04/05/2024
৫ ড’লারে কয়টা মেসেজ আসবে?
৫ ড’লারে কয়টা সেল আসবে?
৫ ড’লারে কেমন রিচ হবে?
সেল যে হবে এটা কী গ্যারান্টেড?
সব প্রশ্নের উত্তর আজকে একসাথে দিবো। ৫ ড’লারে কয়টা মেসেজ, কয়টা সেল, কত রিচ হবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া ডিফিকাল্ট। সহজ ভাষায় বললে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া সম্ভব না।
মেসেজ কেমন আসবে এই জিনিসটা ডিপেন্ড করে আপনি আপনার ক্রিয়েটিভ ( যে পোষ্ট টা বু’ষ্ট করতে চাচ্ছেন) দ্বারা অডিয়েন্সকে কতটুকু আকর্ষিত করতে পারছেন। আপনি যখন ফেসবুকের নিউজফিড স্ক্রল করেন তখন আপনার সামনে অনেক এড আসে নিশ্চয়ই? সব এড এ কিন্তু আপনি ক্লিক করেন না, যেই এড টা আপনার ভালো লাগে, যেই এডের পিকচার এবং ভিডিও এ কোয়ালিটি, ডিজাইন আপনাকে আকর্ষিত করে সেই এডেই আপনি ক্লিক করেন। একই রকমভাবে আপনি যখন এড রান করছেন তখনও জিনিসগুলা এরকম ভাবে কাজ করে। আপনার পোষ্ট কিংবা ভিডিও মানুষের যত বেশি ভালো লাগবে আপনার এডে ততবেশি রিচ হবে এবং তত বেশি মেসেজ আসবে।
কেমন সেল আসবে, সেল আসবে গ্যারান্টটেড কিনা এউ প্রশ্নটিও অনেকে করে থাকেন। একজন ডিজিটাল মার্কেটার সে কখনোই আপনার সেল জেনারেট করে দিবে না তার কাজ হচ্ছে আপনার এডটি সঠিক অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছে দেয়া। বাকি কাজ আপনার। সেজন্য সেল এর ব্যাপারটা পুরোপুরিই আপনার হাতে। আপনার কাষ্টমারকে আপনি কীভাবে ম্যানেজ করবেন, কীভাবে সেল বৃদ্ধি করবেন সে ব্যাপারে আপনাকে অবশ্যই দক্ষ্যতা অর্জন করতে হবে। অনলাইন এ বিজনেস করা যতটা সহজ আপনি ভাবছেন ততটাও সহজ নয়। আপনি যদি মনে করেন ৫-১০ ড’লার বাজেট নিয়ে এসে কোনোরকম একটা পোষ্ট করে অনেক অনেক সেল জেনারেট করে ফেলবেন, তাহলে আপনাকে বলছি ফেসবুক মার্কেটিং আপনার জন্য না। মার্কেটিং রিসার্চ করতে করতেই ৫০ ডলার শেষ হয়ে যায়।
সেল না হওয়ার কিছু কারণ:-
১। কাষ্টমারের প্রোডাক্ট পছন্দ হয়েছে, বাট তার কাছে মনে হতে পারে প্রোডাক্টের প্রাইস আপনি বেশি রাখছেন।
২। প্রোডাক্টের ফটোশ্যুট নিন্মমানের হওয়ার কারণে আপনি মেসেজ কম পাচ্ছেন, যার কারণে সেল হওয়ার সম্ভাবনা কম।
৩। আপনি হয়তো এমন টাইমে এড রান করছেন যে সময়টাতে মানুষের পকেটে টাকা তেমন থাকে না। সে সময়টা হতে পারে মাসের শেষ ১০ দিন।
৪। আমাদের দেশের মানুষ এখনো অনলাইন শপিং এ তেমন অভ্যস্ত না, তাছাড়া মানুষ মনে করে অনলাইন থেকে প্রোডাক্ট পারচেস করলে কোয়ালিটি যেমন দেখিয়েছেন তেমন না পেতেও পারে, সেজন্য ভয়ে থাকে। এ বিষয়টা নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে।
৫। অনেক সময় কাষ্টমার মেসেজ দিয়ে পরে আর কনভারসেশন কন্টিনিউ করে না, ব্যস্ত হয়ে পরে। আপনার উচিত তাকে পুনরায় আবার টেক্সট করা।
৬। আপনার মার্কেটার হয়তো সঠিকভাবে অডিয়েন্স টার্গেট করতে পারছে না, যার কারণে আসলে প্রোডাক্টটি যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে যাচ্ছে না, ফলে আপনি সেল পাচ্ছেন না।
৭। আপনার পেইজের রিভিউ সেকশনে পর্যাপ্ত রিভিউ এবং পেইজে লাইক কম থাকায় কাষ্টমাররা আপনাকে ট্রাষ্ট করতে পারছে না। তাই বু’ষ্টিং এর পাশাপাশি ব্র্যান্ডিং এর দিকেও আপনার নজর রাখতে হবে।
৮। কাষ্টমার যখন আপনাকে টেক্সট করছে আপনি তাকে প্রোডাক্টটি অর্ডার করতে আগ্রহী করতে পারছেন না, কারণ আপনি কাষ্টমার ম্যানেজমেন্ট এ দূর্বল। এইদিকটাতে আপনাকে পারদর্শী হতে হবে।
৯। কাষ্টমারকে রিটার্ন পলিসি ক্লিয়ার না করাও সেল না হওয়ার একটি বড় কারণ। আপনি যদি কাষ্টমারকে রিটার্ন পলিসি সম্পর্কে ক্লিয়ার করেন এবং রিটার্ন সুবিধা দেন তাহলে কাষ্টমার অর্ডার করতে ভরসা পাবে।
১০। বিশে^র প্রায় সকল কাষ্টমারই অফার পেলে অর্ডার করতে আগ্রহী হয়। মাঝে মাঝে ডিসকাউন্ট দিন, ফ্রী ডেলিভারি সুবিধা দিন, বাই ওয়ান গেট ওয়ান সুবিধা দিন। প্রয়োজনে প্রোডাক্ট এর দাম কিছুটা বাড়িয়ে হলেও ফেক ডিসকাউন্ট শো করুন। এটাও একটা মার্কেটিং স্ট্র্যাজেডির মধ্যে পড়ে।
১১। অনেক সময় বাজেট স্বল্পতার কারণেও সেল কম হয়। উদাহারণ দিয়ে বুঝাই: সামনে কোরবানীর ঈদ। অনেকেই ফেসবুকে পাঞ্জাবীর এড রান করবে। ধরুন “ক’’ একটি এড রান করলো পাঞ্জাবীর প্রতিদিন ২০ ডলার বাজেট দিয়ে এবং “খ” একটি এড রান করলো পাঞ্জাবীর প্রতিদিন ৫ ডলার বাজেট দিয়ে। দুইজনের টার্গেটেড অডিয়েন্সই কিন্তু সেম। এখন “ক” প্রতিদিন ২০ ডলার করে এড রান করার কারণে “খ” এর তুলনায় দ্রæত অডিয়েন্স এর কাছে তার এডটি পৌঁছাতে পারছে এবং তারা পারচেস ও করছে। কিন্তু “খ” প্রতিদিন ৫ ডলার করে এড রান করার কারণে সে “ক” এর মত দ্রæত পৌঁছাতে পারছে না। অডিয়েন্স “ক” এর এড আগে দেখার পর “খ” এর এড দেখছে, ততক্ষনে অডিয়েন্স “ক” এর নিকট থেকে প্রোডাক্ট কিনে ফেলেছে। আর যারা কিনছে না তারা “খ” কে মেসেজ করছে। “খ” কে যারা মেসেজ করছে তাদের প্রোডাক্ট কেনার সম্ভাবনা কম। কারণ তারা কিনলে “ক” এর থেকেই কিনে ফেলতো। সো আপনাকে অবশ্যই আপনার কম্পটিটরদের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, প্রয়োজনে তাদের চাইতে ভালো করতে হবে।
এছাড়াও সেল না হওয়ার আরও অনেক কারণ রয়েছে। কীভাবে সেল বৃদ্ধি করা যায় সেগুলো নিয়ে অন্য কোনোদিন আলোচনা করবো।
ধন্যবাদান্তে
ইজি আইটি