20/09/2023
আজ হোটেলে দুপুরের খাবার খেলাম। একটা ডিমভর্তা আর একটু পাতলা ডাল। পঞ্চাশ টাকা বিল এলো। বলা যায় অনেকদিন পর দুপুরে খেলাম। মাথার উপর দাঁড়িয়ে থাকে ওয়েটার। তাকেও বখসিশ দিতে হয়। পাঁচটাকা তো দেয়া যায় না। ওয়েটারকে বলতে পারলাম না আরেক প্লেট ভাত দিন। তার কাজ বাড়ানো মানে বখসিশ দেয়ার রাস্তা বের হওয়া। খেয়ে উঠে এলাম।
ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে।
রিকশাচালককে সহজে ডাকি না। চেষ্টা করি হাঁটার। ভাড়াতো বাঁচে।
ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে।
বিকেলের নাস্তা বাদ দিয়েছি। জিহবা বড্ড ত্যাদর। রুচি বাড়ছে। মিষ্টি টাইপের কিছু খেলে বলে ঝাল খাবা না?
ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে।
সদাইপাতি কিনতে গেলে দোকানী টুকটাক বেশি দিয়ে দেয়। দেখা গেল পয়তাল্লিশ টাকা বিল হলো। বলে বসে মামা পঞ্চাশটাকার মিলায় দেই।
এসব ঝানাইপানাই যেন না করে তাই আগেই বলে দেই, খবরদার বেশি দেবেন না। পারলে একটু কম দেবেন।
ইদানিং সাহসে কুলায় না।
চা খেতে গেলে বিপদ। দোকানী বড্ড ফাজিল। এত সুন্দর করে দুধচা বানায় মনে হয় একটু পরপর খাই। কেন এতো সুন্দর টেস্ট করে বানাবি তুই বেটা!
পাঁচটাকার চা পনের টাকা। খাবোই না আর চা।
ইদানিং খরচ বাড়াতে সাহসে কুলায় না।
এই ধরেন মাছের বাজার। গরিবের মাছগুলোও আর কেনা যায় না। পিচ পিচ করা মাছ খুঁজি আজকাল। সেখানেও ভিড়। মিন মিন করে বলি, একটা ছোট্ট সাইজের মাছ দ্যান না! একা মানুষ এতো বড় দিয়েন না।
চুপ করে বের হয়ে চলে আসি।
ইদানিং খরচ বাড়াতে সাহসে কুলায় না।
কোনো মেহমান বেড়াতে এলে গল্প মুখস্ত করি। আপনাদের খুব দেখতে ইচ্ছে করে। ইশ আসতে বলতে পারি না। একটা কাজে বাইরে যাচ্ছি কদিনের জন্য। মেহমান নিজেই বলে ঠিক আছে কদিন পরে যাবো। তখন মনে হয় হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। কায়দা করে যে কয়দিন চলা যায় আরকি।
ইদানিং খরচ বাঁড়াতে সাহসে কুলায় না।
এই গরমে জামাকাপর কিনে হবে কী! এমনতো না কোনো অনুষ্ঠানে যাবো। নিজেকে বুঝ দেই- যা আছে তাই দিয়েই চলো। পোষাকে পরিচয় নয়। নীতিবাক্য নিজেরে শুনাই।
কারণ ইদানিং খরচে কুলায় না।
দেশের উন্নয়ন হোক। ধনীগুলো আরো ধনী হোক। আর আমরা নাহয় কৌশল করেই বাঁচি নিজেকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে।
এই গল্প হাজার হাজার মানুষের।
কী করবো ইদানিং খরচে কুলায় না।