কাফেলা

কাফেলা Hi, this is the official page of "কাফেলা" YouTube channel. Stay tuned by following. Thanks for visiting.

03/07/2022

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর গুরুত্ব শরীয়তে কেমন দেওয়া হয়েছে, দেখুন।
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ স্বামী যখন তাঁর স্ত্রীকে দৈহিক প্রয়োজনে আহবান করবে, সে যেনো স্বামীর কাছে অত্যন্ত দ্রুত চলে আসে । এমনকি সে রান্না ঘরে রুটি পাকানোর কাজে ব্যস্ত থাকলেও ।”
সুনানে তিরমিযি ১১৬০
ছহীহুল জামে ৫৩৪
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ যে স্ত্রী স্বামীর ডাকে সাঁড়া না দেয় এবং স্বামী রাগান্বিত অবস্হায় সারারাত একাকী কাটায়, সে স্ত্রীর উপর ফিরিশ্তারা সকাল পর্যন্ত লা’নত দিতে থাকে ।”
ছহীহুল বোখারি ৫১৯৩
ছহীহ মুসলিম ১৪৩৬
সুনানে আবু দাউদ ২১৪১
নাসাঈ
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ তিন ব্যক্তির নামাজ তাঁদের মাথা অতিক্রম করেনা অর্থাৎ কবুল হয়না । তন্মধ্যে একজন হলেন অবাধ্য স্ত্রী , যে স্বামীর ডাকে সাঁড়া দেয়না এবং স্বামী রাগান্বিত অবস্হায় ঘুমায় ।”
তাবরানী ১০৮৬
সুনানে তিরমিযি ৩৬০
হাকেম
সিলসিলা ছহীহা ২৮৮
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে নফল রোজা রাখা যাবেনা এবং স্বামীর অপছন্দ ব্যক্তিকে ঘরে প্রবেশ করানো যাবেনা ।”
ছহীহুল বোখারি ৫১৯৫
ছহীহ মুসলিম ২৪১৭
দারেমী ১৭২০
সিলসিলা আহাদিসুস ছহীহা ৩৯৫
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ পরকালে আল্লাহপাক স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ স্ত্রীর দিকে তাকাবেন না ।”
নাসাঈ কুবরা ৯১৩৫
বাযযার ২৩৪৯
তাবরানী
হাকেম ২৭৭১
বাইহাক্বী ১৪৪৯৭
সিলসিলাহ ছহীহা ২৮৯
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ কোন স্ত্রী যদি তাঁর স্বামীর অধিকার সম্পর্কে জানতো, দিনে বা রাতের খাবার শেষ করে স্বামীর পাশে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতো ।”
ছহীহুল জামে ৫২৫৯
তাবরানী
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ স্বামীর অবাধ্য স্ত্রীর জন্য জান্নাত হারাম ।”
মুসনাদে আহমদ ১৯০০৩
নাসাঈ
হাকিম
বায়হাক্বী
*** মহানবী ﷺ বলেছেন “ যে স্ত্রী তাঁর স্বামীকে কষ্ট দেয়, জান্নাতের হুরেরা বলেন “ তোমার স্বামীকে কষ্ট দিওনা । তিনি তোমার কাছে সাময়িক মেহমান মাত্র । তোমাকে ছেড়ে অচিরেই আমাদের কাছে ফিরে আসবে ।”
তিরমিযি ১১৭৪
ইব্নে মাজাহ ২০১৪
*** মা- বাবা সহ সকলের মৃত্যুতে শোক পালন হচ্ছে মাত্র ৩ দিন পর্যন্ত । পক্ষান্তরে স্বামীর মৃত্যুতে শোক পালন করতে হবে ৪ মাস ১০ দিন ।
সূরা আল বাক্বারা ২৩৪
ছহীহুল বোখারি ১২৮০
ছহীহ মুসলিম ৩৮০২

09/05/2022

**"হিকমা ও সাকিনা"**

আল্লাহ সুবহানুওয়াতা'আলা যাকে অপছন্দ করেন তাকেও অঢেল ধন সম্পদ দান করেন। আর যাকে পছন্দ করেন তাকে দান করেন হিকমাহ।

যাকে হিকমাহ দান করা হয় তার ভিতরে থাকে সাকিনা। আরবি সাকিনা শব্দের অর্থ শান্ত, প্রশান্ত, ধীর, স্থির।

টেবিল ভর্তি খাবার অথচ প্রত্যেকটা খাবারে আপনি দোষ খুঁজে পাচ্ছেন, পেট ভরে খেতে পারছেন না। কেননা আপনাকে সম্পদ দান করা হয়েছে, হিকমাহ দেয়া হয়নি যে কারণে আপনার ভিতর সাকিনা নেই।

আপনাকে হিকমাহ দেয়া হয়েছে, যে জন্যে আলু ভর্তা আর ডাল দিয়েও পরম প্রশান্তি নিয়ে পেট ভরে খেয়ে উঠে বলে উঠবেন আলহামদুলিল্লাহ।

উচ্চশিক্ষিতা সুন্দরী স্ত্রী পেয়েও আপনি তাকে নিয়ে সুখী নন, কারণ আপনাকে হিকমা দেয়া হয়নি।

টয়োটা এলিয়নে চড়েও আপনি সুখী নন, আপনার কেন পাজেরো নাই? এর কারণ আপনার মাঝে হিকমাহ নাই, সাকিনা উঠে গেছে। আপনি আপনার অবস্থানে সুখী নন।

আরবি হিকমা শব্দের অর্থ প্রজ্ঞা। যাকে আল্লাহসুবহানুওয়াতা'আলা হিকমা দান করেন সে সর্ব অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকে, শান্তিতে থাকে। এর অর্থ নিজেকে মানিয়ে চলা এবং তাতে সন্তুষ্ট থাকা।

রিজিক শব্দের অর্থ অনেক ব্যাপক। রিজিকের সর্বনিম্ন স্তর হচ্ছে ধন-সম্পদ। আর সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে সুস্থতা, হিকমা, পবিত্র স্ত্রী, উত্তম সন্তান, উত্তম আমল।

জাগতিক দৌড়ে পিছিয়ে থাকা মানে আপনি পিছিয়ে নন। আপনার সকাল হয় আপনার রবকে ভুলে, দুপুর বিকেল রাত একটিবারের জন্যও আপনি সেজদাবনত হন না, সেই কবে কোরআন পড়েছিলেন মনে নাই, একরাশ পরিশ্রান্ত দেহমন নিয়ে ঘুমাতে যান রবকে ভুলে গিয়ে। অনেক সম্পদ আপনার, কিন্তু সাকিনা নেই। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় সে অনুভূতিটুকুও মরে গেছে।

একটু ভেবে দেখি- আমি কোথায় ছিলাম, কেন এসেছি, আবার কোথায়ই যাব, কেনইবা যাব, যাবার প্রস্তুতিই বা কতটুকু!?

আসুন PAUSE বাটনটা চাপি,
ভুলেই গেছি মাঝে মাঝে থামতে হয়, ভাবতে হয়। আর কতো আমরা দৌঁড়াব?

collected

09/05/2022

‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সগিরা।’
অর্থ : (হে আমাদের) পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি দয়া কর; যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)

'রাব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমু'মিনিনা ইয়াওমা ইয়া ক্বুমুল হিছাব।’
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)

24/04/2022

শরীয়তে নাকি বউ ঘরের কাজ করতে বাধ্য না!

একদা ফাতিমা (রা.) গৃহস্থালীর কাজের চাপ, নিজের হাড়ভাঙা খাটুনি ও কষ্টের কথা নিজের আব্বাজানের কাছে বললেন।

তিনি ছিলেন এমন পিতা যিনি তার কন্যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। যাঁর সাথে রাসুল ﷺ তাঁর দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর মিলিত হওয়ার সুসংবাদ দিয়েছিলেন। যা শুনে তিনি হেসে উঠেছিলেন (রাদিআল্লাহু আনহা)।

তাঁর একার পক্ষে অত্যন্ত কষ্ট হওয়ায় তিনি রাসুল ﷺ এর নিকট কাজে সাহায্যের জন্য একজন খাদেম চাইলেন।

রাসুল ﷺ তাঁকে খাদেম দিলেন না। যেখানে রাসুল ﷺ মদীনায় ইসলামি হুকুমতের প্রধান। তাই এতে কোন সন্দেহ-ই নেই যে তার নিকট অতিরিক্ত খাদেম ছিলো না। এবং ওই দিনও নতুন কয়েকজন গোলাম এসেছিল। এ সত্ত্বেও রাসুল ﷺ তাঁকে খাদেম না দিয়ে নিজ হাতে ঘর-বাড়ির সকল কাজ করার নির্দেশ দিলেন।

উপরন্তু ঘরের কাজ করার অলসতা কাটিয়ে উঠার নিয়ম বলে দিলেন। তিনি তাকে বললেন, ❝যখন তোমরা (আলী ও ফাতিমা) শয়ন করবে তখন ৩৪ বার 'আল্লহু-আকবার' ৩৩ বার ‘সুবহা-নআল্ল-হ' এবং ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লা-হ’ পড়বে। এটা তোমাদের জন্য খাদেম থেকেও উত্তম হবে।❞

স্বামীর ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং যাবতীয় খেদমত করা স্ত্রী হিসেবে নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্যর অন্তর্ভুক্ত এটা আমরা সীরাহ থেকেই দেখতে পাই যার সাক্ষ্য দেয় সহিহ হাদিসও।

স্বামী, তার সন্তান এবং পরিবারের হক্ব আদায় করা তার উপর অর্পিত দায়িত্ব। সর্বকাজ নিজের হাতে করা তো ফাতিমা রাদিআল্লাহু আনহারও সুন্নাহ। মোহর হিসেবে মোহরে ফাতেমি চাওয়া বা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহার জীবদ্দশায় আলী রাদি.-র এক বিয়ে টেনে আনা বোনেরা কেন তার মতো একা হাতে সব কাজ করতে পারবে না? বরং তাদের তো উচিত প্রযুক্তির এই যুগেও যাতা সহ প্রাচীন সব সরঞ্জাম ব্যবহার করা। যেহেতু, নিজেদের জন্য সুবিধাজনক ক্ষেত্রে উনাকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।

ততোধিক আশ্চর্যের কথা হচ্ছে, সাহাবিয়া মহিলাগন ঘরে যেভাবে কাজ করতেন সেভাবে নিজেদের ক্ষেত খামারেও কাজ করতেন।

উম্মুল মুমিনীন খাদিজা রাদিআল্লাহু আনহা তার বিয়ের পর প্রাক্তন স্বামীদের ব্যবসা সহ সকল সম্পদ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে হস্তান্তর করে তিনি পুরোদস্তুর গৃহীনি হয়ে গিয়েছিলেন।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা তাঁর ঘরের যাবতীয় কাজ নিজে করতেন।

❝আটা কুটতেন নিজেই।❞ [বুখারী শরীফ]

❝খামির নিজে বানাতেন। রুটি বানাতেন নিজে। রান্না করতেন নিজেই।❞ [বুখারী, আবূ দাউদ]

❝বিছানা বিছাতেন নিজে।❞ [শামায়েলে তিরমিযী]

❝অযুর পানি নিজেই আনতেন।❞ [মুসনাদে আহমাদঃ৬/৬৮]

❝রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরবানির জন্য যে উট পাঠাতেন, সেটার দেখাশুনাও নিজেই করতেন।❞ [বুখারী-হজ্জ অধ্যায়]

❝তিনি রাসূলুল্লাহর ﷺ মাথাও আঁচড়ে দিতেন।❞ [বুখারীঃ ই'তিকাফ অধ্যায় ]

❝রাসুল ﷺ এর শরীরে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতেন।❞ [বুখারীঃ হজ্ব অধ্যায়]

❝রাসূলের ﷺ কাপড় ধুয়ে দিতেন।❞ [বুখারীঃ গোসল অধ্যায়]

❝শোয়ার পূর্বে রাসূল ﷺ এর মিসওয়াক ও পানি ঠিক করে দিতেন।❞ [মুসনাদে আহমাদঃ ৬/৫৪].

❝রাসূল ﷺ এর মিসওয়াক পরিষ্কার করে দিতেন।❞ [আবূ দাউদঃ তাহারাত অধ্যায়]
❝আম্মাজান আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা'র ঘরে কোনো মেহমান এলে মেহমানের আপ্যায়নের কাজটাও তিনিই করতেন।❞ [আবু দাঊদ শরীফ- শিষ্টাচার অধ্যায়]

আমাদের জানা থাকা দরকার, উম্মুল মুমিনীন আম্মাজান আয়েশা (রা.) উম্মতের মধ্যে এত বড় একজন ফক্বীহ, আলেমা হওয়া সত্ত্বেও নিজ হাতে এসব করেছেন। আবার আমরা এটাও জানি তাঁর সারাজীবন যা সমস্ত মুমিন নারীদের জন্য উত্তম আদর্শ। অথচ বাস্তবিক অর্থে সাংসারিক কাজ কর্মের ক্ষেত্রে উনাকে আমরা কতজন আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পেরেছি?

শারয়ী ওজর থাকলে এবং জীবন পরিচালনার তাগিদে নারী প্রয়োজনে বাইরে পর্দার সাথে কাজ করতে পারবেন, সেটা ভিন্ন বিষয় এবং ভ্যালিড ওজর।

মুসলিম নারীদের মনে রাখা দরকার যে, জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রাপ্ত খাদিজা রা. আয়েশা রা. ফাতিমা রা. এবং অন্যান্য উম্মুল মুমিনীনগণ, নারী সাহাবিয়াগণ গৃহস্থালি কাজ করেই জান্নাতের সর্দারনী হয়েছেন। সাংসারিক কাজকর্ম খাদেমার উপর ছেড়ে দিয়ে, নিজেরা সো কল্ড ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিয়ে তারা জান্নাতি হতে পারেন নি!

ইসলামের বিধান নারীর জন্য নামাজের উত্তম স্থান ঘরের সবচেয়ে ভেতরের ঘরের কোনায়। ফিতনার এই যুগে ফেমিনিজম ও ততোধিক বিষাক্ত দ্বীনি ফেমিনিজম এর ফিতনা হতে নিজেকে বাঁচিয়ে, চূড়ান্ত কামিয়াবির লক্ষ্যে আমাদের বোনদের উচিত উম্মুল মুমিনীনদের ও সাহাবিয়া রাদিআল্লাহু আনহুমাদের আদর্শ অনুযায়ী জীবন গড়ে তোলা।

আল্লাহ তায়ালা বোঝার তৌফিক দান করুক।

প্রকাশ থাকা আবশ্যক যে, মানবজাতির সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই হল আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করা। আর ঘরের কাজ করা নারীদের জন্য ইবাদত স্বরূপ। উম্মুল মুমিনীন এবং সাহাবিয়া রাদিআল্লাহু আনহাদের সুন্নাহ স্বরূপ।

❝রাসুল ﷺ ঘরে রান্না করেছেন এমন কোন বর্ণনা কোথাও নেই।

রাসুল ﷺ যেসকল কাজে পরিবারকে সাহায্য করেছেন তা পুরুষসুলভ কাজ ছিল। সেজন্য আমাদের ভালো করে বুঝে নেওয়া দরকার, রান্না-বান্না এবং সন্তান প্রতিপালনের দায়িত্ব একান্তই নারীর। স্বামী সাহায্য করলে সেটা তার একান্ত অভিরুচি। এসব কাজ করা সুন্নাহ তো নয়ই উপরন্তু তিনি শারয়ীভাবে এসব করতে বাধ্যও নন।❞

এতদ আলোচনা পরবর্তীতে এখন প্রশ্ন হচ্ছে,

জান্নাতের সরদারনী যদি, স্বামীর ঘরে যাতা পিষে হাতের ছাল তুলে ফোস্কা ফেলে দিতে পারেন! তাহলে খাদেমা চাওয়ার আমি কে? এরপরেও যদি খাদেমার আশায় আমরা বসে থাকি, তাহলে এই লজ্জা আমরা রাখিবো কোথায়?

18/04/2022

কেউ যদি কদরের রাতে আমল করতে চান, এই নিয়মে করতে পারেন...

১। রাত দশটার পর থেকে টিভি বা মোবাইল দেখা থেকে বিরত থাকুন।

২। বেশি গরম লাগলে গোসল করুন ও পরিষ্কার পোষাক পরিধান করুণ।

৩। কোরআন পড়তে পারলে ১২ টার আগ পর্যন্ত কোরআন পরুন।

৪। বেশি বেশি নফল আর হাজতের নামাজ পড়ুন।

৫। রাত ১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত জিকির করুন। যেমনঃ-
(১) সুবহানাল্লহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লহু আকবার। (১০০ বার করে)

(২) লা ইলাহা ইল্লাল্লহ (২০০ বার)

(৩) আস্তাগফিরুল্লহ (কমপক্ষে ৫০০ বার, যত বেশি সম্ভব হয়)

(৪)বেশী বেশী দুরুদ পড়া।

(৫) সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহি (কমপক্ষে ১০০ বার)

(৬)"লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আ'লা কুল্লি শাইয়্যিন কদির" (কমপক্ষে ১০০ বার)

(৭) দুয়া ইউনুস - "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায্ যলিমীন" ।(যত পারেন)

(৮)"সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লহিল 'আযীম।" (কমপক্ষে ১০০ বার) ।

(৯) "লা হাওলা ওয়ালা কুওওতা ইল্লা বিল্লাহ" বেশি বেশি পড়তে পারেন।

(১০) সূরা ইখলাস যত বেশি পড়া যায়।

(১১) স্যায়েদুল ইস্তগফার পাঠ করা।

৬। রাত ২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত তাহাজ্জুদ পরুন ৮ রাকাত। রুকু ও সিজদায় বেশি সময় ব্যয় করুন।পারলে সিজদায় দোয়া করা।

৭। তাহাজ্জুদের পর তিন রাকাআত বিতরের নামাজ পরুন।

৮। সেহরি খাওয়ার পূর্বেই হাত তুলুন মালিকের কাছে। আপনার প্রয়োজনের সব কিছু খুলে বলুন..একটু চোখের পানি ফেলে বলুন, "মালিক, আমি আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছেই হাত পেতেছি... খালি হাতে ফিরিয়ে দিবেন না.....ইত্যাদি...

৯। সেহরি খান।

১০। ফজরের নামাজ পড়ুন।

উপরের কথাগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিন, যারা আপনার কথা শুনে এ আমল করবে, আপনিও তাদের আমলের সমান সাওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ্।
কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "ভালো কাজের পথ প্রদর্শনকারী আমলকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে, কিন্তু আমলকারীর সাওয়াবে কোনো ঘাটতি হবে না।..." [মুসলিম ২৬৭৪]

রমজানের শেষ দশ দিনের মধ্যে যে কোন দিন শবে কদর হয়ে যেতে পারে। তাই শবে কদরের রাত মিস করতে না চাইলে, বিশেষ করে বিজোড় রাতে এই আমল গুলো করুন।
আল্লাহ্‌ আমাদের আমল করার তৌফিক দিন।আমিন।

14/04/2022

৭-৮ বছর আগের কথা। বৈশাখের আগে এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল,
- বন্ধু তুমি আগে মুসলিম নাকি আগে বাঙালি?

প্রশ্ন শুনে হেসে ফেললাম। বললাম, আগে তুমি বল।
ও বলল,
- আমি আগে বাঙালি....
- বাঙালি বলতে তো এপার-ওপার দুই বাংলাই বুঝায়। তুমি বাঙালি নাকি বাংলাদেশী.....?
- আচ্ছা, আমি বাংলাদেশী... আর সবার আগে আমার বাঙালিয়ানা....। এবার তুমি বল।

আমি বললাম,
- "দেখ, জন্ম হবার পরই কানে আজান শুনেছিলাম। বাঙালিয়ানার মন্ত্র কেউ পড়েনি। এর কদিন পর দুইটা খাসী জবাই করে আকিকা করে নাম রাখা হয়েছিল আতিক। বড় হয়েছি নামাজ, রোজা, ঈদ, কুরবানি, ইফতার, সেহেরি, হজ্ব, যাকাত এগুলো দেখতে দেখতে। আরো ছিল সুন্নতে খৎনা, বিয়ে আর দাফন - জানাজা। এগুলো সবই তো ধর্মীয় সংস্কৃতি।

আর বৈশাখ এলে মেলা বসত। ক্ষুদ্র শিল্পের ব্যবসায়ীরা তাদের পরিশ্রমলব্ধ সব সামগ্রী বিক্রি করতেন। মা-আন্টিরা ভর্তা জাতীয় বিভিন্ন বাংলা খাবারের আইটেম বানিয়ে আশপাশে পাঠাতেন। আর শিশুদের জন্য ছিল বিভিন্নরকম খেলার রাইড।

বড় হয়ে জানলাম, বৈশাখ মানে নাকি আসলে উচ্চমূল্যে পান্তা-ইলিশ কিনে খাওয়া আর লাল-সাদা নতুন পোশাক কিনে সোশাল মিডিয়ায় পোস্টানো।

আরো জানলাম বাঘ, প্যাঁচা, ইঁদুর, ভাল্লুক, ময়ুর এগুলো নাকি আসল মঙ্গলের প্রতীক আর এগুলো নিয়ে শোভাযাত্রা করাতেই জাতির সমস্ত মঙ্গল নিহিত।

এই যে বাঙালিয়ানা, এগুলো দেখছি বছর বছর পরিবর্তনশীল.... কিন্তু আমাদের ধর্মের যে নির্দেশনা সেটা কিন্তু ১৪৪০ বছর ধরে অবিকৃত।"

মজার ব্যাপার হল, সেই বন্ধু এর বছর দুই পরেই সপরিবারে আমেরিকা পাড়ি জমিয়েছিল।

এরপর হতে ওর পরিবর্তনগুলো অবাক হয়ে দেখি। বেশ কিছুকাল ধরে ও সন্তানদের নিয়ে থ্যাংকস গিভিং, হ্যালোউইন, নিউ ইয়ার এগুলোও দেখি পালন করে।

বুঝলাম না, বন্ধু কখন হতে বাঙালিয়ানা ভুলে গিয়ে আমেরিকানো হয়ে গেল!!

বৈশাখ নিয়ে আমার কোন এলার্জি নেই। কিন্তু ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো যে সচেতনভাবে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে, এখানে ভালরকম আপত্তি আছে।
আর সংস্কৃতি এমন হওয়া উচিত যা সকল শ্রেণীর জন্য সহজে পালনীয় হবে। এমন হওয়া উচিত নয় যে, হাজার হাজার টাকার নতুন পোশাক কিনে হাজার হাজার টাকার পান্তা ইলিশ খেতে হবে....

এই লিখা লিখতে লিখতে দেখলাম একটা ইনবক্স এলো,
- বন্ধু, আগামীকাল চারুকলার ছেলেমেয়েরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করে মঙ্গল গ্রহের দিকে রওয়ানা দিচ্ছে, যাবে নাকি!!

আগামীকাল অবশ্য রোজা রেখে পান্তা ইলিশ খাওয়ার সুযোগ নাই। দুপুর ২ টায় বৈশাখের সব কার্যক্রম বন্ধ।
তীব্র রোদে জাতির মঙ্গল করতে গিয়ে নিজের অমঙ্গল ডেকে আনার চেয়ে দুই পাতা কুরআন পড়লে সওয়াব বেশী হবে। ওরা বরং মঙ্গল গ্রহে ঘুরে আসুক।

শুভ নববর্ষ !

বিঃদ্রঃ
সত্যিকার মঙ্গল চাইলে রমজান মাসে বাঙালি মুসলিমদের জন্য কুরআন হাদিসের কিছু বাণী....

ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন’: আল হাদিস। ‘রোজাদারের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়’: আল হাদিস। ‘রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়’: আল হাদিস। ‘রমজান জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল’: আল হাদিস।

‘রমজান জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ’: আল হাদিস। ‘রমজান গুনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম’: আল হাদিস। ‘রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য সুপারিশকারী হবে’: আল হাদিস।

‘রোজার পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন’: আল হাদিস।

08/04/2022

যখন আপনি কন্টিনিউয়াসলি গুনাহ করতে থাকবেন, এক সময় আপনার বড় কিংবা ছোট কোন গুনাহকে আর গুনাহই মনে হবে না।

হয়তো নামাজে দাঁড়ানো হবে কিন্তু সেই নামাজ হবে অন্তঃসারশূন্য। কয়েক মিনিট রবের সামনে দাঁড়ানো অনেক ভারী মনে হবে। দেখবেন সারাদিন কত সময় অনর্থক কাজে ব্যয় করছেন কিন্তু কয়েক পৃষ্ঠা কুর'আন তিলাওয়াতের জন্য সময় বের করতে পারছেন না। এক ফাঁকে মাসনুন যিকির গুলো করা দরকার তাও যেন মন সায় দিচ্ছে না।

কোমল হৃদয়ের আপনার এক সময় আল্লাহর ভয়ে চোখে অশ্রু ঝরতো। এখন আর আল্লাহর দরবারে হাত তোলার, আল্লাহর ভয় আর ভালোবাসায় দু ফোঁটা অশ্রু ফেলানোর ফুরসত হয়ে উঠে না।

এমন একটা সময়ে আপনি পড়ে থাকেন যে, গুনাহগুলোকে আপনার কাছে তৃপ্তিময় মনে হয়। গুনাহগুলোকে আপনার শান্তি মনে হয়। অথচ আপনি মানতে চান না আপনি গুনাহের মধ্যে নিজেকে ঢেলে দিয়েছেন। আর আপনি আপনার রবের সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে ফিরে আসতে পারবেন না। কিন্তু আপনি আপনার রবের সাহায্যও চান না। কারন সেই ইচ্ছেটাও আপনার হয়না, কিংবা সেই ইচ্ছেটা হলেও অন্তর থেকে সেই চাওয়াটা আসেনা।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,
مَنۡ یَّشَاِ اللّٰہُ یُضۡلِلۡہُ ؕ وَ مَنۡ یَّشَاۡ یَجۡعَلۡہُ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ

আল্লাহ যাকে চান, তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান তাকে সরল পথে অটল রাখেন। (সূরা: আন’আম : ৩৯)

সুতরাং আল্লাহর ইচ্ছায় মানুষ হেদায়েতপ্রাপ্ত অথবা পথভ্রষ্ট হয়। কিন্তু তাই বলে কি আল্লাহ এমনি এমনিই মানুষকে হেদায়েত দেন অথবা পথভ্রষ্ট করেন? নিশ্চয় না। যদি আল্লাহ বিনা কারণেই এক বান্দাকে হেদায়েত দিত ও অপর বান্দাকে পথভ্রষ্ট করত তাহলে এটা হতো অত্যাচার বা জুলুম। কিন্তু আল্লাহ জুলুমকারী নন। তাই আল্লাহর ইচ্ছায় হেদায়েত বা পথভ্রষ্ট হওয়া নিয়ে মুমিন ও মুসলিমদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। মহান আল্লাহ বলেছেন,
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَظۡلِمُ النَّاسَ شَیۡئًا وَّ لٰکِنَّ النَّاسَ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ

নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি কিছুমাত্র যুলম করেন না; বরং মানুষই নিজদের উপর যুলম করে। (সূরা: ইউনুস : ৪৪)

যতক্ষন পর্যন্ত গুনাহ গুলোকে আপনার কাছে গুনাহ মনে না হবে, ততদিন আপনি ফিরে আসতে পারবেন না। যখন থেকে উপলব্দি করবেন আপনি গুনাহে লিপ্ত; আপনি গুনাহ করছেন। এবং তখন থেকে যদি সেই গুনাহ পরিত্যাগ করতে একটু পরিমানও চেষ্টা চালিয়ে যান, এবং চেষ্টা করতেই থাকেন। তবে সয়ং আল্লাহ আপনার জন্য অনেক পথ খুলে দিবে। আপনাকে সাহায্য করবে।

তাই প্রথমত হেফাজত করুন নিজের দৃষ্টির। এরপর নিজের নফসের। এই দুইটা যদি হেফাজত করা শিখে যান; দেখবেন বাকি গুনাহগুলো আপনাকে ছেড়ে দিতে শুরু করবে। কারন দৃষ্টি আর নফসই আপনাকে সব ধরনের গুনাহের দিকে ধাবিত করে। এর ধারাই শয়তান আপনাকে প্ররোচিত করে। তাই সাহায্য চেয়ে যান আল্লাহর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

03/04/2022
31/03/2022

আলেম হয়েও “বিয়ের” উদ্দেশ্যে একজন স্কুল পড়ুয়া মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম, কিছু নাস্তা খেয়ে মেয়েকে আনা হলে সালাম ও কালাম তথা কথাবার্তা শেষে প্রশ্ন ছুড়লাম–
আচ্ছা.. আপনার কেমন ছেলে চাই?
মেয়েটি উত্তর করলো যে, আমি “শুধু একজন প্রকৃত দ্বীনদার ছেলে চাই, যিনি আমাকে ইসলামের সঠিক পথে চলতে সাহায্য করবেন, এছাড়া অন্য কিছু চাওয়ার নেই।”
মনে মনে প্রশংসার ঢেকুর তুলে শুকরিয়া আদায় করে বললাম আপনার আকাঙ্ক্ষাটা একেবারে স্বচ্ছ।
কিন্তু প্রকৃত দ্বীনদার ছেলেকে সহ্য করার ক্ষমতা নিজের মধ্যে তৈরি করেছেন?
মেয়েটি আশ্চর্যান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, এটা আবার কেমন প্রশ্ন..!
আমি বললাম হুম এটাই প্রশ্ন, এমনকি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

আপনি কি জানেন যে, যারা প্রকৃত দ্বীনদার হয়, তাদের সাথে পরীক্ষা স্বরূপ হাজারো দুঃখ-কষ্ট জড়িত থাকে?
আল্লাহ তাদের অনেক ভালোবাসেন দেখেই বেশি বেশি পরীক্ষা করে থাকেন।
আর প্রকৃত দ্বীনদার লোকেরাও পরীক্ষার সময় ধৈর্যের মতো তিক্ত স্বাদকে সন্তোষপ্রদ আহার্য হিসেবে আস্বাদন করে থাকেন।
তারপর কিছু প্রকৃত দ্বীনদার মানুষের ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তাকে শুনালাম।

আপনি নিশ্চয়ই ইমামে আজম আবু হানীফা (রহ.) এর কথা শুনেছেন, যিনি প্রকৃত দ্বীনদার ছিলেন।
কিন্তু সঠিক পথে অটল থাকার কারণে তাকে পরিশেষে জেলে মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে।
ইমাম মালেক (রহ.) তিনিও চার মাযহাবের এক মাযহাবের ইমাম।
যিনি নবীজি (সা.) কে এতো ভালোসতেন যে, নবীর সম্মানের কারণে নবীর মদীনা শহরে জুতা পায়ে পরে হাঁটতেন না।
তিনি মনে করতেন, এটা নবীর শহর এই শহরে নবী শুয়ে আছেন সুতরাং আমি মালেক কীভাবে এই শহরে জুতা পায়ে দিয়ে হাঁটি?
কিন্তু সেই ইমাম মালেক (রহ.) সত্যের পথে অটল থেকে মাসয়ালা দেয়ার কারণে দুশমনরা তাকে মদীনা শহরে জুতার মালা গলায় পড়িয়ে হাঁটিয়েছে।
এমনকি পরিশেষে তাকেও কারাগারে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।

আরো অনেক ইতিহাস তুলে ধরা যাবে প্রকৃত দ্বীনদার মানুষের কষ্টের ইতিহাস।
আমার মুখনিঃসৃত কাহিনী শুনে মেয়েটির চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছিলো।
সত্যিকারের গল্পদুটো মেয়েটিকে এতটাই আঘাত করলো যে, মেয়েটি কিছুটা শব্দ করেও কান্না শুরু করেছিলো।
তার নিষ্পাপ চোখের কান্না আমাকে ভীষণভাবে বিমোহিত করেছে।
কান্না শেষ করে বললো যে, আসলে আমি কখনও ওরকম করে ভাবিনি।
তবে হ্যাঁ ইন–শা–আল্লাহ ওভাবেই প্রস্তুতি নেব এবং নিজের মধ্যে দ্বীনদার মানুষকে গ্রহণ করার যোগ্যতা তৈরি করবো।
আমি বললাম জি অনেক অনেক শুকরিয়া।
আচ্ছা আপনি কোন পর্যন্ত পড়েছেন.?
উত্তর : অষ্টম শ্রেণি।
কুরআন শুদ্ধ করে পড়তে পারেন?
উত্তর : জি না...
তবে অনেক কষ্ট করে কারো কাছ থেকে ৪ টি সূরা মোটামুটি শুদ্ধ করতে পেরেছি।
শুদ্ধ করে কুরআন শেখার অনেক আগ্রহ ছিলো, কিন্তু আমার পরিবারে ওরকম পরিস্থিতি ছিলোনা তাই শেখা হয়নি।
অবশ্য আগ্রহটা এখনও তীব্রই রয়ে গেছে।
আমি বললাম মা–শা–আল্লাহ আপনার আগ্রহের কথা শুনে বেশ খুশি হয়েছি, যাক সমস্যা নেই।
আল্লাহ যদি কবুল করেন তাহলে আমি নিজেই আপনাকে কুরআন শিখাতে পারবো।
তাছাড়া আমার অনেক ইচ্ছে যে, আমি যাকে বিয়ে করবো তাকে আমি নিজেই কুরআন হাদীস এবং দ্বীনের প্রয়োজনীয় সব কিছু শিক্ষা দিবো।
এতে আল্লাহর কাছে অনেক প্রতিদান পাবো এবং স্ত্রীর অকৃত্রিম ভালোবাসাতো পাবোই....।
আচ্ছা আমি আপনাকে আরেকটা প্রশ্ন করতে পারি?
মেয়ে... জি হ্যাঁ অবশ্যই।
আমি আপনাকে মোহর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে চাচ্ছি!
মেয়ে বললো— জি মোহর কী?
ওহ দুঃখিত.... আসলে মোহর (مهر) হলো আরবি শব্দ, এর অর্থ হলো বিবাহের সময় কনের দাবিকৃত অর্থ বা সম্পদ যা বরের পক্ষ থেকে কনেকে প্রদান করতে হয় ।
মেয়ে বললো যে, জ্বি এ-সম্পর্কে আমার বাবার সাথে কথা বললে ভালো হয়, এ সম্পর্কে আমার পরিবার যে সিদ্ধান্ত নিবে আমি মেনে নিবো।
আমি বললাম শোনেন!! মোহর জিনিসটা পুরোটাই আপনার হক, আল্লাহ আপনার জন্যই নির্ধারণ করেছেন।
যেটার প্রাপ্য অধিকার শুধু আপনারই।
আপনি যদি চান যে, আপনি নিজেকে পাঁচ লাখ কিংবা দশ লাখ টাকা মোহরের বিনিময়ে বিয়ে দিবেন তাহলে যে আপনাকে বিয়ে করতে চাইবে তার এই টাকা পরিশোধ করার চুক্তি করতে হবে এবং পরিশোধও করে ফেলতে হবে।
আবার যদি আপনি চান যে, ইসলামের সর্বনিম্ন নির্ধারিত মোহর ধার্য করবেন তাও হবে।
কিংবা আপনি মোহর ধার্য করে পুরোটা মাফও করে দিতে পারেন এটা সম্পূর্ণই আপনার ব্যাপার।
তাছাড়া মোহর জিনিসটা ছেলে মেয়ে দুজনে মিলে নির্ধারণ করলেই ভালো হয়।
আমিও তাই ভাবছি!!

আপনি নিজে আপনার মোহর নির্ধারণ করুন!
যদি আমার সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনাকে বিয়ে করার জন্য হ্যাঁ বলবো।
আর যদি সামর্থ্য না থাকে তাহলেতো ফিরেই যেতে হবে।
তাছাড়া আমি কখনও এরকমটি চাইবোনা যে, আমি কোথা হতে ঋণ করে আপনার মোহর পূর্ণ করবো।
বরং আমার যা সাধ্য আছে তা যদি আপনার ধার্যকৃত মোহরকে পুরা করতে পারে তাহলেই হ্যাঁ বলবো এবং বিয়ের পরেই মোহর পূর্ণ করে ফেলবো, ইন–শা–আল্লাহ।
তাকে ভাবনার জগতে হারিয়ে যেতে দেখে বললাম যে, আচ্ছা ঠিক আছে আপনি বরং ভাবেন, এবং আমাকে বলুন..!
আর হ্যাঁ আপনি যদি চান তাহলে কিছুদিন সময় নিয়ে ভেবে আপনার সিদ্ধান্তটি আমাকে জানাতে পারেন।
পরে আমি আমার সামর্থ্যের সাথে মিলিয়ে আপনাকে হ্যাঁ অথবা না বলবো।
মেয়েটি বললো যে, আমার ভাবা লাগবেনা আপনি বরং বলুন যে ইসলামে সর্বনিম্ন মোহর কত?
তার ওরকম বাঞ্ছা দেখে আমি কিছুটা অবাক হয়ে গেলাম।
পরিশেষে তাকে ইসলামের সর্বনিম্ন মোহরের কথা জানালাম। (৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা।)
সে হুট করে বলেই দিলো যে, ঠিক আছে তাহলে আমার মোহর তাহলে ৪ হাজারই।
তার মুখে অমন অনাকাঙ্ক্ষিত কথা শুনে, আমি কিছুক্ষণের জন্য নিশ্চুপ, নিথর, নির্বাক হয়ে রইলাম।
তাকে শত বুঝানোর পরেও ৪ হাজারের উপরে রাজি করাতে পারলাম না।
পরিশেষে সে আমাকে একথাই জানালো যে, আপনি যেহেতু বলেছেন এটা আমার ইচ্ছে তাহলে এখন আবার বাড়ানোর জন্য পিড়াপিড়ি করছেন কেন?
আমি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই বলেছি।
তার মুখনিঃসৃত কথাগুলো আমাকে মুগ্ধতার সাগরে ভাসিয়ে অনেকদূর পর্যন্ত নিয়ে গেলো।
অবশেষে আমি হৃদয়ের অতল গহ্বর থেকে শুকরিয়া আদায়ে আলহামদুলিল্লাহ বললাম।

(লিখাটি বাস্তবতার নিরিখেই লিখা)

31/03/2022

”আমি যদি চাকরি না করতাম তাহলে আমার অবস্থাও তোর নানীর মত হতো। সারাদিন বুয়ার মত পাতিল মাজতাম, কতগুলা বাচ্চার জন্ম দিতাম আর স্বামীর পায়ে পড়ে থাকতাম।”

”এভাবে বলা কি ঠিক মা? নানীও তো তোমার মা, তোমরা তার সন্তান।”

আমার কথা শুনে মা একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। কিন্তু মাকে আমি অপ্রস্তুত করতে চাইনি। কিন্তু মা আমার থেমে যাবার পাত্রী না। আবার সেই কথাগুলো বলতে থাকলো।

”কিন্তু এটাই বাস্তবতা। আমি চাই তুই আমার মত হবি। আমি কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। তোর নানা আমাকে পড়াতে চায়নি। চেয়েছিলো খুব ছোটকালে বিয়ে দিয়ে দিতে।”

”ঠিকাছে মা, আমি অনেক পড়াশোনা করব কিন্তু অপ্রয়োজনে চাকরি করতে চাইনা।”

”একদিন বুঝবি চাকরি কতটা দরকার। আরো বড় হয়ে নে।”
কথাগুলো বলতে বলতে মা অফিসের জন্য বেরিয়ে গেলো।

মায়ের কষ্ট আমি বুঝি। ফলে খুব একটা কথা বাড়ানোর সাহস হয়না আমার। মা নিজের চোখে নানীর উপর অত্যাচার হতে দেখেছে। স্ত্রী বা একজন নারীর যে অধিকার ইসলাম দিয়েছে তা সমাজ নানীকে দেয়নি। ঠিক তেমনি আমার মায়েরও অধিকার ছিলো পড়াশোনা করবার। অপরিনত বয়সে জুলুমের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া ও দ্বীনের জ্ঞানের অভাবেই হয়ত মা বিয়েকে এত খাটো করে দেখছে।

মূল সমস্যাটা হলো, আমাদের নোংরা সমাজটা ইসলামকে ব্যাবহার করছে। ইসলামের মুখোশ পরে তারা অন্যায় করছে ভেতরে ভেতরে। যদি সত্যিকারের ইসলামের বাস্তবায়ন থাকতো তাহলে আমার মা কখনো বিয়ের মত এত সুন্দর একটা সম্পর্ককে ছোট করে দেখতো না। ইসলাম থাকলে আজ নারীরা হীরের মত দামী হত। কোনো নারীবাদের জন্ম হতো না এখানে।
...

মায়ের সাথে আজকাল ছোটখাট কারনেই আমার তর্ক বাধে। অনার্স শেষ করেছি মাত্রই। মা চাচ্ছে চাকরি করাতে আর আমি চাচ্ছি বিয়ে করতে। মা বিয়ের কথা শুনলেই হেসে উড়িয়ে দেয়। মেয়ে হয়ে লজ্জার মাথা খেয়ে তবুও একটু বুঝাই। কোনো কাজ হয়না। এই তো আজ সন্ধ্যায় মা একটা চাকরির অফার নিয়ে এলো। আমিতো নিষেধ করে দিলাম, তাতেই যত অশান্তি।

”আমি তোর ভালো চাই বলেই তোকে চাকরির পর বিয়ে দিতে চাই। আজকাল পুরুষ মানুষের কোনো গ্যারান্টি নেই। তোর বাবাকে তো দেখেছিস কি করেছে।”

”মা! আমি যাকে বিয়ে করব সে দ্বীনদার হবে, আর তাকে যাচাই না করে বিয়ে করবো না। এরপর যদি সে বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে পরেরটা পরে দেখবো। আমার আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে।”

”বিশ্বাসের পাশাপাশি নিজে কিছু করা লাগে। তুই তো সব ভাগ্যের হাতে ছেড়ে বসে আছিস। বিয়ের একটা ভালো উদাহরন দিতে পারবি আমাকে?”

”আমাদের নবিজী ﷺ, সাহাবারা তারা কি ভালো স্বামীর উদাহরন নন?”

”সেসব চলে গেছে। আর তাদের যুগেও ডিভোর্স, ঝগড়া এসব হয়েছে। এজন্য প্রস্তুত থাকা লাগে।”

”মা আমিতো আইশা (রা) না, আমি ভুলে ভরা মানুষ। তাই আমার স্বামীর ভুল থাকতেই পারে। আর তালাক হলে সে পরে দেখব।”

”তুই কেন চাকরি করতে চাস না? পর্দা করে বাইরে কাজ করতেও তো ইসলাম মানা করে না।”

”হ্যা! তবে আমি যেরকম পর্দা করি সেরকম পর্দা করে চাকরি করার মত পরিবেশ নেই। একজন ছেলে কলিগের সাথে পাশাপাশি বসে, তার সাথে হাসি-ঠাট্টা করে আমি টাকার পেছনে ছুটবো না।”

”তুই কি আমাকে কটাক্ষ করলি? আজ আমি চাকরি না করলে তোকে কে খাওয়াতো?”

মা খুব ইমোশনাল হয়ে পড়লো। আমি মাকে কষ্ট না দিতে চেয়েও দিয়ে ফেললাম। জানিনা আমার কী হবে। তবে দিনরাত রবের কাছে একটাই দুয়া করি, আমার মা যেন হিদায়াত পায়।
...

আজ সকালে নানী ফোন করেছে। আমাকে বিয়ে দিতে বলছে বার বার। কিন্তু মা রাজি না। এটা নিয়ে দুজনের খুব কথা কাটাকাটি হলো। বিয়ের জন্য আমার তাড়া নেই। আল্লাহ যখন ভালো মনে করবেন তখন আমার বিয়ে দিবেন। আমার যত চিন্তা মাকে নিয়ে।

কাল রাতের পর মা আমার সাথে কথা বলেনি। কিছু না খেয়েই অফিসে চলে গেছে। আগে অনেকবার এমন কথা কাটাকাটি হলেও মা এমনটা আগে কখনো করেনি।

বিকেলে বাসায় এসে মা আমাকে তার রুমে ডাকলো। রুমে ঢুকে দেখলাম সামনে কতগুলি বায়োডাটা।

”এখান থেকে যে ছেলেকে পছন্দ হয় তাকে বিয়ে করে ফেল। আমার আর আপত্তি নেই।”

মায়ের মুখে এমন কথা শুনে আমি অপ্রস্তুতের মত দাড়িয়ে থাকলাম। কি করব বুঝতে পারছি না। মা আমার হাত ধরে বসিয়ে বায়োডাটাগুলো আমার হাতে দিলো। এরপর চা আনার কথা বলে রান্নাঘরে চলে গেলো।

বায়োডাটাগুলো চেক করে দেখলাম, ছেলেরা সবাই দ্বীনদার। নিশ্চয়ই এসব বায়োডাটা আমার নানী, মামাদের মাধ্যমে যোগাড় করেছে।
...

এক মাসের মাথায় আমার একজন ভালো মানুষের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো। তাকে আমি চিনতাম। তিনি আমার ভার্সিটির সিনিয়র। সেদিন বায়োডাটাগুলোর মাঝে তার বায়োডাটা দেখেই আমি অবাক। তার দ্বীনদারিতা ও পরহেযগারি নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিলো না।

কিন্তু মা কেন এত তাড়াহুড়ো করছে তা তখনো আমার মাথায় ঢুকছিলো না। আমার বিদায়ের দিন মা আমার কাছে আসলো না। মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদা হলো না আমার।

বিয়ের তৃতীয় দিন বাপের বাড়ি আসার নিয়ম আমাদের। কিন্তু মা বললো, তিনি এখন জামাইকে নিমন্ত্রন করতে প্রস্তুত নন। এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মা আগের মত অভিমান করেই রইলেন। এরপর আমার হাতে আসলো মায়ের একটা চিঠি।

”প্রিয় আদিবা,
তুই একদম তোর বাবার মত জেদী হয়েছিস। তোর বাবা যেমন কাজের বুয়ার হাত ধরে আমাকে ছেড়ে গেলো, তেমনি তুইও চলে গেলি। আমি সবসময় তোর ভালো চেয়েছি। তোর যখন যা লাগে সব দেয়ার জন্য আমি দিনরাত খেটেছি। তোকে বায়োডাটা দেখানোর আগের দিন তোর বাবা ফোন করেছে। বলেছে, আমার এই চাকরিই নাকি তার পরনারী আসক্তির কারন ছিলো। আমি তাকে সঙ্গ দেইনি বলেই সে এমনটা করেছে। কিন্তু আমি মনে করিনা আমার নিজের সুখ চাওয়াটা কোনো ভুল ছিলো। সে বলেছে, তুইও নাকি আমার এই চাকরির কারনে আমার থেকে দূরে চলে গেছিস। এটাই কি সত্যি?”

মায়ের চিঠিটা আমার জন্য একটা শক ছিলো। মা আমাকে ভুল বুঝেছে। তবে কি আমার আজ মাকে আমার সব গোপন কথা বলা দরকার? আনমনে আমার ডায়েরীতে মায়ের চিঠির উত্তর দিতে বসলাম।

”প্রিয় মা আমার!
আমি তোমাকে হয়ত সবথেকে বেশিই ভালোবাসি। কিন্তু জানো এই ভালোবাসা আমাকে আল্লাহ শিখিয়েছেন। আমি দ্বীনে না ফিরলে আমার জীবনে তোমার গুরুত্ব বুঝতেই পারতাম না।
বাবা আর তুমি সারাদিন অফিসে থাকতে। আমার দিনগুলো কাটতো একা একা। খুব ডিপ্রেশনে পড়তাম যখন সমস্যা শোনার কাউকে পেতাম না। বুয়ার কাছেই বড় হয়েছি আমি। খুব কষ্ট হতো যখন বান্ধবীদের মায়েদের দেখতাম তারা তাদের সন্তানকে নিজ হাতে খাইয়ে দেন। তোমরা দুজনে বাসায় থাকলেও অফিসের কাজই করতে।

আর আমি মানসিক চাপ থেকে উদ্ধার পেতাম পড়াশোনা আর পরীক্ষার মাঝে ডুবে গিয়ে।
সত্যিই খুব দূরে চলে গিয়েছিলাম তোমাদের থেকে। তোমাদেরকে আমার শত্রু ছাড়া আর কিছু মনে হতো না। একসময় দ্বীনে ফিরলাম, বাবাও চলে গেলো।। দ্বীনে না ফিরলে হয়ত বাবাকে আমি ঘৃনাই করতাম।

মা! আমি চাইনা আমার সন্তানেরা আমার মত একা বড় হোক। ঠিক যেমন তুমি চাও আমি চাকরি করি। আমাদের জগৎটা আলাদা কিন্তু ভালোবাসা অভিন্ন।”

এটুকু লিখেই আর লিখতে পারিনি। অশ্রুতে চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। এই চিঠিটা মাকে কখনো পাঠাইনি।

জোর করেই মায়ের সাথে যোগাযোগ রাখতাম। বাবাকে আর খুজে পাইনি। মা একসময় দ্বীনে ফিরে আসেন। এখন তিনি আমার সাথেই আমার সংসারে থাকেন। আমার সন্তানদের সাথে মা তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছেন।
...
গল্প: তৃতীয় প্রজন্ম

29/03/2022

মালেক ইবনে দিনার (রহঃ) একবার বাজার দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখেন অসাধারণ সুন্দরী একজন দাসীকে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। তখনকার সময়ে বাজারে স্বাভাবিক দাস-দাসী বেচাকেনা হত। বিত্তশালী দাস দাসী ক্রয় করতো। তখনকার সময়ে দাস দাসীদের কারো কারো মূল্য ১ লক্ষ দিরহামও হত। মালিক ইবনে দিনার (রহঃ) সেই দাসীর মালিকের সামনে গিয়ে সরাসরি দাসীকে বললেন,
-‘আমি তোমাকে কিনে নিতে চাই।’
এ কথা শুনে সেখানে উপস্থিত সবাই ও দাসী হেসে ফেলল। এমনকি দাসীও বলল,
-‘আপনার মত গরিব লোক আমাকে কি করে কিনবেন?’
দাসীর মালিক ঠাট্টাচ্ছলে বলল,
-‘এ দাসীর মূল্য আপনি কত দিতে পারবেন?’
মালেক বিন দিনার (রহঃ) বললেন,
-‘কত দাম দেব। আমি খুব সস্তায় কিনতে চাই।’
দাসীর মালিক বলল,
-‘বলুন কত দাম দেবেন?’
মালেক বিন দিনার (রহঃ) বললেন,
-‘আমার কাছে এ দাসীর মূল্য হচ্ছে খেজুরের চুষে খাওয়া দুটি দানা।’
এই উত্তর শুনে দাসীর মালিক ও উপস্থিত সবাই উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।

দাসীর মালিক বলল, ‘এটা কি কোনো দাম হল?’
মালেক ইবনে দিনার (রহঃ) বললেন,
-‘যদি এই দাসী সুগন্ধি না মাখে তাহলে ঘামের গন্ধ তার শরীর দুর্গন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন যদি দাঁত পরিষ্কার না করে তাহলে কাছে বসা যায় না। প্রতিদিন যদি মাথা না আঁচড়ায় তাহলে তার মাথায় উকুন অন্যের মাথায় যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কয়েক বছর পর সে বৃদ্ধ হবে। তখন সে একদম অকেজো হয়ে যাবে। এছাড়াও তার দুঃখ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা, রয়েছে হিংসা, ঘৃণা, ক্রোধের মিশ্রণ। সে নিজের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য তোমাকে মোহাব্বত করে। তার এই ভালোবাসা অকৃত্রিম সে ভালোবাসার অভিনয় করে।

তারপর মালিক ইবনে দিনার (রহঃ) আরো বলল,
-‘আমার কাছে এক দাসী আছে তাকে খরিদ করবে?’
দাসীর মালিক বলল, ‘কোথায় সে দাসী?’
তিনি বললেন,
-‘সে দাসী মাটির তৈরি নয় বরং মেশক, আম্বর, জাফরান এবং কাফুরের তৈরি। তার চেহারায় যে নূর রয়েছে সে আল্লাহর নূরের অংশ। হাদিসে বলা হয়েছে তার চেহারা যদি দুনিয়ার অন্ধকারে দেখানো হয় তাহলে গোটা পৃথিবী আলোকিত হয়ে যাবে। তার চেহারার সামনে সূর্যের আলো ম্লান হয়ে যায়। সে যদি সমুদ্রে থুতু নিক্ষেপ করে তাহলে সমুদ্রের সব পানি মিঠা হয়ে যাবে। সে যদি নিজের আঁচলের দোলা দেয় তাহলে গোটা পৃথিবী সুবাসিত হয়ে যাবে। সে জাফরান এবং মেশকের বাগানে প্রতিপালিত হয়েছে। তাসনিম ঝরনার পানি পান করেছে। তার ভালবাসা খাঁটি। সে ভালোবাসায় কোনো কৃত্রিমতা নেই। সে একান্ত অনুগত এমকি আনুগত্যে কোনো ফাঁকি নেই। তার মনে কোন হিংসা, অহংকার, ক্রোধ নেই। তার বয়স বাড়বে না, সে সব সময় থাকবে সুন্দরী এবং যুবতী । তার কখনো মৃত্যু হবে না। এবার বল আমার দাসী উত্তম নাকি তোমারে দাসী উত্তম?’
দাসীর মালিক বলল
-‘আপনি যে দাসীর কথা বলেছেন নিঃসন্দেহে সে অতি উত্তম। কিন্তু তার মূল্য কত?’
তিনি বললেন,
-‘তার মূল্য বেশি নয়! তাকে পেতে হলে কেবল আল্লাহ’কে সন্তুষ্ট করতে হবে।’

একথার পর দাসীর মালিকের অন্তরে পরিবর্তন আসলো। সে দাসীকে বলল ‘শুনলে তো উনি কি বলেছেন? যাও তোমাকে আল্লাহর নামে আজাদ করে দিলাম? তুমি ছাড়া যত দাস-দাসী রয়েছে আমি সবাইকে আজাদ করে দিলাম। আমার সমুদয় ধন-সম্পদ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিতরণ করে দেব।’

এরপর সে সাধারন এবং অনাড়ম্বর জীবনকে বেছে নিলো। তিনি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করলেন। আল্লাহ আমাদেরকেও দুনিয়ার আসক্তি ও কুপ্রবৃত্তি দূর করে আখিরাতের মোহাব্বত ও ইবাদাত করার সক্ষমতা দান করুক। আমিন।

[মাওলানা তারিক জামিল রচিত ‘তাজা ঈমানের সত্য কাহিনী’ থেকে সংগৃহীত]

28/03/2022

তুমি মেয়ে, তুমি বলছো সে তোমার দ্বীনি ভাই। তুমি ছেলে, তুমি বলছো সে তোমার দ্বীনি বোন। কিসের দ্বীনি ভাই তোমার? কিসের দ্বীনি বোন তোমার? যেখানে তুমি ছেলে, তোমার নজর হেফাজত করতে বলা হয়েছে; পর-নারী অর্থাৎ নন মাহরাম নারীর সাথে অহেতু কথা বলায় তোমার নিষেধ রয়েছে। যেখানে তুমি মেয়ে তোমার ১৪ জন পুরুষ ব্যতিত অন্যদের সাথে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কথা বলায়ও তোমার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেখানে কোথাকার কোন এক মানুষ, কোথাকার এক নন-মাহরাম তোমার দ্বীনি ভাই/বোন কিভাবে হয়?

তুমি রিলেশনে থেকে তোমার যেনার সঙ্গীর কথায় নামাজ পড়ছো, তোমার ব্যাভিচারের সঙ্গীর কথায় ভালো ভাবে চলছো, তুমি আসলে কার নির্দেশ মানছো? ভেবেছো?
وَ اَنۡ لَّیۡسَ لِلۡاِنۡسَانِ اِلَّا مَا سَعٰی ﴿ۙ۳۹﴾
‘আর এই যে, মানুষ যা চেষ্টা করে, তাই সে পায়।’ [সূরা আন-নাজম, আয়াত : ৩৯]

আলকামাহ ইবনু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে
বর্ণিতঃ আমি ‘উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছিঃ প্রতিটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল, এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে হিজরত হিসেবেই গণ্য হবে। আর যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্যে, সে হিজরত করেছে।
[বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭]

তুমি রবের সন্তুষ্টি চাচ্ছো? নাকি তোমার যেনা-ব্যাভিচারের সঙ্গীর সন্তুষ্টি, তার সঙ্গ? যেনায় লিপ্ত থেকে, একে অপরকে নামাজের কথা বলে ভাবছো তোমরা ব্যাভিচার, গুনাহে লিপ্ত নও? হে প্রিয় বোন আমার, প্রিয় ভাই আমার; তোমারা যেনায় লিপ্ত, ব্যাভিচারে লিপ্ত তোমরা কেন তা উপলব্দি করছো না!
তোমরা দ্বীনি ভাই/বোন, দ্বীনি গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড ভেবে দিব্যি দিন কাটাচ্ছো। দাঁড়ি রেখে পাঞ্জাবী-টুপি পরে দ্বীনের নাম কুড়াচ্ছো, বোরখা-নিকাব পড়ে দ্বীনের নাম কুড়াচ্ছো। কেন এই লেবাসদ্বারীতা!! কেন তোমরা ইসলামকে নিজ স্বার্থে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছো? তোমরা কি ভুলে গেছো,

کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ
‘প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।’ [সূরা আল-ইমরান, আয়াত ১৮৫] (প্রথমাংশ)

তুমি কি ভাবছো তুমি মৃত্যু থেকে পলায়ন করতে পারবে? না না, তুমি মৃত্যু থেকে পলায়ন করতে পারবেনা। তুমি যেখানেই যে অবস্থায় থাকো, সময় মত মৃত্যু তোমাকে পাকড়াও করবেই। তুমি যেনায় লিপ্ত থাকো আর ভালো কাজেই থাকো, ঠিক সময়মত মালাকুল মাউত তোমার কাছে আসবেই। কোন অবস্থায় তোমার রূহ কবজ করা হবে ভেবেছো?

মালাকুল মাউত এসে যদি বলে, ‘হে অপবিত্র আত্মা! আল্লাহর রাগ ও অসন্তুষ্টির দিকে বেরিয়ে এসো।’
তখনের অবস্থাটা ভেবেছো? এখনো তোমার লেবাসদ্বারীতা ছাড়ছোনা! এখনো কেন যেনা-ব্যাভিচারের পথ থেকে ফিরছো না? কেন তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসছোনা! ভাবছো মৃত্যু অনেক দূর? না, না; দুইমিনিট আগেও যার মৃত্যু হয়েছে, সে’ও ভাবতো মৃত্যু তো অনেক দূরে!

কয়দিন তৃপ্তির জন্য, মজার জন্য তুমি দ্বীনি ভাই/বোন বানাচ্ছো, গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড বানাচ্ছো? কয় বছর তা থাকবে; যেখানে মৃত্যু অনিবার্য। এরপর কি হবে? তুমি ভাবছো মৃত্যু হলেই সব শেষ হয়ে যাবে!! ভাবছো জান্নাতে যারা যাবে তারা জীবিত থাকবে, আর যারা জাহান্নামে যাবে তারা শাস্তি পেয়ে আবার চিরতরে শেষ মৃত্যু হয়ে যাবে? না কিছুই শেষ হবেনা। তুমি কি জানোনা,
الَّذِیۡ یَصۡلَی النَّارَ الۡکُبۡرٰی ﴿ۚ۱۲﴾ ثُمَّ لَا یَمُوۡتُ فِیۡہَا وَ لَا یَحۡیٰی ﴿ؕ۱۳﴾
‘যে ভয়াবহ আগুনে প্রবেশ করবে। তারপর সে সেখানে মরবেও না এবং জীবিতও থাকবে না।’[সূরা আল-আ’লা, আয়াত : ১২-১৩]

এরপর তো তোমার অন্য এক জীবন শুরু হয়ে যাবে। যেখানে তোমার জন্য অনিবার্য রয়েছে পুরুষ্কার নয়তো শাস্তি। দুনিয়ায় আল্লাহ নেয়ামত সরূপ জীবন যতদিন দিয়েছেন, ততদিন তার সন্তুষ্টির জন্য কিছু করো। তোমার দ্বীনি ভাই/বোন, তোমার দ্বীনি গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড এগুলো শুধুই ধোঁকা, দুনিয়ার চাকচিক্য, দুনিয়ার মোহ, শয়তানের ফিৎনা। তুমি পুরুপুরি শয়তানের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছো; তাই তোমার মনে এসব কাজকে যুক্তি দিয়ে শুদ্ধ করে রেখেছে শয়তান। আর সেই শয়তানই তোমার পরম আপন কেউ।

‘ফিরে এসো রবের নিকট, তোমার রব তোমায় ভুলে যায়নি’

Address

Habiganj
Habiganj Sadar
3332

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কাফেলা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to কাফেলা:

Share

Nearby media companies