09/04/2024
সরকারি নতুন পে-স্কেল
২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী ১০তম গ্রেডে যোগদান করে একজন চাকুরিজীবী সর্বমোট ২৫,০০০+- টাকা বেতন পেতো।
বর্তমানে ২০২৪ সালে এসেও ১০তম গ্রেডে যদি কেউ যোগদান করে সেও ২৫,০০০+- টাকায় বেতন পাবেন।
অর্থাৎ ৯ বছরে সরকারি চাকুরিতে বেতন বৃদ্ধি হয়নি।। ৯ বছর আগেও যে বেতন ৯ বছর পর এসেও একই বেতন। কিন্তু গত ৯ বছরে দ্রব্যমূল্যের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন যোগদান করে যে বেতন ২০১৫ সালে পাওয়া যেত ২০২৪ সালে যোগদান করেও সেই একই বেতন পাচ্ছে।
আমাদের সবার এটাই মনে হলেও আসলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ।
২০১৫ সালে ডলারের দাম ছিল ৭৭ টাকা।অর্থাৎ ২০১৫ সালে ১০তম গ্রেডের একজন সরকারি চাকরিজীবী ৩২৫ ডলার বেতন পেতো। কিন্তু ২০২৪ সালে ১০তম গ্রেডে যোগদান করে একি বেতন পেলেও ডলার হিসাবে সে পাচ্ছে মাত্র ২২৯ ডলার। সে হিসেবে বর্তমানে যোগদান করে ২০১৫ সাল থেকে ৩২৫-২২৯=৯৬ ডলার কম বেতন পাচ্ছে টাকার অঙ্কে যা ১০৪৬৪ টাকা। গত ৯ বছরে প্রত্যেক চাকুরিজীবীর বেতন কমেছে ডলারের বিপরীতে যেখানে প্রতিবছর দেখা যায় জনপ্রতি আয় ডলারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তুু বাস্তবে তার মিল নাই। বর্তমানে একজন দিনমজুরের পারিশ্রমিক / বেতন দৈনিক ৬০০-৮০০ টাকা কিংবা তারও বেশি। তাই গঠন করুন নবম পে কমিশন, ৫% প্রণোদনায় দিয়ে শান্তনা কত দিন চলবে। বাজার পরিস্থিতি তো দিন দিন নাগালের বাহিরেই চলে যাচ্ছে। তার উপর আবার যুক্ত হচ্ছে সার্বজনীন পেনশন। গত বছর শিল্প কারখানার বেতন বৃদ্ধি হলো। তাই সরকারি চাকুরিতে নতুর পে-স্কেল অতিজরুরী।।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের একটাই চাওয়া, সেটা হলো নবম পে-স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য দূর করা।বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রাম, আলোচনা-পর্যলোচনার পর কিছুটা আশার আলো দেখা দিয়েছে। হয়তো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই আসতে পারে সুসংবাদ।
এদিকে নবম জাতীয় পে-স্কেল কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে নিজেদের মতো করে ভাবনা-চিন্তা করছেন সরকারি কর্মচারীরা।
ইমরান হোসেন নামে একজন ফেসবুকে তুলে ধরেছেন ‘৯ম জাতীয় পে-স্কেল এমন হওয়া চাই’।তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
১) বেতন গ্রেড হতে হবে ১২ টি। বেতনের অনুপাত হতে হবে ১:৫।
যেমন:-
১ম শ্রেণী:---
গ্রেড-১ -------------------------------------- = ১০১০০০
গ্রেড-২ (পূর্বের ২,৩ গ্রেড)--------------- = ৮৬০০০
গ্রেড-৩ (পূর্বের ৪,৫ গ্রেড)--------------- = ৭৬০০০
গ্রেড-৪ (পূর্বের ৬,৭ গ্রেড)--------------- = ৬৬০০০
গ্রেড-৫ কেডার (পূর্বের ৮ গ্রেড)------- = ৫৬০০০
গ্রেড-৬ নন-কেডার (পূর্বের ৯ গ্রেড)-- = ৫১০০০
২য় শ্রেণী:---
গ্রেড-৭ (পূর্বের ১০ গ্রেড)---------------- = ৪৬০০০
গ্রেড-৮ (পূর্বের ১১,১২ গ্রেড)----------- = ৪১০০০
৩য় শ্রেণী:---
গ্রেড-৯ (পূর্বের ১৩,১৪ গ্রেড)----------- = ৩৬০০০
গ্রেড-১০ (পূর্বের ১৫,১৬ গ্রেড)--------- = ৩১০০০
৪র্থ শ্রেণী---
গ্রেড-১১ (পূর্বের ১৭,১৮ গ্রেড)--------- = ২৬০০০
গ্রেড-১২ (পূর্বের ১৯,২০ গ্রেড)--------- = ২১০০০
২) প্রতি বছর ১০% করে ইনক্রিমেন্ট চাই।
৪) পদোন্নতি না দিতে পারলে প্রতি ৫ বছর পরপর উচ্চতর গ্রেড চাই। উচ্চতর গ্রেডের কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা রাখা যাবেনা। উচ্চতর গ্রেড পেলে কমপক্ষে ২০% বেতন বৃদ্ধি হতে হবে।
৫) বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের ৬০% দিতে হবে। গ্রাম এবং শহর এর বেলা একই % বাড়ি ভাড়া দিতে হবে। তাহলে কোন কর্মচারী আর শহরে থাকার লোভ করবেনা। মূল বেতন বাড়ার সাথে সাথে বাড়ি ভাড়ার % কমানো যাবেনা।
৬) ভ্রমণ ভাতা মাসে ৩০০০ চাই।
৭) টিফিন ও লান্স ভাতা মাসে ৬০০০ চাই।
৮) চিকিত্সা ভাতা পুরো পরিবারের(৭জনের) মাসে ৭০০০ চাই।
৯) শিক্ষা ভাতা ১ সন্তান মাসে ৫০০০, ২ সন্তান মাসে ১০০০০ চাই।
১০) উত্সব ভাতা হিসেবে ২ টা মূল বেতন চাই (বছরে ২ বারে ৪ টি মূল বেতন চাই)।
১১) নববর্ষ ভাতা মূল বেতনের ৫০% চাই।
১২) শ্রান্তী বিনোদন ভাতায় ৩ টা মূল বেতন চাই।
১৩) বিদ্যুত বিল বাবদ ১৫০০ টাকা চাই।
১৪) গ্যাস বিল বাবদ ২০০০ টাকা চাই
১৩) পিতা মাতার ভাতা মাসে ৫০০০ চাই (পিতা মাতা জীবিত থাকলে পাবে, মৃত থাকলে পাবেনা)।
১৪) সময় সময় বাজার মূল্য/দ্রব্যমূল্য বাড়লে বেতন বৃদ্ধি করে সমন্বয় করতে হবে।
১৫) দুর্নীতি করলে (প্রমাণ হলে) চাকরিচ্যুত/জেল/মৃত্যু দন্ড চাই।