11/05/2023
আপনি জানেন কি, উন্নত দেশগুলোতে মধু শুধু খায়-ই না, মধু দিয়ে ক্যান্ডি, চুইং গাম, কাস্টার্ড, মধু মিল্ক শেক, আইসক্রীম বানায়..
পুডিং, কেক, পেস্ট্রি, রুটি বানায়, নানা ধরনের বিস্কিট বানায়..
বিভিন্ন ধরনের ফলের আচার বানায়, মধু বাদাম বানায়..
নানা ধরনের মেকআপ প্রোডাক্ট, লোশন, ফেসওয়াশ, ক্রীম, সাবান বানায়..
মধু দিয়ে মাখন বানায়..
মধু থেকে চিনি বানায়..
এমনকী মধু দিয়ে বিয়ার পর্যন্ত বানায়।
এদিকে আমরা বাঙ্গালীরা মধু থেকে বানানো ক্যান্ডি, চুইং গাম, কেক, বিস্কিট খাবো কি আর চিনি বানাবো কি, মধু খাওয়াই এখনো শিখি নাই! অথচ একটু গুগল করলেই, একটু অনলাইনে ব্রাউজ করলেই মানবশরীরে মধুর নানান উপকারীতার ভুরি ভুরি তথ্যবহুল লেখা, আর্টিকেল আর নানান ধরনের ডাটা পাওয়া যায়..
ক্রেতাদের বলব আপনার চাইলেই যে কারো কাছ থেকে খাঁটি মধু কিনে খেতে পারেন। অনেকেই এর, ওর কিংবা তার মধু খাঁটি কিনা এই সন্দেহেই দিন পার করে দিচ্ছেন। ভাবছেন সব্বাই ঘরে ঘরে চিনি জ্বাল করে মধু বানাচ্ছে আর তাকে ঠকানোর জন্য বুঝি ওৎ পেতে বসে আছে। আরে ভাই, দেশে ভেজাল মধুর সেই দিন আর নাই! যে মধু উৎপাদন হয়, সেটা বেচেই কুল পায় না আবার ভেজাল করবে কোন দুঃক্ষে? তবে হ্যা, মানের পার্থক্য আছে, এটা ঠিক।
অনেকেই অভিযোগ করেন তিনি জীবনে কখনো কারো কাছ থেকে খাঁটি মধু পান নাই, অমুক ইমাম সাব তমুক মুফতি সাব, তমুক দাড়িটুপিঅলাও তাকে ঠকায় দিসে। দয়া করে এদের কথা বিশ্বাস করবেন না। কিছু সন্দেহবাতিক লোক আছে শুধু মধু না, এরা জীবনে যা কিনে তাতেই ভাবে যে তাকে ঠকানো হয়েছে। তাদেরকে মৌমাছি নিজে এসে মধু দিয়ে গেলেও এরা বলবে তোকে সন্দেহ লাগছে, তুই চিনি খেয়ে মধু বানিয়েছিস!!
অথচ সারা বাংলাদেশ আজ খাঁটি মধু তে সয়লাব। বিশ্বাস হয় না? আপনার আইডি থেকে এক্ষুনি একটা পোস্ট দেন, জাস্ট লিখেন খাঁটি মধু কোথায় পাবো? তারপর দেখবেন ৫ মিনিটে না হলেও ৫০ জন এসে বলবে ভাই, আমার কাছে খাটি মধু পাবেন!
এর কারন কি জানেন? আমাদের দেশ বছরে ২৬ লাখ টন মধু উৎপাদনকারী দেশ (অনেকেই এটা জানতেন না আমি শিওর)। বিসিক ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে বছরে ৪০ লাখ টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে, জানেন এটা?
বাংলাদেশে মধু নিয়ে কাজ করছে এমন ছোট বড় লাখো উদ্দেক্তা সৃষ্টি হয়েছে গত ৪/৫ বছরে। এরা অনলাইন অফলাইনে খাঁটি মধু বিক্রি করে যাচ্ছে সমানে। মধু রপ্তানি হচ্ছে জাপানে, মালয়েশিয়ায়, ইন্ডিয়ায়। কয়েকটি দেশীয় বহুজাতিক খাদ্যপন্যবিপনন কোম্পানী এবং নামকরা চেইনশপগুলা বাজারে মধু নিয়ে আসছে আগামী বছরের মধ্যেই! ফেসবুকে খাঁটি মধুর বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে নাই এমন ইউজার খুব কমই আছে..
সবশেষে সবশেষে নবীন বিক্রেতাদের বলব আগে নিজে মধু খাওয়ার অভ্যাস করেন। মধুকে ভালোবাসেন। একে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক পন্য হিসেবে দেখবেন না, একটি মহৌষধ হিসেবে দেখবেন। তারপর ক্রেতাদের মধু খেতে বলেন। বহু মানুষ আছে হঠাৎ মন চায়, সখ করে খায়। মধুর বিভিন্নমুখী উপকারীতা বর্ননা করে তাদের নিয়মিত প্রতিদিন খেতে উৎসাহী করেন। মধুর খাটিত্বের ব্যাপারে যারা অজ্ঞতাবশত সন্দেহ করেন তাদেরকে একাধিক বিক্রেতার কাছ থেকে অল্প স্বল্প করে কিনলে খেয়ে দেখতে বলেন, যারটা ভালো লাগে তারটা খেতে বলেন। মানুষকে মধু খাওয়া শেখান। এখন গরমকাল। বেশীরভাগ বিক্রেতার অভিযোগ গরমকালে এদেশের মানুষ মধু খেতে চায় না, কিন্তু কয়জন বিক্রেতা জানেন যে এক গ্লাস মধু লেবুর শরবত শরীর ঠান্ডা করে? কয়জন বিক্রেতা এটা তাদের ক্রেতাকে টেষ্ট করে দেখতে বলেন? আমার তো মনে হয় অনেক বিক্রেতাই এ কথা শুনে মনে মনে অবাক হয়ে গেছেন। নিজে এক গ্লাস খেয়ে দেখেন না..সত্যি না মিথ্যা?
মধু ব্যবহারের উপকারীতা কত প্রকার ও কিকি জানতে গুগল করেন, গুগল আপনাকে এ বিষয়ে এক্সপার্ট বানিয়ে দেবে। ইংরেজীতে ব্রাউজ করবেন, বাংলায় না। বাঙ্গালীরা বেশীরভাগই বিদেশী সাইট থেকে মধুর গুনাগুন কপি পেস্ট করে দিয়ে দেয়।।