রুদ্ধ নারীর মুক্ত কথা

রুদ্ধ নারীর মুক্ত কথা কোনো কালে একা হয়নিকো জয়ী , পুরুষের তর? কোনো কালে একা হয়নিকো জয়ী , পুরুষের তরবারি ; প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে , বিজয়ালক্ষী নারী।

24/05/2024

#রূপ রেখা

মনের জানালা খুলে কথারা ভিড় করে
দূর আকাশের নীলিমা,উঠান কোটা ঘরে,
ইছামতির দুকুল উপছে পড়া জোয়ারে
শুধু শুনতে পাই জলোচ্ছ্বাসের দুয়ারে ।

নবীন প্রাতে দুনয়ন মেলে দেখি ত্বরা
মিটে না যে স্বাদ চঞ্চল রেখায় ভরা,
বিচরিছ আসমান জমিন পরে মহাবল
অঞ্চল আলো আশার মত বুলায় চঞ্চল।

শুনি শুধু তোমার গুনগান অন্তর-মাঝে
তব রূপ কত যে রঙে রাঙিয়ে যায় সাঁঝে,
চারদিক আসা যাওয়া তার বিলিয়ে প্রাণ
কত কথা কত গীত গাই মনে মনে আনমনে।

ধ্যানের মাঝে তোমার রূপের নিশ্চল নিশ্বাস
যেখানেই থাকো তোমার গুনগানে রহে আশ্বাস,
চিত্তগগনে আঁকা অসীমের রূপরেখা বক্ষমাঝে
ভালোবেসেছি আমি তাঁরই রঙে রাঙিয়ে সাজে ।

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
২৪/০৫/২৪

14/05/2024

#আছো তুমি

হৃদয়ের মাঝে আছো সংগোপনে
দুচোখে দেখেনি তোমারে আপনে,
কন্ঠনালীর চেয়েও কাছে একই সাথে
ভাব ভাবনায় গেথেছি মালা দুহাতে।

সুখে দুঃখে রহ তুমি বেঁধেছ সে ঘর
পাশাপাশি রাখো তারে ওরা সহোদর,
কখন যে কে আসে জানে না হিয়া তাই
দুঃখ আসিলে সবে হয় রে নিরূপায়।

অন্তর মাঝে বসে বলে দিয়ো সব
অসীম অপার তুমি,এমনই রব,
দুঃখের মাঝে সুখের প্রলেপ বোলাও
ওপারের কান্ডারী সে যে দেমাগের নাও।

চুপি চুপি খেলে যাও অন্তর বাইরে
ভালোবাসি তোমাকে মিথ্যা নাইরে,
জ্যোতিতে ভরে দাও করিয়া যতন
মুখলিস হয় যেন তাদের মতন।

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১৪/০৫/২৪

12/05/2024

#শান্তির বৃষ্টি

তৃপ্তির হাসি ফুটেছে এমন ধরায় হায়
সকালের মিষ্টি রোদ মেখেছে মাটি সেথায়,
চমকে চমকে অরুণাভ ছড়িয়ে পড়েছে
সদ্যোস্নাত পাখপাখালি আনন্দে মেতেছে ।

হাওয়ায় দুলছে শালিক টিয়া কবুতর সবে
রোষের পারদ নেমেছে কুলু কুলু রবে ,
মাছরাঙা তাকিয়ে আছে গভীর জলে এখন
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে শান্ত ধ্বনি ভাসে তখন।

ভেকের ডাকে মাতোয়ারা আজ জলাশয়
নাল পদ্ম মনের হরষে পাঁপড়ি মেলেছে তাই,
অসীম আনন্দের হিল্লোল বইছে চরাচর
অম্লান হাসিতে মুখ ভরেছে রুষ্ট দিবাকর

চৌচির মাঠের চৌদিকে জলময় ডুবে যায়
ছেলেরা মেতেছে পিছড়ে পড়ার আনন্দে হায়!
ইচ্ছা জাগে ওদের সাথী হয়ে খেলতে
পার হয়ে গেছে সেদিনের ডানা মেলতে।

ভুবন ভরে তাই খুশির মেলার রাশি
মনের কোণে জাগে হতাম ওদের দাসী,
দোসর জনের সে পেয়ালা নিয়ে হাতে
গোলামের গোলাম হয়ে ভাগাতাম তাতে।

পাহাড় সমান সুখের ভারে আমার বুক
খরা কেটে প্লাবিত নয়নে মিটিয়েছ দুখ,
হাসনা হেনা হাসছে যে আপন ঘরে
রক্ত রাঙা জবা ফুটেছে তার রাস্তা ধরে।

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১১/০৫/২৪

02/05/2024

#স্বাদ পাওয়ার সাধ

এই পার্থিব জীবনের বাসনা কামনা সময় সম্পদ আমার রবের নিকট মূল্যহীন। একমাত্র সৎ আমল, জিকির নৈকট্য লাভের অন্যতম পাথেয়। নিয়মিত জিকিরে রবের ভালোবাসায় মন ভরে যাবে। প্রাণের স্পন্দনে মধুর আলাপন ঘটবে। ঘুম ছেড়ে ইবাদতের স্বাদ পেতে থাকবে। আল্লাহর মাহবুবদের বিছানাই শেষ রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন -
"তাদের পিঠ বিছানা থেকে আলাদা হয়ে যায়। তারা ভয় ও বিনয়ে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। আমি তাদের মে সম্পদ দিয়েছি তা থেকে দান করে।"(সূরা সিজদা,আয়াত ১৬)

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
২/০৫/২৪

01/05/2024

# কথা ছিল

কথা ছিল হৃদয়ের রেকাবিতে সাজে
ঝুরি ঝুরি কথা উথলে উঠে তরঙ্গ মাঝে ,
বাদসাদ দিয়ে ভালোগুলো সাজিয়ে আনি
একটু প্রশান্তির জন্য বরকতময় জীবন জানি।

ছুঁয়ে যাওয়া ভাবনার অতল গহন কাননে
কত ছবির রেখা মনের দর্পণের আননে,
আছড়ে পড়ে সেই সব স্মৃতি সঙ্গোপনে
মিল অমিলের ধনুর অঙ্কের আলাপনে।

জান্নাতের সুসংবাদ নিতে তোমার কাছে
দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকি নীরবে যাচে,
জানি একফালি আশার আলোর প্রতীক্ষায়
তোমার ক্ষমার চোখে অরুণাভ নতুন কায়।

স্রোতস্বিনী নদী আর আঙুরের বাগান রবে
সোনালী চাঁদের কিরণে ঢেকে দেবে তবে,
কুরআনের সুরের মূর্ছনায় প্লাবনের আশয়
অশরীরী ছোঁয়া পবিত্র দেহ মনে শেষ নাহি হয়।

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১/০৫/২৪

01/05/2024

#গড়তে হবে

না কখনো অবসাদের আগমন ঘটতে দেয়া যাবে না,সচল জীবনের মান অনেক অনেক মূল্যবান সময় বয়ে আনে। সোনালী সোপান জীবনকে করে তরতাজা। জীবনের প্রতি পাতা অলিখিত সাদা কাগজের নূরানী জ্যোতিতে ভরানোর জন্য সচল চাকা ঘূর্ণমান রাখতে আপনাকে নিয়োজিত রাখা একান্ত প্রয়োজন। সচল আর শুকরিয়া ভরা জীবনের মান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার অশেষ নিয়ামত। এই নিয়ামত হতে কখনো নিরাশ হওয়া যাবে না। আশার প্রদীপ এখানে মিট মিট করে জ্বলতে থাকে। একসময় তা পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে জীবন আকাশ আলোকিত হয়। বিশ্বময় সে আলোতে অবগাহন করে আনন্দ পায়। শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১/০৫/২৪

02/12/2023

#তিয়াম

মাত্র নয় মাস বয়সী। মুগ্ধ নেত্র। প্রতিনিয়ত মন কেড়ে নেয়। চোখের চাহনি বড়ই চাঞ্চল্যকর। আমার নানীমনি বলে নয়। সকলের প্রিয় সে। নীচের সারিতে দুটি দন্তমনি বড়ই আকর্ষণীয়। দুই ওষ্ঠমাঝে মুগ্ধময়ী হাসি বড় প্রীতিময়। ছোট ছোট বাহ্ বাহ্, আবা আবা, শব্দ মাধুরী আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার রহমতের ছোঁয়া বয়ে আনে । হৃদয় জুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় জনে জনে। এতটুকু শিশুর অ্যাক্টিভিটি যেন মানুষের মনে নতুন মাত্রা নিয়ে আসে। মানুষের হৃদয় মাঝারে নতুনের ছোঁয়া আনে। ভাব ভালোবাসার হাত বুলিয়ে দিতে পারে প্রিয়জনের কপোলে। প্রতিটি জিনিসের প্রতি জিজ্ঞাসু পর্যবেক্ষণ। চোখের চাহনিতে পেলবতার মাধুর্য। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমার আপুমনিকে আগামী দিনের দ্বীনের সৈনিক বানিয়ে দিয়ো!
আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন!

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪ পরগনা
০২/১২/২৩

05/09/2023

#মৃত্যু

তুমি অধরা, জানিনা কখন ঝরবে অশ্রুধারা
কতজন আর কত মা জননী হবে সবই হারা,
কত আশার আশা গুনে যায় যে কতক্ষণ
অশ্রু ঝরবে বহমান নদীর মতো বুঝেনা মন।

মন্ত্রী পারে না রুখতে তারে তব নিকেতন
মায়া মমতা, ভালোবাসাও ছাড়ে যে বন্ধন,
তবে কিসের টানে চলে যায় ধূসর জীবন
প্রভুর নিয়মের নিয়তি বাধা ধরার সে ধন।

বাহুপাশে সকলেই রবে জড়িয়ে যে তখন
থাকবেনা সেদিন এমন করে আসবে শমন,
এমনি করে রুহ ধরিবে যখন সে তোমার
বাজবে মরণ বাঁশি ছাড়িবে প্রেমের সংসার।

থাকবে তখন পুত্রকন্যা বন্ধুবান্ধব মাঝারে
চিরপরিচিত সম ছিনিয়ে নিয়ে যাবে তোমারে,
নিস্তার নাই রে যদিও রবে তুমি কম্পমান প্রাণে
যাবে চলে যাবে তখন উর্দ্ধ আরশে রবের পানে।

সেরিনা বেগম
ভারতবর্ষ
০৫/০৯/২৩

05/06/2023

#নন্দন-বন

ধরনীতলে এতো হরষের হিল্লোল
পুলকিত হৃদয়ে দোলে ফুলদোল,
এই আসমান জমিন সাজানো নন্দন
তোমার মনে গড়া অটল সে বন্ধন।

সপ্ত আসমান সাজালে আপনমনে
তারই বিধান সাজিয়েছ কোনে কোনে,
হুকুমের দাস ওঁরা,মানে সে অবিরাম
তারকারাজি ভরা জ্যোৎস্না নয়নাভিরাম।

কত সুন্দর সাজানো অভিনব চন্দন
অনুতে অনুতে রসের বাষ্প করে ক্রন্দন,
মধু সৌরভে সুরভিত মৌমাছির গুঞ্জন
কর্ণকুহরে এ শ্রুতিমধুর পরশের সন্দর্শন।

ফুলে ফুলে যে সুধার গন্ধে জেগেছে ভাব
হৃদয়ের ডালে প্রেমের নব নব আবির্ভাব,
শিউলি, বকুল, গোলাপের মিলন মাঝখানে
ওদেরই মাঝে রব ফুলশয্যার আত্মদানে।

মিলন রাতে কান্না সাথে মুছে সব ভুল
কলেমার বাণীতে রব আপন ঝরা ফুল,
সব বাঁধন শিথিল করে প্রাণের সে টানে
মিলব আর মেলাব সেদিন আত্মদানে।

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
ভারতবর্ষ
৫/০৬/২৩

12/05/2023

#সাধের -সাধনা

গড়ে তোলো সাজিয়ে নাও নতুন করে
ঝরা পাতারা ঝরে যাবে সব নীরবে ওরে,
এমন গভীর মরমে নিরবধি ডাকো মননে
সাড়া দিয়ে যাবে তোমারে গহন কাননে।

বাসনা ভুলে শুধু তাঁরই পাওয়ার তরে
সঁপে দাও জীবনের ধন মান প্রাণ ভরে,
সুতিমালা গেঁথে যাও করোনা যে হেলা
যিকিরের সুতা বুনতে থাকো সারাবেলা।

হৃদয় জুড়ে প্রতিক্ষণে আসবে আভাস
এমন সাধনা সাধতে সদা রাখবে আশ,
দিবানিশি চলবে এ অনন্য সাধন প্রয়াস
স্নেহের পরশ মাখানো ইশারার আশ্বাস।

আসসবিরিনা আসসদিকনা মুনফিকিন
কনিতিনা বিলআসহারি মুসতাগফিরিন,
থাকুক জীবনের প্রথম ও শেষের পাতায়
হবেনা যে ক্ষয় তোমার আমলের খাতায়।

তুমি পাওনি কি রবের দেয়া হৃদয়পদ্মখানি?
সংযমের অনুশীলন করো সেই মূলমন্ত্র আনি,
দেয় নি কি তোমার অমর পিযুষের নহরবাটি
অশ্রুজলে সিক্ত করে আপনাকে করতে খাঁটি?

এতো কথা আর এতো উপমা ভরা রবের দান
চিরদিন বহে হিল্লোল অনন্তর সে পবিত্র পরান,
যুগে যুগে শরণ করায় এ অসীম বরমাল্য তব
চকিত চমক জাগে করুণার তাকওয়া নব নব।

আমার জীবনশেষে রিক্তহৃদয় থাক দীনবেশে
চলে যাব প্রভুর দেয়া শর্তের সব কাজ শেষে,
বসন্তের রেকাবিতে উপছানো রহমত সেদিন
ছলছল আঁখিজলে টোপাবে কি উপহারহীন?

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১২/০৫/২৩

03/01/2023

# সদকা
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন -
'সদকা আল্লাহর ক্রোধকে ঠান্ডা করে দেয় এবং খারাপ মৃত্যু থেকে বাঁচায়।' (তিরমিযী -৬৬৪)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার খুশির জন্য করে যাও সদকা। তাঁর খুশির জন্য যা কিছু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তরিকায় করবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা নিজ হাতে তার বরকত দান করবেন।

সেরিনা বেগম।

14/12/2022

# হও যদি -অনুগত

(এক দ্বীনি বোনের স্মৃতিপটে আঁকা ছবি এঁকে দিলাম আমার কলমে)

1991 এ R B.U Calcutta তে তখন আমি M .A in Bengali এর student । স্মৃতিতে ভেসে আসে কিছু অভিজ্ঞতার কথা। ক্লাসের মাঝে ফাঁক বুঝে নামায আদায় করা ছিল আমার জীবনের অভ্যাস। প্রতিদিনের মতো সব নামায আমি আদায় করতাম। ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যাচ্ছে দেখে ক্লাস শেষে যুহর নামায আদায় করার তাগিদে বিল্ডিং এর গ্রাউন্ড ফ্লোরে জায়গা খুঁজে বেড়াই। অনুসন্ধানের সুরাহাও হয়ে যায়। একটা অফিস রুমের মধ্যে খাতাপত্র সব খোলা অথচ সেখানে কাউকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ট্রেন টাইমও ফিক্সড। অন্য ফ্লোরে গিয়ে ফাঁকা রুমে নামায আদায় করার মতো সময়ও সেদিন ছিল না। বান্ধবীরা একই সাথে দলবদ্ধ হয়ে দমদম ক্যন্টনমেন্ট থেকে বনগাঁগামী ট্রেনে যাতায়াত করতাম ।
হ্যা, একটু সন্তর্পনে ঢুকে পড়লাম ওই অফিস রুমে। ভয়মিশ্রিত হৃদয়ে দুটি বেঞ্চ পাশাপাশি রেখে,নামাযের মুসল্লা ব্যাগ থেকে বার করে মুসল্লা পাতানোর জন্য তৈরি হতেই রুমের অফিসারের আগমন ঘটে। আমি থতমত খেয়ে ইতস্তত হয়ে বললাম,স্যার! একটু নামাযের জন্য আরকি। কথা শেষ না হতেই উনি খুউব ভালো অ্যটিচুডের সাথে ঠিক আছে বলে বাইরে অপেক্ষা করলেন।
আমি আরামসে নামায আদায় করে, ব্যাগ থেকে টিফিন বক্সটি বার করার সময়েই উনি পায়ে পায়ে রুমের দিকে এগিয়ে আসছিলেন। আমার এই সিচুয়েশনে তিনি আবারোও সম্ভ্রমতার সাথে বললেন- 'ঠিক আছে'। এরপর আরোও বেশ কিছু সময় আমার জন্য ছাড় দিলেন। আমি খুব ধীরে সুস্থে সব কাজ গোছালো ভাবে সেরে নিলাম। ওদিকে বাইরে আমার জন্য যারা অপেক্ষায় ছিল, তারা আমার ক্লাসমেট; তারা আমাকে সাথী করে এগিয়ে চলল বিটি রোডের দিকে।
এতক্ষণ যাদের কথা বলছিলাম এরা সবাই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের। তাতে কি হয়েছে? সেই মেয়েবেলা থেকে স্কুল কলেজের সাথীরা তো ছিল অন্য সম্প্রদায়ের, কিন্তু প্রার্থনার সময় ওরা কখনো অসহযোগিতা করেনি। এমনকি ট্রেনে নামাযের সময় হলে ওদের সাথে কথা বলে নিতাম- সঠিক সময়ে প্রার্থনায় মশগুল হতাম। অনেক অনেক শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে। এখন সেই নামায হয়েছে মেরাজস্বরূপ। কারণ সহীহ হাদীস শরীফে বর্ণিত, মেয়েদের জন্য বাইরের নামায অপেক্ষা ঘরের নামায শ্রেয়। আর খুশুখুজু সহকারে সেই নামায আদায় করতে পেরে প্রতিটি মুহূর্তে তৃপ্তি অনুভব করি আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।
আমি বরাবরই জানি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা পবিত্র কোরআনে স্বর্ণাক্ষরে লিখে দিয়েছেন -
"হে মরিয়ম! আল্লাহ তোমাকে পবিত্র পরিচ্ছন্ন করেছেন এবং বিশ্বের নারীর মধ্যে তোমাকে নির্বাচিত করেছেন।"
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আরোও বলেন -
"হে মরিয়ম! তোমার প্রতিপালকের অনুগত হও ও সিজদাহ করো এবং যারা রুকু করে তাদের সাথে রুকু করো।"
(সুরাহ আল-ই ইমরান: ৪৩,৪৪)

মহামূল্যবান সম্পদ পাওয়ার পর আর সময় নষ্ট না করে পবিত্রতার ছোঁয়ায় বদলে নিতে কেন দেরি করব? রুকু সিজদাকারীর অন্তর্ভুক্ত হওয়া আর নারী কুলের শিরোমণিদের দলভুক্ত হওয়ার আশায় বুক বেঁধে এগিয়ে যাওয়া আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার পরম পাথেয় সংগ্রহ করার নিরিখে পথ চলার জন্য জীবনের মূল্যবান সময়কে কাজে লাগানোই হলো আমার জীবনের চরম লক্ষ্য। আর দিনে দিনে বাড়ছে সেই গন্তব্যস্থলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। শুকরিয়া আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার রহমতের ছায়ায় নীরব যাপনে, রুকু সিজদা কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে। আলহামদুলিল্লাহ।

(ইসলামিক মোটিভেশন)
গুজরাট,
ইসমাইল নগর,
আনন্দ ।
১৪/১২/২২

11/12/2022

#অভিলাষ

সেরিনা বেগম

প্রতিদিন ক্ষণে ক্ষণে গুছিয়ে নিতে
সাজিয়ে তুলি যে নিজেকে দুকূলে,
নিয়তির ঘাড়ে মাথা নাগুজে ভাবি
চমকিত নয়নে হৃদয় উঠে দুলে দুলে।

বিস্মৃত জীবন বাঁধা সময়ের ঘাটে
কান পেতে থাকি স্মৃতির আলনায়,
মুছে দেই প্রেমাভিলাসের দেয়ালে
ক্ষতচিহ্নের করুণ চিলতে জানলায়।

বিশাল সমুদ্র সৈকত সম্মুখে উপস্থিত
শত আঁধার পেরিয়ে কিনারায় দাড়িয়ে,
গুনে যাই এক দুই তিন শত শত ভুল
মুছে দিতে চাই ক্ষমার সায়র মাড়িয়ে।

ডেকে যায় পুরনো নক্ষত্রেরা নীরবে
চমকে উঠে নিজেকে আবিষ্কার করি,
নতুন এক জগতের সন্ধান মিলে যায়
প্রত্যাবর্তনের আঁচলে যে তাঁকেই স্মরি।

রাত জমে উঠে, মরে যায় ফিকে দিন
প্রশান্ত মেঘের অরুণ হাসি বুলিয়ে দেয়,
গড়ে নেয়া কষ্টেরা প্রতিশ্রুতির মুঠোয়
খেলাফতের আশ্বাস উঠে নব আল্পনায়।

মুর্চছা ঝেড়ে বেড়াই নির্জনতার শিয়রে
সবুজ ঘ্রাণের সীমানায় ঈমানের উষ্ণতায়,
শুকর, আনুগত্যের চাবিতে আড়ি পাতি
নিয়ামতের নিসর্গের জাহাজের কিনারায়।

এমনি করে মিটবে সকল সফল হাহাকার
পারের কড়ি কুড়িয়ে নিতে নাগালের হাত,
সোনালী ডানার সোনালী হৃদয়ের স্বপন
আসবে সেদিন সাধের পারের পারিজাত।

বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১০/১২/২০২০

30/08/2022

#প্রশ্ন-আসে

সেরিনা বেগম

ওরা আসে নতুনের গন্ধে খোলা জানালায়
উসখুস হৃদয় গলিপথে উঁকি দেয় বাহানায়,
উত্তর খুঁজতে পথের সন্ধানে শিহরিত প্রাণ
ইব্রাহিম খলিলুল্লাহর নামে দরূদের সে তান।

প্রথম প্রভাতের সূর্য পূব আকাশে নতুন করে
কর্মসূচির তালিকায় আঁকা সে উত্তরসূরী স্বরে,
অনেক ব্যস্ততার মাঝেও ভেসে আসে সমাধান
আদমের পৃথিবীর আবাদ করার চরিত্র চিত্রণ।

পিঞ্জরের প্রকোষ্ঠগুলো একে একে খুলছিল
চোখের তারায় সে উত্তরপত্রের অঙ্কন ঘুরছিল,
প্রিয় নবীর দরূদের প্রশান্তিতে প্লাবিত দেহ মন
প্রাণের মেলায় আদি পিতার দরূদের সিঞ্চন।

নূহ নবীর সে দাওয়াত আজ বিশ্ব মানবে জানায়
তরিৎ চলেছিল কিস্তি জুদা পর্বতের কিনারায়,
আজও সাক্ষী রেখেছে সে দাওয়াতের মেহমান
সবকিছু ঠিকঠাক আছে এ চির সত্যের তুফান।

তাঁরই মাঝে খুঁজে পাবে তোমার ঊষার পাখি
যিকিরের সুর তুলে মিশবে জীবনের গন্ধ মাখি,
দান সদকা যাকাতের লতাপাতা ভরা নানা মতো
ঈমানী আয়নায় চিত্রণের লিপি আঁকা কতশত।

বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
২৯/০৮/২০২২

29/08/2022

#রুহানী-ছোঁয়া

সেরিনা বেগম

জ্ঞানের আলো আর দুআর পরশ বুলিয়ে দেয় আত্মা হতে আত্মার মনোজগতে। কোনো আবিলতা ছাড়াই বিছিয়ে দেয় রহমতের চাদর। অনাবিল আনন্দের ফল্গুধারা বয়ে আনে দেহমনে। রাজারহাটের মণিরা আমার অনুগত প্রিয়বোন।ম্যাথামেটিক্স এর যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ মেলাতে থাকে ইহকাল পরকালের সাদা কাগজে। স্কুলের সামান্য অবসর সময়টুকুও অপচয় করতে নারাজ। পাশের নিরিবিলি নামায ঘরে কুরআন তিলাওয়াতে মশগুল হয়ে পড়ে আরও দুটি সঙ্গী সাথীদের নিয়ে। ভয় আর ভালোবাসার নির্যাসের হৃদয়খানি তাদের প্রভুর প্রেমে মত্ত হয়ে উঠে। ভালো লাগে মন নিঙড়ানো কথার সুর। বাজেকথা, বাজে আড্ডা থেকে নিজেদের হিফাজত করতে এমন পরিবেশ বানিয়ে ফেলতে একদমই সময় লাগে না তাদের। এ নিয়ে আবার কত কথার জল্পনা শুরু হয়ে যায়। যায় যাকনা জল্পনার নানা ভ্রূকুটি! নিকুচি করেছে নিন্দুকের শত কথা। সময়ের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত ওঁরা। কথার ভারে অশ্রুজলে ভিজে যায় মন। স্বরসঙ্গে স্বরসঙ্গতি ঘটে প্রেমের আদলে। শুধু একবার দেখব আপু। ভাব ভাবনার আগুন জ্বলতে থাকে দূরাভাষে। কখনো দেখিনি তারে। অশ্রুবিগলিত দুটি চোখ জ্বলতে থাকে দূরাভাষে। কয়েকদিনের মধ্যেই ৪৫টি বই বিতরণ করে ঈমানের শাখাকে পল্লবিত করতেও সিদ্ধহস্ত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তার সকল নেক মাকসুদ পুরণ করুন, একইসাথে আরও আমার দাওয়াতের সকল সৈনিক বোনদের মজবুত প্লাটফর্মকে আরও মজবুতি হালাত দান করুন। সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

দূর হতে দূরে আছো দেখেনি দুচোখে
অমর হয়ে রহ হৃদয় জুড়ে লিখছ কে?
শিল্পীর শিল্পকর্ম নিয়ে আছে এই মন
কে রচনা করছে আর করছে সৃজন?

আমার মনের বাগানে তুলির সে দাগ
মুছতে পারবেনা কেউ সকলে অপরাগ,
চলবে এই দাওয়াত হবে নাকো যে শেষ
দিনে দিনে বাড়ছে ঈমানের নতুন রেশ।

শূন্য পটে পূর্ণ হোক এ পুণ্য চমৎকার
সুন্দর কথাগুলো সার বাধুক বারংবার,
আদিমতা দূর করে আনব অমৃত অনন্ত
প্রাণে প্রাণে মিলিয়ে হব আমরা প্রাণবন্ত।

বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১০/০৩/২০২২
(প্রকাশিতব্য বই"-চরিত্র গঠনে ইসলাম "থেকে)

16/08/2022

#গল্প(প্রকাশিতব্য বই গল্পে গল্পে সমাজ গড়ি)

বীরাঙ্গনা
দ্বাদশ পর্ব
(সমাপ্তি পর্ব)

আর সম্পদ নয়, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চাই, এমন নিয়তের বাঁধনে সজ্জিত নবীপত্নীরা। হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, তিনি বলেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে,আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলে দিয়েছেন-"তোমার স্ত্রীদেরকে বলে দাও, তোমরা যদি পর্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য চাও তবে আস, আমি তোমাদেরকে তার দান করি, এবং সুন্দরভাবে বিদায় দেই। আর যদি তোমরা আল্লাহ তার রসূল এবং পরকাল চাও, তবে আল্লাহ তোমাদের মধ্যকার সৎকর্মশীলদের জন্য বিপুল প্রতিদান প্রস্তুত করে রেখেছেন।"*১১
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত -আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -" হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদের বলো: তোমরা যদি পার্থিব জীবনে ও ওর ভূষণ কামনা করো, তবে এসো, আমি তোমাদের ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিই এবং সৌজন্যের সাথে বিদায় দিই।"*১২

এতো সব নির্দেশ আসা আর তা মানার সংকল্প তো থাকবেই নবী পত্নীদের মধ্যে। আর হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তো সেরার সেরা পত্নী, তাঁর প্রেমাস্পদের নিকট পার্থিব সম্পদের মূল্য মাছির ডানার সমতুল্য।
ভোগবাদী চিন্তার সামান্য রেশ জীবনের আবিলতাকে আচ্ছন্ন করা হতে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হলো।
আয়াত নাযিল হওয়ার পর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললেন, তোমাকে একটা কথা বলব। তোমার পিতা মাতার সাথে পরামর্শ করে উত্তর দিয়ো।
আয়িশা রা. : কী এমন কথা?
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে পবিত্র কুরআন এর উপরিউক্ত আয়াত আলোচনা করেন।
আয়িশা রা.: "আমি কোন ব্যাপারে মা বাবার সাথে পরামর্শ করব? আমি তো আল্লাহ, রসূল ও পরকালের আবাস চাই।"

এটাই হলো তাখইয়ার।
তাখইয়ার কী? এর আভিধানিক অর্থ স্বাধীনতা প্রদান। যে স্বাধীনতার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছিটিয়েছেন আমাদের গরিয়সী জননীর পরিণতবুদ্ধি। তিনি চান আল্লাহর রাসূল ও পরকালের বাসগৃহ। তাঁর কাছে আধ্যাত্মিক চেতনাই শ্রেয়। তাঁর পরিণত বুদ্ধিদীপ্ত উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুবই সন্তুষ্ট হলেন। একথা অন্যদের কানে না তোলার অনুরোধ জানান হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেটাই করলেন। এই দাবি নিয়ে অন্যদের মতামত জানতে চাইলেন তিনি। সকলের নিকট থেকে একইরকম উত্তর এলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুশি হলেন। নবী পত্নীদের মধ্যে জাগ্রত হলো যে, পার্থিব জীবনের সম্পদের ভোগ বিলাস,আরাম আয়েশ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য আদৌ মর্যাদার নয়।
জীবনের সাথে সবচেয়ে বড়ো প্রেম ভালোবাসা, যা দিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে শিকলে বাঁধা থাকে। তাঁর জন্য এ বন্ধন 🌹 ছিল নিগূঢ় ও নিবিড় । এতো বেশি ভালোবাসা ছিল যে নিজেকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হতো, আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে বলতেন,"হে আল্লাহ! আমি তো সব স্ত্রীদের সাথে সমান ব্যবহার করে থাকি। তবে অন্তরকে বাঁধ মানতে পারিনা, সে আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। অন্তর তো আয়িশার জন্য আলাদা জায়গা করে নিয়েছে, বেশি ভালোবাসা আসে অন্তরে। হে আল্লাহ! আপনি অন্তরকে ক্ষমা করে দেবেন।"
যখন বেশি বেশি উপহার সামগ্রী আসত, তখন তিনি হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার ঘরে থাকতেন। অন্য স্ত্রীরা এনিয়ে অনেক জল্পনা করতেন। একবার এ কথা মা ফাতিমা রা. এর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কানে পৌঁছে দেন, তিনি কলিজার টুকরাকে বলেন যে, "শোনো আমার কলিজার টুকরা! আমি যাকে ভালোবাসি তুমি কি তাকে ভালোবাসবে না?" বুঝতে অসুবিধা হয়নি হযরত ফাতিমা রা.। নীরবে ফিরে গেলেন ফাতিমা রা.। এমনিভাবেই হযরত উম্মে সালমা রা. রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হযরত আয়িশা রা. প্রতি ভালোবাসার নালিশ জানান। উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু বলেন, শোনো সালমা! আয়িশার ব্যাপারে আমাকে বিরক্ত করো না, একমাত্র আয়িশার ঘর ছাড়া আর কোনো স্ত্রীর ঘরে অহী নাযিল হয় নি।
তাঁর জ্ঞান গর্ভ নিয়েও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "আর সমগ্র স্ত্রী জাতির উপর আয়েশার শ্রেষ্ঠত্ব ঠিক সেরূপ, খাদ্যের শ্রেষ্ঠত্ব যেরূপ অন্য সমস্ত খাদ্য দ্রব্যের উপর।"*১৩

হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর যে অসাধারণ প্রতিনিধিত্বের গুণগুলো জীবন ধর্মে ও ধর্ম-জীবনে প্রতিভাত হয়েছে তা একান্ত আল্লাহর মনোনীত প্রতিনিধিরই গুণ । তাঁর কাছ থেকে আমরা পেয়েছি ২২১০টি হাদীস অর্থাৎ ইসলামের শরীয়তের নির্দেশনাবলীর এক চতুর্থাংশ তাঁর কাছ থেকেই পেয়েছি।
হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর প্রতি কেন এতো ভালোবাসা ছিল তা সহজেই বোধগম্য হয়। সম্পদ আর যৌবনের জোয়ারে নয় একমাত্র ধর্ম সাধনার সহযোগিতা যাকে প্লাবিত করেছিল প্রাণঢালা ভালোবাসার প্লাবনে, প্রবীণা প্রথমা হযরত খাদিজা রা. । এই গাঢ় ভালোবাসা ছিল সুদূর প্রসারী, যা হযরত আয়িশা রা জীবনেও ঈর্ষার কারণ হত। এই ধর্মবোধের কারণে হযরত উম্মে সালমা রা. এর প্রতিও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসার আধিক্য কম ছিল না। ভিন্ন জনের জন্য ভালোবাসার রঙ ভিন্ন ছিল। নারী জাতির মধ্যে ইমরান কন্যা মারইয়ম ও ফিরাউনের পত্নী আসিয়াকে সবাই ভালো জানে। আর এই প্রসঙ্গেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে এতো মর্যাদা দিয়েছেন।
হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু এর ভালোবাসার নির্যাসের নিটোল বর্ণনা পাই-
"আল্লাহর রসূলের ক্ষণকালের বিচ্ছেদও হযরত আয়িশা রা. সহ্য করতে পারতেন না।"*১৪
"রাতের বিছানায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখতে না পেলে তিনি অস্থির হয়ে উঠতেন। তাঁর এই অস্থিরতা একদিকে যেমন গাঢ় প্রেমের পরিচয় দেয়, অন্যদিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নৈশ সাধনার কথা বিশ্ববাসীর নিকট পৌঁছে দেয়। তিনি ভালোবাসার কারণে স্বামীর উপর গোয়েন্দাগিরি করতে তৎপর হতেই আমরা জানতে পেরেছি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গভীর সাধনার কথা।"*১৫
সাধনায় শরীক হতেন , রাত্রির শেষের নামাযে (তাহাজ্জুদ), বিতর, ফযরের সুন্নত নামাতে শরীক হতেন। উভয়ের মিলিত সাধনায় কত রাত যে ভোর হয়েছে,ইমাম ও মুক্তাদির মিলনে,যা পৃথিবীর বুকে জান্নাতের মনোরম পরিবেশ রাতের বিছানায়। ইতেকাফেও মসজিদ ও মসজিদের বারান্দার তাঁবুতে ছিল সাধনার মিলন মহান সম্ভার।
একই পাত্রে আহার, একই পানির পাত্রে ঠোঁট লাগিয়ে পানি পান করা, একটি হাড্ডি দুজনে চুষে খাওয়ার অনুপম প্রেমাস্পদের ফোয়ারা যেন দুনিয়ার বুকে প্রতিটি ঘরে ছড়িয়ে দিয়েছেন, আজও তার রোশনী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ খেলে যায়। এ যেন আকাশের তারার হাসি আর জমিনের বুকে ফুটন্ত গোলাপ 🌹।
এগারো হিজরীর সফর মাসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর দাম্পত্য জীবনের নয় বছর। সব পত্নীর ঘরে একে একে পাঁচ দিন কাটালেন। শেষ সময়ে প্রিয়তমা হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর কোলে মাথা রেখে প্রভুর ডাকে সাড়া দিলেন। হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা মেসওয়াক চিবিয়ে নরম করে দিলেন আর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ বারের মত মেসওয়াক করলেন। আত্মনিবিষ্ট স্বরে উচ্চারণ করলেন, হে প্রভু! আমি আমার সর্ব শ্রেষ্ঠ বন্ধু আপনাকেই গ্রহণ করলাম। এগারো হিজরীর বারই রবিউল আউয়াল পৃথিবী যাকে হারালো, আজও তার সমীক্ষা চলছে নিরবধি।
এই অষ্টাদশী তরুণীর ফুরিয়ে গেল বিবাহিত জীবন। বিধবা নবী পত্নীদের পুণর্বিবাহ নিষিদ্ধ। তারপরও আটচল্লিশ বছরের জীবন-ভার বয়ে চলেছেন ইসলামের প্রাণ শক্তি নিয়ে। যুগ যুগ ধরে নারী শক্তির বাহন হয়ে আজও চির ভাস্বর।
পবিত্র কুরআন সংরক্ষণের জন্য পিতা ও খলিফা আবুবকর সিদ্দিক রা. কে দূরদর্শিতাপ্রসূত পরামর্শ দেন।
হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর মিশর জয়ের জন্য রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার পরিচয় ছিল একমাত্র তাঁরই।
নিজের ইচ্ছাকে বিসর্জন দিয়ে হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর
ইচ্ছাকে মূল্য দিতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদপার্শ্বে তাঁর দাফনের অনুমতি দেন। এ আত্মত্যাগ যেন মিথ হয়ে আছে।
হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু এর হত্যাকাণ্ডে ইসলামের ঐক্য শান্তি প্রতিস্থাপনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
বিদ্রোহ দমনে দল গঠন করেন যা "এসলাহ" নামে পরিচিত।
একদিকে খিলাফতের অবসান, অন্যদিক রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। তাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়। শুরু হলো "উটযুদ্ধ"। এটা ছিল দুঃখজনক ঘটনা। আসলে শান্তি ও সম্প্রীতির ছিল এর অন্তর্নিহিত কারণ। তিনি যে, মুসলিম জননী, সেদিনের ভাষণে তা উদ্ভাসিত হয়।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন," আপনাদের উপর আমার মাতৃত্বের দাবি আছে। অতএব আপনাদের উপদেশ প্রদানের অধিকার আমার আছে।"
তিনি আরও বলেন,"পাপের অন্বেষণ এবং বিবাদ-বিসম্বাদ সৃষ্টি এ অভিযানের উদ্দেশ্য নয়। ... আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে আমার প্রার্থনা , তিনি যেন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রহমত নাযিল করেন। আর তাঁর স্থলাভিসিক্ত খলিফাগণের প্রতি আপনাদের আস্থা সুদৃঢ় করে দেন।"
এই যুদ্ধের জন্য তাঁর আক্ষেপ ছিল বহুত। তিনি বলেন,"আহা! আমি যদি জড় পাথর হতাম, যদি বিলীন হয়ে যেতাম,কতই না ভালো হতো!"
শরীয়তের ব্যবহারিক প্রয়োগও ছিল তার জীবন সাধনা। তাঁর প্রজ্ঞা ও মুক্ত চিন্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার প্রতি চরম নির্ভরতা থেকে এতটুকু বিচ্যুত করেনি।
কাব্য চর্চায়তেও তিনি কম পারদর্শী নন। তাঁর বর্ণিত হাদীসসমূহে অলঙ্কারের ছড়াছড়ি লক্ষ্য করি।
তাঁর উপর মিথ্যা অপবাদের প্রতিক্রিয়াতে যে অভিব্যক্তি ফুটে উঠে-
বিনিদ্র রজনীর প্রসঙ্গে বলেন -
"আমি চোখে ঘুমের সুরমাও লাগাতে পারেনি।"
প্রত্যাদেশকালে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কপালে যে ঘাম ফুটে উঠত তার বর্ণনা এমন ছিল -
"ললাট মুবারকে তখন মুক্তার কম্পমান ঝলক।"
"রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে স্বপ্ন দেখতেন, তা উষালগ্নের শ্বেত শুভ্র আভার ন্যায় উদ্ভাসিত হত।"
এতো অলঙ্কার আজকের দিনের কবির কবিতার ব্যঞ্জনাকেও হার মানিয়ে দেয়।
সব মিলিয়ে তার ব্যক্তিসত্তার মৌলিক বৈশিষ্ট্যের যে সুষম বিকাশ তা আর কোনো নারী চরিত্রে দেখা মেলে না। বদন্যতার হাতও ছিল অপরিসীম। আমীর মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু এর প্রেরিত একলক্ষ দিরহাম সন্ধ্যা উর্ত্তীর্ণ হতে না হতেই তিনি দান করে দেন। ঘরে মাত্র একখানি রুটি। ভিখারিনী দরজায় এসে ডাক দিলে। সেটাও দিয়ে দেন। এবার ইফতার হবে কি দিয়ে?
একটু পরেই এলো ছাগলের মাংসের উপহার।
আপনার বসত বাড়িটিও বিক্রি করে দান করেন। ইবনে সা'দের বর্ণনায় পাওয়া যায়।
অসীম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালুও ছিলেন। চিকিৎসা শাস্ত্রেও ছিলেন পারদর্শী।
৫৮হিজরীর পবিত্র রমযান মাসে তিনি দয়াময়ের ডাকে সাড়া দেন।
বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর জানাযা নামায পড়ান।
*১১ সূরাহ আহযাব, আয়াত ২৮
*১২ বুখারী৪৭৮৬
* ১৩ বুখারী
*১৪ বুখারী
*১৫ নাসায়ী

বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১৬/০৮/২০২২
(প্রকাশিতব্য বই "গল্পে গল্পে সমাজ গড়ি")

13/08/2022

#দুনিয়া-থেকে-আখিরাত

বস্তু জগৎ( Material world) থেকে পারলৌকিক (super natural world)এ পৌঁছাতে তোমাকে অবশ্যই আরোহণ পদ্ধতিতে এগিয়ে যেতে হবে। বাস্তবের বেলাভূমিতে তোমাকে ইসলামের সত্য প্রতিষ্ঠিত করে জান্নাতের আশা করতে হবে। অপ বা জল মানব সভ্যতার উষাকাল থেকে জেনে আসছি। এটা দু ভাগ হাইড্রোজেন ও এক ভাগ অক্সিজেন দুই ভিন্ন ধর্মী গ্যাস মিলে জল তৈরি হয়। সবাই জানে দুই ভিন্ন গ্যাসের সমষ্টি হয়ে জল নামক জীবন পদার্থ পেয়ে থাকি।
এতো কথা বলার দরকার কেন হচ্ছে?
এই যে অদৃশ্য জগতের কথা বুঝতে বাস্তব জীবনের ধ্রুবতারাদের জীবনের পটভূমি উপলব্ধি করার আবশ্যকতা কতটা দরকার তা জানতে এগিয়ে চলি।
দুনিয়াতে ভালো কাজ করে আখিরাতের জান্নাতের আশা দুই ভিন্ন জগতের বিষয়, তা কিভাবে সম্ভব?
আরব দুনিয়ায় যখন পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গায় পরিণত হয়েছিল, যেখানকার মানুষ লুট তরাজ, হিংসার চরমতা, নৃশংসতায় মেতে উঠা মানুষ ছিল,যাদের ভৌগোলিক অবস্থান ছিল সব কিছুরই অনুপযোগী সেই জায়গায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠালেন মানবতার মুক্তি দূত হিসাবে। এসে গেল ইসলামের স্বর্ণযুগ। মানবতা,জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সামরিক শক্তিতে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল মুসলিমরা। বিশ্বের কোনে কোনে কুরআনের আলো জ্বলে উঠেছিল।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কঠোর পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দুনিয়া ও আখেরাতের সমন্বয়ে পাওনা জান্নাতের সুসংবাদ।
বুঝলাম তো দুই ভিন্ন জগতের মিশ্রণ।
দীন অবিভাজ্য, সেখানে আংশিক আনুগত্য ঈমান হয়ে উঠে না। কুরআন ও সুন্নাহর বিধি বিধান সমূহ একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং বন্দেগী ও আনুগত্যের একটি বিস্তারিত পদ্ধতি। এ মোটেই অবিভাজ্য নয়। এর অনুপাত টিকিয়ে রাখতে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। এর কিছু অংশ বর্জন করা, সমগ্র শরীয়তের প্রতি অবিশ্বাসেরই শামিল।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -
"অনন্তর কিতাবের কিছু অংশের উপর তোমরা ঈমান রাখো, আর কিছু অংশের উপর তোমরা ঈমান রাখো না? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এরূপ করে পার্থিব জীবনে অবমাননা ব্যতীত আর কী শাস্তি হবে? আর কিয়ামত দিবসে অতি ভয়ঙ্কর শাস্তিতে তারা নিক্ষিপ্ত হবে এবং তোমাদের কাজ কর্ম সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা মোটেই বেখবর নন।"*১
আনুষ্ঠানিক ইবাদত বন্দেগী, নামায,রোযা,ইত্যাদি যেমন শরীয়তের আদিষ্ট কাজ তদ্রূপ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে 🌹 ইসলামের ন্যায় নীতি সুবিচার প্রতিষ্ঠা, ইসলামী আইন জীবনে 🌹 বাস্তবায়ন শরীয়তের আদিষ্ট কাজ।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর পূর্বে জানিয়ে দিলেন -
"তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম, এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম "*২
ইসলাম পরিপূর্ণ। তার অনুগ্রহের সব সবই উজাড় করে প্লাবিত হলো, তাহলে আজ আমরা কেন শূন্য আর রিক্ত হস্তে ফিরব বলো?
তাঁর অসীম অনুগ্রহ তোমার হৃদয় 💓 কে নাড়া দেয় না? তুমি তোমার ভায়ের জন্য একটুও ভাবো না? তোমার পরিবার থেকে একটু কাছের মানুষদের জন্য? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্য যে দরূদের প্রশান্তির প্লাবন তোমার হৃদয়ে দোল খায় না? তাঁর প্রতি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার অনুগ্রহ (সাল্লাম) ফেরেশতাদের অনুগ্রহ (সালাম)। আর তুমি কেন চুপটি করে থাকবে বলো?
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসার নির্যাস যদি সবার উপরে না হয় তবে তো তুমি মুমিন নও। ঈমান আমলে কাজে কথাতে ঢেলে দাও অনুগ্রহের পেয়ালা। ভরে উঠবে তোমার জীবন
"নূরের উপরে নূর "দিয়ে।*৩
আসমান জমিন তাঁর নূরের মধ্যে জমে আছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার নূরের মধ্যে আমরা চলাফেরা করছি।
দুনিয়া হতে আখিরাতের রাস্তায় পাড়ি জমানোর জন্য ইসলামের সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা আসুক জীবনে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -
"যারা আমাকে পাওয়ার জন্য কোশেশ করবে, নিশ্চিয়ই আমি তাদেরকে আমাকে পাওয়ার পথ বাতলে দেব।"*৪
সালেহীনদের সহযোগিতা, নিজেকে তৈরি করা, মানুষের জন্য কিছু কাজ করা সম্পূর্ণ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার খুশির জন্য 🌹 এগুলো বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত পূর্ণ ঈমানদারের দাবি হলো সোনার পাথর বাটির মতো। তাই নয় কি? চলো মিলে মিশে কাজ করি ইসলামী পরিবেশ গড়ি, জান্নাতের সওদা করি। ঈমান, আমলের মধ্যে লিস্ট বানাও সবার জন্য - শিক্ষা, স্বাস্থ্য,রুযীরোজগারের কর্মস়ংস্থান। ঘুমায়োনা আর উঠে পড়ো-

ওই দেখো ডাকছে মুজাহিদ
চলো যাই করি সবই খরিদ,
জীবন, যৌবনের সব সম্মান
ঢালিব ঝলসানো বিষন্ন প্রাণ।

হৃদয়ের কোনে ঈমানের ভাঁজে
ভাবনার আকাশ মরে যে লাজে,
মীমাংসার নক্সার সুদূর সন্ধানে
এসো সবে মিলে মিশে হেন আহ্বানে।

*১-সূরাহ বাকারাহ, আয়াত ৮৫
*২সূরাহ মায়িদা, আয়াত ৩
*৩সূরাহ নূর, আয়াত ৩৫
*৪সূরাহ আনকাবূত আয়াত ৬৯

বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা
১৩/০৮/২০২২

10/08/2022

#পরিবর্তন-চাই
(ইসলামের জন্য)

ইতিবাচক আশা তো পরিবর্তনের জন্য আর্শি হতে পারে। যেখানে বার বার মুখ দেখে নেয়া যায়। তা হতে হবে না চকচকে স্ফটিকের মতো। আদি মধ্য অন্তের মধ্যে থাকে যেন মন্দ বর্জিত প্রতিবাদী হৃদয় 💓 এর আয়না।
"একজন মুমিন অপর মুমিনের জন্য আয়না স্বরূপ "। *১
মন্দকে স্বহস্তে রুখে দেয়া, না হলে মুখ দিয়ে, তা না হলে,অন্তর দিয়ে। এই ঝড় তুলতে সাথে অবশ্যই থাকবে ইনশাআল্লাহ। কাজে থাকবে আল্লাহর হুকুমের তাবেদারী।
"জ্ঞান-বিজ্ঞানের বাণী মুমিনের হারানো সম্পদ, অতএব তা যেখানেই পাবে তার উপর ন্যায্য অধিকার বর্তাবে।"*২
এমন ভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাওয়া যাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার বাণীতে। যেখানে প্রতিমুহূর্তে তরঙ্গ খেলে যায়। আলো আঁধারের মাঝে প্রাচীর গড়ে তুলতে পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়। পথ সরণীতে অপূর্ব বৈভবের মেলা অনুষ্ঠিত হতে থাকে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিদ্যুৎ খেলে যায়।

পাশ্চাত্যের পাঁচমিশালী সংস্কৃতির কোপে পড়ে সাধারণেরা নাজেহাল। আর তার সাথে করে চলেছে দোআছড়া ধর্ম। বোঝার অবকাশই থাকে না। আর থাকবেই বা কি করে। এই যে ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতা! হিমসিম খাচ্ছে বাচ্চা থেকে বুড়োরা। আলাদা করে কারো ভাবনার অবকাশ কোথায়? দেখো না, ওই যে তোমাদের সামনে NEET প্রতিযোগিতা! কী যে স্রোত বইছে? আর কী যে নাযেহাল সাধারণ মেধার ছোড়াছুড়িরা, তাদের অবুঝ বাবা মায়ের কবলে পড়ে! এমনি করে নাযেহাল আধাআধি ধর্ম মানা ধার্মিকরা। সহীহ দ্বীন বুঝতে না পারার দরুন ইসলামের পরিকাঠামো ভেঙে নতুন কিছু রচনা করতে বদ্ধপরিকর।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা পরিস্কার জানিয়েছেন -
"আর আল্লাহ এমন নন যে, কোনো জাতিকে হিদায়াত করার পর পথভ্রষ্ট করে দেন।"
"নিশ্চয়ই সত্যবাদিতা (মানুষকে) নেকীর দিকে পথ দেখায় এবং নেকী জান্নাতের দিকে চালিত করে। আর মানুষ সত্য বলতে বলতে শেষ পর্যন্ত সিদ্দিক(সত্যবাদী) হয়ে যায়। আর মিথ্যা মানুষকে বদ আমলের দিকে নিয়ে যায়। মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট জঘন্য মিথ্যাবাদী হিসাবে তার নাম লেখা হয়ে যায়।"
পরিবর্তনের জন্য চাই জীবন কাহিনির টুকরো টুকরো কথা, যেখানে দেখেছেন সফলতার ফসল। সেখানে রিয়া বা অহমের নাই কোন স্থান, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার নির্দেশ আর রহমতের বারি যখন অবারিত ধারায় বর্ষিত হতে থাকে মুমিন কেন বলবে না যে, মা শা আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -
"যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি নিশ্চয়ই তাদের মন্দ কর্মগুলো মিটিয়ে দেব 🌹,আর তাদের উত্তম ফল দান করব।"*৩

আজ ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন ইসলামের জন্য ভীষণ প্রয়োজন। আর সেই সুসংবাদ ইসলাম দিয়েছে। আর এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া মুসলমানের একান্ত কর্তব্য।
দৃঢ় ও প্রত্যয়ী ভঙ্গিতে ছাপ ফেলা খুবই প্রয়োজন। আন্তরিকতার পরিচায়ক দৃঢ় সংকল্প। আপনার আমল অর্থাৎ কাজ কথার মধ্যে থাকবে স্বতন্ত্রতা যা কেবল ইসলাম অনুমোদন দেয়। যারা মুত্তাকী।যাদের জন্য আছে -
"প্রতিপালকের নিকট ভোগবিলাস পূর্ণ জান্নাত।"*৪

তুমি কি জানো যে যারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস না রাখে তাদের দশা কেমন হতে পারে? ওই ব্যক্তির মতো যার ফসল ভরা উদ্যানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার বিপর্যয় নেমে এসেছিল। যখন তারা নিদ্রিত ছিল ঝঞ্ঝা বায়ু তার ফসলকে করে দিল কৃষ্ণবর্ণ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -
"এবং তারা ইনশাআল্লাহ বলেনি।"*৫

স্পষ্ট করে নিজের কাজের কথা গুছিয়ে যাবে আর থাকে থাকে জীবনের উদ্যানে সুন্দর সুচারু রূপে উদ্ভাসিত হওয়ার জন্য ঈমান ও আমলের পশরা সাজিয়ে দেয়া মুত্তাকীদের কাজ।
একই সাথে বলবে মাশাআল্লাহ। যাদের দেমাগে থাকবে শুধু -
"আল্লাহই আমার প্রতিপালক এবং আমি কাউকেও আমার প্রতিপালকের শরীক করিনা। "*৬

যখন ধনে- সম্পদে, সন্তানে কম বেশি হয়, তখনই বলবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যা চেয়েছেন তাই হয়েছে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -
তুমি বলো,"আল্লাহ যা চেয়েছেন তাই হয়েছে, আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোনো শক্তি নেই ।"*৭
জীবনের অভিজ্ঞতায় আল্লাহর সাহায্য কেমন করে ঈমানের পথকে সুদৃঢ় করে তা যেমন দেখেছ বদর, উহুদ, খায়বারের প্রান্তরে, আজও কি নেই সেই সাহায্যের অরুণ প্রভা,যা তোমার জীবনকে বিকশিত করে?
খুঁটিনাটি কত উপলব্ধি ইসলামের দিগন্তে রামধনু এঁকে চলেছে তোমার সাথীকে সহীহ সঙ্গী বানানোর পথ বাতলিয়ে দিতে পারে।
চলো নিজেকে বদলায় আর সমাজের বূকে আনি নতুনের সোনালী আভা।
চলব নিরবধি সে পথে দুপায়ে
দিয়েছ বলে যে ঈমানী উপায়ে,
যখনি বলেছি পেয়েছি জবাব
দাওনিকো কখনো এমন অভাব।

জীবনের শত শত আলস্য ভুলি
খুঁজি তোমায়, খুঁজি পুঁথিগুলি,
আছে কাজ আর প্রার্থনা উপাসনা
দিয়েছ কত যে ভরে শত বাসনা।

মানুষ হয়ে মানুষের মতো হোক
ঝরে যাক সব গুনাহর পালক,
প্রাণ হতে প্রাণে আসুক সবে ভয়
আসুক পরিবর্তন হোক তব জয়।

*১ আবূ দাউদ
*২ তিরমিযী,
*৩, সূরাহ ,আনকাবুত, আয়াত ৭
*৪ সূরাহ কলম, আয়াত ৩৪
*৫ সূরাহ কলম, আয়াত ১৮
*৬ সূরাহ কাহাফ, আয়াত ৩৮
*৭সূরাহ কাহাফ, আয়াত ৩৯

সেরিনা বেগম
বসিরহাট
উঃ ২৪পরগনা

Address

Kolkata

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when রুদ্ধ নারীর মুক্ত কথা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to রুদ্ধ নারীর মুক্ত কথা:

Share

Category

রুদ্ধ নারীর মুক্ত কথা

জন্ম লগ্ন থেকে বাস্তবতার হাত ধরে আর পাঁচটা মানুষের মতো স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে পথ চলা শুরু হয়। সমাজের কঠিন অধ্যায়ের পথ চলতে চলতে কত নারীর স্বপ্ন ঝরে যায়। থেমে যায় তার স্বাভাবিক বিকাশ। নীরব হয়ে পড়ে প্রতিভা। ধর্মীয় কুসংস্কার, সমাজ, পুরুষতান্ত্রিকতায় রুদ্ধ নারী। ইতিহাস থেকে আজ প্রত্যেকের সুবিধা অনুযায়ী নারীকে তারা ব্যবহার করেছে একটি নির্জীব উপাদান হিসেবে। তার মনন সত্ত্বাকে তেমন কেউ যৌবনের মত গুরুত্ব দেয়নি। একদল নারীর অধিকার আর স্বাধীনতার কথা বলে, নারীকে পণ্য বানানোর কৌশলী চক্রান্তে লিপ্ত। আর অপর দল ধর্মের দোহাই দিয়ে স্তম্ভিত করতে চায় নারীর সৃজনশীলতা, রুদ্ধ করতে চায় তার পথ।

বর্তমান ধর্মীয় নেতাদের ফতোয়া যদি ধর্ম হয়ে থাকে তাহলে মনে হয় সত্যিই ইসলাম নারীদের বঞ্চিত করেছে। কিন্তু বাস্তবিক বিষয় হলো, ইসলাম কোন অজ্ঞ ধর্মীয় নেতা বা পীরের উপর নির্ভরশীল নয়। এটি স্বতন্ত্র ধর্ম যার নিয়মাবলি নিয়ে রচিত হয়েছে কুরআন এবং হাদিস। কুরআন এবং হাদিসের আলোকে নারীর অধিকার কোন সংক্ষিপ্ত পরিসরে নয়। বরং তার ব্যাপ্তি সুদূরপ্রসারী এবং নিয়ন্ত্রিত।

কিন্তু আজ তথাকথিত নারীবাদী বুদ্ধিজীবী (!) ও অজ্ঞ ধর্মীয় নেতাদের দলাদলিতে গিনিপিগ হয় নারীরাই। সমাজে নারী সর্বস্তরে সমান অধিকারীনি। কিন্তু একটু ভিন্ন ভূমিকায় (উদা:- কোন নারী কখনোই পিতা হওয়ার দাবী জানাতে পারে না)।