10/05/2023
একটা ওয়েব সিরিজ দেখার ইচ্ছা হয়েছিল, কিন্তু আমার চরকি বা হৈ চৈ এসব কিছু না থাকায় দেখা হয়নি।
আজ আবারও সে সিরিজের স্পন্সর পোস্ট সামনে আসলো। সেখানের একটা কমেন্ট খুব ভালো লাগলো।। তাই কমেন্ট টা পুরো টা কপি করে পোস্ট করলাম। আমরা কোথায় যাচ্ছি, আধুনিকতার নামে আমরা কত নোংরা হয়ে যাচ্ছি। আমাদের চিন্তা ভাবনা, সমাজ, পরিবার সব কে আমরা আধুনিকতার দোহাই দিয়ে নোংরা, বাজে,জঘন্যভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছি।
নিচে সেই বিশাল কমেন্ট টা,,,,,,
"বেশ কিছু বছর আগে পান্না মাস্টার নামক একজনের কাহিণী আমরা দেখেছিলাম। ছাত্রীদের সাথে অপকর্ম করতো। সেই সময় কোন এক আড্ডায় বন্ধুদের বলেছিলাম যে, আমরা সবাই আসলে সুযোগ না পাওয়া পান্না মাস্টার। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের ভিতর খুব অল্পকিছু আলোকিত তরুণ / তরুণী ছাড়া বাকি সবার লাইফস্টাইল, চিন্তা সব এইসব পান্না মাস্টারদেরই মতো।
একেকটা আড্ডার বিষয়বস্তুই থাকে কে কতজন মেয়ের সাথে কি কি করতে পেরেছে এসব। (মেয়েদের আড্ডায় কি হয় আমি জানি না।)
এমনকি বেস্টফ্রেন্ড নামক যে সার্কেল তৈরী করা হয় সেখানেও মেয়ে বন্ধুটির অনুপস্থিতিতে তার দেহ কত এঙ্গেলে ব্যবচ্ছেদ করা হয় আমরা সবাই এই বিষয়ে অবগত।
এগুলো সেই তখনকার কথা যখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। ইন্টারনেটের কল্যাণে পর্নগ্রাফি এত সহজলভ্য ছিল না। এখনকার বাস্তবতা হলো যা আমরা স্রেফ বলতাম, তা এখন বাস্তবায়ন করে এখনকার তরুণরা।
ঠিক এই প্রবৃত্তিকে আরো উস্কে দিতে এখনকার নির্মাতারা নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ তৈরী করছে। ঠিক ঐ জিনিসটাই তারা দেখাচ্ছে যা অবচেতন মনে কামনা করে যাচ্ছে হাজারো পথভ্রষ্ট তরুণ। তাইতো অশ্লীল গালিগালাজে পরিপূর্ণ নাটকগুলো জনপ্রিয়। লিভ টুগেদার, সমকামিতা, পিতামাতার চরম অবাধ্যতা এই বিষয়গুলোকে খুব সহজ করে তোলা হয়েছে।
রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পচন ধরেছে। মেরিটোক্রেসি বিলুপ্ত হয়ে লবিং, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশীশক্তি এসবই টিকে আছে। তাই পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হবে, আলোকিত মানুষ হবে এই ভাবনা বহু আগেই তরুণদের মাথা থেকে চলে গেছে। তাই তো স্কুলের বাচ্চারাও তেলবাজি শিখে গেছে। কারণ তারা দেখছে এটা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এরমাঝে কিছু তড়িঘড়ি করে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার টার্গেটে আছে। তবে ভাল, চিন্তাশীল তরুণরা নিদারুণ সংগ্রামী জীবনযাপন করছে, আল্লাহ তারুণ্যের এই অংশকে সফল করুণ।
যে জন্য এত লম্বা ভূমিকা টানলাম তা হলো, সন্ধ্যায় এক বন্ধু কল দিয়ে বললেন, জনপ্রিয় একটি ওয়েব সিরিজ দেখতে এবং এটা নিয়ে লিখতে। পুরো সিরিজ দেখার সময় নাই তাই বিভিন্নজনের রিভিউ দেখে মোটামুটি কাহিণী এবং ডায়লগ সব জানতে পারি। কাহিনীকার, নির্মাতা যে জঘন্যতম কাহিনী অবলীলায় আমাদের জন্য পরিবেশন করেছে তা জনপ্রিয় হবার আসল কারণ হলো ঐযে প্রথমে বললাম, আমরা সবাই আন্তরিকভাবে পান্না মাস্টার। নয়তো এইদেশে এত নোংরা কালচার (লিভ টুগেদার) এত ফ্রিকোয়েন্টলী দেখিয়ে তারা পার পেত না।
কিন্তু বাস্তবতা আমাদের এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে, তরুণদের স্বপ্নই এখন এলেন স্বপন হবার। আর কোন ভাল উদাহরণ তো নাই। জীবনের নিরাপত্তাই নাই, বাকিসব চাকরী, ব্যবসা, প্রতিষ্ঠা এসব তো দূর কি বাত। এভাবে চলতে থাকবে, আমরা আমাদের সন্তানদের বিদেশে পাঠাতে না পারলে সবসময় আতংকে থাকবো কবে এলেন স্বপনরা বা তাদের পৃষ্টপোষকরা আমাদের সন্তানদের গিলে খাবে। অথবা আমাদের ঘরেই তৈরী হবে আরো আরো এলেন স্বপন।
আমাদের কন্যারা পরিণত হবে মানুষের ছবি ধরে থাকা শিয়াল, কুকুর, হায়েনাদের শিকারে। আমাদের ঘরে ঢুকে আমাদের মা, বোন, কন্যাদের নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়ার কালচারও নরমাল করে তোলা হচ্ছে। এখন যা চলছে তা কি আমরা দশ বছর আগেও ভেবেছিলাম?
আরো দশবছর পরও এমনকিছু হবে যা এখন ভাবতে পারছি না।"