Gopalgonj TV

Gopalgonj TV It is one the best Facebook TV Channel Page for Bangladeshi Citizen to get all kinds of news and entertainments.

03/01/2023
গ্রেফতার পূর্ব মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠির মাধ্যমে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের ন...
18/07/2022

গ্রেফতার পূর্ব মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠির মাধ্যমে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরকে গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান।

প্রিয় দেশবাসী, আমার সালাম নিবেন .......
অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মাথা নত করবেন না।
সত্যের জয় হবেই। আমি আছি আপনাদের সাথে, আমৃত্যু থাকবো।

"একদিন আমি অনেক জিদ ধরলাম নানার কাছে, তাঁর পাইপে আমি একবার হলেও ফুঁ দিতে চাই। আমার নাছোড়বান্দা মনোভাব দেখে নানাও এক সময় ...
16/07/2022

"একদিন আমি অনেক জিদ ধরলাম নানার কাছে, তাঁর পাইপে আমি একবার হলেও ফুঁ দিতে চাই। আমার নাছোড়বান্দা মনোভাব দেখে নানাও এক সময় বাধ্য হলেন। এরপর যা ঘটলো তার জন্য আমি আসলে ঐ ছোট বয়সে প্রস্তুত ছিলাম না।

ফুঁ দেওয়ার সাথে সাথেই অনবরত কাশি দিতেই থাকলাম, যেন নিশ্বাস নিতে গেলেই কাশি চলে আসছে। আর সেই অবস্থা দেখে নানী প্রচন্ড রেগে গেলেন দুই জনের উপর! তিনি আরও রেগে গেলেন অন্যদিকে নানার সেই চিরাচরিত মুখভরা হাসি দেখে, সে হাসি যেন তার থামছেই না।"

_ সজীব ওয়াজেদ

ছবি : নানা বঙ্গবন্ধুর সাথে সজীব ওয়াজেদ (মুখে নানার পাইপ) ও সায়মা ওয়াজেদ।

12/07/2022

২৭ জানুয়ারী, ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলকে সাথে নিয়ে ঈদ-উল-আযহার নামাজে অংশগ্রহন করেন এবং উপস্থিত সবার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

10/07/2022

১৯৭২ সনের ৭ নভেম্বর ঈদের নামাজ আদায় মুহূর্তে,,
উপস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
শেখ আবু নাছের
শেখ রাসেল
শেখ কামাল
শেখ জামালসহ
শেখ পরিবাররের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
আল্লাহ সবাইকে বেহেশত নসীব করুন।।

07/07/2022

একাত্তরের গন্ডগোল : হাওর থেকে পাহাড়ে
=============================
০১.
"... ঈদুল ফিতরের সপ্তাহ খানেক আগে আমি ও আরাে কয়েকজন ঈদ উদযাপনের জন্য নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটি ভাড়াটে নৌকা করে রওনা হয়ে পড়ি। আমার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্যরা তখন মােহনগঞ্জ থানার হাটনাইয়া গ্রামে আমার বােনের বাড়িতে ছিল। কারণ মদন থানা পাকবাহিনীর দখলে চলে যাবার পর ফতেপুর থাকা নিরাপদ নয়। তাই আমার স্ত্রী অন্যান্যদের নিয়ে এখানে চলে আসে। এখান থেকেই মাঝে মাঝে আমাদের জন্য প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র চাউল, তরিতরকারী, তৈল, ঘি, কাপড় চোপড় পাঠিয়ে দেয়া হতাে। আমাদের প্রয়ােজনীয় প্রায় সব জিনিস এখান থেকেই পেতাম।

বর্ষার পানি তখন বেশ কমে আসছে। তাই সােজা পথে চলাচল প্রায় বন্ধ। তাই একটু ঘুরে আসতে হলাে। পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাত আটটার দিকে এক গ্রামে (নৌকায় কোনাে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ছিলাে না তাই সেই গ্রামে) নৌকা বাঁধি। আমরা চার পাঁচজন, একজন বললাে যে সে এ গ্রামে আগেও এসেছে। গ্রামের এক সম্পন্ন গৃহস্থ বাড়ির সঙ্গে তার জানাশুনা আছে।

তাদের ঘাটে নৌকা খুটি গেড়ে সে নৌকা থেকে নেমে যায়। অনেকক্ষণ পর ফিরে আসে এবং বলে যে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। শেষ রাতেও এখানেই খাওয়ার ব্যবস্থা হবে। রাত দশটা এগারটার দিকে খাবার জন্য এক বাড়িতে যাই। খেতে বসে বাড়ির লােকদের কথাবার্তা শুনে কেমন যেন খটকা লাগলাে। এই গ্রামের লােকেরা মুক্তিযােদ্ধাদের এ পর্যন্ত যথেষ্ট সাহায্য সহায়তা করেছে। কিন্তু তাদের আজকের আচরণে এবং কথাবার্তায় কেমন যেন একটা উৎকণ্ঠার ভাব লক্ষ্য করা গেল কিন্তু আমার প্রৌঢ়তা ও সাদা চুল তাদের শংকার ভাব কিছুটা দূর করতে পারলাে।

খাওয়া শেষ হলে আমি বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলি। তিনিও আমার বয়সী লােক। তাকে জিজ্ঞেস করি আপনাদের মনে যেন আমাদের প্রতি কেমন একটা সন্দেহের ভাব লক্ষ্য করছি। কিন্তু শুনেছি আপনারা তাে সব সময়ই মুক্তিযােদ্ধাদের সকল রকমের সাহায্য করে থাকেন। এখন আপনাদের মনে এ সন্দেহের কারণ কি?

একটু চুপ করে বলেন, কি আর বলবাে সাহেব — আমরা উৎসাহ ও সাহস নিয়েই মুক্তিযােদ্ধাদের যতটুকু সম্ভব সাহায্য সহায়তা করে আসছিলাম। তাদের দেখলে বা তাদের কোন দল এদিকে আসলে আমাদের সাহস খুবই বেড়ে যায়। কিন্তু ইদানীং এক উৎপাত জুটেছে আমাদের এলাকায়। কি ব্যাপার জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন নূতন ক্যাপ্টেন সাহেব তার কয়েকজন যােদ্ধাসহ একদিন এসে আমাদের কাছ থেকে ধান চাউল ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য দাবি করেন। গাঁয়ের সবাই মিলে বেশ কিছু চাল ইত্যাদি দিই। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে মাচায় উঠে ধান চাল প্রায় ৫০ মণের মত নিয়ে গেছে। আর নিয়েছে বেশ কয়টি মুরগী ও ছাগল। আবার আর একদিন আসবে বলে রাত প্রভাতের আগে চলে যায়। সেই থেকে আমরা মুক্তিযােদ্ধাদের কিছুটা সন্দেহ ও ভয় করছি। ভয়ে ভয়ে আমাদের দিন কাটছে। আমি তাদের কথা কর্তৃপক্ষকে জানাব বলে আশ্বাস দেই॥"

— খালেকদাদ চৌধুরী / শতাব্দীর দুই দিগন্ত ॥ [ সুনেত্র - ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ । পৃ: ১৮৫-১৮৬ ]

০২.
"... ৭ মার্চ হতে আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী, বিদ্রোহী ইপিআর বাহিনী বিহারি’ অর্থাৎ উর্দুভাষীদের ধরপাকড় শুরু করে দেয়। তারা কিছু উর্দুভাষীকে জেলখানায় পাঠায়, বাকিগুলােকে হত্যা করে। কিছু বিদ্রোহী ইপিআর কাপ্তাই-এ কর্ণফুলী প্রকল্পে কর্মরত অনেক পশ্চিম পাকিস্তানিকে তাদের স্ত্রীপুত্রসহ ধরে একটি মােটর লঞ্চে তুলে নেয় এবং শেষ পর্যন্ত তাদের তৎকালীন মহকুমা শহর খাগড়াছড়িতে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে মহিলাদের সম্রমহানি করা হয় এবং খাগড়াছড়িতে তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়। তবে তাদের মধ্যে আহত একজন কোনভাবে বেঁচে যায় । সে এক চাকমা গ্রামে আশ্রয় নেয়। কিছুদিন পরে পাকিস্তানি বাহিনী আসলে সে তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং সমস্ত ঘটনার বর্ণনা দেয়। ত্রিদিব রায় আরাে লেখেন, আনুমানিক পঞ্চাশ বছর বয়স্ক রাঙ্গামাটির মহকুমা প্রশাসক একজন পাকিস্তানি মেজরের স্ত্রীকে হস্তগত করেন। তিনি এবং কিছু ইপিআর বাহিনী ৩ দিন ধরে সেই মহিলাকে ধর্ষণ করেন, পরে মহিলাকে হত্যা করা হয়।

রাঙ্গামাটি পুলিশের একজন বিহারি রিজার্ভ ইন্সপেক্টর এবং তার পরিবারের সদস্যদেরও আটক করা হয় এবং পরে তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়। তাছাড়া নূরুজ্জামান খান নামে এক পাঠান ঠিকাদারকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। তবে তার বাঙালি স্ত্রী এবং সন্তানদের হত্যা করা হয়নি। নুরুজ্জামান খানের হত্যার বিষয়টি আরাে দুঃখজনক এই কারণে যে, নুরুজ্জামান খান বাঙালি মেয়ে বিয়ে করেছেন, ছেলেমেয়ে সবাই বাঙালি হিসেবে বেড়ে উঠছিল। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু। রাঙ্গামাটির পাহাড়ি বাঙালি যেই তার কাছে সাহায্যের জন্য যেত, তিনি কাহাকেও বিমুখ করতেন না। তাছাড়া তাকে আটক করার আগে ডেপুটি কমিশনার এবং মহকুমা প্রশাসক তাকে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন যে, তাকে হত্যা করা হবে না যদি তিনি স্বেচ্ছায় তার লাইসেন্সকৃত বন্দুক কয়টি জমা দেন। কিন্তু নূরুজ্জামান খান বন্দুকগুলাে জমা দেয়ার পর তাকে আটক করা হয়, পরে তাকে হত্যা করা হয় । রাজা ত্রিদিব রায় আরাে লেখেন, পশ্চিম পাকিস্তানি এবং বিহারিদের পরিকল্পিত উপায়ে নিধন করা হয়েছিল এবং যারা বনেজঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল, তাদের ধরা এবং মারার জন্য সেসব জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।

খাগড়াছড়িতে বাড়িতে থাকাকালীন এবং পরে আমি যা শুনেছিলাম এবং জেনেছিলাম সেটা হলাে যেদিন বিকেলে পাকবাহিনী কাপ্তাই হতে রাঙ্গামাটি পৌছে এবং ডেপুটি কমিশনারের খালি বাংলায় আস্তানা গাড়ে, সেদিন সন্ধ্যার কিছু আগে রাঙ্গামাটি মহকুমা সদরের এসডিও আবদুল আলী কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে দুটি স্পীডবােটে করে মহালছড়ি হতে রাঙ্গামাটি আসেন। তারা জানতেন না ইতােমধ্যে পাকবাহিনী রাঙ্গামাটিতে এসে গেছে। কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধা একটি স্পীটবােটে কাঁঠালতলীর দিকে যায়, অন্যটি দিয়ে মহকুমারী প্রশাসক আবদুল আলী আরাে কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধাসহ ডেপুটি কমিশনারের ঘাটের দিকে আসেন। লেকে স্পীডবােটের আওয়াজ শুনে ডেপুটি কমিশনারের বাংলায় অবস্থানরত পাকবাহিনী সজাগ হয়ে যায়। তাদের স্পীডবােট দিয়ে মহকুমা প্রশাসকের স্পীডবােটটিকে ঘিরে আটক করে।

ওই স্পীডবােটে এসডিও আবদুল আলী ছাড়াও ছিলেন মুক্তিযােদ্ধা এস, এম, কালাম, আবদুল শুকুর, শফিকুল। ইসলাম, মামুন, সামসুল হক মাস্টার এবং রাঙ্গামাটি সরকারি হাইস্কুলের তদানীন্তন হেডমাস্টার রহমান আলীর ছেলে ইফতেখার। তাদের সবাইকে আটক করা হয় এবং অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। মহকুমা প্রশাসক আবদুল আলীর সঙ্গে নাকি বেশি নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছিল। তখনকার দিনে রাঙ্গামাটিতে প্রচার পেয়েছিল যে আবদুল আলীকে রাঙ্গামাটিতে পুলিশ লাইনের এক ব্যারাকে আটক করে রেখে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্রেড দিয়ে আঁচড় দেয়া হয়েছিল। এরপর সেসব জায়গায় লবণ দেয়া হয়েছিল। তাছাড়া তাকে একটি জিপের পিছনে বেঁধে টেনে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন জায়গায় ঘুরানাে হয়েছিল। আবদুল আলী নিজে হাকিম হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানি মেজরের স্ত্রীর সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেন তার কারণে নাকি এত অত্যাচার করে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। শােনা গিয়েছিল ওই মেজরের স্ত্রীর ৪/৫ বছরের একটি মেয়ে ছিল এবং সেই মেয়েটিকে রাঙ্গামাটি শহরের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মােহসীন আশ্রয় দিয়েছিলেন। খান সেনারা রাঙ্গামাটি আসার পরে, মােহসীন বাচ্চা মেয়েটিকে তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। সেই মেয়েটি থেকে পাকবাহিনী তার মায়ের ওপর যে কিরকম আচরণ করা হয়েছিল তা সব জেনে যায়। ফলে তাদের ক্রোধ আরাে বেড়ে যায়।

কাঁঠালতলীর দিকে মুক্তিযােদ্ধাদের নিয়ে যে স্পীডবােটটি যায় খানসেনারা রাঙ্গামাটিতে ইতােমধ্যে এসেগেছে টের পেয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যান। খান সেনারা তাদের আর ধরতে পারেনি। রাঙ্গামাটি দখল করার পর ২০ এপ্রিল তারিখে পাকবাহিনী ৭টি স্পীডবােট এবং দু'টি লঞ্চে করে বুড়িঘাটের দিকে যাত্রা করে। সেখানে তারা মুক্তিবাহিনীর কঠোর প্রতিরােধের সম্মুখীন হয়। ল্যান্স নায়েক মুন্সি আবদুর রব তাদের ৭টি স্পীডবােট ডুবিয়ে দেয়ার পর শহীদ হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বীরশ্রেষ্ঠ সম্মানে ভূষিত হন। এরপর পাকবাহিনী ২৭ এপ্রিল তারিখে মহালছড়িও দখল করে নেয়॥"

— শরদিন্দু শেখর চাকমা / মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রাম ॥ [ জনপ্রিয় প্রকাশনী - ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ । পৃ: ২৪-২৬ ]

ইতিহাসের পাতায় পাতায় তুমি শেখ মুজিব,এই বাংলার আকাশে বাতাশে তুমি চিরঞ্জীব! জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
05/07/2022

ইতিহাসের পাতায় পাতায় তুমি শেখ মুজিব,
এই বাংলার আকাশে বাতাশে তুমি চিরঞ্জীব!
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

৩ই জুলাই ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (PGR) প্রতিষ্ঠা করেন।
04/07/2022

৩ই জুলাই ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (PGR) প্রতিষ্ঠা করেন।

দুর্লভ ছবি ।
04/07/2022

দুর্লভ ছবি ।

সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ ছবি । জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
03/07/2022

সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ ছবি । জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

আমাদের নেত্রীর পরিবার,🥀সবাই দোয়া করবেন।
30/06/2022

আমাদের নেত্রীর পরিবার,🥀
সবাই দোয়া করবেন।

পবিত্র কোরআন পাঠ'রত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দূর্লভ ছবি৷
30/06/2022

পবিত্র কোরআন পাঠ'রত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দূর্লভ ছবি৷

29/06/2022
উদ্বোধনের অপেক্ষায় যেসব উন্নয়ন প্রকল্পঃ  *পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়ে গেলো  -২৫ জুন ২০২২খুলনা রেল সেতু - জুন ২০২২বেকুটিয়া সেত...
29/06/2022

উদ্বোধনের অপেক্ষায় যেসব উন্নয়ন প্রকল্পঃ
*পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়ে গেলো -২৫ জুন ২০২২
খুলনা রেল সেতু - জুন ২০২২
বেকুটিয়া সেতু - জুন ২০২২
মিরপুর -কালশী ফ্লাইওভার - জুন ২০২২
কালনা সেতু - জুন ২০২২
৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু - জুন২০২২
ঢাকা - টাঙ্গাইল ৪ লেন - জুন ২০২২
বনানী - এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেসওয়ে - জুন ২০২২
ভাঙা মাওয়া রেল - জুন ২০২২
লোহালিয়া সেতু - জুলাই ২০২২
গোমা সেতু - আগস্ট ২০২২
নড়াইল - খুলনা সেতু -ডিসেম্বর ২০২২
চট্টগ্রাম - কক্সবাজার রেল -ডিসেম্বর ২০২২
কুলাউড়া - শাহবাজপুর রেল - ডিসেম্বর ২০২২
মেট্রোরেল - আগারগাঁও - উত্তরা - ডিসেম্বর ২০২২
বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক ( সিলেট,রাজশাহী) - ডিসেম্বর ২০২২
খুলনা - মংলা রেল ওয়ে - ডিসেম্বর ২০২২
জয়দেবপুর - ঢাকা ডাবল রেললাইন - ডিসেম্বর ২০২২
বিআরটি -৩ - জানুয়ারি ২০২৩
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে - মার্চ ২০২৩
কর্ণফুলী টানেল - মার্চ ২০২৩
রামপাল বিদ্যুৎ - এপ্রিল ২০২৩
যমুনা রেল সেতু - জুন ২০২৩
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ - ডিসেম্বর ২০২৩
রূপপুর পারমাণবিক -১ - ডিসেম্বর ২০২৩
ঢাকা -মাওয়া রেল - ডিসেম্বর ২০২৩
ঢাকা - রংপুর ৪ লেন - জানুয়ারি ২০২৪
যশোর - ঝিনাইদহ ৪ লেন - জানুয়ারী ২০২৪
কমলাপুর - আগারগাঁও মেট্রোরেল - জানুয়ারি ২০২৪
পায়রা বন্দর ড্রেজিং - জুন ২০২৪
মংলা বন্দর ড্রেজিং - জুন ২০২৪
রূপপুর পারমাণবিক ২ - ডিসেম্বর ২০২৪
আমিনবাজার ৮ লেন সেতু - ডিসেম্বর ২০২৪
রংপুর -লালমনিরহাট ৪ লেন - ডিসেম্বর ২০২৪
ভাঙা - যশোর রেল - ডিসেম্বর ২০২৪
কক্সবাজার বিমানবন্দর - ডিসেম্বর ২০২৪
খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্র - ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকা - ইস্ট ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে - জুন ২০২৫
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ - জুন ২০২৫
ঢাকা বাইপাস - জুন ২০২৫
মাগুরা ফরিদপুর রেল - জুন ২০২৫
রংপুর পঞ্চগড় ৪ লেন - জুন ২০২৫
পতেঙা বে টার্মিনাল - জুন ২০২৫
বঙ্গবন্ধু শিল্প অঞ্চল - জুন ২০২৫
মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর - জুন ২০২৫
কুতুবখালী - বনানী এক্সপ্রেসওয়ে - জুন ২০২৫
পানগুচি সেতু - জুন ২০২৫
ঢাকা আরিচা ৪ লেন - জুন ২০২৫
৩য় মেঘনা সেতু - জুন ২০২৫
পায়রা - ভাঙা ৪ লেন - জুন ২০২৬
বেনাপোল - ভাঙা ৪ লেন - জুন ২০২৬
নলুয়া - বহেরচর সেতু - জুন ২০২৬
শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম - জুন ২০২৬
ঢাকা - আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে - জুন ২০২৬
চাঁদপুর শরীয়তপুর টানেল - জুন ২০২৬
চট্টগ্রাম মেট্রোরেল - জুন ২০২৭
যমুনা টানেল - জুন ২০২৭
চাঁদপুর - শরীয়তপুর সেতু - জুন ২০২৭
ভোলা -বরিশাল সেতু - জুন ২০২৭
ঢাকা সিলেট ৪ লেন - জুন ২০২৭
তিস্তা ব্যারেজ - জুন ২০২৭
চট্টগ্রাম - ঢাকা বুলেট ট্রেন - জুন ২০২৮
ভাঙা - পায়রা রেল - জুন ২০২৮
ঢাকা সাবওয়ে রেল ( ১,২,৩,৪) - জুন ২০২৮
বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার - জুন ২০২৮
শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাটি - জুন ২০২৮
সাবরাং টুরিজম পার্ক - জুন ২০২৮
নাফ টুরিজম পার্ক -জুন ২০২৮
সোনাদিয়া টুরিজম পার্ক - জুন ২০২৮

আরো প্রায় চার শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান, যা বাস্তবায়িত হলে আক্ষরিক অর্থেই বদলে যাবে দেশের চেহারা, অমিত সম্ভাবনার নবদ্বার উন্মোচিত হবে দেশের অর্থনীতিতে।

াংলা ্গবন্ধু
#শেখহাসিনা

28/06/2022

অনেক খোঁজাখুঁজি করে এই ভিডিওটি সংগ্রহ করা গেলো। শেখ রাসেলের স্মৃতি বিজড়িত কিছু ভালোবাসাময় ভিডিও।

বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ একটি ছবি !!১৯৭১ এ পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে সাংবাদিক সম্মেলনে !!
28/06/2022

বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ একটি ছবি !!
১৯৭১ এ পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে সাংবাদিক সম্মেলনে !!

কলকাতার বাবুরা বলেছেন,"ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় করার কোন দরকার নেই। ফার্মগেট আছে,ধানমণ্ডি আছে পাশে একটা কৃষি কলেজ করে দাও। "এ...
28/06/2022

কলকাতার বাবুরা বলেছেন,"ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় করার কোন দরকার নেই। ফার্মগেট আছে,ধানমণ্ডি আছে পাশে একটা কৃষি কলেজ করে দাও। "

এই ধরনের কায়েমী স্বার্থবাদী আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্রিটিশ লর্ডের কাছে গিয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক বোঝালেন ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। এবার ব্রিটিশরা কিছুটা নমনীয় হল --- কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল একটু দেরীতে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন শেরে বাংলা ফজলুল হক ।

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ১৯১৬ সালে মুসলিম লীগ এর সভাপতি নির্বাচিত হন । পরের বছর ১৯১৭ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এর সাধারণ সম্পাদক হন । তিনিই ইতিহাসের একমাত্র ব্যক্তি যিনি একই সময়ে মুসলিম লীগ এর প্রেসিডেন্ট এবং কংগ্রেস এর জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন । ১৯১৮ -১৯ সালে জওহরলাল নেহেরু ছিলেন ফজলুল হকের ব্যক্তিগত সচিব ।

১৯৩৭ এর নির্বাচনে শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচনে জিতলে তিনি জমিদারি প্রথা চিরতরে উচ্ছেদ করবেন।
তিনি যাতে নির্বাচিত হতে না পারেন তার জন্য সারা বাংলাদেশ আর কলকাতার জমিদাররা একত্র হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। লাভ হয়নি --- কৃষকরা তাদের নেতাকে ভোট দিয়েছেন।

মুসলিম লীগ এর লাহোর অধিবেশনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বক্তব্য দিচ্ছেন । হঠাৎ করে একটা গুঞ্জন শুরু হলো, দেখা গেল জিন্নাহর বক্তব্যের দিকে কারও মনযোগ নাই । জিন্নাহ ভাবলেন, ঘটনা কী ? এবার দেখলেন, এক কোণার দরজা দিয়ে ফজলুল হক সভামঞ্চে প্রবেশ করছেন, সবার আকর্ষণ এখন তার দিকে । জিন্নাহ তখন বললেন --- When the tiger arrives, the lamb must give away. এই সম্মেলনেই তিনি উত্থাপন করেছিলেন ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব ।

১৯৪০ সালের ২২-২৪ শে মার্চ লাহোরের ইকবাল পার্কে মুসলিম লীগের কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এই কনফারেন্সে বাংলার বাঘ আবুল কাশেম ফজলুল হক ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি তার প্রস্তাবে বলেন, হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বাস্তবতায় হিন্দু মুসলিম একসাথে বসবাস অসম্ভব। সমাধান হচ্ছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র এবং পূর্বাঞ্চলে বাংলা ও আসাম নিয়ে আরেকটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে।

পাঞ্জাবের মওলানা জাফর আলী খান, সীমান্ত প্রদেশের সর্দার আওরঙ্গজেব, সিন্ধের স্যার আব্দুল্লাহ হারুন, বেলুচিস্তানের কাজী ঈসা ফজলুল হকের প্রস্তাব সমর্থন করেন। কনফারেন্সে এই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়।

লাহোর প্রস্তাব উত্থাপনের সময়ে হিন্দুপ্রধান প্রদেশগুলোতে মুসলিম নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকার কারণে ফজলুল হক খুবই উদ্বিগ্ন এবং কিছুটা উত্তেজিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে একবার বলেন, ‘ আমি আগে মুসলিম, পরে বাঙালী (muslim first, bengali afterwards)’। বক্তৃতার এক পর্যায়ে এসে বলেন, ‘কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলোতে যদি আর কোনো মুসলিম নির্যাতিত হয় তাহলে আমি বাংলার হিন্দুদের উপর তার প্রতিশোধ নেব।’

যে ফজলুল হক তিন বছর আগে সোহরাওয়ার্দী, নাজিমউদ্দিনকে রেখে শ্যামাপ্রসাদের সাথে কোয়ালিশন সরকার গঠন করেছেন সেই ফজলুল হকের মুখে এমন বক্তব্য তখনকার ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃাষ্ট করেছিল।

বর্তমানে যে পাকিস্তান রাষ্ট্র তার ভিত্তি হচ্ছে লাহোর প্রস্তাব। তাই ২৩ শে মার্চ কে পাকিস্তানে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

কিন্তু লাহোর প্রস্তাব পাশ হওয়ার কয়েকদিন পরে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ চালাকির আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, প্রস্তাবটি টাইপ করার সময়ে ভুল করে muslim majority states লেখা হয়েছে; আসলে হবে state । জিন্নাহর ধারণা ছিল, দেন-দরবার করে দুই পাশে দুইটা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তাই স্টেটস এর জায়গায় স্টেট লিখে একটা মুসলিম মেজরিটি রাষ্ট্র করতে হবে।

জিন্নাহর এই ধূর্ততার কারণে ফজলুল হক তার সাথে পাকিস্তান আন্দোলনে সম্পৃক্ত হননি। তরুণ শেখ মুজিব যখন জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তখন অভিজ্ঞ ফজলুল হক পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছেন। 'তিঁনি অনুমান করতে পেরেছিলেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলে কী কী দুর্দশা হবে বাংলার মানুষের। তাই তিঁনি পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনী তে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন.......
"
বাংলার মাটিও তাকে ভালোবেসে ফেলেছিল। যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেছি, তখনই বাধা পেয়েছি। একদিন আমার মনে আছে একটা সভা করছিলাম আমার নিজের ইউনিয়নে, হক সাহেব কেন লীগ ত্যাগ করলেন, কেন পাকিস্তান চাননা এখন? কেন তিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সাথে মিলে মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন? এই সমস্ত আলোচনা করছিলাম, হঠাৎ একজন বৃদ্ধ লোক যিনি আমার দাদার খুব ভক্ত, আমাদের বাড়িতে সকল সময়েই আসতেন, আমাদের বংশের সকলকে খুব শ্রদ্ধা করতেন- দাঁড়িয়ে বললেন,”যাহা কিছু বলার বলেন, হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছুই বলবেন না। তিনি যদি পাকিস্তান না চান, আমরাও চাই না। জিন্নাহ কে? তার নামও তো শুনি নাই। আমাদের গরিবের বন্ধু হক সাহেব।” এ কথার পর আমি অন্যভাবে বক্তৃতা দিতে শুরু করলাম। সোজাসুজিভাবে আর হক সাহেবকে দোষ দিতে চেষ্টা করলাম না। কেন পাকিস্তান আমাদের প্রতিষ্ঠা করতেই হবে তাই বুঝালাম। শুধু এইটুকু না, যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে কালো পতাকা দেখাতে গিয়েছি, তখনই জনসাধারণ আমাদের মারপিট করেছে। অনেক সময় ছাত্রদের নিয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি, মার খেয়ে।"

বঙ্গবন্ধু ' র বাবা বলেছেন , " বাবা তুমি যাই করো শেরে বাংলার বিরুদ্ধে কিছু বলো না। শেরে বাংলা এমনি এমনি শেরে বাংলা হয়নি। "

ফজলুল হক জানতেন মাঝখানে ভারতকে রেখে পশ্চিম আর পূর্বে জোড়া দিয়ে এক পাকিস্তান করলে তা কখনো টিকবে না। ‘ জিন্নাহ আমার লাহোর প্রস্তাবের খৎনা করে ফেলেছে -বলে ফজলুল হক পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় থাকেননি।

১৯৪৬ এ এসে জিন্নাহ সোহরাওয়ার্দীর দুই বাংলা একত্র করে স্বাধীন যুক্তবাংলার দাবী মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের বিরোধিতার কারণে শেষ পর্যন্ত বাংলাও ভাগ করতে হল।

ফজলুল হক বলেছিলেন, একটি পাকিস্তান কখনও টিকবে না। বাংলা এবং আসামকে নিয়ে পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র করতে হবে।

১৯৭১ সালে এসে দেখা গেল, ফজলুল হকের আশঙ্কা এবং ভবিষ্যতবাণী সঠিক। ১৯৭১ এর মত এমন কিছু যে ঘটবে শেরে বাংলা ফজলুল হক তা আঁচ করতে পেরেছিলেন ১৯৪০ সালেই। তাই তিনি ১৯৪০ সালেই বাংলা আর আসাম নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র করতে চেয়েছিলেন। অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা হলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক।

১৯৭১ এর যুদ্ধ হল ফজলুল হকের লাহোর প্রস্তাবের বাস্তবায়ন। লাহোর প্রস্তাব ফজলুল হক যেভাবে উত্থাপন করে ছিলেন সেভাবে মানলে একাত্তরে এই দেশে রক্তগঙ্গা বইত না।

পেশাজীবনে 'কলকাতা হাইকোর্টের নামকরা আইনজীবী ছিলেন। একদিন তাঁর জুনিয়র হাতে একগাদা পত্রিকা নিয়ে এসে বললেন, " স্যার , দেখুন , কলকাতার পত্রিকাগুলো পাতার পর পাতা লিখে আপনার দুর্নাম ছড়িয়ে যাচ্ছে --- আপনি কিছু বলছেন না । " তিঁনি বললেন, " ওরা আমার বিরুদ্ধে লিখছে তার মানে হল আমি আসলেই পুর্ব বাংলার মুসলমান কৃষকদের জন্য কিছু করছি। যেদিন ওরা আমার প্রশংসা করবে সেদিন মনে করবে বাংলার কৃষক বিপদে আছে। "

মুহাম্মদ ওয়াজেদ আলী বরিশাল বারের নামকরা উকিল । একবার ওয়াজেদ আলী র প্রতিপক্ষ মামলার ইস্যু জটিল হওয়ার কারণে কলকাতা থেকে তরুণ উকিল ফজলুল হককে নিয়ে আসে ওয়াজেদ আলীকে মোকাবেলা করার জন্য । ফজলুল হক ওই সময়ে কেবলমাত্র ফজলুল হক , শেরে বাংলা তখনও হননি । তিনি মামলা লড়তে এসেছেন , কিন্তু বিপক্ষের উকিল কে সেই খবর জানতেন না ।

কোর্টে এসে দেখলেন বিপক্ষে তার বাবা ওয়াজেদ আলী দাঁড়িয়েছেন । ফজলুল হক স্বাভাবিকভাবে যুক্তিতর্ক শুরু করলেন ।

এক পর্যায়ে ওয়াজেদ আলী আদালতকে উদ্দেশ করে বললেন , “ ইনি যা বলছেন তা আইনসংগত না । আইনটা হল আসলে এরকম এরকম ....... ইনি নতুন উকিল তো আইন কানুন ভালো বোঝেন না । “

উত্তরে ফজলুল হক বললেন , “ তিনি পুরাতন অভিজ্ঞ উকিল হলে কী হবে ? তিনি হচ্ছেন কৃষকের ছেলে উকিল ( প্রকৃতপক্ষে তার দাদা আকরাম আলী ছিলেন ফারসি ভাষার পন্ডিত ) , তিনি আইনের কী আর বোঝেন ? আমি হচ্ছি উকিলের ছেলে উকিল , যুক্তি আমারটাই ঠিক । “

খ্যাতির সাথে ৪০ বছর ধরে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি করেছেন । আইন পাশ করার আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্স কেমেস্ট্রি আর ম্যাথমেটিক্সে ট্রিপল অনার্স করেছেন । মাস্টার্স করেছেন ম্যাথমেটিক্স এ । ছোটবেলায় একবার পড়ে বইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলার গল্প রূপকথার মত এদেশের সবার মুখে মুখে ।

বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের বাজেট অধিবেশনে একজন এম পি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক কে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিতে লাগলেন । ঐ এম পি শেরে বাংলার বিরুদ্ধে গানও লিখে এনেছেন এবং সংসদের বাজেট বক্তুতা করতে গিয়ে সেই গানটি হেলেদুলে কর্কশ কণ্ঠে গাইতে শুরু করলেন । এরকম পরিস্থিতিতে যে কারও পক্ষে মাথা ঠাণ্ডা রাখা মুশকিল ।

শেরে বাংলা ঐ এমপি র বক্তব্যের মধ্যেই বলে উঠলেন -- "Mr Speaker, I can jolly well face the music, but I cannot face a monkey."

এবার ঘটলো মারাত্মক বিপত্তি । তার মত নেতার কাছ থেকে এরকম মন্তব্য কেউ আশা করেনি । এদিকে , ঐ এম পি স্পিকারের কাছে দাবী জানালেন -- এই মুহূর্তে ক্ষমা চাইতে হবে এবং এই অসংসদীয় বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে । স্পিকার পড়লেন আরেক বিপদে -- তিনি কীভাবে এত বড় একজন নেতাকে এই আদেশ দেবেন ।

শেরে বাংলা ছিলেন ঠাণ্ডা মাথার বুদ্ধিমান মানুষ । তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন --- " Mr. Speaker, I never mentioned any honourable member of this House. But if any honourable member thinks that the cap fits him, I withdraw my remark."

'জ্ঞানতাপস প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক তাঁর জীবনী লিখতে চান জেনে বলেছিলেন, " রাজ্জাক, সত্যি বলো, তোমার মতলবটা আসলে কী ? " প্রফেসর রাজ্জাক বললেন, " আমার এই বিষয়টা খুব ভালো লাগে ---- আপনি যখন ইংরেজদের সাথে চলেন তখন মনে হয় আপনি জাত ইংরেজ। যখন বরিশালে আসেন মনে হয় আপনি বহুবছর ধরে নিজেই কৃষিকাজ করেন। আবার যখন কলকাতায় শ্যামাপ্রসাদ বাবুকে ভাই বলে ডাক দেন তখন আপনাকে আসলেই হিন্দু মনে হয়। আবার যখন ঢাকার নবাব বাড়িতে ঘুড়ি উড়ান তখন মনে হয় আপনিও নবাব পরিবারের একজন । নিজেকে কেউ আপনার মত এত পাল্টাতে পারে না। আপনি যাই বলেন, সত্য হোক -- মিথ্যা হোক, মানুষ বিনা দ্বিধায় তা বিশ্বাস করে। "

মহাত্মা গান্ধী র নাতি রাজমোহন গান্ধী তার বইতে লিখেছেন -- তিন নেতার মাজারে তিনজন নেতা শায়িত আছেন যার মধ্যে দুজন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন । একজনকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দেওয়া হয়নি, অথচ তিনিই ছিলেন সত্যিকারের বাঘ ।

কিন্তু এটা তার জীবনের কোনো অপূর্ণতা নয়, একমাত্র রাষ্ট্রপতি হওয়া ছাড়া সম্ভাব্য সব ধরনের পদে তিনি অধিষ্ঠিত ছিলেন জীবনের কোনো না কোনো সময়ে । তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব বাংলার তৃতীয় মুখ্য মন্ত্রী; পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব - পাকিস্তানের গভর্নর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ।

সর্বভারতীয় রাজনীতি ছেড়ে শুধু পূর্ববাংলার রাজনীতি কেন করছেন এই প্রশ্নের উত্তরে ফজলুল হক বলেছিলেন -- এরোপ্লেন এ উঠলে নিচের জিনিস ছোট আর ঝাপসা দেখাতে পারে, তাই আমি মাটিতেই থাকছি । রাজনীতির এরাপ্লেন এ না চড়লেও সৌদি বাদশাহ সউদ ফজলুল হকের সাথে একটা মিটিং করার জন্য নিজের ব্যক্তিগত বিমান পাঠিয়েছিলেন ফজলুল হককে নিয়ে যাওয়ার জন্য ।

অসীম সাহসী এই মানুষটি আমাদেরকে সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে প্রতিবাদ করার কথা বলেছেন। বাঙালী জাতিকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন অনেক আগেই । তিনি বলেছেন, যে জাতি তার বাচ্চাদের বিড়ালের ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ায়, তারা সিংহের সাথে লড়াই করা কিভাবে শিখবে ?

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন ফজলুল হকের শিক্ষক। আবুল মনসুর আহমদের সাথে আলাপচারিতায় ফজলুল হক সম্পর্কে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মন্তব্য :

"ফযলুল হক মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত খাঁটি বাঙ্গালী।সেই সঙ্গে ফযলুল হক মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত খাঁটি মুসলমান।খাঁটি বাঙ্গালীত্বের সাথে খাটি মুসলমানত্বের এমন অপূর্ব সমন্বয় আমি আর দেখি নাই। ফযলুল হক আমার ছাত্র বলে বলছিনা, সত্য বলেই বলছি।খাঁটি বাঙ্গালীত্ব ও খাটি মুসলমানত্বের সমন্বয়ই ভবিষ্যৎ বাঙ্গালীর জাতীয়তা।"

রেফারেন্স: আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর।(পৃষ্ঠা ১৩৫-৩৬)

পহেলা বৈশাখের সরকারি ছুটি, বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠা এই ফজলুল হকের অবদান । কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে ফজলুল হক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন কারণ কৃষক--শ্রমিক সংখ্যাগরিষ্ঠ এই উপমহাদেশে মাত্র একজন ব্যক্তি কৃষকদের জন্য রাজনীতি করেছেন । তিঁনি হলেন -- শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ।

১৯৪৮ সালে ঢাকায় এসেছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বললে ছাত্ররা তীব্র প্রতিবাদ করে। জিন্নাহ ছাত্রদের সাথে বৈঠকও করেন। কিন্তু ছাত্ররা ছিল নাছোড়বান্দা। জিন্নাহর ধারণা হলো, ফজলুল হক ছাত্রদেরকে উসকানি দিচ্ছেন। ফজলুল হকের বুদ্ধিতে ছাত্ররা উর্দুর বিরোধিতা করছে। জিন্নাহ এবার ফজলুল হকের সাথে দেখা করতে চাইলেন। কিন্তু ফজলুল হক দেখা করতে রাজি হলেন না। ফজলুল হক জিন্নাহকে ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করতেন।

জিন্নাহর পীড়াপিড়িতে শেষ পর্যন্ত রাজি হলেন ফজলুল হক। বন্ধ দরজার আড়ালে কথা হয়েছিল দুই মহান নেতার। কিন্তু ইংরেজিতে কী ধরনের বাক্য বিনিময় হয়েছিল তাদের মধ্যে পরবর্তীতে তা লিখেছেন ফজলুল হকের একান্ত সহকারী আজিজুল হক শাহজাহান --

জিন্নাহ : পাকিস্তান তো তুমি কোনোদিন চাওনি। সব সময়ে বিরোধিতা করে এসেছো।

হক : প্রস্তাবটি তো আমিই করেছিলাম। পরে ওটার খতনা করা হয়েছে। আমি এটা চাইনি।

জিন্নাহ: পাকিস্তানের এই অংশ বেঁচে থাক তা তুমি চাও না। তাই ভারতের কংগ্রেসের টাকা এনে ছাত্রদের মাথা খারাপ করে দিয়েছ। তারা আমাকে হেস্তনেস্ত করছে।

হক: আমি এখানে কোনো রাজনীতি করি না। হাইকোর্টে শুধু মামলা নিয়ে চিন্তা করি। আইন আদালত নিয়ে থাকি ।

জিন্নাহ : জানো, তুমি কার সাথে কথা বলছো ?

হক: আমি আমার এক পুরোনো বন্ধুর সাথে কথা বলছি।

জিন্নাহ: নো নো, ইউ আর টকিং উইথ দ্য গভর্নর জেনারেল অব পাকিস্তান ।

হক: একজন কনস্টিটিউশনাল গভর্নর জেনারেলের ক্ষমতা আমি জানি।

জিন্নাহ: জানো, তোমাকে আমি কী করতে পারি ?

হক: (ডান হাতের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে) তুমি আমার এ্যাই করতে পারো। মিস্টার জিন্নাহ, ভুলে যাওয়া উচিত নয় এটা বাংলাদেশ এবং তুমি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে কথা বলছ।
(আজিজুল হক শাহজাহানের কলাম,অমরাবতী প্রকাশনী,ঢাকা;পৃষ্ঠা ৪৬-৪৭)

[COLLECTED ]

আজ ২৬ শে অক্টোবর শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের ১৪৬ তম জন্মবার্ষিকী।।

অবিসংবাদিত নেতা ❤ বাংলার বাঘ।।

😂😂😂 জ্বালা ওরে জ্বালা😂😂😂     😂😂😂আমারো মন ভালো নেই 😂😂😂
26/06/2022

😂😂😂 জ্বালা ওরে জ্বালা😂😂😂
😂😂😂আমারো মন ভালো নেই 😂😂😂

অত্যন্ত দুষ্প্রাপ্য একটি ছবিঃজাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কোলে আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা❤
25/06/2022

অত্যন্ত দুষ্প্রাপ্য একটি ছবিঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কোলে আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা❤

 # # # #  আজ পলাশী দিবস  # # # #পলাশীর আম্রকাননে রচিত মীরজাফরদের নাটক বার বার মঞ্চস্থ্য হয় আর স্বাধীনতা হারায় জনগন.আজ পল...
23/06/2022

# # # # আজ পলাশী দিবস # # # #

পলাশীর আম্রকাননে রচিত মীরজাফরদের নাটক বার বার মঞ্চস্থ্য হয় আর স্বাধীনতা হারায় জনগন.

আজ পলাশী দিবসে নব্য মীর জাফরদের পরিণতি মীর জাফর, জগত শেঠ, উমিচাঁদ, রাজ বল্লভ, মীরন, ঘষেটি বেগমদের মতো হোক সেই প্রত্যাশা রইলো.

★ শহিদের রক্তের দাগ তখনো মুছেনি। স্বজন হারানোর দগদগে ক্ষত তখনো শহীদ পরিবারের বুকে। এরই মাঝে ১৯৭৪ সালের ২৯ জুন ঢাকায় রাষ...
23/06/2022

★ শহিদের রক্তের দাগ তখনো মুছেনি। স্বজন হারানোর দগদগে ক্ষত তখনো শহীদ পরিবারের বুকে। এরই মাঝে ১৯৭৪ সালের ২৯ জুন ঢাকায় রাষ্ট্রিয় সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার ভুট্টো।

★ ভুট্টোকে বহনকারী বিমানের অপেক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব।
★ ভুট্টোর ঢাকায় অাসার প্রতিবাদে জনতা। হাতে থাকা প্লাকার্ডে লেখা গো ব্যাক..
★বিমান থেকে নামার পর ভুট্টোকে দেয়া হলো লাল গালিচা সংবর্ধনা
★শোভাযাত্রা সহকারে নেয়া হল বংগভবনে। অাতিথেয়তা দিলেন রাষ্ট্রপতি

★ এসবই ইতিহাস। এর কদিন পরে,অর্থমন্ত্রী তাজ উদ্দীন অাহমদ,পররাষ্ট্রমন্ত্রি ড. কামালের বিরোধীতা সত্ত্বেয় প্রধানমন্ত্রী গেলেন ওঅাইসি সম্মেলনে।
★ ও অাইসি সম্মেলনে যোগ না দিতে হিন্দুস্থান থেকে কড়া বার্তা পেলেন। জবাবে বললেন, অামি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কোথায় যাবো না যাবো,সেটাও কি ওরা ঠিক করে দেবে।
★ইতিহাস বেত্তাদের মতে, সেদিনই শেখ মুজিবের বিধিলিপি লেখা হয়ে যায়!
★ ইমেজ এ্যাসোসিয়েট প্রেস এপি অার্কাইভ।

সিরাজের পরাজয়ে বাঙালির পরাজয় নয়১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজয়ে বাঙালির পরাজয় নয়। সিরাজউদ্দৌল...
22/06/2022

সিরাজের পরাজয়ে বাঙালির পরাজয় নয়

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজয়ে বাঙালির পরাজয় নয়। সিরাজউদ্দৌলার মাতৃভাষা ছিল ফার্সি। তাইতো সিরাজউদ্দৌলাকে যখন ইংরেজ সেনা বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল তখন রাস্তার দুপাশের অসংখ্য কৃষকেরা নিশ্চিন্তমনে জমি চাষ করছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ খুশিতে হাতেতালিও দিচ্ছিলেন। তাদের কাছে এ যুদ্ধ ছিল দুই সাম্রাজ্যবাদীর লড়াই। বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া তার 'মৃদুভাষণ' নামক প্রবন্ধ গ্রন্থে। শাহ এ এম এস কিবরিয়া বলেন:

"২৬ মার্চ যখন ফিরে আসে তখন কবিগুরুর অনুপম চরণগুলো হৃদয়-মনকে উতলা করে তোলে।
আমাদের হাজার বছরের ইতিহাসে গর্ব করার মতো কি আছে তা নিয়ে অনেকেই লেখালেখি করেছেন। আমি এসব অতীত কাহিনী পড়ে তেমন উজ্জীবিত হই না। পাঠান আমলে বাংলাদেশে একটা স্বাধীন রাজ্য স্থাপিত হয়েছিল, সন্দেহ নেই। কিন্তু এও সত্য যে, তৎকালীন পাঠানরা কোনো বিচারেই বাঙালি ছিলেন না। বাঙালি জাতীয়তাবোধ তাঁদের কাছে অজ্ঞাত ছিল বলে আমি মনে করি। রাজ্য শাসনের সুবিধার জন্য এবং স্থানীয় লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য তাঁরা স্থানীয় ভাষার চর্চাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা বাংলায় কথাও বলতেন না এবং আচার আচরণে খাঁটি বাঙালি সমাজের কাছাকাছিও ছিলেন না।

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার করুণ পরিণতির কাহিনী পড়ে আমরা বেদনা অনুভব করি, কিন্তু কেউ কি দাবি করবেন যে, নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাঙালি ছিলেন? ইতিহাসে পড়েছি নবাব আলীবর্দী খান ইরান দেশ থেকে ভাগ্যান্বেষণে ভারতে এসেছিলেন। তাঁর দৌহিত্র সর্বাংশেই একজন ইরানী ছিলেন। হয়তো সে কারণেই আমরা দেখি, যখন পলাশীর আম্রকাননে লড়াই হচ্ছে তখন, তার পাশেই, শস্যক্ষেত্রে বাঙালি কৃষকরা নির্বিকারভাবে কৃষিকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে এটা ছিল দুই বিদেশী শক্তির মধ্যে ক্ষমতার সংঘাত। বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা ছিল অনুপস্থিত।"
(শাহ এ এম এস কিবরিয়া ১৯৯৭: ৫)

মুর্শিদাবাদের নবাব সিরাজউদ্দৌলার হাতে মাত্র একবছর দুইমাসের মত শাসন ক্ষমতা ছিল। তিনি ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দের থেকে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর্যন্ত কিঞ্চিদধিক এক বছর শাসন করেন। অথচ আমরা আমাদের বাল্যকাল থেকে পাঠপুস্তকসহ প্রত্যকটি স্থানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রসঙ্গে যে আলোচনা শুনেছি, তাতে আমার ধারণা ছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলা বহুদিন বাংলার শাসক ছিলেন। পরবর্তী ধীরেধীরে জানতে পারলাম তিনি মাত্র একবছরের মত বাংলার শাসক ছিলেন। প্রথম এ বিষয়টি জেনে আমি আশাহত হই। পরবর্তীতে তার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে গিয়ে আরও নতুনভাবে অনেক তথ্য জানলাম। যে সকল তথ্যের অধিকাংশই পূর্বে জানা ছিল না।

নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে বিভিন্ন মিথ বাংলায় প্রচলিত আছে, যার অধিকাংশই সত্য নয়। বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই তৈরি করে ইতিহাসের নামে চালানো। কিন্তু যার ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বিভিন্ন মিথের পিছনে দুটি কারণ। প্রথমত ধর্মগত সাদৃশ্যের কারণে, তার পূর্বপুরুষ তুর্কি থেকে আগত হলেও তাকে অনেক বাঙালি স্বদেশীয় প্রমাণ করতে ব্যস্ত। তাদের অন্যতম যুক্তি হল, বাংলায় বা ভারতবর্ষে তুর্কি, পাঠান বিভিন্ন শাসকেরা বিদেশি বংশদ্ভূত হলেও, তারা যেহেতু এদেশে বসবাস করত তাই তার এদেশীয় হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় কারণ কলকাতা কেন্দ্রিক সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বুদ্ধিজীবীগণ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে গৌরবান্বিত করার বিবিধ প্রচেষ্টা শুরু করে। সে লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন সাহিত্য রচনা করে।ব্রিটিশেরা যেহেতু নবাব সিরাজউদ্দৌলার হাত থেকে ধীরেধীরে বাংলার শাসনভার নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। তাই তারা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্বার্থে ব্রিটিশ পূর্ববর্তী নবাব সিরাজউদ্দৌলাসহ অন্যান্য শাসকদের মহিমান্বিত করতে শুরু করে।

সিরাজউদ্দৌলা বাঙালি ছিলেন না, তিনি বাংলায় কথা বলতেন কিনা সে বিষয়টিও সুনিশ্চিত নয়। নবাব সিরাজুদ্দৌলার সম্পূর্ণ নাম ছিল, মির্জা মুহম্মদ সিরাজউদ্দৌলা। তিনি ছিলেন আলীবর্দী খানের দৌহিত্র এবং জৈনুদ্দীন আহমদ খান ও আমিনা বেগমের পুত্র। ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা তুর্কি জাতির বংশধর ছিলেন।আলীবর্দী খানের প্রকৃত নাম মির্জা মুহম্মদ আলী।তার পিতার নাম ছিলো মির্জা মুহম্মদ মাদানি। তুর্কি বংশোদ্ভূত মির্জা মুহম্মদ মাদানি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র আজম শাহের দরবারের একজন কর্মকর্তা ছিলেন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার দাদু আলীবর্দী খানের কোন পুত্রসন্তান ছিল না। শুধুই তিন কন্যাসন্তান ছিল। তিনি তার কন্যাদের বড়ভাই হাজি আহমদের তিন ছেলের সাথে বিবাহ দেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা দাদু আলিবর্দী বা ঠাকুর্দা হাজি আহমেদের বাবা মির্জা মুহম্মদ মাদানি ছিলেন তুর্কি বংশোদ্ভূত। তাই পিতৃপুরুষের পরিচয়ে নবাব সিরাজুদ্দৌলা আদতে তুর্কি বংশোদ্ভূত, কোনমতেই বাঙালি নয়।

আরেকটি বিষয় প্রতিনিয়ত বলা হয় যে, নবাব নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। তথ্যটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও, তথ্যটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। প্রকৃত তথ্য হল, তখনো পর্যন্ত ভারতবর্ষ মুঘল শাসনের অধীনে ছিল। যেহেতু মুঘল সম্রাট ছিলেন, তাই নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোন স্বাধীন শাসক ছিলেন না। তিনি ছিলেন, তৎকালীন দিল্লীর মুঘল সম্রাটের পক্ষে বাংলার আঞ্চলিক প্রতিনিধি। এককথায় বলতে গেলে, তিনি সম্রাট ছিলেন না, তিনি ছিলেন সম্রাটের অধিনস্থ বাংলার নবাব। অনেকটা বর্তমানের কেন্দ্রীয় সরকারের অধিনস্থ মুখ্যমন্ত্রীর মত।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার চরিত্র সম্পর্কে ইতিহাসকারগণ যে সকল তথ্য দিয়েছেন, সেই তথ্যানুযায়ী তাকে সচ্চরিত্রের অধিকারী হিসেবে চিহ্নিত করা দুষ্কর। মাতামহ আলিবর্দী খানের মৃত্যুশয্যায় নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে তার ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ করে প্রতিজ্ঞা করানো হয় যে, তিনি মদ্যপান থেকে বিরত থাকবেন। নিয়মিত মদ্যপান অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য তিনি মদ্যপান থেকে পরবর্তীতে বিরত ছিলেন কিনা এ নিয়ে ইতিহাসকারগণ ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেননি।বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ 'বাংলাপিডিয়া' -তে 'সিরাজউদ্দৌলা' প্রবন্ধে নবাব নবাব সিরাজউদ্দৌলা সম্পর্কে বলা হয়েছে:

"এটি সম্ভবত সত্য যে, নওয়াব হিসেবে সিরাজ ছিলেন খানিকটা উদ্ধত এবং খুব সম্ভবত কিছুটা অসহিষ্ণু। এক কথায় তিনি সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে ছিলেন না। অস্থির চিত্তের সিরাজের মধ্যে দৃঢ়তার অভাব ছিল। এছাড়া সংকটকালে সিদ্ধান্তহীনতাও তাঁর অন্যতম ত্রুটি। তবে এ কথা মনে রাখা দরকার যে, সিরাজ তখন ছিলেন মাত্র চবিবশ বছরের এক অপরিণত যুবক। ক্ষমতা ও উচ্চাসন তাঁকে কিছুটা বেপরোয়াও করে তুলেছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সবচেয়ে বড় ত্রুটি ছিল এই যে, অনভিজ্ঞতার কারণে তিনি তাঁর সকল প্রতিদ্বন্দ্বীকে একই সাথে মোকাবিলা করতে চেয়েছিলেন, তারা যাতে সংঘবদ্ধ হতে না পারে সেরূপ কোন পদক্ষেপ তিনি নেন নি। এরূপ সাবধানতা অবলম্বনে তাঁর ব্যর্থতা এবং শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করার মতো মানসিক দৃঢ়তার অভাবের কারণেই তাঁর পতন হয়।"

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এক মহান বাঙালি ছিলেন। তাঁর রচনায় কারো সম্পর্কে খুব একটা নেতিবাচক মন্তব্য চোখে পড়ে না। কিন্তু তিনি তাঁর রচিত 'বাঙ্গালার ইতিহাস, দ্বিতীয় ভাগ' গ্রন্থে নবাব সিরাজুদ্দৌলার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নির্বোধ, নৃশংস, ও অবিমৃশ্যকারী, কুপ্রবৃত্তির উত্তেজক মানুষের সঙ্গী, নারীর সতীত্ব লুণ্ঠনকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোন সুশাসক ছিলেন না। তিনি ছিলেন নিয়ন্ত্রণহীন এক তরুণ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের তথ্য অনুসারে জানা যায় যে, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশের কাছে পরাজয় না হলেও তার নবাবী দিল্লির মুঘল সম্রাটেরা এমনিতেই কেড়ে নিতেন। কারণ সকতজঙ্গের বার্ষিক কোটি মুদ্রা কর প্রদানসহ সুবাদারীর প্রার্থনায়, দিল্লীর মুঘল সম্রাট একপ্রকার সম্মত হয়ে গিয়েছিলেন।

"সকতজঙ্গ, সিরাজউদ্দৌলার সুবাদার হইবার কিঞ্চিৎ পূর্বে, রাজ্যশাসনে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। তাঁহারা উভয়েই তুল্যরূপ নির্বোধ, নৃশংস, ও অবিমৃশ্যকারী ছিলেন; সুতরাং, অধিককাল, তাঁহাদের পরস্পর সম্প্রীত ও ঐক্যবাক্য থাকিবেক, তাহার কোনও সম্ভাবনা ছিল না।

সিরাজউদ্দৌলা, সিংহাসনে অধিরূঢ় হইয়া, মাতামহের পুরাণ কর্মচারী ও সেনাপতিদিগকে পদচ্যুত করিলেন। কুপ্রবৃত্তির উত্তেজক কতিপয় অল্পবয়স্ক দুষ্ক্রিয়াসক্ত ব্যক্তি তাঁহার প্রিয়পাত্র ও বিশ্বাসভাজন হইয়া উঠিল । তাহারা, প্রতিদিন, তাঁহাকে কেবল অন্যায্য ও নিষ্ঠুর ব্যাপারের অনুষ্ঠানে পরামর্শ দিতে লাগিল। ঐ সকল পরামর্শের এই ফল দর্শিয়াছিল যে, তৎকালে, প্রায় কোন ব্যক্তির সম্পত্তি বা কোনও স্ত্রীলোকের সতীত্ব রক্ষা পায় নাই ।

রাজ্যের প্রধান প্রধান লোকেরা, এই সমস্ত অত্যাচার সহ্য করিতে না পারিয়া, তাঁহার পরিবর্তে, অন্য কোনও ব্যক্তিকে সিংহাসনে বসাইবার চেষ্টা দেখিতে লাগিলেন। তাঁহারা, আপাততঃ, সকতজঙ্গকেই লক্ষ্য করিলেন। তাঁহারা নিশ্চিত জানিতেন, তিনি সিরাজউদ্দৌলা অপেক্ষা ভদ্র নহেন; কিন্তু, মনে মনে এই আশা করিয়াছিলেন, আপাততঃ, এই উপায় দ্বারা, উপস্থিত বিপদ হইতে মুক্ত হইয়া, পরে, কোনও যথার্থ ভদ্র ব্যক্তিকে সিংহাসনে নিবিষ্ট করিতে পারিবেন।

এ বিষয়ে সমুদয় পরামর্শ স্থির হইলে, সকতজঙ্গের সুবাদারীর সনন্দ প্রার্থনায়, দিল্লীতে দূত প্রেরিত হইল।আবেদন পত্রে বার্ষিক কোটি মুদ্রা কর প্রদানের প্রস্তাব থাকাতে অনায়াসেই তাহাতে সম্রাটের সম্মতি হইল।"
(বিদ্যাসাগর ২০০২: ১১১৯)

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথার সত্যতা পাওয়া যায়, নবাব সিরাজউদ্দৌলার সমসাময়িক ইউসুফ আলি খানের বিবরণে। তার রচিত 'তারিখ-ই-বাঙ্গালা -ই-মহব্বত জঙী' গ্রন্থে তিনি নবাব সিরাজুদ্দৌলা সম্পর্কে বলেছেন:

"সিরাজ-উদ-দৌলা এই পৃথিবীর রাজত্বে তৃপ্ত ছিলেন না এবং (কোনো কিছুতেই তিনি) সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁর অত্যধিক অত্যাচারের মাত্রা, অত্যধিক রক্তপিপাসুতা ও সীমাহীন গালিগালাজপ্রিয়তা এই দেশের সব সিংহের পিত্তকে পানিতে পরিণত করতে পারত। আজ তাঁর মাথার উপরে ছিল একটি টুপি, (পরিধানে) ছিল পায়জামা এবং কাঁধে ছিল একটি কম্বল। সেই অবস্থায় পৃথিবীর মানুষের কাছে তিনি এই ধরণীর একটি ক্ষুদ্র কোণ মাত্র প্রার্থনা করেন। কিন্তু তাঁর এই বিধ্বস্ত দেহ বিরাট বিক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ালে তিনি তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণের সুযোগ আর পাননি এবং মহা প্রতিশোধ গ্রহণকারী বিচারকের আদেশে মৃত্যুর তরবারি তাঁর সব আকাঙ্ক্ষার শিকল ছিন্ন করে দেয়। মীর মোহাম্মদ জা'ফর খান বাহাদুরের আদেশে তাঁকে মহাবত জঙের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়। এই ঘটনা এগারশ একাত্তর হিজরী সনের ১৫ই শওয়াল তারিখে ঘটে। তাঁর রাজত্বকাল দুর্যোগপূর্ণ হলেও এক বছর তিন মাস ছিল।"
(আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ১৯৯৭:১৯০-৯১)

নবাব সিরাজউদ্দৌলার সমসাময়িক ইউসুফ আলি খানের বিবরণে 'তারিখ-ই-বাঙ্গালা-ই-মহব্বত জঙী' গ্রন্থের মত নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু এবং পরবর্তী মৃতদেহের বিবরণ 'মোজাফফরনামা' গ্রন্থেও পাওয়া যায়। মোজাফফরনামা গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন, করম আলি খান। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃতদেহকে কি পরিমাণে অমর্যাদা করা হয়েছিলো সে বিবরণ করম আলি খানের মোজাফফরনামায় পাওয়া যায়:

"সিরাজের দেহে বিশটি আঘাত করেও কাজ শেষ করতে না পেরে মোহাম্মদী বেগ তাঁর সঙ্গীদের মধ্য থেকে একজন মোঘলকে এ কাজের জন্য নিযুক্ত করে এবং সে ব্যক্তি ছোরার এক আঘাতেই সিরাজের জীবনের সমাপ্তি ঘটায়। তাঁর দেহ একটি হস্তীর পৃষ্ঠে স্থাপন করে সীমাহীন অমর্যাদার সঙ্গে সমগ্র নগরে ঘোরানো হয়। সেই হস্তী সিরাজের জননীর বাসভবনের সামনে আসলে তিনি খালি পায়ে ও খালি মাথায় দৌড়িয়ে এসে হস্তীর পায়ের কাছে নিজেকে নিক্ষেপ করেন। কিন্তু খাদিম হোসেন খানের লোকজন তাঁকে বলপ্রয়োগ করে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। (সিরাজের মৃতদেহ নিয়ে) খাদিম হোসেন খানের বালাখানার সামনে উপস্থিত হলে তিনি নির্লজ্জ হয়ে মৃতদেহ সমাহিত করার জন্য একখানা বস্ত্র মৃতদেহের উপর নিক্ষেপ করেন।

অবশেষে সিরাজের মৃতদেহ বাজারের চত্বরে নিক্ষেপ করা হলে কেউ তা দাফন করতে সম্মত হয়নি। এই পরিবারের ঐতিহ্যকে স্মরণ রেখে এবং নিজেকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করে মীর্জা জয়নুল আবেদীন বাকাওয়াল মৃতদেহকে গোসল করান এবং একটি কফিনে ভরে তা আলিবর্দীর কবরের পাশে সমাধিস্থ করেন। সিরাজের রাজত্বকাল পনেরো মাস স্থায়ী হয়।"
(আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ১৯৯৮: ১২৮)

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজয়ে বাঙালির পরাজয়ে বাঙালি পরাধীন হয়নি। মাঝেমধ্যে দুইএকটা ব্যতিক্রম ছাড়া বাঙালি ১২০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে একপ্রকার পরাধীনই ছিল। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন প্রভু বদল হয়েছিল মাত্র।এদেশীয় ক্ষমতা এক সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে অন্য সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে গিয়েছিলো মাত্র। তুর্কিদের হাত থেকে কিছুটা সভ্য এবং কিছুটা মানবিক ব্রিটিশদের হাতে। বিষয়টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'পূরবী' কাব্যগ্রন্থের 'শিবাজি-উৎসব' কবিতায় বলেছেন:

"সেদিন এ বঙ্গপ্রান্তে পণ্যবিপণীর এক ধারে
নিঃশব্দচরণ
আনিল বণিকলক্ষ্মী সুরঙ্গপথের অন্ধকারে
রাজসিংহাসন।
বঙ্গ তারে আপনার গঙ্গোদকে অভিষিক্ত করি
নিল চুপে চুপে-
বণিকের মানদণ্ড দেখা দিল পোহালে শর্বরী
রাজদণ্ডরূপে।"
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ২০০৭:৩০৫)

তথ্য সহায়তা:
১. আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া (অনূদিত), ইউসুফ আলী খান, তারিখ-ই-বাঙ্গালা-ই-মহব্বত জঙী, ঢাকা: বাংলা একাডেমী, জুন১৯৯৭

২.আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া (অনূদিত),
মোজাফফরনামা ও নওবাহার- ই-মুর্শিদকুলী খানি,ঢাকা: বাংলা একাডেমী, মার্চ ১৯৯৮

৩. তীর্থপতি দত্ত ( সম্পাদিত),বিদ্যাসাগর রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড), কলকাতা: তুলি-কলম, মার্চ ২০০২

৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্চয়িতা, ঢাকা: মেরিট ফেয়ার প্রকাশন,ফেব্রুয়ারি ২০০৭

৪. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, মৃদুভাষণ, ঢাকা: ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড,১৯৯৭

৫. সিরাজউদ্দৌলা,বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়া, ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০১৫

কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী
সহকারী অধ্যাপক,
সংস্কৃত বিভাগ,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Address

Kalibari More
Gopalganj
8100

Telephone

+8801842339306

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Gopalgonj TV posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Gopalgonj TV:

Videos

Share

Gopalgonj TV

This is a Unique Facebook TV Channel.