07/25/2021
এ কেমন ধর্ম ! এ কেমন জাতি ! দাসত্বের মোড়কে দিয়েছে রাজত্ব !!!
-----------------------------------------------------------
পৃথিবীতে আর কোন্ জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় আছে যারা ক্রীতদাস হিসেবে আটককৃত যুদ্ধবন্দিদের জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চার এমন সুযোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, সুবিধাপ্রাপ্ত ভাগ্যবান লোকেরা প্রাথমিক, মাধ্যমিক কিংবা চলনসই শিক্ষা নয়- বরং এমন উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন যে, কেউ আইনবিদ, কেউ হাদিসবিশারদ, কেউ ফকীহ, মুফাসসির হিসেবে পাণ্ডিত্য অর্জন করে দুনিয়ায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। দাসত্বের জীবনে প্রবেশ করে রাজত্বের আসন লাভ করেছেন। ইসলামের চেয়ে বড় মানবিকতার ধর্ম, মুসলমানের চেয়ে মহৎ, উদার ও মানবিক জাতি পৃথিবীর ইতিহাসে ছিলো না, এখনও নেই।
এখানে অন্তত একটা উদারণ নিয়ে ভাবুন :
” স্বল্পতম সময়ে সিন্ধু বংশোদ্ভূত যেসব আলিম, পণ্ডিত ও লেখক আরববিশ্বে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হন তাঁদের মধ্যে আবু মাশার সিন্ধী, আবু আতা সিন্ধী, নাজীহ ইবনে আবদুর রহমান সিন্ধী ও আবু আলী সিন্ধী অন্যতম। আবু মাশার সিন্ধী হাদিসশাস্ত্র ও সীরাতে রাসূল বিষয়ে বিচক্ষণ পণ্ডিত ছিলেন। তিনি যখন বাগদাদে ইন্তিকাল করেন, স্বয়ং খলিফা তাঁর জানাযার নামাযে ইমামতি করেন। ইমাম আওযাহ ছিলেন ফিকহশাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শী। আবু দিলা সিন্ধী রচিত ভারতের প্রশংসাসূচক কসীদা পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। হাফিযে হাদিস খলফ ইবনে সালিমও ছিলেন সিন্ধী, হাদিসশাস্ত্রে তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল অগাধ। তিনি ছিলেন প্রাথমিক অবস্থায় আলে মুহাল্লাব এর ক্রীতদাস। আবুল আতা সিন্ধী ছিলেন বিখ্যাত কবি, তিনি সিন্ধী ইবনে আলী নামক জনৈক ব্যক্তির ক্রীতদাস ছিলেন। মানসুর হিন্দী, সিন্ধী ইবনে সাদাকা, কশাজম ইবনে সিন্ধী ইবনে শাহেক ও ফাতাহ ইবনে আবদুল্লাহ সিন্ধীসহ বহু লোককে সিন্ধু বিজয়ের পর দাস হিসেবে মুসলমানরা আরবদেশে নিয়ে যান।
মুসলিম প্রভুদের তত্ত্বাবধানে এসব দাসগণ জ্ঞানচর্চার ব্যাপক সুযোগ লাভ করেন। ফলে পরবর্তী সময়ে তাঁরা হাদিস, ফিকহ, কবিতা ও সাহিত্যে পারদর্শী হয়ে উঠেন। কথিত আছে যে, ইমাম আযম আবু হানীফা (রহ.)-এর বংশ সিন্ধু হতে হিজরত করে ইরাকে বসতি স্থাপন করেন, সেখানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন “
-----------------------------------------------------------------------
নিভে যাওয়া দীপশিখা, ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, আকাবির (স্ট্যাডিজ এন্ড পাবলিশিং হাউজ) থেকে প্রকাশিতব্য।