমিং পুল ছাড়া অন্য আকর্ষণ বলতে রয়েছে সাইক্লিং, লন টেনিস, ব্যাডমিন্টন, বিলিয়ার্ড, জিমনেশিয়াম, স্পা এবং বারবিকিউ জোন। ছবি তোলার জন্য এই রিসোর্ট এক কথায় অসাধারণ। এই রিসোর্টে মোট ৬১ টি ভিলা রয়েছে।
নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজবাড়ি এলকায় শিল্পীদম্পতি তৌকির-বিপাশা গড়ে তুলেছেন নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট। প্রায় ২৫ বিঘার জায়গাজুড়ে তৈরি এই রিসোর্ট। দিঘি, কৃত্রিম ঝরনা, সভাকক্ষ, সুইমিংপুলসহ নানান সুবিধা রয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছেও এটি অতি জনপ্রিয় নাম। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, পুকুরের পানির ওপর কাঠ-বাঁশের সমন্বয়ে নির্মিত ১১টি কটেজ।
পুকুরের পশ্চিম পাশের পানির ওপর গজারী গাছ দিয়ে নির্মিত এসব কটেজ। কটেজ গুলোর ওপর রয়েছে ছনের ছাউনি। পুকুরের পূর্ব পাশে ব্রিটিশ আমলের দরজা-জানালা সংবলিত একটি ঘর রয়েছে। রয়েছে সুইমিং পুল ও একটি বিল্ডিং কটেজ। দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৫০০ টাকা।
স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্ট গাজীপুর
রাজধানী ঢাকার খুব কাছে গাজীপুরের সালনায় গড়ে তোলা হয়েছে স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্ট। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে আনন্দঘন সময় কাটিয়ে আসতে পারেন যে কোনো দিন। যেতে পারেন বন্ধুবান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে পিকনিকে। নিজে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না এটা একটা রিসোর্ট নাকি স্বর্গভূমি। গ্রামীণ সৌন্দর্যের ১২ বিঘা জমির উপর এই রিসোর্টটি পরিচালনা করছে ট্রিপসিলো। এই রিসোর্টে রয়েছে বিশাল এক সুইমিংপুল।
স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্টের খরচ
জনপ্রতি ১৫০০ টাকায় উপভোগ করতে পারেন স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্টের সারাদিনের প্যাকেজ। যাতে থাকছে খাওয়া-দাওয়া, সুইমিংপুল, নৌকা ভ্রমন সহ আরও অনেক কিছু। যা অন্যান্য রিসোর্টের তুলুনায় খরচ বেশ কম। ছুটির দিনগুলোতে আগে থেকে বুকিং দিয়ে যাওয়াই ভালো। বুকিং এর জন্য সরাসরি যোগাযোগ নাম্বারঃ ০১৭৩৪৯৮৫৫৫৪ , ০১৮৭৩-১১১-৯৯৯, ০১৬৮৯-৭৭৭-৪৪।
নুহাশ পল্লী
এখানে আছে বৃষ্টি বিলাস, ভুত বিলাস নামের বাড়ি, ট্রি হাউজ, বিভিন্ন ভাস্কর্য্য, প্রায় ৩০০ প্রজাতির বিভিন্ন গাছের বাগান। আর নুহাশ পল্লীর লিচু তলায় হুমায়ূন আহমেদ এর সমাধিস্থল।
কিভাবে নুহাশ পল্লী যাওয়া যায়?
নুহাশ পল্লী যেতে আপনাকে যেতে হবে গাজীপুর জেলা সদর। সেখান থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত এই নুহাশ পল্লী।
ড্রিম হলিডেপার্ক
নরসিংদী জেলার পাঁচদোনার চৈতাবাতে প্রায় ৬০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে ড্রিম হলিডে পার্ক। পার্কটিতে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় রাইড ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়্যারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ এবং কৃত্রিম পর্বত যা এখানে আগত দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এছাড়াও এই পার্কে রয়েছে ওয়াটার পুল যেখানে কান পাতলে সমুদ্রের গর্জন অনুভব করা যায়।
কিভাবে ড্রিম হলিডে পার্ক যাওয়া যায়?
ঢাকা থেকে সিলেট মহাসড়ক ধরে এগিয়ে গেলে আপনি ড্রিম হলিডে পার্কে যেতে পারবেন।
রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট
গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বিপরীত দিকের বড় সড়ক থেকে ডানের গলিপথ ধরে সবুজের অরণ্যে হারিয়ে যাবেন আপনি। ভবানীপুর বাজার পেরিয়ে চিকন রাস্তা ধরে আরও কিছুটা দূরে এই রিসোর্ট। পথের দুই পাশে ঘন শালবন। যতদূর চোখ যায়, শুধুই গাছ আর গাছ। পুকুরপাড়ের গাছে মাছরাঙা পাখি শিকারের আশায় বসে। পুকুরের তীর ঘেঁষে বকের হাঁটাহাঁটি। অনেক রকম পাখি দেখে মনে হতে পারে, হয়তো কোনো গহীন জঙ্গলে এসে পড়েছেন। সত্যিই গহীন অরণ্য। রাস্তার দুই পাশে দূরের শালবন ছাড়াও খেজুরগাছ, বটগাছ। রাস্তার পাশে আদিবাসীদের কিছু বাড়িঘর। যাওয়ার আগে ফোনে যোগাযোগ করে যেতে পারেন।
ফোনঃ ০১৯১৯৩১৮০০৯, ০৯৬৮৯১১১৯৯৯
রিভার প্যালেস
ময়মনসিংহ শহর পার হয়ে মুক্তাকাছার দিকে এই অসাধারণ রিসোর্টটি অবস্থিত। মুক্তাকাছার দিক থেকে আরও তিন মাইল সামনে গেলে হাতের ডানে ব্রহ্মপুত্র নদী তীরে গড়ে উঠেছে রিভার প্যালেস নামে এই রিসোর্ট। মূলত এটি একটি ডাকবাংলোর মতো। রিসোর্টটি চমৎকারভাবে সাজানো গুছানো। এর বারান্দায় বসে নদী দেখেই পুরো একটি বিকেল কাটিয়ে দেয়া যায়। চাইলে বসতে পারেন রিসোর্টের পেছনের নদী তীরে।
কিভাবে রিভার প্যালেস যাওয়া যায়?
ঢাকা থেকে নিজের সুবিধা মতো বাসে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাবেন। তারপর বাস ষ্ট্যান্ড থেকে কাচিঝুলি পর্যন্ত যাবেন। এরপর মুক্তাকাছা উপজেলা হতে রিসোর্ট পর্যন্ত চলে যাবেন। রিসোর্ট ভাড়া ১০০০, ১৫০০ এবং ২০০০ টাকা। চাইলে আপনি খাওয়া দাওয়া রিভার প্যালেসেই সেরে নিতে পারেন।
ম্যাজিক পারাডাইস
বিখ্যাত ওয়াল্ট ডিজনির আদলে তৈরি করা হয়েছে এই ড্রিম হলিডে পার্কটি। প্রথম দেখাতে মনে হবে বাংলাদেশের বাইরে কোথাও চলে এসেছেন। ছুটির দিনে বাচ্চাদের নিয়ে একদিনের ভ্রমন করার আদর্শ জায়গা হতে পারে এটি। ৬০ একর জমির মধ্যে ওয়াটার বাম্পার কার, রাইডার ট্রেন, বাইসাইকেল,রকিং হর্স, স্পীডবোর্ড, সোয়ানবোট ,নাগেট ক্যাসেল, এয়ার বাইসাইকেল কৃত্রিম পর্বত, সমুদ্রের কৃত্রিম ঢেউ ইত্যাদি রয়েছে।
প্রবেশের সময়ঃ সকাল ১০-সন্ধ্যা ৭ টা।
প্রবেশ মূল্যঃ প্রাপ্তবয়স্ক ৩০০, ছোটোদের ২০০ (প্যাকেজ নিলে কাপল ২৫০০,ফ্যামিলি ৪৫০০)।
আপন ভুবন রিসোর্ট
ঢাকার পাশেই গাজীপুর জেলার পুবাইল কলেজ গেটে অবস্থিত তেমনি একটি বেসরকারি বিনোদন পর্যটন কেন্দ্র আপন ভুবন রিসোর্ট। টঙ্গী থেকে এর দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। পরিবারের সবাইকে নিয়ে কিংবা অফিস বা সংগঠনের দিনব্যাপী পিকনিক বা বনভোজনে এখানে আসা যেতে পারে খুব সহজে। এই রিসোর্টের অন্যতম আকর্ষণ হলো জলাশয়ের ওপর নির্মিত অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত ঝুলন্ত সাঁকো আর এর পিলার ও বেলকনিতে খোঁদাই করা বিভিন্ন কারুকাজ- যা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। বিশাল এক জলাশয়ের মাঝখানে ঝুলন্ত সাঁকো থাকায় দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে বেশি।বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সবুজের সমারোহ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
যোগাযোগ : ০১৭৩৬৮৯৬৬৬১, ০১৬৩২৫৫৫৩৩৩, ০১৬৩৬৯৯৯৩৩৩
যারা মনে করেন ট্যুর মানেই সময়ের ব্যাপার, তারা একদিনের মধ্যে এই জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। আশাকরি আপনার যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি কিছুটা হলেও দূর হবে।