Mohammad Ramjan Ali

“ যে ব্যক্তি দীর্ঘায়ু ও রিযক বৃদ্ধির আশা করে , সে যেন পিতা - মাতার আনুগত্য করে এবং আত্মীয় স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায়...
13/10/2024

“ যে ব্যক্তি দীর্ঘায়ু ও রিযক বৃদ্ধির আশা করে , সে যেন পিতা - মাতার আনুগত্য করে এবং আত্মীয় স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে ।মুসনাদ আহমাদ ; ৩২৭৭

আমি এই ব্যক্তির বক্তব্যটা শুনে যতটুকু না আশ্চর্য হয়েছি এর চাইতে বেশি আশ্চর্য হয়েছি,খেলাফত নিয়ে বিদ্রুপ ভাবে যে বক্তব্...
27/09/2024

আমি এই ব্যক্তির বক্তব্যটা শুনে যতটুকু না আশ্চর্য হয়েছি এর চাইতে বেশি আশ্চর্য হয়েছি,খেলাফত নিয়ে বিদ্রুপ ভাবে যে বক্তব্যে দিয়েছে তার প্রতিবাদ এখন পর্যন্ত সাংগঠনিকভাবে কেউ করে নাই।

82 বছর পরে এসেও উনি জামাতের গঠনতন্ত্র পাল্টে দিতে চাই,অথচ এই খেলাফত প্রতিষ্ঠা করার জন্যই জামাত ইসলামির শত শত নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন,

জামায়াত ইসলামের গঠনতন্ত্রের মূল শ্লোগানই হলো আল্লাহর আইন চাই সৎ লোকের শাসন চাই,
এই লোকটা জামাতের গঠনতন্ত্র না মেনে
কিভাবে রোকন শপথ নিয়েছেন?
এবং এখনো কিভাবে দায়িত্বে বহাল আছে?
আমি দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি,হয় এই লোকটাকে
সংগঠন থেকে বের করে দিয়ে এবি পার্টিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ দিন,না হয় উনাকে জাতির সামনে ক্ষমা চাইতে বলেন।

আমরা আল্লামা মওদুদী রহঃ)এর ইসলামী রাষ্ট্র নিয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠা নিয়ে একামত দিনের যে স্বপ্নটা দেখেছিলেন সেটার অনুপ্রেরণায় আগাবো,যেই অনুপ্রেরণায় শহীদ হয়েছিলেন আল্লামা সাঈদী,গোলাম আযম,মতিউর রহমান নিজামী,
মীর কাশেম আলী, কাদের মোল্লারা

অনেকে আবার বলতে পারেন এটা একটা কৌশল,আরে ভাই দ্বীন অস্বীকার করে
কিসের কৌশল?
ভাই কৌশল করেন আর নাই করেন কাফের মুশরিক নাস্তিকরা কিন্তু কোনদিনও সমর্থন করবে না তারা বিরোধিতা করবেই।

যারা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠিত করতে চাইতেছেন না তারা জামাত ইসলামী থেকে বিদায় নিয়ে অন্য কোন দল যে যোগ দেন।

খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা যদি বুক ফুলিয়ে না বলতে পারেন,তাহলে আপনি কিসের ইসলামী আন্দোলনের কর্মী? অথচ আল্লামা মওদুদী রহঃ) বলেছিলেন আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার জন্য এমন কিছু মানুষ চাই যারা আগুনে যাপ দেবে।

আমি বুক ফুলিয়ে বলতে চাই
কোরআন সুন্নাহর আইন চাই,সৎ লোকের শাসন চাই,
খেলাফত প্রতিষ্ঠিতা করতে যদি এক হাজার বছরও লাগে লাগুক তবুও দ্বিন বিকৃত করব না ইনশাআল্লাহ ,আল্লাহ সুবাহানাহুওয়া তা'আলা যেদিন চাইবে ঐদিনই দ্বীন প্রতিষ্ঠা হবে,
আমার আপনার দায়িত্ব হল দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
Mohammad Ramjan Ali

এই দুইটা গণপিটুনির হত্যাকাণ্ডে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে,আল্লাহ সুবাহানাল্লাহ তায়ালা দুইজনকেই জান্নাতুল ফেরদৌস দান ক...
20/09/2024

এই দুইটা গণপিটুনির হত্যাকাণ্ডে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে,আল্লাহ সুবাহানাল্লাহ তায়ালা দুইজনকেই জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক আমিন,

ভবিষ্যতে যেন গণপিটুনির নামে আর কোন নিরহ মানুষের প্রাণ দিতে না হয়, তাই যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল সবাইকে জনসম্মুখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে,
কারণ এরা মানুষ না এদেরকে জানোয়ার বললেও জানোয়ারের অপমান হবে, এরা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট, কেমনে পারলো এরকম অসহায় ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করতে,তাদেরকি একটুও মায়া লাগে নাই?

যত বড় অপরাধী হোক না কেন ভবিষ্যতে যেন কেউ আইন নিজের হাতে তুলে না নেই গণপিটুনির নামে,তাই এই ফিতনা বন্ধ করতে কঠিন আইন তৈরি করা দরকার।

প্রকৃতপক্ষে কেউ যদি অপরাধী হয় যত বড় অপরাধী হোক না কেন সে যদি কুত্তালীগেরও কেউ হয় তারপরেও আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেন‌।

24 সালের ৫ আগস্ট এই আন্দোলনটা ছাত্র বিপ্লব না হয়ে,ইসলামী বিপ্লব হইতে পারতো,যদি ২০১৩-৫ মে হেফাজত ইসলামের নেতৃত্বে বিপ্লব...
13/09/2024

24 সালের ৫ আগস্ট এই আন্দোলনটা ছাত্র বিপ্লব না হয়ে,ইসলামী বিপ্লব হইতে পারতো,
যদি ২০১৩-৫ মে হেফাজত ইসলামের নেতৃত্বে বিপ্লব যদি ঘটাইতে পারতো।

ছাত্র আন্দোলনের সময় যেমন সর্বস্তরের জনগণ সহযোগিতা করেছিলো,ঠিক হেফাজতের আন্দোলনেও সর্বস্তরের জনগণ শরিক হয়েছিলো,
কিন্তু হেফাজত ইসলাম সফল হতে পারে নাই,শুধুমাত্র দুটি কারণে প্রথমটা হল ওদের প্রতিহিংসার কারণে,
তারা মনে করছিলো এই আন্দোলনে যদি বিপ্লব ঘটে তাহলে এর ক্রেডিট নিবে বিএনপি-জামাত,
সে কারণে উনাদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে গেছে বলে আন্দোলন স্থগিত করে ফেলেছিলো।

আরেকটা কারুন ছিলো তাদের অযোগ্য নেতৃত্ব এবং মৃত্যুর ভয়,সেদিন যদি তারা মৃত্যুর অথবা জেল জুলুমের ভয় না করে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে জিহাদের ডাক দিয়ে সামনে আগাইত তাহলে এই ১২ বছর হাজার হাজার মানুষ জুলুমের শিকার হতো না,আজকের ছাত্র আন্দোলনের যে ইস্যুটা ছিল এর চাইতে হাজার লক্ষ গুন উত্তম ইসু ছিলো তখন,
রাসুল সাল্লাল্লাহু সালামকে অপমান করেছিলো শাহবাগীরা।
হেফাজত ইসলাম যদি ওই সময় সফল হতো তাহলে সেটা হয়তো ইসলামী বিপ্লব
এবং বাংলাদেশে রাম বামপন্থী নাস্তিকরা কোনদিন মাথা ছাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারতো না,
এমনকি সেদিন হয়তো বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি ফাইতো।

কিন্তু আন্দোলন সফল করবে তো দূরের কথা,উল্টো স্বৈরাচারী হাসিনাকে কওমির জননী উপাধি দিয়েছিলেন তৎকালীন হেফাজতের আমির মাওলানা আহমেদ শফী,সেদিন উনার আহবানে 5 মে ঢাকা কা লং মার্চে যারা শরিক হয়েছিলেন তাদের মধ্যে অনেক শহীদ হয়ে গিয়েছিলেন,সেদিন শত শত শহীদের রক্তের সাথে উনি গাদ্দারি করেছিলেন,১২ বছর হয়ে গেল এই শহীদগুলোর বিচার চাইবে তো দূরের কথা কয়জন শহীদ হয়েছিলেন সেটা আজ পর্যন্ত এই হেফাজুল ইসলাম তাদের তদন্ত করো নাই।

তবে ওই সময় জুনায়েদ বাবুনগরীর(রহ)এর মুজাহিদের ভূমিকাই ছিলো,উনাকে ২৭ দিন পর্যন্ত রিমান্ড দেওয়া হয়েছিলো তারপরও স্বৈরাচারীর সামনে মাথা নত করে নাই,
শফি সাহেবের মত শহীদদের সাথে গাদ্দারি করে নাই।
আল্লাহ তাআলা জুনায়েদ বাবুনগরী(রহ)কে শহীদের মর্যাদিক আমিন।

আওয়ামীলীগ প্রথম দিকে এতটা হিংস্র ছিলনা,আওয়ামী লীগের সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে এই হেফাজত ইসলাম,হাসিনা আগে মুসলমানদের একটু হলেও ভয় পাইতো সে কারণে জমায়েত নেতাদের গ্রেপ্তার করলেও ফাঁসি দেওয়ার সাহস করো নাই, ৫ই মে সেদিন ঢাকা শাপলা চত্বরে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশকে এক রাতের মধ্যে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছেন,
ঐদিন থেকে হাসিনার সাহস আরো বেড়ে গেছে,হাসিনা সেদিন মনে করেছিলো লক্ষ লক্ষ মানুষ তাকে কিছু করতে পারে নাই ভবিষ্যতেও আর কেউ পারবেনা এই দিন থেকেই অনুপ্রেরিত হয়ে মুসলমানদের উপর একের পর এক নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে।
5 মের পর থেকে এই হেফাজত ইসলামের নাম গন্ধও পাওয়া যায় নাই, এমন কি সাঈদী সাহেবের মত একজন আলেমের জন্য একটু বিবৃতিও দেয় নাই।

সর্বশেষ বাংলার জনগণকে আমি আহবান জানাই,ভবিষ্যতে কোন দল যদি আন্দোলনের ডাক দেয় তাহলে আগে ওই দলের ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে নেবেন, যার তার ডাকে শরিক হয়ে কুকুরের মত রাস্তায় পড়ে মনে থাকবেন,আর নেতারা আরামে থাকবে আপনাদের লাশের হিসাব পর্যন্ত ওদের কাছে থাকবে না এরকম দলের অথবা নেতার সাথে থাকিয়েন না,
কোন দল অথবা নেতার সাথে আছেন একটু বুঝেশুনে আগাইয়েন।

বর্তমান কিছু কুলাঙ্গার শিক্ষককে পদক্ষেপের জন্য বাধ্য করায় কিছু সুশীলদের মায়া কান্না দেখতেছি,আরে তোদের তো লজ্জা থাকা দর...
30/08/2024

বর্তমান কিছু কুলাঙ্গার শিক্ষককে পদক্ষেপের জন্য বাধ্য করায় কিছু সুশীলদের মায়া কান্না দেখতেছি,
আরে তোদের তো লজ্জা থাকা দরকার এই ১৫ বছর কই গেছিলি?
শত শত শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছিল যারা আসলেই ভালো শিক্ষক ছিল,
এখন কিছু ভিডিওতে ইমোশন দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্লজ্জ বাহিনীরা মায়া কান্না করতেছে,অথচ হাজার হাজার মানুষ গণহত্যা করেছে এই আওয়ামী সরকার তোদের মুখে এসব কথা শোভা পায় না।

লিংক কমেন্ট বক্সে

14/08/2024

বাংলাদেশ এমন কোনো ঘর থাকবে না
যেখানে জমাত ইসলামী পৌঁছাবে না।

(আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী)

04/08/2024
02/08/2024

আব্দুর রহমান ইবনু আবি নুয়াইম বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনু উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার কাছে বসা ছিলাম । একজন লোক এসে ইবনু উমরের কাছে মশার রক্তের হুকুম ( মশা মেরে ফেলা) জানতে চাইলো । ইবনু উমর তার দিকে তাকালেন,জানতে চাইলেন, তুমি কোন এলাকা থেকে এসেছো? সে বললো, ইরাক অঞ্চলের অধিবাসী । আব্দুল্লাহ ইবনু উমর বললেন, দেখো এই লোকেরাই রাসুলের কলিজার টুকরা নাতিকে হত্যা করেছে, তার রক্ত ঝড়িয়েছে । আর আজকে এসে এরা আমাদের কাছে সাধু সেজে মশার রক্ত ঝড়ানোর হুকুম জানতে চায়! ( তাখরিজুল মুসনাদ লি শাকির, বর্ণনা সহিহ )

এ ধরণের হিপোক্রেটস যুগে যুগে ছিল । আজও আছে । কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে....

জালেম শাসকের সামনে সত্য তুলে ধরা।                 ইসলামহাউজ.কমসৎ কাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা একজন মুমিনের গুরুত্বপূ...
29/07/2024

জালেম শাসকের সামনে সত্য তুলে ধরা।
ইসলামহাউজ.কম

সৎ কাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা একজন মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ ঈমানী দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা শৈথিল্য প্রদর্শন আল্লাহর গজব তরান্বিত করে। ডেকে আনে বহুবিধ আসমানী বিপদ। পবিত্র কুরআনে মুমিনের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে,

‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়িম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৭১)

কোনো জাতি যখন সম্মিলিতভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ ছেড়ে দেয়। ব্যস্ত থাকে কেবল নিজেকে নিয়ে। তখন সে জাতির ওপর বিপদ অত্যাসন্ন হয়ে পড়ে। পৃথিবীর ইতিহাসে বহু জাতির পতন ও চূড়ান্ত ধ্বংস ডেকে এনেছে এই কর্তব্য কাজে অবহেলা। আল্লাহ বনী ইসরাইল সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেছেন,

‘তারা যেসব গর্হিত কাজ করত তা হতে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট।’ (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত : ৭৯)

ন্যায়ের পথে ডাকা আর অন্যায়ে বাধা দেবার এই কাজটি চালিয়ে যেতে হয় ব্যক্তি থেকে সমাজ এবং সমাজ থেকে রাষ্ট্র ও বিশ্বপর্যায়ে। যারা সুশাসক, ন্যায়পরায়ন রাষ্ট্রপরিচালক তারা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অন্যের মতকে অবদমিত করেন না। তারা অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন। অন্যের সদুপোদেশকে অর্ঘ ভেবে বুকে তুলে নেন। এতে করে তারা যেমন আল্লাহর প্রিয় হন, রাষ্ট্রও তেমন উপকৃত হয়। জনগণ থাকেন শান্তিতে।

পৃথিবীর সর্বপ্রথম আধুনিক কল্যাণরাষ্ট্র মদীনা নগরীর জনগণ নির্বিঘ্ন ও নির্ভয়ে তার শাসক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পরে চার পুণ্যবান খলিফার সামনে ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের’ অংশ হিসেবে তাদের মত তুলে ধরতে পারতেন। মহানবীর অভ্যাস ছিল তিনি নানা বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের মত নিতেন। শাসকের সামনে মত প্রকাশে উৎসাহিত করতেন। উহুদ যুদ্ধের প্রাক্কালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও বিশিষ্ট সাহাবা রাদিয়াআল্লাহু ‘আনহুমের মত ছিল মদীনা শহরের অভ্যন্তরে অবস্থান করে শত্রুর মোকাবেলা করা। পক্ষান্তরে হামযা রাদিয়াআল্লাহু ‘আনহু এবং অপেক্ষাকৃত যুবক সাহাবীরা চাইছিলেন শহরের বাইরে কোনো উন্মুক্ত প্রান্তরে গিয়ে যুদ্ধ করতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের এই মত গ্রহণ করে উহুদ প্রান্তরে কুরাইশদের বিপক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন।

আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলের প্রথম খলীফা মনোনীত হবার পর জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাকে অনুসরণ করো যতক্ষণ আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ করব। যদি আমি গোমরাহীর পথে পরিচালিত হই তবে তোমরা আমাকে সঠিক পথের দিশা দেবে।’ তৎপরবর্তী খলীফা উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুও ক্ষমতায় থাকতে বক্তৃতায় জনগণকে বলেন, ‘আমি যদি ভুল পথে পরিচালিত হই তখন তোমরা কী করবে?’ তাৎক্ষণিকভাবে একজন উত্তর দিলেন, ‘এই তরবারী দিয়ে সোজা পথে নিয়ে আসবো’।

পক্ষান্তরে ক্ষমতা যাদের অন্ধ, বধির ও বিবেকপ্রতিবন্ধি বানিয়ে দেয়, তারা অন্যের মতের তোয়াক্কা করেন না। তারা রাষ্ট্রীয় পীড়ন ও জুলুমের বিরুদ্ধে সত্যোচ্চারণকারীর টুঁটি চেপে ধরতে চান। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও সরকারি বাহিনীর জোরে তারা সত্যকে মাটির নিচে দাফন করতে চান। চান নিজের তল্পিবাহক ও স্তাবকদের সামনে রেখে মিথ্যা ও অন্যায়ের রাজ কায়েম করতে। তথাপি ইতিহাসের নানা বাঁকে কিছু অকুতোভয় সত্যনিষ্ঠ মানুষকে দেখা যায় জালেমের ভ্রূকুটি উপেক্ষা করতে। তারা নিজের জীবন বিপন্ন আবার কখনো উৎসর্গ করে সবার সামনে সত্য তুলে ধরেন। লাখো-কোটি মিথ্যাপূজারীর সামনে বুক চিতিয়ে সত্যোচারণ করে স্থায়ী জায়গা করে নেন মানুষের মনের মুকুরে এবং ইতিহাসের সোনালী পাতায়।

ক্ষমতাবান শাসকের সামনে সত্য বলা অনেক বড় কঠিন বিষয়। দোর্দণ্ড প্রতাপ ও প্রভাবশালীর সম্মুখে সাহস প্রদর্শন এবং সত্য উচ্চারণের সাহস সবার থাকে না। যাদের থাকে, তারা সময়কে জয় করতে পারেন। কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। এমন সাহসী ও সৎ মানুষের উপমা বিরল, দুর্লভ এবং হাতেগোনা। সংখ্যায় কম হলেও ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে সত্যনিষ্ঠ মানুষের সাহসী উচ্চারণের নজির রয়েছে। এ ধরনের মানুষ থাকে বলেই সমাজে-রাষ্ট্রে কিছুটা ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। সত্যের আলো বিচ্ছুরিত হয়। সত্য-মিথ্যার চিরায়ত দ্বন্দ্বে সত্যের মহিমা প্রকাশ পায়। অসত্যের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়।

এ দুরূহ কাজ সবাইকে দিয়ে হয় না। হয় তাদের দিয়েই যাদের বক্ষ ঈমান ও সৎ সাহসে টইটুম্বর। যারা পার্থিব ভয় ও জাগতিক লোভ সংবরণ করতে পারেন। যারা ক্ষুদ্র পরিবারের মায়া এবং গুটিকয় প্রিয়জনের ভালোবাসা ডিঙে সবার হয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে সবার এবং সব সময়ের করে তুলতে পারেন। যারা উজ্জীবিত ও বলীয়ান হন দেশ-কালের গণ্ডি পেরিয়ে সর্বকালের সত্যনিষ্ঠ মানুষের ভালোবাসায়। এ কারণেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায়শাসক এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বীর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জালেম শাহীর সামনে সত্যোচ্চারণকে আখ্যায়িত করেছেন ‘সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ’ হিসেবে। সাহাবী আবূ উমামা বাহেলি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,

(বিদায় হজে) প্রথম জামারায় পাথর নিক্ষেপের সময় এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন জিহাদ সর্বোত্তম? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এড়িয়ে গেলেন। অতপর দ্বিতীয় জামারায় গিয়েও তিনি তাঁর উদ্দেশে একই প্রশ্ন করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও একইভাবে এড়িয়ে গেলেন। অবশেষে তৃতীয় জামারায় বা জামারা ‘আকাবায় গিয়ে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর নিক্ষেপ করলেন এবং উটের রেকাবীতে পা রাখলেন, তিনি জানতে চাইলেন, ‘প্রশ্নকারী ওই ব্যক্তি কোথায়?’ ওই ব্যক্তি বললেন, এই আমি এখানে হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন, ‘সর্বোত্তম জিহাদ ওই ব্যক্তি করে যে অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলে।’ [মুসনাদ আহমদ : ১৮৮৩০; ইবন মাজাহ, ৪০১২; নাসাঈ : ৪২০৯। অনুরূপ বর্ণনা আরও রয়েছে, তিরমিযী, ২১৭৪, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

আমরা সাধারণত সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শত অন্যায়-অবিচার দেখেও কথা বলি না, অন্যায়ের প্রতিবাদ জানানো দূরের কথা যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানান তাদের অন্তত সমর্থন পর্যন্ত করি না। অথচ অন্যায় করা আর অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করা একই অপরাধ। সত্য উপলব্ধি করেও তা উচ্চারণ না করা এবং মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেয়া থেকে সতর্ক করে আল্লাহ বলেন,

“আর তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন করো না।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪২)

হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ কোনো অন্যায় হতে দেখবে সে যেন তা হাত দিয়ে বদলে দিতে চেষ্টা করে। যদি তা না পারে তাহলে তার ভাষা দিয়ে, অন্যথায় অন্তর দিয়ে বদলে দিতে চেষ্টা করবে। আর এটি দুর্বলতম ঈমানের স্তর।’ [মুসলিম : ৭৪]

অতএব আমরা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অন্যায় দেখে মূক ও বধিরের মতো বসে থাকতে পারি না। আমাদের দায়িত্ব হবে সাধ্যমত অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। অন্যায় কাজে যথাসাধ্য বাধা প্রদান করা। সত্য উচ্চারণে অকুতোভয় এবং অকুণ্ঠ হওয়া। দশের সামনে সত্য তুলে ধরে মিথ্যার ভিত কাঁপিয়ে দেয়া। দৃপ্তপদে সত্য উচ্চারণে আমরা আরোহণ করতে পারি ঈমানের চূড়ায়। নির্মুল করতে পারি অসত্যের দাপট। আমরা যদি নির্বিকার বসে থাকি তবে মিথ্যা আমাদের পেয়ে বসবে। আমাদের টুঁটি শুধু চেপেই ধরবে না এক সময় আমাদের পরিবার ও সমাজকে গ্রাসও করে ফেলবে।

আল্লাহ আমাদের সত্যোচ্চারণে দৃপ্ত শপথে বলীয়ান করুন। মিথ্যার বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ ও রুখে দাঁড়াবার তাওফীক দিন। সকল সত্যবাদী ও সত্যোচ্চারণকারীর সহায় হোন। আর হেদায়েত ও সুপথ দান করুন জালিম ও অত্যাচারীদের। আমীন।

এই প্রবাস নামের ক্লান্ত জীবনে হালকা বিনোদন।
10/05/2024

এই প্রবাস নামের ক্লান্ত জীবনে হালকা বিনোদন।

আমি বোরকা পরি, আমার গরম লাগে না?!রোদের তপ্ততা হা-ড়ে হা-ড়ে অনুভব করে বোধকরি কালো বোরকা পরিহিতারা (কালো রঙটা বিশেষভাবে গরম...
22/04/2024

আমি বোরকা পরি, আমার গরম লাগে না?!
রোদের তপ্ততা হা-ড়ে হা-ড়ে অনুভব করে বোধকরি কালো বোরকা পরিহিতারা (কালো রঙটা বিশেষভাবে গরমের জন্য উল্লেখ করা)। একগাদা কাপড় চোপড়, তারউপর বোরকা! খুব গরম সইতে হয়! অ-সহ্য গরম! না, মোটেও বিরক্ত হয়ে বলছি না। বরং, গর্ব করেই বলছি - আমাদের অ-সহ্য গরম সইতে হয়।
এ গরম আমরা সহ্য করি শুধুমাত্র একটা কারণে। একটা আশায়। এক আকাঙ্খায়। তা কী, জানেন? মৃত্যুর পর এ কথা শুনবো বলে, ‘হে প্রশান্ত আত্মা! তোমার রবের দিকে ফিরো; সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তোষজনক হয়ে।’

রবের সন্তুষ্টি! কারণ, আমরা রবকে মানি। মৃত্যুর পরের জীবনকে ধোঁয়াশা বলে উড়িয়ে দেই না; মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। সে জীবনে সফল হতে চাই। এর একটা ধাপ হলো, এই হিজাব। পর্দা!
‘অ-সহ্য গরম’ এ কথাটুকু বলার অধিকার কেউ আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেয় নি। আমরাই বলি না। বলার প্রয়োজনবোধ করি না। আমরা জানি, এ গরম সওয়ার মাঝে কত প্রশান্তি! কতটা আত্মিক তৃপ্তি! এই প্রশান্তি আর তৃপ্তি রোদের তপ্ততাকে অনেকগুণে কমিয়ে দেয়। জন্ম দেয় এক অসাধারণ অনুভূতির। এই অনুভূতির নাম ভালোবাসা। তাঁর প্রতি ভালোবাসা, যিনি আমাকে দুনিয়ার নিয়ামাত ভোগের সুযোগ দিচ্ছেন; তাঁর প্রতি আনুগত্য, যিনি আমাকে দুনিয়াতে তাঁর আদেশ মানতে পাঠিয়েছেন।
এ ভালোবাসা তারা বুঝবে কী করে, যারা সে সত্ত্বাকেই চিনে নি। পবিত্র ভালোবাসার সে অপার্থিব অনুভূতিটুকুর স্বাদ পায় নি!
আল্লাহ আমাদের হিদায়াতের উপর অটল রেখে ঈমানী মওত নসীব করুন।
~ ফারহীন আল মুনাদী!

26/03/2024

বাংলাদেশে সবচাইতে এ আয়াকে অমান্য করে বেশি, অথচ এই ওজনে কম দেওয়ার কারণে একটা জাতিকে ভূমিকম্প দিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।

আর মাদয়ানবাসীদের নিকট তাদের ভাই শু’আইবকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্‌র ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই; তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। কাজেই তোমরা মাপ ও #ওজন ঠিকভাবে দেবে, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দেবে না এবং দুনিয়ার শান্তি স্থাপনের পর বিপর্যয় ঘটাবে না; তোমরা মুমিন হলে তোমাদের জন্য এটাই কল্যানকর। সুরা আ'রাফ 86

কোন এক অসাধারন নারীর গল্প:তিনি ছিলেন শুকনো -পাতলা ও দুর্বল শরীরের একজন কালো আফ্রিকান নারী। বাহির থেকে দেখে অনেকেই তাঁকে ...
15/03/2024

কোন এক অসাধারন নারীর গল্প:

তিনি ছিলেন শুকনো -পাতলা ও দুর্বল শরীরের একজন কালো আফ্রিকান নারী। বাহির থেকে দেখে অনেকেই তাঁকে সেই সন্মান দেয়নি কিন্তু নবী মোহাম্মদ (সাঃ) মানুষের অন্তর দেখতেন ,তাই দেখে এই নারীকে যে সন্মান দিয়েছিলেন তা নিয়েই এই গল্প ।

তাঁর নাম উম্মে মাহ্জান।

হজরত আয়েশা (রাঃ) প্রায়ই তাঁকে দেখতে যেতেন ,খুব হাসি খুশি সহজ সরল এক নারী। সব সময়ই তাঁর মুখে হাসি লেগে থাকতো। আয়েশা (রাঃ) বলেছেন ,
-আমি যতবার উম্মে মাহ্জান কে দেখেছি ,প্রতিবারই সে আমাকে হাসি মুখে দুই লাইন কবিতা শুনাতো। মাত্র দুই লাইন কবিতা কিন্তু আমার ভালো লাগতো। সেই কবিতার দুই লাইন ,

"যেদিন হারিয়ে গিয়েছিলো তার ,সেই মূল্যবান চাদর।
সেদিনই জেনেছি ,খোদা আমায় করেছিলেন সমাদর"

আমি ভেবেছিলাম হয়তো কোন এক অজানা কবির ,কবিতার দুই লাইন কিংবা মাহ্জানের গ্রামের কোন আঞ্চলিক গানের দুটো লাইন। আমি এই কবিতার কোন মানে জানতাম না কিন্তু মাহ্জানের চোখের দৃষ্টি ,ভালোবাসা আর আবেগ দেখে আমার মনে হতো এই কবিতার যেন কোন একটা অর্থ আছে। মনে হলো এই কবিতার পিছনে কোন একটা গল্প আছে । কিন্তু তাঁকে কোনদিন জিজ্ঞেস করা হয়নি ।একদিন তাঁর অনেক আবেগ দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম ,
-মাহ্জান ,এই কবিতার মানে কি ?এখানে কি বলা হয়েছে ?
-আমার কবিতা ,আমার নিজের কাহিনী। মৃদু হেসে মাহ্জানের উত্তর।
-দয়া করে আমাকে একটু বলবে সেই কথা ,আমি শুনতে চাই ।
মাহ্জান সুদূর মরুভূমির দিকে প্রথমে উদাস দৃষ্টিতে একবার তাকালো। তারপর মুগ্ধ চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আয়েশা (রাঃ)কে বললো ,
-শুনেছি আমার জন্ম উত্তর ইথিওপিয়ার কোন এক গ্রামে ,বাবা -মা ,ভাই- বোন বলে আমার কেউ আছে বলে জানিনা। খুব ছোট বেলায় আমাকে কেউ একজন শহরের বাজারে ক্রীতদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয় ।সেই থেকে আমি আবিসিনিয়ার এক ধনী ব্যবসায়ীর ক্রীতদাসী হিসেবে বড় হয়েছি। আমি তাঁর একমাত্র মেয়েকে দেখাশুনা করে রাখতাম। আমার কাছে সে ছিল রাজকন্যার মত। সে খুব দামী সুন্দর জামা কাপড় পরে থাকতো। একদিন সেই রাজকন্যা ঘরের পিছনের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে শুয়েছিলেন ,তাঁর গায়ের উপর ছিল একটা সুন্দর দামী মনি মুক্তা খচিত মেরুন রঙের চাদর। হঠাৎ আমি দূর থেকে দেখি একটা বড় বাজ পাখি এসে রাজকন্যার গায়ের চাদরটা তুলে নিয়ে চলে গেলো। আমি কাছে এসে দেখি রাজকন্যা তখনো ঘুমাচ্ছেন।
ঘুম ভাঙার পর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ,
-আমার গায়ের চাদর কোথায় মাহ্জান ?
-একটা পাখি নিয়ে গেছে ,আমি ভয়ে ভয়ে বললাম।
-পাখি নিয়ে গেছে মানে ?তুমি কি আমাকে বোকা মনে করছো ?
-না ,সত্যি বলছি ,আমি নিজের চোখে দেখেছি।
কিন্তু তিনি আমার কথা বিশ্বাস করলেন না ,আমাকে তাঁর বাবার কাছে নিয়ে গেলেন । তিনি আমার কথা শুনে আরো রেগে গেলেন । মানুষজনকে ডেকে এনে আমাকে আরো অপমানিত করলেন । সবার ধারণা হলো আমিই সেই মূল্যবান চাদর চুরি করেছি এবং কোথাও লুকিয়ে রেখেছি। আমার সব কিছু তল্লাশি করা হলো তারপর আমাকে বারন্দায় একটা খুঁটিতে বেঁধে খুব জোরে চাবুক পেটা করা হলো। আমি যতই বলি আমি চুরি করিনি ততই তারা আমাকে আরো মারলো ,আমার সারা গা থেকে রক্ত ঝরছিলো। মারতে মারতে আমাকে প্রায় অজ্ঞান করে ফেলা হলো ঠিক সেই সময়ে আমি দেখলাম ,সেই বাজ পাখিটা চাদরটাকে ঠোঁটে করে নিয়ে এসে সকলের সামনে ,একটু উপর থেকে চাদরটাকে নীচে ফেলে দিলো। সবাই দেখলো এবং অবশেষে আমার কথা তাঁরা বিশ্বাস করলো।

তারপর খুঁটি থেকে আমাকে মুক্ত করা হলো কিন্তু আমার দাঁড়ানোর মত কোন শক্তি ছিল না। সারা গায়ে রক্ত আর ব্যথা নিয়ে আমি মাটিতে শুয়ে পড়লাম। আমার এই অবস্থা দেখে মনিবের একটু মায়া হলো এবং আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো ,
-তোমাকে চীরদিনের জন্য মুক্ত করে দিলাম মাহ্জান ,তুমি আর ক্রীতদাসী নও ,তুমি যেখানে ইচ্ছে চলে যেতে পারো।

সেইদিনই আমি মুক্ত হয়ে গেলাম ,আমি আমার সব ব্যথা বেদনা ভুলে গেলাম ,আকাশের দিকে তাঁকিয়ে খোদা তায়ালাকে শুকরিয়া জানালাম।
মুক্ত হলাম ঠিকই কিন্তু কোথায় যাবো ?আমারতো নিজের বলে কেউ নেই। আমার এই দুর্বল ও হালকা দেহে ভারী কোন কাজও করতে পারছিলামনা। তারপর একদিন মানুষের কাছে শুনলাম ,মদিনায় একজন নবী এসেছেন তিনি ক্রীতদাস-দাসীদের সন্মান দেন ,তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। একদিন মনে হলো তাঁর কাছে চলে আসি এবং রওয়ানা দিয়ে দিলাম মরুভূমির এই দীর্ঘ পথ। কখনো হেঁটে ,কখনো উটে করে অবশেষে পাড়ি দিয়ে নবীজির কাছে এসে পৌঁছলাম। ভিনদেশি আমার দিকে সবাই অবাক হয়ে তাঁকিয়েছে কিন্তু মনে হলো তিনি যেন আমার সব কাহিনী জানেন ।আমাকে জিজ্ঞেস করলেন
-তুমি কোথায় থাকবে মাহ্জান ?মদিনায় কেউ কি তোমার আছে ?
-না ,আল্লাহর রাসূল ,আমার কেউ নেই।
-আচ্ছা ঠিক আছে ,চিন্তা করোনা ,আমি তোমাকে আমার মসজিদের একটা কোনায় খেজুরের ডালপালা দিয়ে একটা ছোট ছাউনি তুলে দিবো ,তুমি সেখানেই থাকবে।
সেই থেকে আমি এই মসজিদের কোনায় থাকি। আমাকে তিনি কোন কাজের কথা বলেন নি কিন্তু আমি দিনের বেলা মনুষের কাজ করি আর রোজ রাতে আল্লাহর এই ঘরকে পরিষ্কার পরিছন্ন করি । এই কাজের জন্য আমি আল্লাহ আর তাঁর রাসূলের ভালোবাসা ছাড়া আর কোন বিনিময় চাইনা।

এই গল্প শুনে আয়েশা (রাঃ) নীরবে অশ্রুপাত করলেন ,ভালোবেসে আর আদরে মাহ্জানকে একটু জড়িয়ে রাখলেন।

শেষ অংশ :

তারপর কোন এক রাতে সাহাবীরা জানতে পারলেন উম্মে মাহ্জান মারা গিয়েছেন ।এক নিঃস্ব অসহায় কালো আফ্রিকান নারী ,মসজিদে নবীবির প্রথম ক্লিনার আর নেই।
তাঁরা ভাবলেন এই রাতের বেলা রাসূল (সাঃ) কে আর ঘুম থেকে তুলে কষ্ট দেয়ার প্রয়োজন নেই তাই নিজেরাই রাতের বেলা জানাজা শেষে দাফন করে ফেললেন ।

ভোর বেলা রাসূল (সাঃ) যখন এই খবর শুনলেন তিনি খুব অভিমান করলেন ,সাহাবীদের উদ্দেশ্য করে বললেন
-আমাকে কেন তোমরা ডাকোনি ?আমি তাঁর জানাজায় অংশগ্রহন করতাম।

তাঁরপর তিনি সবাইকে বললেন ,
-মাহ্জানের জানাজা আবার হবে ,আমাকে তাঁর কবরের কাছে নিয়ে যাও।

দ্বিতীয় জানাজা হলো ,নবীজি সা: ইমামতি করলেন। তারপর আকাশের দিকে হাত তুলে মাহ্জানের জন্য দীর্ঘক্ষণ দোয়া করলেন।

রাসূল (সাঃ)এর জীবনে উম্মে মাহ্জানই একমাত্র মানুষ যাঁর জন্য দুইবার জানাজা হয়েছিল।

সেই সময়ে দুইবার জানাজা আর কারো জন্য হয়নি ,এই ছিল তাঁর প্রাপ্তি ,অসাধারন এই নারীর প্রতি বিশেষ সন্মান ।

(গল্প সূত্র :সীরাত ইবনে সা'আদ ও বোখারী-মুসলিম )

-ডা.শামছুল আলম
©️

10/02/2024

وَ الَّذِیۡنَ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّ اجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا ﴿۷۴﴾
আর যারা প্রার্থনা করে : হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান কর যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দাও।

১. ৭. ৫. সালাতুল ইস্তিখারাইস্তিখারার অর্থ কারো কাছে সঠিক বিষয় বেছে দেওয়ার প্রার্থনা করা। যে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা ...
09/01/2024

১. ৭. ৫. সালাতুল ইস্তিখারা

ইস্তিখারার অর্থ কারো কাছে সঠিক বিষয় বেছে দেওয়ার প্রার্থনা করা। যে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা একাধিক বিষয়ের মধ্য থেকে একটি বেছে নেয়ার অবকাশ আছে সেখানে আল্লাহ্‌র সাথে পরামর্শ না করে কোনো কিছু বেছে নেয়া বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা মুমিনের উচিত নয়। ছোট, বড়, গুরুত্বপূর্ণ বা গুরুত্বহীন সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে আল্লাহ্‌র সাথে পরামর্শ করা, অর্থাৎ তাঁর মহান দরবারে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের তাওফিক চাওয়া মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব।
ইস্তিখারার দু‘আ

اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوْبِ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ [يسمي حاجته] خَيْرٌ لِيْ فِيْ دِينِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاقْدِرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِيْ ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ. [اللهم] وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِيْ فِيْ دِينِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ فَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدِرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِيْ بِهِ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা, ওয়া আসতাকদিরুকা বিক্বুদরাতিকা, ওয়া আসআলুকা মিন ফাদলিকাল ‘আযীম। ফাইন্নাকা তাকদিরু, ওয়ালা- আকদিরু, ওয়া তা‘অ্লামু ওয়ালা- আ‘অ্লামু, ওয়া আন্তা ‘আল্লা-মুল গুইঊব। আল্লা-হুম্মা, ইন কুনতা তা‘অ্লামু আন্না হা-যাল আমরা (উদ্দিষ্ট বিষয়ের নাম বলবে) খাইরুল লী ফী দীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী ফাক্বদুরহু লী, ওয়া ইয়াসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিক লী ফীহি। আল্লা-হুম্মা, ওয়া ইন কুনতা তা‘অ্লামু আন্না হা-যাল আমরা শাররুল লী ফী দীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-কিবাতি আমরী ফাছরিফহু ‘আন্নী, ওয়াছরিফনী ‘আনহু ওয়াক দুর লিয়াল খাইরা হাইসু কা-না, সুম্মা আরদ্বিনী বিহী।

অর্থ: “হে আল্লাহ্‌, আমি আপনার নিকট কল্যাণ প্রার্থনা করি আপনার জ্ঞান থেকে, আমি আপনার নিকট শক্তি প্রার্থনা করি আপনার ক্ষমতা থেকে এবং আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি আপনার মহান অনুগ্রহ। কারণ আপনি ক্ষমতাবান আর আমি অক্ষম, আপনি জানেন আর আমি জানি না, আর আপনি সকল গাইবের মহাজ্ঞানী। হে আল্লাহ্‌, যদি আপনি জানেন যে, এ কাজটি (নির্দিষ্ট বিষয়টির উল্লেখ বা স্মরণ করবে) কল্যাণকর আমার জন্য, আমার ধর্ম, আমার পার্থিব জীবন এবং আমার ভবিষ্যৎ পরিণতিতে, তবে নির্ধারণ করুন একে আমার জন্য, সহজ করুন একে আমার জন্য এবং বরকত প্রদান করুন এতে আমার জন্য। হে আল্লাহ্‌, আর আপনি যদি জানেন যে, এ কর্মটি অকল্যাণকর আমার জন্য, আমার ধর্ম, জাগতিক জীবন ও আমার ভবিষ্যৎ পরিণতিতে তবে সরিয়ে নিন একে আমার নিকট থেকে, সরিয়ে নিন আমাকে এর নিকট থেকে, নির্ধারণ করুন আমার জন্য কল্যাণকে যেখানেই তা থাকুক এবং সন্তুষ্ট করে দিন আমাকে তার মধ্যে।”
সহীহ বুখারী ১/৩৯৩, হাদীস নং ১১০৯।

জাবির ইবনুু আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সকল বিষয়ে ‘ইস্তিখারা’ করতে শিক্ষা দিতেন, যেমন গুরুত্বের সাথে তিনি আমাদেরকে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন: যখন তোমাদের কেউ কোনো কাজের ব্যাপারে মনের মধ্যে চিন্তা করবে তখন (সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে) নফল দু-রাক‘আত সালাত আদায় করবে অতঃপর উপরের দু‘আটি বলবে।
সহীহ বুখারী (২৬-আবওয়াবুত তাতাওউ, ১-তাতাওউ মাসনা) ১/৩৯১ (ভা. ১/১৫৫)।

📌 পুরুষ এবং মেয়েদের মাহরাম ও গায়রে মাহরাম 🟢 মাহরাম 🔴 গায়রে মাহরামউল্লেখ্য, ইসলামের দৃষ্টিতে যেসব নারী-পুরুষের মধ্যে বিয়ে...
05/01/2024

📌 পুরুষ এবং মেয়েদের মাহরাম ও গায়রে মাহরাম

🟢 মাহরাম
🔴 গায়রে মাহরাম

উল্লেখ্য, ইসলামের দৃষ্টিতে যেসব নারী-পুরুষের মধ্যে বিয়ে বৈধ নয়, তাদেরকে মাহরাম বলে। তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ এবং কথা বলা জায়েজ আছে। আর যাদের মধ্যে বিয়ে বৈধ, তাদেরকে গায়রে মাহরাম বা নন মাহরাম বলে। এই নন মাহরাম নারী-পুরুষের পর্দাহীনভাবে বিয়েপূর্ব দেখা-সাক্ষাৎ এবং কথা বলা জায়েজ নয়। তা হারাম ও কবিরা গুনাহ।

#পর্দা #মাহরাম াহরাম
#সীরাহ

সকল ব‍্যথার বোঝা বৈইতে পারে,সব জ্বালা যাতনও সইতে পারে।বিপদ আপদ এলে আল্লাহকে ডাকে,তাঁর দয়া করুনায় ভরসা রাখে,হারায় না হুশ,...
31/12/2023

সকল ব‍্যথার বোঝা বৈইতে পারে,
সব জ্বালা যাতনও সইতে পারে।
বিপদ আপদ এলে আল্লাহকে ডাকে,
তাঁর দয়া করুনায় ভরসা রাখে,
হারায় না হুশ,
সেই তো মানুষ,সেই তো মানুষ।

31/12/2023

"শীঘ্রই তোমার রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে।"
[সূরা দ্বোহাঃ ০৫]

Address

Jeddah

Telephone

+966506967115

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mohammad Ramjan Ali posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Mohammad Ramjan Ali:

Videos

Share