12/08/2024
স্বৈরাচারের আয়নাঘর থেকে মুক্ত এক যুবকের জবানবন্দী!
(এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি লিখেছেন মাহদি মাবরুর নামক এক ভাই। এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে হবে না। কারণ আমি নিজেও RAB 1 এর আয়না ঘরের ভুক্তভোগী। সময় পেলে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোও লিখবো পর্ব আঁকারে ইনশাআল্লাহ। আপাতত এই ঘটনাটি সবার জানা দরকার। এই ঘটনা গুলো ব্যাপক প্রচার প্রসার করা দরকার। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সকল আয়নাঘরের কবর রচনা করা দরকার। কারণ আমরা চাই, এভাবে যেন আমাদের আর কোন ভাই নির্বিচারে গুমের স্বীকার না হয়। - মাহমুদুল হাসান গুনবী)
'RAB এর আয়নাঘরে আপনাকে স্বাগতম'
-
পড়ন্ত বিকেলে যখন পীচঢালা রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম। পাশ দিয়ে একটা কালো গাড়ি দ্রুতবেগে অতিক্রম করল। পরক্ষণে আবার মোড় ঘুরে আমার সামনে এসে ব্রেক করল। কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখ বেঁধে গাড়িতে উঠিয়ে দ্রুতবেগে স্থান ত্যাগ করল। চোখ খুললে নিজেকে এক নোংরা জলাশয়ের পাশে দেখতে পেলাম। একজন লোক তড়িঘড়ি করে আমার নাকে-মুখে ভিজা গামছা দিয়ে ঢেকে পানি ঢালতে লাগল। পাশ থেকে একজন বলল, 'গাড়িতে যা করলাম, তা প্রাথমিক আপ্যায়ন ছিল। তাতে তুই মুখ খুললি না, শালা কুত্তার বাচ্চা! এখন তোর বাপ বলবে। পিছন থেকে হাতকড়া পরানো হাতে তিন/চারজন লোক চেপে ধরল, কয়েকজন পায়ের উপর চাপ দিয়ে রাখলো। চোখের সামনে যেন মৃত্যু হাতছানি দিচ্ছে।
কিছুক্ষণ পরপর প্রশ্নবানে জর্জরিত করছে। মনে হল, এই কষ্টের চেয়ে মৃত্যু অনেক সুখকর। আমার অবস্থা দেখে পাশের একজন বলল, ‘কুত্তার বাচ্চার জন্য গরম পানি দরকার’। এই বলে পানি ঢালার সময় আরো বাড়িয়ে দিল। মনে হচ্ছিল, মৃত্যু নিশ্চিত। মৃত্যুর সম্মুখীন হলে শরীরে এত শক্তি কোথা থেকে আসে আল্লাহ ভাল জানেন। আমার শরীরের ঝাঁকুনিতে তিন/চার জন লোক হাত ছেড়ে একে অপরের উপর পড়ে গেল। এভাবে চলছিল জীবন-মরণ পরীক্ষা।
মুমূর্ষ অবস্থায় চোখ বেঁধে নিয়ে চলল অজানা গন্তব্যে। চোখ খুলে নিজেকে খুঁজে পেলাম ঘুটঘুটে অন্ধকারে। ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীর এপাশ-ওপাশ করতে ব্যথা হচ্ছিল। এ অবস্থায় ঘুমানোর ইচ্ছা করছিলাম। এমন সময় বৈদ্যুতিক বাতির ঝাঁঝালো আলোতে ঘুমের সাধ মিটে গেল। সাথে সাথে রুমের ভিতর কয়েকজন সদস্য ঢুকে টেনে তুলল। হাত-পা বেঁধে একটি কাঠের ফ্রেমের মধ্যে হাত ও পায়ের ফাঁক দিয়ে লাঠি ঢুকিয়ে ঝুলিয়ে দিলো। মাথা নীচের দিকে ঝুলছে, পায়ের গোড়ালি ও নিতম্ব একসাথে আটসাঠ হয়ে লেগে আছে।
আগ্রাসী পদক্ষেপে বুটের শব্দতুলে অফিসার গোছের ২জন লোক সাথে কয়েকজন সিপাই নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করল। সবাই ইউনিফর্ম পরিহিত। বুঝতে কষ্ট হলনা এরাই হচ্ছে দেশের কুখ্যাত এলিট ফোর্স (RAB)। অফিসার গোছের লোকটি বিকট শব্দে চেঁচিয়ে উঠল। হাঁটু, পায়ের তলা ও নিতম্বে আঘাতের পর আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে রক্ত ঝরতে লাগল। 'হারামজাদা! এখনো সময় আছে স্বীকার কর, প্রাণ রক্ষা পাবে’। এভাবে কত সময় কাটল বলতে পারি না।
যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখি, টাইলস করা মেঝেতে হালকা বেডের উপর শুয়ে আছি। সেই কর্দমাক্ত স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষ উধাও। কানে মৃদু আওয়াজ এলো। ধমকের সুরে কেউ বলছে- তার সাথে এমন আচরণ করলে কেন? ইত্যাদি- ইত্যাদি। সাথে সাথেই একজন অফিসার পাশে দাঁড়ানো দেখতে পেলাম। সে আমাকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করল। ভাবখানা এমন যে, কেউ আমার সাথে অন্যায় করে ফেলেছে। আমাকে বলল, ‘তোমার কিছুই হবে না, তুমি শুধু আমাদের একটু সহযোগিতা কর। তুমি দেশের নাগরিক, তোমার উপর যে জুলুম করেছে তারও বিচারের ব্যবস্থা আছে।’ নানা কথা বলে আমাকে কনভেন্স করার চেষ্টা করল। অতঃপর অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কঠোর নির্দেশ দিয়ে চলে গেল।
আভিজাত্যের ছোঁয়ায় পরিপূর্ণ কক্ষ দেখে মনে হল কোন অফিস। মানসম্মত খাবার, কত সুন্দর ব্যবহার! যেন পাঁচ তারকা হোটেলকে হার মানাবে। এখন শরীর একটু সুস্থ লাগছে। দুজন যুবক এসে আমাকে অন্য একটি রুমে নিয়ে গেলে। চেয়ারে বসা সেই অফিসারটি সহাস্যে জানতে চাইল আমি কেমন আছি, শরীরের অবস্থা কেমন। সব শুনে বলল, ‘তুমি চিন্তা করো না। তোমার মা-বাবা সবাই ভাল আছে, আর একটু সুস্থ হও তখন বাড়ি যেও। তবে বাড়িতে না গিয়ে বিদেশে চলে গেলেই ভাল হবে। তোমাদের সপরিবারে বিদেশে চলে যাওয়ার সব ব্যবস্থা আমি করে এসেছি, এই দেখ বিমানের টিকেট। পাসপোর্টের ঝামেলা বিশেষভাবে সমাধান করেছি। ঊর্ধ্বতন অফিসারের নিকট আমি তোমার ব্যাপারে সব বলে এসেছি। তাছাড়া নিরপরাধ ও অনুতপ্ত নাগরিকের ব্যাপারে সরকারও আন্তরিক। তুমি নির্ভয়ে আমাকে সব বলতে পার।
এখন যে রুমে বসে আছি রুমটি পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন। তবে চারদিকে হাড়গোড়, কংকাল, ভয়ানক সব নির্যাতনের চিত্র ও উপকরণে সাজানো রয়েছে। দূরের কোনো স্থান থেকে আর্তচিৎকারের শব্দ ভেসে আসছে। সব দেখে ক্ষণিকের সুখ নিমেষে হারিয়ে গেল। তুমি কি ভাবছ? অফিসারটির কণ্ঠ শান্ত। আমার নির্বিকার ভাব দেখে আমাকে নানাভাবে বোঝাতে চেষ্টা করল, ‘তুমি যদি সত্য প্রকাশ করতে না চাও, মনে রেখ সত্য প্রকাশ না করে উপায় নেই। তোমার ও তোমার পরিবারের সুখ-দু:খের বিষয়টি ভেবে দেখার দায়িত্ব তোমার। আমি কথা দিচ্ছি তোমার ভবিষ্যৎ, সব বিষয় আমরা ভেবে দেখব’। এভাবে মিথ্যাকে সত্য হিসাবে স্বীকার করতে চাপ দিচ্ছিল।
আমি সোফার মধ্যে বসে আছি এমন সময় কয়েকজন যুবককে নিয়ে আসা হল। সবার চেহারায় নির্যাতনের ছাপ স্পষ্ট। পূর্বপরিচিত দুয়েকজন ব্যতীত কাউকে চিনতে পারলাম না। দুজন যুবক আমাকে সনাক্ত করল এবং তাদের উত্তর শুনে অফিসারটি সন্তুষ্ট হল। অফিসারটি বলল, ‘দেখ, তোমার ব্যাপারে আমরা সবই জানি। তবুও আমি চাই তুমি তথ্য দিয়ে অনুতপ্ততা প্রকাশ কর। আমাকে কতগুলো ছবি দেখিয়ে, আমার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি প্রমাণ করতে চাইল। সবচেয়ে খারাপ লাগল যখন যুবকেরা ধোঁকায় পড়ে আমার ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিল।
অফিসারটি বললো, ‘ঠিক আছে তোমাকে কিছুই বলতে হবে না, শুধু এই কাগজে সই কর’। আমার 'না বোধক' উত্তরে অফিসারটি স্বমূর্তি ধারণ করল। তার সুন্দর ব্যবহার উবে গেল। আসল চেহারা প্রকাশ পেল। কয়েকজন সিপাহী আমাকে ধরে ফেলল, অন্য একটি চেয়ারে বসিয়ে আটকে দিল। শুরু হল নির্যাতনের নতুন অধ্যায়। মাথা ঘুরতে লাগল। চেয়ারসহ আমি ঘুরছি, মনে হচ্ছে কেউ আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি অজ্ঞানপ্রায়। দফায় দফায় চলল নির্যাতন।
যখন জ্ঞান ফিরল দেখলাম আমি অন্ধকারে পড়ে আছি। একটু অনুভূতি জাগতেই আঁতকে উঠলাম। হাত দিয়ে দেখি পরনে কোন কাপড় নেই। আলো জ্বলতেই অন্য কোথাও সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে নিজেকে আবিষ্কার করলাম। এ অবস্থায় নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলাম না। দু’চোখ বেয়ে অঝোরে অশ্রু ঝরতে লাগল। এলিট ফোর্সের (RAB) কয়েক সদস্য এগিয়ে এসে আমাকে উঠে দাড়াতে বলল। লজ্জায়, অপমানে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।
আবার জেরার উপর জেরা। হাতে পায়ে ইলেকট্রিক শক দেয়া শুরু করল। একজন শয়তান এসে মেটাল ডিটেক্টরের মত একটা যন্ত্র দ্বারা লজ্জাস্থানে ইলেকট্রিক স্পার্ক দিতে লাগল। আল্লাহকে খুব স্মরণ করছি। হায়রে দুনিয়া। এটা নাকি মুসলিমদের দেশ। হঠাৎ করে পেছন থেকে লাথি দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিল। আবারও শক দিতে লাগল, হাত পায়ের আঙ্গুল অবশ হয়ে এল, কালো রং ধারণ করল। দুজন লোক ক্রমাগত আমাকে লাথি মারতে লাগল। শরীরের বিভিন্ন স্থান দিয়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় শরীর কাঁপছে, পানি চাইলে পানি দিচ্ছি বলে গায়ের উপর প্রস্রাব করে দিল।
এরই মধ্যে একজন যুবককে আমার রুমে নিয়ে এলো। ছেলেটি শুধুই কাঁদছে। ওরা চলে গেলে তার সাথে কথা বলতে চেষ্টা করলাম। কান্নার জন্য কথা বলতে পারছিল না সে। আমি তাকে সান্ত্বনা দিতে চাইলে বলল, ‘সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আর সান্ত্বনা দিয়ে কি লাভ।’ বলতে লাগল, তার ভাইকে বাড়িতে না পেয়ে তাকে সাদা পোশাকের কিছু লোক ধরে নিয়ে আসে। নির্যাতন করতে করতে বড় ভাই কোথায় তা জানতে চায়। না বললে কিছুক্ষণ পর মা-বাবা ও বোনকে ধরে নিয়ে আসে। তাদের সামনে আমাকে এবং আমার সামনে তাদেরকে নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পরিবারের একজন আমার কাছে এ ব্যাপারে তথ্য রয়েছে বলে জানায়।
আমি বলতে না চাইলে তারা আমার পোশাক খুলে নেয়। একজন লাথি দিয়ে বাবাকে আমার উপর ফেলে দিয়ে বলাৎকার করতে বলে। নাহলে, মা বোনদের সামনে শ্লিলতাহানীর হুমকি দেয়। বাবার কাপড়-চোপড় আমার চোখের সামনে খুলে নেয়। আমি জানিনা দুনিয়াতে এর চাইতে কঠিন ও ঘৃণিত পরিস্থিতি সম্মুখীন কাউকে হতে হয়েছিল কিনা? আমি আর সহ্য করতে পারিনি। যখন বাবা আঘাতের পর আঘাতে জর্জরিত হয়ে আমার সামনে অসহায়ের মত আসলেন। আমি চিৎকার দিয়ে বললাম ‘আমি সব জানি, সব বলব, শুধু আমার মা বনোদেরকে যেতে দিন।‘ একজন সামনে এসে সব রেকর্ড করে নির্দিষ্ট জায়গায় মেসেজ পাঠালো। তাদেরকে যেতে দিয়ে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।
চোখ দুটো ক্লান্তিতে বুজে আসছে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতে পারি নি। হঠাৎ কে যেন মুখে বুট দিয়ে লাথি মারল, সাথে সাথে পা বেঁধে মাথা নীচের দিক দিয়ে ঝুলিয়ে দিল। হাতে বৈদ্যুতিক শক দিতে আরম্ভ করল। মাথা ঝিমঝিম করছে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে পানি খেতে চাইলাম। অফিসারের অনুমতি নিয়ে পানি দেয়া হল।
এখন আমি অন্য কোথাও আছি বলে মনে হল। পাশে বেশ সুঠাম দেহের দুজন তরুণ পড়ে আছে। হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ঢাকার চেষ্টা করছে। কথা বলার কোনো সুযোগ পেলাম না। যাতে না ঘুমাতে পারি, ঝুলিয়ে রাখল হাতকড়া পরিয়ে। সবার পা ফাঁক করে পেছনে আলাদা আলাদা দু’টো খুঁটির সাথে বেঁধে রাখল। মাথায় ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে অসহ্য ব্যথা অনুভব করলাম। কিছুক্ষণ পর এ অবস্থায় ঘুম আসতে চাইলে ইলেকট্রিক শক দিতে আরম্ভ করল। রাত-দিন এভাবে (রাত-দিন বুঝিনি অনুমান করে হিসাব করতাম) চলতে থাকলে মানসিক ভারসাম্য হারানোর উপক্রম হল। দিনের পর দিন। চলছে তো চলছেই। যেন এর শেষ নেই।
এবার আমাকে একটা ছোট রুমে দাড় করিয়ে রাখল। একসুতা নড়াচড়া বা বসার সুযোগ নেই। মনে হল এর চেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায়ই ভাল ছিল। এ অবস্থায় কিছু শুকনা রুটি খেতে দিল। খেতে পারছি না দেখে পানি এনে দিল। পানি ও রুটি খেতে কষ্ট হল না। এখন আর ঘুম ধরে রাখতে পারছি না। ঘুমানোর চেষ্টা করলাম মাত্র হঠাৎ মাথার উপর বিকট শব্দ করে ধারালো ও তীক্ষ্ণ সুচাগ্র মাথা বিশিষ্ট লোহার থাম নীচের দিকে আস্তে আস্তে নামতে দেখলাম। ভয়ে আর্তচিৎকারে থামটি থেমে গেল। মনে মনে স্থির করলাম এ অবস্থা থেকে মৃত্যুই শ্রেয়। আবার ঘুমাতে চেষ্টা করলাম। সাথে সাথে আবার বিকট শব্দ। এবার আমি চুপ থেকে শেষ দেখার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু থামটি যতই নীচে আসছে শরীরের রক্ত ততই লাফাতে শুরু করল।
আমি আর পারছি না, ঘুমাতে দিচ্ছে না, জেগে থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। আর কত নির্ঘুম থাকতে হবে। বুটের শব্দ শুনে সামনে তাকিয়ে দেখি কয়েকজন ঊর্ধ্বতন অফিসার। আমাকে স্বীকারোক্তি দিতে এবং তাদের সাহায্য করতে বলল। আমি অসম্মত হলে আরো ভয়াবহ পরিণতির কথা জানালো। আমি আর চোখের পাতা ধরে রাখতে পারলাম না। সাথে সাথে চোখের পাতার উপর তীব্র আলো পড়ল। চোখ বন্ধ করেও লাভ হল না, আলোর তীব্রতা মাথা ভেদ করবে বলে মনে হচ্ছিল। ছোট্ট পাইপ সদৃশ জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ফেটে রক্ত ঝরবে বলে মনে হচ্ছিল। আর পারলাম না, সব বলতে রাজী বলে জানালাম তবে আগে ঘুমাতে চাই। সেই স্থান থেকে নামাতেই ফ্লোরে পড়ে গেলাম।
'RAB থেকে ডিবি পুলিশঃ আয়নাঘর থেকে টর্চারসেল'
--
ঘুম থেকে জেগে দেখি আমি পোশাক পরিহিত। আমাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করে আজকের গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড চাইল। তা মঞ্জুর করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে আমি কিছু জানি না বলে জানালাম। নির্যাতনের নব সূচনা উন্মোচিত হল। পুলিশের লোকজন আমাকে একটি চৌবাচ্চায় ছেড়ে দিল। তিন/চার ফুট নীচে পাইপ সদৃশ চৌবাচ্চার তলায় পা ঠেকল। সাথে সাথে বিষধর সাপের মত বিষাক্ত কিছু দংশন করতে লাগল। বুঝতে পারলাম শিং মাছ কাটা ফুটাচ্ছে। আর্তচিৎকারের সাথে সাথে জ্ঞান হারালাম।
পায়ের ক্ষত এখনো আগের মতই। চোখ বেঁধে অজানার উদ্দেশ্যে নিয়ে চলল। যখন থামল নিঝুম রাত। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা তার উপর লজ্জা নিবারণের মত কোনো কপড় নেই। হঠাৎ আলো জ্বলতেই ইউনিফর্ম পরিহিত একজন মহিলা অফিসার, সাথে কয়েকজন মহিলা সিপাহী নিয়ে প্রবেশ করল। স্পর্শকাতর অঙ্গে খুঁচিয়ে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে লাগল। আল্লাহর কাছে এই ফিতনা থেকে মনে প্রাণে আশ্রয় চাইলাম। অফিসার চলে গেলে মেয়েগুলো উত্যক্ত করতে আরম্ভ করল। আল্লাহর কাছে সকাতরে প্রার্থনা করি, তিনি যেন এই অশ্লীল ফিতনা থেকে মু’মিনদের রক্ষা করেন। ভাবতে অবাক লাগে উপরের আদেশে হুকুমের গোলামরা কতটা নীচে নামতে পারে। কখনো ৪ জন আবার কখনো ৬ জন নিজেদের পোশাক উন্মুক্ত করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উত্যক্ত করে চলল।
প্রস্রাবের রাস্তায় নল ঢুকিয়ে, বৈদ্যুতিক স্পার্ক দিয়ে, প্রস্রাব না করতে বাধ্য করে, শরীরের অনুভূতির স্থানে বিপদজনক স্পর্শ দিয়ে ধ্বংসাত্মক আবেদন তীব্র করতে মানুষিক নির্যাতন অব্যাহত রাখল। ঠাণ্ডার প্রকোপ নেই মনে হচ্ছে এখন। আস্তে আস্তে কক্ষ গরম হচ্ছে। তবে উত্তেজক গান বাজনা অব্যাহত রইল। একজন তরুণী একাকী অবস্থান করছে। আমি তার বেইজে নাম দেখে নিশ্চিত হলাম সে মুসলিম ঘরের সন্তান। উপদেশমূলক কিছু মর্মস্পর্শী কথা বলে তার বিবেক জাগ্রত করতে চেষ্টা করলাম। আল্লাহর ইচ্ছায় ক্ষণিকের জন্য হলেও তার বিবেক জাগ্রত হল। প্রশ্ন করায় সে জানাল, ‘আপনাদের কাবু করতেই পুরুষদের উত্যক্ত করতে নারীদের এবং নারীদের উত্যক্ত করতে পুরুষদের ব্যবহার করা হয়।’
পরবর্তীতে জানতে পারি, অনেকের সম্মুখে নিজ সম্মানিত মা-বোনদের অশ্লীল হয়রানী করা হয়, যা দেখে কোনো সন্তান, ভাই, বাবা স্থির থাকতে পারে না। ঘৃণিত পন্থায় তথ্য উদঘাটন করতে এদের বিবেকে বাধে না। হে আল্লাহ! আমাদের অসহায়ত্ব তোমার কাছে নিবেদন করছি। নিশ্চয়ই তুমি মাজলুমের দোয়া কবুল করে থাক। রাগে দু:খে পাগল প্রায় হয়ে গেলাম। তাদের কথায় রাজি না হলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। শরীর আর ফুলের আঘাতও সইতে অক্ষম। কাপড়-চোপড় হীন এভাবে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।
চোখ বেঁধে অন্য কোথাও নিয়ে গেল। বুঝলাম বেশী দূরে নেয়নি। চোখ খুলে যা দেখলাম তা বর্ণনা করা অসম্ভব। এই মুসলিম জনপদে মানুষ মানুষের সাথে এত নিকৃষ্ট ও জঘন্য আচরণ করছে যা অতিকল্পনাপ্রবন মানুষও ভাবতে পারবে না। সারা শরীর কাঁপছে, বাকরুদ্ধ হয়ে আসছে।
অনেকেই পড়ে আছে, সবাই বিবস্ত্র। অজানা কোন জায়গায়। যার নাম এরা দিয়েছে ইন্টারোগেশন সেল। এই হল জিজ্ঞাসাবাদের স্বরূপ। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঘুম তদুপরি শারীরিক-মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ সবাই। কাউকে আবার গ্রেপ্তারের পর বারুদ ঢেলে হাত, দাড়ি, শরীর পুড়িয়ে দিয়েছে। অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পা গুড়িয়ে দিয়েছে। চিকিৎসার নামে সামান্য আহতদের হাত-পা কেটে পঙ্গু করেছে। আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি আয়রন কাটারের ভোতা অংশ দিয়ে টেনে টেনে নাবীর সুন্নাহ দাড়িকে উপড়ে ফেলা হয়েছে, আমি নিজেও এর ভুক্তভোগী, অথচ দাড়ি রাখা আমাদের জন্য ওয়াজিব।
সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঝুলিয়ে রেখেছে। নখ উপড়ে ফেলেছে। বিবস্ত্র করে শরীরের স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে মোমবাতির উত্তপ্ত ফোঁটা ফেলে ধীরে ধীরে অর্ধসিদ্ধ করা হয়েছে। দুটো মই উপরে নীচে রেখে পিষে ফেলা হয়েছে। অনেককে ছোট একটি রুমে লোহার একটি চেয়ারে বসিয়ে হাত, পা ও শরীর বেঁধে ফেলে, হাই ভোল্টেজের বাল্ব মাথার উপরে ও চারিদিকে এত কাছে রাখে, মনে হয় সেখানে সহজেই পানি ফুটবে।
আসামীদের একটি লোহার পাত্রে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রস্রাব করতে বাধ্য করা হয়। এতে পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্ত বের হয়ে আসার উপক্রম হয় এবং কখনো রক্ত বেরিয়ে আসে। হাতে তারকাটা মেরে গাছে অথবা খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখার পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। হাত পায়ের আঙ্গুলে সুই ঢুকানো হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে প্রায় পুড়িয়ে ফেলা হয়। সুতি কাপড় বা তোয়ালে তরল পদার্থ অথবা পানিতে ভিজিয়ে তা দিয়ে সম্পূর্ণ মাথা মুড়িয়ে তারপর পানি ঢালা হয়, এতে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। যা ছিল অত্যন্ত কঠিন।
নির্যাতন নিপীড়নের সবগুলো কথা লিখতে পারলে আগামী প্রজন্ম জানতে পারত, সঠিক ইতিকথা। কোথায় এদের মানবতা? কোথায় এদের প্রতিশ্রুতি? কোথায় এদের মানবাধিকারের শ্লোগান? কোথায় এদের আইন ও সংবিধান? সব ফাঁকা বুলি।
যাইহোক, অবস্থা দেখে বুঝলাম নতুন কোন ফন্দি এটেছে মানুষ নামের এই জানোয়ারগুলো। আমাদের গতিবিধি মনিটরিং করা হচ্ছিল। আবেগ তাড়িত হয়ে কিছু করলে তার সূত্র ধরে আবার জেরা। তবুও একজন ঝুঁকি নিয়ে ইংগিতে জানালেন তাদের দেওয়া পানি না খেতে বা কম খেতে। কারণ পানিতে হাই পাওয়ারের ঘুমের ঔষধ মেশানো আছে। এখন সব পরিষ্কার হয়ে গেল কেন শুকনা রুটির সাথে পানি দিয়েছিল। পানি খাওয়ার পর কেনইবা ঘুম বেড়ে যেত দ্বিগুণ।
চিন্তার রেশ না কাটতেই ইউনিফর্ম পরিহিত কয়েকজন নারী-পুরুষ অফিসার ও সিপাহীর বুটের শব্দে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠল। কাগজ কলম দিয়ে সই করতে বলা হল। আমি বললাম, আনীত অভিযোগ সব মিথ্যা। আমি মিথ্যার স্বাক্ষী হব না। নির্যাতনের নতুন মাত্রা যোগ হল।
সুঠাম সুদর্শ একজন সিনিয়র যুবকের উপর পাশবিক অত্যাচারের হুমকি দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিল। কয়েকজন হায়েনা হাত বেঁধে বুট দিয়ে পা চেপে ধরল। ক্রোধে শরীর কাঁপছে কিন্তু কেউ তো বন্ধন মুক্ত নয়। কী করব? কিংকর্তব্যবিমূঢ়! শুরু হল আরেক অধ্যায়। হুমকি, প্রহার, বৈদ্যুতিক শক কাজ হল না দেখে নিকৃষ্ট এক শয়তান মুদ্রণ অযোগ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলল, ‘তোর স্বাক্ষী দিতে হবে না, তোর "বাবাকে” বলাৎকার কর। তা না হলে কারো রেহাই নেই’। এই বলে আমাকে তার উপর চেপে ধরল। আল্লাহু আকবার বলে উচ্চস্বরে হুংকার দিয়ে গড়িয়ে পড়লাম। বললাম, ‘আমি সই করব, তবে আগে কাপড় পড়তে দিন’।
আমাকে চোখ বেঁধে অন্যত্র নিয়ে চলল। জানিনা অন্যদের ভাগ্যে কি হল। সেখানের পরিবেশ দেখে নিজেকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করলাম। বলল, কি কি বলে আমাদের সহযোগীতা করতে পারবে বল, তোমার কোনো ভয় নেই।’ আমাকে নীরব দেখে আবারও প্রলোভন দিল। একজন নরপশু এসে আমার গলায় কাপড়ের তৈরী ভিজা প্যাড শক্ত করে গলায় পেঁচিয়ে দিল। যখন নিশ্চিত হল আমি তাদের ধোঁকা দিয়েছি, সাথে সাথে কাপড়ের ভিজা প্যাডে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হল। বাকরুদ্ধ, মুমূর্ষ, এক জীবন্ত এক লাশ!!! “হে আল্লাহ তুমি আমাকে যে সাহায্য করবে আমি তার কাঙ্গাল। আমার অসহায়ত্ব আমি তোমার কাছেই নিবেদন করছি। আমাকে এবং সকল মু’মিনকে তুমি ক্ষমা কর। মহা ফিতনা থেকে তুমি আমাকে মুক্তি দাও। সকলের জন্য উত্তম ব্যবস্থা কর। হে আল্লাহ! আমার পরিবার পরিজনদের আমি তোমার কাছে সোপর্দ করলাম। জালিমের হাতকে তুমি সংযত কর। তাদের মধ্যে তুমি অনৈক্য তৈরী করে দাও। এদেরকে তুমি ধ্বংস কর।
রক্তাক্ত এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় আমাকে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করা হল। ইশারায় জানালাম আমি স্বীকারোক্তি দিতে অসম্মত, অপারগ। বেঞ্চ থেকে আমাকে লাথি দিয়ে ফেলে দিলে মুখে রক্ত জমে যায়। অবস্থার অবনতির আশংকায় আমাকে অবশেষে কারাগারে প্রেরণ করল।
'ডিবির টর্চার সেল থেকে কারাগারে'
--
মৃতপ্রায় শরীর নিয়ে আমাকে অনেক পুরনো নোংরা দুটি কম্বলে শুতে দিল। কারাগারের হাসপাতালের বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত করে একাকী এক রুমে থাকতে দিল। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর আল্লাহর অশেষ রহমতে শরীর সুস্থ হতে লাগল। কারাগারে অনেককে গুরুত্বর জখম নিয়ে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকতে দেখে নিজের দু:খকে তুচ্ছ মনে হল। কারগারে দেখলাম আসামীদের জন্য যে সাধারণ মর্যাদা দেয়ার নিয়ম দ্বীনদারদেরকে তা দেয়া তো দূরের কথা সার্বক্ষণিক তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের পাত্র হয়ে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
অনেক অল্প বয়সী তরুণ দ্বীনের প্রতি অনুরাগীদেরকে দুর্ধর্ষ আসামীদের পাশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাদের নিকৃষ্ট পাশবিক যৌন নির্যাতন থেকে বাঁচতে কোমলমতি ছেলেদের রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে কত জন যে প্রশাসনের লাঠিচার্জের সম্মুখীন হয়েছে তার হিসাব নেই। সামান্য উনিশ-বিশ মনে করলে বেঁধে হাঁটু, পায়ের তলা, নিতম্ব ইত্যাদি জায়গায় আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে বিভিন্ন কারাগারে চালান দেয়া হয়েছে, বিদ্রোহী টাগ দিয়ে। তথাকথিত আইনি সহায়তা, ডিনাই পিটিশন করতে দেয়া হয়নি। জেলে প্রবেশের পরে প্রথম দিকে দীর্ঘদিন দেখা সাক্ষাতের মৌলিক অধিকার থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। এমন অনেক জেল যেখানে ঈদের সময়ও দেখা করতে দেয়া হয় না। বাবা-মায়ের দেয়া টাকা পয়সা অনেক সময় কারা কর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করে।
শালীনতা বহির্ভূতভাবে প্রায়ই তল্লাশির নামে হয়রানী করা হয়। ধূমপায়ী, মাদকাসক্ত, নিকৃষ্ট আসামীদের সাথে থাকতে বাধ্য করা হয়। দিনরাত পায়ে ডাণ্ডাবেড়ী পরিয়ে রাখে। গুরুত্বর অসুস্থ উলামা-তলাবা-দ্বীনদারদেরকে কোনোরূপ চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে না। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অনেকে পঙ্গুপ্রায় এবং মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে আছেন। বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া অনেকেকে হার্ট অ্যাটাক বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
দিনরাত সামরিক নজরদারীর মত নিয়ন্ত্রিত বিধি অনুসরণ করতে হয়। লেখা পড়ার মৌলিক অধিকারও ছিনিয়ে নিয়েছে। একটি কলম গেলেও অনেককে লাঠির আঘাত করতে নির্দেশ দেয়। সামান্য ছুতা ধরে কালো জম টুপি পরিয়ে রাখা হয়, চোখ বেঁধে আসামীদের সামনে ঘোরানো হয় এবং হ্যান্ডকাফ পরিয়ে উঁচু গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
বিনা অপরাধে বছরের পর বছর বন্দী করে হচ্ছে। আদালতেও পাঠানোও হচ্ছে না। সার্বক্ষণিক নিকৃষ্ট আচরণ অব্যাহত থাকে। অন্য আসামীদেরকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা হয়। বিরোধ মারাত্মক আকার ধারণ করলে প্রশাসন তখন তাদের পক্ষাবলম্বন করে উল্টো নির্দোষদের শাস্তি দেয়। দু’একজন ইসলামি মাইন্ডের জেল সুপার যদি ভালো আচরণ করে তবে তাদের বিভাগীয় পর্যায়ে শোকজ করা হয়। তবে এদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। অবশ্য তারা দ্বীনদারদের আখলাকে মুগ্ধ হয়েই ভাল ব্যবহার করে।
বিবেক সম্পন্ন মানুষ নির্যাতন সহ্য করতে হলেও সম্মান হারাতে চায় না। আর সম্মানিত ব্যক্তিদের বছরের পর বছর অপমান ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যই যেন নিত্যসঙ্গী। হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের একমাত্র অভিভাবক, তুমিই সাহায্যকারী। তুমিই শিশু মুসার প্রতিপালক। তুমিই আজিজুল হাকিম, আর আমরা তোমার পথে মাজলুম। হে আল্লাহ। হে উত্তম ব্যবস্থাপক। আমাদের ক্ষমা কর, তোমার পথে যারা অগ্রণী তাদের সঙ্গী কর। ঈমানের পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি কর।
(লেখাটি স্বৈরাচারের আয়নাঘর থেকে মুক্ত এক যুবকের জবানবন্দী। তথ্যগুলো অবিশ্বাস্য হলেও সঠিক ও সত্য। বেশ আগে লেখাটি একবার প্রকাশ করা হয়েছিল। সময়ের সাথে প্রাসঙ্গিক হওয়ায় ঈষৎ পরিমর্জন করে আবার প্রকাশ করা হল। লেখাটি প্রচার করুন, স্বৈরাচারী এই সিস্টেমের কবর রচনা করুন।)
Mahmudul Hasan Gunovi সাহেবের টাইমলাইন থেকে