07/05/2022
এবার ঈদে মটরবাইক্ দুর্ঘটনায় বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে !
বুয়েটের গবেষণা অনুযায়ী দুর্ঘটনার শিকার বাইকারদের মধ্য ৭০% এর বয়স ১৬-২৮ এর মধ্যে, ইদের সময় ও দেখি তাই, এর কারনগুলো খুজতে যেয়ে নিজের চিন্তাভাবনা থেকে নিচের কারনগুলো খুজে পেলামঃ
১. হিরোইজমঃ বাইকে বসলেই এরা নিজেকে ধুম ছবির জন আব্রাহাম মনে করে। ইদের দিন রাস্তায় মেয়েরা ঘুরতে বের হয় তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা, অযথা হর্ন দেয়া, তাদের সামনে চুল উড়িয়ে বাইক চালিয়ে একটু নায়ক ভাব নেয়া।
২. পার্সনালিটি কনফ্লিক্টঃ সমবয়সী কেউ যদি এদের বাইক ওভারটেক করে, এটা এরা হজম করতে পারে না, ঐ বাইককে এদের ধরা ই লাগবে, নইলে বন্ধু মহলে ইজ্জত শেষ।
৩. বাইক ফ্যাক্টরঃ প্লাটিনা নিয়ে আমার পালসারের আগে চলে গেলো, ও জিক্সার দিয়ে আমার ৪ভিরে খাইয়া দিলো, ওরে খাইছি আইজকা।
৪. ফিটনেস বিহীন বাইকঃ বাইকের কোন সার্ভিস নাই, ব্রেক নাই, লুকিং গ্লাস নাই, টায়ারের ভিট নাই, শুধু হাওয়া ৩৫ আর ৪৫ থাকলেই হলো, ব্যস।
৫. অপেশাদারিত্বঃ পেশাদার বলতে আমি শুধু যাদের বাইক আছে, রেগুলার চালায়, বাইকের সবকিছু ওকে থাকে, নিজের বাইকের খুটিনাটি যাদের জানা থাকে তাদের বুঝিয়েছি, প্রচলিত অর্থে নেয়। যাদের বাইক নাই হঠাৎ একদিন মামা, চাচা, দুলাভাই, বন্ধুর অথবা বাইক ভাড়া নিয়ে বের হওয়ার পরে আর পায় কে? যারা রেগুলার বাইক চালায় তাদের চালানোর ধরনই আলাদা, তাদের পজিশন সেন্স, নিজের বাইকের ব্রেকিং ডিস্টেন্স সবই তাদের জানা থাকে, এদের কাছে এগুলো পাবেন না, কারন এরা ঐ একদিনের ড্রাইভার।
৬ঃ ফ্যামিলির প্রতি দায়বদ্ধহীনতাঃ বয়স কম কারেন্ট বেশি, ফ্যামিলির প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নাই, একটা দুর্ঘটনা যে একটা ফ্যামিলির জন্য কত বড় একটা ডিজএস্টার এরা কখনো চিন্তা ও করে দেখেনা।
৭ঃ টিকটক, লাইকির মত ভাইরাস এপে লাইক, কমেন্ট বা ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা।
৮ঃ রেসের উস্কানিঃ অন্য বাইককে ওভারটেক করার সময় বিরক্তিকর হর্ন দেয়া, থাম্বস ডাউন দিয়ে রেসের জন্য অন্য বাইকারকে উস্কানি দেয়া।
৯ঃ হেলমেট, গ্লাভস, প্যাড, জুতা, ড্রাইভিং লাইসেন্স এগুলো এসের কাছে হাসির খোরাক, আমাদের দেখলে এরা কয় ভয়ে এত কিছু পরা লাগলে বাইক চালানোর দরকার কি?
১০ঃ সিটিং পজিশনঃ বাইকের ফুটরেস্টের উপর এদের "ঠ্যাং চ্যাগাইয়া" বসার রহস্য আমি আজও উদঘাটন করতে পারলাম না। আপনারা পারলে জানায়েন।
একটা বাস্তব ঘটনা দিয়ে শেষ করি-
৩/৪ বছর আগে ইদের পরের দিন দেশের বাড়ি যাচ্ছিলাম, কাশিয়ানি ভাটিয়াপাড়া মোড়ে দেখলাম এক লোক একটা ক্রাশড বাইক নিয়ে গ্যারেজে আসলো, জিজ্ঞেস করলাম ভাই কেম্নে হইলো, বললো তার শালা চুপ করে চাবি নিয়ে আরেক বন্ধুকে নিয়ে বেরোয়ছিলো, জিজ্ঞেস করলাম সেকি এইপারে আছে, না ওইপারে গ্যাছেগা? বললো গোপালগঞ্জ ২৫০ বেডে আছে।
যারা বুঝমান/অভিজ্ঞ রাইডার আছেন তাদের কাছে অনুরোধ অন্তত ১ জন ছোট ভাই কিংবা তার বন্ধুরে বোঝান, গ্রুপে ৫০ হাজার এক্টিভ রাইডার আছে ১ জন করে বোঝালেও ৫০ হাজার রাইডার সেফলি রাইড করা শিখবে।
কেউ চাইলে আরো পয়েন্ট এড করতে পারেন আবার দ্বিমত ও পোষণ করতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছেন