Khanqah News24

Khanqah News24 Khanqah News24

16/11/2020

আমার নামাজ

নামাজ ভালবাসা ছিটায়, বন্ধুত্ব বাড়ায়, ইমানকে মজবুত করে, পরিবারের বন্ধন অটুট করে, সমাজকে একতাবদ্ধ হতে শেখায়, দেশের সাথে দেশের যোগাযোগ বৃদ্ধি করে। সকল মানব দানব একজন নেতা এক নেতৃত্ব‌ মেনে নিতে তাকিদ করে।

ওয়াক্তি মসজিদের জামায়াত মহল্লাবাসীদের একসাথে জমা করে একত্রিকরণ করে, জুমার জামাত শহর ও জনপদকের লোকজনকে জমা করে, ঈদের নামাজ দেশ ও আন্তর্জাতিক ভাবে সকল মুসলমানকে একতাবদ্ধ ও এক হতে উদ্বুদ্ধ করে।

সকল মুসলমান একজন আরেকজনকে দেখতে আরেকজনে খোঁজ ও খবর নিতে, আরেকজনের হালত অবস্থা জানতে, বিপদে পড়লে সাহায্য এবং আনন্দে উৎসবে থাকলে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাতে 'নামাজ' ও 'জামায়াত' মুসলমানকে শিক্ষা দিয়ে থাকে।।

আহ নামাজ যদি ঠিক হত, নামাজ যদি কায়েম হত, নামাজ যদি আরো এবং আরো‌ বেশি করে গুরুত্ব দিয়ে জামায়াতের সাথে আদায় এবং কায়েম হত তাহলে সমাজ ও দেশ থেকে সকল ধরনের বিপত্তি কেটে যেত দূর হয়ে যেত। সমাজের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ভূত দৌড়ে পালাতো।

সমাজের অধিপতিরা যদি নামাজি হত, নেতা নেত্রীরা যদি জামায়াত কায়েম করতো, সকল টাকার মালিকরা যদি গরীবদেরকে নামাজ কায়েম করতে সহযোগিতা করতো, হাকিম ব্যারিস্টার উকিল যদি নামাজের হুকুম করতো তাহলে ধীরে ধীরে ঘুণে ধরা এই সমাজ আলোর মুখ দেখতো। পৃথিবী থেকে অনাচার ব্যভিচার চির বিদায় নিত।

16/11/2020

আমার নামাজ

আমার নামাজ আমার গুনাহ মাফের বড় মাধ্যম, আমার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মধ্যবর্তি গুনাহ মাফের কারন, আমার জুমার নামাজ মধ্যবর্তি দিনের গুনাহ মাফের যরিয়া, আমার তাহাজ্জুদ আমার সারাদিনের রসদ, আমার আত্মা ও মনের শক্তি, আমার ইশরাক ও চাশত আমার রোজগারের মূলধন আমার ফজর আমার বিষাদগ্রস্ততা থেকে মুক্ত দাতা, আমার ইশা আমার রাত্রি কালিন চক্ষু শীতলতা। তারাবীহ আমার ইবাদতের বিশালতা।

নামাজ পড়লে দুঃখ কষ্ট দূর হয়। নামাজ পড়লে বিষাক্ত চিন্তা দূর হয়। নামাজ পড়লে ক্ষুধার পেরেশানি দূর হয়। নামাজ শরীরের অসুস্থতা দূর হয়। নামাজ পড়লে কষ্ট ক্লেশ ক্লান্তি ও বিষন্নতা এবং ডিপ্রেশন দূর হয়। নামাজে দেমাগের ব্যাথা মানসিক অশান্তি দূর হয়। নামাজের দ্বারা পারাবারিক ঝগড়া ফাসাদ দূর হয়। নামাজ কায়েম করলে ব্যাবসা বানিজ্যে অরাজকতা, সামাজিক ব্যাধি দূর হয়। নামাজ সমাজে কায়েম করলে রাজনৈতিক অস্থিরতা আন্তর্জাতিক সমস্যা দূর হয়।

চোরের চুরি ছুটবে , গুন্ডার ডাকাতি কমবে, বদচরিত্র লোকের চরিত্র ভাল হবে, বদ মেজাজের রাগ ঠান্ডা হবে, অসৎ লোক সৎ হবে, বিশৃঙ্খল মানুষের কাজ শৃঙ্খল হবে, সমাজ থেকে ফাহেশী অশ্লীলতা দূর হবে। অপবিত্র অপরিচ্ছন্ন অপরিস্কার দেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা‌ এবং পবিত্র হবে। সব হবে, তবে নামাজের মাধ্যমেই হবে।

16/11/2020

আমার নামাজ‌

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার বন্দেগী, তার কাছে মাথা নত করা, ইমান ও ইসলামের বহিঃপ্রকাশ, নিজের গোলামী প্রকাশ, আমিত্ব মিটিয়ে ফেলা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সবচেয়ে বেশি অনুসরণ ও আনুগত্য, সাহাবায়ে কেরামকে মান্য করা, আসলাফ আকাবিরের উম্মাতের অনুসরণে সবচেয়ে বেশি ও সবার আগে সর্বোচ্চ আমল হল; 'নামাজ, নামাজ, নামাজ'।

নামাজ হল আমাদের জন্য দলিল ও হুজ্জত, নূরের ফোয়ারা, আমলের মাপকাঠি, দারি পাল্লায় ওজনদার, গুনাহের জন্য ক্ষমা, পাপ মোচনকারী, চোখের শীতলতা, জান্নাতের চাবি, দুয়া কবুলের মাধ্যম, আসমানি খাজানার দরওয়াজা, পেরেশানি ও অসুস্থতার ঔষধ, জীবনের মূল উদ্দেশ্য । আমার নামাজ।

আমাদের কর্ম ব্যাস্ততা কিসের জন্য? আমাদের নড়াচড়া দৌড় ঝাপ কিসের জন্য? আমাদের সারাদিনের লেখালিখি বয়ান বক্তৃতা দাওয়াত ও লেকচার কিসের জন্য ? নামাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কায়েম ও দায়েম হওয়ার জন্য।

আমাদের ইন্জিনিয়ার হওয়া ডাক্তার হওয়া ব্যাবসায়ী ও চাকুরীজীবি হওয়া ইহলোকের যত ব্যস্ততা সব কিছুই নামাজ কায়েম করার জন্য। নামাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। খাবার খাই যাতে নামাজ দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারি। ঘুমাই যাতে ইতমিনানের সাথে নামাজ পড়তে পারি। পড়া লেখা করি যাতে সমাজে নামাজ কায়েম করতে পারি।

কালিমায়ে বিশ্বাসী হয়ে সবার আগে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা। নামাজের হক আদায় করা। নামাজ শিক্ষা করা। নামাজকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া।

সন্তানকে সবার আগে নামাজের জন্য শাসন করতে বলা হয়েছে। নামাজ না পড়লে বন্দি করতে, শাস্তি দিতে এমনকি হত্যা পর্যন্ত বলা হয়েছে।

 #ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ মুহিউস সুন্নাহ শাহ্ আবরারুল হক (হারদুঈ) রহ. এর আজাল্লে খলিফা,শাইখুল উলামা,খাদেমুস সুন...
01/09/2020

#ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ মুহিউস সুন্নাহ শাহ্ আবরারুল হক (হারদুঈ) রহ. এর আজাল্লে খলিফা,শাইখুল উলামা,খাদেমুস সুন্নাহ,আরেফ বিল্লাহ
শাহ্ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী দা. বা. -এর সার্বিক তত্বাবধানে🎇 #খানকায়ে_তা'লীমুস_সুন্নাহ্(থানভীনগর) মুগদা,ঢাকা-এর উদ্যোগে {মাসিক ইসলাহী মজলিশ}, আগামী ৫/৯/২০২০ ইং,
রোজঃ শনিবার অনুষ্টিত হবে ইনশা'আল্লাহ।
(সময় বাদ আসর হতে এশা পর্যন্ত)
((উক্ত মুবারক মাসিক ইসলাহী মজলিশে))
{নছীহত পেশ করবেন}
#হাকীমুন_নফস্_

আরেফ_বিল্লাহ_শায়েখ_আল্লামা_মুস্তাকুন্নবী_কাসেমী দা. বা. - কুমিল্লা।
আরো দেশবরন্য বুজুর্গ ওলামায়ে কেরামগণ ও হযরত ওয়ালার আশেকীন হযরতগণ উপস্থিত থাকবেন।
আপনিও এই মোবারক মজমায় আহলুল্লাহর সোহবত গ্রহণ করার উদ্দেশ্য উপস্থিত থাকার জন্য আহবান করা হল।
"আরজগুজার"
দাঈ ইলাস সুন্নাহ্
মাওলানা মুস্তাকিম বিল্লাহ হামিদী দাঃবাঃ
খলিফা,শায়খে দেওনা ও মুহতামিম অত্র মাদরাসা।

দারুল উলূম দেওবন্দ........কী হতো যদি না তুমি থাকতে?এই যে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল ও বার্মা।  হ্যাঁ, তুমি না থাকল...
30/05/2020

দারুল উলূম দেওবন্দ........

কী হতো যদি না তুমি থাকতে?
এই যে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল ও বার্মা। হ্যাঁ, তুমি না থাকলে এই পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ হতো আরেকটি স্পেন, আরেকটি উন্দুলুস। এই একবিংশ শতাব্দীরই কোনো বিষন্ন পর্যটক দিল্লি-লাহোর ও ঢাকার পথে-রাজপথে খুঁজে পেতো গ্রানাডা, মালাগা, সেভিয়া ও কর্ডোভার বিধ্বস্ত স্মৃতিচিহ্ন।
কী হতো তুমি না থাকলে?
ওই যে সুদূর তুরস্কের দিকে তাকিয়ে দেখো। ছয়শো শতাব্দী ধরে প্রবল প্রতাপে সমগ্র বিশ্বজুড়ে ছড়ি ঘুরানো সর্ববৃহৎ উসমানি সালতানাতের পরও আজো সেখানে কলাল্লাহ ও কলার রাসূলের ধ্বনি নেই। কারণ, সেখানে তুমি নেই।
কী হতো তুমি না থাকলে?
ইসলামের সোনালী যুগে বিজিত ইটালিতে আজ ইসলামের নাম-গন্ধও নেই। কারণ, সেখানে শুধু একটি দারুল উলুম নেই।

শত শত নবি-রাসূলের স্মৃতি বিজড়িত ইরাক-সিরিয়ায় আজ কলাল্লাহ-কলার রাসূলের ধ্বনি নেই। ইরাকে এখন আর জন্মায় না ইবনু সলাহ, ইবনু আবিদ দুনইয়া, ইবনুল জাওযি, ইবনু খল্লিকান, ইবনু রজব, খতিব বাগদাদি বা হাফিয ইরাকি। সিরিয়া থেকে হারিয়ে গেছে বদরুদ্দিন আইনি, ইবনু কাসির ও ইমাম নববির উত্তরপুরুষ। কারণ, পতনের এই যুগে সেখানে নেই তোমার মতো কোনো নিখাদ নববি ইলমের চর্চাকেন্দ্র।
দারুল উলূম দেওবন্দ.......
কারো কাছে তুমি হয়তো ইট-সুরকির ভবন মাত্র। কিন্তু আমার কাছে তুমি ঈমানি আলোর বাতিঘর। ইসলামের প্রতিরোধ যুদ্ধের শেষ কেল্লা।

তুমি না থাকলে আমরা ভারতীয় মুসলমানরা এখনো হয়তো বেরেলভি রয়ে যেতাম। আমাদের মাথা হয়তো আজ কোনো মাজারের পাদদেশে সেজদাবনত হতো।
তুমি না থাকলে আমরা সেই কবে খ্রিস্টান মিশনারীদের হাতে ঈমান খুইয়ে টমাস কিংবা মাইকেল হয়ে যেতাম।
হে প্রিয় দারুল উলূম দেওবন্দ,
ঊনবিংশ, বিংশ ও একবিংশ শতাব্দীর এই খিলাফতহীন ক্রান্তিকালে তুমিই তো মিটিমিটি জ্বালিয়ে রেখেছো ইসলাম পুনপ্রতিষ্ঠার শেষ প্রয়াসের সলতে। তুমিই তো শেষ রাতের নক্ষত্র হয়ে আলো দিয়ে চলেছো অসংখ্য পথিককে।
হে প্রিয় দারুল উলূম দেওবন্দ,
আজ থেকে ঠিক ১৫৪ বছর আগে তুমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলে অবিভক্ত হিন্দুস্তানের উত্তর প্রদেশের এক নিভৃত গ্রাম দেওবন্দে। সেই থেকে আজোব্দি তুমি সমান ঔজ্জ্বল্যে আলো বিলিয়ে চলেছো।

মহান আল্লাহ তোমাকে কিয়ামত পর্যন্ত সুদৃঢ় রাখুন।
তোমার দিকে হিংসাত্মক দৃষ্টিতে তাকানো প্রতিটি চোখের আলো নিভে যাক। মাঝপথে ভেঙে পড়ুক তোমার দিকে ছোড়া সবগুলো তীর।

আমিন....!!

📌 লিখেছেন: মুহতারাম মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

🕋🕌🇧🇩🇮🇳 দারুল উলুম দেওবন্দের শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরীর ইন্তিকালে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী হ...
19/05/2020

🕋🕌🇧🇩🇮🇳 দারুল উলুম দেওবন্দের শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরীর ইন্তিকালে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাফিযাহুল্লা’র শোক প্রকাশ
--------------====-------------------====-----------------------
হেফাজত আমীর ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক ও শাইখুল হাদীস আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাফিযাহুল্লাহ সাংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক শোকবার্তায় উপমহাদেশের অন্যতম ও প্রাচীন দ্বীনি এদারাহ ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরীর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং মরহুমের শোকাহত পরিবার-পরিজন, শাগরেদ-ভক্তদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি সকলকে সবরে জমিল দান করার জন্য পরম করুনাময় আল্লাহর দরবারে দোআ করেন।
হেফাজত আমীর আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ. প্রসঙ্গে বলেন ইলমী অঙ্গনে কঠিন বিষয়কে সহজভাবে উপস্থাপনার জন্য তার বিশেষ প্রসিদ্ধি রয়েছে। তার সামান্য আলোচনায়ও ইলমী বিভা ঝরতে থাকে। তিনি তার শুরু জীবনে ‘ইফাদাতে নানুতবী’ কিতাব রচনার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করলেও শেষে এসে হিকমাহ তথা দর্শন শাস্ত্রে শাহ ওয়ালী উল্লাহ রহ. এর কালজয়ী কিতাব ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘রহমাতুল্লাহিল ওয়াসিআহ’ লিখে দুনিয়ার আহলে ইলমদের দৃষ্টি কাড়েন। এজন্য দারুল উলুম দেওবন্দের মজলিসে শুরা তাকে রেজুলেশনের মাধ্যমে বিশেষ সম্মানে ভুষিত করেন। এমন শত গুনের অধিকারী দেওবন্দের শাইখুল হাদীস মুফতী সাইদ আহমদ পালনপুরী।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাফিযাহুল্লাহ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন- ২০১৭ সালে আমি যখন চিকিত্‌সার জন্য ভারত গমন করি তখন দারুল উলুম দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ ও তাঁর আমন্ত্রণে দারুল উলুম দেওবন্দ গমন করলে তিনি সরাসরি প্রধান তোরণে উপস্থিত হয়ে আমাকে অভ্যার্থনা জানান এবং আতিথিয়তা করেন। তখন দারুল উলুমের শিক্ষক ও ছাত্ররা জানান তিনি কখনো কাউকে এভাবে গিয়ে অভ্যার্থনা জানাননি যা আপনার জন্য করেছেন। সেদিন আমি তাঁর আন্তরিক আতিথিয়তায় মুগ্ধ হয়েছি।

আল্লামা পালনপুরীর মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ একজন কিংবদন্তী আলেম দ্বীন, দাঈ ও বহু প্রতিবার অধিকারী আলেমকে হারিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে উম্মাহর যে ক্ষতি হল তা পূরণ হবার নয়। মহান রাব্বুল আলামীন আল্লামা পালনপুরী জান্নাতে উচঁ মকাম দান করুন। আমীন

প্রসঙ্গত- কয়েকদিন যাবত শরীরের অবনতি হতে থাকে। আর আজ চাশতের সময় ইলমি জগতের এ মুকুটহীন সম্রাট লক্ষ লক্ষ ভক্তকুলকে শোক সাগরে ভাসিয়ে চলে যান না ফেরার পথে।
মুফতি সাঈদ আহমদ পালানপুরী ১৩৬২ হিজরী মোতাবেক ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

☘️ হযরত মাওলানা শাহ  #আববারুল হক রহ.-এর জীবনীমুহিউস্‌ সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব রহ. ৮ রবীউস সানী ১৩৩৯ হি...
15/05/2020

☘️ হযরত মাওলানা শাহ #আববারুল হক রহ.-এর জীবনী

মুহিউস্‌ সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব রহ. ৮ রবীউস সানী ১৩৩৯ হিজরী মুতাবেক ২০ ডিসেম্বর ১৯২০ ঈসায়ী সনে ভারতের উত্তর প্রদেশের হারদুয়ী শহরের এক ধর্মনিষ্ঠ সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি এশিয়ার হাদীস শাস্ত্রের অন্যতম মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ. এর বংশধর। তাঁর পিতা জনাব মাহমূদুল হক রহ. হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.-এর স্নেহধন্য মুজাযে সোহবত ছিলেন।

শিক্ষা-দীক্ষা:
হারদুয়ী শহরে স্বীয় পিতা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামিয়া মাদরাসায় তিনি প্রাধমিক শিক্ষা শুরু করেন এবং মাত্র ৮ বছর বয়সে পূর্ণ কুরআন শরীফ হিফয সম্পন্ন করেন। ১৩৪৯ হিজরীতে উচ্চ শিক্ষার্থে তিনি ভারতের প্রসিদ্ধ শিক্ষা কেন্দ্র সাহারানপুর মাজাহিরুল উলূম মাদরাসায় ভর্তি হন এবং ১৩৫৬ হিজরী সনে কৃতিত্বের সাথে ১ম স্থান অধিকার করে দাওরায়ে হাদীস তথা সর্বোচ্চ ডিগ্রী লাভ করেন। [উল্লেখ্য হযরতজী ইউসুফ রহ. ও হযরতজী ইনু‘আমুল হাসান রহ. তাঁর দাওরায়ে হাদীসের সাথী ছিলেন।] ঠিক একই নিয়মে ১৩৫৮ হিজরী সনে কৃতিত্বের সাথে ১ম স্থান অধিকার করে “তাকমীলে ফুনূন” তথা উচ্চতর শাস্ত্রীয় গবেষণাও সম্পন্ন করেন।

কর্ম জীবন:
শিক্ষা সমাপ্ত করার পর শিক্ষকবৃন্দের ইচ্ছায় সাহারানপুর মুজাহিরুল উলূম মাদরাসায়ই তিনি শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এখানে কিছু দিন শিক্ষকতা করার পর স্বীয় শাইখ হাকীমুল উম্মত হযরত থানভী রহ.-এর নির্দেশে তিনি মাদরাসা জামিউল উলূমে চলে যান। সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাঁর ইলমী গভীরতা ও অসাধারণ যোগ্যতায় মুগ্ধ হয়ে “শাইখুল হাদীস” হিসাবে পদোন্নতি দান করেন। এরপর হযরত থানভী রহ.-এর দ্বিতীয় বারের মাশওয়ারায় তিনি ফতেহপুর ইসলামিয়া মাদরাসায় চলে যান এবং সেখানে সুনামের সাথে শিক্ষকতা করতে থাকেন।

‘আশরাফুল মাদারিস’ এর প্রতিষ্ঠা:
অতঃপর যুগের চাহিদা পুরণে দীনের চতুর্মূখী কার্যক্রম চালু করার লক্ষ্যে ১৩৬২ হিজরীতে শাইখের হুকুমে নিজ এলাকায় চলে যান এবং জাতির আকাঙ্খা পুরনে যুগান্তকারী মাইল ফলক হিসাবে হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.-এর দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে মাদরাসায়ে আশরাফুল মাদারিস প্রতিষ্ঠা করেন। এবং অক্লান্ত পরিশ্রম, সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা এবং আত্ম উৎসর্গের মাধ্যমে সেটাকে এমন সুবিন্যস্ত করে ঢেলে সাজান; যা পরবর্তীতে অন্যান্য সকল মাদরাসার জন্য আদর্শ হিসাবে পরিগণিত হয়। মাদরাসায়ে আশরাফুল মাদারিস নিছক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম নয় বরং শিক্ষা-দীক্ষা, আত্মশুদ্ধি, দাওয়াত ও তাবলীগসহ দীনের যাবতীয় খেদমত অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক পদ্ধতিতে আঞ্জাম দেয়ার এক বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান। যার ফুয়ূয ও বারাকাত শুধু এশিয়ায় নয় বরং সারা পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের উলামায়ে কেরাম তাঁর ফয়েয পেয়ে ধন্য হয়েছে।

আধ্যাত্মিক জীবন:
ছাত্র জীবন থেকেই তিনি হাকীমূল উম্মত হযরত থানভী রহ.-এর সাথে ইসলাহী সম্পর্ক গড়ে তুলেন। মাজাহিরুল উলূম মাদরাসায় অধ্যায়নকালে তিনি হযরত থানভী রহ. এর হাতে আত্মশুদ্ধির বাইআত গ্রহণ করেন এবং প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর দরবারে উপস্থিত হয়ে আধ্যাত্মিক সাধনায় আত্ম নিয়োগ করতে থাকেন। অধ্যায়ন থেকে ফারেগ হওয়ার পর ফতেহপুর মাদরাসায় অধ্যাপনা কালে মাত্র ২১ বছর বয়সে হযরত থানভী রহ. কর্তৃক খেলাফত লাভ করেন। চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা এমনকি মন-মানসিকতা আধ্যাত্মিক সাধনা, নিয়মানুবর্তীতা ইত্যাদিসহ সকল গুণাবলীর বিচারে হযরত থানভী রহ.-এর প্রতিচ্ছবি তাঁর ব্যক্তিত্বে ফুটে উঠায় সমাজের লোকেরা তাঁকে দ্বিতীয় থানভী বলে আখ্যায়িত করে। থানভী চিন্তা চেতনায় উদ্ভাসিত এ মহান ব্যক্তিত্ব আধ্যাত্মিক সাধনায় এমন উৎকর্ষ সাধন করেন যে, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, জাতির কান্ডারী অসংখ্য অগণিত উলামায়ে কেরাম তাঁর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন এবং নিজেদের আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটান। ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকায় রয়েছে তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্ত মুরীদ। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ পীর-মাশায়েখ এবং শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামও তাঁরই স্নেহধন্য মুরীদ ও খলীফা। বাংলাদেশে তাঁর উত্তরসুরী হিসাবে রয়েছে বিশিষ্ট ২৮ জন খলীফা।

মজলিসে দাওয়াতুল হকের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন:
হযরত থানভী রহ. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মজলিসে দাওয়াতুল হককে তার লক্ষ্য পানে পৌঁছাতে তিনি তাঁর পুরো জীবনটা ওয়াকফ করে দেন। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ, দীনী শিক্ষার ব্যাপক প্রচার প্রসার, মাদরাসা ছাত্র-শিক্ষকদের বিশেষ তারবিয়ত, ইসলাহী মাজালিস, খাঁটি মুসলমান তৈরীর জন্য দেশ-বিদেশে সফর, শর‘ঈ বিধান মুতাবিক মসজিদ পরিচালনা, বিনা পারিশ্রমিকে দীনী খেদমত, দুঃস্থ মানবতার সেবা এবং অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ মজলিসে দাওয়াতুল হকের যাবতীয় কর্মসূচী বাস্তবায়নে আমৃত্যু কঠিন সাধনা চালিয়ে যান তিনি। ছুটে যান এশিয়া-আফ্রিকা ও ইউরোপ-আমেরিকার আনাচে কানাচে। লক্ষ লক্ষ পথহারা মানুষের হৃদয়ে জ্বালান হেদায়াতের অগ্নি মশাল। প্রতিষ্ঠা করেন দেশ-বিদেশে শত শত দীনী প্রতিষ্ঠান।

ইহইয়ায়ে সুন্নাত:
তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল: তিনি প্রতিটি কাজ সুন্নাত মুতাবিক সম্পাদন করতেন এবং লক্ষ লক্ষ ভক্ত মুরীদদের জীবনেও তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকতেন। এ বৈশিষ্ট্যের কারণে তিনি বিশ্বের যেখানেই গমণ করতেন সেখানেই লক্ষ লক্ষ মুসলমান তাঁর হাতে হাত দিয়ে আদর্শ জীবনের দীক্ষা লাভ করে ধন্য হত। আমরা আগে অনেক কিতাব পড়ছি পড়িয়েছি এবং কম-বেশী আমলও করেছি। কিন্তু আমলকে কিতাবের সাথে মিলিয়ে তা সুন্নাত মুতাবিক করতে হবে তা আমাদের কল্পনায়ও আসতো না। কিন্তু যখন এ মহান বুযুর্গের সান্নিধ্য এবং সংশ্রবের সৌভাগ্য নসীব হল তখন আমাদের অধিকাংশ আমলই ভুল প্রমাণিত হল। অতঃপর তিনি আমাদেরকে বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উযূ, নামায, আযান, ইকামত, কাফন-দাফন ইত্যাদি আমলের ভুলসমূহ শুধরে দিলেন।

কালামে পাকের মুহব্বাত ও তাসহীহ করার জযবা:
কুরআনে কারীম আহকামুল হাকিমীনের কালাম, কুরআনের মুহব্বাত আল্লাহর মুহব্বাতেরই নামান্তর। প্রকৃতপক্ষে বান্দা কুরআনে কারীমের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার যত নৈকট্য লাভ করতে পারে অন্য কোন বস্তু দ্বারা তা কখনই সম্ভব নয়। তাই খোদাপ্রেমিক এ মহান বুযুর্গ একদিকে যেমন তাজবীদ সহকারে বিশুদ্ধ উচ্চারণে সুমধুর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াতে পারদর্শী হন। অপরদিকে অন্যকেও সহীহ-শুদ্ধভাবে তা শিখানোর ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেন। এ জন্য তিনি ভারতে অন্তত ৩০০ নূরানী মাদরাসা কায়েম করেন, যেগুলো হযরত ওয়ালার নির্দেশে পরিচালিত হত এবং সেগুলোর শিক্ষক হারদুয়ী থেকে পাঠান হত তাদের পরীক্ষা হযরত কর্তৃক নির্ধারিত লোকেরা নিতেন। এজন্য যেখানেই তিনি সফর করতেন সেখানেই কুরআনের আযমত, মুহব্বাত এবং সহীহ-শুদ্ধভাবে তেলাওয়াতের গুরুত্ব সম্পর্কে বয়ান করতেন এবং মশক করাতেন। এমনকি হযরতের হাতে বাইআত গ্রহণের পর প্রধান কর্মসূচীই হত “তাসহীহে কালামে পাক”।

এটা চির সত্য যে, যে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দেশ যত বেশী কুরআনে কারীমকে আপন করে তার যথার্থ হক আদায় করবে সে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দেশ তত বেশী সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ সকল দিক দিয়ে শান্তি-সুখ এবং নিরাপদে থাকবে। এটা হযরতের জীবনী থেকে আমাদের জন্য অন্যতম শিক্ষা। এজন্য তার খানকায় পৃথিবীর যে কোন দেশ থেকে যত বড় আলেমই আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য হাজির হতেন তিনি অবশ্যই নূরানী কায়েদা নিয়ে মকতবে বসার পরামর্শ দিতেন। এটাই তাঁর সুলূকের পথ পাড়ি দেয়ার মূল বিষয় বস্তু ছিল। আর বাস্তবেও কুরআনে কারীমে ‘কুরআন শরীফকে জাহেরী ও বাতেনী সকল রোগের শিফা’ বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে হযরত ওয়ালার মুবারক সফর:
দীনের বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি সফর করেন। সেই ধারায় ১৯৮১ ঈসায়ী সনে হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর দাওয়াতে সর্বপ্রথম তিনি বাংলাদেশ সফরে আসেন এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ বড় বড় মাদরাসায় সফর করে তাদের সুন্নাতের প্রতি আরো তৎপর হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন এবং ঢাকা মহানগরীতে মজলিসে দাওয়াতুল হকের কাজকে গতিশীল করার জন্য প্রত্যেক থাণাভিত্তিক হালকা বা কমিটি করে দেন এবং হালকার আমীর ও নায়েবে আমীর মাসে দুবার ধানমন্ডি ইজতিমায় জমা হয়ে কাজের লিখিত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেন। যে ধারা এখনও চালু আছে। পরে তিনি বহুবার বাংলাদেশে তাশরীফ আনেন এবং বিভিন্ন শহরে ও মাদরাসাগুলোতে তাশরীফ নেন। সর্বশেষ ২০ ডিসেম্বর ২০০৪ ঈসায়ী তারিখে মজলিসে দাওয়াতুল হকের ১১তম বার্ষিক ইজতিমা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে আগমণ করেন এবং এক সপ্তাহ অবস্থান করে এদেশের বহু ইসলামী জলসায় গুরুত্বপূর্ণ বয়ান রাখেন, প্রচলিত বিদ‘আত ও কুসংস্কার দূর করেন এবং আধ্যাত্মিক সাধকদেরকে সুলূকের সহজ সরল রাস্তা বাতলে দেন।

মনীষীদের উক্তি:
* পাকিস্তানের মুফতীয়ে আ‘যম হযরত থানভী রহ. এর বিশিষ্ট খলীফা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ. বলেন: ‘হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব দা. বা. চারিত্রিক পরিশুদ্ধি, তা‘লীম-তারবিয়ত ও তাদরীসের খেদমত অত্যন্ত সুন্দরভাবে আঞ্জাম দিচ্ছেন। ফলে তাঁর ফুয়ূয ও বারাকাত সমগ্র হিন্দুস্তানের সর্বস্তরের লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তাঁর বয়ানে ঐ সমস্ত দুর্লভ কথা-বার্তা শোনা যায় যা আমরা থানাভবনে শুনেছি।

* উপমহাদেশের মহান শিক্ষাবিদ আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রহ. বলেন : ‘হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব দা. বা. আযীমতের অধিকারী এক মহান শাইখ ও নির্ভীক দায়ী ইলাল্লাহ।’

* হযরত থানভী রহ. এর বিশিষ্ট খলীফা আরিফ বিল্লাহ ডাক্তার আব্দুল হাই আরেফী রহ. বলেন : ‘আল্লাহ পাক হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেবকে জাহেরী বাতেনী সর্ব গুণে গুণান্বিত করেছেন। তাঁর ওয়াজ নসীহতে হযরত থানভী রহ.-এর চিন্তাধারা ও স্বভাব ফুটে উঠে। তিনি অন্তর থেকে দরদ নিয়ে কথা বলেন। তাই তাঁর বয়ান শ্রোতাদের মনে বিস্ময়কর প্রভাব সৃষ্টি করে।

* তাবলীগ জামা‘আতের বিশ্বআমীর হযরত ওয়ালার দরসের সাথী হযরত মাওলানা ইন‘আমূল হাসান হযরতজী রহ. বলেন: ‘হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব হচ্ছেন এক অসাধারণ মুসলিহুল উলামা। উলামায়ে কেরামের সংশোধনের মত দূরহ কাজ কেবল তাঁর পক্ষেই সম্ভব।’

* বিচারপতি আল্লামা তাকী উসমানী দা. বা. বলেন: ‘আখেরী যুগে হযরতের অস্তিত্ব উম্মতের জন্য বিশাল এক পূজিঁভান্ডার। আলহামদুলিল্লাহ তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা এবং হেদায়াতের ফুয়ূয ও বারাকাত সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে।’

মৃত্যু বা আখেরাতের সফর:
উপমহাদেরশের এ মহান ধর্মীয় সংস্কারক, সুন্নাত নববীর উজ্জল নক্ষত্র, যুগশ্রেষ্ঠ ওলীয়ে কামেল, হাকীমূল উম্মত হযরত থানভী রহ.-এর সর্বশেষ খলীফা ১৭ মে ২০০৫ ঈসায়ী মঙ্গলবার সারা দিন কর্ম ব্যস্ত থেকে রাত আট ঘটিকায় ভারতের উত্তর প্রদেশের হারদুয়ী জেলায় নিজ বাড়ীতে ইন্তিকাল করেন। (আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম নসীব করুন! আমীন।) মৃত্যু কালে তাঁর বয়স ছিল ৮৮ বছর। মৃত্যুর পর তার ওসীয়ত মুতাবিক নিজস্ব খাস গোরস্থান থাকা সত্ত্বেও হারদূয়ী জেলা শহরের আম কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য : তার ওফাতের পর বাংলাদেশ থেকে যারাই তাঁর কবর যিয়ারতে হাজির হচ্ছেন সকলেই হযরতের হায়াতে তাঁর সোহবতে যে ধরনের নূর এবং ফুয়ূয ও বারাকাত অনুভব করতেন হযরতের কবরের কাছে হুবহু সে ধরণের ফুয়ূয ও বারাকাত অনুভব করে ধন্য হচ্ছেন এবং তার রেখে যাওয়া মসজিদ মাদরাসা খানকা ও মেহমানখানা ইত্যাদিকে হযরতওয়ালা হায়াতের নমুনায় পরিচালিত পেয়েছেন এর জন্য হযরতের জানিশীন হাকীম কালিমুল্লাহ সাহেবকে আল্লাহ জাযায়ে খায়ের দান করুন। আল্লাহ তা‘আলা হযরতওয়ালার রেখে যাওয়া সকল দীনী কাজকে খায়ের ও বরকতের সাথে হেফাজত করেন এবং আমাদেরকে তাঁর কাজের সাথে জুড়ে থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন।

🍁তথ্যসূত্র : হায়াতে আবরার, নুকূশে আবরার, সাওয়ানেহে আবরারুল হক হক্বী।

11/05/2020

নামাযে একাগ্রচিত্ত হওয়ার সহজ পথ-

হাকীমুল উম্মত, মুজাদ্দিদে মিল্লাত হজরত থানবী রহঃ ইশরাদ করেন, খুশু বা একাগ্রচিত্ততা হলো নামাজের রূহ বা আত্মা।
বাস্তব অভিজ্ঞতা এ কথার প্রমাণ, একাগ্রচিত্ত হওয়ার প্রচেষ্টায় খুব বেশি লিপ্ত হয়ে পড়লে প্রথমে ক্লান্তি-শ্রান্তি ও পরে বিরক্তির সৃষ্টি হয়ে যায়।
এজন্য এক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা আবশ্যক।
আর তার সীমা হলো নামাযের মধ্যে যে শব্দ মুখে উচ্চারণ করা হয় তা শুধু নিজের মুখস্ত থেকে পড়ে যেতে থাকবে না বরং প্রত্যেকটি শব্দের প্রতি এমনভাবে ধ্যান করবে যেন অপরিপক্ক হাফেয কুরআন শরীফের শব্দগুলো চিন্তা করে মুখে উচ্চারণ করে।
এর মধ্যেও যদি কখনো গাফলতি এসে যায়, তবে সেজন্য অস্থির না হয়ে এবং সামনের চিন্তা পরিত্যাগ করে তৎক্ষণাৎ ঐ বর্ণিত পদ্ধতির উপর পুনরায় আমল শুরু করবে অর্থাৎ যে শব্দ উচ্চারণ করা হচ্ছে তার প্রতি ধ্যান করতে থাকবে।

নামাযের মধ্যে "ইস্তিগরাক" বা একেবারে ডুবে যাওয়ার মত অবস্থাও কাম্য নয় যে, তার আর অন্য কিছু কোনো খবর থাকবে না।
"ইস্তিগরাক" বা একেবারে ডুবে যাওয়া এক জিনিস আর খুশু বা একাগ্রতা হলো ভিন্ন জিনিস।
প্রিয় নবী ﷺ -এর নামাযের মধ্যে কখনো ইস্তিগরাক এর অবস্থা হতো না।
ঐ হাদিস এ কথার পক্ষে প্রমাণ যে হাদীসে প্রিয় নবী ﷺ- এর বর্ণনা ইরশাদ হয়েছে যে, নামাযের জামাআত চলাকালীন সময়ে যদি কোনো ছোট বাচ্চার কান্নার আওয়াজ কানে আসতো তবে প্রিয় নবী হযরত ﷺ নামায সংক্ষেপ করে দিতেন।
কারণ, ঐ বাচ্চার মা তার কান্না কারণে নামাযের মধ্যে অস্থিরতা অনুভব করবে। যদি ইস্তিগরাকের অবস্থাই হতো তবে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ কিভাবে প্রিয় নবী ﷺ এর কানে পৌছতো।

আর প্রকৃত কথাও এই যে,' ইস্তিগরাক' হলো মানুষের ইচ্ছা বহির্ভূত একটি অবস্থা।
আর ইচ্ছা বহির্ভূত কোনো কিছুর দ্বারা তারাক্কী বা উন্নতি হয় না।
বরং তারাক্কী বা উন্নতি ঐ সকল আমলের দ্বারাই হয়ে থাকে, যা মানুষ নিজের ইচ্ছায় সম্পাদন করে থাকে।
খুশু বা একাগ্রতা একটি ইচ্ছাধীন কাজ আর সেটাই মূলতঃ নামাযের মধ্যে কাম্য।

মাজালিসে হাকিমুল উম্মত
পৃষ্ঠা নং ২১১-২১২

11/05/2020
07/05/2020

#আদ্যাত্মিক_জগতের_বাদশাহ
আল্লামা আশ্রাফ আলী থানবী রহঃ (১৮৬৩-১৯৪৩)
পিতার দিক থেকে তিনি সাইয়েদুনা উমর ফারুক রাঃ
এর বংশধর আর মায়ের দিক থেকে হযরত আলী রাঃ এর বংশধর ছিলেন।।।
তিনি একজন #মুজাদ্দিদ ছিলেন, #হাকিমুন নফস ছিলেন, ওনার বই পড়ে আমার কাছে ওনাকে #আদ্যাত্মিক_জগতের_বাদশা মনে হয়েছে।। উপমহাদেশে ওনার এলেম থেকে উপকৃত হয়নি, এমন মানুষ খোজে পাওয়াও মুশকিল,,, ওনার একেক টি নসীহত ছিলো একেকটি জীবন পরিবর্তন করে দেওয়ার মত, হেদায়েতের নূরের ঝলক ছড়াতো ওনার নসীহত থেকে, এলমে লাদুনী ছিলো ওনার কাছে... ইলমে শরিয়তের প্রতিটি শাখায় তিনি কদম রেখেছেন,
তাফসীর, ফিকাহ, তাজবীদ, তাসাউফ সব বিষয়ে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন।। ওনার বক্তব্য ছিলো সবসময় ইনসাফ আর ইতেদালী মেজাজের,
উনি আত্ম সমালোচনা বেশি পছন্দ করতেন,, আওয়ামুন নাসের ফিকহী মাসলা মাসায়েল জানার জন্য তিনি খুব সহজ ভাষায় #বেহেশতে_জেওর নামক
এক সুন্দর সাবলীল কিতাব রচনা করেছেন। যা উপমহাদেশের প্রায় প্রতিটি পাড়ায় মহল্লায় পাওয়া যায়, তিনি তাফসিরের ক্ষেত্রে #বয়ানুল কোরান লিখেছেন, তাসাউফের অনেক সুন্দর বই লিখেছেন,
কাওমী মাদ্রাসার আলেমদের কে কিভাবে চলতে হবে,
কিভাবে মাদ্রাসা চালাতে হবে, তার পরামর্শ দিয়ে তিনি
ু_ওয়াল_উলামা নামক ৩৫০ পেজের সুন্দর একটি নসিহাত মূলক গ্রন্থ লিখেছেন, আমি মনে
করি কাওমী মাদ্রাসার যেই শিক্ষক ওই কিতাব পড়েনি, কিংবা সেই রকম এলেম নাই, তাহলে তাকে চাকরির আগে সেই গ্রন্থ পড়ে নেওয়া ওয়াজিব,,, তিনি সেখানে
আলেমদের মর্যদা কিভাবে সুরক্ষিত হয়, তাও লিখেছেন, ছোট ছোট বাচ্ছাদের দিয়ে মাদ্রাসা ওয়ালাদের #ভিক্ষাবৃত্তির তীব্র বিরোধিতা করেছেন,,
ছোট বাচ্ছাদের কে ভিক্ষায় নামানো ব্যতীত কিভাবে খুব সুন্দর ভাবে মাদ্রাসা চালানো যায়, তার সুন্দর কৌশল তিনি বর্ণনা করেছেন, তিনি আলেমদের কৌশলগত দূর্বলতা গুলি সেখানে উল্যেখ করেছেন, এবং সাথে সাথে তার সমধান ও দিয়েছেন।।

তিনি ওনার ওয়াজ নসীহত সমূহের মধ্যে মানুষকে
কিভাবে আল্লাহর সাথে জুড়ানো যায়, সেই দিকে বেশী
জোর দিয়েছেন,, ওনার শিষ্যদের যে যেখানে গিয়েছেন সেখানে এলমে নববীর বাগান গড়ে তুলেছেন, ওনার
শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মায়ারেফুল কোরানের রচয়িতা মুফতি শফি সাহেব রহঃ পাকিস্তান। আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী, ডঃ আব্দুল হাই রহ; শামসুল হক ফরিদপুরী রহঃ, মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ জ্বী হুযুর রহঃ, আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে ওনার এলেমী খেদমত থেকে উপকৃত হবার তাওফীক দান করুন।

05/05/2020

#তাজকিয়া_তাসাউফ_ইহসানঃ

"এ পর্যন্ত রচিত সকল কিতাবের সংস্কার করাও সম্ভব নয় এবং মানুষের মুখও বন্ধ করে রাখা যায় না। নতুবা আমাদের সাধ্যের ভিতরে থাকলে আমরা একে #তাজকিয়া বা #ইহসান নাম দিতাম, #তাসাউফ শব্দই ব্যবহার করতাম না"।

(আকাবির কা সুলুক ওয়া ইহসান, ভূমিকা দ্রষ্টব্য। আবুল হাসান আলী নদভী রঃ)

বাস্তবে এটা কখনো সম্ভব নয় এবং এটা ইসলাহের পন্থাও নয়। উচিত ছিল, যখন থেকে আমাদের এ উপলব্ধি হয়েছে, তখন থেকে এ জাতীয় শব্দগুলো নিজেরা পরিত্যাগ করা এবং কোরআন ও সুন্নাহর পরিভাষা ব্যবহারের প্রতি সকলকে উৎসাহিত করা।

নামাজ, রোজা, শবে বরাত, #তাসাউফ ইত্যাদির পরিবর্তে সালাত সিয়াম লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান #তাযকিয়া ও #ইহসান ইত্যাদির ব্যাবহার বাড়িয়ে দেওয়া।

কিন্তু আমরা তা করিনি বরং শরীয়াহর পরিভাষা থেকে বুযুর্গদের পরিভাষা গুলোকে অধিক বরকতময় মনে করেছি। (আফসোস আমাদের জন্য)

যেখানে শারঈ পরিভাষা ভিন্ন অন্য পরিভাষা ব্যবহারে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার সালাত কে "আতামা" বলতে নিষেধ করেছেন। তবে এ তো আরো ভয়াবহ।

এটা হাদিস বর্ণিত তাকাব্বুর এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছে না তো???
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"الكبر بطر الحق وغمط الناس"

অহংকার হল হককে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় করা।

(সহিহ মুসলিম, খন্ড 1 পৃষ্ঠা 65 হাদিস 147)

এসব পরিভাষা অবশ্যই বৈধ, কিন্তু ফিতনা কে অত্যাধিক উস্কানিদাতা। আর শারয়ী পরিভাষাই অধিক নিরাপদ ও সাওয়াবের ওয়াসিলাহ। এবং নতুন কিছু প্রবেশে বাধাদানকারী। যার প্রকৃষ্ট প্রমাণ আজকের দ্বন্দ্ব ও বিদআত গুলো। তাসাউফের ক্ষেত্রে যেটা আরো স্পষ্ট।

এর একটি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন আশরাফ আলী থানভী রহমাতুল্লাহ:

জাহের পন্থী আলেমরা বলেন, " #তাসাউফ কোন বিষয়ই নয় এসব আজেবাজে কথা। কোরআন হাদীসে আছে নামাজ রোজার কথা। এগুলো আদায়ে সচেষ্ট হওয়া উচিত। সুফিরা কোথা থেকে এসব ঝগড়া ফাসাদ আমদানি করেছে"? তাদের মতে কুরআন-হাদিস নাকি #তাসাউফ মুক্ত।

আর কট্টরপন্থী সুফিরা বলে থাকে যে, "কোরআন হাদিসে শুধু জাহেরী (বাহ্যিক) বিধানাবলী আছে। #তাসাউফ হলো বাতেনী বিষয়"। ভাবখানা এমন যেন (নাউজুবিল্লাহ) কুরআন হাদীসের কোনো প্রয়োজন নেই।

মোটকথা উভয় দলই কুরআন হাদিসকে #তাসাউফ মুক্ত মনে করে। অতঃপর নিজ নিজ খেয়াল খুশী মত একদল #ইলমে_তাসাওউফ কে বাদ দিয়েছে। আরেক দল বাদ দিয়েছে কোরআন হাদিস কে।

(তরিকুল কালান্দার, বাসায়েরে হাকীমুল উম্মত: ১০০)

এর একমাত্র কারণ " মূহদাস" (নব আবিষ্কৃত) পরিভাষা ।

আল্লামা নদভী অন্যত্র বলেছেন,

#তাসাউফের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও মূল তথ্যের ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই এটি অতি সুস্পষ্ট একটি বিষয়।কিন্তু দুটি বস্তু এর ক্ষতি সাধন করেছে। প্রথমটি হচ্ছে, #তাসাউফ সংক্রান্ত মাধ্যম পর্যায়ের বিষয়গুলোতে চরমপন্থা অবলম্বন।দ্বিতীয়টি হচ্ছে, পরিভাষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনের অতিরিক্ত গুরুত্ব প্রদান এবং এ বিষয়ে অনর্থক বাড়াবাড়ি।

( মুকাদ্দামা , অকাবির কা সুলুক ও ইহসান)

04/05/2020

অহংকার নিয়ে আরিফ আজাদ সাহেব হাফিজাহুল্লহু এর একটি লেখা। এক কথায় অহংকারের গোড়ার কথা বলেছেন।

যখন অন্তরে প্রবেশ করে, তখন আমাদের মধ্য থেকে যে জিনিসটা বিলুপ্ত হয়ে যায়, সেটা হলো বিনয়। কুরআনের দিকে তাকালে দেখি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা যখন সবাইকে আদেশ করলেন আদম আলাইহিস সালামকে সিজদাহ করার জন্য, তখন অহংকারের কারণে ইবলিশ তা মানতে পারেনি। ফলে, ইবলিশ অভিশপ্ত হয়।

ইবলিশ ভুল করলো। তার ভেতর দানা বেঁধে ছিলো অহংকার। সেই অহংকার তাকে ভুল স্বীকার করে, আল্লাহর কাছে নত হতে দিলো না। ফলে সে পথভ্রষ্ট হলো।

আবার, অন্তরে যখন বিনয় প্রবেশ করে, তখন সবার আগে যে জিনিসটা বিদূরিত হয় আমাদের মধ্য থেকে, তা হলো অহংকার।

আদম আলাইহিস সালাম এবং হাওয়া আলাইহিস সালামকে যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া'তায়ালা জান্নাতে থাকতে দিলেন, তাদের বলে দিয়েছিলেন একটা নির্দিষ্ট গাছের কাছে না যেতে। কিন্তু, ইবলিশের ওয়াসওয়াসায় পড়ে, তারা উভয়ে ওই গাছের কাছে যায় এবং ফলও খায়।

তারা ভুল করলেন ঠিক, কিন্তু ভেতরে ছিলো অহংকারের বদলে বিনয়। আর, সেই বিনয় তাদেরকে নত হতে বাধ্য করলো। তারা নিজেদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে মাফ চাইলেন এবং আল্লাহ তাদের মাফ করলেন।

জীবনে বিনয়ী হোন। জিতে যাবেন।

02/05/2020

☘ "আত্মশুদ্ধি" একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আত্মশুদ্ধি অর্জন জান্নাত লাভের উপায়।
আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার প্রভুর সামনে উপস্থিত হওয়াকে ভয় করে এবং নিজের অন্তরকে কুপ্রবৃত্তি থেকে দূরে রাখে, জান্নাতই হবে তার জন্য চূড়ান্ত আবাসস্থল (নাযি‘আত-৪০)।
মানুষের আত্মার পরিশুদ্ধির উপরই নির্ভর করে তার বাহ্যিক আচার-আচরণ।

আত্মা বিশুদ্ধ না হলে মানুষের আমলও বিশুদ্ধ হতে পারে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃহত্তর ও সুমহান যা নিয়ে এসেছেন তা হল অন্তরের সংশোধন ও পরিশুদ্ধতার ব্যবস্থাপত্র!!

🍁 আল্লাহ রাববুল আলামীন মানুষকে তিনটি বিশেষ উপাদান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। সেগুলো হলো, জ্ঞান, দেহ এবং আত্মা:

☘জ্ঞানকে দিকনির্দেশনা দেয় ঈমান,

☘দেহের কল্যাণ সাধন করে ইসলাম এবং

☘আত্মার পরিশুদ্ধি নিশ্চিত করে ইহসান।

একজন মানুষের পূর্ণাঙ্গ হয়ে উঠা এ উপাদানগুলোর সুষম সমন্বয়ের উপর নির্ভরশীল। এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক কঠিন ও আয়াসসাধ্য বিষয় হলো "ইহসান"। আত্মার পবিত্রতা অর্জনের সাথেই ইহসান সম্পৃক্ত।

মূলত মানুষের অন্তরজগত এমন একটি বিশাল জগত যার ব্যাপকতা দৃশ্যমান জগতের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
আবার এটি এমন এক স্থান একমাত্র আল্লাহ ছাড়া সেখানে অন্য কারোরই প্রবেশাধিকার নেই।
মানুষ তার প্রতিটি কাজ কি উদ্দেশ্যে করছে তার খবর কেবল তার আত্মাই জানে। আবার সমস্ত খবর সে বাইরে চেপে যেতে পারলেও নিজের অন্তরের কাছে সে কিছুই লুকাতে পারে না। সেজন্য অন্তরের এই গভীরতম প্রদেশটি মানুষের সবচেয়ে নিকটবর্তী ও সর্বাধিক আপন।
এ স্থানের সাথে প্রতারণা করার সাধ্য কারো নেই। পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অদৃশ্য ও অনুভূতিস্তরের এই স্থানটির গতি-প্রকৃতির উপরই নির্ভর করে তার বিস্তীর্ণ কর্মজগত।
এজন্য আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বার বার অন্তরাত্মাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যেমন তাকিদ দিয়েছেন তেমনি এটা অর্জনের উপরই মানুষের সফলতা, ব্যর্থতাকে নির্ভরশীল করে দিয়েছেন।

"আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি নিজেকে পরিশুদ্ধ করলো সে-ই সফল, আর ব্যর্থ সে-ই যে নিজের অন্তঃকরণকে কলুষিত করলো"
(শামস্ ৯-১০)

রাসূল (সাঃ) বলেন,
"সাবধান! মানুষের দেহের অভ্যন্তরে একটি পিন্ড রয়েছে, যদি তা পরিশুদ্ধ হয় তবে সমস্ত দেহই পরিশুদ্ধ হয়; আর যদি তা বিকৃত হয়ে যায় তবে সমস্ত দেহই বিকৃত হয়ে যায়। সেটা হল কলব বা আত্মা"।
(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/ ২৭৬২)

🍁"আত্মশুদ্ধির প্রকারভেদ"

আত্মশুদ্ধির বিষয়টি "দুই" ভাবে ব্যাখ্যা দেয়া যায়।

যাবতীয় পাপ, অন্যায় ও অপবিত্র কাজ থেকে মুক্ত হওয়া অর্থাৎ যাবতীয় অসৎগুণাবলী বর্জন করা।

অসৎগুণাবলী হলো- শিরক, রিয়া, অহংকার, আত্মকেন্দ্রিকতা, স্বার্থপরতা, হিংসা, ঘৃণা, কৃপণতা, ক্রোধ, গীবত, কুধারণা, দুনিয়ার প্রতি মোহ, আখেরাতের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া, জীবনের প্রতি অসচেতনতা, অর্থহীন কাজ করা, অনধিকার চর্চা প্রভৃতি।

উত্তম গুণাবলী দ্বারা আত্মার উন্নতি সাধন করা অর্থাৎ প্রশংসনীয় গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে পরিত্যাগকৃত অসৎগুণাবলীর শূন্যস্থান পূরণ করা।

সৎগুণাবলী হলো=>তাওহীদ, ইখলাস, ধৈর্যশীলতা, তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতা, তওবা, শুকর বা কৃতজ্ঞতা, আল্লাহভীতি, আশাবাদিতা, লজ্জাশীলতা, বিনয়-নম্রতা, মানুষের সাথে উত্তম আচরণ প্রদর্শন, পরস্পরকে শ্রদ্ধা ও স্নেহ, মানুষের প্রতি দয়া, ভালবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শন, ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ, পরোপকার প্রভৃতি।

🍁 "আত্নশুদ্ধির গুরুত্ব"

আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআনে আত্মশুদ্ধি অর্জনকারীর সফলতার নিশ্চয়তা ও তা পরিত্যাগকারীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ব্যাপারে এগারো বার কসম করেছেন

(সূরা শামস্)।

আত্মা মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রুতে পরিণত হয় যখন সে তাকে পাপাচার ও সীমালংঘনের দিকে আহবান করে। কেননা এই অপরিশুদ্ধ, পাপাচারী, ব্যাধিগ্রস্ত অন্তর মানুষকে আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

এজন্য রাসূল (সাঃ) অন্তরের অনিষ্ট থেকে অধিক পরিত্রাণ চাইতেন-
"হে আল্লাহ! তুমি আমার অন্তরকে আত্মরক্ষার ক্ষমতা দাও এবং তাকে পরিশুদ্ধ কর। তুমিই অন্তরের সর্বোত্তম পরিশোধনকারী এবং তুমিই তার অভিভাবক ও প্রতিপালক"
(মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৬০)।

আত্মা হল ঈমানের সংরক্ষণস্থল। আর ঈমান হল মানুষের সর্বাধিক মূল্যবান সম্পদ। যদি ঈমান না থাকে তাহ’লে মানুষের সমগ্র জীবনই বৃথা। তাই এ সম্পদকে সুরক্ষা ও তার পরিবৃদ্ধি সাধনের জন্য অন্তরজগতের পরিশুদ্ধি নিশ্চিত করতে হয়।

'‘হে প্রভু! আমাকে পরিশুদ্ধ করে দাও, আমাকে সংশোধন করে দাও এবং সৎকর্ম ও সৎচরিত্রের দিকে আমাকে পথ দেখিয়ে দাও। কেননা সুপথপ্রদর্শন করা ও কুপথ থেকে ফিরিয়ে আনার সাধ্য তুমি ব্যতীত কারো নেই’
(আল জামে‘ঊছ সাগীর হা/২১৪৬)।

🍁 "আল্লাহ আমাদের সকলকে পরিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন।"
(আমীন)
_________________________🍂

28/04/2020

#দুইটা মেয়ে একসাথে বাসে বসছে,,
একজনের আপাদমস্তক পুরো ঢাকা,হাত মোজা,পা মোজা,পুরো হিজাব দিয়ে আবৃত।
আরেকজন সেলোয়ার কামিজ,সুগন্ধি,রং চটা লিপস্টিক,আর কাজল মাখা দুটো ডাগর ডাগর চোখ নিয়ে পর্দাশীন মেয়েটির পাশে বসে রয়েছে।কিছুক্ষণ পর পর দুইজন দুইজনের দিকে বারবার তাকাচ্ছে,আর কিছু ভাবছে।
এভাবে অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পর হঠাৎ দুইজনেই ব্যাগ থেকে ফোন নামক যন্ত্রটাকে বের করেছে।তারপর তারা দুইজনে ফেসবুকে ঢুকে এতক্ষণ কি ভাবলো তা স্টার্টাস দিল।
পর্দাশীল মেয়েটির স্টার্টাস দিলো-'কিছু কিছু মেয়ে রাস্তায় এমন ভাবে চলাফেরা করে যে,এদের জাহান্নাম ছাড়া কোথাও জায়গা হবে না।অর্থাৎ এরা জাহান্নামের ইন্ধন।

আর রং চটা লিপস্টিক ঠোঁটের মেয়েটি স্টার্টাস দিলো-'দুনিয়াতে এমন কিছু মেয়ে আছে,যাদের চলাফেরা বেশভূষা দেখলে না চাইতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কথা স্মরণ হয়ে যায়।মনের অজান্তেই‌ চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে,আলাদা একটা শান্তি অনুভূতি হয়,আর নিজেকে তখন সবথেকে বড় পাপিষ্ট মনে হয়।আল্লাহ আমাকেও‌ পর্দা করে চলার তৌফিক দান করুন।
,
,
অতঃপর, একজন অহংকারের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল,আরেকজন অনুতাপের আগুনে পুড়ে খাঁটিসোনা হয়ে গেল।
আল্লাহ আমাদের অহংকার মুক্ত জীবনযাপন করার তৌফিক দান করুন।
কথাগুলো বোঝানোর জন্য হলেও এটাই বাস্তব।আমরা অনেক সময় নিজের আমল ও জ্ঞান নিয়ে অহংকার করে ফেলি।আল্লাহ যদি আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করে,তাহলে সর্বদা আল্লাহ শুকরিয়া করা উচিত।আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছে আল্লাহ।এটা নিয়ে আমাদের অহংকার এর কিছুই নেই।আর আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যারা সঠিক দাওয়াতের অভাবে আল্লাহর পথে আসতে পারে না।দাওয়াত পেলে নিজের গুনাহের জন্য অনুতাপ করে এবং আল্লাহর রাস্তায় ফিরে আসে।আর যারা দাওয়াত পাওয়ার পরেও ‌আসে না,তাদের সর্ম্পকে কিছু বলার নেই।হয়তো আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন।

পরিশেষে বলি,অহংকার খুব মারাত্মক জিনিস।একবিন্দু অহংকার আপনার পাহাড় সমান আমলকে নিমিষে ধ্বংস করে দিতে পারে।তাই সাবধান।
আল্লহ সুবাহানাহু ওয়া'তায়ালা,"অহংকারিকে পছন্দ করেন না"মনে রাখবেন।

Copy post

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Khanqah News24 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Khanqah News24:

Videos

Share

Nearby media companies


Other News & Media Websites in Dhaka

Show All

You may also like