20/08/2023
আমার স্বামী ইটালি প্রবাসী। সন্তান প্র'সবের দিন সে আমাকে ফোন করে সন্তানের ব্যাপারে কোনো কিছু জানতে না চেয়ে বললো,"তোমার সঙ্গে সংসার করার ইচ্ছে আমার নেই। খুব শীঘ্রই ডি'ভোর্স লেটার পেয়ে যাবে। বিয়ের আগে এক মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো। আমি তাকে বিয়ে করবো।"
আমার পুরো পৃথিবী দুলে উঠলো।
কোনো রকমে বললাম,"অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক থাকলে আমাকে বিয়ে করেছো কেনো? আর তুমি যে বিয়ে করেছো এটা কি ঐ মেয়েটা জানে?"
সে প্রশ্ন দুটোর উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দিলো। তারপর থেকে সে আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে নি। সদ্য জন্ম নেয়া মেয়েকে নিয়ে আমি এখন কী করবো?
শ্বশুর শাশুড়িকে যখন স্বামীর কথাগুলো বললাম, তারা শুনে স্ত'ব্ধ হয়ে গেলেন। তারাও অনেক চেষ্টা করেছিলেন ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে। কিন্তু পারেন নি।
বাবা এসে আমাকে বাড়ি নিয়ে গেলেন। যাওয়ার আগে শাশুড়ি মা আমাকে বললেন,"বউমা, আমরা তোমার সাথে আছি। যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের তুমি সঙ্গে পাবে।"
বাবার বাড়িতে আসার কিছুদিন পরই আমার নামে ডি'ভোর্স লেটার এলো। তখন ভাবলাম, আমি কি এই অন্যায় মেনে নেবো, নাকি শয়'তানটার বিরুদ্ধে ল'ড়াই করবো? বহু ভেবে ল'ড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
ডি'ভোর্স লেটারটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে স্বামীর উদ্দেশ্যে বললাম,"তোকে আমি অবশ্যই তা'লাক দেবো। তবে এখন নয়, উপযুক্ত সময়ে।"
ডি'ভোর্স লেটারের আইনি জটিলতা এড়ানোর জন্য এবং একতরফা অন্যায় তা'লাক ঠেকানোর জন্য স্থানীয় মেয়রের সাথে যোগাযোগ করলাম। তাকে সব কিছু খুলে বললে তিনি আমাকে আস্বস্ত করলেন যে, এ বিষয়ে তিনি সাহায্য করবেন।
এরপর খোঁজ নিতে লাগলাম কোন মেয়ের সাথে ওর সম্পর্ক ছিলো। এবং কবে সে বিয়ে করতে যাচ্ছে। এই তথ্যগুলো জানার ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করেছিলো স্বামীর এক বন্ধু।
বন্ধুটি বললো,"ভাবী, আপনার সাথে ও অবি'চার করেছে। এখন আরেকটা মেয়েকে ফাঁ'দে ফেলতে যাচ্ছে। ওকে আটকানো দরকার। আর সেজন্যই আপনাকে সাহায্য করলাম।"
মেয়ের বাড়ির ঠিকানা এবং বিয়ের তারিখ আমার বাবা মা এবং শ্বশুর শাশুড়িকে জানালাম। এরপর পুলিশ স্টেশনে স্বামীর বিরুদ্ধে মা'মলা করলাম। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা এবং ভরণপোষণ না দেয়ার মা'মলা।
এরই মধ্যে সে গোপনে দেশে এসে বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছিলো। আমার সাথে বা তার পরিবারের কারো সাথেই যোগাযোগ করেনি।
তারপর বিয়ের দিন মেয়েকে কোলে নিয়ে পুলিশসহ সবাইকে নিয়ে হাজির হলাম ওর বিয়ের অনুষ্ঠানে। কনের বাড়িতে ঘরোয়া ভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো।
নতুন পাঞ্জাবি পরে স্বামী বিছানার ওপর বসেছিলো। মুখে ছিলো লাজুক হাসি। কিন্তু মানুষজন নিয়ে আমাকে রুমে ঢুকতে দেখে তার লাজুক হাসি অদৃশ্য হয়ে গেলো। হাসির বদলে চোখে মুখে দেখা দিলো আ'ত'ঙ্ক।
বিছানার পাশে ছোটো একটা টুলের ওপর ডালায় ফুল সাজিয়ে রাখা হয়েছিলো। আমি রুমে ঢুকে মাত্র ঐ টুলে সজোরে লা'থি মার'লাম। তারপর ওকে চড় মা'রার জন্য তেড়ে গেলাম। কিন্তু বাবা আমাকে ধরে ফেললেন।
শাশুড়ি মা তখন বললেন,"বেয়াই সাহেব, মেয়েকে ছেড়ে দিন। ব'দ'মা'শটাকে ক'ষে একটা চড় দিক।"
বাবা আমাকে ছেড়ে দিলেন। আমি তখন , রাগে, ক্ষো'ভে, কষ্টে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ওর গালে একটা চড় মার'লাম।
আমার পরিচয় ততোক্ষণে সবাই জেনে গেছে।
কনের বাবা তখন আমাকে বললেন,"ছেলে যে আগে বিয়ে করেছে এটা সে আমাদের বলে নি। সে দেখছি বিরাট ধোঁ'কা'বাজ।"
এই সময় কনে ভেতরের রুম থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে বললো,"আপু, ও আপনার সাথে যে অন্যায় করেছে তা ভ'য়াব'হ। এমন ছেলেকে বিয়ে করার প্রশ্নই আসে না। আমারো ইচ্ছে করছে ব'দমা'শটার গালে একটা চড় মা'রতে।"
সবার সামনে ব'দমা'শটা লা'ঞ্ছি'ত হলো।
ওকে জে'লে ঢুকিয়ে তারপর তা'লাক দিলাম।
পুরো দেনমোহরের টাকা শ্বশুর আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এবং আমার মেয়ের যাবতীয় খরচের দায়িত্ব তিনি নিলেন।
মেয়ে আমার কাছে অর্থাৎ নানা বাড়িতে বড় হতে লাগলো। তবে দাদার বাড়িতে সে নিয়মিত যায়। দাদা দাদী নাতনিকে অনেক ভালোবাসেন।
মেয়ে দক্ষতার সাথে বেড়ে উঠতে লাগলো। বেড়ে ওঠা মেয়ের দিকে তাকিয়ে প্রতিদিন মনে মনে বলি,"মাগো, তোকে এমন ভাবে গড়ে তুলবো, যাতে কোনো ছেলে তোকে ধোঁ'কা দেয়ার বিন্দুমাত্র সাহস না পায়। কথা দিলাম।