25/11/2024
বাজারে শীতের পোশাক, ফুটপাতে বিক্রি জমজমাট
মোঃ শামীম হোসেন - স্টাফ রিপোর্টার
বড় দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানেও চলে এসেছে শীতের পোশাক। দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। ইতোমধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বইছে শীতের হিমেল হাওয়া। খুলনায় শীতের আমেজ এখনও তেমন না থাকলেও শেষ রাতের শীতল আবহাওয়া গায়ে কাঁথা বা চাদর জড়াতে বাধ্য করছে। শীতের সঙ্গে বাড়ছে গরম কাপড়ের চাহিদা। দাকোপ উপজেলায় বড় দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানেও চলে এসেছে শীতের পোশাক। সপ্তাহখানেক আগে থেকে বেচাবিক্রিও শুরু হয়েছে। শপিং মলে এখনও তেমন বেচাবিক্রি চোখে না পড়লেও ফুটপাতে শীতের কাপড়ের আগাম বেচাকেনা ভালোই চলছে। ফুটপাতে শীতের কাপড়ের আগাম বেচাকেনা ভালোই চলছে বিকাল থেকে রাত অবধি বিক্রেতাদের হাঁকডাকে জমজমাট হয়ে উঠেছে দাকোপের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো। সোমবার (২৫ নভেম্বর) দাকোপের বাজুয়াসহ বিভিন্ন বাজারের ফুটপাত ও দোকানে এমন চিত্র দেখা যায়। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরাও শীতবস্ত্র কিনতে ফুটপাতের দোকানে ভিড় করছেন। শীতের জ্যাকেট, চাদর, গেঞ্জি, হুডি, মাফলার, পুরনো কমফোর্টার, হাতমোজা, কান-টুপিসহ সবধরনের শীতবস্ত্রই মিলছে এসব দোকানে। অনেক দোকানে আবার শুধুই শিশুদের শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে। বাজুয়া বাজার এলাকায় ফুটপাতে শীতবস্ত্র বিক্রি করতে এসে হাকমত বলেন, ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করেই সংসার চালাই। সামনে শীতের মৌসুম, তাই শীতবস্ত্র বিক্রি শুরু করেছি। গতবছরের অনেক শীতের কাপড় রয়ে গেছিল। এখন সেগুলো কম দামে বিক্রি করছি। ফুটপাতের অনেক দোকানে শুধু শিশুদের শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে এই বিক্রেতা আরও বলেন, এ বছর নতুন করে যেসব কাপড় আসবে সেগুলোর দাম আগের তুলনায় একটু বেশি। এখন সব ১০০ টাকা করে বিক্রি করছি। নতুন কাপড়ের দাম আরেকটু বেশি হবে। পুরনো কাপড় বিক্রি শেষ হয়ে গেলে নতুন কাপড় বিক্রি করবো। গতবারের তুলনায় এবার এক লটে দু'আড়াই হাজার টাকা বেশি দিয়ে কাপড় কিনতে হয়েছে। ফুটপাতে জমজমাট বেচাকেনা জমে উঠেছে শীতের পোশাক বিক্রি। এছাড়াও দাকোপের সকল হাট বাজার এলাকা জুড়ে জমজমাট বিক্রি দেখা গেছে। বাজুয়া খেয়াঘাটের সামনে শিশুদের শীতের পোশাক বিক্রি করছেন শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শীতের পোশাক পাইকারি হিসেবে বেশি দরে কিনতে হয়েছে। বেচাবিক্রিও মোটামুটি ভালো। শীত বাড়লে বেচাবিক্রি আরও বাড়বে।
ফুটপাত থেকে সন্তানের জন্য শীতবস্ত্র কিনতে এসেছেন রাহিমা আক্তার নামের একজন গৃহিণী। তিনি বলেন, শীত শুরুর আগেই বাচ্চাদের জন্য শীতের পোশাক নিয়ে নিচ্ছি। শীত বাড়লে আবার দাম বেড়ে যাবে। তাই আগেভাগেই কিনে ফেলছি। সাতশো টাকার মধ্যে তিন বাচ্চার শীতের পোশাক কিনে ফেলেছি। ফুটপাত থেকে নিজের জন্য সোয়েটার কিনতে আসা ননী নামে একজন ভ্যানচালক বলেন, দিনে শীত না পড়লেও রাতে ভ্যান চালাতে ঠান্ডা লাগে। তাই একটা সোয়েটার কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম চাইছে তিনশ’ টাকা। দুইশ’ টাকা বলছি, কিন্তু দোকানদার কোনোভাবেই দিচ্ছে না।বিক্রেতাদের আশা, শীত বাড়লে বেচাবিক্রি আরও বাড়বে এখনও জমে উঠেনি বেচাকেনা ইতোমধ্যে বড় বড় বিপণিবিতান,শপিং মল ও ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে শীতের পোশাক আসলেও বেচাকেনা এখনও তেমন জমে উঠেনি। বিপণিবিতান ও শপিং মলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নভেম্বরের শুরুতেই শীতের পোশাক চলে এসেছে দোকানে। তবে শীতের পোশাক ক্রয়ে ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ নেই। বাজুয়া চড়ার বাঁধে পোশাক বিক্রেতা দেবাশীষ বলেন, ১৫-২০ দিন আগে শীতের পোশাক দোকানে এসেছে। কিন্তু বেচাকেনা হচ্ছে না। দিনে দুই-চারটা কাস্টমার পাই। তাও দামাদামি করে চলে যায়। গতবছরও বেচাকেনা তেমন ভালো হয়নি। প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল পড়ে ছিল। আশা করছি এবার ভালো বেচাকেনা হবে। বড় বিপণিবিতান বা শপিং মলে বেচাকেনা তেমন দেখা না গেলেও ইজি ফ্যাশনের দোকানে গিয়ে ক্রেতাদের মোটামুটি ভালো উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। শরিফ আহমেদ নামে একজন ক্রেতা বলেন, অন্যান্য জায়গা থেকে চড়া মূল্যে কেনার চেয়ে ব্র্যান্ডের দোকানে একদামে পণ্য কেনাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এখানকার প্রোডাক্টগুলো মানসম্মত। শিমুল নামে ইজি ফ্যাশনের একজন কর্মকর্তা জানান, শো রুমে শীতের পোশাক এসেছে আরও দুই সপ্তাহ আগে। বেচাবিক্রিও হচ্ছে মোটামুটি, তবে এখনও তেমন জমেনি। এখন কেবল অগ্রহায়ণ মাস চলছে। পৌষ মাসের শুরুতে বিক্রি ভালো হয়। তখন ক্রেতাদের চাপে দম ফেলার সুযোগ থাকে না। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব দোকানেই শীতের পোশাক চলে এসেছে। তবে বেচাবিক্রি তেমন না থাকায় অধিকাংশ বিক্রেতা অবসর সময় পার করছেন। দোকানদার লাবনী বলেন, ব্যবসা করতে বরাবরই ধৈর্য দরকার। শীতের পোশাক আনছি, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। কিন্তু ধৈর্য হারাচ্ছি না। কারণ আমরা জানি, শীত বাড়লে বিক্রি বাড়বে। এখন শীত কম পড়ছে। তাই দামও তুলনামূলক কম। তবে শীত বাড়লে দামও বাড়বে বলে জানান এই বিক্রেতা।