05/29/2024
কোরআনে সালাত এক মহাপরিব্যপ্ত সত্য।
নবীকে তিন দিলেন মানুষের কাছে আল্লাহর নির্দেশনা উপস্থাপনের দায়িত্ব।
নবীকে যা জানালেন নবী যেন কিছুমাত্র ব্যতিক্রম না করে মানুষকে সেসব জানিয়ে দেন, নবীকে বলে দেয়া হল।
বলা হল, পৃথিবীতে মানুষকে পাঠানোর কারণ হলো মানুষকে দিয়ে সৃষ্টি করানো হবে।
মানুষের জন্মের জন্য যে ডিম্বাণু আর শুক্রাণু তাদের মিলন বা নিষেক-কালেই জন্মগ্রহণ করতে যাও মানুষের ভবিষ্যৎ সৃষ্টি-কর্মের নিদর্শন দিয়ে দিলেন।
পঁচাত্তর কোটি শুক্রাণু দা বটি শাবল কাস্তে কোদাল স্ক্রুডাইভার ছেনী বর্সা বল্লম গাঁইতি হাতে নিয়ে ছুটছে একটিমাত্র ডিম্বাণুতে ঢোকার জন্য।-যে একটিমাত্র ডিম্বানুর ভেতর একটিমাত্র শুক্রাণু ঢুকে পড়লে ডিম্বাণুটির খোলস হয়ে পড়ে সর্বৈব অভেদ্য।
শুক্রাণুদের হাতের সব অস্ত্রশস্ত্র আর যন্ত্রপাতি এমন যে, সামাজিক পারিবারিক রাষ্ট্রিক আর বৈশ্বিক পরিণত মানুষের কাজ করতে এবং আক্রমণ ও আত্নরক্ষার জন্য সেগুলো ব্যবহার করে।….. ধরে নিতে হয় যে, নাগরিক মানব কি করবে তার নির্দেশনা তার স্নায়ুমন্ডলীতে ফরম্যাটেড করা থাকে।এজন্যে যে,জীবনের পর্বে পর্বে আর পথে পথে মানুষ এগুলো যেন সৃষ্টি করতে পারে।
১৪ সপ্তা ভ্রুণবয়সে মানুষ থাকে এম্ব্রিয়নিক স্টেমসেলস। তখন সেলগুলোকে দেয়া হয় হাড় ত্বক নেপ্রন নিওরন লিভার কিডনী হার্ট মাসল আর অন্য প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সেল হিসেবে নিজেদেরকে কনভার্ট করতে।জেনারেল সেল বা এম্ব্রিওনিক স্টেমসেলরা আলাদা আলাদা সেল্স বেসিকসে নিজেদেরকে কনভার্ট করে নিয়ে শুরু করে কপি করা।কপি করে যায় গোটা প্রত্যঙ্গটি কতটুকু সাইজের হবে সে পর্যন্ত।সাইজমত কম্প্লিট করাটা তারা করে একটিও কোষ কম বা বেশি না বানিয়ে।
মানুষের সৃষ্টি ক্ষমতা আর সৃষ্টির দায়িত্ব এভাবে মানুষের ডিএনএ বেজড্।কিন্তু বাস্তবের সঙ্গী বা সতেতনা নয় এটা। মানুষ বিমান রেল হাড়িকুড়ি ঘটিবাটি সৃষ্টি করবে বা করতে বাধ্য।বাধ্য হিসেবেই সে সৃষ্ট।অর্থাৎ সৃষ্টি করতে বাধ্য, এমন বৈশিষ্ট ও প্রবণতা দিয়েই করা হয়েছে সৃষ্টি।
এই সৃষ্টি বিষয়টি একজন সাধারণ বুদ্ধির ডিম ভাজতে পারা থেকে হাবলের মহাবিশ্ব দেখতে সক্ষম টেলিস্কোপ বানানো পর্যন্ত মৌলিকত্বে একই। সবই সৃষ্টি। তবে কিছু সৃষ্টি হয়তো বিস্ময় তৈরী করে আর কি।
এই মানুষেরা মিলেমিশে বসবাস করলে পার্থিব সম্পদের/উপাদানের নতুন নতুন উপযোগ সৃষ্টির ধারা ঠিকঠাকমত চলতে পারবে।তাই একজন বিজ্ঞানীকে কিবা একজন ক্ষেতমজুরকেও দেয়া হয়েছে একই সাধারণ নির্দেশনা।
মানুষকে দিয়ে সৃষ্টি করানোর জন্য মানুষের রেখেছেন শেখার ক্ষমতা। সে কারণে মানুষ উপস্হাপিত বিষয়কে তার মস্তিস্কে সঞ্চিত তথ্যে তুলনা করে তাৎক্ষণিকভাবে। তুলনা তাকে ‘ব্যাপার’বুঝিয়ে দেয়।এটাই হলো শিক্ষা।কিন্তু আমরা মনে করি যে, শিক্ষাগুরু শিক্ষা দেন।এ বিশ্বাস বড়ই বিভ্রান্তিকর এক বিশ্বাস।মানুষের মস্তিস্ক এমনি অর্গানোগ্রাম যে, এটি চোখ কান ত্বক এসবে বাহিত তথ্য বিশ্লেষণ করে যথোপযুক্ত প্রতিস্বাড়া তৈরী করে নিতে পারে।
সৃষ্টি করার জন্য তিনি মানুষের মধ্যে আরো রেখেছেন অসুবিদা বোধের আকর। যত সুবিদাতেই থাকবেনা কেন, কিছু না কিছু অসুবিদা সে উপলব্ধি করবেই।এই কারণে সে সংস্কার করে করে ভার্সন আনবে।
অন্যদিকে সে পিঁড়িতে বসতে পেলে দখলের দিকে যাবে, এই বৈশিষ্টসম্পন্ন।কোনোমতে চলে এমনকিছু করতে পারার পর সে টেকসই করার চিন্তা করবে।তারপর করবে স্হায়ী কিছুর চিন্তা। মনে করা যায় যে , আল্লাহ এই নশ্বর বিশ্বকে অবিনশ্বর করার যে প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন সেটির ডিজাইন এক্সপেরিমেন্ট করছে মানুষ।
মানুষ আগে ‘উন্নত জিনিসের’ কথা বলেছিলো।গত কিছুদিন থেকে বলে আসছিলো ‘টেকসই’ জিনিসের কথা। ইদানিং মানুষ গ্রাফিনের কথা বলছে।যা স্টিলের চাইতে দুইশ গুন বেশি শক্ত।
মানুষকে দিয়ে সৃষ্টির এসব ট্রায়াল করানো ছাড়া আল্লাহ আর কোন প্রকৃত গুরুত্বের কথা বলেননি; যা মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর উদ্দেশ্য বলে বুঝতে হতে পারে।
মানুষের সৃষ্টি করার প্রবণতা থাকবে এবং আল্লাহ মানুষের বানানো মডেল ও ডিজাইন ফলো করতে ফিরিশ্তাদের ক্ষেত্রে ডেমনস্ট্র্ট করছেন বলে মনে করার কারণ হলো, মানুষ সৃষ্টিতে তাদের আপত্তির জবাবে মানুষের ব্যপক শিক্ষাক্ষমতা তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রামাণ করেছিলেন।তখনি তাদেরকে এ-ও বলে রেখেছিলেন যে, তাদেরকে দিয়ে কি হবে তা তোমরা জননা,আমি জানি।তিনি কি জানতেন তা তিনি বলেননি।কিন্তু তা বুঝতে সহায়ক বিষয়গুলো তিনি বলেছেন। সেসবকে মিলিয়ে উপরোল্লিখিত সিনথিসিসটি উঠে দাঁড়ায়।
সে যা-ই হোক, মানব জাতির সভ্যতায় অগ্রগতি আর বিবর্তন হলো সমার্থক।তেমনি বিবর্তন ঘটে যায় প্রত্যেক ব্যক্তি মানুষের জীবনটাতেও।
- জন্মের জন্য তার কোন ইচ্ছা বা পরিকল্পনা থাকার দাবী সে করতে পারবেনা। কিন্তু জন্ম তাকে নিতে হয়েছে।বর্ণে বা গঠনে সে যেমনটি, সেটির পেছনে তার হাত ছিলনা।জন্মের পর সে বয়োঃক্রম পেরোয়।দিনগুলি সে ডেকে আনেনা। কিন্তু দিন তো আসে যায়। সে কিশোর তরুন যুবক প্রৌঢ় বৃদ্ধ হয়। কিছুই সে নিজের ইচ্ছায় হয়না। আবার না হয়ে সে থেমে থাকতেও পারেনা।
অর্থাৎ বিশ্বপ্রকৃতিতে প্রযু্ক্ত এক নিয়মাবদ্ধতার মধ্যেই তার এই জীবনযাপন।এই বিশ্বপ্রকৃতিতে তাকে ঘিরে যাকিছু রয়েছে সেসব তাকে নিয়ে যাবে নিশ্চিত ধ্বংসে।তাই আল্লাহ তার জন্য দিয়েছেন নবী-মারফতে জীবনযাপনের নির্ভুল নির্দেশনা। সে নির্দেশনা নবী যতটুকু বলেন ততটুকুই শুধু। সে নির্দেশনা মানার আপ্রাণ সংগ্রাম-সাধনা হলো সালাত।অন্যকথায় ঐটাই হলো ইসলাম।
এই ইসলাম মেনে মুসলিম জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্র্যাকটিস হলো নামায।….মুসলিম মনোকাঠামো না গড়ে মুসলিম হওয়া সম্ভব না। যেমন সম্ভব না রেওয়াজ/প্র্যাকটিস বা চর্চা ছাড়া উপযুক্ত হওয়া।
আল্লাহর নির্দেশনা বা ইসলামকে জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষণে ও ক্ষেত্রে বাস্তব করাই সালাত । আবার বাস্তবায়িত করতে যে অবিকল্প রেওয়াজ যেতে হবে চালিয়ে , সেটিকেও বলা হয়েছে সালাত; যাকে আমরা নামায বলে জানি।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
Alam Morshed