07/04/2024
আজ কলকাতায় মা ঢাকেশ্বরী বিরাজমান!
Marg Darshan বাংলা নিজস্ব প্রতিবেদন
কুমারটুলিতে মা ঢাকেশ্বরী বিরাজমান। ৮০ ৯০ দশকে
একটি বিখ্যাত বাংলা সিনেমা মোহনার দিকে সেই সময় খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। অভিনেত্রী অপর্ণা সেনের লিপে আশা ভোঁসলের গাওয়া জনপ্রিয় গানটির আজও জনপ্রিয়তার শিখরে।
"আছে গৌর নিতাই নদীয়া তে
কৃষ্ণ আছে মথুরাতে
কালীঘাটে আছেন কালী ঢাকেশ্বরী ঢাকায়
আয় গো তোরা দেখবি যদি আয় রে চলে আয়"।
এই গানে উল্লেখ করা আছে মা ঢাকেশ্বরী বিরাজমান ঢাকায়, কিন্তু মা ঢাকেশ্বরী আর ঢাকায় নেই। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় দ্বাদশ শতকে সেন রাজা বল্লাল সেন নির্মিত ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বর্তমানে মায়ের বিগ্রহ টি একটি প্রতিকৃতি মাত্র। বল্লাল সেনের প্রতিষ্ঠিত আদি মা ঢাকেশ্বরী মূর্তি নয়।তবে মা ঢাকেশ্বরী কোথায় অবস্থান করছেন? মায়ের অবস্থান কিন্তু তিলোত্তমায়, মা আছেন কালীক্ষেত্র কলকাতায়। কলকাতায় কোথায় মায়ের অবস্থান? উত্তর কলকাতা যা আদি সুতানুটির প্রাণকেন্দ্র মৃৎশিল্পী দের কর্মকাণ্ডের সাক্ষী কুমারটুলিতেই মা বর্তমানে রয়েছেন। মায়ের এই স্থান পরিবর্তনের কাহিনী ইতিহাসের পাতায় এক বেদনাদায়ক কাহিনী।১৯৪৭ দেশ ভাগ হবার পড়ে,
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সেবায়েত রাজেন্দ্র কিশোর তিওয়ারি, সাথে তার দুই সহযোগী তারা হলেন ব্রজেন্দ্র দুবে এবং হরিহর চক্রবর্তী, তারা বিমানে কলকাতা পৌঁছন ঢাকা বিমান বন্দরে। কাস্টমসের নজরদারি এড়ানোর জন্য তারা এক সাধারণ কাঠের বক্সে সুটকেস বন্দী হয়ে মাকে নিয়ে আসেন। প্রথমে মা বিরাজমান হন বঙ্গ লক্ষ্মী কটন মিলের মালিক বিশিষ্ট ধনী দেবেন্দ্রনাথ চৌধুরীর আবাসস্থলে। সেখানেই মায়ের প্রতিদিনের পুজো সম্পন্ন হতে থাকে। দ্রুত মায়ের জন্য মন্দির নির্মাণের প্রয়োজন অনুভব করেন দেবেন্দ্রনাথ । কুমারটুলি অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণ করবার পড়ে এক মন্দির নির্মাণ করেন । সেখানেই ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে মা অধিষ্ঠিত হন।
বল্লাল সেনের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, আদি মা ঢাকেশ্বরী বিগ্রহ আকারে দেড় ফুট লম্বা দশভূজা অষ্টধাতু নির্মিত স্বর্ণবর্ণা। মায়ের দুটি হাতে ধৃত ত্রিশূল, বাকি আটটি হাতে বিভিন্ন রকম মুদ্রা ধারণ করেছে। এখানেই হলো বর্তমান ঢাকার মন্দিরের বিগ্রহের সঙ্গে পার্থক্য । কারণ সেখানে মায়ের সকল হস্তই অস্ত্র রয়েছে।
বর্তমানে মায়ের পূজা পদ্ধতির সাথে ও ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে কিন্তু আলাদা। সম্ভবত মাকে নিয়ে আসার কান্ডারীরা উত্তর ভারতীয় হওয়ায় কারণে এবং কুমার টুলি অঞ্চলেও উত্তর ভারতীয় বসতি বৃদ্ধি পাওয়ায় জন্য মায়ের পূজা হয় একেবারে উত্তর ভারতের নবরাত্রির মত। হাড়ি কাঠ থাকলেও বলি প্রথা বন্ধ । পূজা হয় বৈষ্ণব মত অনুসারে, মাকে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়।