23/06/2022
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস পূর্বাঞ্চলের সর্বপ্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান *মিরাসানী-পলিটেকনিক-একাডেমী*। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ বিদ্যালয়টি বিজয়নগর উপজেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শত ঘাত প্রতিঘাত পাড়ি দিয়ে ক্রমান্বয়ে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিজ্ঞান চর্চা ও কো কারিকুলাম কার্যক্রমসহ বিভিন্ন মানদণ্ডে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
তবে সম্প্রতী, গুটিকয়েক হিংসুক ব্যক্তি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠান এবং এর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যাচার করে আসছে। তার অংশ হিসেবে গত ১৯শে জুন'২২ সময়কাল প্রেস (somoykal press) নামক এক অনলাইন পোর্টালে মিরাসানী পলিটেকনিক একাডেমী এবং এর প্রধান শিক্ষককে নিয়ে একটি নিউজ প্রকাশ করা হয়। যেখানে স্কুল এবং প্রধান শিক্ষককে নিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দের পক্ষ থেকে ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিজি বরাবর অভিযোগ পত্র প্রেরণের কথা বলা হয়। উক্ত অভিযোগপত্রে, প্রধান শিক্ষকের কারণে স্কুলের মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। যদিও এ সকল অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
বর্তমান প্রধান শিক্ষক জনাব মো. গোলাম মোস্তফা ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ২০১২ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। উনার দায়িত্ব পালন থেকে আজ পর্যন্ত স্কুলের বিভিন্ন পরিসংখ্যান দেখলেই বুঝা যায় সেই অভিযোগটি মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিগত ১২ বছরে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ও অর্জনের কিছু অংশবিশেষ পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যায়, অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মান ও সাফল্য বৃদ্ধি পেয়েছে গাণিতিক হারে। এসকল সাফল্য ও অর্জনগুলো হল:
- ২০১২ সালে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ।
- ২০১৪ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় পর্যায়ের 'বিজ্ঞান মেলার ভেন্যু' মেলার ভেন্যু' হিসেবে মনোনীত হওয়া।সারা দেশে মাত্র ৫০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ মর্যাদায় উপনীত হয়েছিল।
- ২০১৬ সালে এ প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কার্যক্রম মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক 'শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের' স্বীকৃতি লাভ করেন এই প্রতিষ্ঠান তৎকালীন এবং বর্তমান প্রধান শিক্ষক জনাব মো. গোলাম মোস্তফা। এবং সম্মাননার অংশ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে থাইল্যান্ড সফরের সুযোগ পান তিনি। উল্লেখ্য, উক্ত সফরে সারাদেশ থেকে মাত্র ২৫ জন সম্মানিত ব্যক্তি সুযোগ পেয়েছিল, তাদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক ছিলেন মাত্র ২ জন।
- ২০১৭ সালে উপজেলা পর্যায়ে 'শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান' হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এই প্রতিষ্ঠান।
- ২০১৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাছাইয়ে সহকারী শিক্ষক ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পান এ প্রতিষ্ঠান শিক্ষিকা জনাবা মনিরা আক্তার এবং সম্মাননার অংশ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ফিলিপাইন সফরের সুযোগ পান তিনি।
- ২০১৯ সালে উপজেলা পর্যায়ে 'বিজ্ঞান মেলায় চ্যাম্পিয়ন' মেলায় চ্যাম্পিয়ন' হয় এই প্রতিষ্ঠান।
- ২০২১ সালে আবারো উপজেলা পর্যায়ে 'বিজ্ঞান মেলায় চ্যাম্পিয়ন মেলায় চ্যাম্পিয়ন' হয় এর প্রতিষ্ঠান।
- শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন খেলাধুলার উপজেলা পর্যায়ের ভেন্যু এবং আয়োজক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এই প্রতিষ্ঠান।
- ২০২২ সালে জেলা পর্যায়ে 'বঙ্গবন্ধু আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন' এবং 'ক্রিকেট টুর্নামেন্টে রানার্সআপ' টুর্নামেন্টে রানার্সআপ' হয় এ প্রতিষ্ঠান।
- ২০২২ সালের ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে জেলা পর্যায়ে প্রথম এবং ডিসকাস এ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ ২০২১ সালে আয়োজিত এসএসসি পরীক্ষায় এ প্রতিষ্ঠান হতে ২২২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। যাদের মধ্যে থেকে ২০৯ জন অর্থাৎ ৯৪.১% শিক্ষার্থী সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়। এদের মধ্যে ১০ জন ছিল জিপিএ 5 প্রাপ্ত।
এভাবেই এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায়; শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ভাল ফলাফল, বিজ্ঞান চর্চায় ও ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। ফলে দেখা যায় বিগত যেকোনো সময়ের তুলনায় গত কয়েক বছরে জাতীয় পর্যায়ের মেডিকেল কলেজ এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষার্থী মেধার স্বাক্ষর রেখে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। যা এ প্রতিষ্ঠানের সম্মানকে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করছে।
এ প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত দিক খেয়াল করলে দেখা যায়, এখানে পৃথক ৪ টি ভবনে মোট ৩৬ টি ক্লাসরুম রয়েছে। যা শুধু অত্র উপজেলাতে নয় বরং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে অন্য কোন বিদ্যালয় নেই। এ প্রতিষ্ঠান রয়েছে আলাদা ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্ণার এবং মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। এছাড়াও করোনা কালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে হাত ধোয়ার জন্য বসানো হয়েছে ৮টি পানির ট্যাপ। আর অবকাঠামোগত এ সকল উন্নয়নের অধিকাংশই হয়েছে বিগত ১০ বছরের মাঝে।
সামগ্রিক দিক বিবেচনায় মিরাশানি পলিটেকনিক একাডেমীকে শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ডে পৌঁছাতে ভূমিকা রেখেছেন এই স্কুলের শিক্ষকমন্ডলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ, স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
তবে সামগ্রিক কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন এ প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জনাব মো. গোলাম মোস্তফা। ওনার এই ভূমিকা রাখা টা অস্বাভাবিক কোনো কিছু নয় এটি দায়িত্বের অংশ। তবে এত বিশাল একটি প্রতিষ্ঠান সাফল্যের সাথে পরিচালনা করাটা নেহায়েৎ ছোট কোন ব্যাপার নয়। নিঃসন্দেহে এটি বিদ্যালয়কে নিয়ে উনার সুচিন্তিত দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার কারণে সম্ভব হয়েছে। উনার সময়কালীন প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের জন্য বিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর নিকট তিনি অধিক জনপ্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি।
তবে, উনার এই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা কতিপয় হিংসুক ব্যক্তিদের সহ্য হচ্ছে না।
মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে ওনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, ক্ষুণ করার চেষ্টা করছে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মান মর্যাদা। তবে, মজার ব্যাপার হল কিভাবে একজন মানুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হয় সে বিষয়টিও তারা বুঝে না। তাদের সকল কার্যক্রম যে মিথ্যাচার তা সহজেই প্রমাণ মিলে তাদের ব্যর্থ চেষ্টা-প্রচেষ্টা দেখেই।
প্রথমত: তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিজি বরাবর অভিযোগ প্রেরণ করেছে তাও আবার ডাকযোগে। এখন কথা হল, যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে হয় তবে প্রথমেই করতে হবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে। যদি কোন সমাধান না পাওয়া যায় তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে। তারপরও কোন সমাধান না পেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে। তারপরও না পেলে ডিস্ট্রিক্ট ইনচার্জ এর কাছে। তারপর না পেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিজির কাছে।
এখন প্রশ্ন হলো, এত স্তর বাদ দিয়ে কেন ডিজি বরাবর দিতে হলো তাও আবার ডাকযোগে?
স্কুল কমিটির সভাপতি বাড়ি স্কুল থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরত্বে অবস্থিত। অভিযোগকারীরা কি ওনার হাতে সরাসরি অভিযোগ পত্র দিতে পারত না?
উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অফিস করেন। অভিযোগকারীরা কেন তাদের নিকট হাতে হাতে অভিযোগ দিলেন না?
দ্বিতীয়তঃ কোন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হতে হলে অভিযোগকারীদের নাম-পরিচয় স্বাক্ষর থাকা বাঞ্ছনীয়। অর্থাৎ যে সকল শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ অভিযোগ করছেন তাদের নাম পরিচয়ের তালিকা অভিযোগপত্রের সাথে জমা দিতে হবে। কিন্তু আজগুবি এই অভিযোগপত্রে একটি নাম ও পরিচয় লেখা হয়নি। তাহলে কি অভিযোগকারীরা নাম পরিচয়হীন কোন পিতা-মাতার সন্তান?
তৃতীয়তঃ অভিযোগকারীরা এতটাই গর্ধব প্রকৃতির মাথা মোটা লোক যে, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঠিক নামটি ভালোভাবে জানে না। অভিযোগের নিচে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামটি লিখতে গিয়েও ভুল করেছে। আবার অনেক মানুষের পক্ষে থেকে যখন কোন কিছু জমা দেওয়া হলে, সকলের পক্ষে কথাটি লিখে বাদবাকি পরিচয় দিতে হয় সেখানেও ভুল করেছে মূর্খ অভিযোগকারীরা। এর মাধ্যমেই প্রতিয়মান হয় অভিযোগপত্রটি বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
চতুর্থতঃ বাংলাদেশে কয়েক হাজার পত্র-পত্রিকা আছে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে হিসাব করলেও অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার মিলে ১০০ এর কমে হবে না। তবে হাসির বিষয় হলো ডাকযোগে পাঠানো এই অভিযোগের বিষয়টি ভুঁইফোড় সময়কাল প্রেস অনলাইন পত্রিকা ব্যতীত অন্য কোন পত্রিকার সাংবাদিকরা জানেনা। শুধু সাংবাদিক নয় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী, অভিভাবক এমনকি এলাকাবাসীর কেউও জানেনা। তাহলে ঐ ভূঁইফোড় পত্রিকার সম্পাদকের কাছে কোন জ্বীন সংবাদ নিয়ে গেল?
চতুর্থত: সাংবাদিকতার নিয়ম হলো কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে কোন নিউজ করার পূর্বে ওই ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে কথা বলা, সত্যতা যাচাই করা, উনার মন্তব্য নেওয়া। তবে হাস্যকর হলেও সত্য যে, সময়কাল প্রেস নামক ভুঁইফোড় পত্রিকায় ভুয়া সাংবাদিক শরীফ মাহমুদ গত ছয় মাসে প্রধান শিক্ষক জনাব মো. গোলাম মোস্তফা কে নিয়ে তিনটি নিউজ করলেও কোন বারই প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করেননি এবং উনার কোনো বক্তব্য নেননি। এতেই প্রমাণিত হয়, ভুঁইফোড় পত্রিকার সাংবাদিকের সাংবাদিকতা নিয়ে ন্যূনতম জ্ঞান নেই। আর থাকবেই বা কি করে, সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাংবাদিক সমিতির অন্তর্ভুক্ত কোন সাংবাদিক না এবং লোকমুখে শোনা যায় ভুয়া সাংবাদিক শরীফ মাহমুদ নাকি বর্ডার এলাকায় মাঝেমধ্যেই পানি খেতে আসেন।
তাই, আমাদের ধারণা গুটিকয়েক হিংসুক ব্যক্তিরা হয়তো ওই ভুঁইফোড় পত্রিকার সাংবাদিক কে পানি খাইয়ে এই মিথ্যাচার করছেন।
আর এই হিংসুকদের উদ্দেশ্যে বলবো, মিথ্যাচার আর টাকা খরচ করে এদেশে অনেক কিছুই করা যায়। একজনের সম্পদ আরেকজন দখলে নিতে পারে, একজনের বউ আরেকজনে ভাগিয়ে নিতে পারে এবং একজনের নমিনেশনও কোটি টাকা খরচ করে আরেকজন নিয়ে নিতে পারে। তবে একজন প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচার করার আগে নিজেরা অন্তত স্কুল পাশের সার্টিফিকেট অর্জন করিয়েন। না হয় আপনাদের চেষ্টা প্রচেষ্টা আর অর্থ খরচ ব্যর্থতায় পরিণত হবে। আর সমাজের কাছে নিজেরা প্রকাশ পাবেন মূর্খ-গর্ধব হিসেবে।