FAQIH MEDIA BD

FAQIH MEDIA BD আল্লাহ্ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের ফিকহ (প্রজ্ঞা) দান করেন। বুখারী-৭১

ইমামে আ'যম আবূ হানীফা (রহ.)-এর রচনা থেকে "আল্লাহ আরশের উর্ধ্বে রয়েছেন"-এর তাৎপর্য, ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) লিখেছেন,ونقرُّ ...
12/01/2024

ইমামে আ'যম আবূ হানীফা (রহ.)-এর রচনা থেকে "আল্লাহ আরশের উর্ধ্বে রয়েছেন"-এর তাৎপর্য,

ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) লিখেছেন,

ونقرُّ بأنّ الله على العرشِ استوى ‏من غير أن يكون له حاجةٌ إليه واستقرارٍ عليه ‏وهو حافظٌ للعرش وغير العرش من غير احتياجٍ ‏فلو كان محتاجًا لما قدر على ايجاد العالم و تدبيره كالمخلوق، و لو صار محتاجا الى الجلوس والقرار، فقبل خلقِ العرشِ أين كان الله تعالى؟ فهو منزه عن ذلك علوًا كبيرًا.

অর্থাৎ "আমরা স্বীকার করি যে, আল্লাহ আরশের উর্ধ্বে রয়েছেন, সেটির প্রতি কোনোরূপ প্রয়োজন বোধ করা ব্যতীত ও তার উপর অবস্থান করা ছাড়াই। অধিকন্তু তিনি আরশ সহ সকল কিছুরই সংরক্ষণকারী। যদি তিনি (আরশের প্রতি) প্রয়োজন বোধ করতেন, তাহলে তিনি মাখলূকের (সৃষ্টির) ন্যায় পৃথিবী সৃজন ও পরিচালনা করতে পারতেন না। আর যদি তিনি (আরশে) বসার এবং অবস্থান নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেন তাহলে (প্রশ্ন আসবে) আরশ সৃষ্টির আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ কোথায় ছিলেন? কাজেই তিনি তা থেকে (অর্থাৎ আরশে অবস্থান করা/বসে থাকা/উঠা থেকে) অনেক উর্ধ্বে।"

শরহু ফিকহিল আকবার পৃষ্ঠা ৭০, মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী। ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর 'আল ওয়াসিয়্যাহ' গ্রন্থের উদ্ধৃতিতে।

অনুবাদক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
অ্যাডমিন ফিকহ মিডিয়া

#আরশ
#আকীদা

এ ইমেজটা সম্পর্কে বলছি শুনুন! বাম পাশের স্ক্রিনশটটি 'শিহাব মুহতাদী' (Hr Shihab Mohtadi) নামে কথিত আহলে হাদীস দাবীদার আমা...
21/12/2023

এ ইমেজটা সম্পর্কে বলছি শুনুন! বাম পাশের স্ক্রিনশটটি 'শিহাব মুহতাদী' (Hr Shihab Mohtadi) নামে কথিত আহলে হাদীস দাবীদার আমাদের এক দ্বীনি ভাইয়ের রচনা, তিনি "রাফউল ইয়াদাঈন" এর আমলকে সাব্যস্ত করতে বইটির এ পৃষ্ঠায় জঘন্য খিয়ানত করেছেন। তিনি "হুসাইন" (حصين بن عبد الرحمن) নামীয় হাদীসের রাবীটিকে মাজরূহ (ক্রুটিপূর্ণ) সাব্যস্ত করতে এক জঘন্য ধোকা আর মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি হয়ত জানতেন না যে, হুসাইন একজন বুখারীর রাবী (হাদীস নং ৪৮৮, তাওহীদ প্রকাশনী), আবূবকর ইবনে আইয়্যাশ এর শায়খ তিনি। আফসোস! Hr Shihab Mohtadi সাহেব ধরা পড়ে গেলেন! আচ্ছা উনি যে, "তরকে রাফউল ইয়াদাইন"-এর বর্ণনাটির সনদকে দুর্বল ও বাতিল সাব্যস্ত করতে এমন জঘন্য পুকুরচুরি করলেন তজ্জন্য তিনি কেয়ামতের দিন আল্লাহকে কী জবাব দেবেন? যেসব দ্বীনি ভাই বেরাদর তার বইটি পড়ে প্রতারিত হল তিনি কি তার দায় নেবেন?

রাবী হুসাইন বিন আব্দুর রহমান এর সংক্ষিপ্ত তারজুমাহ (জীবনবৃত্তান্ত) ইমাম বুখারীর "আত-তারীখুল কাবীর" কিতাব থেকে নিম্নরূপ,

حصين بْن عَبْد الرَّحْمَن السلمي أبو الهذيل الكوفى،
سَمِعَ عمارة بْن رُوِيَبة والشَّعْبِيّ، سَمِعَ منه الثوري وشُعْبَة وأَبُو عوانة، وقال أَحْمَد عَنْ يزيد بْن هارون: طلبت الحديث وحصين حي كَانَ بالمبارك ويقرأ عليه وكَانَ قد نسي، قَالَ زياد حدثنا هشيم عَنْ حصين: أني لأذكر ليلة أهديت أم منصور إلى أَبِيه، وكَانَ أكبر من الأعمش وكَانَ قريب السن من إِبْرَاهِيم ومات ابْن ثلاث وتسعين (1) أو سبعين.

প্রাসঙ্গিক লিখাটি আরও ক্লিয়ার করে বুঝতে এ লিখাটি অবশ্যই পড়বেন, https://www.facebook.com/groups/697555092099844/permalink/874807471041271/?mibextid=Nif5oz

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক
মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
অ্যাডমিন ফিকহ মিডিয়া

#হুসাইন

আহলে হাদীস প্রসঙ্গে একটা অজানা তথ্য আজ সবার উদ্দেশ্যে জানান দিতে চাই,এটা সত্যি যে, হাদীস অনুসারীদের বলা হয় 'আহলে হাদীস'।...
20/12/2023

আহলে হাদীস প্রসঙ্গে একটা অজানা তথ্য আজ সবার উদ্দেশ্যে জানান দিতে চাই,

এটা সত্যি যে, হাদীস অনুসারীদের বলা হয় 'আহলে হাদীস'। কিন্তু রাসূল (সা.) হাদীসেপাকে (عليكم بسنتى) হাদীস অনুসরণ করতে না বলে বরং সুন্নাহ অনুসরণ করতে বললেন কেন, এ প্রশ্ন নিয়ে কেউ চিন্তা করেছেন কি?

একদম সাধারণভাবে বললে, হাদীস হচ্ছে রাসূল (সা.) এর জীবন ও কর্ম এবং সকল বাণীর সমষ্টি। সেগুলো হোক না সহীহ, জঈফ, শাজ কিংবা মুনকার! নাসিখ মানসূখ কিবা রাজে মারজূ যা-ই হোক, সবগুলোই হাদীস।

এবার তাহলে আপনিই চিন্তা করে বলুন তো, একজন উম্মতির পক্ষে কোনোভাবেই কি "আহলে হাদীস" নামধারণ করা সম্ভব? কোনোভাবেই না। হ্যাঁ, বড়জোর আহলে সুন্নাহ হওয়াই সম্ভব। বলাবাহুল্য যে, শুধুমাত্র উম্মাহার জন্য অনুসরণীয় হাদীসগুলোই "সুন্নাহ" হিসেবে সাব্যস্ত, অন্যগুলো হাদীস বটে তবে কিন্তু সুন্নাহ নয়। এর উদাহরণ অন্যখানে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আফসোস! জেনারেল শ্রেণীটার অধিকাংশই পটল কিনতে এসে মুলা কিনে ফেলছে...! তাদেরকে "আহলে হাদীস" স্লোগানের আড়ালে কত সূক্ষ্মভাবে প্রতারিত করে "মাদখালী" মতবাদের দিকে ঠাণ্ডামাথায় ডায়বেট করে ফেলছে, তা কে কাকে বুঝাতে পারে!?

তাহলে "আহলে হাদীস" কাদের বলে?

প্রশ্নটির উত্তর একদম সহজ। শুনুন, আহলে হাদীস একটি একাডেমি বিশেষনমূলক পদক, হাদীস বিশারদদের প্রত্যেককেই বলা হত 'আহলুল হাদীস' বা আহলে হাদীস। সে হিসেবে মাযহাব চতুষ্টয়ের প্রধান চার ইমাম-ও আহলুল হাদীস বা হাদীস বিশারদ! আফসোস! বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিদয়াতি মাজারপুজারীরা "আহলে সুন্নাহ" শব্দে যেমন সংগঠন তৈরি করেছে, তেমনি মাদখালী-সালাফীরাও সাধারণ মানুষকে নিজেদের ভ্রান্ত মতবাদ গিলানোর উদ্দেশ্যে "আহলে হাদীস" নামে সংগঠন খুলে বসেছে। এরাই প্রথম দিকে মাযহাবকে শিরিক বলে ফতুয়াবাজি করলেও এখন আর করেনা। এদের নিকট সে সময় ডক্টর জাকির নায়েক ছিলেন হাল যামানার ইবনে তাইমিয়াহ! কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ডক্টর জাকির নায়েক (হাফিঃ) তাদের নিকট একজন খারিজি ও টাটকা মুনাফিক!! নাউযুবিল্লাহ।

আসি আসল আলাপে,

মাদখালী আবার কেডা? ইতিবৃত্ত জানতে চাই!!

তাহলে ধৈর্য নিয়ে শুনুন!! উসমানী খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী সৌদী রাজ বংশীয় বর্তমান রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পাহারাদার একদল দরবারী শায়খদের "মাদখালী" বলে। এরা মুজাসসিমা (দেহবাদী) বাতিল ফেরকার অনুসারী। এ মুজাসসিমা ফেরকারই আধুনিক সংস্করণ "মাদখালী"। যারা আকীদা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তারা অবশ্যই মুজাসসিমা ফেরকার সাথেও ভালোমত পরিচিত। উম্মাহার সর্বসম্মতভাবে "মুজাসসিমা" ফেরকা বাতিল। কিন্তু মুজাসসিমা নামে তো আর নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, তাই না!! তাই তারা মদের বোতলে জমজমের লেভেল লাগিয়েছেন, নাম দিলেন "আহলে হাদীস" ও "সালাফি"।

কিন্তু "আহলে হাদীস" তো পূর্ববর্তী হাদীসশাস্ত্রের বিজ্ঞ আলেমদের একাডেমিক পদবি! তাই তারা সুকৌশলে যে কাজটা করতে শুরু করলেন সেটা হচ্ছে, "সহীহ আকীদা" এর চমকদার স্লোগানে সাধারণদের কাছে টানার কৌশল। ওরা তাতে অনেকটা সফলও! যদিও ইতিমধ্যে উনাদের বেশ কয়জন সেলেব্রিটি ছুটে গেছেন। যেমন আবু ত্বহা আদনান, আবু সুমাইয়া সহ অনেকে। ফিরে আসছি আগের কথায়! এ মাদখালী সালাফি (দেহবাদী ফেরকার নতুন প্রোডাকশন) ফেরকার জনক শায়খ রাবী বিন হাদী আল মাদখালী। (পোস্টে তার ছবি দেয়া হল)। তার ‘মাজমূ কুতুবি ওয়ার রাসায়িলি’ কিতাবে (খ-১১ পৃ-৭৪) উল্লেখ আছে,

"আমি মাধ্যমিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় ইখওয়ান নেতা সাইয়েদ কুতুবের ফী যিলালিল কুরআন পড়েছিলাম। আমি সেখানে তার ভুলগুলো জানতে পারি। আমি সত্য মিথ্যার পার্থক্য নিরূপন করেছি। আল্লাহর কসম! আমি যখন মাধ্যমিকের ছাত্র ছিলাম তখন থেকেই আমি তা (ভুলগুলো) জানি।" কিন্তু জনাব মাদখালী সাহেব সাইয়েদ কুতুব (রহ.) এর বিরুদ্ধে শুধুই মিথ্যাচার করেননি, বরং দিনেদুপুরে পুকুর চুরি করেছেন, যা আমি পরবর্তী এপিসোডে তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ।

জনাব মাদখালী সাহেব শহীদ সাইয়েদ কুতুব (রহ.)-এর বিপক্ষে ৪টি গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে ((أضواء إسلامية على عقيدة سيد قطب وفكره)) “আদ্বওয়া ইসলামিয়্যাহ আ'লা আকিদাতি সাইয়েদ কুতুব ওয়া ফিকরিহি", ((مطا عن سيد قطب في أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم)) "মুত্বা আ'ন সাইয়েদ কুতুব ফী আসহাবি রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এবং ((العواصم مما في كتب سيد قطب من القواصم)) "আল আ'ওয়াছিমু মিম্মা ফী কুতুবি সাইয়েদ কুতুব মিনাল ক্বাওয়াছিম" অন্যতম।

বলে রাখা দরকার, ১৯৮০ সালে উম্মুল কুরা থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জনের পর মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান রাবী বিন হাদী বিন মুহাম্মদ উমায়ের আল-মাদখালী (জন্ম: ১৯৩৩ ইং)। তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস ফ্যাকাল্টিতে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯০ সালে উচ্চতর শিক্ষা বিভাগের হাদীস ডিপার্টমেন্ট-এর প্রধান পদে থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি স্থানীয় যে সকল আলেমের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন শুরু করেন তাদের মধ্যে চরম মাযহাব বিদ্বেষী (বিশেষতঃ ফিকহে হানাফী বিদ্বেষী) গয়ের মুকাল্লিদ আহমদ বিন মুহাম্মদ জাবির আল মাদখালী এবং মুহাম্মদ বিন জাবির আল মাদখালী অন্যতম। তাদের কাছ থেকে তিনি দীর্ঘ ৮ বছর শিক্ষালাভ করেন। জনাব মাদখালীর জন্মের মাত্র দেড় বছরের মাথায় পিতা ইন্তেকাল করেন। সৌদি আরবের জারাদিয়্যাহ নামক ছোট্ট একখান গ্রামে তার জন্ম।

তিনিই ১৯৮০-১৯৯০ সালের মধ্যে দীর্ঘ দশ বছর ব্যাপী মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস ডিপার্টমেন্ট-এর প্রধান পদে থেকে প্রকৃত আহলে হাদীস মানহাজের কফিনে শেষ পেরেকটি ঢুকে দেন আর মূলধারার সালাফীদের (হাম্বলীদের) যারা চার মাযহাবের সকল ইমামকে সম্মান করতেন এবং উসূলের দিক থেকে হাম্বলী মাযহাবের উসূলকে ফলো করতেন, তাদেরকে "মাদখালী" তথা মুজাসসিমা (দেহবাদী) বানাতে শুরু করেন। কিন্তু আমাদের জেনারেল লাইনের আবেগি ভাইদের এসব বুঝানোর সাধ্য কার! কারই বা এতটুকু ধৈর্য্য আছে!!

বাংলাদেশের ডক্টর আসাদুল্লাহ আল গালিব সাহেব সেই রাবী বিন হাদী আল মাদখালীরই একজন শিষ্য ছিলেন বিধায় তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসে তারই চিন্তাচেতনার আলোকে "আহলে হাদীস"-এর ব্যানারে দাওয়াতি কাজ শুরু করেন। রাবী বিন হাদী আল মাদখালীর প্রধান মিশন ছিল, মুসলমানদের খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে বিরত রাখা, সশস্ত্র জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ'র পথ থেকে যুবকদের সরিয়ে দিতে খারিজি ট্যাগ দেয়া এবং বিশ্বব্যাপী ইসলামি রাজনীতির কঠোর বিরোধিতায় সর্বশক্তি ব্যয় করা। ফলে বর্তমানে তার চিন্তার ফসল হিসেবে আমরা বহু কথিত আহলে হাদীস দাবীদারদের দেখছি, তারা-ও ইসলামি রাজনীতির বিরোধিতা করে চলছে, আফগানিস্তানের মুজাহিদদের বিরোধিতা করে লেকচার দিচ্ছে। এ মাদখালী সালাফিদের অস্তিত্ব যতদিন দুনিয়ার বুকে টিকে থাকবে ততদিন মুসলিম তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে নপুংসক পুরুষ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং জালিম ও সেকুলার শাসকগোষ্ঠীর পদলেহন করে কাপুরুষোচিত জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে থাকবে...। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন!

চলবে....!

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক
অ্যাডমিন ফিকহ মিডিয়া

একটি প্রশ্নের উসূলি জবাব ও সংশয় নিরসনপ্রশ্ন : রাফউল ইয়াদাঈন এর আমলটি মানসূখ হলে যারা রাফউল ইয়াদাঈন করেন, তারা কি হারাম ক...
20/12/2023

একটি প্রশ্নের উসূলি জবাব ও সংশয় নিরসন

প্রশ্ন : রাফউল ইয়াদাঈন এর আমলটি মানসূখ হলে যারা রাফউল ইয়াদাঈন করেন, তারা কি হারাম কাজ করেন?

উত্তর : মানসূখ বিষয়ে কোনো মুজতাহিদ যদি স্বীয় ইজতিহাদের আলোকে আমল করার পক্ষে রায় (ফাতাওয়া/ফিকহ) দেন তখন সেটি শুধুমাত্র তাঁর ইজতিহাদি অথরিটির কারণেই ঐ মুজতাহিদ এবং তাঁর মুকাল্লিদদের (ফলোয়ারদের) জন্য আমলে নেয়ার শর'ঈ অবকাশ থাকবে। কিন্তু যিনি মুজতাহিদ নন, আবার মুকাল্লিদও নন; এমন ব্যক্তিদের জন্য কোনো মানসুখ বিষয়কে আমলে নেয়ার শর'ঈ অনুমতি নেই। এ জন্যই গয়ের মুকাল্লিদ ও লা মাযহাবীবন্ধুরা রাফউল ইয়াদাঈন সহ অন্যান্য আরও যত মানসূখ (রহিত/মারজূ) বিষয় রয়েছে সেগুলো আমলে নেয়ার কারণে নিন্দিত ও অভিযুক্ত।

শেষ কথা হচ্ছে, অপশন মাত্র ২টি, হয়তবা নিজেকে মুজতাহিদ হতে হবে। নয়তো বা কোনো মুজতাহিদের ইজতিহাদের উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁর মুকাল্লিদ হতে হবে। তৃতীয় কোনো পথ খোলা নেই।

এগুলো কিন্তু উসূলি কথাবার্তা, যা বুঝতে হলে একাডেমিক শিক্ষাদীক্ষা প্রয়োজন, নচেৎ এ কথাগুলো সহজে ঘিলুতে লোড নেবেনা। আরেকটা কথা!! অহেতুক তর্ক করে কেউ সেতু পার হতে পারেনা। তাই বুঝার চেষ্টা বাদ দিয়ে অযথা তর্ক করবেন না!

উত্তরদাতা

অ্যাডমিন ফিকহ মিডিয়া
লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ

সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় মুসল্লি একে অন্যের 'পায়ের সাথে পা মিলানো'- হাদীসটির তাৎপর্য সম্পর্কে সালাতে মুসল্লি "পায়ের সাথে প...
20/12/2023

সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় মুসল্লি একে অন্যের 'পায়ের সাথে পা মিলানো'- হাদীসটির তাৎপর্য সম্পর্কে

সালাতে মুসল্লি "পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়ানো" কথাটি দ্বারা উদ্দেশ্য কী?

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.)-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারী কিতাব থেকে উত্তর নিম্নরূপ,

সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকারক ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী শাফেয়ী আশ'আরী রাহিমাহুল্লাহ লিখেছেন, ((والقدم بالقدم في الصف المراد بذلك المبالغة في تعديل الصف وسد خلله وقد ورد الأمر بسد خلل الصف والترغيب فيه في أحاديث كثيرة أجمعها حديث بن عمر عند أبي داود وصححه ابن خزيمة والحاكم)) অর্থাৎ কাতারে পায়ের সাথে পা মিলানো বলতে উদ্দেশ্য হল, কাতার সোজা করা এবং কাতারের মাঝে ফাঁক বন্ধ করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা। আর কাতারের ফাঁক বন্ধ করতে ও সে ব্যাপারে উৎসাহিত করতে বহু হাদীসে নির্দেশ রয়েছে, ইমাম আবু দাউদ (রহ.)-এর নিকট ইবনে উমর (রা.) এর বর্ণিত হাদীস সেসব হাদীসের মোদ্দাকথা। ইমাম ইবনু খোযাইমাহ এবং ইমাম হাকিম সেটিকে সহীহ আখ্যা দিয়েছেন।

(ফাতহুল বারী শরহে সহীহ বুখারী ২:২৪৭, ইবনে হাজার আসকালানী রাহিঃ)।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

সুতরাং কাতার সোজা করা সংক্রান্ত যতগুলো বিশুদ্ধ বর্ণনা রয়েছে সবগুলো বর্ণনার সারকথা হচ্ছে, নামাযে মুসল্লী পা ছড়িয়ে পাশের জনের পায়ের সাথে পা অঙ্গাঙ্গীভাবে লাগিয়ে দাঁড়াতে বলা (Physically adjusted) মোটেও উদ্দেশ্য নয়, বরং কাতার সোজা করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করাই উদ্দেশ্য; যাতে কাতারের মাঝে কোনো ধরণের ফাঁক না থাকে। আমাদের উচিত, এ সব হাদীসের সঠিক মর্মবাণী যার-তার কাছ থেকে না নিয়ে, বরং বরেণ্য হাদীসবিশারদ ও ফকীহগণের কাছ থেকেই নেয়া।

মিলানো বলতে দু ধরনের অর্থ হতে পারে। যেখানে ফিজিক্যালি এবং নন-ফিজিক্যালি যে কোনোটিই হতে পারে। যেমন কেউ বলল, আমরা দু'জন মিলেমিশে থাকি। এর মানে মোটেও এ অর্থ নয় যে, তারা সারাক্ষণ অঙ্গাঙ্গীভাবে লাগোয়া থাকে। কাতারে দাঁড়ানো অবস্থায় মুসল্লি একে অন্যের পায়ের সাথে পা মিলিয়ে দাঁড়ানোর অর্থ-ও তেমনই। অর্থাৎ তাতেও অঙ্গাঙ্গীভাবে লাগিয়ে দাঁড়াতে বলা উদ্দেশ্য নয়। নতুবা নিচের হাদীসটির কোনো উত্তর-ই থাকেনা!

আবূদাউদ হাদীস নং ৬৬২, عَنْ أَبِى الْقَاسِمِ الْجَدَلِىِّ قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ يَقُولُ أَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم عَلَى النَّاسِ بِوَجْهِهِ فَقَالَ أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ. ثَلاَثًا وَاللَّهِ لَتُقِيمُنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ. قَالَ فَرَأَيْتُ الرَّجُلَ يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَرُكْبَتَهُ بِرُكْبَةِ صَاحِبِهِ وَكَعْبَهُ بِكَعْبِهِ

অর্থাৎ আবুল কাশেম আল-জাদালী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি হযরত নোমান বিন বশীর (রা.)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, রাসূল (সা.) আমাদের দিকে ফিরে তিনবার বলেছিলেনঃ “তোমরা কাতার সোজা কর! আল্লাহর কসম, তোমরা কাতার সোজা কর! নতুবা আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অন্তরসমূহ পরিবর্তন করে দিবেন”। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেছেন, তখন আমি দেখলাম এক লোক পাশের লোকের সাথে তার কাঁধ মিলাচ্ছে এবং হাঁটুর সাথে হাঁটু মিলাচ্ছে আর পায়ের গিটের সাথে গিট মিলাচ্ছে। (আবূদাউদ হাদীস নং ৬৬২, কিতাবুস সালাত, বাবু তাসবিয়াতিস সুফূফ)। হাদীসের মানঃ সহীহ।

এখন যারা ফকীহদের চেয়েও হাদীস বেশি বুঝার ভাব নিয়ে কাতার সোজা করার হাদীস এর "পায়ের সাথে পা মিলানো..." হতে ফিজিক্যালি "মিলন" (Physically adjusted) অর্থ নিয়ে ধোকা খেয়েছেন, তারা কি আবুদাউদ শরীফের উল্লিখিত হাদীসটিকে ত্যাগ করবেন? কারণ, সেখানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে,

কাঁধের সাথে কাঁধ মিলাবে (يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ), হাটুর সাথে হাঁটু মিলাবে (وَرُكْبَتَهُ بِرُكْبَةِ صَاحِبِهِ) এবং পায়ের গিটের সাথে গিট মিলাবে (وَكَعْبَهُ بِكَعْبِهِ)। এখন যারা "মিলানো" বলতে ফিজিক্যালি মিলন অর্থই মনে করছেন, তারা দয়া করে পা, কাঁধ, হাঁটু এবং গিট একে একে সবগুলো মনে মনে একটু মিলানোর প্রাকটিস করুন তো!

জানি, কেয়ামত পর্যন্ত প্রাকটিস করেও কাবু করতে পারবেন না। আর এ জন্যই বলছি যে, ফকীহদের থেকেই হাদীসের বুঝ নিতে হবে।

আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ফকীহদের থেকেই বুঝ নিয়েছি বলেই আমরা মাযহাবী, আমাদের আমল শতভাগ ক্রুটিমুক্ত ও নিরাপদ বলে আমরা আশাবাদীও।

লিখক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
এডমিন ফিকহ মিডিয়া

#কাতার
#সোজা

সুখবর! ❝রদ্দে কাদিয়ানী❞ অ্যাপস (Apps) এখন থেকে সবাই ডাউনলোড করতে পারবেন। ডাউনলোড লিংক:- https://play.google.com/store/ap...
16/11/2023

সুখবর! ❝রদ্দে কাদিয়ানী❞ অ্যাপস (Apps) এখন থেকে সবাই ডাউনলোড করতে পারবেন। ডাউনলোড লিংক:- https://play.google.com/store/apps/details?id=com.mominul.radd_e_qadyyani

বিনীত অনুরোধ, পোস্টটি লাইক, কমেন্ট, কপি কিংবা শেয়ার দিয়ে প্রচার করবেন

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

#রদ্দে
#কাদিয়ানী

হযরত ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) কি তাবেয়ী ছিলেন না? মতানৈক্য ও সমাধানউত্তরঃ মুতাকাদ্দিমীনদের মধ্যে প্রায় সকলেই একমত ছিলেন যে,...
28/10/2023

হযরত ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) কি তাবেয়ী ছিলেন না? মতানৈক্য ও সমাধান

উত্তরঃ মুতাকাদ্দিমীনদের মধ্যে প্রায় সকলেই একমত ছিলেন যে, ইমামে আ'যম (রহ.) একজন তাবেয়ী ছিলেন। মুতায়াখখিরীন উলামায়ে কেরামের মধ্যে অবশ্যই ৩টি মত হয়ে যায়।

1 একটি জামাতের মতে ইমামে আ'যম (রহ.) তাবেয়ী ছিলেন না। তবে এ জামাত অতিব সংখ্যালঘু একটি জামাত। এদের মধ্যেও ইমাম দারা কুতনী থেকে দু'টি মত রয়েছে। ইমামে আ'যম (রহ.)-এর সাথে হযরত আনাস (রা.)-এর সাক্ষাৎ হওয়া প্রমাণিত নয়। আরেকটি মত ছিল, হ্যাঁ সাক্ষাৎ হওয়া প্রমাণিত, তবে শ্রবণ প্রমাণিত নয়। শেষের মতটি ইমাম জালালুদ্দীন আস-সুয়ূতি (রহ.) তার 'তাব'য়ীদুস সহীফাহ' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এভাবে যে, ((قال حمزة السهمي: سمعت الدارقطني يقول: "لم يلق أبو حنيفة أحدا من الصحابة إلا إنه رأى أنسا بعينه ولم يسمع منه)) অর্থাৎ “হামযাহ আস-সাহমী বলেন, আমি ইমাম দারা কুতনী (রহ.) থেকে শুনেছি তিনি বলেন, ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) সাহাবীদের মধ্যে আনাস ইবনে মালেক ছাড়া আর কারো সাথে সাক্ষাৎ লাভ করেননি, তবে তিনি আনাস (রা.)-কে স্বচক্ষে দেখেছেন, কিন্তু তিনি তাঁর কাছ থেকে শ্রবণ করেননি।”

2 দ্বিতীয় জামাতের মতে, ইমামে আ'যমের সাথে শুধুমাত্র হযরত আনাস (রহ.)-এর সাক্ষাৎ হওয়াই প্রমাণিত, কিন্তু শ্রবণ প্রমাণিত নয়। ইমাম হাফিয যাহাবী হাম্বলী, ইবনে হাজার আসকালানী শাফেয়ী আল-আশ'আরী, খতীবে বাগদাদী আশ শাফেয়ী, ইমাম ইবনু সা'আদ, ইমাম ওয়ালি আল ইরাক, ইবনু যওযী, আবূ মা'শার হামযাহ আস সাহামী, আল ইয়াফিয়ী, আল জাজরী সহ ইমামগণের বড় একটি জামাত এ মতের পক্ষে (আল মওসূআতুল হাদীসিয়্যাহ ২:৮৯-৯০)। এমনকি ইমাম হাফিয যাহাবী 'তাজরীদু আসমায়িস সাহাবাহ' (تجريد اسماء الصحابة) গ্রন্থে এবং ইমাম ইবনুল আছীর (إبن الأثير) 'উসদুল গাবাহ'-أسد الغابة (৫/৫০৫) গ্রন্থে মুতাকাদ্দিমীনগণের মধ্য হতে ইমামু জারহি ওয়াত তা'দীল ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন আল হানাফী (১৫৮-২৩৩ হিজরী)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, ((أثبت سماع ابى حنيفة من عائشة بنت عجرد يحيى ابن معين)) অর্থাৎ ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন হযরত আয়েশা বিনতে উজরাদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে আবূ হানীফা (রহ.)-এর শ্রবণ প্রমাণিত বলে সাব্যস্ত করেছেন।” (তাব'য়ীদুস সহীফাহ পৃ-৬২ পাদ টীকা দ্রষ্টব্য)।

ইমাম যাহাবী আরেক জায়গায় লিখেছেন, ((و كان من التابعين لهم ان شاء الله باحسان فانه صح انه رأى انس بن مالك اذ قدمها أنس رضى الله عنه)) অর্থাৎ “তিনি (ইমামে আযম) সাহাবায়ে কেরামের সাক্ষাৎ লাভের কারণে তাবেয়ীগণের অন্তর্ভুক্ত। এ কথা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত, হযরত আনাস বিন মালেক যখন কূফায় আগমন করলেন তখন ইমাম আবূ হানীফা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেন।” (মানাকীবে ইমাম আবী হানীফা ৯-১০, ইমাম যাহাবী)।

তারপর ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) লিখেছেন, ((أدرك أبو حنيفة جماعةً من الصحابة؛ لأنه ولد بالكوفة سنة ثمانين من الهجرة، وبها يومئذٍ: عبد الله بن أبي أوفى، فإنه مات بعد ذلك بالاتفاق. وبالبصرة يومئذ أنس بن مالك، ومات سنة تسعين أو بعدها. وقد أورد ابن سعد بسند لا بأس به: أن أبا حنيفة رأى أنسا، وكان غير هذين من الصحابة بعِدَّةٍ من البلاد أحياء)) অর্থাৎ আবূ হানীফা (রহ.) সাহাবীদের একটি জামাতের সাক্ষাৎ লাভ করেছেন। কারণ তিনি জন্মগ্রহণ করেন কূফায় ৮০ হিজরীতে আর সেখানেই ছিলেন (সাহাবী) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আওফা (রা.)। তিনি সর্বসম্মতিক্রমে মারা গিয়েছিলেন ৮০ হিজরীর (অনেক) পরেই (অর্থাৎ ৮৭ হিজরীতে)। আর সে সময় বসরায় ছিলেন হযরত আনাস বিন মালেক (রা.)। তিনি ইন্তেকাল করেন ৯০ হিজরীর পরে। ইবনু সা'আদ এটি এমন সনদে বর্ণনা করেছেন যাতে কোনো সমস্যা নেই। মোটকথা হল, আবূ হানীফা হযরত আনাসকে দেখেছিলেন। এ দু'জন ছাড়া অধিক সংখ্যক সাহাবী সেই শহরে জীবিত ছিলেন।” (আল মওসূআতুল হাদীসিয়্যাহ ২:৯০)।

ইমাম হাফিয মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ সালেহী আশ-শাফেয়ী (মৃত: ৯৪২হিজরী) বলেন, ((اعلام رحمك الله تعالى أن الامام أبا حنيفة رضى الله عنه تعالى عنه من التابعين و صح كما قال الحافظ الناقد ابو عبد الله الذهبى أنه رأى أنس بن مالك رضى الله عنه و هو صغير)) অর্থাৎ “আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন। এ কথা জেনে নাও যে, ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) তাবেয়ীগণের অন্তর্ভুক্ত, যেমনটি হাফিয যাহাবী বলেছেন; এ কথা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত যে, ইমাম সাহেব শৈশবকালে হযরত আনাস বিন মালেক (রা.)-এর সাথে সাক্ষাৎ লাভ করেন।” (উকূদুল জুমান লিস-সালেহী পৃষ্ঠা নং ৭০)।

ইমাম আবূ ইসহাক ইবরাহীম ইবনে আলী আস-সিরাজি (মৃত. ৪৭৬) طبقات الفقهاء নামীয় কিতাবে লিখেছেন, ((أبا حنيفة في فقهاء التابعين بالكوفة، فقال: كان في أيامه أربعة من الصحابة: أنس بن مالك وعبد الله بن أبي أوفى الأنصاري وأبو الطفيل عامر ين واثلة وسهل بن سعد الساعدي، وجماعة من التابعين كالشعبي والنخعي وعلي بن الحسين وغيرهم، وقد مضى تاريخ وفاتهم، ولم يأخذ أبو حنيفة عن أحد منهم)) অর্থাৎ “আবূ হানীফা (রহ.) ছিলেন একজন কূফার ফকীহ তাবেয়ীগণের অন্যতম। তাঁর সময় চারজন সাহাবী ছিলেন। আনাস বিন মালেক, আব্দুল্লাহ বিন আবী আওফা আল আনসারী, আবূ তোফায়েল আমের বিন ওয়াসেলাহ, সাহাল বিন সা'আদ আস-সা'দী এবং তাবেয়ীদের বিরাট জামাত ছিল। তন্মধ্যে শু'বাহ, নাখ'ঈ, আলী বিন হুসাইন প্রমুখ। সাহাবীদের তিরোধানের তারিখ অতীত হয়ে যায় কিন্তু আবূ হানীফা (রহ.) তাদের থেকে কোনো কিছু নেননি।”

3 তৃতীয় জামাতের মতে, ইমামে আ'যমের সাথে একাধিক সাহাবীর সাক্ষাৎ হওয়াই প্রমাণিত, এমনকি কয়েকজন সাহাবীর কাছ থেকে তাঁর রেওয়ায়েতও প্রমাণিত। আল্লামা আ'ঈনী, তুরফুসতী, সুয়ূতী এবং হাইসামী সহ অসংখ্যা ইমাম এ মতের পক্ষে। শারেহে বুখারী ইমাম বদরুদ্দীন আ'ঈনী আল-হানাফী প্রমাণ করেছেন যে, ইমামে আ'যম যাদের সাক্ষাৎ লাভ করেছেন তিনি তাদের কাছ থেকে শ্রবণও করেছেন (তাব'য়ীদুস সহীফাহ পৃ-৬২ পাদ টীকা দ্রষ্টব্য)। শাফেয়ী মাযহাবের বিখ্যাত অনেক ইমামও এ মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং স্বতন্ত্র "মানাকিব" রচনা করে এ মতটি প্রতিষ্ঠাও করে গেছেন। তাদের মধ্যে ইমাম ইবনে হাজার মাক্কী আল হাইছামী (মৃত. ৯০৯ হিজরী), ইমাম আবুল ফালাহ মুহাম্মদ ইবনুল ই'মাদ আল হাম্বলী (মৃত. ১০৮৯ হিজরী), শায়খুল কুররা ইমাম মুক্বরি আশ শাফেয়ী (মৃত. ৪৭৮ হিজরী) এবং ইমাম জালালুদ্দীন আস-সুয়ূতী (মৃত. ৯১১ হিজরী) অন্যতম। ইমাম হাইছামী (রহ.) তো আল্লামা আ'ঈনীর মতকে দৃঢ়ভাবে সমর্থনও করেছেন (আল খায়রাতুল হিসান পৃ-২১-২৩)।

ইমাম আবূ যাকারিয়া ইবনে ইয়াহইয়া ইবনে ইবরাহীম ইবনে আহমদ আল আযদী (মৃত. ৫৫০ হিজরী)-এর রচিত منازل الأئمة الأربعة للأزدي কিতাবে লিখা আছে, ((قال أبو حنيفة: حججت مع أبي سنة ست وتسعين، ولي ست عشرة سنة، وإذا أنا بشيخ قد اجتمع الناس عليه، فقلت لأبي: من هذا الرجل؟ فقال: هذا رجل قد صحب محمدا صلى الله عليه وسلم يقال له عبد الله بن الحارث)) অর্থাৎ “আবূ হানীফা (রহ.) বলেন, আমি আমার পিতার সাথে ৯৬ হিজরীবর্ষে হজ্জ করেছি, তখন আমি ষোল বছরের তরুণ। ইত্যবসরে আমি একজন প্রবীণ (শায়খ) ব্যক্তিকে কাছে পেলাম। লোকজনও তাঁর নিকট এসে জমায়েত হল। তখন আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কে? তিনি বললেন, এ লোকটি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর একজন সাহাবী, নাম আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস।”

তিনি আরও লিখেছেন, ((فابو حنيفة أدرك الصحابة رضى الله عنهم فهو من التابعين)) অর্থাৎ “ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) সাহাবীদের সাক্ষাৎ লাভ করেছেন। কাজেই তিনিও তাবেয়ীদের অন্তর্ভুক্ত।” (ঐ পৃষ্ঠা নং ৩৫)।

শামসুল আয়েম্মাহ আল কিরদারী-الكردرى (রহ.) (৫৬৯-৬৪২ হিজরী) 'মানাকিবু আবী হানীফা' (পৃ-২৫) গ্রন্থে চমৎকার বলেছেন। তিনি লিখেছেন, ((فالحاصل ان جماعة من المحدثين انكروا ملاقاته مع الصحابة رضى الله عنهم، و اصحابه أثبتوه بالاسانيد الصحاح الحسان، و هم اعرف باحواله منهم، و المثبت أولى من النافى)) অর্থাৎ সারমর্ম কথা হচ্ছে, মুহাদ্দিসগণের একটি জামাত সাহাবায়ে কেরামের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হওয়াকে অস্বীকার করেছেন। অথচ ইমামে আ'যম (রহ.) এর সাথীগণ সহীহ এবং হাসান পর্যায়ের সনদ সমূহ দ্বারা তাঁর সাক্ষাৎ হওয়াকে সাব্যস্ত করেছেন। পরন্তু তাঁর ব্যাপারে তাঁর সাথীগণই এদের চেয়ে বেশি জানতেন। ফলে সাক্ষাৎ লাভ হওয়া মতটিই সাক্ষাৎ না হওয়া মতের চেয়ে বেশি প্রাধান্যযোগ্য ও প্রমাণিত। (তাব'য়ীদুস সহীফাহ পৃ-৬২ পাদ টীকা দ্রষ্টব্য)।

উল্লেখ্য, ইমাম যাহাবী (রহ.) আল্লামা কিরদারী (রহ.) সম্পর্কে লিখেছেন ((العلامة فقيه المشرق شمس الأئمة أبو الوحدة محمد بن عبد الستار بن محمد العمادي الكردري الحنفي البراتقيني)) অর্থাৎ একজন আল্লামা, ফকীহুল মাশরিক্ব ও শামসুল আয়েম্মাহ, আবুল ওয়াহদাহ মুহাম্মদ ইবনু আব্দিস সাত্তার ইবনু মুহাম্মদ আল ইমাদি আল কিরদারী আল হানাফী আল বুরাতাক্বীনী। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ২৩:১১৩)।

এবার ইমাম সুয়ূতী (রহ.) সংকলিত 'তাবয়ীদুস সহীফাহ' কিতাব থেকে আলোচ্য অংশটির অনুবাদ নিচে তুলে ধরছি,

“ইমাম মুক্বরী আশ শাফেয়ী স্বীয় 'আল জুঝ' গ্রন্থে সাহাবায়ে কেরাম থেকে ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর বর্ণিত রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন যে, আবূ হানীফা বলেছেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাতজন (৭) সাহাবীর সাক্ষাৎ লাভ করেছি। তারা হচ্ছেন,

১. আনাস বিন মালেক, ২. আব্দুল্লাহ বিন জুঝ আয যোবাইদী, ৩. জাবির ইবনু আব্দিল্লাহ, ৪. মা'ক্বাল ইবনু ইয়াসার, ৫. ওয়াসিলাহ ইবনু আস'কা ৬ আয়েশা বিনতে উজরাদ (এবং ৭. আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আ'ওফা) প্রমুখ।”

সংক্ষেপে।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

লিখক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
অ্যাডমিন ফিকহ মিডিয়া

#ইমামে
#আযম
#তাবেয়ী

কুরআনের আয়াত সংখ্যা নিয়ে একাধিক মত থাকার কারণ কী? তবে কি কুরআনে বিকৃতি হয়ে গেল? নাউযুবিল্লাহ! জানতে হলে পড়তে হবে!১ প্রখ্...
17/10/2023

কুরআনের আয়াত সংখ্যা নিয়ে একাধিক মত থাকার কারণ কী? তবে কি কুরআনে বিকৃতি হয়ে গেল? নাউযুবিল্লাহ! জানতে হলে পড়তে হবে!

১ প্রখ্যাত ফকীহ ইমাম আবূ লাইছ আস-সমরকন্দী (রহ.) (জন্ম-মৃত্যু ৩৩৩-৩৭৩ হিজরী) লিখেছেন, আল-কুরআনের আয়াত সংখ্যা নিয়ে ক্বারীদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মত, যা কুফীগণ পোষণ করেন আর হযরত আলী (রা.)-এর সাথেও সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করা হয়, সে মুতাবেক আল-কুরআনের আয়াত সংখ্যা ৬,২৩৬। এছাড়া, অন্যান্য মতও রয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আল-কুরআনের আয়াত সংখ্যা ৬,২১৮। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, আল-কুরআনের আয়াত সংখ্যা ৬,২১৬। হযরত ইসমাইল ইবনে জাফর মাদানী (রহ.)-এর মতে, তা ৬,২১৪; মাক্কীদের মতে, তা ৬,২১২ আর বসরীদের মতে, তা ৬,২০৪ এবং শামীদের মতে, তা ৬,২২৬। তেমনিভাবে হযরত ইবরাহীম আন নাখ'ঈ (রহ.) বলেছেন তা ৬,১৯৯; শামীয় কিছু আলেমের মতে, তা ৬,২৫৫। সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে, তা ৬,৬৬৬।

তথ্যসূত্রঃ বুস্তানুল আরিফীন, আবূ লাইছ আস-সমরকন্দী রহ.

বলে রাখা জরুরি যে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা.)-এর গণনাসংখ্যা মাদানী দুওম হিসেবে প্রসিদ্ধ। আর এ বিষয়টি শাস্ত্রবিদের নিকট স্বীকৃত যে, মাদানী দুওমের গণনাসংখ্যা হল, ৬২১৪ আরেক বর্ণনায় ৬২১০। কাজেই উম্মুল মুমিনীনের নামে প্রচলিত আয়াত সংখ্যা ৬৬৬৬ এর ধারণাটি প্রমাণিত নয়, বরং সম্পূর্ণ গলদ মশূর একটি প্রবচন।

২ এখন কারো কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, আয়াত সংখ্যা নিয়ে যখন এতই মতানৈক্য তখন তো এ কথাও সঠিক যে, আল কুরআনে নিশ্চয়ই বিকৃতি ঘটেছে, যেমনটা ইসলাম বিরোধীদের অভিযোগ। নতুবা আয়াত সংখ্যায় এ সমস্ত মতানৈক্যের কারণ কী?

এর উত্তরে খুব সহজ করে বললে, পবিত্র কুরআনের সকল টেক্সট বা ইবারত অবিকৃত, সম্পূর্ণ আল কুরআনের আয়াত সংখ্যা ঠিক সে অবস্থায় বর্তমানেও বিদ্যমান যেমনটা ছিল সাহাবীদের যুগে। এর উপর আমরা শুধুই ঈমান রাখিনা, বরং আমরা সেটিকে দলিল ও যুক্তির নিরিখে প্রমাণও করে থাকি। তা এভাবে যে, আল কুরআনে আয়াত সংখ্যা ওহীর মাধ্যমে চিহ্নিত হয়নি, বরং ক্বারীগণ ওয়াকফের ভিত্তিতে আয়াত সংখ্যা নির্ধারণ করে গেছেন। ফলে, যে ক্বারী আয়াতের যে জায়গায় ওয়াকফ (ফুলস্টপ) করতেন সে ক্বারী সেটুকুকেই পৃথক আয়াত হিসেবে গণনা করে গেছেন। এতে দীর্ঘ একটি আয়াত কোনো কোনো ক্বারীর নিকট শুধু একটি আয়াত হিসেবে গণ্য হয়েছিল, আবার কোনো কোনো ক্বারীর নিকট ২/৩/৪/৫/৬/৭/৮/৯/১০ আয়াত বলেও গণ্য হয়েছিল। এভাবেই আয়াত সংখ্যায় মতানৈক্য হয়ে যায়। আর এভাবে মতানৈক্য হতেই পারে। কিন্তু আয়াত সংখ্যার কারণে আল কুরআনে টেক্টট বা ইবারত কম-বেশী হয়নি। সে হিসেবে বর্তমানে অতি প্রসিদ্ধ আয়াত সংখ্যা ৬৬৬৬ হলেও, তবে বিশুদ্ধ হচ্ছে, আল কুরআনে আয়াত সংখ্যা মোট ৬২৩৬।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপির জন্য মু'জামু উলূমিল কুরআন দ্রষ্টব্য

আশাকরি, এখন থেকে আর কারো বিভ্রান্তি থাকবে না।

মূল লিখক সাইফুল ইসলাম রুবাইয়াৎ (হাফিজাহুল্লাহ)
প্রবীণ ইসলামি লিখক ও গবেষক

সম্পাদক ও ঈষৎ সংযোজক - এডমিন
ফিকহ মিডিয়া

#আয়াত
#সংখ্যা

ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর পূর্বপুরুষ কি গোলাম (কৃতদাস) ছিলেন? একটি ভ্রান্তি ও তার নিরসন Episode 35সাইয়েদানা ইমাম আবূ হানী...
17/10/2023

ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর পূর্বপুরুষ কি গোলাম (কৃতদাস) ছিলেন? একটি ভ্রান্তি ও তার নিরসন
Episode 35

সাইয়েদানা ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রহ.) লিখেছেন ((الإمام ، فقيه الملة ، عالم العراق أبو حنيفة النعمان بن ثابت بن زوطى التيمي ، الكوفي ، مولى بني تيم الله بن ثعلبة يقال : إنه من أبناء الفرس)) অর্থাৎ তিনি একজন ইমাম, ফকীহুল মিল্লাত তথা গোটা মুসলিম জাতির জন্য ফকীহ, ইরাকের একজন বিদ্ধান, আবূ হানীফা নোমান ইবনে সাবিত ইবনে যূতী আত তাইমী আল কূফী, তিনি বনু তাইমুল্লাহ ইবনু সা'লাবাহ-এর মওলা[1]। নিশ্চয়ই তিনি পারস্য বংশোদ্ভূত ও একজন পারস্য পুরুষ।

রেফারেন্স- সিয়ারু আলামিন নুবালা ৬:৩৯১, ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ সংকলিত। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য
________
টিকা:

[1]কেউ কেউ এ 'মওলা' শব্দ দেখেও ধোকা খেয়ে থাকে। কেননা আরবীতে 'মওলা' শব্দ দ্বারা 'কৃতদাস' বুঝায়। কিন্তু সাধারণ পাঠকদের হয়ত জানা নেই যে, আরবী পরিভাষায় তিন ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে 'মওলা' শব্দটির ব্যবহার রয়েছে। যেমন, (১) ইসলাম গ্রহণের কারণে যারা 'মওলা' পরিচিতি লাভ করেন তাদেরকে বলা হয় 'মওয়ালিয়ে ইসলাম' (موالى الإسلام) বা ইসলাম গ্রহণসূত্রে মওলা। (২) কৃতদাস হিসেবে পরিচিত যারা তাদেরকে বলা হয় 'মওয়ালিয়ে আ'তাক্বাহ' (موالى العتاقة) বা দাসত্ব থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত মওলা। আর (৩) পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ চুক্তিতে আবদ্ধ যারা, তাদেরকে বলা হয় 'মওয়ালিয়ে হালাফ' (موالى الحلف)। (মানাযির আহসান গিলানী রচিত 'তাদবীনে হাদীস' পৃষ্ঠা নং ১৪১-১৪২)। বলে রাখা জরুরি যে, ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর পূর্বপুরুষদের 'মওয়ালিয়ে হালাফ' অর্থেই 'মওলা' আখ্যা দেয়া হত। যেহেতু হযরত আলী (রা.)-এর নিকট ইসলাম গ্রহণ করার পর তাঁর পূর্বপুরুষ (দাদা) যূতি আত-তাইমী'র 'মওয়ালাত'-ও (তথা পারস্পরিক সম্পর্ক) কূফার বনু তাইমুল্লাহ ইবনু সা'লাবাহ গোত্রের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ চুক্তিতেই আবদ্ধ ছিল।

ইমাম আবূ জাফর আত-ত্বহাবী (রহ.) এ সম্পর্কে 'শরহু মুশকিলিল আছার কিতাবে 'আকদে মুওয়ালাত'-এর উপর আলোচনা করতে গিয়ে ইমামে আ'যম (রহ.) থেকে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, আবূ আব্দির রহমান আল-মুকরী বলেছেন, একদা আমি ইমাম আবূ হানীফার সান্নিধ্যে উপস্থিত হলে, তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, তোমার পরিচয় কী? আমি উত্তরে বললাম, আমি এমন এক ব্যক্তি যার উপর আল্লাহ ইসলাম দ্বারা দয়া করেছেন। ইমামে আ'যম (রহ.) বললেন, তুমি এভাবে বল না। বরং তুমি কোনো গোত্রের সাথে 'মওয়ালাত' (موالاة) তথা পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাও, তাহলে সেই গোত্রের দিকেই তুমি সম্পর্কিত হতে পারবে। (ইমামে আযম তারপর বলেছেন : فإني أنا كنت كذلك) অর্থাৎ যেহেতু আমার নিজের 'মওলা' আখ্যা পাওয়ার ব্যাপারটিও অনুরূপ।

(তথ্যসূত্রঃ শারহু মুশকিলিল আছার ৪:৫৪, শায়খ শুআইব আরনাউত বলেছেন, এ বর্ণনার সকল রাবীই সিকাহ, দেখুন- শারহু মুশকিলিল আছার, মুআসসাতুর রিসালা ৭:২৮৪)।

লিখক, এডমিন
ফিকহ মিডিয়া

#ইমাম
#বংশধর
#কৃতদাস

সনদের তাহকিক সহ ইমামে আ'যম আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন (১৫৮-২৩৩ হিজরী)-এর অভিমত,ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে ...
21/08/2023

সনদের তাহকিক সহ ইমামে আ'যম আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন (১৫৮-২৩৩ হিজরী)-এর অভিমত,

ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন (রহ.)-এর শিষ্য আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে ইবরাহীম আদ-দাওরাক্বি বলেন ((قَالَ (أَبُو يَعْقُوب) وَنا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ الْحَافِظُ قَالَ نَا عبد الله بْنُ أَحْمَدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ قَالَ سُئِلَ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ وَأَنَا أَسْمَعُ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ فَقَالَ ثِقَةٌ مَا سَمِعْتُ أَحَدًا ضَعَّفَهُ هَذَا شُعْبَةُ بْنُ الْحَجَّاجِ يَكْتُبُ إِلَيْهِ أَنْ يحدث ويأمره وَشعْبَة شُعْبَة)) অর্থ ❝ইয়াহইয়া ইবন মা'ঈনকে আবূ হানীফা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে আমি শুনতে পেলাম, তিনি বলেছেন, তিনি একজন সিকাহ (অর্থাৎ তিনি একজন নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত)। কেউ তাঁকে দুর্বল বলেছেন বলে আমি শুনিনি। এ তো শু'বাহ ইবনুল হাজ্জাজ, তিনি আবূ হানীফাকে হাদীস বর্ণনা করতে লিখে পাঠান এবং অনুরোধ করেন। আর শু'বাহ তো শু'বাহ-ই।❞ (ইমাম ইবনু আব্দিল বার, আল-ইনতিকা পৃ. ১২৭)। - সহীহ। রাবীগণ সকলে বিশ্বস্ত।

তাহকিক ও রাবীর সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্ত

1 ইমাম ইবনু আব্দিল বার মালেকি (গ্রন্থকার) জন্ম: ৩৬৮-মৃত্যু: ৪৬৩ হিজরী। ইমাম যাহাবী লিখেছেন ((كان إماما دينا ، ثقة ، متقنا ، علامة ، متبحرا ، صاحب سنة واتباع)) অর্থাৎ একজন একনিষ্ঠ ইমাম, সিকাহ, সুপুরুষ, আল্লামা, বিশাল পণ্ডিত ও সুন্নাহর অনুসারী। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৮:১৫৮ ইমাম যাহাবী)।

2 ইবনু আব্দিল বার (রহ.)-এর শায়খ ইমাম আবূ ইয়াকুব। ইমাম ইবনু আব্দিল বার (রহ.) ইমাম শু'বাহ থেকে স্বীয় শায়খ আবূ ইয়াকুব থেকে উক্ত রেওয়ায়েতটি সহ ধারাবাহিকভাবে ৩টি রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন (দেখুন الانتقاء ১:১২৬)। ইমাম যাহাবী (রহ.) আবূ ইয়াকুবের মৃত্যুসন ৩৮৮ হিজরী বলে উল্লেখ করেছেন (দেখুন তারীখুল ইসলাম ৮:৬৪৩)। পূর্ণ নাম, ইউসুফ ইবনে আহমদ আস-সয়দালানী আল মাক্কী, উপনাম আবূ ইয়াকুব। তিনি বলেছেন ((نا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ الْحَافِظُ)) এ কথা আমাকে আহমদ ইবনুল হাসান আল হাফিয বর্ণনা করেছেন। ইমাম ইবনু আব্দিল বার (রহ.) সহ অনেক ইমাম তাঁকে তাওসীক্ব করেছেন (দেখুন আল ইস্তিযকার ১:২১)। তাছাড়া শায়খ আবুল ফাওযান কিফায়াতুল্লাহ আস-সানাবিলী তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন ((ابو یعقوب یوسف بن احمد بن يوسف الصيدلانی ... ... ثقہ ہیں)) ❝আবু ইয়াকুব আস-সয়দালানী একজন সিকাহ।❞ (দেখুন, আনওয়ারুল বদর, পৃ-৩৩৩)।

3 আহমদ ইবনুল হাসান হাফিয (পূর্ণ নাম আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনুল হাসান আদ-দিনাওয়ারী), উপনাম আবূবকর, পেশা আদ্দাররাব (الضَرّابَ) বা দর্জি, নিসবত আদ-দিনাওয়ারী। একজন সিকাহ রাবী। ইমাম খতীব বাগদাদী লিখেছেন ((قدم بَغْدَاد وحدث بها، وكان ثقة. مات يوم الأربعاء لأربع عشرة خلت من جمادى الأولى سَنَة ثمان وعشرين وثلاثمائة ببَغْدَاد)) অর্থাৎ তিনি বাগদাদ গমন করেন এবং তাঁর কাছ থেকে হাদীস বর্ণনা করা হয়। তিনি একজন সিকাহ ছিলেন। তিনি জুমাদাল উলা মাসের ১৪ তারিখে বুধবার ৩২৮ হিজরীতে বাগদানে ইন্তেকাল করেন। (তারীখে বাগদাদ ৪:৪২৭ খতীব বাগদাদী, তারীখুল ইসলাম ২৪:২২৪ ইমাম যাহাবী, মু'জামু ইবনিল মুক্বরি ৫০৩)।

উল্লেখ্য, এ আহমদ ইবনুল হাসান আল হাফিয নামে দু' ব্যক্তি রয়েছে। একজনের নামের শেষে السُّكّريّ রয়েছে, তার মৃত্যুসন ২৬১ হতে ২৭০ হিজরীর মধ্যে (তারীখুল ইসলাম ৬:২৬২ ইমাম যাহাবী), আরেকজনের নামের শেষে الدينورى রয়েছে; কিন্তু উক্ত সনদে الدينورى নামীয় ব্যক্তিই উদ্দেশ্য যিনি ৩২৮ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। আর একথার প্রমাণ আছে ইবনুল বার (রহ.)-এর কিতাব 'আল ইন্তিক্বা' এর ১৪৫ নং পৃষ্ঠায় উল্লিখিত অপর একটি বর্ণনার সনদে।

4 আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে ইবরাহীম আদ-দাওরাক্বি। উপনাম আবূ আব্দিল্লাহ। কেউ কেউ তাঁর মৃত্যু সন ২৪৬ হতে ২৭৬ হিজরীর মধ্যে বলে লিখেছেন। ইমাম যাহাবী (রহ.) তার মৃত্যু সন ২৭৬ হিজরী বলেই উল্লেখ করেছেন (দেখুন, সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৩:১৫৪)। ইমাম যাহাবী (রহ.) লিখেছেন ((وكان صدوقا. وثقه الدارقطني)) ইমাম আবূ হাতিম তাঁকে সত্যবাদী (صدوق) বলেছেন এবং দারা কুতনী তাকে সিকাহ বলেছেন। তাঁর কাছ থেকে ইমাম মুসলিম সহ অনেক মুহাদ্দিস হাদীস বর্ণনা করেছেন।

উল্লেখ্য, গয়ের মুকাল্লিদরা উক্ত বর্ণনার সনদের উপর انقطاع এর যে অভিযোগ উত্থাপন করে সেটি তাদের ক্রুটিপূর্ণ তাহকিক আর অজ্ঞতা থেকেই করে থাকে। তারা রাবীগণের সঠিক পরিচয় নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বেশকিছু শাওয়াহিদ-شواهد ও মুতাবি' ইমাম ইবনে মা'ঈন (রহ.) থেকে তাঁরই একাধিক শিষ্যের যৌথ বর্ণনা হতে নিম্নরূপ,

❝ইমাম মিয্যি (রহ.) এর তাহযীবুল কামাল ৭০৩২, ইমাম যাহাবীর তারীখুল ইসলাম ৬:৯৯১ এর তথ্য অবলম্বনে... ❞

((محمد بن سعد العوفى سمعت ابن معين يقول: كان ابو حنيفة ثقة الخ))

1 মুহাম্মদ ইবনে সা'আদ আল আ'ওফী (২৭২ হিজরী) থেকে...। তাঁর ব্যাপারে ইমাম আবূ আব্দিল্লাহ হাকিম উল্লেখ করেছেন যে, তিনি ইমাম দারা কুতনী (রহ.)-কে বলতে শুনেছেন ((لا بأس به)) অর্থাৎ তার মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। (তারীখে বাগদাদ ২:৩৬৮)।

ইমাম ইবনু হাব্বান বলেছেন ((لا يجوز به اذا انفرد)) অর্থাৎ তার একক বর্ণনা দ্বারা দলিল দেয়া বৈধ হবেনা। (আল মাজরূহীন)।

ইবনে মা'ঈন (রহ.) বলেছেন ((ليس بمتين)) অর্থাৎ সে সুদৃঢ় নন। ইমাম আবূ যুর'আ (রহ.) বলেছেন ((لين الحديث)) সে হাদীসের ক্ষেত্রে কোমল। (তাহযীবুল কামাল রাবী ক্রমিক নং ৫১৫০)।

((و قال صالح بن محمد الأسدى الحافظ سمعت يحيى ابن
معين يقول: كان ابو حنيفة ثقة فى الحديث الخ)) ((قال صالح بن جزرة وغيره سمعنا ابن معين يقول : أبو حنيفة ثقة الخ))

2 সালেহ ইবনে মুহাম্মদ আল আসদী আল হাফিয (২০৫-২৯৩ হিজরী) থেকেও...। তাঁর সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেন ((الامام الحافظ الكبير الحجة)) তিনি একজন ইমাম, হাফিযুল কাবীর ও হুজ্জত। ইমাম দারা কুতনী (রহ.) বলেছেন ((و كان ثقة حافظا غازيا)) অর্থাৎ তিনি একজন সিকাহ, হাফিয এবং গাযী। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৪:২৪ ইমাম যাহাবী)।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি - আল মওসুআতুল হাদীসিয়্যাহ ২:১১৭

ইবনে মা'ঈন (রহ.) থেকে আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে নিচের বর্ণনাগুলো জাল ও বানোয়াট যে কারণে,

1 ইবনে আবী মরিয়াম বলেন ((سألت يحيى بن معين عن أبي حنيفة، فقال: «لا يكتب حديثه)) অর্থ- আমি ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈনকে আবূ হানীফা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তাঁর হাদীস লিখাযোগ্য নয়। (ইমাম ইবনু আদী সংকলিত আল কামিল ৮:২৩৬)।
- দুর্বল।

কারণ এর সনদে ابن أبي مريم নামীয় রাবী অনির্ভরযোগ্য। ইমাম যাহাবী লিখেছেন ((ضَعَّفَهُ: أَحْمَدُ بنُ حَنْبَلٍ، وَغَيْرُهُ، مِنْ قِبَلِ حِفْظِه.)) অর্থাৎ ইমাম আহমদ সহ অন্যান্যরা তাকে তার স্মরণশক্তির ক্রুটির কারণে দুর্বল বলেছেন। তিনি আরও লিখেছেন ((وَقَالَ ابْنُ عَدِيٍّ: أَحَادِيْثُه صَالِحَةٌ، وَلاَ يُحْتَجُّ بِهِ)) অর্থাৎ ইমাম ইবনু আদী বলেন, তার হাদীসসমূহ সঠিক, তবে তা দ্বারা দলিল দেয়া যাবেনা। ইমাম ইবনে হিব্বান বলেন ((هُوَ رَدِيْءُ الحِفْظِ)) অর্থ- সে স্মরণ শক্তির দিক থেকে প্রত্যাখ্যাত। ইয়াযিদ ইবনে আব্দ রাব্বিহ বলেন, সে ১৫৬ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করে। (ইমাম যাহাবীর সিয়ারু আলামিন নুবালা দ্রষ্টব্য)।

2 মুহাম্মদ ইবনে উসমান ইবনে আবী শায়বাহ বলেন ((سمعت يحيى بن معين وسئل عن أبي حنيفة، قال: «كان يضعف في الحديث)) অর্থ- আমি ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন থেকে শুনেছি তাঁকে আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলেন, তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল ছিলেন (উ'ক্বাইলীর সংকলন আদ্ব-উ'আফা ৪:২৮৪)।
- জাল।

কারণ এর সনদে محمد بن عثمان بن أبي شيبة (মৃত. ২৯৭ হিজরী) নামীয় রাবী সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, সে ছিল ((كذاب يضع الحديث)) একজন মহা মিথ্যাবাদী এবং হাদীস জালকারী। ইমাম যাহাবী লিখেছেন ((وأما عبد الله بن أحمد بن حنبل فقال : كذاب. وقال عبد الرحمن بن خراش : كان يضع الحديث)) অর্থ- আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে হাম্বল বলেন, সে ছিল একজন মহা মিথ্যাবাদী। ইমাম আব্দুর রহমান ইবনে খারাস বলেন, সে হাদীস জালকারী ছিল (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৪:২২, ইমাম যাহাবী)।

আলোচনা শেষ করব ইমাম ইবনু আব্দিল বার মালেকী (রহ.)-এর একটি চমৎকার উক্তি দিয়ে। তিনি লিখেছেন ((الذين رووا عن أبي حنيفة ووثقوه وأثنوا عليه أكثر من الذين تكلموا فيه)) অর্থাৎ যারা ইমামে আ'যম থেকে বর্ণনা করেছেন সকলে তাঁকে সিকাহ বলেছেন এবং প্রশংসা করেছেন। আর তাদের সংখ্যা ঐ সকল লোকের চেয়ে বেশি যারা তাঁর সমালোচনা করেছে। (জামে বায়ানিল ইলম ২/১৪৯)।

তথ্যসংগ্রাহক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ

এডমিন ফিকহ মিডিয়া

#ইবনে
#মা'ঈন

Address

Chittagong

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when FAQIH MEDIA BD posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to FAQIH MEDIA BD:

Share

Category