অনুভূতির ঝুঁড়ি ツ

অনুভূতির ঝুঁড়ি ツ সুখ-দুঃখ-ব্যাথা-বেদনা নানান ধরণের অনুভূতির কিছু সংকলন

সংগৃহীত পোস্ট।।। 🥀একটা ব্যক্তিগত কাজে গত সপ্তাহে ব্যান্ডেল স্টেশনে বসে ছিলাম দুপুরবেলা। ট্রেনের খবর হতেই হেলতে দুলতে গিয়...
06/08/2023

সংগৃহীত পোস্ট।।।

🥀একটা ব্যক্তিগত কাজে গত সপ্তাহে ব্যান্ডেল স্টেশনে বসে ছিলাম দুপুরবেলা। ট্রেনের খবর হতেই হেলতে দুলতে গিয়ে ট্রেনে উঠলাম। দুপুরবেলার ডাউন ট্রেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই বেশ ফাঁকা। পুরো কম্পার্টমেন্ট জুড়ে আমি; আর দুজন মাঝবয়সী ভদ্রমহিলা এবং ভদ্রলোক। খুব সম্ভবত তারা একই ফ্যামিলির। চুপ করে জানলা দিয়ে বাইরে দেখছি। ট্রেন হুগলি ঢুকতে একটি স্বল্প বয়স্কা এবং স্বল্পবসনা তরুণী উঠলো ট্রেনে। কানে ইয়া গাবদা একটা মাথাজোড়া হেডফোন; চোখে মার গঙ্গা ঝিলিক ঝিলিক সানগ্লাস; পরনে টি'শার্ট-শর্টস আর টি'শার্টের বুকে লেখা- "Hi! I am dangerous."
মনে মনে ভাবলাম- খারাপ কিছু লেখা নেই।

এবার আমাদের মতো কিছু কিছু মানুষের যেমন মুরগির লেগ পিস; পাঁঠার লেগ পিস পছন্দ হয়! আমরা তা নিয়ে ফ্যাসানাইজেশন করি.. ঠিক তেমনি কিছু কিছু মানুষের মহিলাদের 'লেগ পিস' বড় পছন্দের। তারা তা দেখেই দিন গুজরান করে। কখনো বেশি ফ্যাসনাইজেশন করে ফেললে অল্প আধটু; ছোট খাটো রেপ-টেপ হয়! অবশ্য তাদের দোষ কি? মেয়েরা অভাবে লেগ পিস দেখাবেই বা কেন? এই যদি কেএফসি'র মালিকের কাছে গিয়ে কোনো মুরগি নিজের লেগ পিস দেখায়! সে কি আর বেঁচে ফিরবে? এই জন্যেই বলে মেয়েদের কমন সেন্স কম। বিশেষ করে আমাদের জেনারেশনের। তো পাশের কাকু মেয়েটির পা জেরক্স করতে ব্যস্ত! ঠিক সেই সময় চন্দননগর থেকে উঠলো এক কমলা-কালো লজেন্স বিক্রেতা দাদু। পরনে আধ ময়লা সাদা জামা; নিচে আধ ময়লা ধুতি। পায়ে একটা শতচ্ছিন্ন হাওয়াই চপ্পল। দাদু উঠতে গিয়েই গেটের সামনে রাখা কিছু ঝুড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে লজেন্সের প্যাকেট'টা হাত থেকে ছিটকে গিয়ে সব পড়ে একাকার অবস্থা। নিজেই কুড়োলেন সব; দিয়ে 'আই লজেন, আই লজেন' করতে করতে ওপার থেকে ঘুরে আমাদের দিক'টা এসে বসলেন।

দাদুর পায়ের দিকে চোখ পড়তে চমকে উঠলাম! সাদা হাওয়াই চপ্পল'টা রক্তে ভিজে পুরো লাল! দাদু নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে; চটি'টা খোলবার চেষ্টা করছেন। আমি আর থাকতে পারিনি। পকেটে রুমাল ছিল; ব্যাগ থেকে জলের বোতল'টা বের করে সোজা দাদুর পায়ের কাছে বসে গেছি; ট্রেনের তলাতেই! দাদু অপ্রস্তুতে। মুখে খালি বলছেন- "আমায় দাও। আমায় দাও। বাবা তুমি বসো। পায়ে হাত দিও না।" দেখলাম শীর্ণ পায়ের দুটো আঙুলের মাঝে চামড়া'টা 'হাঁ' হয়ে আছে। গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে.. বেরিয়েই যাচ্ছে!

ঠিক সেই সময় পিছন থেকে অবাক করা মেয়েলি কণ্ঠস্বর- "দাদা! তুমি রুমাল দিয়ে চেপে রাখো। আমার ব্যাগে ব্যান্ড এইড থাকে। বার করছি। একটু চেপে রাখো।" আমি একবার মেয়েটা'কে দেখলাম; একবার দাদু'কে। পাশের যে মাঝ বয়সী লোকটি এতক্ষন বুভুক্ষু আরশোলার মতো মুখ করে মেয়েটির পা প্রদক্ষিণ করছিল সূর্যের মতো; তিনিই প্রেগন্যান্ট তিমির মতো মুখটা করে বললেন- "বয়স হয়েছে। এখনো ট্রেনে ট্রেনে ঘুরে বেড়াও কেন। চোখের মাথাটা তো এক্কেবারে খেয়েছো।"
খিস্তি আমি দি না। তখনও তাই মুখ দিয়ে বেরোয় নি।

মেয়েটি ব্যাগ ওল-ঢাল করে তিনখানা ব্যান্ড এইড খুঁজে আমার পাশেই বসে পড়লো নোংরা ট্রেনের তলায়! সেই ভদ্রলোক এবার মজা পেয়েছেন! যতই হোক শর্টস পরা মেয়ে বসলে কি লোভনীয় দেখতে লাগে বলুন দিকি? এই লোভ যদি আপনার না থাকে; আপনি মাইরি পুরুষই নন! তো আমি দাদুর দুটো আঙ্গুল ধরেছি; মেয়েটি জল দিয়ে ধুচ্ছে। ধুয়ে ক্রস করে ব্যান্ড এইড লাগাচ্ছে। পরপর তিনটে। বেশ বুঝতে পারছি শরীরের জোর না থাকায় দাদু একটু একটু কাঁপছেন। আমার ব্যাগে কোনো খাবার ছিল না। এ'দিকে দাদু নামবেন বেলুড়। এই অবস্থায় নামবেন কি করে? মেয়েটি ব্যাগ থেকে একটা কেক বার করে দাদু'কে দিল। দাদুও খাবে না; মেয়েটিও ছাড়বে না। বেলুড় আসতে আমি দাদু'কে ধরে গেটের সামনে নিয়ে গেলাম। জিগ্গেস করলাম- "স্টেশন থেকে কদ্দুর যাবে জেঠু?" দাদুর একগাল হেসে উত্তর- "এই পাশেই। অন্যদিন হেঁটে যাই। আজ টোটো করে নেব। তোমরা না থাকলে না.. লজেন খাবে? একটা খাও?" মেয়েটি শুনেই পাশ থেকে- "দাদা। আপনি নামবেন না। আমার লিলুয়ায় বাড়ি। আমি দাদুকে বেলুড়ে নেমে টোটো করে দিয়ে পরের ট্রেন ধরে নেব।"
দাদু হাঁ হাঁ করে উঠল- "না না। শোনো; আমি এবার পারবো। তোমরা আর কষ্ট করো না।"
মেয়েটি শুনলে তো?

বেলুড় স্টেশন যখন ট্রেনটা ছাড়ছে..
পরিষ্কার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি- একটা জেনারেশন 'Z'; আর একটা প্রায় ভেঙে পড়া বিস্মৃত হতে চলা জেনারেশনের হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে; খুব আস্তে আস্তে।
যেন "আমি আছি তো! আমায় ভরসা করো একটু। তোমার কিচ্ছু হবে না" গোছের ঠেকনা দেওয়া ভালোবাসা; জড়িয়ে ধরা শ্রদ্ধা; নিশ্চিন্ত আশ্রয়।

আমরা আজকালকার জেনারেশন'কে বড্ড শেখাই জানেন তো? অহেতুক তাদের খরচের খাতায় ফেলে দি; অহেতুক।
তারা যে কিছুই পারে না তা নয়; তারা 'গুড ফর নাথিং' নয়..
তারা 'বেস্ট ফর এভরিথিং'। তারা সব পারেনা; কিন্তু যেটা পারে সেটা মন দিয়ে পারে। স্বার্থত্যাগ করে পারে।

আজও বাসে অসুস্থ বোধ করলে এই জেনারেশন'ই জায়গা ছেড়ে দেবে।
আজও এই জেনারেশনের তৈরি করা মিম দেখেই আপনি হো হো করে হাসবেন।
আজও ফেসবুকে আপনি মন খারাপের কথা লিখলে; এই জেনারেশনের কেউ এসেই জিজ্ঞেস করবে- "কি হয়েছে দি?"

সেক্স চ্যাট; দু-চার লাইন সাহিত্য লিখে ইনবক্সে মেয়েদের খোঁচানো; বডি শেমিং- এসবের বাইরেও কিন্তু একটা জেনারেশন তৈরি হয়ে আসছে...

সবসময়েই কি সবকিছু খুঁজে পেতে গেলে একজোড়া চোখ লাগে? একটা মনও লাগে; অল্প বিবেক লাগে।
তাই না?

" ধন্য তোমার স্বার্থপরতা, ব্যস্ত তুমি তোমাকে ঘিরেই;
নাম না জানা 'তুমি' গল্পে; পার্শ্বচরিত্র আমি অগোচরেই। "

টিউশনি করানোর জন্য যে ছাত্রের বাসার দিকে যাচ্ছিলাম সে ছাত্রের সাথে আমার রাস্তায় দেখা। বাইকের পিছনের সিটে এক সুন্দরী রমণী...
05/08/2023

টিউশনি করানোর জন্য যে ছাত্রের বাসার দিকে যাচ্ছিলাম সে ছাত্রের সাথে আমার রাস্তায় দেখা। বাইকের পিছনের সিটে এক সুন্দরী রমণীকে বসিয়ে আমার ছাত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাকে দেখেই সে তড়িঘড়ি করে বাইক চালিয়ে চলে গেলো। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলাম, এখন ছাত্রের বাসায় যাবো কি যাবো না। কারণ ছাত্রতো আমার এখন মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন সময় ছাত্র আমায় ফোন দিয়ে বললো,
-" স্যার, আল্লাহর দোহাই লাগে আজ বাসায় যাবেন না। কারণ আমি বাবা মাকে বলেছি আপনার ডায়রিয়া হয়েছে তাই আজ আপনি পড়াতে আসতে পারবেন না। এখন যদি আপনি বাসায় যান তাহলে আমার খবর আছে।"

ছাত্রের কথা শুনে অবাক হয়ে বললাম,
-- দুনিয়াতে কি অন্য কোন রোগ ছিলো না? শেষে কিনা ডায়রিয়ার রোগী বানিয়ে দিলে। যায় হোক তা বাইক কোথায় পেলে?
-"বাইকটা আমার এক বন্ধুর। আর পিছনে যে মেয়েটা বসা ছিলো সে একান্তই আমার নিজের গার্লফ্রেন্ড। ওরে নিয়ে একটু ঘুরার জন্যই আপনাকে ডায়রিয়ার রোগী বানিয়েছি"

আমি আমার ছাত্র সৈকতের কথা শুনে হাসতে হাসতে ফোনটা রেখে দিলাম।
আসলে ও এমনিতে খুব চঞ্চল হলেও পড়াশোনায় খুবই ভালো আর খুবই মেধাবী। তাছাড়া আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা ছাত্র শিক্ষকের না বরং বন্ধুত্বের।

পরদিন যখন ছাত্রকে পড়াতে যাই তখন ওর চুল টেনে বললাম,
-- এখনো এইচএসসি পাস করো নি এর মধ্যেই গার্লফ্রেন্ড জুটিয়ে ফেলেছো? তা হেলমেট ছাড়া বাইক চালাও কেন? তাছাড়া এতো স্পিডে কি কেউ বাইক চালায়?

ছাত্র হেসে বললো,
-" স্যার, বাইকের পিছনের সিটে গার্লফ্রেন্ড বসলে বাইককে তখন বিমান মনে হয়। ইচ্ছে করে হাওয়ার গতিতে ছুটে যাই। সে যায় হোক, স্যার আপনি কখনো R15 বাইকটা চালিয়েছেন?"

আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম,
--না চালাই নি। কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?
-"আসলে বাবা বলেছে আমি এইচএসসি পরীক্ষার পর আমায় বাইক কিনে দিবে। তাই ভাবছিলাম এই বাইকটা নিবো"
আমি বললাম,
--সেটা পরে দেখা যাবে এখন পড়ায় মন দাও...

পড়ানো শেষে যখন চলে যাবো তখন ছাত্রের বাবা আমায় ডেকে বললো,
-" শুনলাম তোমার নাকি ডায়রিয়া হয়েছে? শরীরের অবস্থা এতোটাই খারাপ নাকি যে বিছানা নষ্ট করে ফেলেছো কয়েকবার । তা এখন শরীরের অবস্থা কেমন?"
কথাটা শুনে আমি যখন ছাত্রের দিকে রাগী চোখে তাকালাম তখন ও কোন রকম আমার সামনে থেকে চলে গেলো। আমি হালকা গলা কেশে বললাম
--জ্বী এখন ভালো।আচ্ছা আংকেল শুনলাম সৈকতকে পরীক্ষার পর বাইক কিনে দিচ্ছেন?
উনি হেসে বললো,
-"একমাত্র ছেলে আবদার করেছে না করি কিভাবে? আমার তো টাকা পয়সার অভাব নেই যে ছেলেকে একটা বাইক কিনে দিতে পারবো না। তাছাড়া সৈকত তো বাইক চালাতে পারে।”
আংকেলের কথা শুনে বললাম,
--আপনার টাকা আছে বলেই আপনি সন্তানকে বাইক কিনে দিবেন কিংবা সন্তান বাইক চালাতে পারে বলেই তাকে বাইক কিনে দিতে হবে বিষয়টা কিন্তু এমন না। বাইক চালানোর ক্ষেত্রে ম্যাচিউরিটির একটা বিষয় আছে। আমার মনে হয় না সৈকতের মাঝে সেই ম্যাচিউরিটিটা এসেছে। আপনি একটু বিষয়টা ভেবে দেখবেন।
কথাগুলো বলে আমি চলে গেলাম—

আমার কথাগুলো সেদিন আংকেল বুঝতে পেরেছিলো কিনা জানি না। কিন্তু পরীক্ষার পরেই ছেলেকে তার পছন্দের বাইক কিনে দিয়েছিলো।
যেদিন সৈকতের রেজাল্ট দিলো সে সবার আগে আমাকে ফোন করে জানালো সে এ প্লাস পেয়েছে।তার ঘন্টাখানিক পরেই আমাকে ফোনে জানানো হলো সৈকত মারা গেছে। খবরটা পেয়ে পাগলের মতো ছুটে গেলাম ওদের বাসায় । বাসায় এসে দেখি মৃতদেহটা মেঝের উপর সাদা কাফনের কাপড়ে ঢেকে আছে। ছাত্রের মা শেষবারের মতো ছেলের মুখটা একবার দেখতে চাইছে কিন্তু কেউ উনাকে দেখতে দিচ্ছে না। আংকেলকে দেখলাম ছেলের রক্তেভেজা রেজাল্ট কার্ডটা নিয়ে পাথরের মতো সোফাই বসে আছে। আমি মৃতদেহের পাশে বসে যখন কাফনের কাপড়টা সরালাম তখন আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না। দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে বসে বমি করতে লাগলাম। কেউ একজন এসে আমায় পানির বোতল দিয়ে বললো,
-"ভাই কোন সমস্যা?"
আমি মুখে কিছু না বলে হাতের ইশারায় বললাম কোন সমস্যা নেই, আপনি চলে যান।

লোকটা চলে গেলে আমি চোখে মুখে পানি দিলাম। এখন বুঝতে পারছি সৈকতের মাকে কেন শেষবারের মতো সন্তানের মুখটা দেখতে দিচ্ছে না। মুখ থাকলে তো দেখতে দিবে। শুধু গলা থেকে দেহটা পরে আছে। খুব চেষ্টা করছি নিজের কান্নাটা আটকে রাখতে কিন্তু পাচ্ছি না। কষ্টে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।

সৈকতের এমন করুণ মৃত্যুর জন্য ওর মা বাবাও অনেকটা দায়ী। অনেক বাবা মা আছে নিজেদের সামর্থ্য থাকলেই সন্তান যা আবদার করে তা পূরণ করে দেয়। কিন্তু একটা বার ভেবে দেখে না সেটা সন্তানের জন্য ঠিক কিনা। দূর্ঘটনা কখনো বলে আসে না, তাই বলে নিজের আনম্যাচিউর ছেলের হাতে বাইকের চাবি তুলে দিয়ে তারপর নিজের কপালের দোষ দিবেন সেটা তো ঠিক না। গতবছর বাইক এক্সিডেন্টে মারা যায় ২ হাজার ২১৪ জন যাদের প্রায় ৯০% তরুণ৷ এ বছর প্রথম চার মাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৮৩০ জন এরাও প্রায় সবাই তরুণ৷
মহামারীর নাম " বাইক এক্সিডেন্ট "৷
আপনার সন্তানকে তখনই বাইক কেনার পরামর্শ দিন যখন সে বাইকের দায়িত্ব নিতে শিখেছে৷ পোষ্ট টা সব বাবাদের কাছে শেয়ার করে পৌছে দেন।

-মরণ ফাঁদ
কপিরাইট -আবুল বাশার পিয়াস

নতুন অধ্যাপক তাঁর ক্লাস নিতে শুরু করলেন। এমতাবস্থায় ছাত্রদের মধ্যে কেউ একজন জোরে শিস বাজালো। অধ্যাপক জিজ্ঞেস করলেন, কে ...
05/08/2023

নতুন অধ্যাপক তাঁর ক্লাস নিতে শুরু করলেন। এমতাবস্থায় ছাত্রদের মধ্যে কেউ একজন জোরে শিস বাজালো।

অধ্যাপক জিজ্ঞেস করলেন, কে শিস দিয়েছে?

কেউ উত্তর দিলোনা। সবাই চুপ। সবাই এমন ভাব করেছে যেন কেউ কিছু শুনেনি বা দেখেনি।
অধ্যাপক শান্তভাবে বললেন, আজ আর লেকচার দেবোনা। তবে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি গল্প শোনাব তোমাদের।

গতকাল রাতে গাড়ি চালানোর সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের এক কোণে একজন তরুণী মেয়েকে দেখলাম অসহায় ভাবে দাড়িয়ে আছে! প্রথম নজরেই প্রেমে পড়ে গেলাম।

আমি আমার গাড়িটি ঘুরিয়ে তাঁর পাশে থামাই। গাড়ির কাচ নামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, 'আমি কি আপনাকে কোনো সহায়তা করতে পারি?

তিনি মৃদু হেসে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'আমি কি তাকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিতে পারবো?
আমি গাড়ি থেকে নেমে তাকে আমার সামনের দরজা খুলে দিলাম। তিনি আমার সাথে সামনের সিটেই বসলেন!

অতঃপর আমরা দুজনে পরিচিত হতে গিয়ে বললাম, আমি আপনাদের এলাকারই পাশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক!

আরো কিছুক্ষণ গল্প করতেই তার বাসায় সামনে চলে আসলাম, বিদায় নেয়ার সময় সে আমাকে বললো, শুনুন, আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করেছেন, আমার ভাই সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। মানে আপনারই ছাত্র হবে। আপনি ওর দিকে একটু খেয়াল রাখবেন যেন ঠিকমতো পড়াশুনা করে।

আমি বললাম, তোমার ভাইয়ের নাম কি?

আমার নব্য প্রেমিকা বললো আপনি আপনার বুদ্ধি দিয়ে খুঁজে বের করবেন তাকে। তাই আমি তাঁর নাম বলছি না। তবে আমার ভাইয়ের একটা বৈশিষ্ট আছে যা দিয়ে আপনি তাকে চিনতে পারবেন।

বললাম, আচ্ছা। তাহলে বলো কি সেই বৈশিষ্ট?
আমার প্রেমিকা বললো, সে প্রায়ই হঠাৎ জোরে শিস দেয়!

পুরো ক্লাসের সমস্ত চোখ তৎক্ষণাৎ যে ছেলেটি শিস দিয়েছিল তাঁর দিকে ঘাড় ফিরিয়ে তাকিয়ে রইলো।

অধ্যাপক ধীরে ধীরে বললেন: "আমি সাইকোলজিতে আমার পিএইচডি ডিগ্রিটি কিনিনি, আমি এটি অর্জন করেছি"

(সংগৃহীত)

A true story,আমার পৈতৃক বাড়ি ভোপালে, কর্ম সুত্রে এখন চেন্নাইয়ে থাকি। হঠাত একদিন আমার বাবা একটি   বিশেষ দরকারে ভোপালে সত...
05/08/2023

A true story,

আমার পৈতৃক বাড়ি ভোপালে, কর্ম সুত্রে এখন চেন্নাইয়ে থাকি। হঠাত একদিন আমার বাবা একটি বিশেষ দরকারে ভোপালে সত্তর চলে আসতে বললেন। আমি সেই মত office এর সব কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি সব জিনিস গুছিয়ে railway station এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম।

গ্রীষ্মকালীন অবকাশের জন্য অত্যন্ত ভীড়, তাই রিজার্ভেসন পেলাম না । সামনের platform এ grand trunk express দাড়িয়ে। কোনও চিন্তা না করে ভীড় ঠেলে একটি second class sleeper কামরায় উঠে পড়লাম। ভেতরেও একই অবস্থা। কোনও মতে ভীড় ঠেলে ঢুকে দেখলাম সাইড বার্থ এ এক ভদ্রলোক শুয়ে আছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, - ' আমি কি এই কোনে একটু বসতে পারি?' ।

ভদ্রলোক স্মিত হাসিমুখে বললেন-' বসুন। আমি ধন্যবাদ জানিয়ে বসে পড়লাম।

ট্রেন চলা শুরু করল এবং গতি বর্ধিত হয়ে চলল গন্তব্যর দিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রীরা নিজের নিজের বার্থ এ গুছিয়ে বসে যে যার খাওয়ার বের করে খাওয়ায় মনোনিবেশ করলেন। পুরো কামরাটা সব মিলিয়ে একটা অদ্ভুত খাওয়ার গন্ধে ভরে উঠল। আমি ভদ্রলোককে নিজের পরিচয় দিয়ে আলাপ শুরু করলাম--

'আমার নাম অলোক। ইসরো তে একজন বৈজ্ঞানিক। বাড়িতে একটা জরুরী কাজে হঠাত যেতে হচ্ছে। কোনও রিজার্ভেশন না পেয়ে sleeper coach এই যেতে হচ্ছে, অন্যথা আমি AC ছাড়া travel করিনা'।

----' বাঃ ইসরো তে বৈজ্ঞানিক, সে আমার co-passenger সে তো দারুন ব্যাপার, -ভদ্রলোক বললেন,-- আমার নাম জগন্নাথ রাও। ওয়ারান্গাল যাচ্ছি। এর কাছের একটি গ্রামে আমার বাড়ি আছে। মাঝে মধ্যেই সময় পেলে যাই। এবার ভদ্রলোক ব্যাগের থেকে টিফিন বাক্স বের করলেন। আমায় জিজ্ঞেস করলেন চলবে? বাড়ির তৈরি। আমি ইতস্তত করে না বললাম এবং নিজের টিফিন থেকে খাওয়া শুরু করলাম।

বার বার ভদ্রলোকের নাম টা খুব পরিচিত মনে হলো কিন্ত কিছুতেই মনে করতে পারলাম না।
যাক, ইতিমধ্যে অন্যান্য যাত্রীদের খাওয়ার পাট চুকেছে। সকলেই শোয়ার জন্য ব্যাস্ত।আমার সামনেই একটি পরিবার যাচ্ছে,বাবা-মা ও তাদের দুজন বয়স্ক ছেলে । আমি আমার মোবাইল ঘাটা শুরু করেছি।

ট্রেন ছুটে চলেছে speed বাড়িয়ে। হঠাত আমি দেখলাম আমার উল্টোদিকের এক যাত্রী 55-57 বছরের হবে, প্রচন্ড ব্যাথায় কাতরাচ্ছে, মুখ দিয়ে ফ্যানা বেরুচ্ছে। তার পরিবারের লোকেরা ভীত। জলও খেতে পারছেনা। আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম এট একটা এমারজেন্সির ব্যাপার। এখনই ডাক্তার দরকার।

কিন্ত sleeper coach এ কোথায় ডাক্তার? পরিবারের লোকেরা তখন হতভম্ব। তখনই জগন্নাথ রাও ( পাশেই শুয়ে ছিলেন) কি হয়েছে? আমি ঘটনা টি বলাতে জগন্নাথ রাও নিজের স্যুটকেস থেকে stethoscope বের করে অসুস্থ ভদ্রলোকের বুকে রেখে heartbeat শুনলেন। এবার জগন্নাথ রাও চেহারায় চিন্তার ভাঁজ দেখলাম। স্যুটকেস থেকে injection বের করে বুকে push করলেন। এবার বুকে চাপ দিয়ে রোগীর মুখে রুমাল দিয়ে নিশ্বাস দেওয়া শুরু করলেন। এভাবে কয়েক মিনিট CRP* দেওয়ার পর দেখলাম রোগীর ব্যাথার উপশম হলো ।

জগন্নাথ রাও আরও কিছু ওষুধ স্যুটকেস থেকে বের করে রোগীর ছেলে কে বললেন, চিন্তা কোরোনা। তোমার বাবার massive heart attack হয়েছিল,কিছুক্ষণ আগেও ওনার জীবন খুবই বিপদজনক ছিল। কিন্ত আমি যা করার করেছি উনি আপাতত বিপদ মুক্ত। আরও কিছু ওষুধ দিয়ে দিলাম।
এবার ছেলেটি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল, ' কিন্ত আপনি কে '?
"আমি একজন ডাক্তার। আমি আপনার বাবার case history এবং prescription লিখে দেব। আপনি সামনের স্টেশনে নেমে আর বাবা কে ভালো হাসপাতালে নিয়ে যান"।

যখন ডাক্তার নিজের letterpad এ লিখেছিলেন তখন pad এর প্রথম লাইন এর লেখা দেখে হঠাত সব কিছুই মনে পড়ে গেল আমার। লেখা ছিল--
Dr. Jagannath Rao,Cardiologist, Apollo Hospital, Chennai.

এবার আমার মনে পড়ল কিছু দিন আগে যখন বাবাকে নিয়ে চেক আপের জন্য গিয়েছিলাম, তখন ডা.রাও এর কথা শুনে ছিলাম। তিনি একজন নাম করা Cardiologist. ওনাকে দেখাতে হলে এক মাসের আগে appointment নিতে হয়। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম ওনার দিকে। এমন একজন স্বনামধন্য ডাক্তার sleeper class এ travel করেন আর আমি সাধারণ একজন scientist হয়ে গর্ব করে AC তে যাত্রার কথা বলছিলাম। এমন একজন মানুষ একজন সাধারণ মানুষের মত ব্যাবহার। যত ভাবছিলাম অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম।

পরের স্টেশনে রোগী কে নিয়ে পুরো পরিবারটি নেমে পড়ল TTE এবং মেডিক্যাল টিমের সাহায্যে ।
ট্রেন আবার চলতে শুরু করল। আমি কৌতুহল না চেপে এবার ডাক্তার কে জিজ্ঞেসই করে ফেললাম, ' আপনি এত কষ্ট না করে AC তে travel করতে পারেন তো' ।

ডাক্তার মৃদু হেসে বললেন,- আমি ছোট বেলায় যখন গ্রামে থাকতাম, তখন দেখতাম ট্রেনে কোনও ডাক্তারের ব্যবস্থা ছিল না বিশেষ করে second class এ। সেজন্য আমি যখনই কোথাও যাই second class এই যাই । আমার প্রয়োজন কারও লাগতেও পারে। কে জানে কারও হয়ত আমার প্রয়োজন হতে পারে। এই কারণেই আমি চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছি যাতে লোকের সেবা করতে পারি। আমাদের সেই শিক্ষা দিয়ে কি হবে যা দিয়ে কারও কোনও কাজে লাগবে না?

এরপর আরও অনেক কথা হল ডাক্তারের সাথে,যা শুনে আমি যেন কেমন হারিয়ে যাচ্ছিলাম কোথাও। অতঃপর ভোর চারটে। ট্রেন ওয়ারান্গাল স্টেশন পৌছল। ডাক্তার নেমে গেলেন। আমার বাকি যাত্রাটি কেটে গেল তার বসার জায়গার দিকে তাকিয়ে...কেমন যেন অদ্ভুত একটি সুগন্ধ ভরিয়ে তুলছিল...ঘ্রাণ পাচ্ছিলাম ঐ জায়গা থেকে,কিছুক্ষণ আগে যেখানে বসেছিলেন, একজন মানুষ যিনি কিভাবে মানুষের দুঃখ কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন।

এবার আমি বুঝতে পারলাম এই ভীড়েও এরকম সুগন্ধ কি ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল ট্রেনের কামরায। সুগন্ধ টি ছিল একটি মানবতার, একটি পূণ্য আত্মার,যা ঝাঁকুনি দিয়ে গিয়েছে আমার জীবন এবং চিন্তা ধারা কে.....
...তাই আমরা পরিবর্তিত হলে সময়ও পরিবর্তিত হবে....

(সংগৃহিত)

- একটা টিউশনি করবে?- কোথায়?- ভবানিপুরে।- ছাত্র না ছাত্রী?- ছাত্র। ক্লাস এইট।- ছাত্র পড়াব না।- পুলিশ অফিসারের ছেলে। বাবা ...
04/08/2023

- একটা টিউশনি করবে?
- কোথায়?
- ভবানিপুরে।
- ছাত্র না ছাত্রী?
- ছাত্র। ক্লাস এইট।
- ছাত্র পড়াব না।
- পুলিশ অফিসারের ছেলে। বাবা ডিআইজি। ভালো মাইনে দেবে। ভালো খাবার পাবে। আরে এতো বড়ো পুলিশের ঝাড়ুদার হতে পারাও ভাগ্যের। সুপারিশে চাকরিও হয়ে যেতে পারে। দুদিন পর আইজি হবেন।
-------------------------
রাজি হয়ে যাই রাজীবের প্রস্তাবে।
রাজীব বলল, মাইনে মাসে আটশ টাকা।
সে সময় আটশ অনেক টাকা। কিন্তু টিউশনিটা রাজীব নিজে না করে কেন যে আমাকে দিচ্ছে বুঝতে পারছিলাম না।
- তুমি করছ না কেন?
- আমার সময় নেই।
ডিআইজি সাহেবের ছেলের নাম অনি। ফর্সা, তবে ধবধবে নয় কিন্তু বেশ মায়াময়। বিশাল বাড়ি, বারান্দায় দামি ফুলের টব। চারিদিকে সমৃদ্ধির ছড়াছড়ি। রাজীব আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে গেল।
ছাত্রের মুখোমুখি হলাম।
- স্যার, বেড়াল প্রথম রাতেই মেরে ফেলা উচিত। আমার কথা নয়, আমার বাবার কথা, ঠিক না?
- ঠিক। কিন্তু বেড়াল কোথায়?
- আছে স্যার, আছে। অনেক বড়ো বেড়াল।
- আমি বেড়াল মারব কেন?
- একটা কথা বলব?
- বলো।
- আগের কথা আগে বলে দেওয়া ভালো। রাখলে আমারও লাভ আপনারও লাভ। নইলে দুজনেরই ক্ষতি। আমি চাই না আপনার ক্ষতি হোক।
- কী কথা বলে ফেল।
- আপনার মাইনের চল্লিশ পার্সেন্ট আমাকে দেবেন। আপনার মাইনে আটশ টাকা। চল্লিশ পার্সেন্টে হয় তিনশ কুড়ি টাকা। তবে আমাকে তিনশ দিলেই হবে, কুড়ি টাকা আপনার বখশিস। কী বলেন স্যার?
প্রথমে মাথাটা ঝিম ঝিম করে ওঠে। ইচ্ছে করছিল ঘুরিয়ে একটা চড় দিই। হাত এগিয়ে নিয়েই থামিয়ে ফেলি। মুহূর্তের মধ্যে স্বাভাবিক করে ফেলি আমাকে। তারপর সহজ গলায় আদর মেখে বললাম, কম নেবে কেন বাবা?
- এমনি।
- না, আমি পুরো তিনশ কুড়িই দেব।
- তাহলে স্যার খুচরো দিতে হবে। আমি একশ টাকার নিচে খুচরো রাখি না।
- তাই হবে।
বিচিত্র অভিজ্ঞতার আশায় আমার মনটা ফুরফুরে হয়ে ওঠে। মজার হবে টিউশনিটা, দেখি কতদূর যেতে পারে অনি। মাস শেষ হওয়ার কয়েক দিন আগে আমি একটি খামে করে তিনশ কুড়ি টাকা অনির হাতে তুলে দিই।
অনি যথাসময়ে টাকা পেয়ে খুশি।
হাসি মুখে বলল, স্যার, আপনি খুব ভালো মানুষ।
আমি বললাম, তুমি আমার কাছ থেকে শিখছ আর আমি শিখছি তোমার কাছ থেকে। দুজনের মাইনে ঠিক সময়ে দিয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে শ্রমের মর্যাদা মাসের প্রথমদিকে হাসার সুযোগ পায়।
অনি বলল, থ্যাংক ইউ স্যার। সব মানুষ যদি আপনার মতো হতো!
চার মাস পর ডিআইজি সাহেব পড়ার রুমে এলেন। এতদিন তাকে একবারও দেখিনি, বেশ গম্ভীর চেহারা, দেখলে সমীহ আসে। চোখের চশমায়, দামটা পুলিশের পোশাকের মতো ঝিলিক মারছে, হাতের ঘড়িতে আরও বেশি।তিনি অনির একটি খাতা হাতে তুলে নিয়ে দেখতে দেখতে বললেন, মাস্টার, আপনার মাইনে চারশ টাকা বাড়িয়ে দিলাম।
- কেন স্যার?
- আমরা পুলিশের লোক। গুণীর কদর করতে জানি। এ পর্যন্ত কোনো মাস্টার আমার ছেলের কাছে দুই মাসের বেশি টেকেনি। প্রত্যেকে আমার ছেলেকে বকা দিয়েছে, মেরেছে, অশ্রাব্য কথা বলেছে। ছেলে কেবল আপনারই প্রশংসা করেছে। আপনি নাকি ভালো পড়ান।
তিনি একটা কলম ও একটা ডায়েরি আমার হাতে দিয়ে বলেন, এগুলোর আপনার।
- থ্যাংক ইউ স্যার।
কলমটা ছিল সম্ভবত পার্কার। তখন তো আর মোবাইল ছিল না, ওই সময় পার্কার ছিল আমাদের কাছে স্মার্ট ফোনের মতো লোভনীয়।
সাহেব চলে যেতে অনি বলল : স্যার।
- তুমি কী কলম আর ডায়েরি হতেও ভাগ চাইছ?
অনি হেসে বলল, না স্যার। ও সবে আমার আগ্রহ নেই। টাকা হলে সব পাওয়া যায়।
- তবে?
- আমার পাওনা এখন চারশ আশি টাকা। আমি আশি টাকা নেব না, একশ টাকা নেব। তার মানে পাঁচশ টাকা।
- ঠিক আছে। তুমি আমার টিচার, তোমাকে কুড়ি টাকা বেশি দিতে না পারলে আমার জ্ঞান অর্জন হবে কীভাবে?
অনির হাসিটা আরও বিস্তৃত হলো। কমিশন নিলেও পড়াপাড়ি বেশ ভালোই হচ্ছে। আরও তিন মাস কেটে যায়। এরমধ্যে, আমার মাইনে আরও দুশ টাকা বেড়ে গেছে। অনিকে এখন টাকা দিতে কষ্ট হচ্ছে না।
সেদিন বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। অনিকে অন্যদিনের চেয়ে বেশ আনমনা মনে হচ্ছে।
বললাম, কী হয়েছে?
- স্যার, আমাকে একটা কাজ করে দিতে হবে।
- কী কাজ?
- একটা চিঠি লিখে দিতে হবে।
- চিঠি তো লিখেই দিই।
- স্কুলের চিঠি নয়।
- কোন চিঠি?
- আমার প্রেমিকা, সরি স্যার বান্ধবীকে দেওয়ার জন্য।
- কী লিখব?
- আপনার মতো করে আপনি লিখে দেবেন। আমি তাকে ভালোবাসি। তাকে না দেখলে বুকটা কেমন মোচড় খায়। কিছু ভালো লাগে না। সে খুব সুন্দর।
চিঠি লিখে দিলাম গভীর ভাষায়, প্রেমের মমতায়।
রাস্তায় এসে ইচ্ছেমতো হাসলাম। অনি আর রেহাই পাচ্ছে না।
-
খবর পাঠিয়েছে, শুক্রবার তাদের বাড়ি যেতে হবে। অনির জন্মদিন।
কী নিয়ে যাই?
অনেক চিন্তাভাবনা করে অনির বান্ধবীকে দেওয়ার জন্য একটা চিঠি লিখি।
অনি চিঠি পড়ে এত খুশি হয় যে, সে মাসের পুরো কমিশনটাই আমাকে ফেরত দিয়ে দেয়।
অবাক হয়ে বললাম, ফেরত দিলে যে?
অনি আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে বলল : আপনার লেখার সম্মানি। স্যার, চিঠিটা একদম ফাটাফাটি হয়েছে।
লেখার সম্মানি! আমি চমকে উঠি। লেখার প্রথম আয়, এ তো মস্ত ব্যাপার! তাহলে কেন এতদিন লিখিনি! অনির উৎসাহে উৎসাহিত হয়ে পত্রিকায় লেখা শুরু করি। তারপর আস্তে আস্তে লেখা আমার নেশা হয়ে যায়।
-
যতই গল্প করি, যতই প্রেমপত্র লিখে দিই না কেন, লেখপড়ায় অনিকে এমন কৌশলে ব্যস্ত রাখি যে, সে ধীরে ধীরে বইয়ে ঝুঁকে পড়ে, তার সব আনন্দ অন্যান্য জায়গা থেকে বইয়ের পাতায় এসে ভীড় করতে শুরু করে। আগে তার বাবাকে বলত চকলেটের কথা, এখন বলে বইয়ের কথা। আগে ইলেকট্রনিক্স জিনিসে তার আলমারি ছিল ভর্তি; এখন সেখানে ঠাঁই পেয়েছে বই, পৃথিবীর বিখ্যাত লেখকদের নানা বই। আমার কাছ থেকে নাম নিয়ে যায় বইয়ের, নিয়ে আসে তার বাবাকে দিয়ে। দেশে না পেলে বিদেশ থেকে। কত দামি দামি বই, আমার কাছে মনে হতো, সামর্থ্যবানদের ইচ্ছাই প্রাপ্তি।
আরও তিন মাস পর আমার মাইনে হয় পনেরশ টাকা। অনেক সরকারি অফিসারও তখন এত মাইনে পেতেন না। এখন অনির পাওনা গিয়ে দাঁড়ায় ছয়শ টাকায়।
মাসের শেষদিন অনিকে ছয়শ টাকা দিতে যাই। লজ্জায় চোখটা নিচু করে ফেলে সে। আগের মতো দ্রুত হাত এগিয়ে দিচ্ছে না।
- সরি স্যার।
- নাও তোমার টাকা।
- লাগবে না স্যার।
- আরে নাও। আমি অত টাকা দিয়ে কী করব?
- স্যার, একমাসে যতটাকা আপনাকে দিই, আমি একদিনে তার চেয়ে অনেক বেশি দামের চকলেট খাই। একটা চকলেটের দাম একশ টাকা, দিনে কুড়িটা চকলেট আমি একাই খাই। বাবার হুকুমে সুইজারল্যান্ড থেকে আসে।
তারপরও আমি বললাম, নাও।
- লাগবে না স্যার।
- আগে লাগত কেন?
- তাস খেলতাম, ওকে দিতাম। এখন তাস খেলা সময় নষ্ট মনে হয়, বই পড়ি।

আমি সাফল্যের হাসি নিয়ে বের হয়ে আসি।
অ্যানুয়াল পরীক্ষার পর অনির ওখানে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সাহেব বলেছেন এক মাস পর থেকে আবার পড়ানো শুরু করতে। আমার মতো ভালো মাস্টারকে তিনি ছাড়বেন না। বদলি হলে সেখানে নিয়ে যাবেন।
পনের দিন পর দেখি আমার মেস বাড়ির সামনে একটা বিরাট গাড়ি দাঁড়িয়ে।
হন্তদন্ত হয়ে বের হয়ে আসি।
অনি আর তার বাবা নামছেন।
সাহেব বললেন, মাস্টার আমার ছেলে থার্ড হয়েছে। এর আগে কোনোদিন পঞ্চাশেও ছিল না। এক বছরের মধ্যে আপনি আমার ছেলেটাকে বদলে দিয়েছেন।
ডিআইজি সাহেব আমার হাতে একটা ঘড়ি তুলে দিয়ে বললেন, আমার ছোট ভাই আমার জন্য সুইজারল্যান্ড থেকে এনেছেন। আপনাকে দিলাম। এটি কোনো বিনিময় নয়, উপহার; ভালোবাসার নিদর্শন।
আনন্দে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। এমনভাবে কেউ আমাকে কোনোদিন এমন উপহার দেননি।
অনি আমায় প্রণাম করে বলল, স্যার, আপনি আমাকে বদলে দিয়েছেনে।
- মাস্টার, অনি আমাকেও পাত্তা দিত না। এ ছেলের কাছে আমি ছিলাম কেবল টাকার ঝুড়ি। আপনি তাকে মানুষ করে দিয়েছেন। বলুন কীভাবে সম্ভব হয়েছে?
বললাম, ভালোবাসা, শুধুই ভালোবাসা।
- আপনি আমার কাছ থেকে কী চান?
- ভালোবাসা, শুধুই ভালোবাসা।
টিউশনি এবং ভালোবাসা
ঘটনার সময়কাল : জানুয়ারি ১৯৮৬।...
-

বিশিষ্ট লেখক ড. আমিন। "ভালবাসা, শুধুই ভালবাসা'' গ্রন্থে তার জীবনের সত্য ঘটনার অবলম্বনে ।

এরকম লেখা টাইমলাইনে না থাকাটা দুর্ভাগ্যের, তাই রেখে দিলাম ❤️

Collected

বাসে উঠে বসতে না বসতেই পাশের সীটের একটা সুন্দরী মেয়ে বলে উঠলো,"ও মাই গড! আপনি এতো সুন্দর কেনো?"আমার গায়ে হাত দিয়ে বলল আপ...
04/08/2023

বাসে উঠে বসতে না বসতেই পাশের সীটের একটা সুন্দরী মেয়ে বলে উঠলো,"ও মাই গড! আপনি এতো সুন্দর কেনো?"
আমার গায়ে হাত দিয়ে বলল আপনার বডি এতো সুন্দর কেনো??
নিশ্চয়ই জিম করেন?
জীবনে আব্বা-আম্মা আমাকে কালাচাঁদ ছাড়া ডাকে নাই।
গার্লফ্রেন্ড আদর করে কালু ডাকে।
কিন্তু আজ এই বাসে এই মেয়ে আমার মধ্যে এমন কি দেখে সুন্দর বলল বুঝতে পারলাম না। মনে মনে লজ্জা পাচ্ছিলাম।
একটু পর মেয়েটা আমার পাশে বসা ছেলেটাকে বলল,"এই যে ভাই আপনি উঠুন, আমি এই ভাইয়ের পাশে বসতে চাই।আপনি আমার সীটে বসুন।"
দেখলাম ছেলেটা সুড়সুড় করে পাশের সারির মেয়েটার সীটে গিয়ে বসল।
মেয়েটা বসল আমার পাশে। খেয়াল করে দেখলাম মেয়েটা বেশ সুন্দর।
কয়েকদিন আগে টিভির বিজ্ঞাপন দেখে একটা ফেসওয়াশ কিনেছিলাম।
বিজ্ঞাপনে বলা ছিল এই ফেসওয়াশ চার সপ্তাহ মাখলে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও চকচকে। কিন্তু দুই সপ্তাহেই যে কাজে দিবে এটা ভাবিনি।
মেয়েটা এবার বলল,"আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে??"
লোকাল বাসে সুন্দরী মেয়ে পাশে বসলে সব ছেলেরাই সিঙ্গেল হয়ে যায়।
তাহলে আমি কি দোষ করছি?
তাই মেয়েটাকে বললাম,"জ্বী না আমি সিঙ্গেল।"
মেয়েটা এবার সরাসরি বলল,"প্রেম করবেন আমার সাথে?"
মেয়েটার কথা শুনেই মনের মধ্যে জেমস ভাইয়ের "ঝাকানাকা দেহ দোলানা" গানটা বেজে উঠলো।
সারাজীবন গার্লস স্কুলের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়ে পটাতে পারিনি। যে মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছি সেই মেয়েই বলেছে,"আয়নায় নিজের চেহারা দেখতে। এক মেয়ে তো বলেই দিয়েছে কয়লা আর আমার চেহারার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই, দুইটাই কালা।
ইসস যদি পাশে বসা সুন্দরী মেয়েটার কথাটা ভিডিও করে ওদের দেখাতে পারতাম!!
মেয়েটাকে উত্তর দিতে যাবো এর মধ্যে আরেকটা মেয়ে পাশে এসে দাঁড়ালো।
দাঁড়িয়ে আমার পাশে বসা মেয়েটিকে বলল,"বাসে বসা সুন্দর ছেলেদের দেখলেই প্রেম করতে ইচ্ছে করে, না??"
এই ছেলেকে আমার পছন্দ হয়েছে। তুই অন্য কাউকে দেখ।"
দেখলাম আমার পাশে বসা মেয়েটা উঠে চলে গেলো।
এবার যে মেয়েটা এলো সে আরো সুন্দরী দেখতে। আমি তাড়াতাড়ি ফোন বের করে সামনের ক্যামেরায়
নিজের চেহারা দেখে নিলাম। সত্যি এটা আমি নাকি অন্য কেউ। নিজেকে "রেস থ্রির সালমান খান" মনে
হচ্ছিল, শুধু চশমাটাই নাই। বাসায় ভুলে সানগ্লাস ফেলে এসেছি বলে নিজের উপর রাগ হচ্ছিল। নতুন মেয়াটা এবার
বলল,"ওয়াও, আপনি আমার দেখা সেরা পুরুষ। প্রেম করবেন আমার সাথে??"
মেয়েটার কথা শুনে বুকের মধ্যে ধপাস ধপাস শুরু হয়ে গেলো। গর্বে বুক ফুলে উঠলো। মনে মনে সেই ফেসওয়াশ
কোম্পানি কে অনেক ধন্যবাদ দিলাম।
মেয়েটাকে উত্তর দিতে যাবো এমন সময় দেখি আরো তিনটা মেয়ে এসে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ওরা তিনজন একসাথে বলে উঠলো,"এই
ছেলে প্রেম করবে আমার সাথে??"
এবার আমার পাশের বসা মেয়েটা উঠে ওদের সাথে মারামারি শুরু করলো।
চারজন মেয়ে আমার চার হাত পা ধরে বাসের মধ্যে টানাটানি শুরু করলো।
একজন বলে এই ছেলে আমার, আরেকজন বলে,"না না এই ছেলে আমার।"
ওদের টানাটানি তে আমার গুলিস্তান থেকে কেনা নতুন শার্ট ছিঁড়ে গেছে। প্যান্ট ছিঁড়া ছিঁড়া অবস্থা।
নিজেকে সালমান খান ভাবা ছেড়ে টম ক্রুজ ভাবতে শুরু করলাম।
আহা!!সুন্দরী মেয়েরা আমাকে পাবার জন্য আজ
মারামারি করে। এই দিন যে আসবে কল্পনাও করিনি।
এর মধ্যে বাসের হেল্পার এক লাঠি নিয়ে দৌড়ে এসে
বলল,"ঐ তোরা সবাই বস, নাহলে কারেন্ট শখ দিবো।"
সাথে সাথে চারটা মেয়ে আমাকে ছেড়ে দিলে আমি গাড়ির মধ্যে ধপাস করে পড়ে গেলাম।
হেলপার কাছে এসে বলল,"ঐ মিয়া, আপনি কখন উঠলেন বাসে??
ও বুঝছি, সিগারেট কিনতে নামছিলাম তখনি উঠছেন তাইনা???
তাড়াতাড়ি নামেন ভাই, এই বাস পাবনা যাবে। বাসের
মধ্যে যারা আছে তারা সবাই পাগল। ওদের সবাইকে পাবনার মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।
হেল্পারের কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি পাবনার মানসিক হাসপাতালে।
,,,,,,বুজলি গোপাল আমার কপালে আর প্রেম হবে না রে.,,,,,,,,,

(সংগৃহীত)

শশুর বাড়ি যাচ্ছি। মিতু রেগে গিয়ে বলল, খালি হাতে কেউ শশুর বাড়ি যায়? আমার জীবনে দেখিনাই।আমারও তাই মনে হলো, খালি হাতে শশুর ...
03/08/2023

শশুর বাড়ি যাচ্ছি। মিতু রেগে গিয়ে বলল, খালি হাতে কেউ শশুর বাড়ি যায়? আমার জীবনে দেখিনাই।

আমারও তাই মনে হলো, খালি হাতে শশুর বাড়ি যাওয়া ঠিক হবে না। কিছু তো নেওয়া দরকার। কিন্তু কি নেওয়া যায়!

ভাবতে ভাবতেই চোখে পড়ল, রাস্তার পাশে এক ব্যাক্তি বিক্রি কারার জন্য বড় সাইজের দুইটা কাঁঠাল নিয়ে বসে আছে। আমি দামাদামি করে খুব সস্তায় কাঁঠাল দুইটা কিনলাম।

মাথায় কাঁঠাল নিয়ে মিতুর কাছে আসতেই মিতু রেগে বলল, তোমার মত মানুষ জীবনে দেখিনাই। তুমি মাথায় কইরা কাঁঠালের বোঝা নিয়ে শশুর বাড়ি যাইবা! একটু লজ্জা নাই।

মিতুকে থামিয়ে বললাম,
দেখো, কাঁঠাল নিয়ে একদম বাজে কথা বলবা না। এটা জাতীয় ফল। আর এত বড় কাঁঠাল তোমার বাবা জীবনে দেখেনাই।

কাঁঠাল দুইটা বেশ নরম ছিল। কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলাম, কাঁঠালের রস মাথা বেয়ে পড়ছে। আমি জিভ দিয়ে হালকা টেস্ট করলাম মিষ্টি কেমন। ভালই মিষ্টি।

শশুর বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। উঠানে শাশুড়ি দাড়িয়ে ছিল, আমার মাথায় কাঁঠাল দেখে তব্দা খেয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে। হয়তো এত বড় কাঁঠাল আগে দেখেনি।

আমি ঘরে কাঁঠাল রেখে বাইরে আসতেই দেখি, দুই শালী ও তাদের জামাই আসছে। তারাও দুইটা করে কাঁঠাল নিয়ে আসছে।

ফ্রেশ হয়ে, সবাই মিলে গল্প করছিলাম। কার কাঁঠালের কত দাম। এরই মধ্যে রাতে খাবারের জন্য শাশুড়ি ডাক দিল.....

তিন ভায়রা ভাই খেতে বসতেই শাশুড়ি, নিজ মায়ের মতো মমতা ভরা কন্ঠে বলল,
"এত কষ্ট করে কাঁঠাল আনছ, নাও খাও। বলেই এক বাটি করে কাঁঠাল আমাদের সামনে দিল।"

আমরা কাঁঠাল খেতে শুরু করলাম। খাওয়া শেষ হতে না হতেই, আরেক বাটি করে কাঁঠাল দিয়ে শাশুড়ি বলল, অন্য আরেকটা কাঁঠালের আরেক বাটি। আলাদা করে দিলাম, যাতে স্বাদটা বুঝতে পারো"

দুইটা কাঁঠাল নিছি, তাই সকলকে নিজ নিজ কাঁঠালের দুই বাটি করে কাঁঠাল দিছে। আমি দ্বিতীয় বাটি থেকে কাঁঠাল খেতে লাগলাম।

দ্বিতীয় বাটি কাঁঠাল শেষ হতে না হতেই, শাশুড়ি আরেক বাটি কাঁঠাল দিয়ে বলল,
"এই নাও, এটা আমাদের বাড়ির গাছের কাঁঠাল।"

লজ্জায় কেউ না করতে পারছিনা, আবার খেতেও পারছিনা। কোন রকমের তৃতীয় বাটি থেকে কাঁঠাল খেতে লাগলাম।

আমার পেটে আর একদম জায়গা নেই। তৃতীয় বাটি কাঁঠাল শেষ হতে না হতেই, শাশুড়ি আরেক বাটি কাঁঠাল দিয়ে বলল,
"এই নাও, এটা আমাদের পশ্চিম পাশের গাছের কাঁঠাল। খুব মিষ্টি।"

আমরা তিন ভায়রা ভাই, একে অন্যের মুখের দিকে তাকাতাকি করলাম।

ইচ্ছে করছে কাঁঠালের ভেতর ঢুকে যাই। এদিকে আমার পেটের অবস্থাও কাঁঠালের মতো গোল হয়ে গেছে। কত ইচ্ছে ছিল, শশুর বাড়ি এসে পোলাও কুরমা খাবো, তা আর হলো না।

হঠাৎ করে আমার পেট মোচড় দিয়ে উঠল। আমি কোন রকমে উঠে টয়লেটের দিকে দৌর দিলাম। টয়লেটে বসে কাজ সারছিলাম....

এরই মধ্যে ছোট ভায়রার গলা শুনতে পেলাম।
বাইরে থেকে পাদছে,
গাচ্ছে গান, ওগো ভাইজান,
আমারও পরাণ যাহা চায়,
হাগু তাই, হাগু তাই।

একটু পরই মেঝ ভায়রার গলা শুনতে পেলাম,
খোলেন খোলেন দ্বার
বন্ধ করে রাইখেননা আর,
বাহিরে আমরা দাঁড়িয়ে।
আপনি কী বুঝেন না এ জ্বালা,
কেমনে আছি খাড়ায়ে!

রাতটা কিভাবে কেটেছে, তা বলে বুঝানো যাবে না।

পরদিন সকালে তিন ভায়রা মিলে গল্প করছি। পেটের অবস্থা সবারই খারাপ, থম থম হয়ে আছে। শাশুড়ি সকলের জন্য চা নিয়ে এসেছে। প্লেটে করে নিয়ে এসেছে, কাঁঠালের বিচি ভাজা। আমাদের সামনে প্লেট রেখে বলল,
"খালি পেটে চা খাওয়া ঠিক না। কাঁঠালের বিচি ভাজা খেয়ে, তারপর সবাই চা খাও।"

রাগে শরীরটা জ্বলে যাচ্ছে। দাঁত কিটমিট করে বসে রইলাম। কেউ কিছু খেলাম না। শুধু ছোট ভায়রা চা দিয়ে দুইটা কাঁঠালের বিচি খেল।

একটু পর সাকালের নাস্তার জন্য তিন ভায়রা বসে আছি। সবাই ভয়ে আছি, আবার না কাঁঠাল নিয়ে আসে। কাঁঠাল দেয়নি ঠিক, তবে যা দিছে কি আর বলব। ভুনা খিচুড়ি রান্না করছে কাঁঠালের বিচি দিয়ে, সাথে কাঁঠালের বিচি দিয়ে ভর্তা করা হয়েছে।

আমরা একজন আরেক জনের মুখের দিকে চেয়ে আছি। কি আর করব। উপায় না পেয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য কোন রকমে একটু খেলাম।

নাস্তা করার পর তিন জনেই মন খারাপ করে বসে আছি। শশুর বাড়ি এসে এসব খাবার খেতে হচ্ছে। দুই ভায়রা আমার প্রতি বেশ রেগে আছে। আমি হলাম সবার সিনিয়র। আমি সবার বড় হয়েও মুখবুজে কেন চুপ করে আছি। তাদেরকে সান্তনা দিয়ে বললাম, দুপুরের খাবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। তারপর কোন সিদ্ধান্ত নিব।

দুপুরে, প্লেটে ভাত নিয়ে বসে আছি। এমন সময় শাশুড়ি গোমরা মুখ করে বলল,
"মোরগ কাটতে গিয়ে হাত ফসকে ছুটে গেছে। কাঁঠালের বিচি দিয়ে ডাল রান্না করছি। কষ্টকরে খেয়ে নাও।"

শাশুড়ি মায়ের মতো, তাই কিছু বললাম না। কোন রকমে খেয়ে উঠলাম।

দুই ভায়রা আমার উপর বেশ রেগে আছে। বিকালে কাঁঠাল বাগান দিয়ে তিনজনে হাটতেছিলাম, আর কি করা যায় তাই নিয়ে ভাবতে ছিলাম।

সন্ধ্যার একটু আগে। শশুর, শাশুড়ি, শালী, তিন ভায়রা সবাই মিলে গল্প করছি।

হঠাৎ করে শশুর বলল,
"তোমাদের তিন জামাইয়ের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা হোক। এই প্রতিযোগিতা একটু ভিন্ন নিয়মে হবে। এখান থেকে তিনজনে দৌড় দিবে। যে পেছনে পড়বে, তাকে একলা একটি কাঁঠাল খেতে হবে।"

এমন প্রতিযোগিতার কথা শুনে, আমার চোখ দিয়ে জল বের হবার উপক্রম। দুই ভায়রার মুখের দিকে চেয়ে দেখি, তাদেরও একই অবস্থা।

পাশ থেকে মিতু ও দুই শালী বলল, দারুন মজার প্রতিযোগিতা।

মনে মনে বললাম, হায় রে হারামজাদীর দল। সবাই মিলা এইভাবে কাঁঠাল খাওয়ানোর প্লান করছ।

কি আর করব। কোন উপায় না পেয়ে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম।

তিন জনে লাইনে দাড়ালাম। পেছন থেকে শশুর হাতে তালি দেওয়ার সাথে সাথে, দিলাম দৌড়। এক দৌড়ে বাড়ি চলে আসছি। এরপর বহু বছর কেটে গেছে, কাঁঠালের সিজনে আর কোনদিন শশুর বাড়ি যাইনি।

Collected from Md. Asraful Islam's wall

।।আসুন একটু হাঁসি আর একটু বাঁচি।।একজন ৮০ বছর বয়সের ভদ্রলোক ডাক্তারের কাছে গেছেন জেনারেল চেকআপের জন্য। ডাক্তার ওনার শরীরে...
02/08/2023

।।আসুন একটু হাঁসি আর একটু বাঁচি।।

একজন ৮০ বছর বয়সের ভদ্রলোক ডাক্তারের কাছে গেছেন জেনারেল চেকআপের জন্য। ডাক্তার ওনার শরীরের অবস্থা দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন !! জিজ্ঞেস করলেন...

ডাক্তার: "আপনার এত সুন্দর স্বাস্থ‍্যের রহস্যটা কী? নিশ্চই খুব স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন? ব্যায়াম করেন, খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোল করেন?"

ভদ্রলোক: আমি দুবেলা ভরপেট খাই। রাতে দু থেকে তিন পেগ রাম খাই। দিনে এক প্যাকেট সিগারেট খাই। সূর্য ওঠার অন্তত দুঘন্টা পরে উঠি। কোনরকম ব্যায়াম ট্যায়ামের ঝামেলায় যাই না। হতে পারে এইরকম আনন্দে বাঁচাটাই আমার সুন্দর স্বাস্থ্যের রহস্য।"

ডাক্তার: আপনার বাবা যখন মারা যান তখন ওনার বয়স কত ছিল?

ভদ্রলোক: আমার বাবা মারা গেছে? আপনাকে কে বললো?

ডাক্তার: "আপনার ৮০ বছর বয়স আর আপনার বাবা এখনো বেঁচে আছেন !! তা হলে ওনার বয়স কত?"

ভদ্রলোক: _ওনার বয়স ১০২ বছর, উনিও রোজ আমার সাথে বসে দু'তিন পেগ রাম খান। কাল রাতেও খেয়েছেন।

ডাক্তার: এতো খুব ভালো কথা, আপনাদের পরিবারের সবাই দীর্ঘদিন বাঁচে। আপনার ঠাকুরদাদা যখন মারা যান, ওনার বয়স কত ছিল?"

ভদ্রলোক: আমার ঠাকুরদা মারা যাবেন কেন, উনি বহাল তবিয়তেই আছেন, ওনার বয়স এখন ১২৩

ডাক্তার: ঠাকুরদাও! উনিও কি কাল রাম খেয়েছিলেন?

ভদ্রলোক (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে): নাঃ, কাল উনি খেতে পারেননি। কাল ওনার ফুলশয্যা ছিল।

ডাক্তার: এই বয়সে ওনার বিয়ে করতে ইচ্ছে হলো?

ভদ্রলোক: ইচ্ছে নয়, উনি বাধ্য হয়েছেন। কারণ মেয়েটি অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েছিল

ডাক্তারবাবু সেইদিন থেকে রোজ রাম খাচ্ছে😜😃

# পোষ্ট সংগ্রহীত #

Address

Mirpur
Dhaka
1216

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when অনুভূতির ঝুঁড়ি ツ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category