09/04/2024
মতামত: আবু যায়েদ সারুজি
যখন আপনি বায়ান্ন, ঊনসত্তর, একাত্তোর, বাহাত্তোর, জাতীয় সংগীত, সংবিধান নামক অতি পূজনীয় অচ্ছুৎ মূর্তিগুলোকে নিশ্চিন্তে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে ভাঙ্গার চেষ্টা করতে পারবেন, তখন বুঝবেন দেশে বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র, উদারনীতিবাদ আছে।
আর যখন প্রশ্ন করে গণতন্ত্রপন্থীদের আক্রমণের স্বীকার হবেন, তখন বুঝবেন দেশ আদৌ স্বাধীন হয়নি, বরং ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার বড় কুমিরটা চলে গিয়ে তার ছানাদের রেখে গেছে।
অবশ্য গণতন্ত্রপন্থীরা কবেও বা উদার, শান্তিকামী ছিল? গণতন্ত্র নিজেই একটা ফ্যাসিবাদী মতবাদ। যারা গণতন্ত্রপন্থী তারা রক্তেমাংসে, মনমগজে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচার, আক্রমণাত্মক এবং উগ্রবাদী। এরা নিজেরাই ঠিক করে আপনি কী বলবেন, কী বলতে পারবেন না। কী পছন্দ করবেন, কী অপছন্দ করবেন, আপনার ইচ্ছা-অনিচ্ছা এরাই ঠিক করবে।
আপনি সমকামিতা, ইসলামবিদ্বেষ, হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি চর্চা করেন, এরা বলবে আপনি প্রগতিশীল, বিজ্ঞানমনস্ক, মুক্তমনা, সুশীল সমাজ, প্রথম শ্রেণীর নাগরিক।
আপনি সংবিধান, একাত্তর, জাতীয় সংগীত, পহেলা বৈশাখ, মঙ্গল শোভাযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন, এগুলোর পালনের আবশ্যকীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, এরা আপনাকে বানিয়ে দেবে উগ্রবাদী, ধর্মান্ধ, জঙ্গি, রাজাকার, দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ইত্যাদি ইত্যাদি।
মানে আপনি কখন কী বলবেন, কী প্রশ্ন করবেন, কী পছন্দ-অপছন্দ করবেন, কী পালন করবেন, কী বর্জন করবেন, কী গ্রহণ করবেন, তা এরাই নির্ধারণ করবে। কোনটা উগ্রবাদ, কোনটা পোগতিশীলতা, কোনটা বাকস্বাধীনতা, তার মাপকাঠি এরাই নির্ধারণ করবে।
আদতে এরা জনবিচ্ছিন্ন ও নিম্নশ্রেণীর কোনো থার্ডক্লাস সোসাইটি থেকে উঠে আসা অশিক্ষিত, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, উগ্র ইসলামবিদ্বেষী, ভারতীয় অবৈধ বীজের ফসল, পরাজিত স্বৈরাচারের গোলাম ছাড়া আর কিছু না। এরা বাংলাদেশের বৃহত্তর বা ক্ষুদ্রতর কোনো জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে না।
যখনই আপনি এই উগ্র ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার গোলামদের আক্রমণের স্বীকার হবেন, তখন বুঝবেন আপনি সঠিক পথে আছেন। তাই নিশ্চিন্তে অতি পবিত্র করে তোলা পূজনীয় এসব মূর্তিগুলো ভাঙ্গার চেষ্টা করবেন।
পতিত স্বৈরাচার গত ১৫ বছর ভাঙ্গাবল্টুকে পূজনীয় দেবতা বানিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু জনতা সেই দেবতার গলায় জুতার মালা ও প্রস্রাব করে কী আচরণ করেছিল দেখেছেন না? ঠিক এই মূর্তিগুলোও একদিন চূর্ণবিচূর্ণ হবে। দলে দলে মানুষ এসব নোংরা আবর্জনাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।