Md Alamgir Hossen

Md Alamgir Hossen educative

08/07/2024

Doctor Faustus Bangla Summary (ডক্টর ফস্টাস বাংলা সামারি)
ডক্টর ফস্টাস ক্রিস্টোফার মারলোর একটি ট্রাজেডি নাটক। এই নাটকে মূল চরিত্র ডক্টর ফস্টাসের করুণ পরিণতি দেখানো হয়েছে।

[পয়েন্টগুলো মনে রাখলে ঘটনাপ্রবাহ মনে রাখা সহজ হয়]

ফস্টাসের জাদুবিদ্যা শেখা ও শয়তানের কাছে আত্মসমর্পণ
জাদুবিদ্যার অপপ্রয়োগ
ফস্টাসের করুণ পরিণতি
১. ফস্টাসের জাদুবিদ্যা শেখা ও শয়তানের কাছে আত্মসমর্পণ

ডক্টর ফস্টাস জার্মানির একজন উচ্চ শিক্ষিত এবং সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি প্রচন্ডভাবে জ্ঞান-পিপাসু। নাটকের প্রথমেই দেখা যায়, তিনি জাগতিক সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে চান। প্রথমে তিনি যুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করেন, তারপর একে একে চিকিৎসাবিদ্যা, আইন, এবং ধর্মতত্ত্ব সব কিছুর জ্ঞান অর্জন করেন। কিন্তু তবুও তার তৃষ্ণা নিবারণ হচ্ছিলো না। তিনি এসবের উর্ধ্বে গিয়ে আরও কিছু শিখতে চান। তখন তিনি তার দুই বন্ধু ভ্যালদেস ও কর্নেলিয়াসের বুদ্ধিতে জাদুবিদ্যা শেখার সিদ্ধান্ত নেন। এমতাবস্থায়, তার সামনে গুড অ্যাঞ্জেল আর ব্যাড অ্যাঞ্জেল উপস্থিত হয় এবং তাকে যাদুবিদ্যার ভালো ও খারাপ দিক বোঝাতে থাকে। গুড অ্যাঞ্জেল তাকে বাইবেল নিয়ে পড়াশোনা করার পরামর্শ দেয়। অপরদিকে ব্যাড অ্যাঞ্জেল তাকে তার ইচ্ছা পূরণ অর্থাৎ যাদুবিদ্যা শেখার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে বলে। তিনি গুড অ্যাঞ্জেলক উপেক্ষা করে ব্যাড অ্যাঞ্জেলের পরামর্শ গ্রহণ করেন।

এরপর ফস্টাস যাদুবিদ্যার বই থেকে প্রাথমিক কিছু বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন এবং তার মাধ্যমে তিনি মেফিস্টোফিলিসকে হাজির করেন। মেফিস্টোফিলিস হাজির হয়ে তাকে ডাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে। তখন ফস্টাস জানান যে, তিনি অসীম ক্ষমতার অধিকারী হতে চান। এটা জানার পর মেফিস্টোফিলিস তাকে এই যাদুবিদ্যার ভয়ংকর পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে। কিন্তু ফস্টাস এতেও পিছপা হন না। বরং সব কিছু জেনেও তিনি শয়তানের নেতা লুসিফারের শরণাপন্ন হন। তখন মেফিস্টোফিলিস জানায় যে ফস্টাস যতদিন বাঁচবে ততদিন সে তার সেবা করবে। কিন্তু এই আনুগত্য পেতে হলে ফস্টাসকে একটি শর্ত মানতে হবে। সেই শর্ত মোতাবেক, ফস্টাসকে তার আত্মা শয়তানের কাছে সমর্পণ করতে হবে এবং বিনিময়ে ফস্টাস ২৪ বছর মেফিস্টোফিলিসের সেবা পাবে। কিন্তু যখনই এই চুক্তির মেয়াদোত্তীর্ণ হবে তখন ফস্টাস এক বিভৎস ও ভয়ংকর মৃত্যুর সম্মুখীন হবে। ডক্টর ফস্টাস যাদুবিদ্যা শেখার জন্য এতটাই উদগ্রীব হয়ে ওঠেন যে প্রথমে তিনি সংকোচ বোধ করলেও মেফিস্টোফিলিসের শর্ত মেনে নেন।

চুক্তি অনুসারে, প্রথমত ডক্টর ফস্টাস শয়তানের দলভুক্ত হবে এবং গডদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। দ্বিতীয়ত, মেফিস্টোফিলিস সবসময় ফস্টাসের আনুগত্য করবে। তৃতীয়ত, ফস্টাস যেটাই চাইবে সেটাই তার সামনে হাজির করবে। চতুর্থত, মেফিস্টোফিলিস সবসময় ফস্টাসের রুমে অদৃশ্য হয়ে থাকবে। সবশেষে, ফস্টাস যখন চাইবে মেফিস্টোফিলিস তার সামনে হাজির হবে। চুক্তিপত্রে এটাও উল্লেখ থাকে যে, ২৪ বছর পর শয়তান তার আত্মা এবং শরীর দুটোই নিজেদের আওতায় নিয়ে নেবে।

যাহোক, ফস্টাস অতিরিক্ত কিছু ভাবা ছাড়াই চুক্তিপত্রে সাইন করে দেন। তিনি মনে মনে একটু আধটু সংকোচ বোধ করলেও যখন মেফিস্টোফিলিস তাকে যাদুবিদ্যার বই উপহার দেয় তখন তিনি আর ইতস্তত করেন না। তখন ফস্টাস মেফিস্টোফিলিসকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলে সে সবগুলোর উত্তর দেয়। শুধুমাত্র একটির উত্তর দিতে পারে না, আর সেটা হচ্ছে কে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন। এই পর্যায়ে তিনি আবার কিছুটা ইতস্তত বোধ করেন। আর তখনই মেফিস্টোফিলিস এবং লুসিফার তাকে সাতটি নিকৃষ্ট পাপ (Seven Deadly Sins) উপহার দেয়। এগুলো হচ্ছে অহংকার, যৌনলালসা, ক্রোধ, হিংসা, অতিভোজন, আলস্য, এবং লোভ।

২. জাদুবিদ্যার অপপ্রয়োগ

এরপরে ফস্টাস তার যাদুর অপপ্রয়োগ করা শুরু করেন। তিনি মেফিস্টোফিলিসের সাথে ভ্রমণে বের হন। প্রথমে তারা রোমের একটি গির্জায় যান। সেখানে পৌঁছে মেফিস্টোফিলিসের সহায়তায় তিনি গির্জার পাদ্রীর সাথে ঠাট্টা করা শুরু করেন এবং উপস্থিত সবাইকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতে থাকেন। সেখান থেকে তিনি ইউরোপের বিভিন্ন রাজসভায় ভ্রমণ করেন। এক পর্যায়ে, তিনি জার্মানির রাজসভায় আমন্ত্রিত হন। রাজা পঞ্চম চার্লস ফস্টাসের কাছে যাদু দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শাসক আলেকজান্ডারকে দেখতে চান। তার ইচ্ছানুযায়ী ফস্টাস আলেকজান্ডারের প্রতিচ্ছবি প্রদর্শন করেন। এতে তিনি খুশি হয়ে যান।

এরপর তিনি এক ব্যবসায়ীর সাথে ঠাট্টা তামাশা করেন। ফস্টাস সেই ব্যবসায়ীর কাছে একটি ঘোড়া বিক্রি করেন। তিনি তাকে সাবধান করে দেন যেন ঘোড়াটাকে পানিতে নামানো না হয়। কিন্তু ব্যবসায়ী তার এই কথা না শুনে ঘোড়াটিকে পানিতে নামায় আর সাথে সাথেই সেটা অদৃশ্য হয়ে যায়। তখন ব্যবসায়ী ফস্টাসের কাছে এসে তার অর্থ ফেরত দিতে বলে। কিন্তু তিনি অর্থ ফেরত না দিয়ে তাকে যাদুর সাহায্যে বিদায় করে দেন।

ইতোমধ্যেই, যাদুর জন্য ফস্টাসের নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। একদিন ভ্যানহল্টের রাজা তাকে যাদু দেখানোর জন্য সভায় আমন্ত্রণ জানান। তিনি সেখানে হাজির হলে সেই ব্যবসায়ীকে দেখতে পান। নিজের নাম বদনাম হওয়ার ভয়ে তিনি ব্যবসায়ীকে বোবা করে দেন যে কারও কাছে সে ফস্টাসের কীর্তি বলতে না পারে। এরপর রাণি তাকে আঙ্গুর ফল হাজির করতে বলেন। কিন্তু তখন ছিলো জানুয়ারি মাস এবং বছরের সেই সময়ে আঙ্গুর ছিলো দুষ্প্রাপ্য । কিন্তু ফস্টাস তার যাদুর সাহায্যে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেন। এতে রাজা-রাণি দুজনেই খুশি হন।

এরপর ২-৩ জন স্কলার ফস্টাসকে যাদুর সাহায্যে হেলেন (পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা) কে আনতে বলেন। মেফিস্টোফিলিসের দ্বারা ফস্টাস সেটাও করে দেখান এবং ব্যাপকভাবে সম্মানিত হন।

৩. ফস্টাসের করুণ পরিণতি

হঠাৎ করে ফস্টাস শুনতে পান, এক বৃদ্ধ তাকে অভিশাপ দিচ্ছে। বৃদ্ধ বলেন, ফস্টাস যে পরিমাণ পাপ করেছে তাতে সে কখনোই যিশু খ্রীস্টের অনুগ্রহ পাবেনা। এটা শোনার পর ফস্টাস মনোঃক্ষুন্ন হয়ে যান এবং ভাবতে থাকেন কতই না খারাপ কাজ তিনি করেছেন। তার মধ্যে অনুশোচনা দেখা দেয়। কিন্তু পরক্ষণেই মেফিস্টোফিলিস তাকে খারাপ কাজের আনন্দ সম্পর্কে বোঝাতে থাকে। ফস্টাস খুবই অস্বস্তিবোধ করতে থাকেন এবং জানান একমাত্র হেলেনের উপস্থিতি তাকে শান্ত করতে পারবে। তখন মেফিস্টোফিলিস হেলেনকে হাজির করে এবং ফস্টাস তাকে চুম্বন দিয়ে নিজের দুষ্টু ইচ্ছা পূরণ করেন।

এরই মধ্যে ফস্টাসের চুক্তির সময় শেষ হয়ে আসে। শেষ মুহূর্তে এসে তিনি বুঝতে পারেন যে কতশত পাপ করেছেন এ জীবনে। এসব ভেবে তিনি ভেঙে পড়েন। ফস্টাসের বন্ধু তাকে যিশুর কাছে প্রার্থনা করতে বলেন। ততক্ষণে তিনি সেই ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছেন। মৃত্যু ভয়ে তিনি সংকুচিত হয়ে যান। ঠিক মৃত্যুর আগ মুহূর্তে তিনি স্রষ্টার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। শয়তানের অনুসারীরা এসে তার আত্মা শরীর থেকে বের করে জাহান্নামে নিয়ে যায়। আর এভাবেই তার অভিশপ্ত জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

08/12/2023

The Greek philosopher Aristotle (384-322 B.C.) made significant and lasting contributions to nearly every aspect of human knowledge, from logic to biology to ethics and aesthetics. Though overshadowed in classical times by the work of his teacher Plato, from late antiquity through the Enlightenment, Aristotle’s surviving writings were incredibly influential. In Arabic philosophy, he was known simply as “The First Teacher.” In the West, he was “The Philosopher.”

গ্রীক দার্শনিক অ্যারিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) যুক্তিবিদ্যা থেকে জীববিজ্ঞান, নীতিশাস্ত্র এবং নান্দনিকতা পর্যন্ত মানব জ্ঞানের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্থায়ী অবদান রেখেছিলেন। যদিও ধ্রুপদী যুগে তার শিক্ষক প্লেটোর কাজ দ্বারা আচ্ছাদিত হয়েছিল, প্রাচীনকালের শেষ থেকে আলোকিত হওয়া পর্যন্ত, অ্যারিস্টটলের বেঁচে থাকা লেখাগুলি অবিশ্বাস্যভাবে প্রভাবশালী ছিল। আরবি দর্শনশাস্ত্রে, তিনি কেবল "প্রথম শিক্ষক" হিসাবে পরিচিত ছিলেন। পাশ্চাত্যে তিনি ছিলেন 'দার্শনিক'।

03/12/2023

Hercules is a 1997 animated musical comedy fantasy adventure film produced by Walt Disney Feature Animation and released by Walt Disney Pictures. The 35th film in the Disney Animated Canon and the eighth entry of the Disney Renaissance, Hercules was directed by Ron Clements and John Musker. The movie is an American fantasy tale very loosely based on Ancient Greco-Roman mythology, more specifically the adventures of Heracles (known in the movie by his Roman name, Hercules), the son of Zeus

I have reached 900 followers! Thank you for your continued support. I could not have done it without each of you. 🙏🤗🎉
03/12/2023

I have reached 900 followers! Thank you for your continued support. I could not have done it without each of you. 🙏🤗🎉

26/09/2023

A simile is a figure of speech that compares two otherwise dissimilar things, often introduced by the words like or as ('you are like a summer's day'). A metaphor is when a word is used in place of another to suggest a likeness ('you are a summer's day').
একটি উপমা হল বক্তৃতার একটি চিত্র যা দুটি অন্যথায় ভিন্ন জিনিসের তুলনা করে, প্রায়শই ('আপনি গ্রীষ্মের দিনের মতো') এর মতো শব্দ দ্বারা প্রবর্তিত হয়। একটি রূপক হল যখন একটি শব্দের পরিবর্তে অন্য একটি শব্দ ব্যবহার করা হয় একটি উপমা প্রস্তাব করার জন্য ('আপনি একটি গ্রীষ্মের দিন')

13/11/2021

The god of small things - Arundhati Roy
Characters
1. Pappachi - Ammu and father
2. Mammachi - Ammu and Chako's mother
3. Mom - Rachel and Esther's mother
4. Father - Rachel and Esther's father
5. Chaco - Ammu's brother, and the child of Mammachi and Pappachi
. Margaret Kochamma - Chaco's wife
. Baby Kochamma - Mother's aunt
. Sophie Mall - Chaco and Margaret's daughter
9. Joe - Margaret's boyfriend
10. Esthapen - in short esthapen. Mother's son
11. Rachel - Mother's daughter
12. Velutha - Employee of Mammachi's pickle factory.
13. Kachu Maria - Housemaid
14. Vale Pappen - Velutha's father
15. Kattapen - Velutha's brother
16. Mr. Holick - Father's boss
16. Larry McCaslin - American architect - Rachel's foreign husband.
16. Police officer
Other writings and translations of the syllabus of the Masters Final


The novel God of Small Things is based on an incident that took place between a family in the Indian state of Kerala between 1983 and 1993. The family at the center of the incident was from Syria and they were a Christian family. They lived in Aimenem, Kerala. Most of it happened in 1983. And both Rachel and Estha were the main focus. They both lived with their mother, mother and grandmother. They lived with their uncle Chako and their grandmother's sister Baby Kochamma.
Mamachi married Papachi and Papachi was an entomologist. One morning he discovers a new insect in his cup of tea which he did not get the credit for discovering but one of his assistants. Because of this he was in a very sad state of mind. He used to beat his wife severely. Papachi died in 1983 and Mamachi went blind.
the god of small things - arundhati roy
Behind his house was the Minachal River and Paradise Pickles and Preserves, a pickle factory established by Mamachi. Her sister Baby Kochamma was a bitter and jealous woman who fell in love with an Irish missionary. Desiring to be with her, she went to Madras and joined there as a nun. But all in vain, she did not find him as her life partner. So she remained unmarried all her life.
Mamachi's son Chacko goes to London to study and there he marries a girl named Margaret Kochamma and they have a child named Sophie Mall. Margaret, meanwhile, leaves Chaco and goes to a man named Joe. Chaco then moved to Aimenem and took charge of their pickle factory.
My mother first went to Calcutta and there she met a man named Baba. Dad offers her love, but after 5 days she agrees. After the marriage, it was seen that the father lost his job and he was an alcoholic. They have twin children. The boy was named Esthappen and the girl was named Rachel. Dad used to work at the tea estate and in the hope of getting his job back he told his wife and mother to entertain Mr. Holly, the manager of the tea estate. When his mother did not agree, he beat her severely. He even started beating Esther and Rachel. Then the mother came to her mother with her children. Baby Kochchammai was their guardian at the time, she herself was abused by men so she did not feel any kindness or affection towards her mother. He could not accept why a married girl would stay at her father's house. Baby Kochammai is the root of all the sorrows of mother's life in her father's house after her husband.

Meanwhile, when Chacko's wife Margaret's boyfriend Joe dies, he invites his wife to come to Aymanem. She comes there with her child Sophie. Chaco, Mom and their children, Estha and Rachel, go to the airport to pick him up. The communists had to stop in front of a procession on the street. At that time, Rachel saw Velutha flying a red flag inside the procession. Velutha was an untouchable and he had the main responsibility of looking after their factory.
On their way back, they went to the theater to see Rachel and Esther's favorite movie, Sound of a Music. The song was sung along with the movie. Then he was asked to go to the back row of the cinema hall and sing. At that moment, the theater's food vendor insulted her.
The next morning, Rachel noticed that everyone was busy with Margaret and Sophie. None of them were paying much attention, then I started feeling a little jealous. Rachel had a good relationship with Velutha, a factory worker. Then he started talking to her about it. She told him she had seen him in the procession. However, he did not tell her that he did not want to see his staff in the communist procession. My mother saw the scene of their fight and she too started feeling jealous.
Estha was mentally disturbed at the time due to the incident with the food vendor. It seemed to him that the food vendor would come again. She wanted to get out of this situation. So he and his sister Rachel set out secretly in a boat. However, they went after Sophie. She wanted to be their partner. It was during this time that the secret relationship between Ammu and Velutha was revealed. Ammu was kept in her room. At that moment, the three of them set out for their naval monastery. At night their boat sank after being hit by a huge tree stump. So Rachel somehow managed to swim to shore but Sophie didn't know how to swim and she drowned. The two of them hid in a place called History House.
When Sophie's body was found, they handed Velutha over to the police. Baby Kochamma told police that Veluthai had killed Sophie because of her mother's detention and had hidden the two of them. He was severely beaten by police for seeking information. At one point Velutha died. At that time, his mother, Rachel and Estha went to the police station to free Velutha, but by then Velutha had been beaten to death by the police. This did not end everything but the situation got worse. Ammar's incident and Sophie's death somehow divided their whole family. Margaret blamed her mother for Sophie's death. The three of them were separated at Sophie's funeral.
At that time he went to his father. Rachel stayed with her blind aunt. She admitted him to the school. And their mother and mother left home. He then studied at an Architecture College. A few years later, Rachel reunited with her mother. And when he found out that his mother had a disease in his lungs, he would die soon. His mother died when he was 11 years old. Rachel left for America after marrying a senior college student. He used to work in a restaurant there. She could not love him. At one point he divorced her.
At the age of 31, Rachel learned that her brother had returned to Aimenem. He has become a bit dumb with his father, he doesn't talk to anyone, he walks a long way without looking in any direction. Rachel then set out for Aimenem. Here she did not find her mother alive but Baby Kochamma was still alive. Rachel spent the day with her brother. Reminds me of the old days to bring him back to his former state. This is the first time she has fallen in love with someone even though she shouldn't fall in love.

The god of small things - Arundhati Roy -
সংক্ষেপ ও চরিত্র তালিকা
এক নজরে চরিত্র সমূহঃ
১। পাপ্পাচি – আম্মু আর চাকোর পিতা
২। মাম্মাচি – আম্মু আর চাকোর মা
৩। আম্মু – রাহেল আর এসথার মা
৪। বাবা – রাহেল আর এসথার পিতা
৫। চাকো- আম্মুর ভাই, আর মাম্মাচি ও পাপ্পাচির সন্তান
৬। মার্গারেট কোচাম্মা – চাকোর স্ত্রী
৭। বেবী কোচাম্মা – আম্মুর খালা
৮। সোফি মল – চাকো ও মার্গারেট এর মেয়ে
৯। জো – মার্গারেট এর প্রেমিক
১০। এসথাপ্পেন - সংক্ষেপে এসথা। আম্মুর ছেলে
১১। রাহেল – আম্মুর মেয়ে
১২। ভেলুথা – মাম্মাচ্চির আচারের কারখানার কর্মচারী।
১৩। কচু মারিয়া – বাসার চাকরানী
১৪। ভেলে পাপ্পেন – ভেলুথার পিতা
১৫। কাট্টাপেন - ভেলুথার ভাই
১৬। মিঃ হলিক – বাবার বস
১৭। ল্যারি ম্যাক ক্যাসলিন - আমেরিকান স্থপতি – রাহেলের বিদেশী স্বামী।
১৮। পুলিশ অফিসার
মাস্টার্স ফাইনালের সিলেবাসের অন্যান্য লেখা ও অনুবাদ মূল ঘটনাঃ


গড অভ স্মল থিংস উপন্যাসটি ইন্ডিয়ার কেরালা রাজ্যের কোন একটি পরিবারের ঘটে যাওয়া ১৯৬৩ এবং ১৯৯৩ সালের মধ্যকার কিছু ঘটনা নিয়ে রচিত হয়েছে। ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পরিবারটি ছিল সিরিয়া থেকে আগত আর তারা ছিল খ্রিষ্টান পরিবার। তারা কেরালার আইমেনেম শহরে বাস করত। বেশিরভাগ অংশ ১৯৬৩ সালেই ঘটেছিল। আর রাহেল আর এসথা নামক চরিত্র দুটিই ছিল মূল মনোযোগের বিষয়। তারা দুইজন তাদের মা আম্মু আর নানী মামাচির সাথে বাস করত। তাদের সাথে বাস করত তাদের ফুপা চাকো এবং তাদের নানীর বোন বেবী কোচাম্মা।
মামাচি বিয়ে করে পাপাচিকে এবং পাপাচি ছিল একজন পতঙ্গবিদ। একদিন সকাল এ সে তার চায়ের কাপে একটি নতুন পতঙ্গ আবিষ্কার করে যেটি আবিষ্কারের কৃতিত্ব সে লাভ করেনি বরং তার এক সহকারি সেটি লাভ করে। এ জন্যে সে প্রচন্ড বিষাদময় একটা মানসিক অবস্থায় ছিলেন। সে তার স্ত্রীকে প্রচন্ড প্রহার করত। ১৯৬৩ সালে পাপাচি মারা যায় এবং মামাচি অন্ধ হয়ে যায়।
the god of small things - arundhati roy
তার বাড়ির পিছনেই ছিল মিনাচল নদী আর মামাচির প্রতিষ্ঠিত আচার উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরী প্যারাডাইজ পিকলস এন্ড প্রিজার্ভস। তার বোন বেবী কোচাম্মা ছিল একজন তিক্ত ও হিংশুক মহিলা যে একজন আইরিশ মিশনারী্র প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। তাকে কাছে পাবার আকাঙ্খায় সে মাদ্রাজ গিয়েছিল আর সেখানে নান হিসেবে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু সবই বৃথা, তাকে সে তার জীবন সঙ্গিনী হিসেবে পায় নি। তাই সে সারা জীবন অবিবাহীতই থেকে যায়।
মামাচির ছেলে সন্তান চাকো লন্ডনে যায় পড়াশুনা করতে আর সেখানে গিয়ে সে মার্গারেট কোচাম্মা নামক একটি মেয়েকে বিয়ে করে এবং তাদের একটি সন্তান হয় যার নাম রাখা হল সোফি মল। এদিকে মার্গারেট চাকোকে ছেড়ে জো নামক একজন পুরুষের কাছে চলে যায়। চাকো তখন আইমেনেম এ চলে আসে আর তাদের আচার তৈরীর ফ্যাক্টরীর দায়িত্বভার গ্রহন করে।
আম্মু প্রথমে কলকাতা চলে যায় আর সেখানে বাবা নামক একজনের সাথে তার দেখা হয়। বাবা তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়, ৫ দিনের মাথায় সে রাজী হয়ে যায়। বিবাহের পরে দেখা যায় বাবার চাকরি চলে যায় আর সে ছিল একজন মদখোর। তাদের দুটি জমজ সন্তান হয়। ছেলেটির নাম রাখে এস্থাপ্পেন আর মেয়েটির নাম রাখে রাহেল। বাবা টি এস্টেটে চাকরি করত সে তার চাকরি ফিরে পাবার আশায় তার স্ত্রী আম্মুকে টি এস্টেটের ম্যানেজার মিঃ হলিককে মনোরঞ্জন করতে বলে। আম্মু রাজি না হওয়ায় সে তাকে কঠিন ভাবে প্রহার করে। এমনকি এসথা আর রাহেলকেও সে প্রহার করতে শুরু করে। তখন আম্মু তার সন্তানদের নিয়ে তার মায়ের কাছে চলে আসে। বেবি কোচ্চাম্মাই তখন তাদের অবিভাবক, সে নিজেও যেমন পুরুষদের দ্বারা নিগৃত ছিল তাই সে আম্মুর প্রতি কোন দয়া বা মায়া অনুভব করতো না। সে মেনেই নিতে পারত না যে একজন বিবাহীত মেয়ে কেন বাবার বাসায় থাকবে। বেবী কোচাম্মাই স্বামী পরবর্তী বাবার বাসায় আম্মুর জীবনের সকল দূঃখ কষ্টের মুল।

এদিকে চাকোর স্ত্রী মার্গারেট এর প্রেমিক জো মারা গেলে সে তার স্ত্রীকে আয়মেনেম এ আসার আমন্ত্রন জানায়। সে তার সন্তান সোফিকে নিয়ে সেখানে আসে। তাকে আনার জন্যে বিমানবন্দরে চাকো, আম্মু আর তাদের সন্তান এস্থা আর রাহেল যায়। রাস্তায় কম্যুনিস্টদের একটা মিছিলের সামনে পড়ে তাদের যাত্রা বিরতি দিতে হয়। এ সময় রাহেল দেখে মিছিলের ভেতর তাদের আচারের কারখানার কর্মচারী ভেলুথা লাল পতাকা ওড়াচ্ছে। ভেলুথা ছিল একজন অচ্ছুত ব্যক্তি আর তাদের কারখানার দেখভালের মূল দায়িত্বই সে পালন করত।
এরপর তারা ফেরার পথে রাহেল আর এস্থার প্রিয় সিনেমা “ সাউন্ড অফ আ মিউজিক” দেখার জন্যে থিয়েটার এ গেল। এসথা সিনেমার সাথে সাথেই গান গেয়ে গেল। তখন তাকে সিনেমা হলের পিছনের সারিতে গিয়ে গান গাইতে বলা হল। এসময় থিয়েটারের খাবার বিক্রেতার দ্বারা এসথা লাঞ্ছিত হল।
এর পরের দিন সকাল এ রাহেল খেয়াল করল সবাই মার্গারেট আর সোফি কে নিয়ে ব্যাস্ত। তাদের কেউই তেমন একটা পাত্তা দিচ্ছে না, তখন কিছুটা হিংশা অনুভব করতে লাগলো। আচার কারখানার কর্মচারী ভেলুথার সাথে ছিল রাহেলের ভাল সম্পর্ক। তখন সে এ ব্যাপারে তার সাথে কথা বলতে লাগল। তাকে বলল সে তাকে মিছিলে দেখেছে। তবে সে যে তার কর্মচারীদের কম্যুনিষ্টদের মিছিলে দেখতে চায় না এ ব্যাপারে তাকে কিছুই বলল না। তাদের এই মাখামাখির দৃশ্য আম্মু দেখল আর সেও হিংশা অনুভব করতে লাগল।
খাদ্য বিক্রেতার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার কারনে এসথা এসময় মানসিকভাবে পিড়িত ছিল। তার কাছে মনে হচ্ছিল যেন খাদ্য বিক্রেতা আবার আসবে। সে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চাচ্ছিল। তাই সে আর তার বোন রাহেল একটা নৌকায় করে গোপনে ঘুরতে বের হল। তবে তারা সোফির কাছে ধরা পরে গেল। সে তাদের সঙ্গী হতে চাইল। এই সময় আম্মু আর ভেলুথার মাঝে যে গোপন সম্পর্ক ছিল তা প্রকাশ হয়ে গেল। আম্মুকে তার ঘরে আটকিয়ে রাখা হল। এই মোক্ষম সময়ে তারা তিনজন তাদের নৌ বিহারে বের হল। রাতে একটা বিশাল গাছের গুড়ির সাথে লেগে তাদের নৌকা ডুবে গেল। এসথা আর রাহেল কোনমতে সাতার কেটে তীরে পৌছাল কিন্তু সোফি সাতার না জানায় সে ডুবে গেল। তারা দুই জনে হিস্টোরী হাউজ নামক স্থানে লুকিয়ে রইলো।
পরে সোফির দেহ পাওয়া গেলে তারা ভেলুথাকে পুলিশে দিল। বেবী কোচাম্মা পুলিশকে জানাল আম্মুকে আটকে রাখার কারনে ভেলুথাই সোফিকে হত্যা করেছে আর তাদের দুজনকে লুকিয়ে রেখেছে আরো জানালো ভেলুথা আম্মুকে ধর্ষন করেছে। পুলিশ তথ্য আদায়ের জন্যে তাকে চরমভাবে প্রহার করল। এক সময় ভেলুথা মারা গেল। এ সময় আম্মু, রাহেল আর এসথাকে নিয়ে থানায় গেল ভেলুথাকে মুক্ত করার জন্যে কিন্তু ততক্ষনে ভেলুথা পুলিশের বেদম প্রহারে মৃত্যু বরণ করেছে। এতে করে সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি বরং ঘটনা আরো খারাপ রুপ লাভ করল। আম্মুর ঘটনা আর সোফির মৃত্যু তাদের পুরো পরিবারকে একরকম বিভক্ত করে তুলল। মার্গারেট সোফির মৃত্যুর জন্যে আম্মুকেই দায়ি করল। সোফির অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে তাদের তিনজনকে আলাদা করে রাখা হল।
এসময় এসথা তার পিতা বাবার কাছে চলে গেল। রাহেল অন্ধ মামাচ্চির কাছেই রয়ে গেল। সে তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দিল। আর তাদের মা আম্মু বাড়ি থেকে চলে গেল। এরপর সে একটি স্থাপত্যবিদ্যার কলেজে পড়াশুনা করল। কয়েক বছর পরে রাহেল আম্মুর সাথে মিলিত হল। আর জানতে পারল তার মা আম্মুর ফুসফুসে একটা রোগ ধরা পড়েছে, অচিড়েই সে মারা যাবে। তার ১১ বছর বয়সেই তার মা মারা গেল। রাহেল এর পর তার পরাশুনা শেষ না করেই কলেজের একজন অগ্রজ ছাত্রকে বিয়ে করে আমেরিকা চলে গেল। সেখানে একটি রেস্টুরেন্ট এ কাজ করত। তাকে সে ভালোবাসতে পারল না। এক সময় সে তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।
৩১ বছর বয়সে রাহেল জানতে পারল তার ভাই আইমেনেম এ ফিরে এসেছে। তার বাবার সাথে থেকে সে কিছুটা বোবা প্রকৃতির হয়ে গেছে, সে কারো সাথেই কথা বলে না, কোন দিকে না তাকিয়ে দীর্ঘ রাস্তা হেটে বেড়ায়। রাহেল তখন আইমেনেম এর দিকে যাত্রা করল। এখানে সে তার মা আম্মুকে জীবিত পেল না কিন্তু বেবি কোচাম্মা তখনো বেচে ছিল । রাহেল তার ভাইয়ের সাথে সারাদিন কাটাতে লাগল। তাকে তার আগের অবস্থায় আনার জন্যে পুরোনো দিনে স্মৃতি গুলো মনে করিয়ে দিত। সে এই প্রথম কারো প্রেমে পড়ে গেল যদিও তার প্রেমে পড়া উচিত নয়।

05/11/2021

Introduction to Culture and Imperialism - Edward Said
Five years after Orientalism was published in 1967, I began to gather some ideas about the general relationship between culture and empire that became clear to me when I wrote the book. The primary result of this effort was my lectures at universities in the United States, Canada, and England between 1975 and 1978. Keep me busy since that time.
These lectures have organized the central argument of my current work. All the arguments I have put forward in Limited Orientalism about the Middle East stem from my extensive knowledge of anthropology, history, and geology. So here I have sought to elaborate on the arguments of the earlier text in order to describe the general pattern of the relationship between the modern urbanized west and its occupied territories overseas.
So what are some of the non-Middle Eastern materials discussed here? Africa, India, Parts of the Far East, Australia and the Caribbean Islands ইউরো European writings about them, all these African and Indo-American variations, some of which are called as I see them as part of a general European effort to govern the Far East and its inhabitants, and consequently Islam. As related to the Orientalist description of the world as well as to the particular European strategy of describing the Caribbean islands, Ireland and the Far East. The interesting thing about all these theories is that we have to face various rhetoric again and again. They contain descriptions of the 'mysterious Orient' and 'African [or Indian, or Irish or Jamaican or Chinese] mindset, in the guise of bringing civilization to primitive or barbaric settlements, in the annoying notion of whipping or prolonged punishment. ‘If they misbehaved, because they understood the language of the relevant force or violence best; ‘We were not like the‘ stars ’, and he was forced to be ruled because of that.


Even then, in reality, the arrival of white people in almost all non-European regions has been hampered in one way or another. This reaction against Western domination, at the height of which began the great movement for the abolition of colonization throughout the Third World. I kept the subject out of the realm of Orientalism. In addition to the armed resistance organized in various places in nineteenth-century Algeria, Iceland, and Indonesia, significant efforts were made almost everywhere to build organizations or groups for the common goal of cultural resistance, declaration of national identity, and independence and national independence in the political arena. In this case, it never happened that the enterprising infiltrators in the conflict of the empire sat on the innocent or helpless non-western natives! There has always been some kind of active resistance, and in the overwhelming majority, this resistance has finally won.
The global general pattern of imperialist culture and the historical experience of the anti-imperialist resistance organization দুই these two regulators বর্তমান have made the present text so varied that it has become not only an answer to Orientalism but an attempt to do something different. In both texts, I focus on what I generally call 'culture'. The word ‘culture’ I use refers specifically to two things. First, it refers to practices, such as the art of narration, communication, and presentation, which are relatively independent of the economic, social, and political spheres and are often shaped aesthetically, one of the main purposes of which is entertainment. Of course, there is a wealth of popular folklore about the remote parts of the world associated with it, as well as specialized knowledge from ethnography, historiography, linguistics, sociology, and literary history. Since the modern Western empires of the nineteenth and twentieth centuries are the main focus of my discussion, I have specifically focused on cultural organizations such as the novel. They were, in my opinion, crucial to the imperialist perspective, formula, and empiricism. I am not saying that the novel was the only thing that mattered, but that it was the aesthetic object with which the growing societies of England and France were connected, I believe, of great interest in study.


The originator of the modern realist novel is Robinson Crusoe, and of course it did not happen by accident that this novel is about a European man who has established a place for himself on a distant non-European island.
A large amount of recent criticism has focused on narrative fiction, but very little attention has been paid to its place in the world of history and empire. Readers of this book will soon learn that narration is essential to my reasoning here, since my main point is that what the explorers and novelists say about the uncharted regions of the world is at the heart of the story. These have also become a strategy for self-identification of the colonial people and for declaring the existence of their own history. The real war of imperialism is of course over land. But who owns the land, who owns the settlements and works on it, who runs it, who reclaims it, and who plans for its future এসব these are created, discussed, and never-before-determined narratives. . As one critic has s
Introduction to Culture and Imperialism - Edward Said
১৯৭৮ সালে ওরিয়েন্টালিজম প্রকাশিত হবার বছর পাঁচেক পর বইটি রচনাকালে সংস্কৃতি ও সাম্রাজ্যের মধ্যেকার সাধারণ সম্বন্ধের যে ব্যাপারটি আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, সে বিষয়ে আমি কিছু ধারণা জড়ো করতে শুরু করি। এ চেষ্টার প্রাথমিক ফল হলো ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেয়া আমার বক্তৃতাগুলো। আমাকে সেই সময় থেকে ব্যস্ত রাখা।
আমার বর্তমান কাজের কেন্দ্রীয় যুক্তি সংগঠিত করেছে এই বক্তৃতামালা। মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ে সীমাবদ্ধ ওরিয়েন্টালিজম-এ যে-সব যুক্তি আমি পেশ করেছি তা নৃবিজ্ঞান, ইতিহাস এবং অঞ্চলবিদ্যা বিষয়ে আমার সবিশেষ জানাশোনা থেকে উদ্ভূত হয়েছে। সুতরাং আমি এখানে আধুনিক নগরায়িত প্রতীচ্য ও এর সাগরপারের অধিকৃত অঞ্চলগুলোর মধ্যকার সম্বন্ধের সাধারণ বিন্যাস বর্ণনার উদ্দেশ্যে পূর্বতন গ্রন্থের যুক্তিগুলোকে বিস্তারিত করতে সচেষ্ট হয়েছি।
তো এখানে আলোচিত অ-মধ্যপ্রাচ্যীয় সামগ্রীগুলোর কয়েকটা কী কী? আফ্রিকা, ভারত, দূরপ্রাচ্যের অংশ বিশেষ, অস্ট্রেলিয়া এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ-এদের সম্পর্কে ইউরোপের লেখাজোখা, এই সব আফ্রিকাতাত্ত্বিক ও ভারততাত্ত্বিক প্রকরণ এদের কোনো কোনোটাকে যা বলে ডাকা হয় এদের আমি দেখি দূরবর্তী অঞ্চল ও তার অধিবাসীদের শাসন করার সাধারণ ইউরোপীয় প্রয়াসের অংশ হিসেবে এবং ফলত, ইসলামি বিশ্বের প্রাচ্যবাদী বর্ণনার সাথে এবং একই সঙ্গে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, আয়ারল্যান্ড ও দূর প্রাচ্যকে বর্ণনার বিশেষ ইউরোপীয় কৌশলের সাথে সম্পর্কিত হিসেবে। এই সব তত্ত্ববিলাসের মধ্যে আগ্রহোদ্দীপক বিষয় যেটি তা হলো বারবার নানা বাচ্যালঙ্কারের মুখোমুখি হতে হয়। এগুলোতে পাওয়া ‘রহস্যময় প্রাচ্য’-এর বর্ণনা আর ‘আফ্রিকীয় [ অথবা ভারতীয়, কিংবা আইরিশ বা জ্যামাইকান কি চৈনিক ] মানস’ সম্পর্কিত ছকবাঁধা বয়ানে, আদিম বা অসভ্য জনপদে সভ্যতা পৌঁছে দেয়ার ভণিতায়, চাবকে মেরে ফেলা বা প্রলম্বিত শাস্তির বিরক্তিকরভাবে পরিচিত ধারণায় যার দরকার হতো ‘তারা অসদাচারণ করলে, কারণ তারা প্রসঙ্গত শক্তি বা সহিংসতার ভাষা সবচেয়ে ভালো বুঝত; ‘আমরা যেমন ‘তারা’ সেরকম ছিল না, আর সে-কারণে শাসিত হতে বাধ্য ছিল।


এরপরও বাস্তবে প্রায় সকল অ-ইউরোপীয় অঞ্চলে সাদা মানুষদের আগমন কোনো না কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছে। পাশ্চাত্য প্রাধান্যের বিরদ্ধে এই প্রতিক্রিয়া, যার উত্তুঙ্গ অবস্থায় তৃতীয় বিশ্বের সর্বত্র উপনিবেশবিলোপের মহা আন্দোলন শুরু হয়। বিষয়টিকে আমি ওরিয়েন্টালিজম-এর আওতার বাইরে রেখেছিলাম। উনিশ শতকীয় আলজিরিয়া, আইসল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো বিচিত্র জায়গায় সংগঠিত হওয়া সশস্ত্র প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রায় সর্বত্র সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ, জাতীয় পরিচয়ের ঘোষণা, আর রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে স্বাধিকার ও জাতীয় স্বাধীনতা অর্জনের সাধারণ লক্ষ্যে সংগঠন বা দল গড়ে তোলার উল্লেখযোগ্য প্রয়াস চলছিল। এক্ষেত্রে কখনোই এমন ঘটেনি যে সাম্রাজ্যের সংঘাতে উদ্যমী অনুপ্রবেশকারীরা নিরীহ বা নিষ্কর্মা অ-পশ্চিমা দেশি লোকদের উপর চড়ে বসেছে! সর্বদা কোনো না কোনো ধরনের সক্রিয় প্রতিরোধ সচল ছিল, এবং অবিশ্বাস্য রকম সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষেত্রে এই প্রতিরোধ শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদী সংস্কৃতির বিশ্বব্যাপী সাধারণ বিন্যাস আর সাম্রাজ্য-বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠনের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞান-এই দুই নিয়ামক বর্তমান গ্রন্থকে এমন বিচিত্রভাবে সংস্পষ্ট করেছে যে এটা ওরিয়েন্টালিজম-এর উত্তরবয়ানমাত্র হয়ে থাকেনি বরং ভিন্নতর কিছু করার একটা চেষ্টায় পরিণত হয়েছে। দুই গ্রন্থেই আমি গুরত্বারোপ করেছি সাধারণভাবে যাকে আমি ‘সংস্কৃতি’ বলে অভিহিত করি তার উপর। আমার ব্যবহার্য ‘সংস্কৃতি’ শব্দটি বিশেষত দুটো জিনিসকে বোঝায়। প্রথমত, বর্ণনা, যোগাযোগ ও উপস্থাপনার কলাকৃতির ন্যায় সেই সকল চর্চাকে বোঝায় যেগুলো অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অঞ্চল থেকে তুলনামূলকভাবে স্বাধীন এবং প্রায়শ আকৃত হয় নান্দনিকরূপে যার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য বিনোদন। অবশ্যি এর সাথে যুক্ত বিশ্বের দূরবর্তী অংশসমূহ সম্পর্কে জনপ্রিয় লোককাহিনির ভাণ্ডার আর জাতিবিদ্যা, ইতিহাসবিদ্যা, ভাষাবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান এবং সাহিত্যিক ইতিহাস প্রভৃতি জ্ঞানগর্ভ বিষয় থেকে প্রাপ্ত বিশেষায়িত জ্ঞান-এদের উভয়ই। যেহেতু উনিশ ও বিশশতকের আধুনিক পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যসমূহ আমার আলোচনার মূল লক্ষ্যবস্তু, সেহেতু আমি বিশেষ করে উপন্যাসের মতো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে লক্ষ করেছি। সেগুলো, আমার মতে, সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, সূত্র, ও অভিজ্ঞতানির্মাণে অতিশয় গুরত্বপূর্ণ ছিল। আমি বলতে চাচ্ছি না যে শুধুমাত্র উপন্যাসই গুরত্বপূর্ণ ছিল, বরং এটা ছিল সেই নান্দনিক বস্তু যার সঙ্গে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের বর্ধিষ্ণু সমাজগুলোর যোগসূত্র, আমার বিশ্বাস, অধ্যয়নের পক্ষে দারুণ আগ্রহোদ্দীপক।


আধুনিক বাস্তববাদী উপন্যাসের আদিরূপ হলো রবিনসন ক্রুসো আর অবশ্যই এটা দুর্ঘটনাক্রমে ঘটেনি যে, এই উপন্যাস একজন ইউরোপীয় ব্যক্তি সম্বন্ধে যে দূরবর্তী এক অ-ইউরোপীয় দ্বীপে নিজের জন্য এক জায়গীর স্থাপন করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ের বিপুল পরিমাণ সমালোচনাকর্মে আখ্যানমূলক কথাসাহিত্যে অনুধ্যান দেয়া হয়েছে, তবে ইতিহাস ও সাম্রাজ্যের জগতে এর অবস্থান সম্পর্কে খুব সামান্য অভিনিবেশ প্রযুক্ত হয়েছে। এই গ্রন্থের পাঠকেরা খুব তাড়াতাড়ি জেনে যাবেন যে, এস্থানে আমার যুক্তিতর্কের জন্য আখ্যান খুব জরুরী, যেহেতু আমার মূল বক্তব্য হচ্ছে, অভিযাত্রী ও ঔপন্যাসিকেরা বিশ্বের অগমপূর্ব অঞ্চলসমূহের ব্যাপারে যা কিছু বলেন তার অন্তরে রয়েছে গল্পকাহিনি। এগুলো উপনিবেশস্থ লোকদের আত্মপরিচয় ও নিজস্ব ইতিহাসের অস্তিত্ব বিঘোষণের কৌশলও হয়ে উঠেছে। সাম্রাজ্যবাদের প্রকৃত যুদ্ধ অবশ্যই ভূমি নিয়ে। কিন্তু এই ভূমির মালিক কে, এতে বসতি স্থাপন ও কাজকর্মের অধিকারী কে, কে একে চালিয়ে নিচ্ছে, কে এটা পুনরায় অধিকার করেছে, এবং কে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা আঁটছে-এসব প্রশ্ন যখন উঠত তখন এগুলো সৃজিত, আলোচিত ও কখনো-বা নির্ধারিত হতো আখ্যানের মধ্যে। যেমনটি কোনো এক সমালোচক বলেছেন, জাতিসমূহ নিজেরাই আখ্যানকর্ম। আখ্যান রচনার কিংবা অন্যবিধ আখ্যানসমূহের সংগঠন ও আবির্ভাব রহিত করার ক্ষমতা সংস্কৃতি ও সাম্রাজ্যবাদের কাছে খুব গুরত্ব পায় আর উভয়ের মধ্যে অন্যতম প্রধান সংযোগসূত্র রচনা করে। আরো গুরত্বপূর্ণ হলো, মুক্তি ও আলোকায়নের মহা-আখ্যান উপনিবেশের বিশ্বে জনতাকে জাগ্রত হয়ে সাম্রাজ্যের বশ্যতাকে ছুঁড়ে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই প্রক্রিয়ায় অনেক ইউরোপীয় ও আমেরিকান এসব কাহিনি ও এদের নায়কদের দ্বারা আন্দোলিত হয়েছেন এবং তারাও সাম্য ও মানব সম্প্রদায়ের নতুন নতুন আখ্যান রচনার সংগ্রামে ব্রতী হয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, প্রায় অগোচরভাবে, সংস্কৃতি হলো শোধনকারী ও উৎকর্ষসাধক উপাদানসমন্বিত এক ধারণা, যেরকমটি ১৮৬০'র দিকে ম্যাথু আর্নল্ড লিখেছিলেন যে এটা হলো শ্রেয়তম জ্ঞান ও চিন্তার জন্য সমাজের রক্ষণাগার। আর্নল্ড বিশ্বাস করতেন যে, আধুনিক, উগ্র, বাণিজ্যমুখী, ও নির্মম নাগরিক অস্তিত্বকে পুরোপুরি প্রতিনিবৃত্ত না করতে পারলেও সংস্কৃতি একে লাঘব করে। আপনি দান্তে কিংবা শেক্সপিয়র পড়েন জ্ঞান ও চিন্তার রাজ্যে যা কিছু সেরা তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলার উদ্দেশ্যে আর নিজেকে, জনতাকে, সমাজ ও সংস্কৃতিকে সেরা আলোয় পরিবীক্ষণের জন্যও। কালক্রমে প্রায়ই সহিংসভাবে রাষ্ট্র বা জাতির সাথে সংযুক্ত হয় সংস্কৃতি। এই ঘটনা প্রায় সবসময়ই কিছু মাত্রায় বিদেশভীতিসহ ‘আমরা’ ও ‘তারা'-এ দুয়ের মধ্যে পার্থক্য রচনা করে। এই অর্থে সংস্কৃতি পরিচয়ের একটি উৎস, এক সংগ্রামশীল উৎস যেমন ইদানীং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে ‘প্রত্যাবর্তন’-এ লক্ষণীয়। এইসব প্রত্যাবর্তন সঙ্গী হয় কঠোর বৃদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিক আচরণবিধিমালার যেগুলো বহুসংস্কৃতিবাদ ও সংকরায়নবাদের মতো তুলনামূলকভাবে উদার দর্শনসমূহের সঙ্গে যুক্ত প্রশ্রয়প্রবণতার বিরোধী। সাবেক ঔপনিবেশিক বিশ্বে এইসব প্রত্যাবর্তন’ নানারকম ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী মৌলবাদের জন্ম দিয়েছে।
এই দ্বিতীয় অর্থে, সংস্কৃতি এক প্রকার মঞ্চ, যেখানে নানাবিধ রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত ব্যাপার-স্যাপার পরস্পরকে ব্যস্ত রাখে। সংস্কৃতি হতে পারে অ্যাপোলনীয় ভদ্রলোকদের শান্তসমাহিত জগৎ থেকে সুদূরবর্তী এমন একটি রণক্ষেত্র যেখানে কারণসমূহ দিবালোকে নিজেদেরকে প্রকাশিত করে এবং পরস্পর দ্বন্দ্বে প্রবৃত্ত হয়, এটা প্রমাণ করতে যে, উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন, ফরাসি, বা ভারতীয় ছাত্রদেরকে অন্যকিছু পাঠ করবার পূর্বে তাদের নিজেদের জাতীয় ক্লাসিকগুলো পড়তে শেখানো হয় এই আশায় যে তারা, প্রায়শ নির্বিচারে, অন্যান্যদের অবমূল্যায়ন বা প্রতিরোধ করতে করতে, সেগুলোর (নিজ সংস্কৃতির) উচ্চমূল্য দেবে এবং সেগুলোর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে।
এখন সংস্কৃতির এই ধারণা নিয়ে সমস্যা হলো, এটা নিজ সংস্কৃতির গৌরবায়নকেই শুধু নয় বরং উৎসাহিত করে এরকম ভাবতে যে, ওটা প্রাতিস্বিক জগৎকে অতিক্রম করে যাবার কারণে এর থেকে কোনোভাবে বিযুক্ত। ফলে, একদিকে দাসপ্রথা, উপনিবেশী ও বর্ণবাদী নির্যাতন এবং সাম্রাজ্যবাদী অবদমনের মতো চর্চাসমূহের প্রলম্বিত ও কর্কশ নিষ্ঠুরতা, আর অন্যদিকে এইসব চর্চায় প্রবৃত্ত কাব্যকলা, কথাশিল্প, সমাজদর্শনের মধ্যে যোগসূত্র অনুধাবনে বেশিরভাগ পেশাদার মানবতাবাদী ব্যর্থ হন। এই গ্রন্থের কাজ করতে গিয়ে কঠিন যে সব সত্যের মুখোমুখি হয়েছি, সেগুলোর একটি হলো কর্মকর্তাদের মধ্যে সুপরিচিত এবং ভারত বা আলজেরিয়া শাসনকালে বহুচর্চিত ‘প্রজা’ বা ‘অধস্তন’ এর ধারণা সম্পর্কে আমার পছন্দের ব্রিটিশ ও ফরাসি শিল্পীদের মাত্র ক’জনই মাথা ঘামিয়েছেন। এগুলো বিপুলভাবে গৃহীত ধারণা ছিল এবং উনিশ শতকজুড়ে আফ্রিকায় সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণে ইন্ধন যুগিয়েছে। কার্লাইল বা রাস্কিন অথবা ডিকেন্স বা থ্যাকারেকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার সময়ে আমার মনে হয় সমালোচকেরা প্রায়ই ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণ, অধস্তন জাতিসমূহ, বা ‘নিগার’দের বিষয়ে এই লেখকদের ধারণাকে সংস্কৃতি অপেক্ষা ভিন্ন বিভাগে পর্যায়ভুক্ত করেন, অথচ সংস্কৃতি হলো সেই উৎকর্ষপ্রাপ্ত কর্মক্ষেত্র যাতে তারা সত্যিসত্যি’ অংশ নেন আর তাঁদের প্রকৃত গুরত্ববাহী কাজগুলো সম্পাদন করেন।
এই প্রক্রিয়ায় আচরিত সংস্কৃতি একটি ঘেরাটোপ হয়ে উঠতে পারে : প্রবেশের পূর্বে আপনার রাজনীতিকে একবার যাচাই করে নিন। সারাজীবন সাহিত্যের শিক্ষকতা করা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপূর্ব ঔপনিবেশিক জগতে বেড়ে ওঠা একজন হিসেবে সংস্কৃতিকে এভাবে-অর্থাৎ, বৈশ্বিক অনুমোদনের থেকে অসংক্রামক দূরত্বে আবদ্ধ হিসেবে-না দেখে অসাধারণ বৈচিত্র্যবহুল ক্রিয়াক্ষেত্ররূপে দেখাটা আমার কাছে দুরূহ মনে হয়েছে। এখানে বিবেচিত উপন্যাসগুলোর বিশ্লেষণ আমি করেছি, কেননা প্রথমত আমার কাছে। এগুলো মূল্যায়নযোগ্য এবং শিল্প ও শিক্ষার প্রশংসাযোগ্য কর্ম, যেগুলোতে আমি ও অন্যান্য অনেকে আমোদিত ও উপকৃত হই। দ্বিতীয়ত, চ্যালেঞ্জটা হলো শুধু সেই আনন্দ ও উপকারিতার সঙ্গেই নয় বরং এদেরকে যুক্ত করা সেই সাম্রাজ্যবাদী প্রক্রিয়ার সঙ্গেও যার স্বপ্রকাশ এবং অগোপন একটি অংশ ছিল এরা। নিজ সমাজের প্রশ্নাতীত যে বাস্তবতা, তাতে এগুলোর অংশগ্রহণকে অভিযুক্ত বা অবজ্ঞা করার বদলে বরং আমার সুপারিশ হচ্ছে, এখন অবধি অবহেলিত এই বিষয় সম্পর্কে যা কিছু আমরা শিখি তা এদের সম্পর্কে আমাদের পঠন ও বোধগম্যতা সত্যিই বাড়িয়ে দেয়।
সুপরিচিত ও মহৎ দুটি উপন্যাসকে ব্যবহার করে এই ফাঁকে বলে নিই আমার মনে কী রয়েছে। ডিকেন্স এর গ্রেট এক্সপেক্টেশন্স (১৮৬১) প্রথমত আত্মপ্রবঞ্চনা সম্পর্কিত একটি উপন্যাস। প্রয়োজনীয় কঠোর পরিশ্রম কিংবা আয়ের অভিজাত উৎস ছাড়াই পিপের ভদ্রলোক হয়ে ওঠার ব্যর্থ প্রয়াস নিয়ে এ উপন্যাস। প্রথম জীবনে সে সাহায্য করেছিল দাগি আসামি অ্যাবেল ম্যাগউইচকে যে অস্ট্রেলিয়াতে দ্বীপান্তরিত হবার পর তার তরুণ উপকারীকে বিপুল অর্থ দিয়ে প্রতিদান দেয়। টাকা দেবার সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত উকিল কিছু না বলায় পিপ নিজ থেকে ধরে নেয় যে, প্রৌঢ়া মিস হ্যাভিশামই তার পৃষ্ঠপোষক। এরপর ম্যাগউইচ অবৈধভাবে আবার লন্ডনে দেখা দেয়-পিপ তাকে স্বাগত জানায় না কারণ তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবকিছুর মধ্যে কুকর্ম আর অপ্রীতির গন্ধ ছড়ায়। অবশেষে অবশ্যি ম্যাগউইচ ও তার বাস্তবতাকে মেনে নেয় পিপ: শেষ পর্যন্ত সে ধাওয়া খাওয়া, ধৃত ও মারাত্মক অসুস্থ ম্যাগউইচকে তার পালক পিতা বলে স্বীকার করে নেয়। স্বীকার করে এমন একজন হিসেবে যাকে প্রত্যাখ্যান বা নিরাশ করা যায় না, যদিও ম্যাগউইচ আদতে ইংল্যান্ডের দ্বীপান্তরিত অপরাধীদের ফিরিয়ে না নিয়ে পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত উপনিবেশ অস্ট্রেলিয়া থেকে আসার দরুন অগ্রহণযোগ্য ছিল। সব কটা না হলেও এই উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের বেশিরভাগ পঠনই ব্রিটিশ কথাসাহিত্যের নাগরিক ইতিহাসের সঙ্গে মানানসই করে একে স্থাপন করে কিন্তু আমার নিজের অভিমত হলো আরো ব্যাপক এবং গতিশীল কোনো ইতিহাসে রয়েছে এর স্থান। রবার্ট হিউজের রাজকীয় গ্রন্থ দ্য ফ্যাটাল শোর এবং পল কার্টার এর উজ্জ্বল কল্পনাশ্রয়ী দ্য রোড টু বোটানি বে - ডিকেন্সের তুলনায় অনেকখানি সাম্প্রতিক এ দুটি বইয়ে প্রকাশ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে কল্পনা ও এর অভিজ্ঞতার এক বিপুল বিস্তারী ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়া-আয়ারল্যাণ্ডের মতো এক ‘সাদা উপনিবেশ যেখানে আমরা ম্যাগউইচ ও ডিকেন্সকে চিহ্নিত করতে পারি শুধুমাত্র ওই ইতিহাসে কাকতালীয় সংযুক্তি হিসেবে নয় বরং অংশী হিসেবে উপন্যাসের আখ্যানে এবং আরো বৃহৎ পরিসরে ইংল্যান্ড ও এর সাগরপারের অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে এবং পুরাতন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে।
অষ্টাদশ শতকের শেষপাদে একটা শাস্তিমূলক উপনিবেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠা হয়, যাতে ইংল্যান্ড তার দুর্দমনীয় দুষ্কৃতকারী অতিরিক্ত জনসংখ্যাকে আসলে ক্যাপ্টেন কুকের চার্ট করা একটা জায়গায় পাঠিয়ে দিতে পারে যে জায়গা আবার কাজ করবে উপনিবেশ হিসেবে আমেরিকায় যেগুলো ছেড়ে আসতে হয়েছে তাদের পরিবর্তরূপে।
এই লাভের পশ্চাদ্ধাবন, সাম্রাজ্যের বিস্তার এবং যাকে হিউজ বলেছেন সামাজিক বর্ণদ্বেষ-এসব মিলে জন্ম দিয়েছে আধুনিক অস্ট্রেলিয়ার, যেটি এর প্রতি ১৮৪০ সালের দিকে ডিকেন্সের প্রথম আগ্রহ জন্মানোর সময়েই (ডেভিড কপারফিল্ড-এ উইলকিন্স ম্যাকেবার খুশিমনে সেখানে হিজরত করেন) বেশ অগ্রসর হয়েছিল মুনাফায় এবং এককথায় ‘মুক্ত ব্যবস্থা’রূপে যেখানে শ্রমিকরা সুযোগ পেলে নিজ চেষ্টায় উন্নতি লাভ করতে পারত। তবু ম্যাগউইচের দ্বীপান্তরের পর ডিকেন্স অস্ট্রেলিয়াস্থ ইংরেজ দাগি আসামিদের সম্পর্কে ইংরেজদের ধারণায় কতকগুলো গিঁট পাকিয়ে দিয়েছেন। তারা সফল হলেও হতে পারত, কিন্তু প্রকৃত অর্থে কদাচিৎ ফিরে আসতে পারত। একটা কৌশলগত, আইনি ধারণায় তারা হয়তো তাদের অপরাধের ক্ষালন ঘটাতে সক্ষম হতো। কিন্তু তারা চিরকালের বহিরিস্থিত হয়ে যাবার অনুভূতিতে ভুগত সেখানে। এরপরও দায়মুক্তির সক্ষমতা ছিল তাদের যতক্ষণ তারা অস্ট্রেলিয়াতে থাকত। যাকে ডিকেন্স বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ‘স্থানিক’ ইতিহাস, তাতে তার অবগাহন ওই একই অভিজ্ঞতার আরেকটি ধরনের সাথে আমাদের পরিচিত করায়। এখানে অভিযাত্রী, অভিযুক্ত, জাতিতত্ত্ববিদ, মুনাফা সন্ধানী, সৈনিক (নিজ নিজ প্রকল্পে রত হয়ে) এই সুবিশাল ও তুলনামূলকভাবে ফাঁকা মহাদেশে পদার্পণ করেন যে ঘটনা অন্যদের প্রকল্পে ঘোঁট পাকায়, স্থানচ্যুত করে, কিংবা তাকে অধিগ্রহণ করে। অতএব বোটানি-বে হলো প্রথমত ভ্রমণ ও আবিষ্কারভিত্তিক আলোকায়ন প্রকল্প, তারপর একদল পরিব্রাজক কথক। (কুকসহ) যাদের শব্দমালা, পথনির্দেশ, এবং উদ্দেশ্য অপরিচিত সমুদয় অঞ্চলকে অধিকার করে এবং ক্রমান্বয়ে তাকে ‘গৃহে পরিণত করে। স্থানের বেন্থামীয় সংগঠন (যার থেকে মেলবোর্ন নগরীর উৎপত্তি ) এবং অস্ট্রেলীয় ঝোপঝাড়ের আপাত বিশৃঙ্খলার মধ্যে কাটারের গ্রন্থে সন্নিকটত্ব প্রদর্শিত হয়েছে সামাজিক স্থানের এক আশাবাদী রূপান্তর হিসেবে, যা ১৯৪০ এর দশকে ছিল ভদ্রলোকদের জন্য এক দিব্যধাম, শ্রমিকদের জন্য নন্দনকানন। ম্যাগউইচের ‘লন্ডনী ভদ্রলোক' রূপে পিপ সম্পর্কে ডিকেন্স যে-ভাবনা ভেবেছেন তা অস্ট্রেলিয়ার জন্য ইংরেজ হিতবাদী ভাবনার একধরনের পরিপূরক-একটি সামাজিক স্থান অপরটির নির্মাণ করেছে।
তবে কার্টার বা হিউজে যেমন আছে, গ্রেট এক্সপেক্টেশন্স কিন্তু তেমনভাবে অস্ট্রেলীয় দৈশিক বিবরণ ইত্যাদি মাথায় রেখে লেখা হয়নি। আবার এটা অস্ট্রেলীয় লেখালেখির ঐতিহ্য সম্পর্কে পূর্বানুমান বা ভবিষ্যদ্বাণী করে না, যেমনটা দেখা যায় পরবর্তীকালে ডেভিড ম্যানুফ, পিটার ক্যারি এবং প্যাট্রিক হোয়াইট প্রমুখের লেখায়। ম্যাগউইচের প্রত্যাবর্তনের উপর যে- নিষেধাজ্ঞা তা শুধুমাত্র শাস্তিমূলক নয়, তা সাম্রাজ্যবাদীও—প্রজাবৃন্দকে অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে কিন্তু মহানাগরিক বিশ্বে তাদের প্রত্যাবর্তন অননুমোদনযোগ্য- যেমনটা ডিকেন্সের সমুদয় কথাসাহিত্যে প্রতিফলিত। এই মহানাগরিক দুনিয়া নিখুঁতভাবে নির্দেশিত, কথিত, অধিকৃত হয়েছে মহানাগরিক ধারাক্রমের ব্যক্তিবর্গের দ্বারা। সুতরাং একদিকে, হিউজ ও কার্টারের মতো ব্যাখ্যাতাগণ উনবিংশ শতকের ব্রিটিশ লেখায় অস্ট্রেলিয়ার অপেক্ষাকৃত ক্ষয়িত উপস্থিতির শ্রীবৃদ্ধি ঘটিয়েছেন বিশ শতকে ব্রিটেন থেকে মুক্ত হওয়া অস্ট্রেলীয় ইতিহাসের পূর্ণতা ও অর্জিত স্বকীয়তার প্রকাশ ঘটিয়ে। অন্যদিকে, গ্রেট এক্সপেক্টেশনস-এর প্রকৃত পাঠে অবশ্যই লক্ষ করা যাবে, পিপ প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ এই বুড়ো, অতিউদ্যমী, স্বেচ্ছাচারী, দাগি আসামির প্রতি ঋণ স্বীকার করার পরপরই সে নেতিয়ে পড়ে এবং দুটো পরিষ্কার ধনাত্মক পন্থায় তার পুনর্জীবন ঘটে। নতুন এক পিপ-এর আবির্ভাব হয় যে পুরোনো পিপ-এর মতো অতীতের ভারে অতটা ন্যুজ নয়-তাকে দেখা যায় শিশু-রূপে যার নামও পিপ; আর পুরোনো পিপ ছোটবেলার বন্ধু হার্বার্ট পকিটের সাথে কর্মজীবন শুরু করে-এবার আর কর্মবিমুখ ভদ্রলোক হিসেবে নয়, বরং পরিশ্রমী এক বণিক হিসেবে প্রাচ্যে, যেখানে ব্রিটেনের অন্য উপনিবেশগুলো একধরনের স্বাভাবিকত্বের আশ্বাস দেয় যা অস্ট্রেলিয়া কখনো দিতে পারেনি
এভাবে এমনকি যখন ডিকেন্স অস্ট্রেলিয়াজনিত সমস্যার সমাধান করছেন, তখনও প্রাচ্যের সাথে বাণিজ্য ও পর্যটন মাধ্যমে ব্রিটেনের সাম্রাজ্যবাদী কর্মকাণ্ডের প্রতি ইঙ্গিতবাহী ধারণা ও সূত্রের আরেক কাঠামো আবির্ভূত হয়। উপনিবেশী বণিকের নতুন পেশায় পিপ কদাচ একটি ব্যতিক্রমী চরিত্র, কেননা ডিকেন্সের প্রায় সকল বণিক, পথভ্রষ্ট আত্মীয়বর্গ, ভীতিকর বহিরিস্থিতগণ সকলেরই মোটামুটি স্বাভাবিক এবং নিরাপদ সংযোগসূত্র রয়েছে সাম্রাজ্যের সঙ্গে। কিন্তু মাত্র সাম্প্রতিক বছরগুলোতেই এই যোগসূত্রগুলো ব্যাখ্যামূলক গুরত্ব পেতে শুরু করেছে। পণ্ডিত ও সমালোচকদের এক নতুন প্রজন্ম-কোনো ক্ষেত্রে বি-উপনিবেশায়নের সন্তানেরা, স্বদেশে মানবিক মুক্তির উন্নয়নের ফলভোগীরা (যেমন লৈঙ্গিক, ধর্মীয়, ও বর্ণভিত্তিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী) পশ্চিমা সাহিত্যের ওইরকম মহৎ রচনার মধ্যে তথাকথিত বর্ণগ্রস্ত অধমর্ণ জনতা অধ্যুষিত অধমর্ণ এক জগৎকে এমন উন্মুক্তভাবে বর্ণনা করার প্রতি একটা সদাজাগ্রত আগ্রহ দেখতে পান যাতে অসংখ্য রবিনসন ক্রুসোর আগমন ও হস্তক্ষেপ সেখানে ঘটতে পারে।


উনবিংশ শতকের শেষে এসে সাম্রাজ্য আর কোনো ছায়াচ্ছন্ন উপস্থিতি নয়, অথবা শুধু পলাতক আসামির অগ্রহণযোগ্য উপস্থাপনায় আকরিত নয়, বরং কনরাড, কিপলিং, জিদ এবং লোটি প্রমুখের রচনার কেন্দ্রীয় গুরত্বের স্থান। আমার দ্বিতীয় উদাহরণ, কনরাডের নোস্ত্রমো (১৯০৪)। এর আখ্যান স্থাপিত হয়েছে মধ্য আমেরিকার এক প্রজাতন্ত্রে যা স্বাধীন (কনরাডের পূর্ববর্তী উপন্যাসগুলোর মতো পূর্ব-এশিয়ার উপনিবেশী প্রতিবেশ নয়), এবং একই সময়ে বাইরের আগ্রহ দ্বারা প্রবলভাবে প্রভাবিত-কারণ এর বিপুল রৌপ্যখনি। এসময়কার কোনো মার্কিনীর জন্য এই রচনার সবচেয়ে আকর্ষক বিষয় হলো কনরাডের দূরদর্শিতা। তিনি লাতিন আমেরিকার প্রজাতন্ত্রগুলোর অনপনেয় অশান্তি ও অপশাসনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন (বলিভারকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন, এদের শাসন করা সাগরে লাঙল দেয়ার শামিল) এবং নিশ্চিত অথচ প্রায় লক্ষ্যের অগোচরে পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করার উত্তর আমেরিকান কৌশলকে তিনি আলাদা করে চিহ্নিত করেন। স্যানফ্রান্সিসকোর অর্থলগ্নিকারী হলরয়েড যিনি স্যান তোমে খনির মালিক চার্লস গৌল্ডের পৃষ্ঠপোষক, তিনি তাঁর পোষ্যকে সাবধান করে বলেন, লগ্নিকারী হিসেবে ‘আমরা খুব বড়ো বিপদে পড়ব না। তার
পরও
-আমরা অপেক্ষা করে দেখতে পারি। ঠিকই আমরা কখনো এতে ঢুকব, ঢুকতে আমরা বাধ্য। কিন্তু তাড়াহুড়োর কিছু নেই। খোদার দুনিয়ার মহত্তম দেশে স্বয়ং সময়কে অপেক্ষায় স্থির থাকতে হয়েছে। আমরা সবকিছুর জন্যই কথা দেবো-শিল্প, বাণিজ্য, আইন, সাংবাদিকতা, কলা, রাজনীতি আর ধর্ম নিয়ে-কেপ হর্ন থেকে সুরিথের আওয়াজ পর্যন্ত এবং তার ওপারেও যদি উত্তর মেরাতে অধিকার করার উপযুক্ত কোনো কিছু দেখা যায়। তারপর আমরা অবসর পাব পৃথিবীর প্রান্তবর্তী দ্বীপসমূহ আর মহাদেশগুলো হস্তগত করতে। আমরা বিশ্বের বাণিজ্য চালাব বিশ্ব তা পছন্দ করুক আর না করুক। বিশ্ব একে রুখতে পারে না-বোধ হয় আমরাও না।
ঠান্ডা লড়াই শেষ হবার পর এর ইঙ্গিতপূর্ণ আত্মপ্রশংসা, অনবগুণ্ঠিত বিজয়েচ্ছা, দায়িত্বশীলতার গম্ভীর আত্মবিঘোষণসহ মার্কিন সরকার প্রণীত ‘নতুন বিশ্বব্যবস্থার ভাষাভঙ্গির অনেকখানিই কনরাডের হলরয়েড প্রকাশ করতে পারত: আমরা এক নম্বর, আমরা নেতৃত্ব দিতে বাধ্য, আমরা মুক্তি ও শৃঙ্খলার প্রতীক এবং আরো অনেক কিছু। কোনো মার্কিনী এই ভাবনা সংগঠনে প্রতিস্পর্ধী নয়, এবং এর পরেও কনরাডের হলরয়েড ও গৌল্ড চরিত্রের মধ্যে সমাহিত সাবধানবাণী সম্পর্কে কদাচিৎ ভেবে দেখা হয়, যেহেতু ক্ষমতার বাগর্থ সাম্রাজ্যের পশ্চাদ্ভূমিতে প্রযুক্ত হলে তা খুব সহজেই পরার্থপরতার বিভ্রম উৎপাদন করে। কিন্তু এটা এমন একটা বাগর্থ যার সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিশেষত্ব হলো এই যে, একে আগেও ব্যবহার করা হয়েছে, একবার মাত্র নয় (স্পেন ও পর্তুগালের দ্বারা), তবে বধিরকারী মাত্রার পুনরাবৃত্তিতে এই আধুনিককালে ব্রিটিশ, ফরাসি, বেলজীয়, জাপানি, রুশ এবং বর্তমানে মার্কিনীদের দ্বারা।
তবু, ফলের মুক্তবণিক, কর্নেল, স্বাধীনতাকামী শক্তি এবং মার্কিন অর্থে চালিত ভাড়াটে সেনাবাহিনীর সূত্রজালে বিশ শতকের লাতিন আমেরিকায় যা ঘটতে দেখি তার আগাম বর্ণনামাত্র হিসেবে কনরাডের এই মহৎ সাহিত্যকৃতিকে যদি পাঠ করি তবে তা খণ্ডিত পাঠ হবে। কনরাড তৃতীয় বিশ্ব সম্পর্কে পাশ্চাত্যের ধারণার পূর্বসূরি, যে তৃতীয় বিশ্ব এ্যায়েম গ্রীন, ভি. এস. নইপল, রবার্ট স্টোন-এদের মতো বিচিত্র ধরনের ঔপন্যাসিকের কর্মে, হানা আরেন্ট-এর মতো সাম্রাজ্যবাদী তাত্ত্বিকের লেখায়, আরো ভ্রমণ কাহিনিকার, চলচ্চিত্রকার ও তর্কপ্রিয়দের কর্মে, যাদের বিশেষত্ব হলো বিচার বিশ্লেষণের জন্য কিংবা ইউরোপীয় বা উত্তর আমেরিকার অদ্ভুত রুচির তৃপ্তিসাধনের জন্য অ-ইউরোপীয় বিশ্বের বর্ণনা করা।
কেননা, যদিবা এটা সত্যি হয় যে, কনরাড স্যান তোমের রৌপ্যখনির ব্রিটিশ ও মার্কিন মালিকদের সাম্রাজ্যবাদকে শ্লেষাত্মকভাবে তাদের নিজেদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে কারারদ্ধরূপে দেখেছেন, তবে এ-ও তো সত্যি যে, তিনি লেখক হিসেবে এমন একজন মানুষ অপশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্কে যাঁর পাশ্চাত্য দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর মধ্যে এতটাই বদ্ধমূল যে তা তাঁকে অন্যান্য ইতিহাস, সংস্কৃতি, উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতি অন্ধ করে রাখে। কনরাড শুধু যা দেখতে পান তাহলে আটলান্টিকের পারের পাশ্চাত্যভূমি দ্বারা শাসিত এক বিশ্ব যাতে প্রতিটি পাশ্চাত্যবিরোধ পাশ্চাত্যের দুষ্ট ক্ষমতার নিশ্চিত স্বীকৃতি প্রদান করে। তিনি যা দেখতে পান না তাহলো এই ক্রুর দ্বিরক্তির কোনো অনুকল্প। তিনি এটাও বোঝেননি যে ভারত, আফ্রিকা, এবং দক্ষিণ আমেরিকারও নিজেদের জীবন ও সংস্কৃতি বিদ্যমান, যা পরদেশী সাম্রাজ্যবাদী বা বিশ্বহিতসাধকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, আবার নিজেকে এটাও বুঝতে দেননি যে, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন পুরোটাই দুর্নীতিগ্রস্ত নয় কিংবা লন্ডন ও ওয়াশিংটনের সূত্রধর-কর্তাদের বেতনে চালিত নয়। দৃশ্যকল্পের এইসব গুরতর সীমায়ন চরিত্র ও আখ্যানভাগের মতোই নোস্ত্রমো-র অবিচ্ছেদ্য অংশ। গৌল্ড ও হলরয়েড-এর মততা চরিত্রের মাধ্যমে ব্যঙ্গ করা হয়েছে যে সাম্রাজ্যবাদকে তার সেই একই পুরষতান্ত্রিক অহমিকা কনরাডের উপন্যাসে অঙ্গীভূত। কনরাড মনে হয় বলতে চান, ‘কে ভালো আর কে খারাপ নেটিভ তার মীমাংসা করব আমরা পশ্চিমারা, কেননা আমাদের শনাক্তকরণের দরুন সকল নেটিভের যথেষ্ট অস্তিত্ব বিদ্যমান। আমরা তাদের নির্মাণ করেছি, কথা বলতে ও চিন্তা করতে শিখিয়েছি, আর যখন তারা বিদ্রোহ করে, তখন তারা শুধু তাদের সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা—অর্থাৎ, তাদের পশ্চিমা মালিকদের কারো কারো দ্বারা বোকা বনে যাওয়া সরলমতি শিশুসকল-তাকে সপ্রমাণ করে। বাস্তবে দক্ষিণী প্রতিবেশীদের সম্বন্ধে মার্কিনীরা যা ভাবে তা হলো: স্বাধীনতা তাদের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত কাম্য যতক্ষণ সেটা সেই প্রকারের স্বাধীনতা যাকে অনুমোদন করি।


এর বাইরে যে কোনো কিছু অগ্রহণযোগ্য এবং, আরো খারাপ অর্থে, অচিন্ত্যনীয়।' সুতরাং এটা কোনো ব্যতিচার নয় যে, কনরাড যুগপৎ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এবং সাম্রাজ্যবাদী ছিলেন; যখন সাগরপারের শাসনযন্ত্রের স্বপ্রকাশ ও আত্মবিভ্রমকর দুর্নীতিকে ভীতিহীনভাবে এবং নেতিবাচকভাবে প্রকাশের প্রয়োজন তখন তিনি প্রগতিশীল, আর ভীষণ প্রতিক্রিয়াশীল, যখন এটা স্বীকার করার দরকার হয় যে, আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকার কখনো একটি স্বাধীন ইতিহাস বা সংস্কৃতি ছিল যাকে সাম্রাজ্যবাদীরা ভয়ানকভাবে ঘটিয়েছে কিন্তু শেষপর্যন্ত যার দ্বারা তারা পরাস্ত হয়েছিল। তবে কনরাডকে তার সময়ের সন্তান বলে ধরে নেয়ার আগে লক্ষ্য করা দরকার যে, ওয়াশিংটন এবং বেশিরভাগ পশ্চিমী নীতিনির্ধারক ও বুদ্ধিজীবীর সাম্প্রতিক মনোভাব তাঁর মতামতের বিষয়ে সামান্যই আগ্রহ দেখায়। সাম্রাজ্যবাদী মানবহিতৈষণা তত্ত্ব-যার উদ্দেশ্যাবলির মধ্যে ‘গণতন্ত্রের জন্য বিশ্বকে নিরাপদ করার ধারণা অন্তর্ভুক্ত-তার অন্তর্গত নিরর্থকতা বলে কনরাড যাকে শনাক্ত করেছেন তা যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এখনও পর্যন্ত অনুধাবন করতে ব্যর্থ, যেহেতু তারা সারা দুনিয়ায়, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে, তাদের ইচ্ছা বাস্তবায়নে সচেষ্ট। কনরাডের অন্ততপক্ষে এটা দেখতে পাওয়ার সাহসটুকু ছিল যে, এরকম কোনো পরিকল্পনা কখনো সফলকাম হয় না। কেননা এগুলো পরিকল্পকদের বেশি করে অসীম ক্ষমতার বিভ্রম ও বিভ্রান্তিকর আত্মপ্রসাদের ফাঁদে ফেলে দেয়। (যেমনটি ঘটে ভিয়েতনামে), আর যেহেতু তাদের স্বীয় চারিত্র্যগুণে তারা প্রমাণকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। যদি নোস্ত্রমো-কে এর বিপুল শক্তি ও অন্তর্গত সীমাবদ্ধতার প্রতি কিছুটা মনোযোগ রেখে পাঠ করতে হয় তবে এ সবকিছু মাথায় রাখা উপযুক্ত কাজ হবে। উপন্যাসের শেষের দিকে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র সুলাকো আর কিছু নয়, যে বৃহত্তর রাষ্ট্র থেকে এর উৎপত্তি এবং যাকে সে ধন ও গুরত্বে প্রতিস্থাপিত করে, তারই কঠোরতরভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং আরো অসহিষ্ণু ক্ষুদ্রতর একটি সংস্করণ। কনরাড পাঠককে এটা অনুধাবন করতে দিয়েছেন যে, সাম্রাজ্যবাদ হলো একটা পদ্ধতি। কোনো অধস্তন অভিজ্ঞতার এলাকায় জীবন চিত্রিত হয় আধিপত্যকারী এলাকার কল্পনা ও মূখতার দ্বারা। কিন্তু এর উল্টোটাও সত্যি ল্যা মিশিওঁ সিভিলিজাজিস (সভ্যকরণ মিশন)-এর প্রয়োজনে যেরকমটি দেখা যায়, যখন আধিপত্যকারী সমাজের অভিজ্ঞতা প্রশ্নাতীতভাবে নেটিভদের ও তাদের অঞ্চলগুলোর উপর নির্ভর করে। যেভাবেই পড়া হোক, নোস্ত্রমো এক ভীষণরকম ক্ষমাহীন মতামত উপস্থাপন করে, আর এটি এ্যায়েম গ্রীনের দ্য কোয়ায়েট আমেরিক

Address

Mirpur/1
Dhaka
1216

Telephone

+8801944613509

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Md Alamgir Hossen posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Md Alamgir Hossen:

Share

Nearby media companies


Other Dhaka media companies

Show All