আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের সময় থেকে ঐতিহাসিক কারণে আদিবাসীরা বঞ্চিত ও শোষিত। আমাদের দেশেও আদিবাসী মানেই নিজবাসভূমে পরবাসী একশ্রেণীর অসহায় মানুষ যাদের জায়গা-জমি, পাহাড়-বন, আবাসস্থল থেকেও নেয়। যাদের একসময় ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল, এখন বিপন্ন। এটা প্রণিধানযোগ্য যে, জাতিসংঘ আদিবাসী বা ইনডিজিনাস পিপলস্ শব্দের কোনো সংজ্ঞা দেয়নি, কারণ আদিবাসীরা আন্তর্জাতিকভাবে এটি চায়নি। এর মূল কারণ হলো, আদিবাসীদের আত্ম-পরিচয়ের
অধিকার। নিজেদের পরিচয় নিজেরাই নির্ধারণ করবে এটাই ছিল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মূলনীতি। তাই আদিবাসী জাতিসমূহ ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ হিসেবে নয়, ’আদিবাসী’ হিসেবেই নিজেদের স্বীকৃতি চায়। আদিবাসীদের অস্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না ।‘‘এ দেশের বাঙালিদের যদি অধিকার থাকে তাহলে আদিবাসীদেরও অধিকার রয়েছে। এটা শুধু বাঙালির রাষ্ট্র নয়, আরো অনেক জাতির রাষ্ট্র। কে কোথায় প্রথম আবির্ভূত হলো বা বসতি গড়ে তুললো সেটা মোটেই বিবেচ্য বিষয় নয়। আদিবাসী বলা হলে অন্যরা অ-আদিবাসী বা বহিরাগত হয়ে যাবে, সেটাও না। সরকার দেশের ৪৬টির অধিক আদিবাসী জাতিসমূহের প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের হৃদস্পন্দন অনুভব করবে। শান্তি চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করবে। আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করবে। পার্বত্য এলাকার মত সমতলের আদিবাসীদের জন্যও ভূমি কমিশন করবে এটাই প্রত্যাশা সবার।