12/01/2024
ধরুন আপনার বাড়িতে আজ আত্মীয় আসবে। নানা পদের মজার মজার খাবার রান্না হবে। সেদিন আপনার কিচেনের অবস্থাটা দেখবেন। এতোগুলো হাঁড়ি-পাতিল-কড়াই-ডেকচি, কিচেনে পা রাখার অবস্থা নেই। রান্নার সময় এখানে একটু তেল পড়েছে, বাড়াবাড়ির সময় ওখানে একটু ঝোল পড়েছে। হাঁড়ির তলাটা কালো হয়েছে, মশলার দাগ দেখা যায় কোথাও কোথাও, হয়তো হাতে একটু তেল ছিটকে এসে লেগেছে। কেমন অবিন্যস্ত, এলোমেলো, অনাকর্ষণীয়, মেসি সবকিছু।
আজ রাতে আপনার খুব আলসেমি পেয়েছে। পাউরুটি আছে বাসায়, শুধু একটা ডিম সেদ্ধ করবেন ভাবছেন। সেদিন দেখবেন খাওয়াদাওয়ার পরেও কিচেনটা এতো সুন্দর, এতো সাজানো--মন চাইবে আজ রাতে কিচেনেই ঘুমিয়ে পড়ি।
স্কুল জীবনের কথা মনে করুন। গণিত বইটি এতো বেশি ব্যবহৃত হয়ে এমন ম্যাড়ম্যাড়ে হয়েছে যে দুচারটা পৃষ্ঠা হারিয়ে যাবার জোগাড় ছমাস না পেরুতেই। অন্যদিকে কৃষিশিক্ষা বইটি ঝা তকতকে বছরশেষেও।
মানুষও তো ঠিক তেমনই। যে মানুষ যতো পরিশ্রম, যতো সাধনা, যতো চ্যালেঞ্জ, যতো গভীর চিন্তা, যতো দহন, যতো ঝামেলার মধ্য দিয়ে গিয়েছে তার জীবনেও এখানে-সেখানে তেল-ঝোল লেগে আছে, ততো বেশি ক্ষয়ে গেছে সে, ততো বেশি ক্লান্তির ছাপ তার মুখাবয়বে, ততোটা অবিন্যস্ত-এলোমেলো সে।
যার জীবন অতোটা চর্চিত হয়নি, বিকশিত হয়নি, চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি--সে যেন শুধু ডিম সেদ্ধ করা রান্নাঘর, সে যেন স্কুলজীবনের কৃষিশিক্ষা বই।
আপনার জীবনের তেল-ঝোলকে ঘৃণা করবেন না। ঐ ছেঁড়া পৃষ্ঠা প্রমাণ করে আপনি একটা পূর্ণাঙ্গ জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন।
জীবনের ওজন কি কম,,,,,, বলুন তো ⁉️