28/04/2024
চারদিকে বৃষ্টির জন্য হাহাকার। মসজিদে মসজিদে মোনাজাত। হিটস্ট্রোকে জায়গায় জায়গায় মৃত্যু। গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে ঢুকলেই এসব চোখে পড়ছে৷ ব্যাপারটা খুব সেনসিটিভ একটা ইস্যু হয়ে দারিয়েছে৷ কি যেন একটা ব্যাপার স্যাপার হচ্ছে পৃথিবীতে। কয়েক দিন আগে করোনা মহামারী এল। আমার চোখের সামনেই কত মানুষ মারা গেল। এত মানুষের হাহাকার, এত মানুষের চিৎকার শুনেছি, যা অনুমান করার মত না।
যাইহোক আসল কথায় আসি - এত গরমের আসলে রহস্য কি? কেনই বা এত গরম পরছে তার একটা কারণ হচ্ছে, যে পরিমাণ পানি আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়ে পৃথিবীতে আসে সেই পরিমাণ পানি আবার জলীয় বাষ্প হয়ে আকাশে চলে যায়। ব্যাপারটা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে তো৷ আচ্ছা বুঝিয়ে বলি,
ধরেন ১০ লিটার পানি আকাশ থেকে মাটিতে বৃষ্টি আকারে পরলো, কিন্তু ৩ লিটার পানি জলীয় বাষ্প হয়ে আকাশে উড়ে গেল। বাকি ৭ লিটার পানি পৃথিবীতেই থেকে গেল৷
এখন প্রশ্ন হল এই ৭ লিটার পানি কি হবে? বৃষ্টি তো হচ্ছে না৷ তাই এই ৭ লিটার পানি সূর্য্যের তাপে বাষ্প হয়ে পৃথিবীতেই থেকে যাচ্ছে আকাশে আর ফিরে যাচ্ছে না। ফলে বায়ুমন্ডলের উপর প্রভাব পরছে৷
গরম বেড়ে যাওয়ার আর বৃষ্টি না হওয়ার প্রধান আরও একটি কারণ হল গাছ পালা না থাকা৷ বর্ষাকালে সিলেটে সবচাইতে বেশি বৃষ্টি কেন হয় জানেন?
কারণ সেখানে গাছ পালা বেশী। নদীনালা বেশী। এই কারনেই সেখানে বৃষ্টি পাত ও বেশি হয়।
এবং গুগলে টেম্পারেচর লক্ষ করে দেখবেন দেশের সবচাইতে কম তাপমাত্রা এখনও সিলেটে। কারণ সেখানে গাছ পালা বেশি৷ তাই সেখানে তাপমাত্রাও কম। এখন আসেন গাছ পালার সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক কি এটা বলবেন তো?
আমরা গাছ পালার থেকে অক্সিজেন পাই। সেই অক্সিজেন দিয়ে আবার আমরা বেচে থাকি। এখন প্রশ্ন হল গাছ অক্সিজেন কোথা থেকে পায়? সূর্য যখন উঠে তখন গাছপালা সূর্য্যের আলো থেকে তার খাবার সংগ্রহ করে এক ধরনের বিকিরণ এর মাধ্যমে। এবং গাছ এই কাজটি করে তার পাতার মাধ্যমে৷ যার ফলে তাপমাত্রা কমে যায়। আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় থাকি। কিন্তু যখন গাছ পালাই থাকেনা তখন সূর্য্যে থেকে সেই রশ্মি ও তো কেউ নেয় না। যার ফলস্বরূপ আমরা গরম খাচ্ছি। ফেসবুকে এসে স্টাটাস দিচ্ছি, আবার ফেসবুকেই গাছ লাগিয়ে দিচ্ছি। আবার কতগুলো স্টান্ডার্ড ব্রয়লার মুরগী গরম, তাপমাত্রা নিয়ে মিমস বা ফাইজলামি মার্কা স্টাটাস ও দিচ্ছি। শুনেন গাছ বর্ষাকালে মাটিতেই লাগাইয়েন, ফেসবুকে গাছ লাগাতে আইসেন না প্লিজ৷
অবশ্য এই জাতে মাতাল, তালে ঠিক এই জাতিকে নিয়ে এর থেকে বেশি আশাও করা যায় না ।
যাহোক তৃতীয় কথায় আসি, মাননীয় হর্তাকর্তা সহ কথিত সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ আপনারা গাছ কেটে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি করেন, বন কেটে উজার করে দিন, কলকারখানা সহ সকল প্রাতিষ্ঠানিক বহুজাতিক ভবন তৈরি করুন, পরিবেশ দিয়ে কি হবে,মানুষ বাচিয়ে কি হবে আমার টাকাই সব।
শুধুমাত্র কথিত হর্তাকর্তা দের দোষ দিয়েও লাভ নেই কারণ দোষ শুধু হর্তাকর্তাদেরও না দোষ আপনার আমার দেশের সকল নাগরিকদের। কারণ আমরা নিজেরা নিয়ম মানি না। চিপস খেয়ে দোকানের সামনেই প্যাকেট ফেলে দেই, কোক খেয়ে কোকের বোতল দিয়ে রাস্তায় ফুটবল খেলি। থাক আর না বলি। আমরা নিজেরা যতদিন পরিবর্তন না হব ততদিন কিছুই হবেনা।
যাইহোক এই গরমে সবাই ভাল থাকি, বেশি বেশি করে পানি খাই, তরল জাতীয় ফলমূল খাই৷