Nobo Dibos

Nobo Dibos Its a news bulein. Only for The Bahai's of Bangladesh

রুহি-বুক-৮ (বাহাউল্লাহর নিয়মপত্র) রুহি-বুক-৮ (বাহাউল্লাহর নিয়মপত্র) এই বইট বাহাই শিক্ষার একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এটি বা...
26/06/2024

রুহি-বুক-৮ (বাহাউল্লাহর নিয়মপত্র)

রুহি-বুক-৮ (বাহাউল্লাহর নিয়মপত্র) এই বইট বাহাই শিক্ষার একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এটি বাহাই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বাহাউল্লাহর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক নীতি ও আইনের সাথে সম্পর্কিত। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোচিত হয়েছে।

উৎপত্তি ও উদ্দেশ্য : রুহি-৮-এই বইটির লেখনীতে বাহাই বিশ্বাসের প্রশাসনিক কাঠামোর রূপরেখা বর্ণিত হযেছে, এরমধ্যে বিশ্বব্যাপী বাহাই সম্প্রদায়ের কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান ও আইন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাহাই সম্প্রদায় কীভাবে নিজেদের সংগঠিত করবে এবং তাদের প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়গুলি পরিচালনা করবে সে সম্পর্কে নির্দেশিকা প্রদান করা হয়েছে।

বিষয়বস্তু : এই বইটিতে স্থানীয় আধ্যাত্মিক সভা, জাতীয় আধ্যাত্মিক সভা এবং সর্বজনীন বিচারালয় (বাহাইদের সর্বোচ্চ পরিচালনা পর্ষদ) এর মতো বাহাই প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা ও দায়িত্ব সহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এখানে বাহাই পরামর্শ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাহাই সমাজের উন্নয়নের নীতিগুলির বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

নির্দেশমূলক নীতিসমূহ: রুহি-৮ গ্রন্থের কেন্দ্রবিন্দু হ 'ল ঐক্য, ন্যায়বিচার, পরামর্শ এবং মানবতার মঙ্গলের প্রচার। এই নীতিগুলিতে বাহাই সমাজের সাংগঠনিক কাঠামোর উপর জোর দেয়া এবং ব্যক্তিদের মধ্যে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্বের উপর জোর দেয়া হয়েছে।

বাস্তবায়ন : রুহি-৮ গ্রন্থের শিক্ষাগুলি রুহি ইনস্টিটিউট নামে একটি পদ্ধতিগত শিক্ষামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে অধ্যয়ন ও প্রয়োগ করা হয়েছে, এই বই এর মাধ বাহাইদের বিশ্বাস এবং নীতিগুলি সম্পর্কে গভীরভাবে ধারণা লাভের জন্য পরিকল্পিত কোর্সসমূহ সরবরাহ করা হয়েছে। এই শিক্ষামূলক প্রক্রিয়া ব্যক্তি ও সম্প্রদায়কে তাদের দৈনন্দিন জীবন ও ক্রিয়াকলাপে বাহাউল্লাহর শিক্ষাকে রপ্ত করতে এবং ব্যবহারিক প্রয়োগ করতে সহায়তা করবে।

তাৎপর্য: রুহি-৮-এর বইটি বিশ্বব্যাপী বাহাই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর নীতিগুলি মেনে চলার মাধ্যমে, বাহাইরা সমাজের অগ্রগতি এবং আরও ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার চেষ্টা করবে।

সামগ্রিকভাবে, রুহি-৮ (বাহাউল্লাহর নিয়মপত্র) বইটি বাহাই সম্প্রদায়ের সাংগঠনিক কাঠামো এবং আধ্যাত্মিক বিকাশের দিকনির্দেশনায় সহায়ক। এই বই এর শিক্ষাসমূহ মানবতার ঐক্য এবং সমাজের আধ্যাত্মিক রূপান্তরের জন্য বাহাউল্লাহর দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করেছে।

সমন------বার্তাবাহকগণ সৃষ্টির শুরু থেকেই সৃষ্টিকর্তার বাণীরুপে সময় নিয়ে আসেন আমাদের মাঝে, এই সমনগুলো আমাদের কিভাবে গ্রহণ...
02/06/2024

সমন
------
বার্তাবাহকগণ সৃষ্টির শুরু থেকেই সৃষ্টিকর্তার বাণীরুপে সময় নিয়ে আসেন আমাদের মাঝে, এই সমনগুলো আমাদের কিভাবে গ্রহণ করা উচিৎ তা একটা গল্পের মাধ্যমে বুঝতে সহজ হবে।
আক্কায় তৎকালীন কিছু বিশ্বাসীকে মহান বাহাউল্লাহ দোকান খুলে ব্যবসা করার পরামর্শ দেন, যেন তাদের রুজী রোজগার হয়। তেমনই একজন ছিলেন জনাব আজীজ ইয়াজদীহ এর পিতামহ।
একদিন, জনাব ইয়াজদীহ দোকানে বসেছিলেন। আব্দুল বাহা সেখানে এসে তাকে বললেন তোমাকে এক্ষুনি হেজাজে যেতে হবে। জনাব ইয়াজদীহ তৎক্ষনাৎ ক্যাশ থেকে কিছু অর্থ নিলেন এবং দোকানের ঝাঁপ নামিয়ে বেরিয়ে এলেন, জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি মহান বাহাউল্লাহ'র সাথে দেখা করে তারপর যেতে পারি?
আব্দুল বাহা বলেন, জাহাজ এক্ষুণি রওনা হবে, তোমার কাছে সময় নেই।
জনাব ইয়াজদীহ এক দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ঘাটে পৌঁছালেন, জাহাজে উঠলেন। হঠাৎ তার মনে হলো, জাহাজে তো উঠলাম, কিন্তু হেজাজ শহর কোথায়, আর সেখানে আমার কাজই বা কি?
অবশেষে তিনি গন্তব্যে পৌঁছালেন। শহরের মাঝখানে বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরাঘুরি করতে থাকলেন। হঠাৎ, ২ জন বিশ্বাসীর সাথে দেখা হয়ে গেলো। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মির্জা হায়দার আলী। মহান বাহাউল্লাহ তাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি কয়েকজন সঙ্গীর সাথে ইরাকে গ্রেপ্তার হন এবং কার্তুনে নির্বাসিত হন। ন্যায়পরায়ণতা আর প্রশংসনীয় আচরণের কারণে কারাকর্তৃপক্ষ তাদের কয়েক বছর পরই অবমুক্ত করে দেন। এরপর তারা বিভিন্ন শহর ঘুরে জীর্ন ও অসুস্থপ্রায় হয়ে হেজাজ শহরে পৌঁছান। সাহায্যের জন্য তাঁরা প্রতিদিন প্রার্থনা করতেন এবং কাঁদতেন, অন্ধপ্রায় হয়ে গেছিলেন। নির্বাসন থেকে মুক্ত হওয়ার আশা আর নিজভূমে ফেরার আকাঙ্খায় অস্থির ছিলেন।
যখন জনাব ইয়াজদীহ, মির্জা হায়দার আলী কে দেখেন, তখনই তিনি বুঝতে পারেন যে তাঁকে এখানে পাঠানোর উদ্দেশ্য কি ছিলো!
তারপর তিনি সেই দুইজন্ বিশ্বাসীকে নিয়ে আক্কায় ফেরত আসেন।
বন্ধুরা, আমরা মহান বাহাউল্লাহ ও তার উত্তরসূরীদের দেখানো পথে চলতে অনেকে লাভ বা প্রাপ্তি- অপ্রাপ্তির হিসেব করি। জনাব আজিজ ইয়াজদীহ'র এই গল্প থেকে আমরা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কিভাবে নিষ্ঠার সাথে পালনে সচেষ্ট থাকা উচিত তা জানতে পারি।

- জিনুস প্রিয়াংকা

ভাববাদী রিফাত জাহানের অন্তর্দহন------------------------------------‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো, তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড়’?এ...
31/05/2024

ভাববাদী রিফাত জাহানের অন্তর্দহন
------------------------------------
‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো, তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড়’?
এই কথাগুলিকে কেউ বলেন- প্রেমিকা তার প্রেমিককে ফেলে নতুন ঠিকানায় চলে যাওয়ায় এটি কোনো ব্যর্থ প্রেমিকের আক্ষেপ। আবার কেউ বলেন এখানে একজন মানুষ ঘুড়ির সঙ্গে কথা বলছে, যেটা একটি প্রতীকী উপস্থাপনা। আমার মনে হয়েছে- এখানে ঘুড়ি একটি প্রতীক যা স্বাধীনতা, স্বপ্ন, বা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হতে পারে। মানুষটি ঘুড়িকে জিজ্ঞাসা করছে, ‘তুমি কার আকাশে উড়ো?’ অর্থাৎ, ঘুড়ি কোন ব্যক্তির আকাশে (স্বপ্নে বা স্বাধীনতায়) উড়ছে সেটা জানতে চাচ্ছে। এর পরের প্রশ্ন ‘তার আকাশ কি আমার চেয়েও বড়?’ অর্থাৎ, যার আকাশে ঘুড়ি উড়ছে, তার স্বপ্ন বা স্বাধীনতা কি আমার চেয়েও বড় বা বিস্তৃত?
এই বাক্যে একটি গভীর দার্শনিক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, যেখানে মানুষটি নিজের এবং অন্যের স্বপ্ন বা স্বাধীনতার মধ্যে তুলনা করছে। এখানে বোঝানো হয়েছে, কারো স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষার পরিধি যদি বেশি হয়, তাহলে সেই স্বপ্ন বা স্বাধীনতা তার জীবনে আরও বেশি অর্থবহ হতে পারে। এছাড়া এই বাক্যে একটু হিংসার ছোঁয়া বা স্বপ্নের পরিধি নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাবও ফুটে উঠেছে।
সবশেষে বলতে পারি, এই কথাটি মূলত স্বপ্ন, স্বাধীনতা, এবং তাদের মধ্যে থাকা ব্যক্তিগত এবং সামষ্টিক মানের ব্যাখ্যা করার একটি মাধ্যম হতে পারে।
তবে আমার মতের সাথে অনেকের ভাবনার মিল নাও থাকতে পারে। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মত থাকাটাই স্বাভাবিক। ঘুড়ি গানের রচয়িতা সোমেশ্বর আলী এবং সুর, সঙ্গীত ও কণ্ঠশিল্পী লুৎফর হাসানের কথায় প্রকাশ পেয়েছে ভিন্ন কিছু কথা। লুৎফর হাসান বলেন দুই হাজার চার সালে চাল-চুলাহীন একদল স্বপ্নবাজ তরুণ একত্রিত হয় নতুন কিছু সৃষ্টির প্রয়াসে। প্রায় সকলেই বয়সে তরুণ। কেউ সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়েছে, কারো পড়ালেখা তখনও শেষ হয়নি, কেউ আবার আাকাডেমিক পড়ালেখার ধার ধারে কাছেও যায় নি। কিন্তু সকলেই ছিল লেখালেখিতে একেকজন পাকা মুনশি। দারুণ লেখার হাত ছিল সবার। সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পত্রিকা বা টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল শিক্ষানবিস হিসেবে। এদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবীদের একজন সোমেশ্বর অলি অন্যতম। সে একদিন লিখে ফেল্লো একটি গান-
ময়লা টিশার্ট, ছেঁড়া জুতো
ক'দিন আগেই ছিল মনেরই মতো,
দিন বদলের টানাপোড়নে শখের ঘুড়ি নাটাই সুতো
ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো,
তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড়।
-সৈয়দ শফীক/৩১ মে ২০২৪

বাহাউল্লাহর স্বর্গারোহণ দিবস স্মরণে বিশেষ নিবেদন-ইয়া বাহাউল আব্হা, ইয়া বাহাউল আব্হা,ইয়া বাহাউল-আব্হা।ঊনত্রিশ মে, আঠারোশো...
29/05/2024

বাহাউল্লাহর স্বর্গারোহণ দিবস স্মরণে বিশেষ নিবেদন-
ইয়া বাহাউল আব্হা, ইয়া বাহাউল আব্হা,
ইয়া বাহাউল-আব্হা।
ঊনত্রিশ মে, আঠারোশো বিরানব্বয়ে
তুমি চলে গেলেে, দুখের সাগরে ভাসায়ে।
ও বাহাউল্লা তুমি আমার জীবন আশা
ও বাহাউল্লা তুমি আমাদের ভালবাসা।
ও বাহাউল্লা তুমি আঁধার রাতের আলো
তুমি দূর করেছো মনের কালিমাগুলো ।
ও বাহাউল্লা তুমি রয়েছো যে অমলিন -
ও বাহাউল্লা তোমার আলো, রবে চিরদিন।
ইয়া বাহা উলআব্হা,
বাহাউল্লাহের স্বর্গারোহন দিবসটি এবছর ২৭ মে পালিত হচ্ছে। এই দিনটি বাহাই বিশ্বাসীদের অত্যন্ত পবিত্র ও স্মরণিয় একটি দিন । আধ্যাত্মিকতা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও ধার্মিকতার মধ্য দিয়ে বাহাইগণ এই দিনটি পালন করে। এই দিন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এই দিনে বাহাউল্লাহর জীবন, কাজ, ও ধর্মীয় বোধগম্যতা উপস্থাপন করে তাঁকে স্মরণ করে এবং ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
বাহাউল্লাহ বাহাই ধর্মের প্রবর্তক এবং বাবী ধর্মের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বাহাউল্লাহের জন্ম হয় ১৮১৭ সালে ইরানের নূর শহরে। তিনি বিশেষভাবে মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতি ও সামাজিক সংস্কৃতির প্রচার করেন।
বাহাউল্লাহ বাহাই ধর্মের অবতার হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি মানবজাতির একত্ব, সমবেত সমাজ, প্রেম ও সহযোগিতা এই মৌলিক বিশ্বাসগুলি প্রচার করেন।
বাহাউল্লাহ তার জীবনের বেশীর ভাগ দিন শাস্তি এবং সমাজের প্রতি তার মুক্তিবাদী চিন্তার ধারাবাহিক কারণে জেলে কাটিয়েছিলেন।
বাহাউল্লাহর ধর্ম প্রচারের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক পরিবর্তন সাধন করা। তিনি মানবজাতির একতা ও সম্প্রীতির প্রচার করেন।
বাহাই লেখনীতে স্বর্গারোহণের বৈশিষ্ট্যগুলি বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাহাইগণ মনে করেন একজন বাহাই একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং পৃথিবীতে একটি আদর্শ সমাজ স্থাপনে সহায়তা করবে।
বাহাই বিশ্বাস অনুযায়ী বাহাইগণ সামাজিক ও ধার্মিক পরিবর্তনের পরে মুক্তিবাদী ভূমিকা রাখে স্বর্গারোহণের জন্য। তারা বিশ্বাস করেন যে স্বর্গারোহণের পর সকল মানুষ পরস্পরের সাথে ভালবাসা, সহযোগিতা এবং আদর্শ সমাজের সাথে একত্রিত হবে।

পাহাড়ের সাথে কথা--------------------- জিনুস প্রিয়াংকাঅফিসে যাবার সময় পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক পাহাড় আমায় ডাকলো, আমি ঘাড়...
28/05/2024

পাহাড়ের সাথে কথা
--------------------- জিনুস প্রিয়াংকা

অফিসে যাবার সময় পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক পাহাড় আমায় ডাকলো, আমি ঘাড় ফেরাতেই পাহাড় মৃদু হাসি দিয়ে আমাকে অভিবাদন জানালো।
পাহাড় বল্লো- কিরে মন খারাপ বুঝি?
আমি বল্লাম, না মন খারাপ নয়, তবে কাল রাত থেকে ভেবে ভেভে কুলাতে পারিনি, হাজার রাত গেলেও হয়তো পারবো কিনা জানিনা।
পাহাড় বল্লো- সে কি? কি এমন ভাবনা আমায় বল!
আমি বল্লাম- তুমি জানো হয়তো, তোমার মতোই এক বিশাল হৃদয় আমাদের ভালোবাসা দিয়েছেন এবং দিয়েই যাবেন হাজার বছর। তাই আমি কিছুটা চিন্তিত, আমরা কি তাঁকে কিছু দিতে পেরেছি ?
পাহাড় বল্লো- কি বলিস? তাকে টাকা-পয়সা দিয়ে দিস কিছু, অনেক তো কামায় করিস।
আমি বল্লাম- তার কাছে টাকা বিশাল এক মায়া, তিনি শিখিয়েছেন কোনকিছুর মায়ায় পড়া ভালো কিন্তু মায়া যেন আমাকে কখনো নিয়ন্ত্রণ না করে।
পাহাড় বল্লো তবে? কি চায় তিনি?
আমি বল্লাম- আমার কথা শুনে তুমি কিন্তু হাসবে না। প্রমিজ?
পাহাড় হেসে বল্লো- আচ্ছা বাবা, নে হাসবো না।
আমি বল্লাম- তিনি চান ভালোবাসা। মানুষকে ভালোবাসতে বলেছেন যেমন করে তিনি বাসেন।
পাহাড় বল্লো- ওহ! বাহাউল্লাহর কথা বলছিস?
আমি হতবাক হয়ে বল্লাম- তুমিও জানো তার নাম?
পাহাড় বল্লো- বাহ্ রে! জানবো না আবার? তার সুর এখনো শুনতে পাবি, কি যেন যন্ত্র আবিষ্কার করেছিস তোরা।
তিনি বলেছিলেন- এযুগের বিজ্ঞানীরা এমন সব আবিষ্কার করবে একসময়। হারিয়ে যাওয়া সকল মানুষদের কথা নাকি শোনা যাবে ? তখন শুনে নিস।
আহা! প্রার্থনার সেই সুর ভোলার নয় রে! সেই সঙ্গীত কি ভোলা যায়!
সেই থেকে বেহায়া চোখ ভিজেই আছে, মন তো ভিজে ছিলোই ...
------------------------------------------------------------------------

লেখক- একজন এনজিও কর্মী এবং কন্টেন্ট রাইটার।

বাহাই প্রার্থনা-------------বাহাই  শিক্ষানুসারে প্রার্থনা মানবজীবনের প্রধান এবং গভীর তাৎপর্যপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত...
28/05/2024

বাহাই প্রার্থনা
-------------
বাহাই শিক্ষানুসারে প্রার্থনা মানবজীবনের প্রধান এবং গভীর তাৎপর্যপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রার্থনাকে বাহাই জীবনের একটি মৌলিক স্তম্ভ হিসাবেও গন্য করা হয় । প্রার্থনা আত্মাকে পরিপুষ্ট করে, আধ্যাত্মিক সংযোগকে শক্তিশালী করে এবং মানবহৃদয়কে উদ্দেশ্যপূর্ণ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ অস্তিত্বের সন্ধানে পরিচালিত করে। একজন বাহাই বিশ্বাসী কেন নিয়মিত প্রার্থনা করবে? এই প্রশ্নের উত্তরে এক কথায় বলা যায়-
প্রার্থনার প্রকৃতি, উদ্দেশ্য এবং তাৎপর্য সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।

বাহাই ধর্মগ্রন্থে পাওয়া প্রার্থনা সম্পর্কিত কিছু মূল বিষয় এবং শিক্ষা

সৃষ্টিকর্তার সাথে সংযোগ স্থাপন : বাহাই লেখনীগুলি ঈশ্বরের সঙ্গে ব্যক্তিগত ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম হিসাবে প্রার্থনার উপর জোর দেয়। প্রার্থনার মাধ্যমে, মানবআত্মা তার সৃষ্টিকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে, নির্দেশনা চাইতে পারে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে এবং তাদের আধ্যাত্মিক সংযোগকে আরও গভীর করতে পারে। বাহাই ধর্মে র অবতার বাহাউল্লাহ লিখেছেন,
"হে আমার বান্দা, ঈশ্বরের যে আয়াতগুলি তুমি গ্রহণ করেছ, যারা তাঁর নিকটবর্তী হয়েছে তাদের দ্বারা উচ্চারিত হয়েছে, যাতে তোমার সুরের মাধুর্য তোমার আত্মাকে প্রজ্জ্বলিত করে এবং সমস্ত মানুষের হৃদয়কে আকর্ষণ করে" (নিহীত বাক্যাবলী)।

আধ্যাত্মিক বিকাশের উপায় : প্রার্থনাকে একটি রূপান্তরকারী অনুশীলন হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা আত্মাকে লালন করে এবং আধ্যাত্মিক বিকাশকে উৎসাহিত করে। বাহাই ধর্মের লেখনীসমূহ শিক্ষা দেয় যে, একান্ত ও আন্তরিক প্রার্থনার মাধ্যমে বাহাইগণ তাদের নিজেদের গুণাবলী বিকাশ করতে পারে, অভ্যন্তরীণ গুণাবলী গড়ে তুলতে পারে এবং নৈতিক উৎকর্ষের দিকে প্রচেষ্টা করতে পারে। অঙ্গীকারের কেন্দ্রবিন্দু, বাহাই ধর্মের ব্যাখাদাতা আব্দুল-বাহা বলেছেন-

"প্রার্থনা হল ঈশ্বরের সঙ্গে কথোপকথন। সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বা মধুরতম রাষ্ট্র ঈশ্বরের সাথে কথোপকথন ছাড়া আর কিছুই নয় "(প্যারিস টকস)

নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণার উৎস :
বাহাই লেখনীসমূহ ঐশ্বরিক নির্দেশনা, প্রজ্ঞা এবং অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে প্রার্থনার ভূমিকার উপর জোর দেয়। প্রার্থনার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার দিকে মুখ ফিরায়ে, বাহাইগণ তাদের জীবনে স্পষ্টতা, বিচক্ষণতা এবং নির্দেশনা পেতে পারে। বাহা 'উল্লাহ্ তাঁর অনুসারীদের উৎসাহিত করে বলেছেন যে, বাহাইগণ যেন কঠিন সময়ে তাদের হৃদয় সৃষ্টিকর্তার দিকে ফিরিয়ে নেয়। তিনি বলেছেন-
"তুমিই আমার দুর্গ, তাতে প্রবেশ কর যাতে তুমি নিরাপদে থাকতে পারো। আমার ভালবাসা আপনার মধ্যে রয়েছে, জেনে রাখুন, যাতে আপনি আমাকে আপনার কাছাকাছি খুঁজে পেতে পারেন "(নিহীত বাক্যাবলী)

একতা সৃষ্টির উৎস :
বাহাই ধর্মগ্রন্থ প্রার্থনা ও উপাসনায় ঐক্যের গুরুত্বের উপর জোর দেয়। যদিও বাহাইরা ধর্মীয় অভিব্যক্তির বৈচিত্র্যে বিশ্বাস করে, তারা মানবতার ঐক্য এবং ঈশ্বরের একতার উপরও জোর দেয়। বাহাউল্লাহ বিভিন্ন পটভূমি বা মতানুসারী থেকে আগত সকল বিশ্বাসীদেরকে সকল মানুষের কল্যাণ ও ঐক্যের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানান,। তিনি লিখেছেন,
"সমস্ত ধর্মের সঙ্গে সৌহার্দ্য ও ঐক্য বজায় রাখুন, যাতে তারা আপনার কাছ থেকে ঈশ্বরের মিষ্টি গন্ধ গ্রহণ করতে পারে। সতর্ক থাকুন যেন মানুষের মধ্যে মূর্খ অজ্ঞতার শিখা আপনাকে গ্রাস না করে "(নিহীত বা্ক্যাবলী)

কর্ম ও সেবা :
বাহাই শিক্ষাগুলি জোর দেয় যে সত্য প্রার্থনা নিছক শব্দ বা আচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং কর্ম ও মানবতার সেবার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বাহাইদের প্রার্থনার সঙ্গে ব্যবহারিক কাজগুলিকে একত্রিত করতে উৎসাহিত করা হয় যা সমাজের উন্নতি এবং মহৎ কাজগুলির অগ্রগতিতে অবদান রাখে। আবদুল-বাহা এই নীতিটি নিশ্চিত করে বলেছেন,
"কর্মবিহীন শব্দের কোনও মূল্য নেই। প্রতিটি বড় উদ্দেশ্যের জন্য তার বিশ্বাসীদের সমর্থন তাদের কাজের মাধ্যমে প্রয়োজন, কেবল তাদের কথার মাধ্যমে নয় "(প্যারিস টকস)

পরিশেষে বলা যায়, বাহাই লেখাগুলি আধ্যাত্মিক মিলন, বৃদ্ধি, নির্দেশনা, ঐক্য এবং সেবার মাধ্যম হিসাবে প্রার্থনার গভীর তাৎপর্যকে নিশ্চিত করে। বাহাই প্রার্থনা আত্মাকে উন্নীত করতে, কর্মকে অনুপ্রাণিত করতে এবং ঈশ্বরের সাথে একটি গভীর ও স্থায়ী সংযোগ গড়ে তুলতে প্রার্থনার রূপান্তরকারী শক্তির উপর জোর দেয়।

-সৈয়দ শফীক

মহান বাব এর ঘোষণা দিবস
22/05/2024

মহান বাব এর ঘোষণা দিবস

23 may Declaration Day of the BAB, ২৩ মে মহান বাব এর ঘোষণা দিবস

২ দিনের অনুবাদ ও কন্টেন্ট রাইটিং কর্মশালা--------------------------------------------------জাতীয় বাহাই অনুবাদ ও মিডিয়া ক...
07/05/2024

২ দিনের অনুবাদ ও কন্টেন্ট রাইটিং কর্মশালা
--------------------------------------------------
জাতীয় বাহাই অনুবাদ ও মিডিয়া কমিটির উদ্যোগে ১০ ও ১১ মে ২০২৪ জাতীয় বাহাই কেন্দ্র, ঢাকায় ২ দিনের একটি ট্রান্সলেশন ও কন্টেন্ট রাইটিং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বাহাই লেখনাবলীর ইংরেজি অনুবাদগুলিতে কেন  উন্নত ভাষা ব্যবহার করা হয়?কয়েক বছর আগে যোগাযোগ শিল্পের এক প্রখ্যাত অধ্যাপকের ...
04/05/2024

বাহাই লেখনাবলীর ইংরেজি অনুবাদগুলিতে কেন উন্নত ভাষা ব্যবহার করা হয়?

কয়েক বছর আগে যোগাযোগ শিল্পের এক প্রখ্যাত অধ্যাপকের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। তিনি আমাকে এই প্রশ্নটি করেছিলেনঃ "কেন বাহাই লেখাগুলির ইংরেজি অনুবাদগুলিতে এই ধরনের উন্নত ভাষা ব্যবহার করা হয়? এটা কি কিছু মানুষের বোঝার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়?

এটি এমন একটি প্রশ্ন যা আমি আগে কখনও বিবেচনা করিনি। আমি ছোটবেলা থেকেই বাহাই লেখাগুলি পড়তাম, তাই তাদের শৈলী আমার কাছে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বলে মনে হয়েছিল। আমি তাদের চার-প্লাস-অক্ষরের শব্দগুলিতে অভ্যস্ত ছিলাম যা নিয়মিত মিথস্ক্রিয়ায় খুব কমই দেখা যায়ঃ আপনি কি কখনও দৈনন্দিন কথোপকথনে "সর্বশক্তিমান", "অনিয়ন্ত্রিত" বা "উপকারী" ব্যবহার করেছেন? নাকি আমাকে জিজ্ঞেস করতে হবে, "তুমি কি কখনও বলেছ?" হ্যাঁ, আমি "তুমি" এর পরিবর্তে "তুমি" এবং অনুরূপভাবে পুরানো সময়ের সংমিশ্রণেও অভ্যস্ত ছিলাম ("তুমি জানো", "ঈশ্বর যথেষ্ট") মিডল স্কুল ইংরেজিতে অনিবার্য শেক্সপিয়ার ইউনিটের সময় এই শৈলীর সাথে আমার পরিচিতি অবশ্যই কাজে এসেছিল!

কিন্তু এটা এমন একটা প্রশ্ন যার উত্তর দেওয়া দরকার। এটি নিয়ে গবেষণা করার সময়, আমি ক্রেইগ এ. ভলকারের "ট্রান্সলেটিং দ্য বাহাই রাইটিংস" নামে একটি আলোকিত পাণ্ডিত্যপূর্ণ নিবন্ধ দেখতে পাই। আমি প্রাথমিকভাবে ভলকারের নিবন্ধ থেকে নিম্নলিখিত পয়েন্টগুলি আঁকছি, যা আমি আপনাকে অতিরিক্ত তথ্যের জন্য পড়তে উত্সাহিত করি।1

কারণ 1: মূল ফার্সি ও আরবি লেখায় একটি উন্নত শৈলী ব্যবহার করা হয়েছে।
বাব, বাহাউল্লাহ এবং আবদুল-বাহা তাদের লেখায় পারস্যের দৈনন্দিন ভাষা ব্যবহার করেননি-তারা একটি আনুষ্ঠানিক, কাব্যিক শৈলী ব্যবহার করেছিলেন। অনুবাদের জন্য একই ধরনের উন্নত শৈলী ব্যবহার করা তাই মূলগুলির ক্ষেত্রেও সত্য। কিং জেমস বাইবেল-যা চারশো বছরেরও বেশি আগে রচিত হয়েছিল, সময়ের পরীক্ষায় দাঁড়িয়েছিল-এর একটি শৈলীর সঙ্গে শৌগী এফেন্দি বাহাই লেখাগুলির ইংরেজি অনুবাদের মান নির্ধারণ করেছিলেন। ইউনিভার্সাল হাউস অফ জাস্টিস বা অন্যান্য বাহাই প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত ও তত্ত্বাবধানকৃত পরবর্তী অনুবাদগুলি একটি উচ্চ সাহিত্যিক শৈলী ব্যবহার করে তাঁর নেতৃত্ব অনুসরণ করেছে।

কারণ 2: কথোপকথনের তুলনায় উন্নত ভাষা বেশি স্থিতিশীল।
সময়ের কথা বললে, ধরে নেওয়া যাক, আমরা লেখাগুলিকে আপনি এবং আমি যে ধরনের ভাষায় ব্যবহার করি সেই ধরনের ভাষায় অনুবাদ করেছি, তাদের কাব্যিক গুণাবলী সংরক্ষণের চেয়ে বোধগম্যতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে। এখন মৌলিক বিষয় যে কেউ সহজেই সেগুলি বুঝতে পারে। কিন্তু পঞ্চাশ বছর পর এগুলোর কী হবে? জনপ্রিয় কথ্য ভাষা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে দ্রুত পরিবর্তিত হয়। আমি আমার ছাত্রদের এবং আমার মধ্যেও ব্যবহারের পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি,। যদিও আমি তাদের চেয়ে মাত্র এক দশক আগে জন্মগ্রহণ করেছি। উদাহরণস্বরূপ, কলি তারা " #" এই চিহ্নটিকে "হ্যাশট্যাগ" বলে ডাকে, কিন্তু আমি "পাউন্ড সাইন" বলি, সমস্ত নতুন অপভাষা উল্লেখ না করে যা আমি চালিয়ে যেতে পারি না।) এছাড়াও, ইংরেজি একটি বিশ্ব ভাষা হওয়ায়, এর কথোপকথনের রূপগুলি অঞ্চলগুলির মধ্যে ব্যাপকভাবে পৃথক হয়। সুতরাং, সহজলভ্য থাকার জন্য, লেখাগুলি ঘন ঘন ইংরেজির সর্বশেষ সংস্করণে পুনরায় অনুবাদ করতে হবে এবং অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হতে হবে। এটি একটি সম্ভাব্য পদ্ধতি নয়; আমাদের এমন অনুবাদ প্রয়োজন যা শতাব্দী জুড়ে এবং পৃথিবী জুড়ে স্থায়ী হবে।

কারণ 3: লেখনীগুলি ভাষাগতভাবে উন্নত হওয়ার পাশাপাশি আধ্যাত্মিকভাবেও উন্নত হওয়া দরকার।
লেখাগুলি যদি আপনাকে একটি অভিধানের দিকে নিয়ে যায় তবে এটি আসলে কোনও খারাপ জিনিস নয়! (আপনি যদি ইতিমধ্যেই না দেখে থাকেন, তাহলে আপনি বাহাই ব্লগের ভিডিও সিরিজ, "হোয়াট 'স দ্যাট ওয়ার্ড?"-এ দেখতে পারেন, এখানে বাহাই লেখায় পাওয়া কিছু শব্দকে হালকা সহজবোধ্য ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে) একজন লেখার শিক্ষক হিসাবে কথা বলতে গিয়ে আমি বিশ্বাস করি যে, অপরিচিত শব্দ এবং জটিল বাক্যগুলিকে বিভ্রান্ত করা ভাষাগত বোধগম্যতা দক্ষতা বাড়ানোর একটি দুর্দান্ত উপায়। আমি আমার ক্লাসে যা পড়াই তার সাথে মিল রাখা ছাড়াও, একজনের অভিব্যক্তির ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কঠিন গ্রন্থগুলি পড়ার ধারণাটি সর্বজনীন শিক্ষা বিষয়ক বাহাই নীতিকে জোর দেওয়ার সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদি আপনি খুব তাড়াতাড়ি কোন একটি অংশ বুঝতে না পারেন, তার মানে এই নয় যে, আপনি অযোগ্য এবং আপনার হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত-এর অর্থ হল আপনার শেখার সুযোগ রয়েছে। অধিকন্তু, আমি মনে করি এটি আমাদের ধীরগতির একটি সংকেত দেয়, লেখাগুলির প্রতি যথাযথভাবে চিন্তাশীল দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহিত করে।

এটা সত্য হতে পারে যে, কিছু বাহাই লেখনী তাৎক্ষণিকভাবে বোধগম্য নয়-কিন্তু, ব্যক্তিগত এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, প্রত্যেকে বোঝার দিকে এগিয়ে যেতে পারে। প্রত্যেক পাঠকই শিখতে সক্ষম, এবং জ্ঞানের উন্নতি সর্বদা করা যেতে পারে-বিশেষত একজন শিক্ষার্থী যখন আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনার সমুদ্রে সাঁতার কাটার আকাঙ্ক্ষা দ্বারা চালিত হয়।

লেখাটি পোস্ট করেছেন- লেখক, শিক্ষাবিদ, গবেষক লায়লি মিরন (Layli Miron)। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার অবর্নে অবস্থিত অবার্ন গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন।

অত্যন্ত আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় বাহাই কেন্দ্রে উদযাপিত হলো রিজওয়ানের দ্বাদশতম দিন। ঢাকা বাহাই সমাজ এই উ...
02/05/2024

অত্যন্ত আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় বাহাই কেন্দ্রে উদযাপিত হলো রিজওয়ানের দ্বাদশতম দিন। ঢাকা বাহাই সমাজ এই উৎসবের আয়োজন করে। কথা, গান, কবিতা, কৌতুক ও মজাদার সব গেম শো-র মাধ্যমে দিনটি স্মরণিয় হয়ে উঠে।
উল্লেখ্য যে, ১৮৬৩ সালের এই দিনে বাহাউল্লাহ, তাঁর পরিবার এবং কনস্টান্টিনোপলে বেশ কয়েকজন অনুসারীর নির্বাসন দিন হিসেবে স্মরণ করা হয়। যদিও এই নির্বাসন কারাবাস, নির্যাতন, অসুস্থতা, কষ্ট এবং মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করেছিল, তবুও এটি বাহা'উল্লাহর শিক্ষা ও আদর্শকে প্রচার ও প্রসারনের দিকে পরিচালিত করে। যার জন্য বাহাইরা এই দিনটিকে তাদের বিশ্বাসের সূচনা এবং নবায়ন, শান্তি এবং সমস্ত মানুষের জন্য একতা ও অগ্রগতির বিষয়ে বাহাউল্লাহর দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক হিসাবে উদযাপন করে।

আত্ম-প্রতিফলনে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরিণ প্রচেষ্টা এবং বাহাই দর্শন৪ এপ্রিল ২০২৪ ছোট ভাই সমতূল্য বাহাই এমরান নিজস্ব ভাবনা থেকে...
06/04/2024

আত্ম-প্রতিফলনে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরিণ প্রচেষ্টা এবং বাহাই দর্শন
৪ এপ্রিল ২০২৪ ছোট ভাই সমতূল্য বাহাই এমরান নিজস্ব ভাবনা থেকে ফেসবুক সোসাল মিডিয়ায় একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা রেখেছেন-
”মানুষ কি কখনো অন্য মানুষের কথা শুনে খারাপ থেকে ভালো হয়, না নিজের সাথে বোঝা পড়া করে খারাপ থেকে ভালো হয়?”
এমরানের জিজ্ঞাসার প্রেক্ষিতে তার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা ২৮ জন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ রসিকতা করেছেন, কেউ আশ্চর্য্য হয়েছেন। ১৪ জন যুক্তি তর্ক উপস্থান করে নিজেদের মতামত দিয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের মতামত, প্রতিক্রিয়ায় অভিভুত হয়ে নিজের কিছু মতামত প্রকাশ করার অভিপ্রায়ে কিছু কথা উপস্থাপন করছি।-
একজন ব্যক্তির স্ব-উন্নতি বা ব্যক্তিগত গুনাবলী বিকাশে বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া যেমন বন্ধুবান্ধব, আত্বীয়-স্বজনের আদেশ-উপদেশ এবং অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন যেমন আধ্যাত্মিকতা বা নিজ কর্মের বিশ্লেষণ উভয়ের সংমিশ্রণ জড়িত। যদিও অন্যদের কথা, উপদেশ এবং প্রতিক্রিয়া মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করতে পারে, কিন্ত শেষ পর্যন্ত, পরিবর্তন কার্যকর করা এবং নিজের মধ্যে ইতিবাচক গুণাবলী গড়ে তোলা ব্যক্তির স্ব উদ্যোগের উপর নির্ভর করে। আত্ম-উন্নয়নে বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া এবং অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টাকে চারটি ধাপে বিশ্বেষণ করা যায়।
১. বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া, ২. অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন, ৩. কর্ম ও অভ্যাস এবং ৪. সমর্থন।
বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া: অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিক্রিয়া আমাদের আচরণ, মনোভাব এবং গুণাবলী সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি দিতে পারে। এটি আমাদের অন্ধত্ব, উন্নতির ক্ষেত্র এবং অন্যদের উপর আমাদের কর্মের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হতে সাহায্য করতে পারে। গঠনমূলক সমালোচনা, যখন সহানুভূতি ও সম্মানের সঙ্গে দেওয়া হয়, তখন তা ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য নির্দেশনা প্রদান করতে পারে। তবে, গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া এবং অপ্রয়োজনীয় সমালোচনা বা নেতিবাচকতার মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। সমস্ত প্রতিক্রিয়া সঠিক বা উপকারী হবে না, তাই বিচক্ষণতা এবং খোলা মনের সাথে এটির কাছে যাওয়া অপরিহার্য।
অভ্যন্তরীন প্রতিফলন: আত্ম-সচেতনতা এবং আত্মপরীক্ষা ব্যক্তিগত বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমাদের চিন্তাভাবনা, আবেগ এবং আচরণগুলি প্রতিফলিত করার জন্য সময় নেওয়া আমাদের নিদর্শনগুলি সনাক্ত করতে, আমাদের অনুপ্রেরণাগুলি বুঝতে এবং আত্ম-বোঝার বিকাশ করতে সহায়তা করে। আত্মবিশ্লেষণের মাধ্যমে, আমরা আমাদের শক্তি ও দুর্বলতাগুলি স্বীকার করতে পারি, আমাদের ত্রুটিগুলি মোকাবেলা করতে পারি এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে পারি। মাইন্ডফুলনেস, জার্নালিং এবং ধ্যানের মতো অনুশীলনগুলি অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন এবং আত্ম-সচেতনতা সহজতর করতে পারে।
কর্ম ও অভ্যাস: ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য কর্ম এবং অনুশীলনের প্রয়োজন। আমাদের নেতিবাচক গুণাবলী বা আচরণগুলি কেবল স্বীকৃতি দেওয়া যথেষ্ট নয়; আমাদের অবশ্যই সেগুলি পরিবর্তনের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে। এর সঙ্গে নতুন অভ্যাস গড়ে তোলা, সহানুভূতি ও সহানুভূতি অনুশীলন করা, স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলা এবং আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সচেতন পছন্দগুলি করা জড়িত থাকতে পারে। সময়ের সাথে সাথে, ধারাবাহিক প্রচেষ্টা এবং অনুশীলন ইতিবাচক রূপান্তর এবং গুণী গুণাবলীর বিকাশ ঘটাতে পারে।
সমর্থন: যদিও ব্যক্তিগত বিকাশ প্রাথমিকভাবে একটি ব্যক্তিগত পথ ভ্রমণকে চিহ্বিত করে। পরামর্শদাতা, থেরাপিস্ট বা সহায়ক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সমর্থন চাওয়া পথে অতিরিক্ত দিকনির্দেশনা, জবাবদিহিতা এবং উত্সাহ প্রদান করতে পারে। সহায়ক সম্পর্কের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা ব্যক্তিগত বিকাশে সহায়তা করার জন্য মূল্যবান সম্পদ এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করতে পারে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে বলা যায়, বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া এবং অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন উভয়ই ব্যক্তিগত বৃদ্ধি এবং আত্ম-উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও অন্যদের কথা অন্তর্দৃষ্টি এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করতে পারে, প্রকৃত রূপান্তরের জন্য আত্ম-সচেতনতা, আত্মনিরীক্ষণ এবং ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপের প্রয়োজন। বাহ্যিক প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের সংমিশ্রণ এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, ব্যক্তিরা গুণী গুণাবলী গড়ে তুলতে পারে এবং ব্যক্তিগত বৃদ্ধি ও পরিপূর্ণতার পথে চলতে পারে।
বাহাই দর্শন
বাহাই শিক্ষায় আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি এবং রূপান্তরের ধারণার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যারমধ্যে আত্ম-প্রতিফলন এবং অন্যদের প্রভাব উভয়ই জড়িত। বাহাই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বাহাউল্লাহ নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষের জন্য প্রচেষ্টা এবং একজনের চরিত্রের উন্নতির জন্য ক্রমাগত কাজ করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন। অন্যদের প্রভাব সম্পর্কে, বাহাউল্লাহ পরামর্শের নীতি এবং মহৎ গুণাবলী ও গুণাবলী ধারণকারী ব্যক্তিদের সাথে মেলামেশা করার গুরুত্ব শিক্ষা দেন। অর্থপূর্ণ সংলাপে জড়িত হওয়া এবং বিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ ও নির্দেশনা চাওয়া ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করতে পারে। যদিও বাহ্যিক প্রভাবগুলি পরিবর্তনের অনুঘটক হিসাবে কাজ করতে পারে, বাহাই শিক্ষাগুলি আধ্যাত্মিক বিকাশে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা এবং আত্ম-শৃঙ্খলার গুরুত্বের উপরও জোর দেয়। বাহা'উল্লাহ্ আত্মশুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা, পার্থিব আকাঙ্ক্ষা থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং প্রেম, দয়া, সততা এবং নম্রতার মতো গুণাবলীর চর্চা সম্পর্কে লিখেছেন। বাহাই ধর্ম মানবতার অন্তর্নিহিত অসম্পূর্ণতাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি পরিপূর্ণতার জন্য প্রচেষ্টা করার ধারণার উপর জোর দেয়। বাহাইরা বিশ্বাস করে যে আধ্যাত্মিক বিকাশ হল একটি আজীবন যাত্রা যার মধ্যে রয়েছে নিজের ত্রুটিগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা করা এবং আধ্যাত্মিক নীতির সঙ্গে নিজের কর্মের সমন্বয় সাধন করা। উপরন্তু, বাহাই শিক্ষাগুলি ক্ষমার গুরুত্বের উপর জোর দেয়, উভয়ই নিজের অপরাধের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং অন্যদের ক্ষমা প্রদান করা। আন্তরিক অনুতাপের মাধ্যমে, ব্যক্তিরা তাদের অতীতের অন্যায়ের জন্য ক্ষমা চাইতে পারে এবং সংশোধন করার চেষ্টা করতে পারে। বাহাই শিক্ষা অনুসারে সংক্ষেপে বলা যায়, ব্যক্তিগত বৃদ্ধি এবং রূপান্তরের সঙ্গে আত্ম-প্রতিফলন, অন্যদের প্রভাব এবং ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার সংমিশ্রণ জড়িত। যদিও বাহ্যিক প্রতিক্রিয়া এবং নির্দেশনা মূল্যবান হতে পারে, প্রকৃত আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য আন্তরিক আত্মপরীক্ষা, নৈতিক উৎকর্ষের জন্য প্রচেষ্টা এবং আলোর পথে চলার প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। সৈয়দ শফীক-৬ এপ্রিল, ২০২৪

প্রার্থনা“প্রার্থনা একটি সিঁড়ির মত, যাহাকে অবলম্বন করে প্রত্যেকেই স্বর্গে আরোহণ করতে পারে। -হযরত মোহাম্মদ (সা:)ঈশ্বরের স...
05/04/2024

প্রার্থনা

“প্রার্থনা একটি সিঁড়ির মত, যাহাকে অবলম্বন করে প্রত্যেকেই স্বর্গে আরোহণ করতে পারে। -হযরত মোহাম্মদ (সা:)

ঈশ্বরের সঙ্গে কথোপকথন
আব্দুল-বাহা’ বলেছেন- “প্রার্থনা হচ্ছে ঈশ্বরের সঙ্গে কথোপকথন”। ঈশ্বর তাঁর অভিপ্রায় ব্যক্ত করার জন্য মানবের সাথে মানবের ভাষায় কথা বলেন ও তার ঐশীপ্রকাশগণের মুখ দিয়েই তিনি তদ্রুপ করে থাকেন। যতদিন ঐশীপ্রকাশগণ পৃথিবীতে স্বশরীরে অবস্থান করেন, ততদিন তাঁরা মানবের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলেন, তারপর, তাদের তিরোধান হলে তাঁদের লিপিবদ্ধ বাণী ও গ্রন্থরাজির মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বার্তা মানবের নিকটে পৌঁছে থাকে। কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গে মানবের ভাব বিনিময়ের উপায় এতদ্ব্যতীত আরও আছে। উচ্চারিত বা চলতি ভাষা হতে ভিন্ন একটি বিশেষ “আধ্যাত্মিক ভাষা’ আছে, তা দিয়েও ঈশ্বরের সত্যান্বেষীদের সঙ্গে কথোপকথন করে থাকেন, তাহাদেরকে অনুপ্রাণিত ও সঞ্জীবিত করেন; তারা যে দেশেই থাকুক না কেন, তাহদের যে মাতৃভাষাই হোক না কেন, তাতে কিছু আসে যায় না। এই ভাষার সাহায্যে ঐশীপ্রকাশ তাঁর তিরোধানের পরেও সত্য-বিশ্বাসীগণের সঙ্গে কথোপকথন করে থাকেন। আব্দুল-বাহা এই আধ্যাত্মিক ভাষা সম্বন্ধে বিশেষরূপে বলেছেন।
যীশুখ্রীষ্ট ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পরেও কথোপকথনের মাধ্যমে তাঁর বিশ্দেবাসীরকে উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছেন। বাস্তবিকই তিনি পূর্বের চেয়ে বেশী শক্তিশালী রূপে প্রভাবিত করেছেন; এবং অন্যান্য বার্তাবাহকও তাই করে থাকেন।
আব্দুল-বাহা এই আধ্যাত্মিক ভাষা সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেছেন,
“আমাদিগকে স্বর্গের ভাষায়, আধ্যাত্মিক ভাষায় কথা বলতে হবে। আত্মার একটি বিশিষ্ট ভাষা আছে, তা হৃদয়ের ভাষা। আমাদের সাধারণ ভাষা যেমন পশুদিগের ভাষা হতে উন্নত ও ভিন্ন, আধ্যাত্মিক ভাষাও সেইরূপ আমাদের সাধারণ ভাষা হতে উন্নত ও ভিন্ন। পশুগণ অর্থহীন শব্দ ব্যতীত অন্য উপায়ে নিজেদের ভাব, ব্যক্ত করতে পারে না।”
“আধ্যাত্মিক ভাষাতেই আল্লাহ্ র সঙ্গে কথা বলা যায়। প্রার্থনার সময় আমরা যখন সমস্ত বর্হির্জগৎ হতে অন্তঃকরণ অপসারিত করে আত্মস্থ হয়ে আল্লাহর উপাসনায় নিমগ্ন হই, তখন এইরূপ উপলব্ধি হয়, যেন আমরা আমাদের অন্তঃকরণে আল্লাহ্ র রব শুনতেছি। শব্দ উচ্চারণ না করেও আমরা আল্লাহর সমীপে আমাদের কথা গোচর করছি, তাঁর সঙ্গে আমাদের ভাব-বিনিময় করছি, তাঁর সঙ্গে কথোপকথন করছি, তাঁর কন্ঠস্বর শুনছি। ...........প্রকৃত আধ্যাত্মিক অবস্থায় উন্নীত হলে আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহ্্র রব শুনতে পারি।” (মিস এথেল্ জে রোজেন্বার্গ কর্তৃক অনুলিখিত আব্দুল-বাহা’র আলাপ হতে)
বাহা’উল্লাহ্্ বলেছেন, উচ্চতর স্তরের আধ্যাত্মিক সত্যগুলো কেবলমাত্র আধ্যাত্মিক ভাষাতেই ব্যক্ত করা সম্ভব, কথিত বা লিখিত ভাষা এ-উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সম্পূর্ণ অনুপোযুক্ত। “সপ্ত উপত্যকা” নামক একটি পুস্তিকায় তিনি এই মর্ত্য-জগৎ হতে স্বর্গীয় আবাসে পথিকের যাত্রা-পথের বর্ণনা দিয়েছেন। এই পথের শেষ প্রান্ত সম্বন্ধে তিনি বলেছেনÑ
“রসনা এই সমস্তের বর্ণনা দিতে অক্ষম, বাক্য ইহাকে প্রকাশ করতে একেবাইে অপ্রতুল। লেখনী এখানে অপ্রয়োজনীয়, কালী কালোদাগ ব্যতীত অন্য কোনও রূপ অঙ্কিত করতে পারে না।.........কেবলমাত্র হৃদয় হতে হৃদয়ে সঞ্চারিত হতে পারে, বার্তাবাহকের এই কাজ না এবং কোনো পত্রও ইহা ধারণ করতে পারে না।”

-ড. জন ইসলমেন্ট

বিশ্বশান্তি ও একতার জন্য বাহা’ই শিক্ষা........................................................................অত্যন্ত সহ...
25/03/2024

বিশ্বশান্তি ও একতার জন্য বাহা’ই শিক্ষা........................................................................
অত্যন্ত সহজ ভাষায় রচিত বাহাই আদর্শ, মূলনীতি নিয়ে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি প্রকাশনা। লিফলেটে বাহাই দের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রদায়ের বৃহত্তম উদ্দেশ্য, এবং সম্প্রদায়ের চালিত কার্যক্রমের প্রতিটি অংশ সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যা নতুন পাঠকদের সাথে ধর্মের পরিচয় করার জন্য বিশেষ সহায়ক।
এই লিফলেটটি অত্যন্ত সুন্দর ও সংক্ষিপ্তভাবে তৈরি করা হয়েছে, এর
মাধ্যমে পাঠকবৃন্দ খুব সহজেই বাহাই ধর্মের মূল ধারণাসমূহ বুঝতে পারবেন। লিফলেটের প্রচ্ছদে দক্ষিণ এশিয় বাহাইদের উপসনাগৃহের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, একই সাথে বাহাইদের আধ্যাত্মিক পর্ব যেমন - উপসনা ও প্রার্থনা, বাহাই শিক্ষাসমূহ সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। শিশু-কিশোর ও যুবকদের জাগতিক এবং আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধির জন্য পরিচালিত কার্যক্রম সম্পর্কেও বর্ণনা রয়েছে। শশরীরে উপস্তিতির মাধ্যমে বাহাইদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য লিফলেটটির শেষ পাতায় বাংলাদেশের বিভাগীয় বাহাই কেন্দ্রের ঠিকানাসমূহ সংযুক্ত করা হয়েছে।
হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও বাহাই সমাজের পরিচিতি অন্যান্যদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ব্যক্তিগতভাবে ধর্মের প্রসার ও প্রচারণের জন্য এই লিফলেট অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপকরণ।
এক কথায় বলা যায়- নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে, প্রতিবেশি, স্কুল কলেজ, অফিস আদালত, বন্ধু-বান্ধবের মাঝে বাহাই পরিচিতি তুলে ধরার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রচারপত্র এই লিফলেটটি। যারা সর্বদা পাশের জনকে বাহাই শিক্ষার সাথে পরিচিত করতে চান, তারা তাদের পকেটে, ব্যাগে, ড্রইং রুমে বা হাতের কাজে এই লিফলেটটি থাকা একান্ত প্রয়োজন। লিফলেটটি পিডিএফ আকারেও রয়েছে ।

বিভিন্ন ধর্মে উপবাসের গুরুত্ব                     - সৈয়দ শফীক -------------------------------বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা ...
16/03/2024

বিভিন্ন ধর্মে উপবাসের গুরুত্ব
- সৈয়দ শফীক
-------------------------------

বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা কারণে মানুষ সারাদিন বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাবার গ্রহণে বিরত থাকে, রোজা রাখে বা উপবাস পালন করে। ধর্মীয় কিংবা আধ্যাত্মিক কারণ ছাড়াও শরীরের উপকার হবে, এমন ধারণাও রয়েছে অনেকের। কিছু সময়ের জন্য খাদ্য গ্রহণে বিরতি নেওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? এ প্রশ্নে অনেক বিশেষজ্ঞই ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন। অর্থাৎ কিছু সময়ের জন্য খাদ্য গ্রহণে বিরতি নেওয়ার উপকারিতা রয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কিছু সময়ের জন্য খাবার গ্রহণে বিরত থাকার ফলে দেহের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগের সম্ভাবনা কমানো ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়। এতে দীর্ঘ জীবনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
উপবাস শব্দের বাংলায় অর্থ অনশন, উপোস। সামাজিক বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য খাদ্য গ্রহণ না করাকেই বলে উপবাস। বিবাহ, পূজার্চনা, রোজা এবং বিভিন্ন ব্রত উপলক্ষে উপবাস পালন করা হয়। উপবাস করা হল এমন ধর্মাচার, যা মানুষকে আধ্যাত্মিকতা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে সাহায্য করে এবং মনে করিয়ে দেয় যে, বস্তগত জিনিসগুলো জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। উপবাস ঈশ্বরের সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। উপবাস করা হল এক বাধ্যবাধকতা, ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি ও কৃতজ্ঞতা দেখানোর এক প্রধান উপায়। একজন উপবাস করে কারণ সে সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবাসে।
সাধনক্ষেত্রে ইন্দ্রিয় সংযম অত্যাবশ্যক কর্ম, আর এ জন্য উপবাস একটি প্রধান উপায়। উপবাস শব্দটির মধ্যে দুটি বিষয়ের দ্যোতনা আছে; একটি হলো খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং অপরটি কায়মনোবাক্যে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য অনুভব করা। দেহ-মনকে সুস্থ ও নীরোগ রাখার জন্যও অনেকে নিয়মিত সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক উপবাস পালন করেন। তাঁদের ক্ষেত্রে দৈহিক ব্যাপারটিই প্রধান, মানসিক সংযম সেখানে গৌণ। অপরদিকে যাঁরা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উপবাস পালন করেন তাঁরা দেহ-মন উভয় দিক থেকেই সংযত হযে থাকেন। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ এগুলি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও উপবাস বিশেষ ভূমিকা রাখে। উপবাস দ্বারা সংযমী সাধক মন, বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা দিয়ে আরাধ্য দেব-দেবীর সান্নিধ্য অনুভব করেন এবং এর মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করেন। তাই আত্মিক ভাবনায় ঋদ্ধ ব্যক্তিগণ দেহ ও মন উভয় সুস্থ রাখার জন্য সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে একাদশী তিথিতে অথবা অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে উপবাস পালন করেন। এছাড়া বিশেষ পূজা-অর্চনাদির সময়ও সনাতন ধর্মালম্বী ভক্তগণ উপবাস পালন করেন। যেমন সরস্বতী পূজা উপলক্ষে হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীরা উপবাস পালন করে। ব্যক্তিবিশেষের শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী উপবাসের প্রকৃতি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যদি কেউ পূর্ণ একটা তিথি (প্রায় চবিবশ ঘণ্টা) উপবাস থাকতে না পারেন তাহলে তিনি স্বাভাবিক আহারের পরিবর্তে কিঞ্চিৎ লঘুখাদ্য গ্রহণ করে থাকেন। আবার কেউ কেউ উপবাসের সময় পানীয় পর্যন্ত গ্রহণ করেন না। বহু সাধক-মহাপুরুষের জীবনে ক্রমাগত দুই, তিন, চার, পাঁচদিন ব্যাপী উপবাসের কাহিনীও জানা যায়। তবে একথা নিশ্চিত যে, উপবাস দেহ ও মনকে সুস্থ ও পবিত্র রাখে।
প্রায় সকল ধর্মেই উপবাস নিয়ে বলা হয়েছে ‘উপবাস” ঈশ্বরের সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ স্থাপন করাকে সাহায্য করে। হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদি, ইসলাম, জৈনধর্মসহ জগতের প্রধান প্রধান ধর্মের মধ্যে উপবাস এক সাধারণ প্রথা। অনেক লোক বিশ্বাস করে যে, নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা একজনকে তার সৃষ্টিকর্তার নিকটবর্তী করে। নানান ধর্মের মানুষের নানান রকম পদ্ধতিতে উপবাস পালন করে, মাঝে মধ্যে উপোস করা শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী। বৌদ্ধ, হিন্দু, ইসলাম, জৈন ও ইহুদি ধর্মসহ জগতের অনেক ধর্মের মধ্যে উপবাস করা হল এক সাধারণ প্রথা।
হিন্দু ধর্মের উপবাস
হিন্দু ধর্মে উপবাস বা ব্রত বিভিন্ন উপায়ে অনুষ্ঠিত হয়, এবং এটি ধর্মীয় উন্নতি, সাধনা, ও দেবতার অমৃত্যু প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে করা হয়। হিন্দু ধর্মে উপবাসের বিভিন্ন ধরণ ও উপায়ের মধ্যে কিছু প্রধান উপবাস পদ্ধতি রয়েছে:
একাদশী ব্রতের উপবাস: এই ব্রতটি হিন্দু ক্যালেন্ডারের একাদশী তিথি বা তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে হিন্দুদের বিশেষভাবে পুণ্য করতে বলা হয় এবং তাদের মধ্যে একাদশী ব্রতের উপবাস একটি প্রধান আচরণ। এই দিনে খাবারের মধ্যে দৈহিক অমৃত্যুর প্রয়োজনীয় জীবাণুগুলি থাকতে হয় না।
করবাচৌথ ব্রতের উপবাস: এই ব্রতটি ভারতীয় নারীরা অধিকাংশই শুক্রবারে অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত করে। এটি স্ত্রীরা তাদের স্বামীবর্গের দীর্ঘজীবন এবং সুখ-শান্তির জন্য প্রার্থনা করে এবং রাতে চাঁদের দেখা হওয়ার পর দীর্ঘকাল উপবাস করে। ভারতের অনেক অঞ্চলের বিবাহিত হিন্দু রমনীরা স্বামীর সুস্বাস্থ্য, আয় উন্নতি, দীর্ঘায়ু কামনা করে উপবাস পালন করে থাকে। একটি ঝালরের মাধ্যমে চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে তারা এই উপবাস ভংগ করে। শ্রাবণ মাসে অনেকে শ্রাবন উদযাপন করে। এই সময়ে অনেকেই সপ্তাহের একটি দিন তারা তাদের পছন্দের দেবতার জন্য উপবাস করে। আবার অনেকেই পুরো শ্রাবন মাস উপবাস পালন করেন।
নবরাত্রি ব্রতের উপবাস: নবরাত্রি হলো দেবী দুর্গার উপাস্য নৌবার পূজা, যা অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে বিশেষভাবে নারীদের মাঝে নারী শক্তি উৎকৃষ্ট করতে এবং দোষের নাশ করতে এক ধরণের আত্মপূনরুত্থান করা হয়। এই ব্রতের প্রতিটি দিনে একটি উপযুক্ত নারী দেবীর বিভিন্ন রূপ লাভের উদ্দেশ্যে নভরাত্রিতে হিন্দু সম্প্রদায় উপবাস পালন করে।
মহাশিবরাত্রি ব্রতের উপবাস : এটি ভগবান শিবের উপাস্য একটি বিশেষ ব্রত, যা ফাল্গুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে শিবলিঙ্গ পূজা করা হয় এবং রাতে পূর্বে উঠে তৃষ্ণা করে শিবের পূজা করা হয়। মহাশিব রাত্রীতে অধিকাংশ হিন্দু উপবাস পালন করে এবং তারা একবিন্দু জল পর্যন্ত পান করে না।
কার্তিক মাসের একাদশী: এই ব্রতটি কার্তিক মাসের একাদশী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি বিশেষভাবে বিষ্ণু উপাস্য। এই দিনে খুব সুন্দর বা বৃক্ষের কিছু দান করা হয় এবং খাদ্য বিশেষভাবে শ্রীহরি উপাস্য খাওয়া হয়। অন্ধ্রপ্রদেশে কার্তিক মাসের শুরুর দিনে অনেক হিন্দু বিশেষ করে রমনীরা উপবাস পালন করে থাকে। এ মাসের সোমবার তারা শিবের জন্য, পূর্নচন্দ্রের দিন কার্তিকের জন্য উপবাস পালন করে থাকে।
হিন্দু ধর্মে উপবাস একটি আনুসংগিক অংশ। কিছু প্রধান হিন্দু উপবাসের পদ্ধতি বিভিন্ন রীতিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং আঞ্চলিক রীতিনীতি অনুসারে হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন ধরণের উপবাস প্রচলিত আছে। মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিন যেমন একাদশী, প্রদোষ অথবা পূর্ণিমাতে উপবাস পালন করেন অনেকে। সপ্তাহের কয়েকটি দিন নির্দিষ্ট দেবতার জন্য উপবাস পালন করার বিধান আছে অনেক অঞ্চলে। যেমন সোমবার শিবের জন্য, বৃহস্পতিবার বিষ্ণুর জন্য এবং শনিবার আয়াপ্পার জন্য উপবাস পালন করা হয়। মংগলবারে দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর পশ্চিম ভারতে উপবাস পালন করা হয়। দক্ষিণের হিন্দু জনগোষ্ঠী বিশ্বাস করে মঙ্গলবার শক্তির দেবী মারিয়াম্মানের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। উপবাসকারীরা সূর্যোদয়ের আগে খাবার গ্রহন করে এবং সূর্যাস্তের পরে তারা উপবাস ভঙ্গ করে। তবে এই উপবাসকালীন সময়ে তারা পানীয় জল পান করে থাকে।
উত্তর ভারতে মঙ্গলবার দেবতা হনুমানের জন্য নির্দিষ্ট। উপবাসকারীরা এইদিনে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তকালীন সময় পর্যন্ত শুধুমাত্র দুধ এবং ফল খেয়ে থাকেন। উত্তর ভারতের হিন্দুগণ বৃহস্পতিবার উপবাস পালন করে থাকে। উপবাসকারী একটি গল্প বা শ্রুতি শ্রবনের মাধ্যমে উপবাস শুরু করে। বৃহস্পতিবারের উপবাসকারীরা বৃহস্পতি মহাদেবের পূজা করে। তারা হলুদ কাপড়; পরে এবং হলুদ রঙের খাবার খেতে পছন্দ করে। এদিন মহিলারা কলা গাছের পূজা করে এবং জল ঢালে। হলুদাভ বর্ণের ঘি দিয়ে খাবার প্রস্তুত করা হয়। বৃহস্পতিবার গুরুর জন্য উৎসর্গ করা হয়। যে সকল হিন্দুরা গুরুমন্ত্র গ্রহন করে তাদের অনেকেই বৃহস্পতিবার উপবাস পালন করে থাকে।
শ্রীবিদ্যায় উপবাস করতে নিষেধ করা হয়েছে। এই তান্ত্রিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে দেবী মানুষের মধ্যে বাস করেন। তাই কেউ যদি ক্ষুধার্ত থাকে তবে দেবীও ক্ষুধার্ত থাকে। শ্রীবিদ্যায় শুধু মাত্র পিতা-মাতার মৃত্যু বার্ষিকীতে উপবাসে কথা বলা হয়েছে। মহাভারতের অনুশাসন পর্বে একাধিকবার উপবাসের কথা বলা হয়েছে। ভীষ্ম যুধিষ্ঠিরকে উপদেশ দিয়ে বলেন, ‘উচ্চজ্ঞানের উপবাস প্রথা পালন করো যার কথা সবাই জানে না’।
কনিফুসিয়াস ধর্মের উপবাস
কনফুসিয়াস ধর্মে একটি প্রধান উপবাস পদ্ধতি অনুষ্ঠান করা হয় না, কারণ কনফুসিয়ানিজম বোঝায় একটি বিশেষ ধর্মীয় উপবাসের প্রণালী নেই। কনফুসিয়াস ধর্ম, যা কনফুসিয়ানিজম হিসেবেও পরিচিত, একটি দার্শনিক এবং এতি একধরণের এতি একধরণের সমাজ-নীতি বা এতি একধরণের সংস্কৃতির উপর ভিত্তি রয়েছে।
কনফুসিয়ানিজমে বোঝানো হয় যে মূলত একজন ব্যক্তি কিভাবে আত্ম-উন্নতি এবং সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করতে হয়, এবং এটি ধরে নেয় যে একজন ব্যক্তির চরিত্র, দারিদ্র্য, এবং নীতি কিভাবে তার দিকে এগিয়ে যায় তাই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধর্মে আছে উপবাসের পদ্ধতি না, বরং আত্ম-শীলতা, ব্যক্তিগত সমৃদ্ধি, এবং সামাজিক মূল্যাবলীর অধীনে ব্যক্তি কে উন্নত করার উপকরণ ও পথ প্রদান করা হয়।
এই ধর্মে উপবাসের জন্য প্রধান পদ্ধতি হলো নৈতিক ও আত্ম-শীলতার পথে চলা, এবং ধার্মিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যক্তি কে আত্ম-উন্নতি করার জন্য সহায়ক হতে উপযোগী হতে উদ্দীপ্ত করা হয়।
শিন্তো ধর্মের উপবাস
জাপানের প্রাচীনতম শিন্তো ধর্মে উপবাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান। শিন্তোরা বিশ্বাস করে যে, উপবাস তাদের আত্মা এবং প্রকৃতির সাথে একরূপ থাকতে সাহায্য করতে পারে এবং ব্যক্তির বৃদ্ধি এবং শান্তির দিকে সাহায্য করতে পারে। শিন্তো উপবাস অনেক রকমের হতে পারে, কিছুটা কিছু হতে পারে পৌরাণিক ইতিহাস এবং পরম্পরাগত ব্রাহ্মণিক উপাস্যতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
একটি প্রধান শিন্তো উপবাসের পদ্ধতি হলো "ওইতি" বা ধ্যান। ধ্যানের মাধ্যমে শিন্তো বাধ্য হয়ে যায় অপনার বৃদ্ধি ও সুস্থতা বৃদ্ধি করতে। এটি একটি প্রাচীন বৌদ্ধ প্রক্রিয়া, যা মৌন এবং ধ্যানের মাধ্যমে মানবকে তার আত্মা এবং প্রকৃতির সাথে একরূপ হতে সাহায্য করে। এটি সাধারণভাবে প্রচুর শিন্তো উপাসকের মাঝে অনুষ্ঠিত হয়।এর আলাদা একটি আচরণ হলো শিন্তো উপবাসের সময়ে কিছু প্রধান উপযোগী বা ব্যক্তিগত বিষয়ে বিচার করা হয়, এমনকি দান করা হতে পারে। এই উপযোগী এবং ধার্মিক কাজের মাধ্যমে উপবাসী তাদের সমাজ ও প্রাকৃতিক পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাতে পারে।
শিন্তো উপবাস সময়ে আত্ম-নিরীক্ষণ এবং বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সামাজিক উন্নতির দিকে এক ধরনের আত্ম-শীলতা এনে দেয়।
ইহুদি ধর্মের উপবাস
ইহুদী ধর্মে উপবাস পদ্ধতি এবং অনুষ্ঠান ইহুদী লোকের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনচর্যা। ইহুদী উপবাসের প্রধান উদ্দীপক হলো ধার্মিক ও ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি এবং উপাস্য দেবতা-দেবীদের প্রতি ভক্তি অর্পণ করা।
ইহুদি ধর্মে উপবাস মানে সকল ধরণের খাবার ও পানি গ্রহন থেকে বিরত থাকা। ঐতিহ্যগতভাবে ইহুদিরা বছরে ছয়দিন রোজা পালন করে থাকে। ইয়াম কিপ্পুর হচ্ছে ইহুদি বর্ষপঞ্জিকার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন সকল পূর্ণবয়স্ক নারী-পুরুষ উপবাস পালন করে থাকে। এই পবিত্র দিনে তারা উপসনার চেয়ে উপবাসকেই বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যদি কেউ উপবাস পালন করে বিছানায় শুয়ে থাকে তবুও সে পূর্ণ ধর্মীয় বিধান পালনের পূণ্য লাভ করবে। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপবাসের দিন তিশা বাব। এছাড়াও ইহুদী সমাজে কিছু উপবাস উপবাস পরিলক্ষিত হয়, যেমন-
ইহুদী নববর্ষ: এটি ইহুদী নববর্ষের উপবাস, যা সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে ইহুদী লোকরা ধার্মিক কর্মসূচি অনুসরণ করে এবং আত্মনিরীক্ষণ করে যাতে আসছে নতুন বছরটি সফল হোক।
ইহুদী দিনের আবসর : ইহুদী লোকরা প্রতি সপ্তাহে শনিবার দিনটি উপবাসের রূপে পালন করে। এই দিনে উপবাসিনীরা নিজেদের বা পরিবারের সাথে আসবার জন্য সংস্কৃতির সাধারিত বিশেষ উপায়ে প্রস্তুতি করে এবং পরিবারের সদস্যরা এসে সান্ত্বনা, ভালোবাসা, এবং ভাগ্যবান অসময় পান করে।
ইহুদী এসার: ইহুদী এসার অথবা যোম কিপুর ইহুদীদের মধ্যে একটি অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ দিন, যা রবিবার বা সোমবার বলে অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে ইহুদী লোকরা নৈতিক অনুষ্ঠানে যান। তারা দোষ ক্ষমা প্রার্থনা করতে এবং দিনটি পুরো দিন উপবাস করে, খাদ্য এবং পানীয় অপরিহার্যতার সময়ে।
হানুক্কা: হানুক্কা ইহুদীদের একটি প্রসিদ্ধ উৎসব এবং ইহুদী উপবাস, যা হলো অষ্ট দিনের উৎসব। এই উৎসবে ইহুদী লোকরা একটি একাধিক দিন সমান বৃদ্ধি হতে পারে এবং প্রতি দিনে একটি অতিরিক্ত শক্তি।
বৌদ্ধ ধমের্র উপবাস
বৌদ্ধ ধর্মে উপবাস পদ্ধতি হলো বিশেষ ধার্মিক অনুষ্ঠান ও আত্মশীলনের একটি রূপ। বৌদ্ধ সাধুসমূহ এই উপবাসের মাধ্যমে আত্মশীলন, শিক্ষা, এবং সাধনা করে। উপবাসের মাধ্যমে তারা মানসিক, শারীরিক, এবং আধ্যাত্মিক পোষণ প্রাপ্ত করতে চেষ্টা করে। বৌদ্ধ ধর্মে কয়েক প্রকারের উপবাস প্রথাও প্রচলিত রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু প্রধান উপবাস হলো বৌদ্ধ সাধুরা নির্ধারিত দিনে উপবাস অনুষ্ঠান করেন। এই উপবাসের মাধ্যমে তারা অত্যন্ত নিয়মিতভাবে প্রাণায়াম ও মেদিটেশন করে এবং আত্মা প্রবৃদ্ধি করার জন্য চেষ্টা করে।
বৌদ্ধ উপবাসের পদ্ধতিগুলি একসাথে বৌদ্ধদের আত্মা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং তাদের মোক্ষের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বুদ্ধিজীবী জীবন যাপন করতে সাহায্য করে।
বৌদ্ধধর্মে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বিনয় নীতি অনুসরণ করে যাতে সাধারনত দুপুরের আহারের পরে সেদিন আর কোন খাবার গ্রহন করে না। যদিও এটাকে উপবাস বলা চলে না। তবুও শৃংখলিত আহার বিধি ধ্যান এবং সুস্বাস্থ অর্জনে সাহায্য করে। গৌতম বুদ্ধ প্রথম জীবনে অর্থ্যাৎ রাজপুত্র সিদ্ধার্থ দুজন শিক্ষকের তত্বাবধানে শিক্ষাগ্রহন করেন। এসময়ে তিনি খুবই কম খাদ্য গ্রহন করতেন। পরবর্তীতে তার উপদেশ মালায় তিনি কম খাদ্য গ্রহনের কথা উল্লেখ করেন। বৌদ্ধ ধর্মানুসারীদের সপ্তাহের একটি দিনে অষ্টবিধান অনুসরণ করতে বলা হয়েছে, যাতে দুপুর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত উপবাসের বিধান রয়েছে। বজ্রযান অনুসারীরা নুয়াং নে অনুসরণ করে যা তান্ত্রিক অনুশাসন চেনরেজিগের মত।
খ্রিস্টান ধর্মের উপবাস
খ্রিস্টান ধর্মে উপবাস বা ফাস্টিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ধার্মিক অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান। খ্রিস্টান উপবাসের প্রয়োজনীয়তা এবং সহোজে বোঝার জন্য বিভিন্ন উপবাস পদ্ধতি রয়েছে। যেমন
লেন্ট: খ্রিস্টান ধর্মে, লেন্ট হলো একটি চুক্তিকাল যা ঈশ্বরের কাছে প্রতিরোধ এবং বিচারের জন্য উপবাস অনুষ্ঠান করা হয়। এটি প্রায়ই ক্রিসমাসের আগে শুরু হয় এবং এটি প্রতি বছর ৪০ দিন চলে, যা ঈশ্বর যিশুর আত্মসমর্পণ, প্রতিরোধ এবং প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুষ্ঠিত হয়। লেন্টে মূলত খাদ্যের উপবাস, দৈহিক পূণ্যকর্ম, প্রার্থনা, এবং শক্তি উৎসর্গের জন্য প্রতিশ্রদ্ধাভাবে চেষ্টা করা হয়।
আডভেন্ট: আডভেন্ট খ্রিসমাসের আগের চার সপ্তাহের অবধি চলতে থাকে এবং এটি খ্রিসমাস কার্যক্রমের প্রতিরোধে এবং ঈশ্বরের প্রতি অপেক্ষা করার জন্য মুখরিত হয়। এই সময়ে উপবাসের পদ্ধতি অনুষ্ঠিত হয় এবং ভগবান যিশুর দেখার অপেক্ষায় হয়।
পেন্টিকোস্ট : এই উপবাস বিশেষভাবে পেন্টিকোস্টের আগের ৫০ দিনের জন্য অনুষ্ঠিত হয়। এটি বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠান, উপাস্য হওয়া, এবং ধর্মীয় উন্নতির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধতা প্রকাশ করার জন্য অবদান রাখে।
ক্রিসমাস ইভ: খ্রিসমাস ইভ সময়ে কোনও বিশেষ উপবাসের পদ্ধতি থাকে না, তবে কিছু খ্রিস্টান কমিউনিটি খ্রিসমাস ইভে উপবাস অনুষ্ঠান করে এবং শুধুমাত্র পানি বা ফলের রূপে খাদ্য পরিস্থিতি অনুভব করে।
খ্রিস্ট ধর্মের বাইবেলিকার বইয়ের মধ্যে ইসাইয়াহ (৫৮:৬-৭), জাকারিয়াহ (৭:৫-১০), বুক অফ দানিয়েলে উপবাসে কথা বলা হয়েছে। তবে এখানে উপবাসে খাদ্য পানীয় পরিহারের বদলে সৃষ্টিকর্তার আদেশ পূর্ণরূপে প্রতিপালন করতে গরীব এবং দুর্দশাগ্রস্থকে সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। বুক অফ দানিয়েলে আংশিক উপবাসের কথা বলা হয়েছে। খ্রিস্টধর্মের বিভিন্ন শাখা বা চার্চ উপবাস পালন করে থাকে। তবে কিছু শাখা এটাকে পালন করে না। ক্যাথলিক চার্চ এবং ইস্টার্ণ অর্থোডক্স চল্লিশ দিনের আংশিক উপবাস পালন করে থাকে। ইথিওপিয়ান অর্থোডক্স চার্চ বছরে কয়েকবার সপ্তাহব্যাপী আংশিক উপবাস পালন করে। উক্ত সময়ে তারা মাংস এবং দুগ্ধ আহার থেকে বিরত থাকে। বাইবেলে (লেভিক্টাস ২৩:২৭,৩১) বলা হয়েছে, সবার উচিত সপ্তম মাসের নবম দিনের সন্ধ্যা থেকে দশম দিনের সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনরূপ খাদ্য গ্রহন না করা।
জৈন ধর্মের উপবাস
জৈন ধর্মে উপবাস পদ্ধতি মূলত আত্মশীলন, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং আত্মপূর্ণতা অর্জনের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠান করা হয়। জৈন ধার্মিক গ্রন্থগুলি, বিশেষভাবে জৈন আগম, উপবাসের একাধিক প্রকার ও নিয়ম উল্লেখ করে।
পারাণা : জৈন ধর্মের অন্যতম প্রধান উপবাস হলো পারাণা, যা বার্ষিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এটি আত্মশীলনের উদ্দেশ্যে একটি প্রক্রিয়া, একধরনের মৌন উপবাস, যা সপ্তাহের বা দশ দিনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে শ্রাবক এবং শ্রাবিকা মহোথ্সভা (বৃদ্ধি) অনুষ্ঠিত হয় এবং অতীত পাপের ক্ষমা জানানো হয়। এছাড়াও, অধিকাংশ শ্রাবক এবং শ্রাবিকা এই সময়ে মৌনধারণ করে এবং পরস্পরের সাথে সৎযাচ্ছার সম্পর্ক বজায় রাখতে চেষ্টা করে।
উত্তেনি: উত্তেনি হলো জৈন ধর্মের অভিনয় ও ক্ষমা উপবাসের একটি রূপ, যা পূর্বে কৃতকৃত্য যাত্রীদের স্মরণ করতে হয়। এই প্রক্রিয়াতে জৈন দান এবং শাস্তি পাওয়ার জন্য অতীত অপরাধের ক্ষমা জানায়।
অনেকান্তধারণা: এই ধারণা হলো সত্যের অন্যান্ত পথে পৌঁছতে অনেকগুলি দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন। এটি জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যা অপরাধের প্রতি ক্ষমা এবং উদারতা প্রকাশ করে। এই ধারণার অনুযায়ী, একটি বিষয় বা ঘটনার সত্য প্রতি সম্ভাব্য দৃষ্টিভঙ্গি আছে, এবং সত্য সম্পূর্ণভাবে জানার জন্য একই প্রক্রিয়াতে অনেকগুলি দৃষ্টি একত্রে মেলিতে হতে পারে। জৈন ধর্মে এই উপবাস পদ্ধতিগুলি পালন করে শ্রাবক ও শ্রাবিকা, এবং এটি তাদের জীবনে শান্তি, ধার্মিক অভিজ্ঞান এবং সাধারণভাবে আত্মবিকাশ এনে দেয়।
এছাড়াও জৈন ধর্মে বিভিন্ন ধরণের উপবাস প্রথা পচলিত আছে। যেমন- চৌবিহার উপবাস, যাতে পরবর্তী দিনের সূর্যোদয় পর্যন্ত কোন প্রকার খাবার বা পানি গ্রহন করা যায় না। ত্রিবিহার উপবাস- যেখানে কোন খাবার খাওয়া যায় না কিন্তু ফুটানো পানি পান করা যায়। জৈন ধর্মমতে যে কোন উপবাসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অহিংসা অর্জন। সাধারনত পাজ্জ্যশনে উপবাস পালন করা হয়। কোন ব্যক্তি যদি পাজ্জ্যশনে আটদিন উপবাস পালন করে তবে তাকে বলা হল আত্থাই এবং দশদিন উপবাস করলে বলা হয় দশলক্ষন। আর মাসব্যাপী উপবাস পালন করলে বলা হয় মশখমন। জৈনদের মধ্যে উপবাস পালন না করে খুবই কম খাবার আহার করার রীতি অতি সাধারণ দৃশ্য। যে সকল ব্যক্তিরা মসুরের ডাল এবং স্বাদহীন খাবার শুধুমাত্র লবন ও মরিচ দিয়ে খেয়ে থাকেন তাদের বলা হয় আয়ামবলি। জৈনরা দিনে একবার মাত্র খাবার গ্রহন করে একাসসন নামে উপবাস পালন করে। দিনে দুই বার খাবার খেয়ে বিয়াসন উপবাস পালন করে।
শিখ ধর্মের উপবাস
শিখধর্মে উপবাস প্রথাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। গুরুগ্রন্থ সাহিবে বলা হয়েছে উপবাস কোন আত্মিক সুবিধা বয়ে আনে না। তাই শরীরকে কষ্ট দিয়ে কোন লাভ নেই। তবে শুধু মাত্র স্বাস্থ্যজনিত কারণে উপবাস করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শিখ ধর্মে উপবাসএকটি গুরুমুখী জীবনধারা বা ইবাদতের একটি বিশেষ রূপ। ইহুদী ধর্মে এটি অখাড়া সমাজের মেধাবী সদস্যদের জন্য বৈষ্ণব মুক্তির পথে অনুমোদিত একটি সাধনা হিসেবে মনোনিবেশ করা হয়। এটি শিখ সমাজের প্রাথমিক ধার্মিক কাজ এবং গুরুমুখী জীবনের একটি উচ্চ স্তরের অবলম্বন হিসেবে গণ্য হয়। শিখ ধর্মে উপবাসের পদ্ধতি মৌনধারণ, সিম্রণ, আরদাস, বচন সাধুতা, কীরতন এবং ইহুদী গুরুমুখী জীবনের নৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়।
মৌনধারণ : শিখদের উপবাসের প্রথম পদ্ধতি মৌনধারণ বা মৌনব্রত। এটি একটি নিয়মিত সময়ে ধার্মিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য ব্যক্তির মাসিক অবস্থান করে। এই সময়ে শিখদের মনোবল এবং অনুভূতি উন্নত হতে পারে, যার মাধ্যমে তারা আত্মা এক হতে পারে তা অনুভূত করে।
সিম্রণ: সিম্রণ হলো ঈশ্বরের নাম বা জাপ করার একটি উপায়। শিখদের সমাজে ব্যক্তি বিশেষভাবে এই মন্ত্র জপ করে। এটি একটি ধার্মিক অভ্যন্তরীণ উপাস্য, যা শিখদের মাসিক অবস্নেথা বা অন্যান্য সময়ে করা হয়। সিম্রণ করতে গিয়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের নামের জপ করে এবং এটি করতে করতে একটি ধার্মিক চিত্র অবতীর্ণ হয়।
আরদাস: শিখ সমাজে ব্যক্তিরা প্রতি সকাল এবং সন্ধ্যায় একটি ধার্মিক কার্যক্রমে আরদাস অনুষ্ঠান করে। এটি একটি ধার্মিক প্রার্থনা ও অনুষ্ঠান, যা ঈশ্বরের দিকে মোড় নেয়।
ইসলাম ধর্মের উপবাস
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের চতুর্থ স্তম্ভ রোজা বা উপবাস। পবিত্র রমজান মাসে সারা জাহানের মুসলমানগণ রোজা পালন করে থাকেন। ইসলাম ধর্মে রামাদান মাসে ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত পূর্নবয়স্ক সুস্থ সবল নারী-পুরুষের জন্য বাধ্যতামুলক। রোজা পালন সময়ে কোন প্রকার খাদ্য গ্রহন এবং পান সম্পূর্নরূপে নিষিদ্ধ। ইসলাম ধর্মে উপবাস বা রোজা পালনের জন্য কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষনীয়-
নিয়ত: রোজা শুরু করার আগে একজন মুসলিমকে নিয়ত করতে হয়। তার মনে হতে হবে যে, এই রোজা ইলাহি প্রতি একমাত্র ইবাদতের জন্য অনুষ্ঠান করছে এবং তার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে নৈর্বোধ্য হয়ে থাকবে।
সাহরী : রোজা শুরু হওয়ার আগে এবং সেই দিনের জন্য শক্তি সাধারিত করার জন্য সুহূর (সহর) নামক খাদ্য একজন মুসলিমের জীবনযাপনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সূর্যোদয়ের আগের সময়ে হতে হবে এবং এটি সারাদিনে থাকা আগ্রহী।
ইফতার : রোজা টুটে যাওয়ার সময়, সূর্যাস্তের পর, মুসলিমরা ইফতার করতে পারে। এই সময়ে প্রায়ই খেতে হবে এবং এটি খোদার দোআ (প্রার্থনা) দিয়ে শুরু হতে হবে।
আশুরা রোজা : আশুরা মাসে একাধিক রোজা অনুষ্ঠান করা হয়। মুহররম মাসে প্রথম ১০ দিনে রোজা রেখে দিন অধিক পুরানো পাপের ক্ষমা ও নিষ্কলঙ্কতা প্রাপ্তির মাধ্যমে আত্ম-পুনরুত্থান হয়।
কাফারা করার উপবাস: কিছু অসুযী অবস্থায় কাফারা পূর্ণ করার জন্য মুসলিম অবশ্যই কিছু দিন উপবাস অনুষ্ঠান করতে হবে।
এছাড়াও, ইসলামে মাহে মুহররম, শাবান মাসের বাকি দিন, এবং সোমবার এবং পঞ্চান্তিকা দিনে আইতিহাসিক ইবাদত রয়েছে যা অধিকাংশ মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রচলিত।
আরাফার দিবসে (জুল হজ্ব মাসের ৯ তারিখ) আরাফায় অবস্থানরত হাজীরা এই দিনে রোজা পালন করবেন না। আশুরার দিনে( মুহাররম মাসের দশ তারিখ) রোজা পালন করা হয়। সুন্নি মুসলমানেরা এই দিনের আগের দিন ও পরের দিনও রোজা পালন করে। অন্যদিকে শিয়াহ অনুসারীরা শুধু মাত্র এদিনেই রোজা রাখেন। শাওয়াল মাসের ছয়দিন রোজা পালন করা হয় ( রমজানের পরবর্তী মাস) প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩,১৪ এবং পনেরো তারিখ প্রতি সপ্তাহের মংগল ও বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ দিন বাদে অন্যান্য সকল দিন ( দাউদ নবীর রোজা নামেও পরিচিত) রজব মাসের ২৭ তারিখ মিরাজ উপলক্ষ্যে শাবান মাসের ১৫ তারিখ শব ই বরাত উপলক্ষ্যেরোজা রাখার জন্য বছরের কয়েকটি দিন মুসলমানদের জন্য নিদিষ্ট করা হয়েছে। ইদ উল ফিতর (শাওয়াল মাসের এক তারিখ) তাশরিক (১১, ১২, ১৩ যিলহজ্ব), সুন্নী মুসলমানেরা অনুসরণ করেন। ইদ উল আযহা (শিয়া মতালম্বীদের কোন কোন শাখা এই দিনে রোজা রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করে)
বাহাই ধর্মের উপবাস
বাহাইদের উপবাস পদ্ধতি বাহাই ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আত্মবিকাশ এবং আধ্যাত্মিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে একে অপরকে সহানুভূতি ও সমর্পণ করতে সাহায্য করে। বাহাই উপবাসের সময়ে ব্যক্তি নিজেকে শারীরিক, মানসিক, এবং আধ্যাত্মিক উন্নত করতে চেষ্টা করে এবং অপরকে সেবা করতে উৎসাহিত হয়।
বাহাই উপবাসের মৌখিক নিয়মাবলী নেই, যা কিছু উপবাস পদ্ধতি রয়েছে তা ধর্মীয় গ্রন্থের লেখনী অনুসারে পরিচালিত:
“পবিত্র আক্দাস গ্রন্থ এই আদেশ দান করিতেছে! “তোমরা পুরুষ ও স্ত্রীলোক বয়োপ্রাপ্তির (ষোলো বৎসরে পদার্পণের প্রারম্ভ)-কাল হইতে আমরা তোমাদের জন্য উপবাস, ও উপাসনা বাধ্যতামূলক করিয়াছি। তোমাদের পরম প্রভু ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের পরম প্রভু কর্তৃক ইহা আদেশ করা হইয়াছে।”
“হে মহিমান্বিত লেখনী! বলঃ হে পৃথিবীর নেতৃবৃন্দ। তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক উনিশদিনের উপবাস বাধ্যতামূলক করিয়াছি, এবং ইহা পরিসমাপ্তির পর, নও-রোজকে (নববর্ষের প্রথম দিনকে) তোমাদের জন্য একটি পর্বদিনরূপে নির্দিষ্ট করিয়াছি।’’
“ভ্রমণকারী, পীড়িত ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারিণী নারীর উপবাস বাধ্যতামূলক নহে, এবং তাহারা উপবাস মাস পালন না করিলে কোনো দোষ নাই। ঈশ্বর নিজ অনুকম্পায় তাহাদিগোকে ক্ষমা করেন, নিশ্চয় তিনি অতি শক্তিশালী ও অতি দানশীল।’’
“এই উনিশদিন যাবৎ, প্রত্যহ সূর্যোদয় হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য ও পানীয় হইতে নিজেদের বিরত রাখো, এবং সাবধান হও, পাছে পবিত্র গ্রন্থে নির্ধারিত ও মহান অনুগ্রহ হইতে তোমাদের বাসনা তোমাদিগোকে বঞ্চিত করে।’’ -কিতাবে আকদাস।
বাহাই ধর্মের উপবাসে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনরূপ পানাহার এমনকি ধূমপান পর্যন্ত নিষিদ্ধ। ১৫ থেকে ৭০ বয়সী সকল বাহাইকে এই রোজা বা উপবাস পালন করতে হবে। অসুস্থ, গর্ভবতী, ঋতুবতী, পর্যটক, কঠোর পরিশ্রমকারীদের জন্য রোজার বিধান শিথিল করা হয়েছে। তবে যারা কঠোর পরিশ্রম করেন তাদেরকে নির্জনে স্বাভাবিকের তুলনায় কম আহার করতে বলা হয়েছে।
১৯ দিনের ফাস্টিং (ঘরহবঃববহ-উধু ঋধংঃ): এটি এক বা একাধিক ১৯ দিনের উপবাস হতে পারে, যা বাহাই সম্প্রদায়ে প্রচলিত। এই উপবাসের দিনে বাহাইগণ খাদ্য এবং পানি বদলে দেয় এবং আত্মবিকাশ এবং আধ্যাত্মিক প্রবৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করে।
আলোচনা এবং আত্ম-নিগর্হ : বাহাই সম্প্রদায়ের অনেক সদস্যরা আলোচনা এবং আত্ম-নিগর্হে মুখরিত করে থাকে। এটি তাদের আত্মবিকাশ এবং আধ্যাত্মিক প্রবৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবে দেখা হয়। এই সময়ে বাহাইগণ আত্ম-পুনরুত্থান এবং আত্মবিকাশের প্রতি কমিটমেন্ট করতে পারে এবং আলোচনা এবং মেধাবৃদ্ধির জন্য উপবাস অনুষ্ঠান করতে পারে।
আত্ম-শিক্ষা : বাহাই উপবাসের সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ার এবং আত্ম-শিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যায়াম করতে পারে। এই পথে তারা আত্মবিকাশ এবং ধর্মীয় জ্ঞানে বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করে।
বাহাই উপবাসের এই পদ্ধতিগুলি একে অপরকে সহানুভূতি ও সমর্পণের সাথে জড়িত করে এবং এটি তাদের ধর্মীয় সম্প্রদায়ে আত্মবিকাশ ও সমৃদ্ধির দিকে প্রচুর মাধ্যম হিসেবে অবদান রাখে।

Address

G-98, Sostitola, Boalia Para
Rajshahi
6100

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Nobo Dibos posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Nobo Dibos:

Share

Category



You may also like