25/06/2023
মৃত্যুঃ- ২৫/০৬/২০২২
মায়ের মৃত্যুর আজ এক বসর পূর্ণ হলো।
মায়ের প্রতিটা স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে, আর আমি ধুকে ধুকে মরি।
মায়ের মৃত্যুর পর অনেক কাজে বা কথায় এমনটাই হয়েছে যে,মাকে গিয়ে এই কথাটা বলি বা এই কাজটা করবো জানাই। বাসায় গিয়েই কথাটা বলি।
কিন্তু তার পরই মনে পড়ে যে মা তো বেঁচে নেই। এমন অনেক বারই ধোকা খেয়েছি। মনের ভিতর এখনো মনে হয় মা বুঝি বেঁচে আছে। আর মনের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি বেয়ে বেয়ে পড়ছে।
গত বসর জুন মাসের ১৩ তারিখ রাত এগারটায় অথবা সাড়ে এগারটায় আমার চাচাতো ভাই শাকিল ফোন দিয়ে বলে যে, মহিন এর বাবা ( আমাদের জেঠা) মারা গিয়েছে। শাকিলের কল পেয়ে হঠাৎ করেই চুপ হয়ে গেলাম। তখন আমি কেরাণীগঞ্জ অবস্থান করছিলাম। যেখানে রাত ৮টার পরে গাড়ি পেতে কষ্ট হয়ে যায়। সেখানে রাত সাড়ে এগারটার মত। পরে বল্লাম ভাই! আমি ফজরের পর ছাড়া বের হতে পারছি না। এমন এলাকায় থাকি সম্পূর্ণ রিস্ক নিয়ে বের হতে হবে। আর গাড়িতো পাওয়াই যাবে না। যাইহোক, ফজর নামাজ পরেই বের হয়ে যাই জানাজা পড়ার উদ্দেশ্যে। ২ হাজার টাকা নিয়ে বের হলাম কিন্তু রাস্তা ঘাটের অবস্থা দেখে এক হোন্ডা ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলাম নোয়াখালী যাবেন? উত্তরে সে বলল, ৪৫০০ টাকা লাগবে। উত্তরে শুনে সায়দাবাদ গিয়ে বাসে উঠলাম আল্লাহর উপর ভরসা করে। মনে মনে দোয়া করতেছি আল্লাহ! দ্রুত বাড়িতে পৌঁছে দাও যেন জানাজা পড়তে পারি। কিন্তু আর হলো না জানাজা পড়া। বাড়িতে গিয়ে দেখি যে যার মত করে কাজে ব্যস্ত। অনেক আপসোস করে বিকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। অনেক রাত হওয়াতে নারায়নগঞ্জে শ্বশুর বাড়িতে চলে গেলাম। রাত গিয়ে ফজর নামাজের পর একটু ঘুম দিলাম। গতকাল সারা দিনের ক্লান্তি মনে হচ্ছে ছাড়ছেই না আমাকে। যোহর নামাজের পর খাবার খেতে বসা মাত্রই ছোট বোন কল দিয়ে বলল, মায়ের অবস্থা ভাল না। স্ট্রোক করেছে। আমরা হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি, আপনি দ্রুত আসেন। কোন রকম খাবার শেষ করে বের হয়ে গেলাম। চলে গেলাম হসপিটালে। গিয়ে দেখি মাকে শুইয়ে রাখছে বেডে। কোন কথা নেই। হসপিটালের প্রধান ডাক্তার আমার পরিচিত হওয়ায় ডিউটিরত ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলাম রোগীর এখন কি অবস্থা? সে বলল, আমাদের ডাক্তারকে জানিয়েছি আর আমরা বর্তমানে যে মেডিসিন দেয়া দরকার সেটা করেছি। বললাম, ডাক্তারকে আমি কল দেই? তারা বলল, আমরা কল দিচ্ছি। এরপর তারা কল দিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলার পর আমাদেরকে জানালো, আপনারা নিউরো সায়েন্সেস হসপিটালে নিয়ে যান। অবশেষে তাই করা হলো। এম্বুলেন্সে করে চলে গেলাম নিউরোতে। সেখানে প্রথম দিন থেকে দুই -একদিন ছাড়া আমি প্রতিদিন হসপিটালে যেতাম। সারাদিন কর্মস্থলে থাকতাম আর সন্ধার পর হসপিটালে চলে যেতাম। আইসিউতে থাকার কারণে শুধু ডাক্তারদের সাথেই কথা হত মায়ের সাথে দেখা করতে পারতাম না। কিন্তু প্রতিদিন একজন করে দেখা করার সুযোগ দিত। দিনের বেলা না যেতে পারায় দেখা করতে পারতাম না। সিকিউরিটির সাথে কত দুঃখের সাথে বলতাম, কত অনুনয় বিনয় করে বলতাম ভাই! আমি মসজিদে নামাজ পড়াই, তাই দিনের বেলা আসতে পারি না, আমাকে একটু সুযোগ করে দিন না। হৃদয়ের যত যাতনা দিয়েই বলতাম না কেন, মহিলা ইউনিট হওয়ায় কোন ভাবেই দেখার সুযোগ হয়নি। শেষ যেদিন রিলিস দিয়ে দিবে, তার আগের দিন রাতে এসে আর যাইনি। কাল যেভাবেই হোক দেখা করবো। পরে শুনি যে, রিলিস দিয়ে দিবে। ডাক্তাররা বলল, আপনাদের রোগী এখন বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। বাকিটা বাসায় থেকেই সুস্থ হয়ে যাবে। তখন মা শুধু কথা বলতে পারে পরিপূর্ণ না। স্ট্রোক করা রোগী যেমন কথা বলে। কিন্তু প্যারালাইসেস আর ঠিক হলো না। আমি আর বড় ভাই মিয়ে মাকে এম্বুলেন্স করে বাসার দিকে রওনা দিলাম। গাড়িতে শুধু এততুকু কথা বলার সুযোগ হয়েছে যে, বললাম, মা! আমাকে মাফ করে দিয়েন। বাসায় নিয়ে আসার পর আত্নীয়-স্বজন সবাই আসতে লাগলো। দেড় দিন পর্যন্ত মানুষ আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিল। মায়ের অবস্থা আসতে আসতে অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে। মায়ের পাশেই বসে থাকতাম কেউ কিছু বললে মায়ের কানের সামনে গিয়ে বলতাম যে , মা! অমুক-তমুক ইত্যাদি। মা শুধু মাথা কোন রকম কথা বলত যা মুখের সামনে কান পেতে শুনতে হত। সন্ধার পর আসতে আসতে মায়ের অবস্থা খারাপের দিকে যেতে লাগলো। দ্রুত এম্বুলেন্স এনে প্রথমে গেলাম শিকদার মেডিকেল কলেজ হসপিটালে। রাস্তায় জ্যামে থাকার কারণে দেরী হয়ে যায় আর ততক্ষণে মায়ের মুখ ফেনা ফেনা হয়ে যায়। সেখান থেকে ইবনে সিনা হসপিটাল ধানমন্ডি শংকর শাখায় নিয়ে যাই। ডাক্তাররা দেখে দ্রুত আইসিউতে ভর্তি করে দেয়। (অন্যান্য মানুষদের জন্য হসপিটালে ছুটাছুটি করছি কিন্তু নিজের মায়ের জন্য যেভাবে ডাক্তারদের সাথে কথা বলা এখানে-সেখানে যাওয়া ফার্মেসীতে যাওয়া আগে এমন কখনো হয়নি। তবে ডাক্তারদের সাথে কথা বলা, দৌড়াদোড়ী করেছি মনে হলো আমার জীবনে এমন বহুবার করেছি।) চলে গেলাম আইসিউতে ডাক্তারদের সাথে কথা বলার জন্য। ডাক্তার একটা কথাই বার বার এই বলে বুঝাচ্ছে যে, আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এমন রোগী খুবই কম মানুষ শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফিরেছে। আবার দেখা গেছে যে, বাঁচার সম্ভাবনা নাই তারাও ২-৩ মাস বেঁচে ছিল। আপনাদের রোগীকে এখানে না রেখে অক্সিজেন দিয়ে বাসায় নিয়ে যান। আত্নীয় স্বজনরা দেখুক শেষ বারের মত। ডাক্তাররা তাদের বক্তব্য দিয়ে গেল। তারপরও মনটাকে কোন ভাবেই বুঝাতে পারছি না। মনে মনে ঠিকই বুঝে গিয়েছি যে, আর মনে হয় দেখতে পারবো না। কিন্তু সবাই বড় ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতেছে। বড় ডাক্তার এসে রোগীকে দেখে কি বলে সেই অপেক্ষায় সবাই আছে। ডিউটিরত ডাক্তারদের কথা সবাইকে জানাইলাম, তারপরও সবাই বড় ডাক্তার বড় ডাক্তার করেই গেল। এর মধ্যে কিছুক্ষণ পর পর আইসিউতে যাচ্ছি। সাধারণ আইসিউতে বহিরাগত মানুষকে ঢুকতে দেয় না। কিন্তু আমার কাকুতি-মিনতি দেখে ডাক্তাররাও না করতে পারলো। রাতের সোয়া একটার দিকে বড় ডাক্তার এসে মাকে দেখে বলল, আপনাদের রোগী আশাকরি ভাল হয়ে যাবে। (এটা হলো ডাক্তারদের কমন ডাইলগ) একে একে সবাই চলে গেল, আর রয়ে গেলাম আমি এবং আমার বড় ফুফাতো ভাই রুবেল। সব কাজ শেষ করে এশার নামাজ পড়ার পর ডাক্তারদের সাথে কথা বলে নিচে গিয়ে টেবিলে বসলাম। আবার উপরে-নীচে উঠা নামায় রইলাম। আর মাঝে মাঝে ডাক্তারদের সাথে কথা বলতে লাগলাম। এক পর্যায়ে আর থাকতে পারছিলাম না ঘুমের জন্য। কারণ গত দুই দিন যাবৎ চোখে ঘুম ছিল না। শুইয়ে গেলাম নিচ তলার একটা টেবিলে। ততক্ষণে রাত ৪টা বাজে। সকাল ভোরে ভোরে আবার ফুফাতো ভাই ডেকে বলল, ঔষধ কিনতে হবে। ফার্মেসীতে গিয়ে ঔষধ কিনে দিলাম। তারপর জিজ্ঞাসা করলাম, আমার মায়ের এখন কি অবস্থা? তাদের বক্তব্য এখানে না রেখে বাসায় নিয়ে যান। তিন দিনের অঘুমা ব্যক্তির অবস্থা কেমন হতে পারে সেটা সবাই ভাল বুঝবেন। সকাল থেকেই কিছুক্ষণ পর পর আইসিউতে যাচ্ছি আর ডাক্তারদের সাথে কথা বলছি। কমবেশ সবাই আইসিউতে গিয়েছে, ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছে, মাকেও দেখেছে, কিন্তু কেউই জিজ্ঞাসা করেনি যে, মায়ের এই অবস্থা কেন? মানে যখন আইসিউতে ভর্তি করায় তখনতো তারা লাইফ সাপোর্টে রেখে যা যা করা দরকার তা করল। কিন্তু নাক, গলা দিয়ে রক্ত বের হয়েছে কেন এটা কেউ জিজ্ঞাসা করেনি। যখনই আমার চোখে পড়ল, তখন নার্সকে ডেকে বললাম, আমার মায়ের এই অবস্থা কেন? তারা বলল, মুখে পাইপ ঢোকানোর কারণে একটু ব্লাড বের হয়। এটা ভয়ের কিছু নেই। আমি বললাম, তাহলে বুঝি এত ব্লাড বের হবে? তারা কোন উত্তর দিতে পারলো না। ( যখন একজন মানুষ স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করতে পারেন না তখন ইনটেনসিভ কেয়ারে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে রোগীর ব্রেন, হার্ট ও কিডনিসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো তখন সচল থাকে।) এজন্যই পাইপ লাগানো হয়। জুমার নামাজের সময় হলে নামাজ পড়তে যাই। কিন্তু অঘুমা থাকার কারণে হুজুর কি বয়ান করেছে টেরই পাইনি। আত্নীয়-স্বজনরা আসতে শুরু করল। সবার কথা হলো যেহেতু ডাক্তাররা বলছে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাহলে বাসায় নিয়ে রোগীকে কষ্ট দিব নাকি? বরং আমরা মিটফোর্ড হসপিটালে নিয়ে আইসিউতে ভর্তি করাই। আমি বললাম, সেখানে নেয়া মানে মাকে আরো বেশি কষ্ট দেয়া ছাড়া আর কিছুই না। আমি জানি মিটফোর্ড হসপিটাল কেমন? আপনারা কি জানেন সেটা আমি বলতে পারবো না। আপনারা হসপিটালে নেন তাহলে অন্য হসপিটালে নিয়ে যান, তারপর মিটফোর্ড নিয়েন না। বাসায় নিয়ে চলেন। অবশেষে তাই করা হল। বাসায় নিয়ে আনতে আনতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আত্নীয়-স্বজন একে একে সবাই এসে শেষ বারের মত দেখতেছে আর বলতেছে আমাকে মাফ দিয়েন। সবাই মাফ চাচ্ছে। মায়ের কাছে যা শুনেছি বা দেখেছি অনেক কষ্ট দিয়েছে পিছনে পিছনে বদনাম করেছে। ছোট কাল থেকেই দেখে আসছি তারা কেমন কষ্ট দিয়েছে। আজ তারা মৃত মানুষটার কাছে সবাই মাফ চাচ্ছে। কিন্তু জীবিত থাকা অবস্থায় সবাই বিরোধীতা করেছে, তখন তো কেউই মাফ চায়নি। অথচ গ্রামে গেলে এখনও সবাই বলে, তোর মায়ের মত আমগো বাড়িতে কোন বউ আসেনি আর আসবেও না। অক্সিজেন চলছে তারপরও হসপিটাল থেকে আনার সময় শ্বাস কষ্টটা যেমন ছিল এর চেয়ে বেশি বেড়ে গেছে। আবার সবাই হসপিটালে নেয়ার জন্য এম্বুলেন্স খবর দিল। তখনও আমি মায়ের মাথার পাশেই বসা। কানের কাছে মুখটা নিয়ে বললাম মা! আমার সাথে যিকির করেন। ইবনে সিনা হসপিটালে নেয়ার আগেই জবান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপরও আমার কাছে কেমন যেন লাগছে, মা হয়ত গের গের করে কী যেন বলছে। শুরু করে দিলাম যিকির। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে কন্ট্রল রাখতে পারব কখনও কল্পনাতে করতে পারিনি। পায়ের দিকে ছোট বোনেরা, মেজো ফুফু বসে আছে। কি করব কিছুই বুঝতে পারতেছিনা। তিন তাসবিহ পড়াতে লাগলাম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ যিকির পড়াতে লাগলাম, কালেমা পড়াতে লাগলাম। যখন বুঝেই ফেল্লাম আর মনে হয় বেশিক্ষণ থাকবে না তখন ছোট বোনদের বললাম, তোরা সূরা ইয়াসিন পড়তে থাক। বোন, ফুফু তারা কিছুটা বুঝতে পারছে। তারপরও আমি তাদের অভয় দিয়ে বললাম, আরে মা তো এখন সুন্দর করে নিশ্বাস নিতে পারছে। সুস্থ হয়ে যাচেছ। এদিকে ছোট মামা এসে বলল, আপাতো এখন দেখি নিশ্বাস নিতে পারছে। অন্যরুমে বাবা মানুষদের সাথে কথা বলতেছে আর এম্বুলেন্স এর জন্য কথা বলতেছে। শ্বাস কষ্টটা যখন পুরা বেড়েই গেছে তখন কমবেশ সবাই হয়ত হয়ত হয়ত বুঝতে পেরেছে। তখন বাবাও এসে বলল, আমাকে মাফ করে দিস ইত্যাদি ইত্যাদি। ওদিকে দাদী, বড় ফুফু, ছোট ফুফু গ্রাম থেকে আসতেছে। রাত তখন ১টার মত। আমার মনে জানা হয়ে গেছে আর মনে বেশিক্ষণ মাকে পাবো না। কালিমা পড়ানো শুরু করলাম। আমি যততুকু বুঝলাম শেষ সময় এসে জবান কিছুটা ক্লিয়ার হয়ে গেছে। এততুকু বুঝলাম আমি যা বলছি মা তা বলছে। নিশ্বাস ভারী থেকে ভারী হতে লাগলো। এক পর্যায়ে অনেক বড় বড় নিশ্বাস নিতে লাগলো। কয়েক সেকেন্ড পর অনেক লম্বা লম্বা নিশ্বাস নিতে লাগলো। দাদী, বড় ও ছোট ফুফু বাসায় ঢুকে যখন মাকে দেখল, এরপর মা নামক মানুষটা চুপ হয়ে গেল....................................................................................।
মেজো ফুফু বুঝতে পেরে কান্না শুরু করে দিয়েছে, কিন্তু বোনেরা কুরআন শরীফে মগ্ন থাকায় বুঝতে পারেনি। পরিস্থিতি সাভাবিক রাখার জন্য তাকে অন্য রুমে পাঠাইয়া দিলাম। তাদের কান্নাকাটি দেখে বাকিরাও দৌড়ে এসে দেখে................।
কেউ বুঝতে পারছে না মারা গিয়েছে নাকি ঘুমাচ্ছে। যখন ডাক্তারের খোঁজ করছে, তখন আমাদের এলাকার হাবিব ভাইকে কল দিয়ে বললাম, ভাই! একটু দ্রুত আসেন। ছোট ভাইদেরকে পাঠাইয়া তাকে নিয়ে আসলাম।উনি বিপি দেখে বলল, আর নেই..............................। শুরু হল সবার কান্নাকাটি। কাউকেই থামানো যাচ্ছে না। বাবার চোখে পানি টলমল করতেছে আর বলছে, আমার চাইতে কি তোদের দরদ বেশী? কেউ কান্নাকাটি করবি না। মুর্দার কষ্ট হবে। এম্বুলেন্সওয়ালা কলা দিয়ে বলল, আমরা আসছি, বাবা বলল, যাকে নেয়ার জন্য আসছেন, সে আর নেই। ফজরের আগেই মাকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে। বাড়িতে গোছল দিয়ে আত্নীয়-স্বজনরা দেখে নিচ্ছে শেষ বারের মত। আর আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি মায়ের দিকে। কারণ এই মানুষটা ছাড়া আমার সাথে মনের যত কথা বলার মত ফ্যামিলিতে আর কেউ ছিল না। জানাজা নামাজ শেষে দাফন করার জন্য নিজের কাধে করে নিয়ে চললাম কবরস্থানে। কবরে আমি, ছোট ভাই, বড় ভাই, নামলাম। আমাদের পূর্বের অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না। পরে মামারা নেমে ভাল করে বাঁশ ও কলাপাতা দিয়ে দেয়। দাফন শেষে দোয়া করলাম, তারপর সবাই যার যার মতে করে চলে গেল। আল্লাহতো তার বান্দিকে নিয়ে গেছে আর আমি হয়ে গেলাম সবার কাছে দোষী।
Photo click: Sk Shakib
#দ্বিতীয়_পর্বে_আসছে_
আত্নীয়-স্বজনদেরও চিনা হলো।