Banglar Kantha

Banglar Kantha Banglar Kantha is South-East Asia's only Bengali Newspaper.It has been in business for 17 years. A. No. 200509013 Date: 19.07.2006


B. C. D. Aims And Objectives.

Name and details of the publisher
Bangladesh Centre, Singapore
UEN: 53341211X
Newspaper Permit No: MCI (P) 055/02/2023
File Ref. Present situation of the publication
Frequency : Monthly. Size : Tabloid. Pages : 20 pages. Circulation number : 10,000+
Estimated readership : 50,000
Retail selling price : SGD

1$ / copy. Source of revenue : Advertisement, Retail Selling, Consultancy Services, Bi-lingual Training Classes. Journalism coverage
1) Socio-economic and political news, views and analysis (Global, Bangladesh & Singapore).

2) Business and investment news, views and analysis (Bangladesh & Singapore).

3) Entertainment, religion, sports and cultural issues (Global, Bangladesh & Singapore).

4) Education and social services.

5) Arts & literature (Bangladesh and Singapore).

6) Health, safety and hygiene issues (Singapore).

7) Legal issues and law awareness campaign.

8) Special treatment on foreign migrant workers.

9) Community news (Expatriate Bangladeshis and West Bengal people living in Singapore).

10) Reader’s pages. Since obtaining its license from the MDA Singapore in 2006, Banglar Kantha (The Voice of Bengal) has been continuing as a monthly newspaper for Bengali-speaking readers in Singapore. As of now, it has been the only Bengali publication in Singapore and in the entire Southeast Asia. Southeast Asia is a region where as much as half a million Bangladeshi people work as migrant workers in various sectors. In Singapore, the estimated number of Bangladeshi people living is around 120,000. The main objective of Banglar Kantha is to understand the needs, dreams and voices of those people and thereby to obtain a considerable readership in this huge community. Besides, being a Guardian for the migrants, Banglar Kantha aspires to become the community voice of expatriate Bangladeshis living in Singapore by facilitating various social services such as advocacies, guidance, cultural campaigns, and organising events etc. Having done this, Banglar Kantha has been working to strengthen ties among Bangladeshi community and their relations to the host country. As well as, Banglar Kantha has been a strong advocate in visualising the Bengali language and culture in a multi-lingual and multi-cultural country like Singapore. In coming days, the management of this publication decides to work in the same line. Banglar Kantha, has over the last several years offered news, sports and entertainment for the Bangladeshi working community, in addition to explaining aspects of the employment act and other laws relating to working and living in Singapore. This is the only such publication in Singapore, including stories by and about the Bangladeshi workers. This enables the workers to preserve and appreciate their own culture and language, while providing them with a framework for integrating into the various ethnicities in Singapore. Contact with their home country and the values and traditions of Bangladesh are as important knowing what to expect and how to behave in Singapore.”

শুভ সকাল ❤️🇧🇩
01/12/2023

শুভ সকাল
❤️🇧🇩

"দেশ"...শব্দটা উচ্চারণে কোন উপলবদ্ধিটা নাড়া দেয় আপনাদের? মানচিত্র, সীমানা ,লাল সবুজ পতাকা নাকি, দেশ মানে ১৭ কোটি মানু....

16/11/2023
সম্পাদকীয় নভেম্বর ২০২৩ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট, ন্যায়সংগত সমাধান জরুরিবেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার নামে তাদের কখনই মানব ঢা...
02/11/2023

সম্পাদকীয়
নভেম্বর ২০২৩

ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট, ন্যায়সংগত সমাধান জরুরি
বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার নামে তাদের কখনই মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। সশস্ত্র সংঘাতে জড়িত কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ইসরায়েলিদের বৈধ চাহিদার জন্য অবশ্যই নিরাপত্তা বাস্তবায়িত করতে হবে

হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষ কার্যত একটি যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দুটি। মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টান-এই তিন প্রধান ধর্মের পবিত্র ভূমি হিসেবে বিবেচিত এই অঞ্চলকে ঘিরে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের সংঘাত বহুদিন ধরেই চলমান রয়েছে।
দুটি ভূখ-ের যুদ্ধ বিশ্বকে কার্যত দুটি শিবিরে ভাগ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছে। কেউ সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে, আবার কেউ ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলছে। আবার কারও বক্তব্যে ফুটে উঠেছে ‘নিরপেক্ষ অবস্থানের’ কথা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রতি তাদের দৃঢ় ও অটুট সমর্থনের কথা জানিয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি বলেছেন,এই বিপর্যয়ের জন্য ইহুদিবাদী শাসকদের নিজস্ব কর্মকা- দায়ী। ফিলিস্তিনের সঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চীন নিজেদের নিরপেক্ষ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। দেশটি সরাসরি কোন পক্ষ সমর্থনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দেয়নি। তবে তারা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে শান্ত থাকতে এবং শিগগির যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি আরবের অঘোষিত শাসক -যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিনের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন থাকার কথা জানিয়েছেন। চীনের মতো প্রায় একই অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়েছে, সেইসাথে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছে। ব্রিটেন ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে’ ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং বিশ্ব যেন এক সুরে কথা বলে সেজন্য কাজ করছে লন্ডন। গাজায় ইসরায়েল যেভাবে বিমান হামলা চালাচ্ছে সেটিকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ফিলিস্তিনের গাজায় রক্তপাতের জন্য এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সাথে বিরোধ ঘনীভূত করার পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করেছে উত্তর কোরিয়া। নরেন্দ্র মোদী তার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেন, ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলার খবরে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত..এই কঠিন সময়ে আমরা ইসরায়েলের পক্ষে আছি বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনের উপর যে বর্বরতা চালাচ্ছে ইসরায়েল, তা বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক মহলকে বলবো, এখনই উদ্যোগ নিন। হামাসের হামলার দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি এবং জার্মানির নেতারা। পশ্চিমা দেশগুলো যখন ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানানো বিভিন্ন কনটেন্ট ব্লক করছে এবং এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোকে ক্রমাগত সতর্ক করছে, তখন ঠিক এর বিপরীত সতর্কতা ওই সামাজিক মাধ্যমগুলোকেই জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে মালয়েশিয়া। ফিলিস্তিনপন্থী কনটেন্ট ব্লক করার অভিযোগে মেটা ও টিকটককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়ার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মালয়েশিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল বলেছেন, ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে মালয়েশিয়ার নাগরিকদের কথা বলার অধিকার আছে, যা কেউই কেড়ে নিতে পারে না। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লুঙ বলেছেন, ইসরাইলের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে আবার ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের সাথেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সিঙ্গাপুর নিরীহ মানুষ এবং শিশুদের হত্যার ‘মানবীয় ট্র্যাজেডি’ নিন্দা করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একটি আলোচনার মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবেন এমনটাই আশা করছে। সিঙ্গাপুরের আইন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে শানমুগাম ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক আইন এবং যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নিয়মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। সিঙ্গাপুর সরকার দেশের জনগণকেও সতর্ক করে বলেছে, আরেক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু বলা বা পোস্ট করা যাবে না যাতে উসকানিমূলক কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

শুধু রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক অঙ্গনই নয় এই সংঘাত বিশ্বসাহিত্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। ইসরাইলি অনেক লেখকের কলমেও ফিলিস্তিনের প্রতি সহমর্মিতা উঠে এসেছে। ইয়াহুদা অ্যামিচাইয়ের কবিতা কখনো কখনো ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠস্বর এবং অভিজ্ঞতাকে ছুঁয়ে গেছে। আবার মাঝে মাঝে তিনি রাজনৈতিক এবং জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের ভাগ হয়ে যাওয়া বেদনা ও স্বপ্নের উপর জোর দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ম্যানবুকার পুরস্কার জেতা সাহিত্যিক ডেভিড গ্রসম্যানের ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সংঘাত নিয়ে কথা বলার জন্য পৃথিবীজুড়েই বেশ পরিচিত লেখক। অ্যামস ওজ বিশ্বাস করেন যে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই একমাত্র কার্যকর সমাধান হতে পারে। এ.বি. ইয়েহোশুয়া তার লেখায় বিশেষভাবে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলি সংঘাতকে ধরার চেষ্টা করেছেন। যদিও তিনি সারাজীবন নিজেকে ইসরাইলি লেখক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন কিন্তু তার লেখায় গভীরভাবে ফিলিস্তিনের সংকট দেখতে পাওয়া যায়। ইসরায়েলি বোমা হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি প্রগতিশীল ইহুদি সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ হয়েছে গাজায়। গত ২৭ অক্টোবর শহরের গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশনের প্রধান হলে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেন। এতে ঘটনাস্থল থেকে কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিক্ষোভের আয়োজন করে জিউস ভয়েস ফর পিস, নিউইয়র্ক। সংগঠনটির দাবি, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিতে হবে, মৃতদের জন্য শোক করুন, জীবনের প্রয়োজনে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করুন।

গত ২৭ অক্টোবর সাধারণ পরিষদের দশম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা নির্বিঘেœ সরবরাহের আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবটি দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়েছে। ১২১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ১৪টি দেশ বিপক্ষে এবং ৪৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ফলে অবিলম্বে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা হবে বলে আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আরব ও ইউরোপীয় নেতারা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। বলেন, এ সংঘাতের একটি স্থিতিশীল এবং নিরাপদ ফলাফল অবশ্যই একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে তৈরি করা উচিত। ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করতে এ নীতির কথা তুলে ধরা হয়। সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, এশিয়া, কানাডা এবং ব্রাজিলের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল উপস্থিত ছিল না। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান মূলত ফিলিস্তিনি ও ইসরাইল নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। অর্থাৎ ইহুদি জনগণের জন্য ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ফিলিস্তিন। দুটি দেশের মানুষ একে-অপরের পাশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব রয়েছে সেটি সমাধানের জন্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকেই সবচেয়ে উত্তম মনে করছে। যদিও হামলার ২৪ তম দিনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়টি ‘দীর্ঘমেয়াদী এবং কঠিন’ হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
আমাদের সব পক্ষের প্রতি দাবি থাকবে, তারা যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে তাকে সমুন্নত রাখে এবং সম্মান করে। সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা যেন বেসামরিক লোকদের রেহাই দিতে সচেতন থাকে, হাসপাতালগুলোকে সম্মান জানায়, সেখানকার রোগী, চিকিৎসক, নার্সদের রেহাই দেয়। যেকোনো সশস্ত্র সংঘাতে, সর্বাগ্রে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা। বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার নামে তাদের কখনই মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। সশস্ত্র সংঘাতে জড়িত কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ইসরায়েলিদের বৈধ চাহিদার জন্য অবশ্যই নিরাপত্তা বাস্তবায়িত করতে হবে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য তাদের বৈধ আকাঙক্ষা বাস্তবায়নের দিকটি দেখতে হবে। যা হবে জাতিসংঘের রেজুলেশন, আন্তর্জাতিক আইন এবং পূর্ববর্তী চুক্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এ সংকটের সমাধানে উভয় পক্ষকেই একধাপ এগিয়ে যেতে হবে এবং বৈরিতা বন্ধ করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত হবে সমস্যার মূলে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান বের করে নিয়ে আসা। এর জন্য দরকার হবে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সব দেশগুলোর সাহসী ও পক্ষপাতবিহীন রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ।

01/11/2023
https://youtu.be/UxzHLg3GPRg?si=-qFH_MM28w4YYPMC
23/10/2023

https://youtu.be/UxzHLg3GPRg?si=-qFH_MM28w4YYPMC

ইহুদিদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী “জ্যুইশ স্ট্যান্ডার্ড” নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পত্রিকা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর....

সম্পাদকীয়অক্টোবর ২০২৩ বহুমুখী সিদ্ধান্তেও মিলছে না সুফলবাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বহুমুখী সিদ্ধান্ত নি...
08/10/2023

সম্পাদকীয়
অক্টোবর ২০২৩

বহুমুখী সিদ্ধান্তেও মিলছে না সুফল

বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বহুমুখী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ডলার আয় উৎসাহিত করতে ও খরচের লাগাম টানতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করছে। কিন্তু বাস্তবে এর তেমন একটা সুফল মিলছে না। উলটো নানা ধরনের গুজব রটে বাজারে আস্থার সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে। এতে ডলারের দাম বেড়ে টাকার মান কমে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিতে চাপ বাড়াচ্ছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে দেনা শোধ করার ধারা অব্যাহত থাকায় রিজার্ভের ক্ষয় মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গেছে। বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়ে রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বৈদেশিক অনুদান থেকে। এই চার খাতেই আয়ের ধারা নিম্নমুখী। এর মধ্যে রেমিট্যান্স বাড়াতে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ব্যাংকের চেয়ে কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম প্রায় ৭ থেকে ৮ টাকা বেশি। ফলে রেমিট্যান্সের বড় অংশ চলে যাচ্ছে হুন্ডিতে। ডলারের প্রবাহ বাড়াতে হলে রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। সেটি সম্ভব হচ্ছে না। কারণ বৈশ্বিক মন্দায় রপ্তানি শিল্পের কাঁচামাল আমদানি জুলাই-আগস্টে কমেছে ২৮ শতাংশ ও এলসি খোলা কমেছে ১৭ শতাংশ। গত অর্থবছরেও এ খাতে আমদানি ও এলসি দুইই কমেছিল। রপ্তানির আদেশ কম আসায় কাঁচামাল আমদানি কমছে। আগামীতে রপ্তানিকারকরাও আয় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বৈদেশিক অনুদানের গতিও নিম্নমুখী। ২০২১-২২ অর্থবছরে অনুদান বেড়েছিল ৫১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে বাড়ার পরিবর্তে বরং কমেছে সাড়ে ১১ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাইয়ে বেড়েছিল ৮৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কমেছে ৩৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। জুন ও জুলাইয়ে অনুদান এসেছে মাত্র ৩২ কোটি ডলার। বৈদেশিক বিনিয়োগ ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছিল ১৮৩ কোটি ডলার, গত অর্থবছরে এসেছে ১৬১ কোটি ডলার। তবে জুলাইয়ে বিনিয়োগ কিছুটা বেড়েছে। গত বছরের ওই সময়ে ১৭ কোটি ও চলতি বছরের একই সময়ে এসেছে ১৮ কোটি ডলার। এর বিপরীতে শেয়ারবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই এ চাপ সামলাতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে উন্নয়ন সহযোগীদের কিস্তি পরিশোধের পর নিট বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ কমছে। এদিকে জুলাই ও আগস্টে ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের বিপরীতে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি না এলে বৈদেশিক অর্থ ছাড় করে না উন্নয়ন সহযোগীরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিকে অর্থপ্রাপ্তি কমবে, অপরদিকে ঋণ পরিশোধ বাড়তে থাকলে অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। যদিও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, সব সময় বৈদেশিক সহায়তা একরকম ভাবে আসবে না, এটাই স্বাভাবিক। ‘আপস অ্যান্ড ডাউন’ থাকবেই। এটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এখনো আমরা প্রচুর বৈদেশিক ঋণ নিতে পারি। ঋণ গ্রহণের যে বিপদসীমা তার অনেক নিচে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এছাড়া স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা কখনোই কিস্তি পরিশোধে খেলাপি হইনি। সুতরাং আগামীতেও খারাপ কিছু হবে না। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, বছরে এখন প্রায় ৩৫০ কোটি ডলারের মতো পরিশোধ করা হচ্ছে। কিন্তু ২০২৬ সালের পর এটি বেড়ে গিয়ে দাঁড়াতে পারে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলারে। কিন্তু সেই তুলনায় যদি বৈদেশিক মুদ্রার আয় না বাড়ে তাহলে জটিলতা সৃষ্টি হবে।
গত ২৬ জুলাই এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের আউটলুক বা দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল থেকে নেগেটিভ বা নেতিবাচক করে দেয়। এক্ষেত্রে দুটি কারণ দেখায় এসঅ্যান্ডপি। প্রথমত, বিদেশি মুদ্রায় স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ পরিশোধের যে বাধ্যবাধকতা আছে, তার অবস্থা আগামী বছর আরও খারাপ হতে পারে। দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মুখে আছে। ডলার-সংকটের বাইরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেছিল এসঅ্যান্ডপি। তাদের মতে, বাংলাদেশের বেশির ভাগ ক্ষমতা আওয়ামী লীগের হাতে। সংসদে বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম, ফলে সরকারের ওপর নজরদারি সীমিত। ২০২৪ সালে নির্বাচন হবে; কিন্তু বিএনপি অংশ নেবে কিনা, তা পরিষ্কার নয়। দুঃসংবাদ এসেছে ফিচ রেটিংসের পক্ষ থেকেও। পূর্বাভাস নেতিবাচক বা ঋণাত্মক করেছে তারা। তবে রেটিংস কমায়নি, কারণ বিদেশি ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ এখনো সক্ষম। গত ৩০ মে মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১-এ নামানোর ঘোষণা দিয়েছিল। এই পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে সংস্থাটি বলেছিল, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যেও ঝুঁকি রয়েছে। ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত কমে যাচ্ছে, যা দেশের বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে।
সন্দেহ নেই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমানে বাংলাদেশের সনাতন সমাজব্যবস্থা, রাজনৈতিক অর্থনীতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ যুগসন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। কঠিন সময় পার করছে মানুষ ও প্রকৃতির মেলবন্ধন পরিস্থিতি, আস্থা অনাস্থার অনুভব, জলবায়ুর পরিবর্তন প্রেক্ষাপটে প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিবর্তনের টালমাটাল মোহনায় সবাই। জনগণের উপলব্ধিতে জমছে নিত্যনতুন বিস্ময়, অনির্বচনীয় সব আচার আচরণ এবং পদ্ধতি প্রক্রিয়ার হরেক রকম উত্থান-পতন। একটি ঘটনার ঘনঘটা শেষ হতে না হতে আরেকটি ঘটনা নাটকীয়ভাবে এসে হাজির হচ্ছে ঘরের ও বাইরের সব রাজনৈতিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে। এই বিশাল পরিবর্তনের পেছনে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের যৌক্তিক সিদ্ধান্তের মাত্রাগত ওঠানামা যেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে; তেমনি যাবতীয় উন্নয়ন অভিযাত্রাকে টেকসইকরণে মনোযোগেও দৈন্য ও দুর্দশার সুর শোনা যাচ্ছে। দুর্নীতি যেমন সুনীতিকে বাজার থেকে ঝেঁটিয়ে লাঠিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছে, তেমনি হাইব্রিড ভাব-ভাবনারা অনুভবের হাটে মাঠে ঘাটে নানান ফন্দিফিকির এঁটে চলেছে। দেশের বেকার যুবক সম্প্রদায়ের বিদেশে পাড়ি জমানোর তাগিদ ও প্রয়োজনীয়তা এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, ছোট নৌযানে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার ঝুঁকি নিতে হচ্ছে তাকে। আজ আমরা টেকনাফ দিয়ে ছোট যানে মানুষকে মালয়েশিয়া যেতে দেখে কিংবা ভূমধ্য বা লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথে সলিলসমাধি হওয়ার খবরে শিউরে উঠছি। মানবসম্পদ পাচারের এ প্রবণতা সঠিক ধারায় আনা সময়ে দাবি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ যোগাযোগের দুয়ার খুলতে কূটনৈতিক উদ্যোগ আধুনিক সরকার এর তরফে যেমন জরুরি; তেমনি যারা যাবেন তারা যেন যথা প্রশিক্ষিত ও প্রবুদ্ধ হয়ে পাড়ি জমান বিদেশ বিভূঁইয়েÑ সেজন্য দেশের অভ্যন্তরে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরিরও বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ দীর্ঘ সময়ে নানা রকম বাধা-বিপত্তি, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মোটামুটি একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। গত পাঁচ দশকে কখনো কম অর্জন, কখনো বেশি অর্জন-এভাবে আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছেছি। এখন আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া। আমাদের যে লক্ষ্যগুলো সামনে আছে, তার একটা হলো উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়া, আরেকটা হলো উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়া। রাজনৈতিক একটা অবস্থা দেশে বিরাজ করছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সামনে যেসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো আরো বিচক্ষণতার সঙ্গে, শক্তভাবে সমাধান করতে হবে। তার মানে এই নয়, সামনে যে নির্বাচন আছে, তার আগে সব কিছু করা যাবে। অথবা নির্বাচনের পর যে সরকার আসুক না কেন, তারা দ্রুত সব করে ফেলবে, সেটাও নয়। এখন থেকেই যদি আমাদের প্রস্তুতি না থাকে, তাহলে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হবে না। প্রস্তুতি মানে সার্বিক প্রস্তুতি এবং আমরা যে ক্রান্তিলগ্নে পৌঁছেছি, সেটা থেকে বেরিয়ে আসার যথাযথ প্রস্তুতি। বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানে মনে রাখতে হবে, যেকোনো দেশেই রাজনীতি বা রাজনৈতিক যে নেতৃত্ব থাকে, তারা কিন্তু শুধু মূল ভূমিকা পালন করে। অর্থনৈতিক উন্নতি, সামাজিক উন্নয়ন-কোনোটাই কিন্তু সুষ্ঠু এবং ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবেশ না থাকলে হয় না। আমরা বিশেষ করে গণতন্ত্র বলি বা গণতন্ত্রের একেবারে খাঁটি-নিখাদ রূপ না হয়ে যদি মিশ্র গণতন্ত্র বলি, সেটাও কিন্তু রাজনীতির ওপর নির্ভর করে। এটাই এখন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
শ্রীলঙ্কায় বড় একটা রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা আমরা দেখেছি। দেশটা অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়। তারা ঋণ শোধ করতে পারছিল না। মূল্যস্ফীতি ৬০ শতাংশ হয়ে যায়। কর্মসংস্থান ছিল না। এক- দেড় বছরের মধ্যে তারা ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি অনেক কমে গেছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। ট্যুরিজম আবার আগের মতো উঠে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে-আর্থিক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে। সব সমস্যা একবারে সমাধান হয়ে যায়নি। তবে অনেক ইতিবাচক ধারায় এসেছে। এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কার একটা স্ট্রং পয়েন্ট হলো, প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শক্তিশালী এবং লোকজনও কিন্তু সচেতন। অন্যান্য দেশের তুলনায় শিক্ষিতের হারও অনেক বেশি। মানবসম্পদ, প্রতিষ্ঠানগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার করে তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আর্থিক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে করণীয় কাজগুলো, সেখানে কিন্তু কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি। কোনো রকম রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে পড়েনি। তারা ঋণের সুদের হার বাড়িয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে কন্ট্রোল করেছে। ব্যাংকগুলোকে ঠিকমতো পুঁজি গঠন করার জন্য যে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো পরিপালন করা হয়েছে। এ জন্যই তারা সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। অপরদিকে আমরা যদি শ্রীলংকার সাথে নিজেদের তুলনা করি, সেক্ষেত্রে যথেষ্ট ঘাটতি রয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠান বলি, মানবসম্পদের ব্যাপারে বলি, এখানে কিছুটা পার্থক্য রয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কাকে অনুকরণ করতে বলছি না। তবে তাদের থেকে আমরা শিক্ষণীয় জিনিস গ্রহণ করতে পারি। তারা কিভাবে কঠিন সময়গুলো পার করে ভালো অবস্থানে নিজেদের নিয়ে গেছে, সেটা গ্রহণ করতে পারি। প্রথমত, আমাদের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে হবে। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি, সরকারি সম্পদের অপচয়, অর্থের অপচয় রোধ করতে হবে। তৃতীয়ত, নিয়ম-নীতি যেগুলো আছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম হোক বা অন্যান্য সংস্থার নিয়ম হোক, সেগুলো খুব যতেœর সঙ্গে পরিপালন করতে হবে। চতুর্থত, আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা-সুদের হার এখনো বাজারমুখী করা হয়নি। এক্সচেঞ্জ রেট, যেটা আমাদের টাকার মূল্যমান এখনো আমরা ভালো করতে পারিনি। আরেকটা ব্যাপার হলো, ব্যাংকিং সেক্টরেও রিফর্ম করা দরকার। খেলাপি ঋণ রোধ করতে হবে। আমাদের প্রাইভেট সেক্টর, বিশেষ করে বড় বড় শিল্প দরকার আছে, কিন্তু আমাদের ছোট-মাঝারি কুটির শিল্প-এগুলোকে আরো উৎসাহ দান করাও প্রয়োজন।
বাংলাদেশের অবস্থা যে স্থিতিশীল নয়, রাজনৈতিক অবস্থা কিছুটা টালমাটাল, এটা তো সবাই জানে। নির্বাচনের পরও যদি এই অবস্থা থাকে, তাহলে এফডিআই আসা, বাইরে থেকে বিনিয়োগ আসা কঠিন হবে। এটা না এলে কিন্তু আমাদের রিজার্ভ বাড়বে না। আমাদের যারা নীতিনির্ধারক, এমনকি বাস্তবায়নকারী আমলারা-জনসাধারণ যে একটা মতামত দেয়, সেটার কোনো কিছুই তারা আমলে নিতে চান না। লোকজন যখন বলছে, বিশেষজ্ঞরা যখন কোনো কিছু বলছে, সেটা শোনা দরকার। এটা কিন্তু অন্য কোনো দেশে হয় না। বিভিন্ন দেশে থিংকট্যাংক আছে। মুক্তবুদ্ধির চিন্তা যারা করে, তাদের কথা শোনা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা খুব কমই। যারা ক্ষমতার বলয়ে থাকে, যাদের আর্থিক ক্ষমতা আছে, তাদের ধারণা তারাই সব জানে। তারাই সব করতে পারে। জনগণকে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ অতীতেও দেখা যায়নি বর্তমানেও দেখা যাচ্ছে না, বিশেষ করে নীতিনির্ধারক ও আমলাদের মধ্যে। এটাই আমাদের একটা বড় সমস্যা। এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমরা স্থায়ী টেকসই উন্নয়নের দিকে যেতে পারব না।
স্বদেশে ও বিদেশে উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্নগুলো নিরন্তর ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগগুলো অব্যাহত থাক, বর্হিবিশ্বে আমরা যেন শীঘ্রই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরে আসতে পারি এটাই প্রত্যাশা।

#সম্পাদকীয়
#রিজার্ভ
#বৈদেশিকমুদ্রা
#ডলারসংকট

08/10/2023

"ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজি'উন"!

অর্থাৎ,"নিশ্চয়ই আমরা সৃষ্টিকর্তার জন্য এবং আমরা তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো!"

অনন্ত যাত্রায় পাড়ি জমালেন 'নিউক্লিয়াস'-'বিএলএফ'-এর প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীনতা ও সশস্ত্র সংগ্রাম-এর প্রধান সংগঠক, বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার এবং রাজনৈতিক তাত্ত্বিক সিরাজুল আলম খান-এর ছোট বোন রওশন খানম লুসি!

তাঁর বিদেহী পবিত্র আত্মার অপার শান্তি কামনা করছি! 💐💐

07/10/2023

'সিঙ্গাপুর অপরাধী, প্রতারক এবং চোর শাসকগোষ্ঠীকে তাদের অবৈধ অর্থ রাখার স্থান এবং অপরাধ থেকে পালানোর সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল'

01/10/2023

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সারাদেশে কেন্দ্রীয় থেকে শুরু করে ইউনিট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রায় সকল পর্যায়ে দোয়া এবং কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। হওয়ার কথাই এবং হওয়াই উচিত।যারাই এইসব উদযাপনের অংশ ছিলেন, ছবি তুলেছেন ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য। এটাও এখন অতি স্বাভাবিক ব্যাপার।

বেশ অনেক জায়গায় দেখা যায় কেকের ওপর বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার ছবিও আছে যা ক্রিম দিয়েই তৈরি।

অর্থাৎ, ভক্ষনোপযোগী।

প্রশ্ন হল, কেক কেটে খন্ড খন্ড করার সময়, বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার উপরে ছুরি চালিয়েছিলেন কে কে ? এই টুকরোগুলোই বা কার কার মুখে গিয়েছে ? এই সব নেতা কারা ?

এগুলোর ছবিও তুলেছেন তো ?

'৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর আমি অন্তত দু'জন মানুষের কথা শুনেছিলাম, যারা তাদের জীবদ্দশায় আর কোনদিন মাংস খান নি। তারা ১৬ আগস্টের সকালের নাস্তায় মাংস খাবার সময় মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের খবরটি শুনতে পান এবং তাদের মনে হয়েছিল তাদের পাতের মাংসের টুকরাটি বঙ্গবন্ধুর শরীরের। সেটাই ছিল তাদের জীবনে পাতের শেষ মাংস। এরা কেউই আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন না। সাধারণ মুজিব ভক্ত ছিলেন।

আজ রাস্তায় হাঁটতে গেলেই যার সাথেই ধাক্কা লাগে সেই আওয়ামী লীগের 'নেতা'। আর যে নেতার সাথে একজন অন্তত হাঁটে, সেই নাকি 'জননেতা'!

আর, এজন্যই কেকের গায়েও নেতার ছবি খাওয়া হয়ে যায়। অজস্র জননেতার ভিড়ে, মূল নেতার হারিয়ে যাওয়া কে আর দেখে?

🟠 🖋 লিখেছেন প্রিয়-শ্রদ্ধেয় সুহৃদ, সাকু চৌধুরী 🖋 🟠

⬛️ ছবি: সদ্য স্বাধীন দেশের রাজধানীর বুকে তাঁরা এসেছিলেন, যাঁদের 'প্রত্যহ প্রভাত সূর্য কুর্নিশ করে'। তুলেছিলেন শ্রদ্ধেয় রশিদ তালুকদার।

https://youtu.be/2CSoDVhljxk?si=c4De1ZolBu7CsKPc
26/09/2023

https://youtu.be/2CSoDVhljxk?si=c4De1ZolBu7CsKPc

বন্ধু শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে যেভাবে মূল্যায়ন করলেন সুলতানা কামাল | Channel 24Welcome to the Official YouTube Channel of C...

প্রখ্যাত ভারতীয় সাংবাদিক, কুলদীপ নায়ার অনেক বছর আগে বাংলাদেশ নিয়ে লেখা তাঁর  এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, বাংলাদেশে আর কোন দিন...
22/09/2023

প্রখ্যাত ভারতীয় সাংবাদিক, কুলদীপ নায়ার অনেক বছর আগে বাংলাদেশ নিয়ে লেখা তাঁর এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, বাংলাদেশে আর কোন দিন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না!

'ফেরেশতা এসে নির্বাচন করলেও সুষ্ঠু হবে না' | Jatiya Party | National Election | Somoy TVআসন্...

16/09/2023

১৭৫৭ সালে 'নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ' করেছিলো ইতিহাসের ঘৃণ্যতম বেঈমানেরা।

নাকের সেই ঘা শুকোতে লেগেছিলো ১৯০ বছর।

সাদা স্যারেরা আবার এসেছেন, বারবার এসেছে তারা। ঘুঘুদের চুমু দেবেন নাকি ফাঁদ দেখাবেন ?

সিদ্ধান্ত আপনার।

11/09/2023

রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ উনিশ শতকে জন্মগ্রহণ করা এক বৃদ্ধের চলে যাওয়া নয়...

১৯৩৯। জীবনের শেষ প্রান্তে উপনীত হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। প্রগতি সাহিত্য সম্মিলনে তরুণ কবি বুদ্ধদেব বসু ঘোষণা করলেন, যে সময় রবীন্দ্রনাথকে গড়ে তুলেছিল, সেই সময় অনেক দিন হল অতীত। সোজা কথা, রবীন্দ্রনাথের দিন ফুরিয়েছে, তরুণ কবির মতে, তিনি এ কালের আর কেউ নন। এই অস্বীকৃতি রবীন্দ্রনাথের বুকে গভীর ভাবে বেজেছিল, দুঃখ পেয়েছিলেন, অভিমান হয়েছিল তাঁর। সেই অভিমান প্রকাশ করতে দ্বিধাও করেননি। ‘আকাশপ্রদীপ’ বইয়ের ‘সময়হারা’ কবিতায় তাঁর বেদনা ধরা পড়েছিল। এই কবিতার বইটি তিনি উৎসর্গ করেছিলেন বুদ্ধদেবেরই সমকালীন আর এক জন কবিকে— সুধীন্দ্রনাথ দত্তকে উৎসর্গ করার কারণ, সুধীন্দ্র অস্বীকৃতির আঘাত দেননি রবীন্দ্রনাথকে।
বুদ্ধদেব যা-ই বলুন না কেন, রবীন্দ্রনাথ সেই সময়ে মোটেই গুরুত্বহীন অতীতের ছায়া নন। যুদ্ধের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলেন তিনি। নেশনের দাঁত নখ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ঘন করে তুলছে। মানবতা ধ্বংসের মুখোমুখি। রবীন্দ্রনাথ সভ্যতার সেই সঙ্কটে অসুস্থ শরীরেও বার বার সরব হয়ে উঠলেন। পাশ্চাত্যের নেশনের প্রতি তাঁর যে ভরসা নেই একেবারে, নির্দ্বিধায় তা জানালেন।

এ দেশের জাতীয়তাবাদীরাও যখনই পাশ্চাত্যের নেশন-জাগানিয়া মডেলে নিজেদের বিপ্লবকে বলশালী করতে চেয়েছেন তখনই কিন্তু প্রতিবাদী হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। স্বাজাত্যে ও স্বাদেশিকতায় তাঁর আস্থা ছিল, কিন্তু স্বাজাত্য ও স্বাদেশিকতা যেখানে উগ্র হয়ে অন্যকে মারে সেখানে তাঁর ঘোরতর আপত্তি। এই মারার কল তৈরি করার জন্য নেতারা অনেক সময় স্বাদেশিকতার নামে নানা জিগির তোলেন। কোনও মূর্তি বা মন্ত্রকে বড় করে তোলেন। সে কালে যেমন করতেন, এ কালেও তেমনই করেন।

১৯৩৭-এ, বুদ্ধদেবের রবীন্দ্রবিরোধী ঘোষণার বছর দু’য়েক আগে বুদ্ধদেবের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র চালাচালি হয়েছিল ‘বন্দেমাতরম্‌’ বিষয়ে। সে চিঠিপত্র পড়লে বোঝা যায়, তরুণ বুদ্ধদেবের থেকে রবীন্দ্রনাথ তাঁর দেশের মানুষকে অনেক বেশি চেনেন। কে বলে তাঁর দিন গিয়েছে? ‘শ্রীহর্ষ’ পত্রিকার ১৯৩৭-এর নভেম্বর সংখ্যায় বুদ্ধদেব বসু ‘গান না শ্লোগান’ নামে একটি নিবন্ধ লেখেন। তাঁর বক্তব্য, ‘দেশপ্রেম মূল্যবান, কিন্তু মাত্রাজ্ঞান বলেও একটা জিনিষ’ আছে। বুদ্ধদেব মাত্রাজ্ঞানের দোহাই দিলেও এই নিবন্ধে বন্দেমাতরমের গুণ গেয়েছিলেন নানা ভাবে। বুদ্ধদেবের যুক্তিগুলি প্রায়োগিকতার বিচারে সিদ্ধ, খানিক অসচেতন ভাবেই হয়তো নরম-হিন্দুত্বের গন্ধমাখা। জানিয়েছিলেন তিনি, ‘বন্দেমাতরম্‌ অতি চমৎকার শ্লোগান’। বিরতিহীন প্রচারকার্যের মাধ্যমে স্তিমিত দেশপ্রেমকে জাগানোর জন্য বন্দেমাতরম্‌ বিকল্পহীন। সংস্কৃত বলে আওয়াজটা জমকালো। মন্ত্রটি খুব ছোট। জমকালো আওয়াজে ছোট মন্ত্রটি উচ্চারণ করলে বেশ কাজ হয়। আর এর সর্বজনীনতা বুদ্ধদেবের মতে ‘অকাট্য। স্বদেশকে মা বলাতে কোনও পৌত্তলিকতা নেই, জাতিবিদ্বেষ নেই, প্রাদেশিকতা নেই।’

বুদ্ধদেবের এই লেখা পড়ে রবীন্দ্রনাথ নিরুপায় হয়েই চিঠি লেখেন। অনুজ কবির এই যুক্তি সচেতন রবীন্দ্রনাথ মানতে পারছিলেন না। হিন্দু-মুসলমানের সম্পর্ক যে তলানিতে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ তা বুঝতেই পারছিলেন। সংখ্যাগুরু হিন্দুদের সামাজিক দায়িত্ব অনেক বেশি তা-ও মনে করতেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ চিঠিতে লিখলেন, ‘তুমি আমাকে গাল দাওনি। কিন্তু তাই যথেষ্ট নয় তুমি আমাকে বুঝিয়ে দাও। তর্কটা হচ্ছে এ নিয়ে যে ভারতবর্ষে ন্যাশনাল গান এমন কোনো গান হওয়া উচিত যাতে একা হিন্দু নয় কিন্তু মুসলমান খ্রীষ্টান – এমন কি ব্রাহ্মও – শ্রদ্ধার সঙ্গে ভক্তির সঙ্গে যোগ দিতে পারে। তুমি কি বলতে চাও, “ত্বং হি দুর্গা” “কমলা কমলদল বিহারিণী, বাণী বিদ্যাদায়িনী” ইত্যাদি হিন্দুদেবীর নামধারিণীদের স্তব, যাদের প্রতিমা পূজি [গড়ি] মন্দিরে মন্দিরে” সার্বজাতিক গানে মুসলমানদের গলাধঃকরণ করাতেই হবে।” ১৯৩৭-এ রবীন্দ্রনাথ যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, যে প্রশ্নের সদুত্তর সে দিন বুদ্ধদেব দিতে পারেননি সে প্রশ্নটা কালের সীমা অতিক্রম করে এ কালেও আমাদের কানে বাজে। নেশনের দোহাই দিয়ে হিন্দু আইডিয়ার দোহাই দিয়ে যে শুদ্ধিকরণের জিগির হালে এ দেশে তোলা হয় তা-ও তো আসলে উগ্র জাতীয়তাবাদেরই একেলে রূপ। বুদ্ধদেব বন্দেমাতরমের পক্ষে যে যুক্তিগুলি দিয়েছেন এ কালের হিন্দুত্ববাদী নেতারাও তো তেমন শ্লোগানই খোঁজেন। ছোট, সংস্কৃতগন্ধী, জমকালো আওয়াজের শ্লোগান। এই শ্লোগানে চরমপন্থী ও নরমপন্থী হিন্দুভারত জেগে উঠুক, এই তাঁদের উদ্দেশ্য। বুদ্ধদেব যা বুঝতে পারছিলেন না, রবীন্দ্রনাথ তা কিন্তু বুঝতে পারছিলেন। অথচ দু-বছর বাদে বুদ্ধদেবই কি না বলবেন রবীন্দ্রনাথের দিন গিয়েছে!

বন্দেমাতরম্‌ নিয়ে এই বিপদের কথা তো রবীন্দ্রনাথ উত্থাপন করেছিলেন অনেক আগে। ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাসে নিখিলেশ আর সন্দীপের বন্দেমাতরম মন্ত্র নিয়ে তীব্র তর্ক হয়। সে তো ১৯১৬ সালের কথা। নিখিলেশ সন্দীপকে বলে, কোনও একটা মন্ত্রে দেশবাসীকে ভুলিয়ে জাগিয়ে তোলার রাজনীতিতে তাঁর বিশ্বাস নেই। রবীন্দ্রনাথ তাঁর উপন্যাসে যখন এই বিতর্কের উত্থাপন করছিলেন তখন বাস্তবে বন্দেমাতরম্‌ নিয়ে বিতর্ক তেমন তৈরি হয়নি। সে বিতর্ক তৈরি হল তিনের দশকে। সময়ের থেকে এগিয়ে দেখতে পান যে রবীন্দ্রনাথ, তাঁর সংবেদী মন বুঝতে পারে কী হতে চলেছে। তাই ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাসে এসেছিল সে কথা। ‘মুক্তধারা’, ‘রক্তকরবী’ দুই নাটকে যথাক্রমে বৃহৎ যন্ত্র ও খনিশহর কী ভাবে নিসর্গ ধ্বংস করে তার কথা লিখেছিলেন। ১৯২৩ ও ১৯২৪-এ লেখা এই নাটক দু’টি। প্রাকৃতিক সম্পদকে একটি ভূখণ্ড কী করে কুক্ষিগত করে অন্যদের বঞ্চিত করে তার বৃত্তান্ত ধরা পড়েছে মুক্তধারা-য়। এই সমস্যা নিয়ে কথাবার্তা তো তখনও ভারতীয় রাজনীতিতে তৈরি হয়নি। তৈরি হয়েছে অনেক পরে। এখন সে সবের আঁচ টের পাওয়া যায়। ভারত-বাংলাদেশের জল-চুক্তি নিয়ে কথা ঘোরে। স্বাধীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহরু দেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’। নেহরু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তায় ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’ দেখে থমকে গিয়েছিলেন মুহূর্তের জন্য। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত বৃহৎ যে সবসময় মহৎ হয় না এই উপলব্ধিই যেন হয়েছিল তাঁর। নেহরু তাঁর প্রকল্প থেকে পিছিয়ে আসেননি, তবে ভেবেছিলেন। একটি লেখায় নেহরুর এই প্রতিক্রিয়ার কথা খেয়াল করিয়ে দেন শঙ্খ ঘোষ। বুদ্ধদেবরা অবশ্য এই দুয়ের দশকেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তরজায় মত্ত। রবীন্দ্রনাথ কবি হিসেবে পুরনো, তাঁদের পথরোধ করে আছেন!

২২ শ্রাবণ চলে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর সেই প্রয়াণ উনিশ শতকে জন্মগ্রহণ করা এক জন বৃদ্ধ মানুষের চলে যাওয়া নয়। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সমকালের স্পন্দন অনুভব করেছিলেন। নিজের সময়কে অতিক্রম করে সভ্যতার ভবিষ্যৎ সঙ্কট টের পেয়েছিলেন। সে বিষয়ে সাবধানও করেছিলেন। আমরা বুঝতে পারিনি, বুঝতে পারেননি তরুণ বুদ্ধদেব ও তাঁর সহযোগীরা। প্রগতির তকমা আর আধুনিকতার দোশালা থাকলেই কি সবসময় প্রগতিশীল হওয়া যায়!

লেখক :- বিশ্বজিৎ রায়, বিশ্বভারতীতে বাংলার অধ্যাপক।

সিঙ্গাপুরের জিরো টলারেন্স নীতি, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে আগ্রহী বাংলাদেশঅভিযোগ রয়েছে হুন্ডি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যম...
08/09/2023

সিঙ্গাপুরের জিরো টলারেন্স নীতি, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে আগ্রহী বাংলাদেশ

অভিযোগ রয়েছে হুন্ডি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে বড় অঙ্কের অর্থ পাচার হচ্ছে। পাচারকৃত অর্থ দিয়ে সিঙ্গাপুরে বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবন কেনা হয়েছে। অনেকে আবার ওই দেশের ব্যাংকেও দেশ থেকে পাচার করা অর্থ জাল কাগজপত্র দিয়ে গচ্ছিত রেখেছেন, সেকেন্ড হোম করেছেন। সম্প্রতি অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন, বাংলাদেশও আগ্রহী হয়েছে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে, উভয় সরকারের গৃহীত উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক
এশিয়ার ‘বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট’ সিঙ্গাপুর। আবার কর ফাঁকির ‘অভয়ারণ্য’ বলেও রয়েছে খ্যাতি। পাচার করা টাকা লুকিয়ে রাখার জন্য সিঙ্গাপুর অনেকেরই পছন্দের জায়গা। তবে অনেকেই এখন আর সিঙ্গাপুরকে কর ফাঁকির অভয়ারণ্য মনে করতে পারছেন না। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের অভিজাত এলাকা ট্যাংলিন, বুকিত টিমাহ, অর্চার্ড রোড, সেন্টোসা ও রিভার ভ্যালির বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টগুলোয় একযোগে দেশটির বাণিজ্য বিভাগ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড এবং পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযান চালান। আচমকা এ অভিযানে জব্দ হয় ১০০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ। ৯৪টি ভূসম্পত্তি, ৫০টি গাড়ি, ২৫০টি নামীদামি ব্র্যান্ডের ব্যাগ, ঘড়ি, ২৭০টি মূল্যবান অলংকার, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মদের বোতল, নগদ অর্থসহ ১১টি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও জব্দ করা হয়। ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক নারীসহ ১০ পুরুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক ব্যক্তিরা চীন, তুরস্ক, কম্বোডিয়া, সাইপ্রাস ও ভানুয়াতুর নাগরিক। অন্য দেশ থেকে সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার হয়ে আসা এসব অর্থের উৎস দেখানোর জন্য জাল কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। অভিযানের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের (সিএডি) ডিরেক্টর ডেভিড চিউ এক বিবৃতিতে বলেন, সিঙ্গাপুরকে এ ধরনের অপরাধের কেন্দ্র হওয়া থেকে রক্ষা করতে পুলিশ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে কাজ করবে। অপরাধীরা সিঙ্গাপুরকে তাদের আশ্রয়স্থল বানাতে পারবে না। সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বলেছে, যেখানে সম্ভাব্য জালিয়াতির অর্থ চিহ্নিত করা হয়েছে, সেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নজরদারির কাজ চলছে। সিঙ্গাপুরের পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একটি সুনির্দিষ্ট তালিকার ভিত্তিতে এ অভিযান চলছে। তবে এ তালিকায় কাদের কাদের নাম আছে, এ নিয়ে সিঙ্গাপুর সরকার বা পুলিশ কোন কিছুই বলেনি। বরং সিঙ্গাপুর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অবৈধ অর্থ-সম্পদ যাদের আছে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অভিযানের মাধ্যমে তাদেরকে গ্রেপ্তার এবং তাদের অর্থ-সম্পদ জব্দ করা হচ্ছে।

অনেক দিন থেকেই অভিযোগ রয়েছে হুন্ডিতে এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে দুইভাবেই বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে বড় অঙ্কের অর্থ পাচার হয়ে আসছে। বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে সিঙ্গাপুরে বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবন কেনা হয়েছে। অনেকে আবার ওই দেশের ব্যাংকেও দেশ থেকে পাচার করা অর্থ জাল কাগজপত্র দিয়ে গচ্ছিত রেখেছেন। অনেকে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ নিয়ে সিঙ্গাপুরে সেকেন্ড হোম করেছেন। তবে বাণিজ্যের আড়ালে সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পাচারকৃত অর্থ দিয়ে সেখানে রমরমা ব্যবসা করছে; বিশেষভাবে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশ কম্পিউটার এক্সেসরিজ, মোবাইলের যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক সামগ্রী আমদানি করছে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে, কাগজে-কলমে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দেখিয়ে পণ্যের দাম হিসাবে বড় অঙ্কের অর্থ পাচার করেছে। এই ব্যবসায়ীদের অনেকে আবার সিঙ্গাপুর থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে কাঁচামাল আমদানি করে থাকেন। এভাবে শুধু শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ায় সরকার বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ পাচার এবং পাচার করা অর্থ থেকে রাজস্ব আদায়ে গঠিত কমিটির এক সদস্য বলেন, এর আগে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে পাচার করা বড় অঙ্কের অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর সরকার অর্থ পাচারকারীদের ধরতে এবং পাচার করা অর্থ ও পাচার করা অর্থে কেনা সম্পদ-ব্যবসা জব্দ করতে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করেছে। আশা করি, বাংলাদেশ থেকে যে বা যারা অর্থ পাচার করে অবৈধভাবে সিঙ্গাপুরে সম্পদ ও ব্যবসা করছে, তাকে বা তাদের ধরতে পারব। কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, পাচার করা অর্থ ফেরত আনা হবে। পাচার করা অর্থে কেনা সম্পদ বিক্রি করে পাওয়া অর্থ দেশে আনা হবে। এসব অর্থ থেকে হিসাব কষে রাজস্ব আদায় করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনে সিঙ্গাপুরে ল’ ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হবে। সে দেশের সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া হবে। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বৈত কর নীতি চুক্তি আছে। তাই অর্থ পাচারকারীদের ধরতে সিঙ্গাপুর সরকারের সহযোগিতা নিতে কোনো ধরনের আইনি বাধা নেই। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি অবৈধ অর্থ রাখার দায়ে বা সম্পদ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়নি। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র মতে, সিঙ্গাপুরের হঠাৎ শুরু হওয়া ডার্টি মানি অপারেশনের কারণে পাঁচ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আতঙ্কে রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সিঙ্গাপুরের স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের কোম্পানি তালিকাভুক্ত। এদের একজন সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধনী ব্যবসায়ীদের তালিকাতেও তার নাম আছে। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, যারা সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত কোম্পানির মাধ্যমে ব্যবসা করছেন, তাদের ব্যবসার হিসাবপত্র খতিয়ে দেখা হবে এবং তারা যদি অবৈধভাবে কোনো অর্থ বা সম্পদ করেন, সেটুকুই শুধু বাজেয়াপ্ত করা হবে। এতে তাদের পুরো কোম্পানি বাতিল বা বাজেয়াপ্ত করা হবে না। সিঙ্গাপুরের ফরেন ট্রেড অফিস সূত্র বলছে, যে সমস্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সিঙ্গাপুর স্টক এক্সচেঞ্জের নিবন্ধিত এবং নিবন্ধনের মাধ্যমে সেখানে ব্যবসা করে সম্পদ তৈরী করেছেন, তাদের আতঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। তবে যারা অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বা অন্য কোনো প্রকারে অর্থ এনে সিঙ্গাপুরে সম্পদ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিক থেকে বড় প্রভাবশালী দুই ব্যবসায়ীর আতঙ্কিত হবার কোন কারণ নেই। তবে সিঙ্গাপুরের একজন অ্যাটর্নির সাথে আলাপ করে জানা গেছে, যদি সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ দেখে, তাদের যে বিপুল সম্পত্তি, সেই সম্পত্তির কিছু অংশ ঘোষিত নয় বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত; তাহলে তাদের সেইটুকু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হতে পারে। অন্য তিন জন বাংলাদেশি রয়েছেন, যাদের সিঙ্গাপুরে কোনো বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য কিছু নেই। কিন্তু সিঙ্গাপুরে তারা বিশাল বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন এবং স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করছেন। একজন ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানির মালিক রয়েছেন, যিনি সিঙ্গাপুরের একাধিক বাড়ি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন। এই অর্থ তিনি বৈধভাবে এনেছেন কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে বলে তার নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও আরো দুইজন আছেন, যারা সিঙ্গাপুরে নিয়মিত থাকেন, কিন্তু তাদের কোনো বৈধ আয়ের উৎস এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এই বিষয়গুলো সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে এবং তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, তারা বৈধভাবে সিঙ্গাপুরে অর্থ আনেননি, তাহলে তাদের সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত হবে। সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারকারীদের ধরতে এবং পাচার করা অর্থে পরিচালিত ব্যবসা চিহ্নিত করতে বড় ধরনের অভিযানের পরই সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারকারীদের ধরতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সদস্যরা অর্থ পাচার এবং পাচার করা অর্থ থেকে রাজস্ব আদায়ে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির পরামর্শ নিয়ে কাজ করবে। নতুন গঠিত এই কমিটি সিঙ্গাপুরের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারকারীদের চিহ্নিত করতে, পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে এবং সেই অর্থ থেকে রাজস্ব আদায়ে কাজ করবে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচার করা অর্থ ফেরত এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া সম্ভব হলে অর্থ পাচার কমবে। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ নেন। পুরো অর্থই সিঙ্গাপুরে লেনদেন হয়। এ ঘটনায় দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ আরাফাত রহমান ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী আকবর হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেনকে আসামি করে কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০১১ সালের ২৩ জুন মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে আদালত কোকোর ছয় বছরের কারাদন্ডসহ ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানার রায় দেয় এবং একই সঙ্গে বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নেতৃত্বে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ২০১২ সালের নভেম্বরে প্রথম দফায় ২০ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৪ দশমিক ৮৮ সিঙ্গাপুরি ডলার দেশে ফেরত আনে দুদক। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি ওই অর্থের (১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা) মুনাফা ২৩ হাজার ৮০০ সিঙ্গাপুরি ডলার, সে সময়ের হিসাবে বাংলাদেশি প্রায় ১৫ লাখ টাকার সমান, দেশে ফেরত আনা হয়। এরপর তৃতীয় দফায় ওই বছরই ১৩ আগস্ট সিঙ্গাপুর ওভারসিস ব্যাংক থেকে ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮৭ মার্কিন ডলার বাংলাদেশে পাঠানো হয়; যা সে সময়ের হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ কোটি ৪৩ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৫ টাকা।

অর্থের অবৈধ ব্যবহার সারা বিশ্বের জন্যই বড় মাথাব্যথা। জাতিসংঘের হিসাবে বিশ্বে অবৈধ অর্থপ্রবাহের পরিমাণ আট শ’ বিলিয়ন থেকে দুই ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ২ থেকে ৫ শতাংশ। এক বিলিয়ন হচ্ছে এক শ’ কোটি এবং এক ট্রিলিয়ন হচ্ছে এক হাজার বিলিয়ন। আবার দেখা যাচ্ছে, সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির যে আকার, তার তুলনায় দেশটির আফশোর তহবিল বহুগুণ বেশি। যেমন মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষের (এমএএস) তথ্য হচ্ছে, সিঙ্গাপুরের জিডিপি হচ্ছে ৬৪০ বিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার (৪৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। আর দেশটি ৪ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদ ব্যবস্থাপনা করে, যার ৮০ শতাংশ অর্থই সিঙ্গাপুরের বাইরে থেকে আসে।

বারাক ওবামা ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ফরেন অ্যাকাউন্ট ট্যাক্স কমপ্লায়েন্স অ্যাক্ট (এফএটিসিএ)’ নামের গুরুত্বপূর্ণ একটি আইন পাস করেছিলেন। এটি মূলত মার্কিন নাগরিকদের কর ফাঁকি বন্ধের আইন। আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নয়, এমন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানও মার্কিন নাগরিকদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে। এই আইন না মানলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কেউ ব্যবসা করতে পারবেন না। এর পরেই আরও অনেক দেশ একই ধরনের আইন তৈরির উদ্যোগ নেয়। আবার ২০১৪ সালে জি-২০ ও ওইসিডিভুক্ত ৪৭টি দেশ এই লক্ষ্যে তথ্য আদান-প্রদানের একটি অভিন্ন প্রক্রিয়া বা ‘কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড’-এর একটি কাঠামো গড়ে তোলে। মূলত এটি একটি স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময় কাঠামো বা অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন ব্যবস্থা। ২০১৭ সাল থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। এসবের ফলে সুইস ব্যাংকসহ অন্যরাও তথ্য দিতে বাধ্য হচ্ছে। পাশাপাশি কর ফাঁকি যারা দেয়, তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলোকে মোটা অঙ্কের জরিমানাও দিতে হচ্ছে।
সিঙ্গাপুর অবশ্য নড়েচড়ে বসে মালয়েশিয়ার কুখ্যাত ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ বা ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারির পর থেকে। ২০০৯ সালে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে এই রাষ্ট্রীয় তহবিল গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এই তহবিল থেকে হাওয়া হয়ে যায় সাড়ে চার শ’ কোটি ডলার। সেই অর্থ গেছে কয়েক ব্যক্তির পকেটে। এর মধ্যে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকও ছিলেন। চীনা বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী লো তায়েক ঝোকে বলা হয় এই কেলেঙ্কারির হোতা। ২০১৩ সালের বিখ্যাত হলিউড সিনেমা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর দ্য উলফ অব ওয়ালস্ট্রিট এর অন্যতম লগ্নিকারী ছিলেন তায়েক ঝো এবং নাজিব রাজাকের সৎপুত্র রিজা আজিজ। এই সিনেমার অর্থের উৎস খুঁজে বের করতে গিয়েই সাংবাদিকেরা এই কেলেঙ্কারির রহস্য উদ্ঘাটন করেছিলেন। মূলত ছয়টি দেশের ব্যাংক-ব্যবস্থা ব্যবহার করেই এই অর্থ পাচার করা হয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল সিঙ্গাপুর। ফলে বদনামের ভাগী হওয়া ছাড়াও আন্তর্জাতিক মহলেও চাপের মধ্যে পড়ে যায় সিঙ্গাপুর। এরপরে নিজেদের নিষ্কলুষ করতে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে দেশটি। কিন্তু তত দিনে কর ফাঁকির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছে দেশটি। এ থেকে বের হতে কিছু একটা করার চেষ্টা ছিল তাদের। ঘটনাটির সূত্রপাত হয়েছিল ২০১৬ সালে। তখন দুটি রিয়েল এস্টেট এজেন্টকে জরিমানা করা হয়েছিল সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য না জানানোর জন্য। এর মধ্যে একটি ছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ সিঙ্গাপুর ডলারে সান্তোসা কোভে একটি বাংলো এবং আরেকটি ছিল নতুন কনডেমোনিয়ম ইউনিট বিক্রিসংক্রান্ত। এমন দুজন ব্যক্তির কাছে তা বিক্রি করা হয়েছিল, যারা পরে অপরাধী প্রমাণিত হয়েছেন। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে কারণেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে ২০১৮ সালে পাস করা হয় অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং অ্যান্ড টেররিজম ফাইন্যান্সিং আইন। তাতেও কাজ হচ্ছিল না। ফলে আরও কঠোর আইনের দিকে যায় দেশটি।
২০২৩ সালে সিঙ্গাপুর আরও কঠোরভাবে ‘নিউ অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অ্যান্ড টেররিজম ফাইন্যান্সিং’ আইনটি পাস করে। এটি ২০২৩ সালের ২৮ জুন থেকে কার্যকর করা হয়েছে। আর এরপরই ভয় পেয়েছেন সিঙ্গাপুরে থাকা বিভিন্ন দেশের অর্থ পাচারকারীরা, যারা দেশটিতে নামে-বেনামে কোম্পানি খুলেছিলেন বা কিনেছিলেন হোটেল, গাড়ি, বাড়িসহ নানা ধরনের সম্পত্তি। নতুন আইন অনুযায়ী দেশটির রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের নতুন কিছু বিধিমালা মানতে হচ্ছে। এখন থেকে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে গ্রাহকের যথাযথ পর্যালোচনা (কাস্টমার ডিউ ডিজিলেন্স-সিডিডি) করতে হবে, সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য জানাতে হবে এবং লেনদেনের রেকর্ড পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। অর্থাৎ অবশ্যই ক্রেতা কে, কোন দেশের নাগরিক এবং অর্থের উৎস যাচাই করতে হবে। যিনি কিনবেন তার প্রকৃত পরিচয় থাকতে হবে। অজ্ঞাত, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বা ছদ্মনামের কারও কাছে কোনো সম্পত্তি বিক্রি করা যাবে না। এর ব্যত্যয় হলে জরিমানার পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ এক লাখ সিঙ্গাপুর ডলার। আর যদি কেউ স্বেচ্ছায় বা জেনেশুনে এসব কাজে সম্পৃক্ত থাকেন, তাহলে জেল তো হবেই, ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল থাকবে সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত। সব মিলিয়ে কাজটি কীভাবে হবে, তার একটি গাইডলাইনও প্রকাশ করা হয়েছে। ৫৩ পৃষ্ঠার গাইডলাইনের নাম হচ্ছে ‘গাইডলাইনস ফর ডেভেলপার অন অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং অ্যান্ড কাউন্টার টেররিজম ফাইন্যান্সিং’। এমনকি এই আইন পাস হওয়ার আগে লেনদেন হলে সে ক্ষেত্রেও নতুন এই বিধিমালা প্রযোজ্য হবে।
অর্থ পাচার প্রতিরোধে ভবিষ্যতে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনিটরি অথরিটি অব সিঙ্গাপুর দেশটির ছয়টি প্রধান বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে মিলে কসমিক নামে একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম চালু করতে যাচ্ছে। এ প্লাটফর্মের মাধ্যমে অর্থ পাচার ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য বিনিময় করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। বৈধ ব্যক্তি বা আইনগতভাবে স্বীকৃত শেল কোম্পানির আড়ালে অর্থ পাচার, বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার এবং অর্থের বিস্তার ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর মতো বিষয়গুলোতে জোর দেবে কসমিক। সিঙ্গাপুরের সংসদ গত ৯ মে এ বিষয়ে একটি আইন পাস করে। আইনের নাম ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অ্যান্ড মার্কেটস (সংশোধন) বিল ২০২৩। নতুন আইনে যারা অফশোর বা শেল কোম্পানির আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখেন, তাদের চিহ্নিত করা হবে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এই কসমিক চালু হবে। সুতরাং যারা অন্যের নামে সেখানে সম্পত্তি করেছেন এবং পাচার করা অর্থ নামে-বেনামে ব্যাংকে লেনদেন করছেন, তারা বিপাকে পড়বেন কসমিক চালু হলে। এছাড়া চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দ্য স্মার্ট নেশন অ্যান্ড ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অফিস (এসএনডিজিও) এ-সংক্রান্ত আরও কঠোর করার সুপারিশ করেছে। অন্যের হয়ে যারা অর্থ পাচার বা অবৈধ ব্যবহার করেন বা সহযোগিতা করেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের পুলিশ ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এ রকম ১ হাজার ৯০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে এবং ২০০ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে। সিঙ্গাপুরের পুলিশ জানিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে, তাদের বয়স ১৬ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে।

Address

91 Desker Road
Singapore
209613

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Banglar Kantha posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Banglar Kantha:

Videos

Share

Nearby media companies


Other Singapore media companies

Show All