06/18/2022
রাঙ্গুনিয়ার শরণাঙ্কর ভিক্ষুর পক্ষে জাতিসংঘের অবস্থান, ৬০ দিনের মধ্যে কারন দর্শাতে ব্যর্থ সরকার পক্ষ!
বিশেষ প্রতিবেদকঃ চট্রগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া ফলাহারিয়া গ্রামের জ্ঞানশরন মহারণ্য বৌদ্ধ বিহার কেন অপবিত্র এবং ধ্বংস করা হলো, বিহারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শরণাঙ্কর থেরোকে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর পূর্বক দীর্ঘদিন কেন গৃহবন্দী করে রাখা হলো, কেন তাঁর শিষ্য এবং সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে সহিংস ঘটনা ঘটানো হলো, কেন মিথ্যা মামলায় বিচার বিভাগীয় হয়রানী এবং তরুণ বৌদ্ধ ভিক্ষু রতনাংকরকে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অরক্ষিত অবস্থায় মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়া হলো ইত্যাদি বিষয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৬০ দিনের মধ্যে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে জাতি সংঘ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্য মন্ত্রলায়কে সরাসরি এই চিঠি প্র্রেরণ করা হয় এবং সরকার ৬০ দিনের মধ্যে কোন ধরনের উত্তর দিতে না পারায় বিষয়টি জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে সর্বসাধারণের জানার জন্য প্রকাশ করা হয়েছে সম্প্রতি। এদিকে রাঙ্গুনিয়ার কতিপয় স্বঘোষিত বৌদ্ধ নেতা মিথ্যা দলিল সৃষ্টি ও বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভাকে প্রলোভিত করে শরণাঙ্কর ভিক্ষুর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। জাতি সংঘের চিঠিতে বলা হয়, বিগত ২০২০ সালের ৯ই জুলাই থেকে বিভিন্ন সময়ে জ্ঞানশরন মহারণ্য বৌদ্ধ বিহারে পুলিশের উপস্থিতিতে একদল ব্যক্তি আক্রমন ও হামলা করে বিহারের পবিত্রতা নষ্ট করে এবং স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়, বিহারের সমস্ত মালামাল, গাড়ী, এমনকি ঘরের বেড়া, টিনের চলা ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । সরকারী কতৃপক্ষের উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং বিহারের সকল বৌদ্ধ ভিক্ষু-সেবকদের অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলা হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর শরণাঙ্কর থেরোর শিষ্য, রত্নাঙ্কর ভিক্ষু (২৩) দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর, তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় পাওয়া যায় এবং হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করে। শাসক দলের স্থানীয় একজন ব্যক্তির সমর্থনে এবং পুলিশের উপস্থিতিতে ভিক্ষু এবং সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের উপর দীর্ঘদিন ধরে আক্রমন, হামলা, জবর দখল এবং নির্যাতন চলে আসছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বিহারের স্কুলটি বন্ধ করে দিয়ে নব্বইটিরও বেশি কোমলমতি শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বঞ্চিত করা হয়েছে। ঘটনাগুলির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিল। চিঠিতে বলা হয় বিহারের অধ্যক্ষ শরণাঙ্কর থেরো সমস্ত ঘটনাগুলো এবং জীবনের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য কতৃপক্ষকে জানানো পরও কেন সরকার, পুলিশ বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কোন প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের করেনি কেন বা করে থাকলে তার প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। https://spcommreports.ohchr.org/TmSearch/Results২০২০ সালের ১০ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভুয়া একাউন্টে বিহারের অধ্যক্ষ শরণাঙ্কর থেরো এর ছবি ব্যবহার করে ইসলামের বিরুদ্ধে অপমান প্রকাশ করা হয়েছে বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ও বৌদ্ধ সংখ্যালঘু জনগণের মধ্যে আন্তঃসাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সহিংসতা বৃদ্ধি এবং জীবন নাশের ভীতি প্রদর্শনের কারনে শ্রদ্ধেয় শরণংকর থেরা ১১ই জুলাই ২০২০সালে স্বেচ্ছায় চট্টগ্রামের রাউজান পূর্বগুজরার আরেকটি বৌদ্ধ বিহারে চলে যান। ২০২০ সালের ৪ঠা আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ৯ই এপ্রিল পর্যন্ত তাকে ঢাকার ধর্মরাজিকা বৌদ্ধ মন্দিরে গৃহবন্দী করে রাখা হয় এবং ১০ই এপ্রিল ২০২১ সাল থেকে ২০২১ সালের ২৬শে জুলাই পুলিশ তাকে ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যায় যেখানে কোন বৌদ্ধ দর্শনার্থীদের বা বৌদ্ধদের ধর্মীয় কার্য্ক্রম করতে দেয়া হয়নি। ২০২১ সালের ২৬ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩রা জানুয়ারী ২০২২ থেকে এই চিঠির সময় ২২শে মার্চ,২০২২পর্যন্ত, তাঁকে ঢাকার বেগুনবাড়ীর একটি ঘরে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে । শ্রদ্ধেয় শরণাঙ্কর থেরোকে গৃহবন্দি করে রাখার কারনে তিনি কমপক্ষে ৩০টি মামলার নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত হতে পারেননি। জানা গেছে, যে রাঙ্গুনিয়া থানাকে চট্রগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল, ধর্ম অবমাননার মামলার ভুয়া ফেইসবুক একাউন্ট তদন্তের নির্দেশ দিলেও রাংগুনিয়া থানার পুলিশ আদালতের কাছে তার প্রতিবেদন জমা দেয়নি । শ্রদ্ধেয় শরণাঙ্কর থেরোর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে বেশ কয়েকটি ভিডিও বার্তা ও লিখিত আবেদনে ঘটনা সমূহ পর্যালোচনা, নিরাপত্তা ও সমস্যা সমাধানের আহবান জানানো হয়েছিল, কিন্তু সমস্যা সমাধানে কেউ সারা দেয়নি। শ্রদ্ধেয় শরণাঙ্কর থেরোর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাই কোর্ট ডিভিশনে ২০২১ সালের ২১ জুন একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছিল (২০২১ সালের রিট পিটিশন নং ৫৩৯২)। এই রিট পিটিশনের আদেশ জারি করা হয়েছে এবং এর পরীক্ষা এখনও মুলতুবি রয়েছে। চিঠিতে নিম্নরূপএক থেকে ছয়টি বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে প্রতিবেদন চেয়েছে জাতিসংঘ কতৃপক্ষ; ১.উপরে উল্লিখিত অভিযোগের উপর অনুগ্রহ করে আপনি যে কোনও অতিরিক্ত তথ্য এবং / অথবা মন্তব্য (গুলি) সরবরাহ করুন।২. অনুগ্রহ করে জ্ঞানশরণ বুদ্ধ বিহারে সন্ত্রাসী হামলা এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদের উপর সংগঠিত -সহিংসতার তদন্ত করার জন্য, গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করুন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জোরপূর্বক গুম করা, শারীরিক নির্যাতন করা এবং বৌদ্ধ ভিক্ষু রতনাঙ্করের মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্য এবং একই সাথে দোষীদের সনাক্ত করা, সকলের বিচার করা এবং ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতিকার করার প্ৰতিবেদন। যদি কোন পর্যবেক্ষন বা তদন্ত হয়ে থাকে অথবা যদি এটি নিষ্পত্তিযোগ্য হয়ে থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে কারণ ব্যাখ্যা করুন। ৩। অনুগ্রহ করে শ্রদ্ধেয় শরণাঙ্কর মহাথেরাকে গ্রেপ্তার এবং আটকের আইনি এবং বাস্তব ভিত্তি ব্যাখ্যা করুন এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে দেশের বাধ্যবাধকতা এবং বিশেষ করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তির ১৪ এবং ২৬ অনুচ্ছেদের যথাযথ প্রক্রিয়ার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং ন্যায্য বিচারের গ্যারান্টিসহ পূর্ণ সম্মান নিশ্চিত করার জন্য গৃহীত ব্যবস্থাগুলি ব্যাখ্যা করুন৷। ৪। অনুগ্রহ করে শ্রদ্ধেয় শরণাঙ্কর (মহা) থেরকে ঘন ঘন বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তরের কারণগুলি এবং তার আটক এবং কঠোর নজরদারি জন্য সেই সকল স্থান কেন ব্যবহার করা হচ্ছে তার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করুন। 1 Article 41 ICJ Statute ‘Interim Protection’: Part III, Section D (Incidental Proceedings), Subsection 1
( 1 অনুচ্ছেদ 41 আইসিজে সংবিধি 'অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা': অংশ III, বিভাগ ডি (আনুষঙ্গিক কার্যধারা), উপধারা 1)
৫। অনুগ্রহ করে, শ্রদ্ধেয় শরনঙ্কর মহাথেরার মামলাগুলো বিবেচনা করার জন্য অসংখ্য আবেদন করা সত্বেও আপনার মহামান্য সরকার বিষয়গুলো কেন বিবেচনায় নিচ্ছে না, তার কারণ ব্যাখ্যা করুন এবং সামাজিক মাধ্যমের একাউন্টটির উপর তদন্ত প্রতিবেদন দিতে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ কেন ব্যর্থ হলো যা ভ্রান্তভাবে শরণাঙ্কর থেরোকে মুসলিম বিরোধী হিসাবে দেখানো হচ্ছে এবং সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে ।
৬। অনুগ্রহ করে, জ্ঞানশরণ বুদ্ধ বিহার এবং এর ভিক্ষুদের আক্রমণকারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে করা রিট আবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট-এর উচ্চ আদালত বিভাগ দ্বারা স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করুন। আমরা ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে একটি প্রতি উত্তর বা জবাব পেলে তার প্রশংসা করব। এই বিলম্বের পরে , এই যোগাযোগ এবং আপনার মহামান্য সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত যে কোনও প্রতিক্রিয়া কমিউনিকেশন রিপোর্টিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। তারাও করবে। পরবর্তীকালে তাঁরাও মানবাধিকার পরিষদে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসাবে এই প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করবে। https://thedailynewnation.com/news/277056/Seek-the-help-of-the-Prime-Minister-Rangunia-Buddhist-minority-persecuted,-innocent-fleeing-for-fear-of-lawsuits
The communication report is intended to be a single source of the human rights special procedure communications