25/08/2022
মেঘলা নামে একটি মেয়ে ছিল।যে কিনা সবসময় মুখে একটি বক্স পড়ে থাকতো।মেঘলার ধারনা সে এ পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎচিত মেয়ে। মেঘলা ঘর থেকে কোথাও বের হতো না। বাড়িতে সে তার ভাই আমান ওতার বাবার সাথে থাকতো।
একদিন আমান আঘাত পেয়ে বাড়িতে ফিরলে তার বাবা তাকে মারতে যায়। তবে সে তার বোনকে এগিয়ে এনে নিজেকে বাচিয়ে নেয়।বেচারি মেঘলা মার খেয়ে কাঁদতে শুরু করে। এভাবে ভাই এবং বাবার সাথে তার দিন কাটতো।সে তার মনের কথা সোস্যাল মিডিয়াতে নিয়মিত লিখতো।সেখানে তার ভারচুয়াল অনেক ফেন্ড ও ছিল।যেহেতু সোস্যাল মিডিয়াতে কথা বলার জন্য চেহারা দেখাতে হয় না। তাই সেখানে কথা বলা তার জন্য সহজ ছিল।
(ছোট বেলায় মেঘলা যখন তার ক্রাশকে প্রোপোজ করেছিল, তখন তার ক্রাশ তাকে মুখের উপর বলেছিল যে। মেঘলা পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎচিত মেয়ে।এই রকম মেয়ের সাথে সে কখনোই থাকবে না। একথা বলে সে মেঘলাকে রিজেক্ট করে। এমকি সেখানে থাকা ছেলেটির বন্ধুরা সহ মেঘলাকে কুৎচিত কুৎচিত বলে চিৎকার করতে থাকে। আর তখন থেকে তার মাথায় এই ব্যাপারটা ডুকে যায়। মেঘলা পৃথিবীর সব থেকে খারাপ দেখতে। আর এই কারনে মেঘলা স্কুল ছেড়ে দেয় এবং নিজেকে চার দেয়ালে বন্ধি করে পেলে।তার বাবা তাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু কোনো লাভ হয় নি।
একদিন সে একটি বেলুনের পেছন পেছন ভুলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তখন সে একটি ছেলেকে দেখতে পায়। তাকে দেখে মেঘলা অনেক ঘাবড়ে যায়। ছেলেটি তাকে একটি ঠিকানা জিঞ্জাসা করছিল। মেঘলা প্রচন্ড ঘাবড়ে গিয়ে তার হাতে থাকা ব্যাগটি দিয়ে তার মুখটি ঢেকে দেয়। এবং ছেলেটিকে কিছু না বলে সে বাড়ির ভেতরে দৌড়ে চলে যায়।সে দেখেছে মুখ ঢেকে দেওয়াতে তার ভেতরের ভয় টা অনেক কমে গেছে। তাই সে এরপর থেকে মুখ ঢেকে রাখতো।এমকি তার পরিবারেরর সামনে পর্যন্ত মুখ ঢেকে রাখে।
:-*:-*:-*:-*:-*:-*
মেঘলার বাবা তাকে নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে। তিনি সাহায্যের জন্য ডাক্তারের কাছে পর্যন্ত যায়। ডাক্তার বলে কৈশর বয়সে এই রকমটা হওয়া স্বাভাবিক। আর এর একমাত্র চিকিৎসা হলো মেঘলাকে অনেক লোকের সাথে মিশতে হবে। এতে করে তার মনের ভয় কাটবে।
এরপর দিন মেঘলা ও তার ভাইকে উদ্দেশ্য করে তার বাবা বলে, এখন তিনি একটি জরুরি কথা বলবেন। বাবার মুখে এমন কথা শুনে তারা দুজন ঘাবড়ে যায। তাই আর দেরি না করে আমান দ্রুত জিঞ্জাসা করে তার ক্যান্সার আছে কিনা। তার বাবা ধমক দিয়ে বলল না। পরে তার বাবা বলে যে, কাল থেকে মেঘলা আমানের সাথে স্কুলে যাবে। এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে মেঘলা অবাক হয়ে যায়। সে তার বাবাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে সে স্কুলে যাবে না। কিন্তু তার বাবা উনার সিদ্ধান্তে ধীড় ছিল।এমটি দেখে মেঘলা তার ঘরে চলে যায়। এবং ভয়ে চিন্তায় কান্না করতে থাকে। তখন সে ভাবতে থাকে কাল সে স্কুলে গেলে সবাই তাকে নিয়ে মজা করবে। অনেক ভাবার পর মেঘলা ঠিক করলো সে বক্স পড়ে স্কুলে যাবে। কুৎচিত ডাক শুনার থেকে বক্স পড়ে বুলি হওয়া ভালো।
তাই সে পরেরদিন স্কুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আমান একটি বক্স এনে তা সুন্দর করে ডেকোরেট করে মেঘলাকে গিফ্ট করে।
★★★★
পরেরদিন স্কুলে গেলে সবাই তার বক্স নিয়ে হাসাহাসি শুরু করে দেয়।সে দৌড়ে পালাতে গেলে একটা হেলমেট পড়া ছেলের সাথে ধাক্কা খায়।ছেলেটির নাম ছিল মিঠু। মেঘলাযে ক্লাসে ভর্তি হয়েছে সে একই ক্লাসে পড়ে। মেঘলা মিঠুর সামনে থেকে ও পালায়। এবং গিয়ে পড়ে স্কুলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছেলে আরাফ এর সামনে। আরাফ ও তার বন্ধুরা মিলে মেঘলাকে ট্রল করতে শুরু করে। তারা তার মাথার বক্সটি টেনে খুলতে চেয়েছে।তখন মিঠু এসে মেঘলাকে বাচিয়ে নেয়। আরাফ তখন খুব রেগে যায় এবং মিঠুকে বলে স্কুল ছুটির পর দেখা করতে।
ক্লাস শুরু হলে টিচার সবাইকে বলে যেন মেঘলার priveci কে সবাই সম্মান করে। কিন্তু কে শুনে কার কথা টিচার বের হলেই সবাই মেঘলাকে বিরক্ত করতে থাকে। তাকে নিয়ে সবাই অনেক মজা করছিল।মিঠুর এসব দেখে খুব রাগ হচ্ছিল.....................।
# চলবে
#গল্প-বক্স পড়া মেয়েটি
# পর্ব :০১
# জান্নাতুল ফেরদাউস
( আস্সালামুআলাইকুম আমি গল্প লিখাতে একদম নতুন তাই কোন ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আপনারা ভালো রিভিউ দিলে পরের পর্ব লিখবো । আশা করি ভালো রিভিউ দিভেন)