আদর্শ
সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার (সিএনসি) বাংলাদেশের অনন্য স্বাতন্ত্র্যে বিশ্বাসী একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। প্রত্যেক জাতির স্বকীয় জীবনাচরণ ও ঐতিহ্যের মধ্যেই তার সংস্কৃতির শিকড় প্রোথিত। এই শিকড়ের রসে সঞ্চিত পরিশুদ্ধ ব্যক্তিমনই হতে পারে প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃতিদীপ্ত। আবার এই মানুষগুলোর সংস্কৃতি-মানুসের পরিশুদ্ধ চেতনার প্রতিফলনেই সভ্য-সুন্দর সমাজ বা দেশ গড়ে ওঠে। আপন ঐতিহ্যশ্রয়ী সংস্কৃতি যে পৃথক জাতিস
ত্তা নির্মাণ করে তা-ই জাতি হিসেবে সকল বিজাতীয় অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে মানবগোষ্ঠীকে নিজ নিজ পরিচয় ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। জাতীয় স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্যের রক্ষাকবচ মূলত আপন সংস্কৃতির অবিশ্রান্ত লালনের মধ্যেই নিহিত। কিন্তু সংস্কৃতির শিকড় শূন্য থেকে উত্থিত হয় না। এ জন্য বিশ্বাস ও মূল্যবোধের একটি রূপময় বীজ অত্যাবশ্যক। সিএনসি বিশ্বাস করে, যে শিল্পবোধ ও শিল্পচর্চার মধ্যে ধর্মবোধের অভিলাষ নেই তা মানবকল্যাণকারী শিল্প সৃষ্টিতে সক্ষম নয়। কারণ, বিশ্বস্রষ্টার অভিলাষের সাথে একাত্ম-হৃদয় হয়ে থাকে নিজস্ব ধ্যানে পরিণত করতে পারলেই সৃষ্টির অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য সুষমা উপলব্ধি করা সম্ভব। বস্তুত, স্রষ্টার ইচ্ছা আর মাটির মানুষের অন্তর্মিলনের পারম্পর্যে আমাদের স্বকীয় ও ঐশ্বর্যশীল মানবিক সাংস্কৃতিক ধারা গড়ে উঠেছে। আদর্শিক এই বীজকে সমগ্র জীবনে শিল্পসম্মত উপায়ে অঙ্কুরোদগম ও প্রস্ফুটিত করে একটি সংস্কৃতিময় মুক্ত স্বদেশ নির্মাণ করা সম্ভব।
সুতরাং, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, পদ্মা-মেঘনা-কর্ণফুলি বিধৌত পাললিক এ ভূমিতে হাজার বছর ধরে প্রবাহিত মানবকল্যাণমূখী সংস্কৃতির ধারা আমাদের অমূল্য উত্তরাধিকার। দেশের সামগ্রিক
জীবনচর্চায় সেই ঐতিহ্য ও তার প্রতিবিম্বের প্রতিফলন ঘটিয়ে আমাদের স্বাধীন জাতিসত্তাকে মজবুত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ তথা আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম সেই ঐতিহ্যের দিকনির্দেশক। এই চেতনার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে সংস্কৃতিময়, প্রাণবন্ত, উদার, মননশীল ও সহাবস্থানের সমাজ নির্মাণের জন্য আরমা অবিরাম কাজ করে
যাবো।