কিউরিওসিটি

কিউরিওসিটি Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from কিউরিওসিটি, Magazine, Nabinchandra Sen Public Library, College Road, Feni.

16/06/2021

বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়( ২ আগস্ট ১৮৬১ - ১৬ জুন ১৯৪৪) এর ৭৭তম মৃত্যুবর্ষে বক্তব্য রাখছেন - বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সংগঠক জয়দীপ ভুট্টাচার্য।

ভীষণ এক অবক্ষয় চলছে বর্তমান সময়ে। মানুষের মনে। বড় 'চিন্তা'-বড় চরিত্রের সংস্পর্শ ছাড়া এ অবক্ষয় কাটবে না। এ সমাজ এগিয়...
14/06/2021

ভীষণ এক অবক্ষয় চলছে বর্তমান সময়ে। মানুষের মনে। বড় 'চিন্তা'-বড় চরিত্রের সংস্পর্শ ছাড়া এ অবক্ষয় কাটবে না। এ সমাজ এগিয়ে যাবে না।
বর্তমান সমাজে প্রচলিত শিক্ষা ও সংস্কৃতি আজ পঙ্কিলতার খাদে পড়ে আচ্ছন্ন। তাই স্বভাবতই বর্তমান প্রজন্মের ছাত্র-যুবসমাজের শিক্ষা ও সংস্কৃতির যাঁতাকলে পড়ে অঙ্কুরেই বিনাশ হয়ে প্রতিনিয়ত তারা ধ্বংসের দিকে ধাবমান। হারিয়ে যাচ্ছে তাদের জীবনের মূল্যবোধ ও মনুষ্যত্ব। তাই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে উঠছে নানান অভাবনীয় অসামাজিক ক্রিয়াকর্ম। এই নিকষ কালো ঘন অন্ধকারের মধ্যে ঊষার আলো জ্বালাতে বর্তমান জনজীবনে বিভিন্ন মনীষীর জীবন মতাদর্শের চর্চা অবশ্যম্ভাবী।

বিজ্ঞানের ইতিহাসে মানবিক মূল্যবোধে ভাস্বর এক অবিস্বরণীয় চরিত্র আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ৭৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভা।
সময়: ১৬ জুন ২০২১, বুধবার, বিকেল ৪টায়।
স্থান: নবীনচন্দ্র সেন পাবলিক লাইব্রেরি, ফেনী।

আজকে শুধু আমাদের আধুনিক মানুষের প্রজাতি Homo sapiens রা টিকে থাকলেও লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে হেঁটে বেড়িয়েছে বিভি...
02/10/2020

আজকে শুধু আমাদের আধুনিক মানুষের প্রজাতি Homo sapiens রা টিকে থাকলেও লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে হেঁটে বেড়িয়েছে বিভিন্ন ধরণের মানুষের প্রজাতি। আমাদের 'মানুষ পরিবারের' এই অন্যান্য সদস্যরা কখন, কীভাবে, কোথায় বাস করতো? কেমন দেখতে ছিল? কীভাবে ধীরে ধীরে 'মানুষ' হয়ে উঠেছি আমরা?
অন্যান্য প্রাণির মতই মানুষেরাও, হ্যাঁ আমরাও, বিবর্তিত হতে হতেই আজ এখানে এসে পৌঁছেছি অথচ এখনো আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই বিবর্তন তত্ত্বকে সঠিক মনে করেন না। বিবর্তন যে শুধু বহুলভাবে প্রমাণিত একটি তত্ত্ব তাইই নয়, জীবজগতের কোন কিছুই আজ আর ব্যাখ্যা করা যায় না বিবর্তন তত্ত্ব ছাড়া - সমগ্র জীববিদ্যার মূলেই আছে বিবর্তন। আধুনিক মানুষ বা যে কোন জীবের কথাই ধরুন না কেন, তারা কোথা থেকে এলো, তাদের শরীরের ভেতরের কলকব্জাগুলো বোঝা বা চিকিৎসা, ওষুধ - টিকা তৈরি, জেনেটিক্স, পরিবেশ সংরক্ষণের মত শাখাগুলো আজ বিবর্তনের ধারণা ছাড়া সম্পূর্ণভাবে অচল।
এখন আমরা শুধু ফসিল রেকর্ড থেকেই নয় - আণবিক জীববিদ্যা, আধুনিক জেনেটিক্স- জিনোমিক্সের ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে দেখছি, ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি বছর আগে গরিলা, বনোবো, শিম্পাঞ্জি এবং আমাদের পূর্বসুরীরা এক ছিল। মোটামুটি সে সময়েই গরিলার পূর্বসূরীরা আলাদা হয়ে গিয়ে স্বতন্ত্রভাবে বিবর্তিত হতে থাকে । তারপর আমাদের, মানুষের লিনিয়েজ থেকে ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ বছর আগে বনোবো ও শিম্পাঞ্জিদের পূর্বসুরীরাও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এবং তারপরের এই পুরোটা সময় ধরে বহু প্রজাতির 'মানুষের' বিবর্তন ঘটেছে। চলুন আজকে শোনা যাক আমাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সেই অজানা গল্প।

লিখেছেনঃ Bonya Ahmed

Description: আজকে শুধু আমাদের আধুনিক মানুষের প্রজাতি Homo sapiens রা টিকে থাকলেও লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে হেঁটে বেড়িয়েছে...

সমাজ বিকাশের ধারাবাহিকতায় দেখা যায় একটা সমাজ ব্যবস্থা যখন প্রগতির পথে চূড়ান্ত অন্তরায়, সমাজ বিকাশের গতিকে ব্যাহত করে...
02/08/2020

সমাজ বিকাশের ধারাবাহিকতায় দেখা যায় একটা সমাজ ব্যবস্থা যখন প্রগতির পথে চূড়ান্ত অন্তরায়, সমাজ বিকাশের গতিকে ব্যাহত করে, তখন সমাজ প্রগতির স্বার্থে একদল মানুষ বিবেকের আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি, যশ, অর্থ, প্রতিষ্ঠা কে উপেক্ষা করে সমাজের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির উচ্চ আদর্শকে নিজেদের চরিত্রের মধ্য দিয়ে তুলে ধরেন। একসময় তারা থাকেন না কিন্তু তাদের জীবনের সংগ্রাম পরবর্তীকালে প্রজন্মের কাছে আলোকবর্তিকার মতো কাজ করে, সামাজিক দায়িত্ব পালনে তাদের উদ্বুদ্ধ করে। তেমনই এক মহান মানবতাবাদী মানুষ ছিলেন বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, ভারতবর্ষের আধুনিক বিজ্ঞান চর্চার পথিকৃৎ। মধ্যযুগের অন্ধতা কুসংস্কারের বেড়াজাল ছিন্ন করে রামমোহন বিদ্যাসাগরের সামাজিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে নবজাগরণের সূচনা হয় বিজ্ঞানের জগতে তার সার্থক সৃষ্টি আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। সমস্ত রকম প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মূল্যবোধভিত্তিক বিজ্ঞানচর্চার যে অনন্য নজির তিনি স্থাপন করেছিলেন, চরিত্রের সেই অনির্বাণ শিখা আজকের এই মেরুদন্ডহীন বিবেকবর্জিত সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার এক উৎস। মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে তার অবদান কেবলমাত্র বিজ্ঞান গবেষণা বা আবিষ্কারের জন্য নয়, তিনি স্মরণীয় তাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য, মানব জাতির কল্যাণে নিরলস প্রচেষ্টার জন্য।

এক বিত্তশালী পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও ছেলেবেলা থেকেই দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের সাথে প্রফুল্লচন্দ্রের মেলামেশা খামতি ছিলনা। গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলো চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পথ্য না পেলে তাদের জন্য দুঃখে তাঁর মন কেঁদে উঠত। মায়ের অজান্তে চুপিচুপি সাগু, বার্লি, মিছরি তাদের দিয়ে আসতেন। একদিন মা ভুবন মোহিনী দেবী টের পেয়ে ছেলেকে বললেন এসব সাগু বালি দিয়ে তুই কি করিস? ভয়ে ভয়ে মায়ের কাছে প্রফুল্ল চন্দ্র সব কথা খুলে বলতেই মা গভীর স্নেহে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।

প্রফুল্লচন্দ্র তাঁর শিক্ষকজীবনে বহু জটিল বিষয়ের তাৎপর্য ছাত্রদের সামনে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরতেন। রসায়নের বিভিন্ন তত্ত্ব গল্পচ্ছলে ছাত্রদের মনে গেঁথে দিতেন। বিদ্যাচর্চার যে এক মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে, তা যে কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়, তা বোঝাতে তিনি ছাত্রদের সামাজিক দায়বদ্ধতা, যুক্তিভিত্তিক চিন্তা, কঠিন পরিশ্রমের মানসিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠ মূল্যবোধের শিক্ষাও দিতেন।

রসায়নের ক্লাস। ছাত্রদের সামনে এক টুকরো হাড় হাতে নিয়ে বুনসেন বার্নারে পুড়িয়ে মুখে পুরে দিয়ে নির্বিকারে চিবোতে লাগলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। ছাত্রদের শেখালেন, এটা বিশুদ্ধ ক্যালসিয়াম ফসফেট। এছাড়া আর কিছুই নয়। ছাত্রদের বোঝাতেন যে পোড়ানো হাড়ের কোন জাত-ধর্ম নেই। এভাবেই শুধু রসায়ন শিক্ষাই নয়, ছাত্রদের মনে ধর্মান্ধতার মূল উপড়ে ফেলার মন্ত্রটিও প্রবেশ করিয়ে দিতেন তিনি।

প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজ এর ক্লাসের পরে ল্যাবরেটরীতে ঘন্টার পর ঘন্টা গবেষণার কাজে মগ্ন থাকতেন। দিনের পর দিন একটা ছোট্ট ঘরে বসবাস করে অক্লান্ত প্রচেষ্টায় অর্থ সংগ্রহ করে, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে উন্নত মানের বিজ্ঞান গবেষণাগার তৈরি করে বিজ্ঞান কলেজে মৌলিক শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

সেসময় খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে গবেষণা করে ঘি ও তেলে ভেজাল নির্ণয়ের জন্য নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।

তিনি যুগান্তকারী আবিষ্কার মারকিউরাস নাইট্রাইটের উদ্ভাবক। তা ছাড়াও তিনি বহু বিষয়ে গবেষণা করেছিলেন, যাকে মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো নাইট্রাইট ও হাইপোনাইট্রাইট যৌগ ও তাদের ভৌত রাসায়নিক ধর্ম সংক্রান্ত। দ্বিতীয় হল সালফার যুক্ত জৈব যৌগ সংক্রান্ত এবং তৃতীয় হল ডাবল সল্ট হেমোমরর্ফিজম এবং ফ্লুওরিনেশন সংক্রান্ত। নাইট্রাইট সম্পর্কে তার বিস্তৃত জ্ঞান ও অবদানের জন্য তাকে মাস্টার অফ নাইট্রাইট বলা হত। ভৌত রসায়নবিদ্যার ক্ষেত্রেও নিজস্ব প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গিয়েছিলেন তিনি।
প্রেসিডেন্সি ও বিজ্ঞান কলেজে থাকাকালীন সমগ্র জীবনে বিভিন্ন বিষয়ে তার 150টি গবেষণাপত্র নেচার, রয়েল সোসাইটির জার্নাল সহ নানান বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

‌তিনি বলতেন "যাহার ভিতর গবেষণা কাজের কোন অনুপ্রেরণা জাগে নাই কেবলমাত্র বৃত্তির লোভেই তাহার পক্ষে গবেষণা কার্যক্রম হওয়া উচিত নহে" (আত্মচরিত)। আর এ কাজটি তথাকথিত ভালো গ্রন্থকীট ছাত্র দিয়ে দিয়ে হবে না, কারণ তিনি মনে করতেন "ভালো ছেলে পুতুলের মত যারা তাদের চোখ আছে কিন্তু তারা দেখতে পায় না কান আছে কিন্তু শুনতে পায় না তাদের ব্যক্তিত্ব নেই স্বাতন্ত্র্যতা নেই নিজের জন্য তারা ভাবতে পারে না। তারা সকলের কথা মত চলে। বাঙালি দপ্ করে জ্বলে ওঠে খপ্ করে নিভে যায়। ভালো ছেলে সাজায় তাদের একমাত্র লক্ষণ"। এরই ফসল হিসেবে তাঁর প্রত্যক্ষ সাহচর্যে রসায়ন বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ দাস, নীলরতন ধর, রসিকলাল দত্ত , জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জী বিমানবিহারী দে প্রমুখ এবং তার উৎসাহ ও প্রেরণায় পদার্থ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মেঘনাথ সাহা সত্যেন্দ্রনাথ বোস এর মতো বিজ্ঞানীদের আবির্ভাব হয়েছিল।

তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি হল "The History of Hindu Chemistry" রচনা। সে সময় এদেশে একটি ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল যে বিজ্ঞানের আজকের যা আবিষ্কার তার সবকিছুই প্রাচীনকালে ভারতে ছিল। এ যে কতটা ভান্ত তা তিনি জানতেন। আবার প্রাচীন ভারতে একটা সময় প্রকৃতি বিজ্ঞানের চর্চা ও হয়েছিল । তাই প্রাচীন ভারতের সত্যিকারের ইতিহাস বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তুলে ধরাটা ছিল সে যুগের প্রয়োজন। আর এই মহান কাজের দায়িত্বভার প্রফুল্ল চন্দ্র নিজে গ্রহণ করেন। যদিও এটি খুব সহজ কাজ ছিল না। কারণ এ সংক্রান্ত কোন তথ্যাবলি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন ছিল। দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহে মনোনিবেশ করেন তিনি। নেপাল, তিব্বত ও লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিস থেকেও বেশকিছু পুঁথি সংগ্রহ করেছিলেন। আচার্য্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল ও পন্ডিত নবকান্ত, কবি ভূষণের সহায়তায় পোকায় কাটা, নষ্ট হয়ে যাওয়া পুঁথি থেকে পাঠোদ্ধার করলেন অপরিসীম ধৈর্য ও কঠিন অধ্যাবসায়ের মধ্য দিয়ে। দীর্ঘ ১৫ বছর কঠিন সাধনার ফসল হিসেবে ১৯০২ এবং ১৯০৯ সালে ২টি খন্ডে বই প্রকাশ করেন।

এই বইটিতে প্রফুল্লচন্দ্র প্রাচীন ভারতের জ্ঞান চর্চার অসামান্য অগ্রগতির ইতিহাস বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিচার বিশ্লেষণ করে বহু তথ্য ও প্রমাণের মধ্য দিয়ে যেমন তুলে ধরেছেন, আবার প্রাচীনকালের সম্পর্কে রচিত কাল্পনিক গৌরবের ভ্রান্ত ধারণার অসাড়তাকেও বলিষ্ঠ ভাবে প্রকাশ করেছেন।
প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা নির্ভর বিজ্ঞানের ব্যাপক অগ্রগতি ঘটলেও পরবর্তীতে মধ্যযুগীয় অবস্থায় তার বিলুপ্তি ঘটে। তার কারন হিসেবে 'প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞানের অবনতি' শীর্ষক অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন "এই সমস্ত জাতিভেদ প্রথা প্রচলন হয় অনমনীয় রূপে। মনুসংহিতা এবং পরের দিকে লেখা পুরান গুলিতে ব্রাহ্মণ্য সম্প্রদায়কে মহিমান্বিত করার প্রবণতা দেখা গেল। সুশ্রুত বলেছিলেন- তাঁর ছাত্র দের শব ব্যবচ্ছেদ করে শল্যচিকিৎসা শিখতে হবে। কিন্তু মনুর তাতে বিশেষ আপত্তি। মনুর মতে মৃতদেহ স্পর্শ করলে ব্রাহ্মণের জাত যাবে। তাই আমরা লক্ষ্য করি ভাগবত এর পর থেকেই সপ্তাহ কাটাছেঁড়া করে শিক্ষাদান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার ফলে শরীর তত্ত্ব ও শল্যচিকিৎসা চর্চা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং বাস্তবে এইগুলি হিন্দুদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশন এর মত কষ্টসাধ্য কাজ উঁচু জাতের পক্ষে বেমানান বলে পরিগণিত হল এবং বহুদিনের চর্চায় গড়ে ওঠা 'কলা'গুলি সমাজের চিন্তাশীল শ্রেণীর চিন্তাজগতের বাইরে চলে গেল।" আজ একশত বছর পেরিয়ে আসলেও আবার আমরা দেখি ভারতের চিন্তা জগতকে আবার সেই অন্ধকার জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। প্রাচীন ভারতে প্লাস্টিক সার্জারির ছিল, বিমান ছিল, ইন্টারনেট ছিল, জ্যোতিষ শাস্ত্র হল বিজ্ঞান এরকম অগণিত অবৈজ্ঞানিক চিন্তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করে ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। আজ তার এই গ্রন্থ চর্চা ভীষণভাবে প্রয়োজন।

বিজ্ঞানের সমর্পিত প্রাণ হয়েও প্রফুল্লচন্দ্র কিন্তু কখনোই গবেষণাগারের চৌহদ্দির মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি। বিপ্লবীদের সাহায্য করে গেছেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিবাদ প্রতিরোধে নানান সভা-সমিতির প্রথম সারিতে উপস্থিত থেকেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সাম্রাজ্যবাদ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেছেন। নবজাগরণের চিন্তা থেকে তিনি নারী শিক্ষা প্রসারে ব্রতী হয়েছিলেন। তিনি বলতেন 'দেশে স্ত্রী শিক্ষার অভাবে সমাজদেহের আধখানা তো অসাড় ও গতিহীন হয়ে পড়ে আছে।'
'মাতৃজাতির হীনতা ও অজ্ঞানতা দূর করিবার সামর্থ্য আমাদের নাই। কোন মুখে আমরা স্বরাজ লাভের যোগ্য বলি।' (পশ্চিমবঙ্গ, প্রফুল্ল রায় বিশেষ সংখ্যা) । জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হলে সেখানে স্ত্রীশিক্ষার স্থান না থাকায় তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে বলেছেন 'ভারতবর্ষে যদি depressed class কাউকে বলতে হয় তবে মহিলাগণই depressed. আমরা চিরকাল তাঁদের বাহিরে রেখেছি, জ্ঞানের আলো হতে চিরকাল বঞ্চিত করে রেখেছি।' (পশ্চিমবঙ্গ প্রফুল্ল রায় বিশেষ সংখ্যা)। তিনি বিধবা বিবাহ আন্দোলনের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। বিধবাদের জন্য মাসিক বরাতের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। বিভিন্ন ট্রাস্টি গঠন হয়েছিল। পণপ্রথা, বাল্যবিবাহ, পর্দা প্রথা সম্পর্কিত সমাজপতিদের ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।

১৯২১ সালে খুলনায় পরপর দুবছরের অনাবাদে দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ আকার ধারন করে এবং সরকার এর প্রতিরোধে কোন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তিনি নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন ও 'খুলনা রিলিফ কমিটি' গঠন করে বেশ কয়েক মাস ধরে স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ত্রাণকার্য চালিয়ে যান। পরের বছর অবিরাম বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা হয়। 'বেঙ্গল রিলিফ কমিটি' গঠন করে তিনি ত্রাণকার্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁর মহৎ চরিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সুভাষচন্দ্র, মেঘনাদ সাহা সহ কলেজের অধ্যাপক ও ছাত্র সকলেই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ত্রাণকার্যে সহায়তা করেন। 1931 সালে আবার উত্তরবঙ্গে বন্যা হলে বয়সের ভার উপেক্ষা করে তিনি আবারও এগিয়ে আসেন। নিজের সুখসুবিধার কথা না ভেবে, ভগ্নস্বাস্থ নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়াতেন দরিদ্রের সেবায়, অসহায়ের সাহায্যে, পীড়িতের পাশে দাঁড়াতে। সে সময়ে সমাজের অবক্ষয় লক্ষ্য করে তিনি বলেছিলেন "ধণতন্ত্রের উন্মত্ততা কতদূর চরমে উঠিয়াছে তাহার নিদর্শন - দেশে প্রচুর কাঁচামাল থাকিতেও মানুষ দুর্দশা ভোগ করিতেছে, না খাইয়া মরিতেছে। গম গুদামে পচিতেছে। চিনি নষ্ট করিয়া ফেলা হইতেছে। কিন্তু এই অতি প্রাচুর্যের মধ্যে মানুষ খাইতে পারিতেছে না, তাহার জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যক জিনিস মিলিতেছে না"।এ কথা আজও কি ভীষণ পরিমাণে প্রাসঙ্গিক তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আজকের এই মহামারী পরিস্থিতিতে যখন নিম্ন, হতদরিদ্রদের অন্ন নেই, বাসস্থান নেই, জীবিকা নেই, স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধের কোনো নিশ্চয়তা নেই, এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের মতো এক মহান চরিত্র আমাদের কি শিক্ষা দেয়, তা আমাদের অবশ্যই পুনঃবিবেচনা করা উচিত।

পরাধীন ভারতবর্ষে যখন ব্রিটিশ দ্রব্যসামগ্রীতে বাজার ছেয়ে যায়, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রভাবে বহু দেশীয় দ্রব্য উৎপন্ন হলেও জীবনদায়ী ওষুধের জন্য ভারতবাসীকে ব্রিটিশদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। প্রফুল্লচন্দ্র এবিষয়ে এগিয়ে এলেন স্বদেশী শিল্প প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তিনি ঔষধ সংক্রান্ত রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুত করার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের গবেষণাগারে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ওষুধ প্রস্তুত করে তিনি নিজেই দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়িয়ে ওষুধ বিক্রি করতেন। এক্ষেত্রে গরীব দুঃখীদের সাহায্যার্থে লোকসানের স্বীকার হয়েও তিনি ওষুধ দিয়েছেন। পরবর্তীকালে বহু দরদী মানুষের সাহায্যে 1901 সালে 'বেঙ্গল কেমিক্যাল লিমিটেড' গড়ে তোলেন। পরে এটি ভারতের সর্ববৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারী শিল্প হিসেবে সুনাম অর্জন করে। এই শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে প্রফুল্ল চন্দ্র নিজে কোনপ্রকার বেতন না নিয়ে সমগ্র টাকা ব্যয় করতেন কর্মচারীদের সুখ-সুবিধার জন্য, তাদের পরিবারকে সাহায্যের জন্য। দুঃখের বিষয়, পরবর্তীকালে বিভিন্ন ধনতান্ত্রিক গোষ্ঠী এই প্রতিষ্ঠানটিকে সর্বোচ্চ মুনাফা লক্ষ্যে পরিচালিত করতে চাইলে তিনি অত্যন্ত ঘৃনার সাথে পদত্যাগ করেন। অত্যান্ত বেদনার হলেও সত্য, বলতে দ্বিধা নেই যে, আজ সারা বিশ্ব যখন করোনার জর্জরিত, বারবার সারা বিশ্ব তাকিয়ে থেকেছে এই বেঙ্গল কেমিক্যাল এর দিকেই।

প্রফুল্লচন্দ্র সারাজীবন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন মানুষের স্বার্থে। মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা তাঁর জীবনের সমস্ত কর্মপ্রণালী পরিচালিত করেছে। একদিনের জন্যও তিনি ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থে নিমজ্জিত হয়ে কোনোপ্রকার সুযোগ সুবিধা নেননি। তাঁর এই দুর্লভ মহান মানবতাবাদী চরিত্র আজও আমাদের কাছে শিক্ষনীয়। এর বিপরীতে আজ আমরা দেখতে পাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে ধনকুবেরদের সর্বোচ্চ মুনাফা লাভের প্রতিযোগিতা। বঞ্চিতদের আরো বঞ্চিত করার মধ্যে বিজয়ের উল্লাস। প্রফুল্লচন্দ্রের জীবনসংগ্রাম আমাদের শিক্ষা দেয় সমাজের স্বার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার, অন্ধকার তমসাচ্ছন্ন গোঁড়ামির বিরুদ্ধে যুক্তিবাদের প্রসার ঘটানোর, বুদ্ধিবৃত্তির সাথে হৃদয়বৃত্তির সংমিশ্রণ ঘটানোর। এই ঐতিহাসিক অবদানকে সঠিকভাবে অনুধাবন করার মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের অন্তরের অন্তস্থল থেকে তাঁর প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধাজ্ঞাপণ করতে পারবো।

সূত্র:
'আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়: বিজ্ঞানের ইতিহাসে মানবিক মূল্যবোধে ভাস্বর এক অবিশ্বরণীয় চরিত্র'-- ব্রেকথ্রু প্রকাশনা।

25/07/2020

রোজালিন্ড ফ্রাংকলিন মাদাম কুরির মতো পেতে পারতেন বিজ্ঞানে দুইটি নোবেল। ডিএনএ গঠন আবিস্কারে অসামান্য অবদান রাখা সত্ত্বেও থেকে গিয়েছিলেন পাদপ্রদীপের আলোর বাইরে। গবেষণা করেছিলেন ভাইরাস নিয়ে। তামাকের মোজাইক ভাইরাস, পোলিও ভাইরাস নিয়ে গবেষণা ভাইরাস কে সঠিকভাবে বুঝতে সহায়তা করেছিল। ভাইরাসের কাজের জন্য জীবদ্দশায় নোবেল না পেলেও ঐ কাজের ধারাবাহিকতার জন্য নোবেল পেয়েছিলেন তাঁরই সহকর্মী আর্লন ক্লুগ। তাঁকে বলা হয় 'ডার্ক লেডি অব ডিএনএ "
তাঁকে মোকাবেলা করতে হয়েছিল ঐ সময়ের সামাজিক বিধিনিষেধ, ইহুদীবিদ্বেষ, বিজ্ঞানে পুরুষ প্রাধান্য। অথচ এই রকম একজন মহান বিজ্ঞানী বহুদিন ছিলেন পাদপ্রদীপের আলোর বাইরে। রোজালিন্ড ফ্রাংকলিন এর জন্মশতবর্ষে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র এর ইউটিউব পেজ লিংক- https://www.youtube.com/channel/UCoZRAf8NXlzmTI7wWDr90wA

অপটিক্যাল ইল্যুশন (Optical illusion) যেটি ভিজুয়্যাল ইল্যুশন (visual illusions) নামেও এটি পরিচিত। অপটিক্যাল ইলিউশন হলো ...
18/07/2020

অপটিক্যাল ইল্যুশন (Optical illusion) যেটি ভিজুয়্যাল ইল্যুশন (visual illusions) নামেও এটি পরিচিত। অপটিক্যাল ইলিউশন হলো এমন কিছু চিত্র যেগুলো তৈরি করা হয় ইমেজ ব্যবস্থাপনা, কালার ইফেক্ট, আলোক উৎস ও পরিবর্তনশীল বস্তু, বিভ্রান্তিকর ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ব্যবহার করে যা আমাদের মস্তিষ্কে এক ধরণের বিভ্রান্তি তৈরি করে। চিত্রগুলো থেকে চোখের দ্বারা সংগৃহীত তথ্যগুলি মস্তিষ্কে গিয়ে প্রক্রিয়াজাত হয়ে এমন একটি উপলব্ধি তৈরি করে যা বাস্তবে আসল চিত্রের সাথে মেলে না। এই ধরণের ইলিউশনগুলো ঘটে কারণ আমাদের মস্তিষ্ক আমরা যা দেখি তা ব্যাখ্যা করার এবং আমাদের চারপাশের পরিবেশকে বোঝার চেষ্টা করছে। অপটিক্যাল বিভ্রমগুলি কেবল আমাদের মস্তিষ্ককে এমন জিনিসগুলি দেখার জন্যে চালিত করে যা বাস্তব হতে পারে বা নাও পারে। নিচের চিত্রটিও একটি ইলিউশন।

17/07/2020

জীন-ভুতের বৈজ্ঞানিক ব্যবচ্ছেদ। বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র

গণিতের নোবেল বলে খ্যাত 'এবেল প্রাইজ' ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী একসময় সবার মাঝে থেকে নিজের আলাদা এক জগত তৈরি করেন।জন ন্যাশকে নিয়ে বিখ্যাত সিনেমা 'A Beautiful Mind' এ তিনি প্রতিনিয়ত মনে করছেন দূর্ঘটনায় তাঁর মৃত স্ত্রী, তার সন্তান সব সময় তাঁর আশেপাশে অবস্থান করে, তার সাথে কথা বলে। যতই তিনি তাদের সাথে ইন্টারেকশনে যাচ্ছে ততই তার শারীরিক, মানসিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। বলছিলাম বিখ্যাত গণিতবিদ ও অর্থনীতিবিদ জন ন্যাশের কথা যিনি মাত্র ৩১ বছর বয়সে এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হোন যার নাম 'সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia)' । এই রোগে আক্রান্তের ফলে জন ন্যাশ ক্রমাগত বাস্তব দুনিয়া থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন। কেবল হ্যালুসিনেশনে ভুগতে থাকেন। কোন শব্দ না হলেও সেরকম শব্দ শুনতে থাকেন। তার পরিজনদের তার পাশে বসে থাকতে দেখেন। দশ বছর চিকিৎসা চালিয়ে যাবার পর কিছুটা সুস্থ হোন। সারাজীবন তিনি রোগটি বহন করে গেছেন। ১৯৯৫ সালে তিনি গেম থিউরিতে অসামান্য অবদান রাখার কারণে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান।

এটা সারা পৃথিবীতেই বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত মানষিক রোগ। আমাদের দেহের যেমন বিভিন্ন রোগ হয় তেমনি মস্তিষ্কের ও বিভিন্ন রোগ হয়। কিন্তু দেশে দেশে এই রোগকে বিভিন্ন দৃষ্টি তে দেখা হয়েছে। কোন জায়গায় বলা হচ্ছে জ্বীনে ভর করেছে, কোন জায়গায় বলা হচ্ছে কালী ভর করেছে ইত্যাদি। আমদের দেশে সিজোফ্রেনিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে বদ্ধমূলভাবে হয় পাগল হিসেবে ট্রিট করা হয় নতুবা জ্বীন বা কালী ভর করেছে এভাবে দেখা হয়। সামাজিকভাবেও এই রোগীদের হেয় চোখে দেখা হয়, সেজন্য অনেকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে চান না যদি জানাজানি হয়ে যায় এই ভয়ে।
আমাদের দেশের সবগুলো জ্বীনে ধরার গল্প গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সেগুলোর বেশিরভাগ হয় সিজোফ্রেনিয়া না হয় ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি সিনড্রোম (dissociative identity disorder) এ ভুগছে। এই রোগিরা সাধারণত হ্যালুসিনেশনে ভোগে, অন্যকে বিশ্বাস করতে চায় না, অসংলগ্ন চিন্তা, অসংলগ্ন আচরণ করে। যদিও তাদের চিন্তা, তাদের আচরণ রোগীদের শিক্ষা, ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে। যেমন, রোগী যদি মুসলমান হয় তবে দেখা যায় সে হয়ত ভাবছে তার উপর জ্বীন ভর করছে। আবার সে যদি হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয় তবে তার ধারণা হতে পারে তার উপর কালী ভর করেছে। রোগীর বয়স অল্প হলে একরকম আচরণ করে আবার বয়স বেশি হলে অন্যরকম আচরণ করে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা মনে করে কেউ তাদের হুকুম করছে, সে সেই হুকুম মান্য করে চলছে। সেই গায়েবি হুকুমের ফলে অত্যন্ত মারাত্মক জিনিসও করে বসতে পারে তারা। হঠাৎ যদি সে গায়েবী আওয়াজ শোনে এখনই তাকে বাস থেকে নামতে হবে, দেখা যাবে সে বাস না থামিয়ে অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করেই বাস থেকে নেমে পড়ছে এবিং দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে।

সাধারণত কিশোরী মেয়েদের এই রোগে আক্রান্তের হার বেশি। সেজন্য গ্রামাঞ্চলে কোন মেয়ে যদি এই রোগে আক্রান্ত হয় তবে নিশ্চিতভাবেই ধরে নেওয়া হয় যে তার উপর জ্বীনের আছর পড়েছে। এমনও উদাহরণ আছে যে, রাতের বেলা কোন মেয়ে ৬০ ফুট উচ্চতার তাল গাছে চড়ে বসে আছে। হ্যালুসিনেশনে ভোগার কারণে সে গায়েবী আওয়াজ শুনতে পারে এমনকি দৃশ্যকল্পও তৈরি করে নিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্তের শরীরের শক্তি বেড়ে যাওয়াকে চিহ্নিত করে বলা হয়, জ্বীন যদি তার উপর ভর না করে তবে এতো শক্তি পেলো কোথা থেকে। আমরা জানি সিজোফ্রেনিয়া রোগীদের কিংবা সাধারণ মানুষেরও যদি 'এড্রেনালিন রাশ' অর্থ্যাৎ এড্রেনালিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় তবে তার শরীরের শক্তি সাময়িক ভাবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ বেড়ে যেতে পারে। এড্রেনালিন রাশের সময় রোগীর বুদ্ধি ও চিন্তা বেশ তীক্ষ্ণ হতে পারে। কেউ দেখলে অবাক হয়ে যেতে পারে এরকম অসামান্য ভাবে পুরো কবিতা আবৃত্তি করে ফেলছে বা ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে সে হয়ত স্বাভাবিক অবস্থায় এরকম মুখস্ত কবিতা বলতে পারবে না বা ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলতে পারবে না। জ্বীনে ধরার আরেকটা অকাট্য প্রমাণ হাজির করা হয় যখন কবিরাজের কাছে জ্বীন তাড়াবার জন্যে নিয়ে যায়। কবিরাজ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দুইটা জিনিস করে। প্রথমত, কবিরাজরা হিপনোটিজমের মাধ্যমে রোগী যে গায়েবী সত্ত্বার আদেশ মেনে চলছে বলে মনে করছে সে গায়েবী সত্ত্বাকে সামনে নিয়ে আসে। সে গায়েবী সত্ত্বা আসলে ঐ রোগীরই চিন্তাজগতের আলাদা ব্যাক্তিত্ব যেটা রোগী নিজেও বুঝতে পারেন না। সেভাবে কবিরাজ বা তান্ত্রিক অন্যদের বোঝান যে রোগীর কন্ঠ দিয়ে আসলে জ্বীন কথা বলছে। এসব ক্ষেত্রে এমনকি তান্ত্রিক কি উপহার চাই রোগীর পরিবারের কাছে থেকে সেটাও রোগীর মুখ থেকে বের করতে পারেন।

দ্বিতীয়ত যে কাজটা তারা করে সেটা হচ্ছে পর্দার আড়ালে সরাসরি জ্বীনের সাথে কথা বলা। সাধারণত কবিরাজ তার নিজের কন্ঠকে এমনভাবে পরিবর্তন করেন যে কেউ শুনলে অবাক হয়ে যাবে যে এই শব্দ কোথা থেকে আসছে৷ এটা যে প্রক্রিয়ায় কবিরাজরা রপ্ত করে সেটাকে বলা হয় 'ভেন্ট্রিলকুইজম'। এটার মাধ্যমে যে কারো কন্ঠ নকল করা যায়, এমনকি পশুপাখির কন্ঠও নকল করা যায় ভেন্ট্রিলকুইজমের মাধ্যমে। কোন কবিরাজ বা তান্ত্রিক যদি
জ্বীনের সাথে এইভাবে জ্বীনের সাথে কথা বলে তবে এটা ধরে নেওয়া যায় যে তান্ত্রিক বা কবিরাজটি ভেন্ট্রিলকুইস্ট।

সিজোফ্রেনিয়া রোগের ক্ষেত্রে মস্তিস্কে পরিবর্তন নিয়ে আসে সেজন্য এইরকম অসংলগ্ন আচরণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিশেষজ্ঞ বলেন, সিজোফ্রেনিয়া কোন একক রোগ নয়, এটি আটটি ভিন্ন ধরনের সমস্যার সমন্বিত রূপ।

সিজোফ্রেনিয়া রোগের ক্ষেত্রে দুই ধরণের চিকিৎসা যুগপৎ চালাতে হয়।
এক, ঔষধ প্রয়োগ দুই, মানসিক কাউন্সিলিং।
একটি গবেষণায় দেখা যায় চিকিৎসা করলে সিজোফ্রেনিয়া রোগীদের প্রায় ২৫ ভাগ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়, ৫০ ভাগ ঔষধ ব্যবহারে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারে এমনকি জন ন্যাশের মত এবেল প্রাইজ বা নোবেল পুরস্কারও জিততে পারে। তবে প্রায় ২৫ ভাগ রোগী সাধারণত ভালো হয় না।

আরেক ধরনের মানসিক সমস্যা আছে যেটাকে বলে ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি সিনড্রোম (dissociative identity syndrome)। এই রোগটির সাথে এপিলেপ্সি(মৃগীরোগ) ও হিস্টিরিয়ার মিল আছে। এই রোগিদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগই দেখা যায় পূর্বে তারা বাইপোলার ডিসঅর্ডারে( ইমোশোনালি খুব দ্রুত মুড পরিবর্তন হয় সেটা মুহুর্তেই প্রচণ্ড ক্ষিপ্র হয়ে যেতে পারে বা অবসন্ন হয়ে যেতে পারে) ভুগতেন।
এই রোগে আক্রান্তরা নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েক ধরণের সত্ত্বাকে ধারণ করতে পারে। এই রোগে আক্রান্তরা তাদের ব্যাক্তিত্বের পরিবর্তন তারা ধরতে পারেন না বা অন্য ধরনের ব্যাক্তিত্ব স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারেন না। আপনারা যারা আলফ্রেড হিচককের বিখ্যাত 'Psycho' সিনেমাটা দেখে থাকেন সেখানেও এই রকম ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি সিনড্রোম রোগীর দেখা মেলে।
সিজোফ্রেনিয়ার মতো এই রোগে আক্রান্ত দেরও স্বাভাবিকভাবে ধরা হয় তাদের উপর জ্বীন ভর করেছে। সিজোফ্রেনিয়া রোগীর মতো তাদেরও বেশ আত্মহত্যার প্রবণতা আছে। এই রোগে আক্রান্তদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে শৈশবে কোন ট্রমা বা যুদ্ধের মতো ভয়ংকর কোন বিষয়ের অভিজ্ঞতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই রোগ থেকে পুরোপুরি নিরাময়ের কোন চিকিৎসা এখনো নাই। কিন্তু কিছু ওষুধ আছে যেগুলোর সাথে যথাযথ মানষিক কাউন্সিলিং করালে কিছুটা স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারে।

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ্যালুসিনেশন/ ডিল্যুশন কেবল সিজোফ্রেনিয়া বা ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি সিনড্রোম এর ক্ষেত্রেই হয় তা না। শরীরে ভিটামিম বি১ এর ঘাটতি হলে বা লবণের ঘাটতি হলে, বা বেশি মাত্রায় কার্বন মনো অক্সাইড এর গ্রহণ করলে বা স্লিপ প্যারালাইসিস, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে বা অধিক মাত্রায় মাদক গ্রহণ করলে হ্যালুসিনেশন বা ডিল্যুশনের মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

ইউটিউব ভিডিও লিংক- https://m.youtube.com/watch?v=DET-9K4ukLo&feature=youtu.be

নাসা এবং ইসা (European Space Agency) এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজই প্রকাশিত হল এ পর্যন্ত তোলা সূর্যের সবথেকে নিকটতম ছবি। সু...
17/07/2020

নাসা এবং ইসা (European Space Agency) এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজই প্রকাশিত হল এ পর্যন্ত তোলা সূর্যের সবথেকে নিকটতম ছবি।

সুর্য থেকে মাত্র ৭.৭ কোটি কিলোমিটার দুরূত্বে থেকে ১৭ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের এই ছবিটি তুলেছে সোলার অরবিটার স্যাটেলাইট। এই ছবিটি সুর্যের পৃষ্ঠে তীব্র অতিবেগুনী অঞ্চল যেখানে তাপমাত্রা প্রায় ১০লক্ষ ডিগ্রি।
ছোট ছোট তীরচিহ্নিত স্থানগুলো হচ্ছে ক্ষুদ্র সৌর শিখা। মূলত এগুলোই আমরা প্রথমবারের মত দেখতে পাচ্ছি। নাসা এগুলোর নাম দিয়েছে "ক্যাম্প-ফায়ার"।

তথ্যসূত্র - https://go.nasa.gov/2WpT5nW
https://bit.ly/3ezhHAW

14/07/2020
কুসংস্কার মুক্ত মনে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা: ধূমকেতু 'NEOWISE' পর্যবেক্ষণ করুন----------------------------------------------...
13/07/2020

কুসংস্কার মুক্ত মনে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা:
ধূমকেতু 'NEOWISE' পর্যবেক্ষণ করুন
------------------------------------------------------

১৪ই জুলাই থেকে আমরা আকাশে দেখতে চলেছি নতুন আবিষ্কৃত এক ধূমকেতু, যার নাম 'NEOWISE'।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গত কয়েকদিন ধরে এই ধূমকেতুকে দেখা যাচ্ছে। আমাদের দেশে ১৪ই জুলাই থেকে আগামী কুড়ি দিন ধরে উত্তর-পশ্চিম আকাশে সূর্যাস্তের পর প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে এই ধূমকেতুকে খালি চোখে দেখা যাবে।

গত মার্চ মাসের 27 তারিখে নাসার Near-Earth Object Wide-field Infrared Survey Explorer, or NEOWISE এর মাধ্যমে এই ধুমকেতুটির প্রথম দেখা পাওয়া যায়। তাই ধূমকেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে C/2020 F3 NEOWISE অথবা সংক্ষেপে নিওয়াইস(NEOWISE)। তারপরে জুলাই মাসে পার্কার সোলার প্রোবও ধূমকেতুটির ছবি তোলে। নিচে এই ধূমকেতুটির যে পথ ধরে আমাদের 'আকাশগঙ্গা' (Galaxy) ছায়া পথে ঘুরে বেড়াবে তা ছবিতে দেখান হয়েছে এবং সেখানে সূর্যের অবস্থানও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান এবং মহাকাশ থেকে ধূমকেতুটিকে কেমন দেখা যাচ্ছে তাও ছবিতে রয়েছে।

আমাদের পৃথিবীর বাইরে যে বিশাল মহাবিশ্ব রয়েছে যেখানে প্রতি মুহূর্তে শত শত বিচিত্র সব ঘটনা ঘটে চলেছে তা বিজ্ঞানীরা অতীতের ন্যায় ধারাবাহিক ভাবে আবিস্কার করে চলেছেন। মাঝেমধ্যে তার খুব সামান্যতম অংশ আমরা পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখার সুযোগ পাই। যেমন সূর্য গ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ, শুক্রের সূর্য অতিক্রমণ, 1997 সালে হেলবপ্ ধুমকেতুর আগমন, উল্কা বৃষ্টি ইত্যাদি। তেমনই এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনা হলো এই NEOWISE ধূমকেতুর আগমন।

(আপনি, আপনার এলাকা থেকে কি দেখলেন এবং কেমন দেখলেন, আপনার অভিজ্ঞতা অবশ্যই কমেন্ট বক্স এ জানাতে ভুলবেন না।)

সংগ্রহ- Breakthrough Science Society

মেরি কুরি ১৯৩৪ সালের আজকের এই দিনে অনেক বেশি তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসার কারণে এপ্লাস্টিক এনেমিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু...
04/07/2020

মেরি কুরি ১৯৩৪ সালের আজকের এই দিনে অনেক বেশি তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসার কারণে এপ্লাস্টিক এনেমিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

উনার ল্যাবরেটরি ডায়েরি(১৮৯৯-১৯০২) আজো তেজস্ক্রিয়। এই তেজস্ক্রিয়তা আরো ১৫০০ বছর ধরে টিকে থাকবে।

04/07/2020
ম্যারি ক্যুরি। বিজ্ঞানের ইতিহাসে যেসব বিজ্ঞানীদের অবদান অনস্বীকার্য ম্যারি ক্যুরি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। সমগ্র জীবনেই তিঁন...
04/07/2020

ম্যারি ক্যুরি। বিজ্ঞানের ইতিহাসে যেসব বিজ্ঞানীদের অবদান অনস্বীকার্য ম্যারি ক্যুরি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। সমগ্র জীবনেই তিঁনি মানবকল্যাণের কথা ভেবেছেন এবং কাজ করে গেছেন।তাঁর সমগ্র জীবনের উপর দৃষ্টিপাত করলে এই সত্যিই আমদের উপলব্ধি হয়।

মারি ক্যুরি ১৮৬৭ সালের ৭ই নভেম্বর পোল্যান্ডের ওয়ার্সাতে জন্মগ্রহণ করেন।পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন।তখনকার পোল্যান্ডে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার কোনো সুযোগ না থাকায় এবং পারিবারিক দরিদ্রতায় ম্যারি ক্যুরির শিক্ষা জীবন খুব কঠিন ছিলো। ১৯৮৩ সালে সরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পদার্থবিদ্যায় প্রথম হন এবং ১৯৮৪ সালে গণিতে প্রথম বিভাগে দ্বিতীয় হয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।

গবেষণার কাজে সহায়তার প্রয়োজনে তরুণ ফরাসি পদার্থবিদ পিয়ের ক্যুরির সঙ্গে পরিচয় ও বিবাহ সম্পন্ন হয়।মানবতাবোধ ও বিজ্ঞান সাধনাই ছিলো তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।এরপর বিশেষ কোনো সুযোগ সুবিধা এবং সাহায্য ছাড়াই অদম্য ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে গড়ে উঠল বহু আবিষ্কারের ইতিহাস।

রেডিয়াম-পোলেনিয়াম আবিষ্কার, তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিষ্কাশন, যুদ্ধে আহত সৈন্যদের এক্স-রে পরিক্ষার ব্যবস্থা করা ছাড়াও তাঁর বহু উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।তিনিই একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি পদার্থ এবং রসায়ন এই দুই বিভাগে নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেন।

রেডিয়াম সহ কোনো আবিষ্কারের স্বত্ত্ব কুক্ষিগত করা তিনি যৌক্তিক মনে করেননি। সকল আবিষ্কারের উপাদান সমাজ থেকেই আসে এবং তা ব্যবসায়িক স্বার্থে নয় মানব কল্যানেই ব্যবহৃত হওয়াই উচিত বলেই তিনি মনে করতেন।তাই তিনি বলেছেন-"আমাদের আবিষ্কারের যদি কোনো ব্যবসায়িক সাফল্য থাকে তা আকস্মিক ঘটনা মাত্র,তার দ্বারা লাভবান কখনোই উচিত নয়।"

১৯৩৪ সালের ৪ঠা জুলাই এই মহীয়সী বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে।বর্তমান নীতি-নৈতিকতা,মূল্যবোধহীন সমাজে তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।

30/06/2020

[View]

From: RT’s Page.

29/06/2020

Science in Ancient India: Reality vs Myth, by Prof. Soumitro Banerjee

From: Breakthrough Science Society

রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃৎ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশের ১২৮ তম জন্মদিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য--------------------------------------ঊনবিংশ...
29/06/2020

রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃৎ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশের
১২৮ তম জন্মদিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য
--------------------------------------
ঊনবিংশ শতক ভারতের ইতিহাসে এক গৌরবান্বিত অধ্যায়। এই সময় ভারতে শিক্ষা,সাহিত্য,বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সহ সমস্ত ক্ষেত্রেই এক নতুন চিন্তাধারার আবহ দেখা যায়। নবজাগরণের এই অধ্যায়ের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হলেন বরেণ্য বিজ্ঞানী,পরিসংখ্যান বিদ্যার জনক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ। তবে, পরিসংখ্যান বিদ্যাচর্চার পাশাপাশি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

১৮৯৩ সালের ২৯শে জুন কলকাতার ২১০ নম্বর বিধান সরণির মহলানবীশ পরিবারে তাঁর জন্ম। পিতা প্রবোধচন্দ্র একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন। মাতা নীরদবাসিনী ছিলেন ডাঃ নীলরতন সরকারের ছোট বোন। ১৯০৪ সালে ব্রাহ্মবয়েজ স্কুলে শিক্ষা জীবনের সূত্রপাত। পাঠ্য বইয়ের বাইরেও অন্যান্য বই পড়তে তিনি প্রবল আগ্রহী ছিলেন। ১৯০৮ সালে এন্ট্রাস পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯১২ সালে প্রেসিডেন্সি থেকে পদার্থবিদ্যায় অনার্স পাশ করে, উচ্চশিক্ষা লাভ করতে তিনি ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন।

১৯১৫ সালে প্রশান্তচন্দ্র ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আসেন কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে তিনি আর ফিরে যেতে পারেননি। তা ছিল তার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। কিংস কলেজে শিক্ষক উইলিয়াম হেরিক ম্যাকলে তাঁর পড়াশুনার প্রতি আবেগ লক্ষ করে তাকে কার্ল পিয়ার্সন সম্পাদিত Biometrica পড়ার কথা বললে, এই বইয়ের প্রবল আকর্ষণে তিনি সবকটি খন্ড কেনেন এবং বিশ্বযুদ্ধের কারনে জাহাজ কলকাতা পৌঁছতে বিলম্বকালে জাহাজে বসেই সবকটিখন্ড পড়ে ফেলেন। যা ছিল এক অনন্য ইতিহাস। মহলানবীশের জীবনে পদার্থবিদ্যার থেকে রাশিবিজ্ঞান চর্চা করতে এবং তাঁর পরবর্তীতে রাশিবিজ্ঞান নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায় এই গ্রন্থ পথিকৃতের ভূমিকা পালন করে।

এরপর তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যায় অধ্যাপনা শুরু করেন। প্রেসিডেন্সিতে ৩৩বছরের শিক্ষকতা জীবনে পদার্থবিদ্যার সাথে সাথে জ্যামিতি, সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লষণ সহ সামাজিক বহু বিষয়ে ছাত্রদের সাথে আলাপ আলোচনা করতেন। তিনি মনে করতেন কোনো বিষয়ে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে হলে কেবলমাত্র একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। পরবর্তীতে কলেজের সাথে তাঁর সম্পর্ক এমনই জনপ্রিয়তায় পৌঁছয় যে, শিক্ষাদফতর চাইলেও তাঁকে প্রেসিডেন্সি থেকে বদলি করা যায়নি।

গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি সর্বদা প্রাধান্য দিয়েছেন তৎকালীন সময়ে অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বিষয় যেমন- শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যা,সাংস্কৃতিক সমস্যা,পরিবেশগত সমস্যা,প্রাকৃতিক দুর্যোগ,কৃষিক্ষেত্রে সমস্যা ইত্যাদি। এই সকল সমস্যার সমাধানে প্রশান্তচন্দ্রের গবেষণালব্ধ জ্ঞান পথনির্দেশ করে। এইভাবেই অর্জিত জ্ঞানকে হাতিয়ার করে সামাজিক কর্তব্য পালন করেন তিনি।

প্রশান্তচন্দ্রের অন্যতম আবিষ্কার 'D-square statistics' বা 'মহলানবীশ দূরত্ব' এর সাহায্যে মনুষ্য জাতির উদ্ভব, নৃমিতিক সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা করা যায়। কম্পিউটার, মনোবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ববিদ্যা, কৃষিবিজ্ঞান প্রভৃতিতেও তাঁর আবিষ্কারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এমনকি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফল নির্ণয়েও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

৫০ বছর স্ট্যাটিস্টিক্স নিয়ে তিনি কাজ করে গেছেন। মহামারী, জাতির উৎস, জনসংখ্যা, বায়ুর চাপ-তাপ, কৃষির সম্প্রসারণ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর অবদান রয়েছে। তাঁর অন্যতম আর এক অবদান, তিনি আবহাওয়া দপ্তরের আধুনিকীকরণ করেন। বর্তমানে সঠিক আবহাওযার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে যার অবদান অনস্বীকার্য। বন্যার কার্য-কারন সম্পর্ক ও নিয়ন্ত্রণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। স্বাধীনতার পর দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে তিনি সর্বদা তৎপর ছিলেন। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জাতীয় আয় গণনা,দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কাঠামো নির্মাণে তথা ভারী ও ইস্পাত শিল্প, বিদ্যুৎ যোগাযোগ, সেচ ব্যবস্থায় তাঁর সক্রিয় ভূমিকা লক্ষ করা যায়।

প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ রাশি বিজ্ঞানের পথিকৃত। তিনি রাশি বিজ্ঞানকে ইঞ্জিনিয়ারিং এর মত ফলিত বিজ্ঞান হিসেবে চালু করেন। তিনি Indian Statistical Institute প্রতিষ্ঠা করেন ও প্রথম পর্বে ISI থেকে 'সংখ্যা' পত্রিকা প্রকাশিত হয়। সেই পত্রিকায় পরিসংখ্যান বিদ্যার তথ্য ছাড়াও সামাজিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক ইত্যাদি বিষয়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে দেশ বিদেশের কাছে পরিসংখ্যানবিদ্যা চর্চার এক শ্রেষ্ঠ বিশ্বজনীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি নিয়ে বিরাজমান।

১৯২১ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতীতে কর্মসমিতি, শিক্ষাসমিতি, পরিচালন সমিতি সহ একাধিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রশান্তচন্দ্র। বিশ্বভারতীর সংবিধান রচনা, মুদ্রণের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, একাধিক বিদেশ সফরে তিনি ও তাঁর স্ত্রী কবিগুরুর সাথী হয়েছেন। ফ্যাসিস্ট মুসোলিনী রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যকে বিকৃত করে ব্যবহার করতে চাইলে, প্রশান্তচন্দ্র তার অনুবাদের মাধ্যমে সে চালাকি ধরতে সাহায্য করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ফ্যাসিস্ট জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত লাল ফৌজের অদম্য লড়াই এবং অগ্রগতির সংবাদ প্রশান্তচন্দ্রের থেকে পাওয়ার জন্য কবিগুরু তাঁর অন্তিম সময়ে উদগ্রীব হয়ে থাকতেন।

পরিসংখ্যান বিদ্যার পাশাপাশি সামাজিক কর্তব্য পালন, নাগরিক হিসেবে নানান নৈতিক দায়িত্ব পালনে প্রশান্তচন্দ্রের অবদান অবিস্মরণীয়। বিজ্ঞান গবেষণা, জাতপাত ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞান সচেতনতা গড়ে তোলায় তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তাঁর অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর তাঁর জন্মদিবসকে 'পরিসংখ্যান দিবস' হিসেবে পালন করা হয়। ১৯২৭ সালের ২৮শে জুন প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশের জীবনাবসান ঘটে। আজ ১২৮তম জন্মদিনে বিজ্ঞানী প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশকে আমরা বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।

তথ্যসূত্র:
ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা 'প্রকৃতি', চতুর্দশ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা

Address

Nabinchandra Sen Public Library, College Road
Feni
3900

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কিউরিওসিটি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to কিউরিওসিটি:

Videos

Share

Category



You may also like