11/10/2023
ভারতে ১৯৯১ সালে নয়া উদারনীতিবাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠার পর এদেশের অর্থনীতিতে একটি অভূতপূর্ব বাঁকবদল ঘটে, যেখানে ‘পুঁজি’-ই হয়ে ওঠে সর্বময় নিয়ন্ত্রক। ধীরে-ধীরে ধ্বংস করা হতে থাকে প্রাক-নব্বই পর্বের রাষ্ট্রয়ত্ত ক্ষেত্রভিত্তিক জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র-কাঠামোকে, ২০১৪-র পর যা নিঃসন্দেহে বেলাগাম হয়। একইসঙ্গে চলে ব্যক্তি-মানসে তার ন্যায্যতা নির্মাণের কাজও। সামষ্টিক নয়, বরং ব্যক্তির শ্রীবৃদ্ধিই পরোক্ষে দেশে বিকাশ আনবে --- এই প্রবল আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদী দর্শনকেই নির্বিচারে চারিয়ে দেওয়া হতে থাকে মানবমনে। ফলে পুঁজি হয়ে উঠেছে সর্বগ্রাসী ও নৃশংস, যার দাপটে এদেশের তামাম শ্রমজীবী মানুষ আজ বিধ্বস্ত। তবু তার মধ্যেই তাঁরা গড়ে তুলছেন বিভিন্ন গণআন্দোলন। কিন্তু রাষ্ট্র কর্পোরেট পুঁজির সহায়ক শক্তি হিসাবে এগিয়ে এসেছে এই আন্দোলনগুলির নিষ্ঠুর-দমনে। একদিকে শ্রমজীবীদের মধ্যেই ধর্ম-জাতপাতের ভিত্তিতে বিভাজন ঘটানো হয়েছে, অন্যদিকে ভোগবাদী সংস্কৃতির উৎকট দাপটে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের স্বাভাবিক যুক্তিবোধকেই। এভাবেই নয়া উদারনীতিবাদের চরমতম অভিঘাত --- ফাশিবাদ আজ পূর্ণতালাভ করেছে। এই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে আনা হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্প-অনুদানের রাজনীতি, এবং তার আড়ালে চাপা দেওয়া হচ্ছে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি-সহ প্রকৃত উৎপাদনশীলতার মৌলিক প্রশ্নগুলিকেই। ফলে শ্রমজীবী জনগণ হয়ে পড়ছেন দিশাহীন, শাসকদলের মুখাপেক্ষী। অর্থাৎ নয়া উদারনীতিবাদ এদেশে যুগপৎ শোষণ ও অনুদান, বঞ্চনা ও প্রকল্পের এক আজব সমাবেশ ঘটিয়েছে, যা ইতিপূর্বে আর কখনও ঘটেনি। এ থেকে মুক্তিলাভ করা সম্ভব কেবল বিকল্পের সন্ধানে কঠিন সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই।
প্রকাশিত হল:
'নয়া উদারনীতিবাদের অভিঘাত ও বর্তমান ভারত'
সম্পাদনা: শোভনলাল দত্তগুপ্ত
লিখেছেন: সৌরীন ভট্টাচার্য, প্রভাত পট্টনায়েক, রতন খাসনবিশ, জয়তী ঘোষ, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, পার্থিব বসু, প্রদ্যৎ কুমার শূর, অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়, শুভনীল চৌধুরী, দেবী চ্যাটার্জী, সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, আলোক মুখার্জি এবং তপোধীর ভট্টাচার্য
প্রকাশক: বহুস্বর প্রকাশনী
প্রচ্ছদ: শুভেন্দু সরকার
মূল্য: ৩৫০/-
প্রাপ্তিস্থান:
ন্যাশনাল বুক এজেন্সি, মনীষা গ্রন্থালয়, ধ্যানবিন্দু, দে বুক স্টোর(দীপু), লালন, আখর এবং প্রতিক্ষণ বই-চা-ঘর।