RUBEL

RUBEL হেসে গুনাহ করলে কেঁদে কেঁদে জাহান্নামে যাবে,কেঁদে কেঁদে ইবাদত করলে হেসে হেসে জান্নাতে যাবে ইনশাআল্লাহ

নারীর জন্য অপর নারী বা মাহরাম পুরুষের সামনে যা কিছু খোলা রাখা জায়েয➤ প্রশ্ন: (34745)বর্তমান যামানায় অনেক নারী পুরুষ মানু...
04/02/2024

নারীর জন্য অপর নারী বা মাহরাম পুরুষের সামনে যা কিছু খোলা রাখা জায়েয

➤ প্রশ্ন: (34745)

বর্তমান যামানায় অনেক নারী পুরুষ মানুষ না থাকলে মহিলাদের সামনে এত সংকীর্ণ পোশাক পরে থাকেন যে তাদের পিঠ ও পেটের বড় একটা অংশ খোলা থাকে। আবার অনেকে ঘরে সন্তানদের সামনে একই ধরনের শর্ট পোশাক পরে থাকেন - এ বিষয়ে আপনাদের মতামত কি?

➤ উত্তর:

ফতোয়া ও গবেষণা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন:

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীগণের প্রতি আল্লাহর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।

ইসলামের প্রথম যুগের নারীগণ আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান এবং কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণের বরকতে পুতঃপবিত্রতা, লজ্জাশীলতা ও শালীনতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিলেন। সে সময়ে নারীগণ পরিপূর্ণ শরীর আচ্ছাদনকারী পোশাক পরতেন। নারীদের সামনে অথবা মোহরেম পুরুষের মধ্যে অবস্থানকালে তারা খোলামেলা চলতেন বা অনাবৃত থাকতেন বলে জানা যায় না। শতাব্দীর পর শতাব্দী, প্রজন্মের পর প্রজন্ম, এমনকি নিকট অতীত পর্যন্ত মুসলিম নারীসমাজ এভাবেই চলে এসেছেন। এরপর নানা কারণে অনেক নারীর মধ্যে পোশাক ও চরিত্রের অবক্ষয় শুরু হয়েছে। সে বিষয়ে বিশদ আলোচনার স্থান এটি নয়।

নারীর প্রতি নারীর দৃষ্টি ও মেয়েদের উপর আবশ্যকীয় পোশাকের ব্যাপারে প্রচুর ফতোয়া আসার পরিপ্রেক্ষিতে ফতোয়া কমিটি মুসলিম নারীকুলকে এই মর্মে অবহিত করছে যে, লজ্জার ভূষণে নিজেকে অলংকৃত করা নারীর উপর ফরজ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লজ্জাকে ঈমানের শাখা আখ্যায়িত করেছেন। শরিয়তের বিধান ও সামাজিক প্রথাগত লজ্জা হচ্ছে- নারী নিজেকে ঢেকে রাখবে, শালীনতা বজায় রেখে চলবে এবং এমন চরিত্র লালন করবে যা তাকে ফেতনা ও সন্দেহ-সংশয়ের উৎস থেকে দূরে রাখবে। কুরআনের সুস্পষ্ট দলিল প্রমাণ করে- কোন নারী অপর নারীর সামনে তার দেহের ততটুকু অংশ খোলা রাখতে পারবে যতটুকু মোহরেমদের সামনে খোলা রাখা জায়েয। অর্থাৎ সাধারণতঃ বাড়িঘরে থাকাকালে ও গৃহস্থালির কাজ করতে গিয়ে যতটুকু উন্মুক্ত হয়ে পড়ে ততটুকু। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত বাঁদি, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।”[সূরা নূর, আয়াত: ৩১]

এই হলো কুরআনের সুস্পষ্ট দলিল। সুন্নাহও এটাই প্রমাণ করে। এর উপরেই রাসূলের স্ত্রীগণ, সাহাবায়ে কেরামের স্ত্রীগণ ও তাঁদেরকে সঠিকভাবে অনুসরণকারী মুমিন নারীগণ আজ পর্যন্ত চলে আসছেন। আয়াতে যাদের সম্মুখে সৌন্দর্য প্রকাশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে সেটা হচ্ছে- সাধারণতঃ ঘরে থাকাকালে, গৃহস্থালির কাজ করতে গিয়ে যা উন্মুক্ত হয়ে পড়ে এবং যা ঢেকে রাখা কঠিন। যেমন- মাথা, হস্তদ্বয়, ঘাড় ইত্যাদি। এর চেয়ে বেশি কিছু উন্মুক্ত রাখার পক্ষে কুরআন-সুন্নাহর কোন দলিল নেই। বরং এর চেয়ে বেশি উন্মুক্ত করলে নারীর প্রতি নারী আসক্ত হওয়ার দুয়ার খুলে যাবে; বাস্তবে এ ধরনের আসক্তির অস্তিত্ব রয়েছে এবং এ ধরনের আচরণ অন্য নারীদের জন্য খারাপ উদাহরণ তৈরী করবে। উপরন্তু এটি অমুসলিম নারী, বেহায়া ও বেশ্যাদের পোশাক অনুকরণের নামান্তর। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে অনুসরণ করে সে তাদের দলভুক্ত।”[ইমাম আহমাদ, আবু দাউদ] সহিহ মুসলিমে (২০৭৭) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার গায়ে কুসুমের রঙে (লাল রং) রঞ্জিত দুটি কাপড় দেখে বললেন: এগুলো কাফেরদের পোশাক। তুমি এগুলো পরবে না।”

সহিহ মুসলিমে (২১২৮) আরো এসেছে- দুই শ্রেণীর জাহান্নামীকে আমি দেখি নাই। এক শ্রেণীর মানুষ তাদের কাছে গুরুর লেজের মত চাবুক থাকবে যা দিয়ে তারা মানুষকে প্রহার করবে। আর এমন নারী যারা পোশাক পরা সত্ত্বেও উলঙ্গ, নিজে নষ্টা, অন্যকেও নষ্টকারিনী। তাদের মাথা উটের বাঁকা কুঁজের মত। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। যদিও জান্নাতের ঘ্রাণ এত এত দূর থেকে পাওয়া যাবে।” হাদিসে ‘এমন নারী যারা পোশাক পরা সত্ত্বেও উলঙ্গ’ এ কথার অর্থ হচ্ছে- কোন নারী এমন কোন পোশাক পরা যে পোশাক দেহকে আচ্ছাদিত করে না। তাই সে যদিও পোশাক পরেছে কিন্তু বাস্তবে সে উলঙ্গই থেকে গেছে। যেমন- এমন স্বচ্ছ পোশাক পরা যাতে তার চামড়া পর্যন্ত দেখা যায়। অথবা এমন পোশাক পরা যা তার শরীরের ভাঁজগুলো পর্যন্ত ফুটিয়ে তোলে। অথবা এত শর্ট-পোশাক পরা যা তার শরীরের সবটুকু অংশ আবৃত করে না।

তাই মুসলিম নারীর কর্তব্য হলো- মুমিনদের মাতৃবর্গ, সাহাবায়ে কেরামের স্ত্রীগণ ও তাঁদেরকে সঠিকভাবে অনুসরণকারী নারীগণের আদর্শকে আঁকড়ে ধরা। পর্দা ও শালীনতা রক্ষার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা। এটি তাদেরকে ফেতনা থেকে দূরে রাখবে, মনের মধ্যে খারাপ কামনার উদ্রেক থেকে হেফাযত করবে।

অনুরূপভাবে মুমিন নারীদের উপর ফরজ হচ্ছে- আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যেসব পোশাক হারাম করেছেন, যেগুলো অমুসলিম নারীদের পোশাক বা চরিত্রহীন নারীদের পোশাকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ সেগুলো পরিহার করা। আল্লাহর আনুগত্য, তাঁর নিকট থেকে সওয়াব পাওয়ার আশা এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় করে এসব পোশাক বর্জন করতে হবে।

এছাড়া প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরজ তার অধীনস্থ নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা। অধীনস্থ নারীদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কর্তৃক নিষিদ্ধ, অশ্লীল, সংকীর্ণ ও উত্তেজক পোশাক পরার সুযোগ না দেয়া। তার জেনে রাখা উচিত, কেয়ামতের দিন প্রত্যেক কর্তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।

আমরা আল্লাহর কাছে দুআ করছি তিনি যেন মুসলমানদের অবস্থা সংশোধন করে দেন। তাদের সকলকে যেন সঠিক পথে পরিচালিত করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী ও দুআকবুলকারী। আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের উপর আল্লাহ রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। সমাপ্ত।

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সংকলন (১৭/২৯০)

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সংকলনে (১৭/২৯৭) এসেছে-

সন্তানদের সামনে ততটুকু খোলা যাবে প্রথাগতভাবে যা খোলা রাখা হয়। যেমন- চেহারা, দুই হাতের কব্জি, দুই বাহু, দুই পা ইত্যাদি। সমাপ্ত।

আল্লাহই ভাল জানেন।
সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

04/02/2024
মুসলিম পুরুষের জন্য অমুসলিম নারী এবং অমুসলিম পুরুষের জন্য মুসলিম নারীকে বিবাহ করার হুকুমপ্রশ্ন: (21380)ইসলামের ব্যাপারে ...
04/02/2024

মুসলিম পুরুষের জন্য অমুসলিম নারী এবং অমুসলিম পুরুষের জন্য মুসলিম নারীকে বিবাহ করার হুকুম

প্রশ্ন: (21380)

ইসলামের ব্যাপারে আমার কিছু সংশয় আছে। আপনি কি সেগুলো আমাকে স্পষ্ট করে দিতে পারবেন? যিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী তার জন্য দ্বীন ইসলামের অনুসারী নয় এমন কাউকে বিবাহ করা কি বৈধ? এমনকি যদি সে বিবাহ করার পরও ইসলাম গ্রহণ না করে?

উত্তর:

মুসলিম পুরুষের জন্য অমুসলিম নারীকে বিবাহ করা হালাল; যদি ঐ অমুসলিম নারী খ্রিষ্টান বা ইহুদী হয়। কিন্তু এই দুই ধর্মের বাহিরে অন্য কোনো ধর্মের অমুসলিম নারীকে বিবাহ করা হালাল নয়। এর পক্ষে দলীল হল আল্লাহর বাণী: “আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ বৈধ করা হল। কিতাবধারীদের খাদ্য তোমাদের জন্য বৈধ এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য বৈধ। স্বাধীনা (কিংবা সতী-সাধ্বী) মুসলিম নারীগণ ও তোমাদের পূর্বের কিতাবধারীদের স্বাধীনা (কিংবা সতী-সাধ্বী) নারীগণও (তোমাদের জন্য বৈধ); যদি তোমরা তাদেরকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে কর; অবৈধ যৌনকর্ম কিংবা বান্ধবী গ্রহণের জন্য নয়।” [সূরা মায়েদা: ৫]

ইমাম ত্বাবারী উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন: “তোমাদের পূর্বের কিতাবধারীদের স্বাধীনা নারীগণ” অর্থাৎ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের স্বাধীনা নারীগণ। তারা হলো ইহুদী ও খ্রিস্টানেরা, যারা তোমাদের পূর্বে প্রেরিত তাওরাত ও ইঞ্জিলে যা আছে সে ধর্ম অনুসরণ করে। আরবদের মধ্যে ও অপরাপর মানুষদের মধ্যে যারা মুহাম্মদের প্রতি ঈমান এনেছো তোমরা এ নারীদেরকেও বিবাহ করতেও পার “যদি তোমরা তাদেরকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে কর” অর্থাৎ যদি তোমরা তোমাদের নারীদের মধ্য থেকে কিংবা তাদের নারীদের মধ্য থেকে যাকে বিয়ে করেছ তাকে মোহরানা প্রদান কর।[তাফসিরে ত্বাবারী ৬/১০৪)]

কিন্তু মুসলিম পুরুষের জন্য অগ্নিপূজারী, সাম্যবাদী, পৌত্তলিক নারী কিংবা তাদের অনুরূপ কোনো নারীকে বিবাহ করা হালাল নয়।

এর পক্ষে দলীল হল আল্লাহর বাণী: “তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। ঈমানদার ক্রীতদাসীও মুশরিক নারীর চেয়ে উত্তম; যদি সে নারী তোমাদেরকে অভিভূত করে তবুও ...” [বাকারা: ২২১]

মুশরিক নারী হলো ঐ পৌত্তলিক নারী যে পাথরের পূজা করে, হোক সে আরব কিংবা অনারব।

মুসলিম নারীর জন্য অন্য ধর্মের অমুসলিম পুরুষকে বিবাহ করা হালাল নয়। সেটা ইহুদী-খ্রিষ্টান হোক কিংবা অন্য ধর্মের কাফের হোক। তার জন্য ইহুদী, খ্রিষ্টান, অগ্নিপূজারী, সাম্যবাদী, পৌত্তলিক বা অন্য ধর্মীয় কারো সাথে বিবাহে আবদ্ধ হওয়া হালাল নয়।

এর পক্ষে দলীল হল আল্লাহর বাণী: “আর মুশরিকদের কাছে তোমরা (মেয়েদের) বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। ঈমানদার ক্রীতদাসও মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম; যদি মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করে তবুও। ওরা (মুশরিকরা) জাহান্নামের দিকে ডাকে; আর আল্লাহ তাঁর বিধান দিয়ে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে ডাকেন এবং তাঁর বিধানসমূহ মানুষকে বুঝিয়ে দেন, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।” [বাকারা: ২২১]

ইমাম ত্বাবারী বলেন: আল্লাহর বাণী “আর মুশরিকদের কাছে তোমরা (মেয়েদের) বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। ঈমানদার ক্রীতদাসও মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদি মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করে তবুও।” –এর দ্বারা আল্লাহ বুঝিয়েছেন: আল্লাহ মুমিন নারীদের জন্য মুশরিক পুরুষকে বিবাহ করা হারাম করেছেন। সেই মুশরিক যে ধরনের শির্ক করে থাকুক না কেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাদের কাছে বিয়ে দিও না। কারণ এটা তোমাদের জন্য হারাম। তোমরা তাদেরকে আল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌র রাসূল ও রাসূলের আনীত বিষয়ের প্রতি ঈমানদার দাসের কাছে বিয়ে দেয়া একজন স্বাধীন মুশরিকের কাছে বিয়ে দেয়ার চেয়ে উত্তম; এমনকি সেই মুশরিক যদি অভিজাত, উচ্চ বংশের হয়, তার বংশ মর্যাদা ও কৌলিন্য তোমাদেরকে মুগ্ধ করে তবুও।

কাতাদা ও যুহরী উভয়ে আল্লাহর বাণী: “মুশরিকদের কাছে তোমরা (মেয়েদের) বিয়ে দিও না” এর ব্যাপারে বলেন: আপনার ধর্মের বাহিরে কোনো ইহুদী, খ্রিষ্টান বা মুশরিক পুরুষের কাছে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া আপনার জন্য বৈধ নয়।[তাফসীরুত তাবারী (২/৩৭৯)]

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

05/04/2023

দোয়া নুর

মাদ্রাসার এক ছোট্ট মেয়ে, বয়স সাত/আট বছর। এই বয়সে মেয়েটা দুনিয়ার হিসাব-নিকাশ কতটুকুই বা বুঝবে?এই অবুঝ মেয়েটাকে ক্লাসের এক...
24/03/2023

মাদ্রাসার এক ছোট্ট মেয়ে, বয়স সাত/আট বছর। এই বয়সে মেয়েটা দুনিয়ার হিসাব-নিকাশ কতটুকুই বা বুঝবে?
এই অবুঝ মেয়েটাকে ক্লাসের এক পর্যায়ে শিক্ষক দাঁড় করালো।
বললো,“এই শব্দটা লিখে নিয়ে আসো।”

মেয়েটা লেখা শেষ করে নিয়ে এসেছে। লেখা ঠিকঠাক দেখে আরেকটা শব্দ লেখতে বললো। মেয়েটা বললো, “মুছে আসি”। এই কথা বলে ছুটে গেল নিজের বেঞ্চের দিকে। শব্দটা মুছে, নতুন শব্দ লিখে আবার শিক্ষকের কাছে আসলো। শিক্ষক থেমে গেলেই পারতেন কিন্তু তিনি আবারও বললেন, “এবার এই শব্দটা লেখো”।
মেয়েটা আবারও “মুছে আসি” বলে দৌঁড় দিলো।

শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকের সাথে একজন অভিভাবক দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। বারবার এই “মুছে আসার” বিষয়টা দেখে কৌতুহলী হয়ে বললেন,
“বারবার কী মুছে আসো? সমস্যা কী?”
ছোট্ট মেয়েটা বললো, “আমার খাতা শেষ।”
তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “তাহলে খাতা কিনতে পারো না?”

প্রশ্নের জবাবটা এমন ছিলো যেন ছোট্ট একটা ফুলের থেকে এক ভারী বস্তু তাদের হৃদয়ের দিকে সজোরে ছুটে এসে আঘাত করেছে!
মেয়েটা বললো, “বাবাও নাই, খাতাও নাই।”
এই কথা বলে ফ্যালফ্যাল করে কেঁদে দিলো।
তাকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো যারা ছিলো তারা তো যেন আগেই পাথর হয়ে গেছে! হুজুর নিজেই তো কান্না ধরে রাখতে পারলেন না!

কাহিনীটা শুনে মনে হচ্ছিলো মেয়েটার চোখের পানি যেন উমরকে (রা.) খুঁজে বেড়ায়! বিশ টাকার একটা খাতা কেনার সাধ্য নেই এমন পরিবার এই বাংলার জমিনে আছে সেটা কি জানতাম আমরা? উমর (রা.) থাকলে তো তাকে ঠিকই খুঁজে বের করে নিতেন! অন্ধকার রাতে অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়ানো উমর (রা.) হয়তো এই চাঁদের টুকরাটাকে কখনো অভাব বুঝতে দিতেন না...

© মেরাজ হোসেন

17/03/2023

পারলর এই নিয়মে খাবার গ্রহন করুন....

দ্বীনের বার্তা♦১১মুস‌লিম মে‌য়ে‌রা কেন সবার সা‌থে কথা ব‌লবে না?মিস‌রের প্রখ‌্যাত গ‌বেষক আ‌লিম শাইখ শা'রাবী রহ. একবার ইং‌ল...
10/03/2023

দ্বীনের বার্তা♦১১
মুস‌লিম মে‌য়ে‌রা কেন সবার সা‌থে কথা ব‌লবে না?

মিস‌রের প্রখ‌্যাত গ‌বেষক আ‌লিম শাইখ শা'রাবী রহ. একবার ইং‌ল‌্যাণ্ড সফ‌রে গে‌লে জ‌নৈক ইং‌রেজ তা‌কে প্রশ্ন করে - আপনা‌দের মে‌য়েরা কেন সব ধর‌ণের পুরুষ‌কে সালাম দেয় না এবং সবার সা‌থে মুসাফাহা ক‌রে না?

তি‌নি বড় বিস্ময়কর জবাব দি‌লেন। বল‌লেন : তোমা‌দের ইংল‌্যা‌ণ্ডে সবাই কি রানী‌কে সালাম তথা অভিবাধন জানা‌তে পা‌রে? রানী কি সবার সা‌থে হ‌্যাণ্ড‌শেক করে?

সে বলল, না, রানী সবাই‌কে সাক্ষাত দেয় না। সবার সা‌থে হ‌্যাণ্ড‌শেক ক‌রে না! এখা‌নে আইন করা আ‌ছে, ৭ প্রকা‌রের লোক‌দের সা‌থেই ‌কেবল রানী করমর্দন ক‌রবেন!

শাইখ শা'রাবী ব‌লেন : আমা‌দের দ্বীনেও আইন করা আ‌ছে, মে‌য়েরা ১৪ প্রকার পুরু‌ষের সা‌থে পর্দা ছাড়া সাক্ষাত দি‌তে পার‌বে; এর বাই‌রে নয়। তারা হ‌লো বাবা, দাদা, স্বামী, স্বামীর সন্তান, পুত্র, ভাই, চাচা, মামা, ভা‌তিজা, ভা‌গিনা, পৌত্র (ছে‌লের ঘ‌রের নাতী), ‌‌দো‌হিত্র, (মে‌য়ের ঘ‌রের নাত‌ী)।

‌তোমরা যেমন রানীর সম্মানা‌র্থে এমন কর, তেম‌নি আমরাও নারীর সম্মানা‌র্থে এমন ক‌রি। আমা‌দের দ্বীনে মে‌য়েরা হ‌লো রানীর মত। প্রত্যেক রানীর সভাষদ আ‌ছে; যারা তা‌কে অ‌ভিবাধন জানা‌নোর অ‌নুম‌তি লাভ ক‌রে। ১৪ প্রকার পুরুষ হ‌লো নারীর সভাষ‌দের ম‌তো, অব‌শিষ্টরা সবাই হ‌লো সাধারণ পাব‌লি‌কের ম‌তো। এদের সা‌থে মে‌য়েরা বে-আব্রু সাক্ষাত দি‌তে পার‌বে না।

আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি রহম করুন। তাঁ‌কে জাযা‌য়ে খাইর দান করুন।

~উস্তায সাইফুদ্দিন গাজী (হাফি.)।

দ্বীনের বার্তা♦১০প্রশ্ন: (عَقِيْدَةٌ) আক্বীদা কাকে বলে?উত্তর: আক্বীদা (عَقِيْدَةٌ) শব্দটি আরবী। এর মূল হচ্ছে-(عَقْدٌ)।(ع...
10/03/2023

দ্বীনের বার্তা♦১০
প্রশ্ন: (عَقِيْدَةٌ) আক্বীদা কাকে বলে?

উত্তর: আক্বীদা (عَقِيْدَةٌ) শব্দটি আরবী। এর মূল হচ্ছে-(عَقْدٌ)।

(عَقْدٌ) এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- গিট দেওয়া, চুক্তি করা, প্রতিশ্রুতি দেওয়া, কোন বন্ধনকে মজবুত করা।

মূল শব্দ (عَقْدٌ) এর অনুসারে আক্বীদা (عَقِيْدَةٌ) অর্থ- দৃঢ় বিশ্বাস।

আক্বীদা (عَقِيْدَةٌ) এর পারিভাষিক অর্থ- কোন ধর্ম, আদর্শ বা মতবাদকে মনে-প্রাণে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করাকে আক্বীদা বলে। (আল-ইরশাদ ইলা সহীহিল ই’তিক্বাদ-৬, আল-আকীদাতুল ইসলামিয়্যাহ-৮)

প্রশ্ন: আক্বীদার উৎস কি?

উত্তর: আক্বীদার উৎস হলো কুরআন ও ছহীহ হাদীস। (মাজমুউল ফাতওয়া: ২৯-১৩/২৭-আকীদাতুল ইসলামিয়্যাহ-১০)

প্রশ্ন: সহীহ আক্বীদা কাকে বলে?

উত্তর: কুরআন ও সহীহ হাদিসের দলীল ভিত্তিক আক্বীদাই হলো সহীহ আক্বীদা। (আল-ইরশাদ ইলা সহীহিল ই’তিক্বাদ-৬)

প্রশ্ন: (مَنْهَجٌ) মানহাজ কাকে বলে?

উত্তর: মানহাজ অর্থ কর্মপথ, পন্থা, স্পষ্টপথ বা আদর্শ।

একজন মুসলিম যে পথ বা আদর্শ অনুসরণ করে চলে তাকে মানহাজ বলে। (আল-আজবিবাতুল মুফিদাহ-১২৫)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

لِکُلٍّ جَعَلۡنَا مِنۡکُمۡ شِرۡعَۃً وَّ مِنۡهَاجًا

তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমি একটা করে শরীয়ত ও স্পষ্টপথ নির্ধারণ করে দিয়েছি। (সূরা মায়েদা-৪৮)

প্রশ্ন: আক্বীদা ও মানহাজের মাঝে পার্থক্য কি?

মানহাজ হচ্ছে আক্বীদার চেয়ে ব্যাপকার্থবোধক বিষয়।

কোন আদর্শ বা মতবাদকে মনে-প্রাণে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করাকে আক্বীদা বলে আর একজন ব্যক্তি যে পথ বা আদর্শ অনুসরণ করে চলে তাকে মানহাজ বলে।

মানহাজ আকীদার ক্ষেত্রে যেমনি রয়েছে তেমনি আবার চাল-চলন,আদব-আখলাক,লেনদেন ইত্যাদি মুসলিম জীবনের প্রতিটি দিক নিয়েই মানহাজ রয়েছে।(আল-আজবিবাতুল মুফিদাহ-১২৫)

আকিদা বুঝতে না পারা ও মানহাযে ভুল করার কারণে নানা রকম দলমত ও মাযহাব তৈরি হয়েছে । মানুষেরা আল্লাহর পথ ভুলে গিয়ে শয়তানের পথে ধাবিত হয়েছে

অতএব আকিদা ভ্রষ্ট ও মানহায ভ্রষ্ট আলেমদের থেকে বিদ্যা নিলে জান্নাতে যেতে পারবেন না

এক শ্রেণীর আলেম আছে যারা জাহান্নামের দিকে মানুষকে ডাকছে , এরাই তারা

দ্বীনের বার্তা ♦০৯মুহাম্মদ (সা) থেকে আদি পিতা আদম (আ) পর্যন্ত পূর্বপুরুষগণের নামের তালিকাঃ০১. হযরত মুহম্মদ মুস্তাফা (স)০...
11/02/2023

দ্বীনের বার্তা ♦০৯
মুহাম্মদ (সা) থেকে আদি পিতা আদম (আ) পর্যন্ত পূর্বপুরুষগণের নামের তালিকাঃ

০১. হযরত মুহম্মদ মুস্তাফা (স)
০২. তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ
০৩. তাঁহার পিতা আব্দুল মোত্তালিব
০৪. তাঁহার পিতা হাসিম
০৫. তাঁহার পিতা আব্দ মানাফ
০৬. তাঁহার পিতা কুছাই
০৭. তাঁহার পিতা কিলাব
০৮. তাঁহার পিতা মুরাহ
০৯. তাঁহার পিতা কা'ব
১০. তাঁহার পিতা লুই
১১. তাঁহার পিতা গালিব
১২. তাঁহার পিতা ফাহর
১৩. তাঁহার পিতা মালিক
১৪. তাঁহার পিতা আননাদর
১৫. তাঁহার পিতা কিনান
১৬. তাঁহার পিতা খুজাইমা
১৭. তাঁহার পিতা মুদরাইকা
১৮. তাঁহার পিতা ইলাস
১৯. তাঁহার পিতা মুদার
২০. তাঁহার পিতা নিজার
২১. তাঁহার পিতা মা'দ
২২. তাঁহার পিতা আদনান
২৩. তাঁহার পিতা আওয়াদ
২৪. তাঁহার পিতা হুমাইসা
২৫. তাঁহার পিতা সালামান
২৬. তাঁহার পিতা আওয
২৭. তাঁহার পিতা বুয
২৮. তাঁহার পিতা কামওয়াল
২৯. তাঁহার পিতা ওবাই
৩০. তাঁহার পিতা আওয়ান
৩১. তাঁহার পিতা নাসিদ
৩২. তাঁহার পিতা হিযা
৩৩. তাঁহার পিতা বালদাস
৩৪ . তাঁহার পিতা ইয়াদলাফ
৩৫. তাঁহার পিতা তাবিখ
৩৬. তাঁহার পিতা জাহিম
৩৭. তাঁহার পিতা নাহিস
৩৮. তাঁহার পিতা মাখি
৩৯. তাঁহার পিতা আ'য়েফ
৪০. তাঁহার পিতা আবকার
৪১. তাঁহার পিতা উবাইদ
৪২. তাঁহার পিতা আদ দাহা
৪৩. তাঁহার পিতা হামদান
৪৪. তাঁহার পিতা সানবার
৪৫. তাঁহার পিতা ইয়াসরিবি
৪৬. তাঁহার পিতা ইয়াহজিন
৪৭. তাঁহার পিতা ইয়ালহান
৪৮. তাঁহার পিতা ইরাওয়া
৪৯. তাঁহার পিতা আইযি
৫০. তাঁহার পিতা যিশান
৫১. তাঁহার পিতা আইছার
৫২. তাঁহার পিতা আফনাদ
৫৩. তাঁহার পিতা আইহাম
৫৪. তাঁহার পিতা মুকাসির
৫৫. তাঁহার পিতা নাহিস
৫৬. তাঁহার পিতা যারিহ
৫৭. তাঁহার পিতা সামি
৫৮. তাঁহার পিতা মায্যি
৫৯. তাঁহার পিতা ইওয়াদ
৬০. তাঁহার পিতা ইরাম
৬১. তাঁহার পিতা হিদার
৬২. তাঁহার পিতা হযরত ইসমাইল (আ)
৬৩. তাঁহার পিতা হযরত ইবরাহিম (আ)
৬৪. তাঁহার পিতা তারক
৬৫. তাঁহার পিতা নাহুর
৬৬. তাঁহার পিতা সারুয
৬৭. তাঁহার পিতা রা'উ
৬৮. তাঁহার পিতা ফাহিয
৬৯. তাঁহার পিতা আবীর
৭০. তাঁহার পিতা আফরাহশাদ
৭১. তাঁহার পিতা সা'ম
৭২. তাঁহার পিতা হযরত নূহ (আ)
৭৩. তাঁহার পিতা লামিক
৭৪. তাঁহার পিতা মাতু সালিখ
৭৫. তাঁহার পিতা হযরত ঈদ্রীস (আ)
৭৬. তাঁহার পিতা ইয়ারিদ
৭৭. তাঁহার পিতা মালহালিল
৭৮. তাঁহার পিতা কিনান
৭৯. তাঁহার পিতা আনস
৮০. তাঁহার পিতা হযরত শীস (আ)
৮১. তাঁহার পিতা হযরত আদম (আ)
(সংগৃহিত)

31/01/2023

সৃতি ময় দিনগুলো

দ্বীনের বার্তা ♦৮প্রশ্ন: ইসলামী শরীয়তে স্ত্রী সহবাসের সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি কি? স্ত্রী গর্ভবতী হলে সহবাসে কোন নিষেধাজ্ঞা ...
30/01/2023

দ্বীনের বার্তা ♦৮
প্রশ্ন: ইসলামী শরীয়তে স্ত্রী সহবাসের সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি কি? স্ত্রী গর্ভবতী হলে সহবাসে কোন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কি? সহবাসের নিষিদ্ধ কোন সময় আছে কি?
▬▬▬▬▬▬▬💠💠💠▬▬▬▬▬▬▬
ভূমিকা: মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করার সাথে সাথে তার জীবন ধারণের জন্য কিছু চাহিদা দিয়েছেন এবং চাহিদা মিটানোর পদ্ধতিও বলে দিয়েছেন। মানব জীবনে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ন্যায় জৈবিক চাহিদাও গুরুত্বপূর্ণ। এই চাহিদা পূরণের জন্য ইসলাম বিবাহের বিধান দিয়েছে। ইসলামের প্রতিটি কাজের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সহবাস তার ব্যতিক্রম নয়। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে দিবারাত্রে স্বামী-স্ত্রীর যখন সুযোগ হয়, তখনই সহবাস বৈধ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেত স্বরূপ। সুতরাং তোমরা তোমাদের ক্ষেতে যেভাবে ইচ্ছা গমন কর।’(সূরা বাক্বারাহ; ২/২২৩)। উক্ত আয়াতের তাফসিরে ইবনুল মালিক বলেন, স্ত্রীর পশ্চাৎদ্বারে সঙ্গম সকল ধর্মেই নিষিদ্ধ। কিন্তু পশ্চাৎদিক থেকে সম্মুখের দ্বারে সঙ্গত হওয়া মোটেও নিষিদ্ধ নয়। ইয়াহূদীদের বিশ্বাস ছিল যে, পশ্চাদ্বিক থেকে সঙ্গত হলে তাতে কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে হবে ট্যারা, এটি একটি কুসংস্কার ও ভ্রান্তধারণা। এই ভ্রান্তধারণা অপনোদনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন, ‘‘তোমাদের স্ত্রীগণ হলো তোমাদের শষ্যক্ষেত্র স্বরূপ; অতএব তোমরা যেভাবে ইচ্ছা স্বীয় ক্ষেত্রে গমন কর।’’ আয়াতে স্ত্রীগণ দ্বারা বিবাহিত ও মালিকানা স্বত্বের দাসীই কেবল উদ্দেশ্য। তাদেরকে ক্ষেতের সাথে তুলনা করা হয়েছে; ক্ষেত যেমন বীজ থেকে ফসল উৎপন্ন করে তদ্রূপ স্ত্রীগণও মানব সন্তানের উৎপাদন ক্ষেত্র। আর এর উপযোগী পন্থা হলো সম্মুখ পথে সঙ্গম হওয়া। পশ্চাৎদ্বার হলো মলের পথ। তা (সন্তান) উৎপাদনের ক্ষেত্রও নয়, উপরন্তু এটি ঘৃণিত ও কদর্য কর্ম। ‘‘তোমরা যেভাবে ইচ্ছা স্বীয় ক্ষেত্রে গমন কর’’ এর অর্থ হলো দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে অথবা সম্মুখভাগ হতে অথবা পিছন দিক হতে যেভাবেই ইচ্ছা স্ত্রী গমন তোমাদের জন্য বৈধ, তবে কর্ম সম্পাদন করতে হবে কেবল সম্মুখ দ্বার দিয়ে। আর এতে তোমাদের এবং এর মাধ্যমে জন্মগ্রহণকৃত সন্তানের কোনই ক্ষতির আশংকা নেই। শারহুস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থাকার বলেন; সমস্ত ইমাম ও মুহাদ্দিস একমত যে, পুরুষ যে পন্থা ও প্রক্রিয়াই হোক না কেন সম্মুখদ্বারে সঙ্গত হলেই তা বৈধ। অত্র আয়াত তার দলীল। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ)-বলেন, স্ত্রীকে ক্ষেতের সাথে তুলনা করার দ্বারা ইশারা করা হয়েছে এই দিকে যে, উৎপাদন ক্ষেত্র হলো সম্মুখদ্বার, আর তা যেন লঙ্ঘিত না হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে ব্যক্তি অভিশপ্ত যে তার স্ত্রীর পশ্চাতদ্বার দিয়ে সঙ্গত হয়। সুতরাং তা সর্বসম্মত হারাম। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৫২৮; শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪৩৫; মিরকাতুল মাফাতীহ হা/, ৩১৮৩)
মহান আল্লাহ স্ত্রীদের সাথে সংগমের কোন সময়, দিন তারিখ বা নিয়মনীতি বেঁধে দেননি।তবে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত কয়েকটি নিষিদ্ধ সময় আছে, যাতে স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ নয়। সেটা শেষে উপস্থাপন করবো। তার পূর্বে সহবাসের সুন্নাহ সম্মত প্রদ্ধতি আলোচনা করছি ইনশাআল্লাহ। যেমন:-

▪️(১)- স্ত্রী সহবাসের প্রথমে নিয়ত খালেস করে নেয়া। অর্থাৎ, কাজটির মাধ্যমে নিজেকে হারাম পথ থেকে বিরত রাখার, মুসলিম উম্মাহর সংখ্যা বৃদ্ধি করার এবং সাওয়াব অর্জনের নিয়ত করা। (এ মর্মে হাদীস দেখুন, সহীহ মুসলিম ১০০৬, আহমাদ ২১৪৮২, সিলসিলা সহীহা ৪৫৪,মিশকাত,১৮৯৮)

▪️(২)- সহবাসের সময় শৃঙ্গার তথা চুম্বন, আলিঙ্গন, মর্দন ইত্যাদি করা। হাদিসে এসেছে, كان رسول الله ﷺ يُلاعبُ أهله ، ويُقَبلُها রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আলিঙ্গন, চুম্বন ইত্যাদি করতেন। (সহীহ বুখারী ১৯২৭, মুসলিম ১১০৬, আবু দাঊদ ২৩৮২, তিরমিযী ৭২৯, যাদুল মা’আদ ৪/২৫৩)

▪️(৩)- সহবাসের শুরু করার সময় দোয়া পড়া– بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! আমাদেরকে তুমি শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং আমাদেরকে তুমি যা দান করবে (মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে) তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। (সহীহ বুখারী হা/১৪১, ৫১৬৫; মুসলিম হা/১৪৩৪; বুলূগুল মারাম হা/১০২০)

▪️(৪)- যেকোনো আসনে স্ত্রী সহবাসের অনুমতি ইসলামে আছে। মুজাহিদ রহ. نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْ (তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেতস্বরূপ; অতএব তোমরা যেভাবেই ইচ্ছা তোমাদের ক্ষেতে গমণ কর।)-এই আয়াতের তফসিরে বলেন, قَائِمَةً وَقَاعِدَةً وَمُقْبِلَةً وَمُدْبِرَةً فِي الْفَرْجِ ‘দাঁড়ানো ও বসা অবস্থায়, সামনের দিক থেকে এবং পিছনের দিক থেকে উপরের দিক থেকে বা নিচের দিক থেকে সেটা হোক স্বামী অথবা স্ত্রী (সব দিক থেকে সঙ্গম করতে পারে, তবে তা হতে হবে) স্ত্রীর যোনিপথে অন্য পথে নয়। (তাফসীর তাবারী ২/৩৮৭-৩৮৮ মুসান্নাফ ইবনু আবী শাইবা ৪/২৩২)

▪️(৫)- স্ত্রী সহবাসের পর ঘুমানোর পূর্বে ওযু করা: সহবাসের পরে ঘুমাতে ও পানাহার করতে চাইলে কিংবা পুনরায় মিলিত হতে চাইলে মাঝে ওযু করে নেওয়া সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, তিন ব্যক্তির কাছে ফেরেশতা আসে না; কাফের ব্যক্তির লাশ, জাফরান ব্যবহারকারী এবং অপবিত্র ব্যক্তি যতক্ষণ না সে ওযূ করে।’(আবু দাউদ হা/৪১৮০, সহীহ আত-তারগীব হা/১৭৩, সনদ হাসান)

▪️(৬)- একবার সহবাসের পর পুনরায় সহবাস করতে চাইলে অজু করে নেয়া মুস্তাহাব। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পর আবার সহবাস করতে চায় তখন সে যেন এর মাঝখানে ওযু করে নেয়। কেননা, এটি দ্বিতীয়বারের জন্য অধিক প্রশান্তিদায়ক।(সহীহ মুসলিম হা/৩০৮ মিশকাত হা/৪৫৪)। তবে গোসল করে নেয়া আরো উত্তম। কেননা, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, هَذَا أَزْكَى وَأَطْيَبُ وَأَطْهَرُ এরূপ করা অধিকতর পবিত্র, উত্তম ও উৎকৃষ্ট। (মুসনাদে আহমেদ হা/২৩৩৫০, আবু দাউদ হা/২১৯, মিশকাত হা/৪৭০)

▪️(৭)- সহবাসের সময় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের গোপনাঙ্গের দিকে তাকানো জায়েয আছে। এতে স্বাস্থ্যগত কোন ক্ষতিও নেই। (আবু দাঊদ হা/৪০১৯ তিরমিযী হা/২৭৯৪, আল মুগনী ৭/৭৭ ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৭৬৬)

▪️শরী‘আতে সহবাসের কিছু শিষ্টাচার ও নীতিমালা নির্দেশ করা হয়েছে। সেই নির্দেশনার আলোকে স্ত্রী সহবাসের নিষিদ্ধ সময়গুলো হলো;
_________________________________
🔸(ক). প্রসবোত্তর স্রাব অথবা ঋতু স্রাব থাকাকালীন স্ত্রী সহবাস করা হারাম। (সূরা আল-বাক্বারাহ; ২/২২২)
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঋতুবতী নারীর সাথে সহবাস করে সে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা (কুরআন) অবিশ্বাস করে।’(তিরমিযী হা/১৩৫; ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯, সনদ সহীহ)। তবে এমতাবস্থায় শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ করা যাবে। (সহীহ মুসলিম, হা/৩০২)। কিন্তু কেউ যদি এই অবস্থায় জেনে বুঝে সহবাস করে, তাহলে তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমন অবস্থায় তওবার পাশাপাশি কাফফারা স্বরূপ এক দীনার বা অর্ধ দীনার গরীব-মিসকীনকে দান করতে হবে। (তিরমিযী, আবু দাঊদ হা/২৬৪; ইরওয়া হা/১৯৭; মিশকাত হা/৫৫৩)। আর এক দীনার হলো ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণের সমপরিমাণ। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩৫/৩৮ হাজার টাকা। তবে শারঈ বিধান না জেনে অজ্ঞতাবশতঃ কিংবা ভুলক্রমে স্ত্রীর মাসিকের সময় সহবাস করে ফেললে তওবা করাই যথেষ্ট হবে। কাফফারা দিতে হবেনা ইনশাআল্লাহ। (সহীহ মুসলিম ১২৬; ইবনুল উসাইমীন আশ-শারহুল মুমতি; ১/৫৭১)

🔸(খ). স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করা হারাম। বর্তমানে যাকে ‘এন্যাল সেক্স’ বা পায়ু সেক্স বলে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَنْ أَتَى امْرَأَتَهُ فِيْ دُبُرِهَا فَقَدْ بَرِئَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘যে তার স্ত্রীর পশ্চাদদ্বারে সঙ্গম করে, সে যেন আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর নাযিলকৃত দ্বীন হতে মুক্ত হয়ে গেল।’(আবু দাঊদ হা/৩৯০৪; তিরমিযী, হা/১৩৫; ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯)। অপর বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তা‘আলা তার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না এবং সে অভিশপ্ত। (তিরমিযী হা/১১৬৬; ইবনু মাজাহ হা/১৯২৩, সনদ হাসান; আবু দাঊদ হা/২১৬২, মিশকাতুল মাসাবিহ হা/৩১৯৩-৯৪)। অতএব স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম করা কোনক্রমেই বৈধ নয়। এটা অসভ্য ও বিজাতীয়দের ঘৃণ্য অপকর্ম।

🔸(গ). স্বামী-স্ত্রীর লজ্জাস্থানে মুখ লাগানো উচিত নয়। যাকে বর্তমানে ‘ওরাল সেক্স’ বলে। মুখ গহ্বর কিংবা জিহ্বা দ্বারা একে অপরের যৌনাঙ্গ চুষা (ঝঁপশ) বা লেহন করা। যা কোন সভ্য ও রুচিশীল মানুষের আচরণ হতে পারে না। এটা অপবিত্র এবং অন্যজন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা অপবিত্র বস্তুসমূহকে হারাম করেছেন। (সূরা আল-আরাফ; ৭/১৫৭)। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘নিজের কোন অনিষ্টতা বা ক্ষতি এবং পরস্পরে কারোর ক্ষতি করা যাবে না।’(ইবনু মাজাহ হা/২৩৪০, ২৩৪১, সহীহুল জামে, হা/৭৫১৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৫০; বিস্তারিত দ্র. ইসলাম ওয়েব, ফাতাওয়া নং-২১৪৬, ৫০৭০৮)। এটা রুচিহীন, বিকারগ্রস্ত বেহায়া জাতির অপকর্ম।

🔸(ঘ). রামাযান মাসের দিনের বেলায় সিয়াম থাকাবস্থায় সহবাস করা হারাম। (সূরা আল-বাক্বারাহ,২/১৮৭)। কেউ যদি সিয়াম অবস্থায় সঙ্গম করে,তাহলে সিয়ামের কাযা কাফফারা ওয়াজিব, এতে স্বামী স্ত্রী উভয়ের সম্মতি থাকলে তাদের তাহলে উভয়ের উপর কাযা, কাফফারা অপরিহার্য হবে। কিন্তু যদি শুধু স্বামী জোর করে সহবাস করে তাহলে শুধু স্বামীর উপর কাযা কাফফারা ওয়াজিব হবে স্ত্রী শুধু উক্ত সিয়ামের কাযা আদায় করবে। (সহীহ বুখারী হা/১৯৩৬; মুসলিম হা/১১১১; মিশকাত হা/২০০৪; আব্দুল্লাহ বিন বায, মাজমূ ফাতাওয়া ১৫/৩০৭)। কাফফারার বিষয়গুলোর ধারাক্রম নিম্নরূপ। [অর্থাৎ একটি আদায় করতে সক্ষম না হলে অপরটি করতে হবে প্রথমটির সামর্থ্য থাকলে দ্বিতীয়টি গ্রহন করা জায়েজ নেই।] (১). একটি রোজার বিনিময়ে একটি দাস মুক্ত করা। [বর্তমান যুগে যেহেতু দাস-দাসীর প্রথা নেই তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।] (২). একটানা [বিরতি হীনভাবে] ৬০টি রোজা রাখা। (৩). তাও সম্ভব না হলে ৬০জন মিসকিন তথা গরিব-অসহায় মানুষকে একবেলা পেট পুরে খাবার খাওয়ানো অথবা প্রতিটি রোজার বিনিময়ে অর্ধ সা তথা সোয়া বা দেড় কিলোগ্রাম চাল দেয়া। –টাকা দেয়া সুন্নাহ পরিপন্থী, তাই টাকা দেয়া যাবেনা। – একজন মিসকিনকে ৬০ বেলা খাবার‌ খাওয়ানো যেমন জায়েজ তেমনি ৬০জন মিসকিনকে এক বেলা খাওয়ানোও জায়েজ। (কাফফারা প্রসঙ্গে একটি প্রসিদ্ধ হাদিস সহীহ বুখারী হা/১৯৩৬, সহীহ মুসলিম হা/১১১১, মিশকাত হা/২০০৪)

🔸(ঙ). হজ্জ বা উমরাহর ইহরাম অবস্থায় সহবাস হারাম। মহান আল্লাহ বলেন, “সুবিদিত মাসে (যথাঃ শাওয়াল, যিলক্বদ ও যিলহজ্জে) হজ্জ হয়। যে কেউ এই মাস গুলোতে হজ্জ করার সংকল্প করে, সে যেন হজ্জ এর সময় স্ত্রী সহবাস (কোন প্রকার যৌনাচার), পাপ কাজ এবং ঝগড়া বিবাদ না করে। (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১৯৭)। কেননা যৌনমিলনের ফলেই ইহরাম বাতিল হবে

🔸(চ). স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলনের গোপন রহস্য অন্যের কাছে ফাঁস করা হারাম। কেনন এই সম্পর্কে হাদীসে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। (সহীহ মুসলিম, হা/১৪৩৭; বিস্তারিত দ্র. ইসলাম সুওয়াল জাওয়াব, ফাতাওয়া নং-৫৫৬০)

▪️উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন সময়ে সহবাস করা যাবেনা মর্মে সমাজে যা কিছু চালু আছে তার শারঈ কোন দলিল নেই। সবই নিজেদের বানানো মনগড়া কথা। যেমন:-
_____________________________________________
🔹(১).গর্ভবতী নারীর সাথে সহবাসের ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাস, শেষ তিন মাস বা এর মধ্যবর্তী সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মিলন উচিত নয়। করলে যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করে, এতে উভয় সন্তানই দুর্বল হয়। ট্যারা হয় ইত্যাদি মর্মে যা বলা হয়, এই বক্তব্যের শারঈ কোন দলিল নেই এগুলো নিজেদের তৈরি করা কথা। বরং শারঈ নিষিদ্ধ সময় ব্যাতিত সর্বদা সহবাস করা যায়। যদি গর্ভকালীন অবস্থা স্বাভাবিক ভাবে চলমান থাকে তাহলে সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত সহবাস করা যায়। সহবাসের সময় স্বাভাবিক নড়াচড়া গর্ভের শিশুর কোন ক্ষতি করে না। তবে এ ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করা নিঃসন্দেহে উত্তম। যেমন এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমি স্ত্রীসহবাসের সময় ‘আযল করি। এতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেন এটা কর? উত্তরে সে বলল, আমি তার সন্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ায় এটা করি। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এতে যদি কোনো প্রকার ক্ষতি হতো তাহলে পারস্যবাসী (ইরান) ও রোমকগণও ক্ষতিগ্রস্ত হতো।(সহীহ মুসলিম হা/১৪৪৩, মিশকাতুল মাসাবিহ হা/৩১৮৮)। উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় শাফি‘ঈ মাযহাবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ, ইমাম মুহিউদ্দীন বিন শারফ আন-নববী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৬৭৬ হি.] বলেছেন, প্রাচীন আরব সমাজের মানুষের ধারণা ছিল, গর্ভবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করে, এতে উভয় সন্তানই দুর্বল হয়। অথবা গর্ভাবস্থায় কোনো দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকলে এবং সেটি দুগ্ধ পান করলে শিশুর ভীষণ ক্ষতি হয়। গর্ভস্থিত সন্তান হোক, দুগ্ধপোষ্য সন্তান হোক অথবা উভয় সন্তানই হোক তার ক্ষতির আশংকা করে জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে হাদীসে উল্লেখিত প্রশ্ন করলে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে বললেন, তোমার এই ধারণাই যদি সত্য হতো অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় অথবা দুগ্ধদানকালীন সময়ে স্ত্রীর সাথে সহবাস যদি ঐ সন্তানদের ক্ষতিই হতো তাহলে রোম এবং পারস্যের নারীদের সন্তানগণ অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হতো, কেননা তারা গর্ভাবস্থায় তাদের সন্তানদের দুগ্ধ পান করে থাকে এবং তাদের সাথে সহবাসও করিয়ে থাকে। (শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪৪৩;)

🔹(২). স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের লজ্জাস্থান দেখতে নেই। যেমন বলা হয়, আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কক্ষনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করিনি। বা উলঙ্গ হয়ে গাধার মত সহবাস করো না, বা উলঙ্গ হয়ে সহবাস করলে সন্তান অন্ধ হবে। সঙ্গমের সময় কথা বললে সন্তান তোৎলা বা বোবা হয় ইত্যাদি বলে যে সব হাদীস বর্ণনা করা হয়, তার একটিও সহীহ ও শুদ্ধ নয়। (দেখুন, ইবনু মাজাহ ৬৬২, ১৯২২,মিশকাতুল মাসাবিহ হা/৩১২৩, তুহফাতুল আরুশ ১১৮ –১১৯ পৃঃ)

🔹(৩). শুক্রবারে মিলিত হওয়ার ব্যাপারে আলী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি ‘মুনকার’ তথা যঈফ। (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৯৪)

🔹(৪). বিভিন্ন দিনে মিলনের বিভিন্ন ফযীলত সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে, তা শী‘আদের তৈরী জাল বর্ণনা মাত্র। (খোমেনী, তাহরীরুল ওয়াসায়েল, বিবাহ অধ্যায়)

🔹(৫). স্ত্রীর সাথে রাতের প্রথম প্রহরে সহবাস করলে সন্তান মেয়ে হয় আর শেষ প্রহরে করলে সন্তান ছেলে হয় এই কথার কোন শারঈ ভিত্তি নেই। কেননা ছেলে-মেয়ে দেয়ার মালিক কেবল মাত্র আল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। (সূরা শূরা, ৪২/৪৯-৫০)

🔹(৬). পশ্চিম দিকে মাথা রেখে স্ত্রী সহবাস নাজায়েজ মর্মে সমাজে যে বক্তব্য চালু আছে তার কোন ভিত্তি নেই। কেননা এ বিষয়ে শরী‘আতে কোন নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখিত হয়নি। (ফাতাওয়া ইমাম নববী ১৯০-১৯১ পৃ)। এছাড়াও এর বাহিরে যা কিছু সমাজে প্রচলিত রয়েছে তার সবই ভিত্তিহীন।

🔹(৭). স্ত্রীকে উপুড় করে পিছনের দিক থেকে যদি তার সাথে সঙ্গম করা হয়,তাহলে (সেই সঙ্গমে সন্তান জন্ম নিলে) তার চক্ষু টেরা হয়। এই ধারণার কোন ভিত্তি নেই। যার প্রমাণে মহান আল্লাহ বলেন, তোমাদের স্ত্রী তোমাদের ফসলক্ষেত্র। সুতরাং, তোমরা তোমাদের ফসলক্ষেত্রে গমন কর, যেভাবে চাও। (সূরা বাকারাহ; ২/২২৩)
অবশেষে, মহান আল্লাহ সবাইকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী বিধি-নিষেধ পালন করার তৌফিক দিন এবং সমাজে প্রচলিত যাবতীয় কুসংস্কার থেকে হেফাজত করুন,,,আমীন।(মহান আল্লাহই অধিক জ্ঞানী)❛❛আদর্শ বিবাহ বন্ধন❞ ধারাবাহিক ১৭তম পর্ব। পূর্বের পর্বগুলো কমেন্টে দেখুন।
_____________________
উপস্থাপনায়,
জুয়েল মাহমুদ সালাফি

দ্বীনের বার্তা ♦৭মানুষের প্রতি শয়তানের টার্গেট সমূহ১. শয়তান চায় মানুষ যেন কুফরী করে, ২. এতে যদি সফল না হয়, তাহলে তখন...
30/01/2023

দ্বীনের বার্তা ♦৭
মানুষের প্রতি শয়তানের টার্গেট সমূহ

১. শয়তান চায় মানুষ যেন কুফরী করে,
২. এতে যদি সফল না হয়, তাহলে তখন সে মানুষকে বিদআতের দিকে আহ্বান করে,
৩. এতে যদি সফল না হয়, তখন সে মানুষকে কবিরা গুনাহের প্রতি আহ্বান করে,
৪. এতে যদি সফল না হয়, তখন সে মানুষকে সগীরা গুনাহে প্রতি আহ্বান করে,,
৫. এতে যদি সফল না হয়, তাহলে তখন সে মানুষকে নেকীর কাজ থেকে বিরত রেখে মোবাহ কাজের প্রতি আহবান করে,,
৬. এতে যদি সফল না হয়, তখন সে মানুষকে অধিক সওয়াবের কাজ থেকে ফিরিয়ে কম কম সওয়াবের কাজের প্রতি ব্যস্ত রাখে।

[আ-কামুল মারজান নামক গ্রন্থ থেকে সংক্ষেপিত পৃঃ১৬৩]

29/01/2023
29/01/2023

অসাধারণ কন্ঠে দারুণ মনোমুগ্ধকর তেলায়ত

"সুরা আল ইনশিরাহ"
গোপন রহস্য জেনে নিন।

সবার জীবনেই ছোট খাটো কিছু সমস্যা থাকবে।এটা খুবই সাধারণ একটি বিষয়।কিন্তুু এই ছোট ছোট বিষয় বা সমস্যাগুলো আমরা নিজেরাই খুবই ভয়ংকর রুপ দেই নিজদের অগচরে।

ঠিক সমস্যাগুলোকে আমরা যেই ভাবে চিন্তা করে অন্তরে অনুভব করি সেগুলো সেই রুপই পায়। যদি চিন্তা করি তবে সেগুলো খুবই সহজে আমরা সমাধান করতে পারি। কিন্তু যদি একটু কঠিন ভাবে সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবি তবে অন্তরের সমস্যা গুলো আমাদের ভিতরকে অবশ করে দেয়।

কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সুরা আল ইনশিরা তে কি বলেছেন একটু খেয়াল করুন।
أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ
আমি কি তোমার জন্য তোমার বক্ষ প্রশস্ত করিনি? (৯৪:১)
وَ وَضَعۡنَا عَنۡکَ وِزۡرَکَ ۙ﴿۲﴾
আমি তোমার হতে অপসারণ করেছি তোমার সেই ভার(৯৪ঃ২)
الَّذِیۡۤ اَنۡقَضَ ظَہۡرَکَ ۙ﴿۳﴾
যা তোমার পৃষ্ঠকে অবনমিত করেছিল;(৯৪ঃ৩)

وَ رَفَعۡنَا لَکَ ذِکۡرَکَ ؕ﴿۴﴾
এবং আমি তোমার খ্যাতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি(৯৪ঃ৪)
فَاِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا ۙ﴿۵﴾
কষ্টের সাথেই তো স্বস্তি আছে।(৯৪ঃ৫)

اِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا
অবশ্যই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে।(৯৪ঃ৬)

প্রথমত আল্লাহ সুবহানাতায়ালা রাসুল (সাঃ)কে যে জিনিসটি দিয়েছিল সীমাহীন কষ্ট এবং সংগে সংগে দিয়েছিলেন সীমাহীন খ্যাতি এবং অন্তরে দিয়েছিলেন সীমাহীন প্রশান্তি।

দুনিয়ার সকল মানুষেরা ভাবতো এত সব সমস্যার মাঝেও তিনি কিভাবে প্রশান্তির সাথে জীবন যাপন করেন। তিনি কিভাবে এতোটা শান্ত ও বিনম্র ছিলেন???

লক্ষ্য করুন আল্লাহ শেষ দিকে বলেছেনঃ
فَإِذَا فَرَغْتَ فَٱنصَبْ
অতএব যখনই তুমি অবসর পাবে, তখনই আমার কঠোর ইবাদাতে রত হও। (৯৪:৭)
وَإِلَىٰ رَبِّكَ فَٱرْغَب
আর তোমার রবের প্রতি আকৃষ্ট হও। (৯৪:৮)

শিক্ষনীয় বিষয়ঃ-

সীমাহীন যন্ত্রণা ব্যাথা বেদনার মাঝেও যদি আপনি একানিষ্ঠতার সাথে আল্লাহর ইবাদত করতে পারেন। কে কি বলে বলুক, আপনার জীবনে যাকিছু ঘটুক না কেন আপনার হৃদয়ে প্রশান্ত থাকবে, আপনার বুকের ভেতর প্রশান্তি থাকবে, আল্লাহ আপনার বক্ষ প্রশস্ত করে দিবেন। এটা আল্লাহ সুরা ইনশিরাহ তে তার নবী ও উম্মতের কাছে ওয়াদা করেছেন।।।

দেখবেন অন্যরা কান্নাকাটি, নার্ভাস, ইমোশনালি উত্তেজিত, দূর্বল হয়ে পড়বে। কিন্তু এগুলোর কোনটাই আপনাকে স্পর্শ করবে না। করাণ আপনি আল্লাহর আয়াত অনুসরণ করছেন। আপনার অন্তরে প্রশান্তির অনুভূতিগুলো অনুভব করছেন। কারণ আপনি আল্লাহর সাথে গভীর গভীর সম্পর্ক ও বন্ধন গড়ে তুলেছেন।।।

বিশেষ করে সুরাহ আল ইনশিরাহ এর ০৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেনঃ-
فَاِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا ۙ﴿۵﴾
আর কষ্টের সাথেইতো স্বস্তি রয়েছে।(৯৪ঃ৫)

اِنَّ مَعَ الۡعُسۡرِ یُسۡرًا
নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে।(৯৪ঃ৬)

এর মানে হচ্ছে কষ্টের আগেও নয় পরেও নয় ঠিক যখন থেকে আপনার পরীক্ষা শুরু হয়, কস্ট দিয়ে আল্লাহ আপনাকে তাহার কাছে আসার আহবান করেন, ঠিক তখনই যদি আপনি আল্লাহর ডাকে সারা দিয়ে তার ইবাদত বন্দেগী ও তার মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষনায় মশগুল থাকেন তবে আল্লাহ আপনাকে সেই চলমান কস্টের সাথে সীমাহীন স্বস্তি ও আপনার জন্য বরাদ্দ রাখবেন।

তো আপনারা যারা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী বা পরিচিত সবাই জানেন যে আমার হাজারো কষ্টের সহিত আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাকে অনেক অনেক স্বস্তিতে রেখেছেন।

ক্যারিয়ারের সবচেয়ে চরম সাফল্যের শিখরে এবং মানবিক উন্নত জীবন যাপন করার সুযোগ আল্লাহ আমাকে একই সংগে দিয়েছেন। আর এই দেয়াটা ছিল আল্লাহর কালাম কুরআন ও সুরা আল-ইনশিরাহ শেষ দুটি আয়াতঃ- সূরার শেষের দিকে আল্লাহ বলেছেনঃ
فَإِذَا فَرَغْتَ فَٱنصَبْ
অতএব যখনই তুমি অবসর পাবে, তখনই আমার কঠোর ইবাদাতে রত হও। (৯৪:৭)
وَإِلَىٰ رَبِّكَ فَٱرْغَب
আর তোমার রবের প্রতি আকৃষ্ট হও। (৯৪:৮)

কারন আল্লাহ ওয়াদা করেছেন কুরআনে প্রত্যেকটি আয়াতে এবং সেই ওয়াদা অনুযায়ী আমাদের শুধু আমগুলো পালন করতে হবে। কিন্তু আপনি আমি কয়টি ওয়াদা জানি!!

মহান আল্লাহ সবাইকে কুরআন শরীফ বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।।

সংগৃহিত ও সংযোজিত
মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ

Address

কুড়িগ্রাম

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when RUBEL posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share