02/11/2024
ভার্চুয়ালে মানুষ যতটা না চেহারার প্রেমে পড়ে, তারচেয়ে বেশি কথার প্রেমে পড়ে। আরো স্পেসিফিকভাবে বলতে গেলে চ্যাটিং এর প্রেমে পড়ে।
চ্যাটিং শুরু হবার কিছুদিনের মধ্যেই মানুষটাকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা লাগতে শুরু করে। তার সাথে চ্যাটিং জমে ওঠে অল্পতেই। চ্যাটিং এ আড্ডা জমে। আড্ডায় দিন কেটে যায়। রাতও গভীর হয়। কখনো রাত পেরিয়ে ভোর হয়। তবু কারো চ্যাটিং এ কথা শেষ হয় না।
এরই মধ্যে মানুষটার আইডি নামটা আপন আপন লাগতে শুরু করে। মায়া জন্মে যায় আইডিটার উপর। অন্য কোনো আইডি থেকে সারাদিন হাজার হাজার মেসেজ আসলেও কিছুই মনে হয় না। কিন্তু সেই বিশেষ আইডিটা থেকে মেসেজ আসলেই চোখ দুটো ঝলমল করে ওঠে! কেঁপে ওঠে বুকের ভিতরটা! নড়েচড়ে বসা হয় মোবাইলটা হাতে নিয়ে। আর মনে মনে বলা হয়, মানুষটা যেন অনলাইনে অনেক্ষণ থাকে। দ্রুত সে অফলাইনে চলে গেলে রাজ্যের হতাশা এসে ভর করে চোখেমুখে!
একটা সময় মানুষটার কথা শুনতে ইচ্ছে করে। মানুষটা কিভাবে কথা বলে, মানুষটার কণ্ঠস্বরটা কেমন, বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। ফোন নাম্বার দেওয়া নেওয়া হয়। এরপর চ্যাটিং এর নদী ছেড়ে কথার সমুদ্রে ভাসতে থাকে দুজন। মানুষটার কথা ভালো লাগে, হাসি ভালো লাগে, অভিমান ভালো লাগে, আরো কত কী! আগে চ্যাটিং করতে করতে রাত কেটে ভোর হতো। এরপর ভোর হয় মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে। তবু কথা শেষ হতে চায় না কারোরি! মানুষটাকে ততদিনে আর ভার্চুয়াল মনে হয় না। মনে হয় খুব আপন কেউ। খুব কাছের কেউ। বাংলা সিনেমার গানের মতই যেন মনে হতো থাকে- হাজার বছর মানুষটার সাথে ছিল পরিচয়...
সময়ের স্রোত বইতে থাকে। হঠাৎ করেই সম্পর্কটা কিভাবে যেন ফুরিয়ে যেতে শুরু করে! তিলে তিলে পরিচিত হয়ে ওঠা মানুষটা একটা সময় একদম অপরিচিত হয়ে যায়। ঠিক যেমন মোমবাতির শেষ আলোটুকু নিভে যায় ধুপ করে! মানুষ দুইটা ঠিকই থাকে পৃথিবীর দুই প্রান্তে। দুই প্রান্তে দুজন মানুষ ঠিকই তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায়। শুধু দূরত্ব বাড়ে আর যোগাযোগ নিভে যায়।
মুলত অবৈধ প্রেম, কামনা, ফেন্টাসী এরকমই হয়ে থাকে। আর পরিশেষে থাকে আসমান-জমীন অনুতাপ, নয়ত আত্নহত্যা।
Call now to connect with business.