05/12/2020
1st Session - Know about Zia (জিয়া কে জানুন)
1st Session - Know about Zia (জিয়া কে জানুন)
Campaign Partner : Go Social BD
Question from Rs Rohit -
প্রশ্নঃ আচ্ছা ভাইয়া আপনিত প্রথম থেকেই শিরোনামহীন এর সাথে এবং ব্যাক্তিগত জীবনে যে পেশায় নিয়োজিত আছেন সেখান থেকে অনেকটা সফলভাবেই কাজ করে আসছেন তো আপনার এখন অবধি আপনার ব্যান্ড অথবা নিজের পেশার দিক থেকে এমন কোন কিছুর ঘাটতি অনুভব করছেন যে ধরুন এইটা হলে ভালো হত বা এইটা করলে আরও সুন্দর পরিবেশ হত এবং নিজে যদি প্রধানমন্ত্রি হোন তাহলে ব্যান্ড মিউজিকের জন্য কী কী করতেন আর শ্রোতাদের জন্য কেমন ব্যবস্থা করতেন.????
- সফলভাবে করে আসছি বললে ভুল বলা হবে। সফলতাকে সংজ্ঞায়িত করা সহজ নয়। আমার স্থাপত্য পেশায় প্রফেশনাল কমিটমেন্ট লেভেল নিঁখুত থাকাটাই প্রত্যাশিত, বিশেষত যদি স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এর জন্য কাজ করতে হয়, তাহলে তো বলাই বাহুল্য। সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যবশত পেশাগত জায়গায় স্বনামধন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের জন্য আমাকে সার্ভিস দিতে হয়েছে যার কিছু কিছু জায়গায় সম্পৃক্ততা একটাই সিরিয়াস টাইপের যে মিউজিকে সময় দেয়া আমার জন্য ক্রমাগত কঠিন হয়ে যেতে থাকে। অথচ, ব্যান্ড কে বঞ্চিত করে নিজের ব্যাক্তিগত স্বার্থের পেছনে দৌড়ানোর কোনো রেকর্ড নেই আমার, আমি যথেষ্ট সময় না দিলে ব্যান্ড যে বিপন্ন হয়ে পরবে সেটাও নিশ্চিত। সেই সময়, নিজের স্থাপত্য পেশা ছেড়ে দিলাম, সফল চলমান কন্সাল্টেন্সি ফার্ম বন্ধ করে দেবার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার স্ত্রী এবং কন্যা নিরবে পাশে দাঁড়িয়েছে। এদেশে, স্বীকৃত পেশা চর্চা না করে মিউজিক কে পেশা হিসেবে বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নিতান্ত নির্বোধ ছাড়া কারও পক্ষে নেয়া সম্ভব নয়। মিউজিক বিক্রি হয়না, মিউজিক অনেক অর্থ এনে দেয়না। স্বচ্ছল জীবন ত্যাগ করে কষ্টের জীবন বেছে নিতে হবে, শখের অনেক কিছুই পূরণ হবেনা। আমার আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার পরিবার আমার মতো নির্বোধের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। সেই কষ্টের জীবনের সাথী হয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের সমর্থন না থাকলে এই একরোখা নির্বোধের মিউজিক অনেক আগেই ছেড়ে দিতে হতো।
আমাদের দেশে, মিউজিক কে পেশাগত জায়গায় মুল্যায়ন করা হয়না। যেখানে, পার্শ্ববর্তী দেশে চলচ্চিত্রের ওপর নির্ভরশীল মিউজিক নিয়ে মিডিয়ার যথেষ্ট উচ্ছ্বাস আছে, সেখানে আমাদের স্বনির্ভর মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে, শক্তিশালী ব্যান্ড মিউজিক নিয়ে মিডিয়া একেবারেই উদাসীন। দেশের জাতীয় বা স্বনামধন্য এওয়ার্ড প্রোগ্রাম গুলোতে ব্যান্ড মিউজিক ক্যাটাগরি ই নেই, উদাসীনতা বোধহয় আর বুঝিয়ে বলার দরকার হয়না। এই নিরুৎসাহিত করার প্রবল প্রচেষ্টার মাঝেও আমাদের ব্যান্ড মিউজিক কে বিশ্বের দরবারে তুলনা করা হলে, মানের জায়গা থেকে কারো চাইতে খুব কম হবেনা। মিউজিক এবং ভালো সাউন্ড প্রডাকশন সবাই একান্ত ব্যাক্তিগত আগ্রহ এবং প্রচেষ্টা থেকে করে। কোনো একাডেমি কিংবা পৃষ্ঠপোষকতা নেই। অথচ, স্টেজে দাড়িয়ে দেখেছি, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ কিংবা অন্য ইভেন্টে ব্যান্ড মিউজিক স্লট টাই সবচাইতে আকর্ষণীয় এবং এটা কোনো কিছু দিয়েই রিপ্লেস করা সম্ভব না। এ ধরনের জনপ্রিয় একটা বিভাগ নিয়ে মিডিয়ার কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক অথবা সরকারি উদাসীনতা কেনো, সেই প্রশ্নের উত্তর আজ ৩০ বছর যাবত খুঁজে বেড়াচ্ছি, কারো জানা থাকলে, বোঝাতে পারলে আমার উপকার হবে, শেখা হবে এবং কৃতজ্ঞ থাকবো। আজীবন, দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, সেবামূলক ভলান্টারি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি, এওয়ারনেস এর কাজ করেছি, মিউজিসিয়ান দের ছাড়া চ্যারিটি তে খুব বেশি দেখিনি অন্য কাউকে। কিন্তু, মিউজিসিয়ান দের বিপদে মিউজিসিয়ান ছাড়া অন্য কাউকে দাঁড়াতেও দেখেছি হাতে গোনা দুয়েক ক্ষেত্রে কেবল। আমরা যেদেশে থাকি, সেখানে সবাই মিউজিক শোনে, ফ্রি শোনার সুব্যবস্থা উপভোগ করে কিন্তু সত্যিকার অর্থে মুল্যায়ন করেনা। মিউজিকে পেশাজীবি হলে তার এবং তার পরিবারের জীবন অর্থনৈতিক শংকায় পরে যাবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বোনাস হিসেবে কটুক্তি হজম করতে হবে। যাহোক, এসব ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রী হতে হয়না। দেশের সংস্কৃতি চলমান রাখতে চাইলে শুধু সরকার নয়, সর্বসাধারণের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। পৃষ্ঠপোষকতায় এমন ভয়বহ দৈন্যতা, সাংস্কৃতিক ধারার প্রতি আমাদের কর্পোরেট বা স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান গুলোর এমন প্রবল অনীহা পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। এটা, আইন করে, নিয়ম করে পরিবর্তন করা যায়না। আমাদের বোধের সংষ্কার ছাড়া কিছু আশা করা যায়না।