~~ পুরানো অনুভূতি ~~
মুনিরার বাবা আর মাকে এক সাথে দেখেই মনে হল
এখানে আসাটা একদম ঠিক হয় নি । ওনারা যখন এখানে
আসে খুব জোর সম্ভবনা আছে যে মুনিরাও এই
বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছে । এখন দেখা হলে
গেলে সমস্যা হয়ে যাবে । আমি ওনাদের কাছ
থেকে নিজের মুখ লুকিয়ে যেই পেছন দিকে
সরে আসতে যাবো তখনই মুনিরাকে দেখতে
পেলাম । আমার দিকেই সরাসরি তাকিয়ে আছে !
ওর চেহারা দেখেই মনে হল ও আমাকে আমার
আগেই দেখতে পেয়েছে । বড় বড় চোখ
নিয়ে
আমার দিকে তাকিয়ে আছে । সেই আগের
দৃষ্টিতেই । আশ্চর্য ! তিন বছর হয়ে গেল তবুও
মেয়েটার চোখের চাহনী আমি একদম ভুলি নি ।
কিছু জিনিস হয় তো কখনও ভোলা যায় না । একবার
মনে হল পাশ কাটিয়ে চলে যাই । ওর বাবা দেখতে
পেলে হয়তো আবারও ঝামেলা করবে । হুমকি
ধামকিও দিতে পারে আগের
কিন্তু এভাবে দেখা হয়ে যাওয়ার মধ্যে তো আমার
কোন হাত নেই । আমি বিয়ের দাওয়াত খেতে
এসেছি । ওনারাও এসেছে, আমি তো আর
জেনে আসি নি । আমি হাটবো কি তার আগে মুনিরাই
আমার দিকে এগিয়ে এল । আমার কাছে এসে বলল
-পালানোর কথা ভাবছো ?
-পালাবো কেন ?
কথাটা বলতে গিয়ে গলাটা একটা কেমন যেন করে
উঠলো । ঠিক আগের মতই ।
-তিন বছর আগে যেভাবে পালিয়ে গিয়েছিলে ?
আমি কোন কথা না বলে চুপ করে থাকাই শ্রেয়
মনে করলাম । মুনিরা আমার দিকে সেই আগেই মত
করেই তাকিয়ে রইলো । আমার খুব সহজে যে
এর থেকে মুক্তি নেই সেটা বুঝে গেলাম ।
মুনিরাদের বাসায় চিলে কোঠায় আমি এক সময় ভাড়া
থাকতাম । অনেক দিন ছিলাম । মুনিরা তখন স্কুলে
পড়তো । প্রায়ই দিনেই বিকেলে ও ছাদে উঠে
আসতো । আমার সাথে গল্প করতো । ওর
বাবা নিজের ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আর মা তখন চাকরি
করে । মেয়েকে দেওয়ার মত সময় তাদের
কাছে ছিল না । আমি ছিলাম ওর কথা শোনার এক মাত্র
মানুষ ।
ও যখন কলেজে ওঠে তখন আমি ছোট খাটো
একটা জবে ঢুকেছি মাত্র । একদিন হঠাৎ করেই
শুনতে পেলাম মুনিরাকে নাকি ছেলে পক্ষ
থেকে দেখতে আসছে ।
কোন কারন নেই কিন্তু আমার খারাপ লাগতে শুরু
করলো খুব করে । সন্ধ্যার সময় বুঝতে পারলাম
যে মেয়েটাকে আমি বেশ পছন্দ করি এই জন্যই
আমার খারাপ লাগছে । কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা না ।
মুনিরা হয়তো আমার কথা কোন ভাববেও না ।
কিন্তু আমাকে ভুল প্রমান করে দিয়ে সন্ধ্যাবেলা
ও আমাকে এসে বলল যে ওর ছেলে পছন্দ হয়
নি । ও ঐ ছেলেকে বিয়ে করতে চায় না ।
আমাকে বিয়ে করতে চায় ।
আমি ওর কথা শুনে আকাশ
থেকে পড়লাম । এই মেয়ে বলে কি ! একে
তো ওর আর আমার পারিবাকির স্টাটাসের একটা
পার্থক্য তার উপর বয়সের একটা পার্থক্য তো
আছে ।
অবশ্য পড়ে বুঝতে আমার ঠিক অসুবিধা হল না ।
ওকে চিনি বেশ কয়েকব বছর ধরেই । ওর সাথে
আমার নিয়মিত যোগাযোগ হত, আমি যেমন ওকে
অনেক কথা বলতাম ও নিজেও আমাকে অনেক কথা
বলতো । এভাবে আমি যেমন ওকে পছন্দ
করেছি ও নিজেও তেমন ভাবেই আমাকে পছন্দ
করেছে । এটা হওয়াই স্বাভাবিক ।
কিন্তু মুনিরার বাবা এই ব্যাপারটা মোটেই স্বাভাবিক
মনে হল না । আমাকে এক সপ্তাহের মাঝেই বাসা
ছাড়তে বললেন । সাথে আরও কত কথা ! এমন সব
অপমান জনক কথা বলতে লাগলো যে আমি
পারলে মাটির সাথে মিশে যাই । আর তার জবাব
দেওয়ার